চিত্রগ্রীব গল্পের প্রশ্ন উত্তর | অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর | Class 6 WBBSE.

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now


চিত্রগ্রীব

কথা : ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়
ছবি : যুধাজিৎ সেনগুপ্ত 

বিষয় সংক্ষেপ : সাহিত্যে মানুষ ও মনুষ্যেতর প্রাণীদের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক লক্ষ করা যায়। আলোচ্য ‘চিত্রগ্রীব’ গল্পটিও তার ব্যতিক্রম নয়। চিত্রগ্রীব হল একটি পায়রা, যে লেখকের একান্ত প্রিয় বন্ধু। চিত্রগ্রীবের বাবা প্রতিদিন ডিমে তা দিলেও কবে ও কীভাবে সেই ডিম থেকে ছোট্ট ছানার জন্ম হবে তা তার অজানা। এই বিষয়ে ছোট্ট ছানাটিকে তার মা-পায়রার উপর নির্ভর করতে হয়, ঠিক যেমন ছোট্ট মানব শিশু তার মায়ের কাছেই নিজেকে সমর্পণ করে দেয়। পাখির জীবনের দুটি মধুর দৃশ্য হলো, ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনো এবং সেই বাচ্চাটিকে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে খাওয়ানো। খোপের মধ্যে মা কিংবা বাবা পায়রা উড়ে এসে ছোট্ট চিত্রগ্রীবকে যখন ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে দুধে পরিণত বীজ খাওয়াত তখন চিত্রগ্রীবের দেহ ফুলে ফেঁপে উঠত। বাচ্চাটিকে শক্ত বীজ প্রথমে খেতে দেওয়া হয় না। মা-পায়রা নিজে সেই বীজ কিছুক্ষণ মুখে রেখে নরম করে বাচ্চাটিকে খাওয়ায়।
  হপ্তা তিনেকের চিত্রগ্রীব একদিন একটি পিঁপড়েকে বীজ মনে করে ঠোঁট দিয়ে আঘাত করে। যদিও পরে ভুল বুঝতে পেরে নিজের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হয়। হপ্তা পাঁচেক বয়সে সে নিজে থেকেই খোপের বাইরে এসে জল খেতে শুরু করে। লেখক জানতে পারেন পায়রার চোখের সামনে একটি ছোটো পাতলা ফিনফিনে পর্দা থাকে, যার দ্বারা সে ঝড় ও সূর্যের দিকে উড়তে পারে। এই পর্দাই তাদের চোখকে রক্ষা করে। পাখি হয়ে জন্মালেও চিত্রগ্রীব খুব সহজেই উড়তে পারেনি। লেখক তাকে ডানা খোলার ও বন্ধ করার প্রাথমিক শিক্ষা দেন। এরপর জ্যৈষ্ঠ মাসের পর থেকেই চিত্রগ্রীবের বাবার বকুনি খেয়ে সে সম্পূর্ণভাবে ওড়ার শিক্ষা পায়। তবে প্রথম ওড়ার পরমুহূর্তেই সে অত্যন্ত ভয় পেয়ে যায়। এতটাই ভীত হয়ে পড়ে যে মাটিতে পা রাখার মতো সাহসও তার হারিয়ে যায়। মা পায়রা এইসময় ছোট্ট ছানাটিকে জড়িয়ে ধরে তাকে সাহস জোগানোর চেষ্টা করে। আর চিত্রগ্রীবকে উড়তে শেখানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে ভেবে তার বাবা মনে মনে তৃপ্তি লাভ করে।

১. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখ :
১.১ চিত্রগ্রীব গল্পে ‘করী’ হল- 
(ক) পিঁপড়ে
(খ) গেরো বাজ
(গ) পায়রা
(ঘ) হাতি

উত্তরঃ (ঘ) হাতি।

১.২ চিত্রগ্রীব হলো- 
(ক) পিঁপড়ে
(খ) গেরো বাজ
(গ) হাতি
(ঘ) পায়রা

উত্তরঃ (ঘ) পায়রা।

১.৩ চিত্রগ্রীবের মা ছিল যে বংশের-
(ক) হরবরা
(খ) হরকরা
(গ) কিংকরা
(ঘ) দরকরা

উত্তরঃ (খ) হরকরা।

১.৪ ছোট অবস্থায় চিত্রগ্রীবের দেহের রং ছিলো-
(ক) লাল
(খ) ধূসর
(গ) হলুদ
(ঘ) সাদা

উত্তরঃ (ক) লাল।

১.৫ চিত্রগ্রীবকে খাওয়ানো হতো _________ বীজ।
(ক) গমের
(খ) ভুট্টার
(গ) যবের
(ঘ) ধানের

উত্তরঃ (খ) ভুট্টার।

১.৬ মালসা থেকে চিত্রগ্রীব খেয়েছিলো—
(ক) ভাত
(খ) ভুট্টার দানা
(গ) জল
(ঘ) ধানের বীজ

উত্তরঃ (গ) জল।

১.৭ হপ্তা তিনেক বয়সে চিত্রগ্রীব মেরেছিলো- 
(ক) গোবরে পোকা
(খ) উই পোকা
(গ) প্রজাপতি
(ঘ) পিঁপড়ে

উত্তরঃ (ঘ) পিঁপড়ে।

১.৮ চিত্রগ্রীবের বাবার চোখ ছিলো-
(ক) সোনালি
(খ) ধূসর
(গ) সাদা
(ঘ) রূপালি

উত্তরঃ (ক) সোনালি।

১.৯ চিত্রগ্রীবের শিক্ষার ভার নিয়েছিলো-
(ক) কথক
(খ) করী
(গ) তার বাবা
(ঘ) তার মা

উত্তরঃ (গ) তার বাবা।

১.১০ কত মাস বয়সে চিত্রগ্রীব উড়ার শিক্ষা লাভ করেছিলো-
(ক) দুই মাস
(খ) তিন মাস
(গ) তিন সপ্তাহ
(ঘ) দুই সপ্তাহ

উত্তরঃ (ঘ) দুই সপ্তাহ।

১.১১ চিত্রগ্রীব ছাদের পাঁচিলে রোদ পোহাচ্ছিলো-
(ক) ২টা’র সময়
(খ) ১টা’র সময়
(গ) ৩টা’র সময়
(ঘ) ৪টা’র সময়

উত্তরঃ (গ) ৩টা’র সময়।

১.১২ চিত্রগ্রীবের পা ফসকে যাওয়ার পরে সে-
(ক) পড়ে গিয়েছিলো
(খ) ঘুমিয়ে পড়েছিলো
(গ) অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো
(ঘ) উড়তে শিখে ছিলো

উত্তরঃ (ঘ) উড়তে শিখে ছিলো।

১.১৩ চিত্রগ্রীব তার মায়ের সাথে উড়ে ছিলো প্রায়-
(ক) ১০ মিনিট
(খ) ২০ মিনিট
(গ) ১৫ মিনিট
(ঘ) ৫ মিনিট

উত্তরঃ (ক) ১০ মিনিট।

১.১৪ চিত্রগ্রীব হাঁপাচ্ছিল-
(ক) দুঃখে
(খ) ভয়ে
(গ) উত্তেজনায়
(ঘ) আনন্দে

উত্তরঃ (গ) উত্তেজনায়।

১৫. চিত্রগ্রীব গল্পে ডিমে বসে তা দেয়— 
(ক) মা পাখি 
(খ) বাবা পাখি 
(গ) বাবা মা দুই পাখি
(ঘ) উপরের কোনোটিই নয়

উত্তরঃ (গ) বাবা মা দুই পাখি।

১৬. চিত্রগ্রীবের পা ফসকে গেল—
(ক) গাছের ডাল থেকে 
(খ) বাড়ির ছাদ থেকে 
(গ) ছাদের পাঁচিল থেকে
(ঘ) নিজের বাসা থেকে

উত্তরঃ (গ) ছাদের পাঁচিল থেকে।

১৭. কথক চিত্রগুপকে ওড়ার শিক্ষা দেওয়ার জন্য তাকে বসাতেন—
(ক) হাতের উপর 
(খ) কনুই এর উপর 
(গ) কব্জির উপর 
(ঘ) মাথার উপর

উত্তরঃ (গ) কব্জির উপর।


২. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

২.১ চিত্রগ্রীবের বাবার কোন বিষয়টি অজানা ?
উত্তরঃ চিত্রগ্রীবের বাবা প্রতিদিন ডিমে তা দিলেও কবে ও কীভাবে সেই ডিম থেকে ছোট্ট ছানার জন্ম হবে তা তার অজানা।

২.২ পাখির জীবনের দুটি মধুর দৃশ্য কী কী?
উত্তরঃ পাখির জীবনের দুটি মধুর দৃশ্য হলো, ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনো এবং সেই বাচ্চাটিকে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে খাওয়ানো।

২.৩ মা পায়রা তার বাচ্চাকে শক্ত বীজ কী করে খাওয়ায় ?
উত্তরঃ বাচ্চাটিকে শক্ত বীজ প্রথমে খেতে দেওয়া হয় না। মা-পায়রা নিজে সেই বীজ
কিছুক্ষণ মুখে রেখে নরম করে বাচ্চাটিকে খাওয়ায়।

২.৪ বাচ্চা পায়রার বয়স কত হলে খোপের বাইরে এসে জল খায় ?
উত্তরঃ হপ্তা পাঁচেক বয়সে সে নিজে থেকেই খোপের বাইরে এসে জল খেতে শুরু
করে।

২.৫ চিত্রগ্রীব গল্পের ছবিগুলো কে এঁকেছেন ?
উত্তরঃ চিত্রগ্রীব গল্পের ছবিগুলো এঁকেছেন যুধাজিৎ সেনগুপ্ত।

২.৬ ‘আমার কাছে এ এক অলৌকিক ব্যাপার।’— লেখক এর কাছে কোন বিষয়টি অলৌকিক ব্যাপার ?
উত্তরঃ লেখক এর কাছে অলৌকিক ব্যাপার হলো— মা পায়রা জানে কেমন করে ঠিক জায়গায় ঠোকর দিতে হবে যাতে করে ডিমের খোলা টি ভেঙ্গে যাবে, অথচ বাচ্চার কিছু মাত্র ক্ষতি হবে না।

২.৭ পায়রা কীভাবে আঁধির মধ্যেও উড়তে পারে ?
উত্তরঃ পায়রার চোখের সামনে একটি ছোটো পাতলা ফিনফিনে পর্দা থাকে, এই পর্দাই তাদের চোখকে ঝড়ের সময় রক্ষা করে।


           (হাতে কলমে’র প্রশ্ন উত্তর) 

১.১ ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়ের কোন বইয়ের চিত্ররূপ তুমি পড়লে?
উত্তরঃ ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘Grey Neck’ বা ‘চিত্রগ্রীব’ বইটির চিত্ররূপ আমরা পড়লাম।

১.২ তাঁর লেখা অন্য আর একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ তাঁর লেখা অন্য আর একটি বইয়ের নাম হলো—’Hari : the jungle lad’.

২. ‘চিত্রগ্রীব’ নামক ছবিতে গল্পটি পড়ে চিত্রগ্রীবের বাবা ও মায়ের আচরণ তোমার কেমন লাগল কয়েকটি বাক্যে লেখো। বাবা-মায়ের সাহচর্যে চিত্রগ্রীব যেমন উড়তে শিখেছে, ঠিক তেমন কোন শিক্ষা তুমি প্রথম বাবা-মায়ের সাহচর্যে শিখেছ—মনে করে লেখো।

উত্তরঃ ‘চিত্রগ্রীব’ নামক ছবিতে গল্পটি পড়ে চিত্রগ্রীবের বাবা ও মা সম্বন্ধে আমরা অনেক কথা জানতে পারলাম ।
চিত্রগ্রীবের বাবা ও মা অত্যন্ত স্নেহশীল ছিলেন তাদের সন্তানের প্রতি। শিশুকালে তাকে নিয়ম করে সময়মতো খাওয়ানো
এবং উড়তে শেখানো তাদের সন্তানস্নেহের পরিচয় দেয়।

আমি আমার বাবা ও মাকে ছোটোবেলা থেকেই দেখছি। তারাও আমার প্রতি অত্যন্ত স্নেহপ্রবণ। মা এখনও আমাকে চোখে চোখে রাখেন। বাবাও সকালে ও দিনের শেষে অফিস বা কাজ থেকে ফিরে আমাকে খুব আদর করেন ও যত্ন
নিয়ে পড়ান। এমনিভাবেই আমি আমার বাবা ও মায়ের আচরণের সঙ্গে চিত্রগ্রীবের বাবা ও মায়ের আচরণের মিল খুজে পাই ।

৩. তোমরা ‘চিত্রগ্রীব’নামের পায়রাটির উড়তে শেখার কথা জানলে। তুমি কখনও টিয়া বা চন্দনার মতো এমন কোনো পাখি দেখেছ যারা কথা বলতে পারে ? যদি এই ধরনের কোনো পাখির সঙ্গে তোমার ভাব হয়, তাহলে তুমি তার সঙ্গে কী কথা বলবে? তোমাদের সেই কাল্পনিক সংলাপটি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ 

৪. ‘চিত্রগ্রীব’ যেমন একটি ‘ছবিতে গল্প’ঠিক এই রকমের একটি ছবিতে গল্প বন্ধুরা মিলে ‘কুমোরে-পোকার বাসাবাড়ি’ বা ‘সেনাপতি শংকর’রচনাংশটি অবলম্বনে তৈরি করে দেখতে পারো।
উত্তরঃ নিজেরা করো।

Leave a Reply