প্রশ্ন:- “আসল বাঁদাটার খোঁজ করা হয় না আর উচ্ছবের।”- আসল বাদাটা কোথায় ? উচ্ছব আর আসল বাদাটা খোঁজ করতে পারল না কেন ? ১+৪
উঃ প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী’র লেখা ‘ভাত’ গল্পে বাসিনীর মনিব বাড়ির পাঁচ রকমের ধানের চাল যে ‘বাদা’ থেকে আসে সেই ‘বাদা’ অঞ্চলকেই উচ্ছব নাইয়া আসল ‘বাদা’ বলেছে।
দীর্ঘদিনের উপােসী উচ্ছব এক মুঠো ভাতের আশায় গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর সঙ্গে কলকাতায় এসে বড়াে বাড়িতে কাজ নিয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন রকমের চালের বহর দেখে উচ্ছব অবাক হয়ে বলে-
হ্যাঁ। বাসিনী, নানানিধি চাল ?
বড়াে বড়িতে পাঁচ রকমের ভাত রান্না হয় প্রতিদিন—এমন কথা আগে সে শােনেনি কোথাও। উৎসব জানতে পারে, এইসব চাল বাদা থেকে আসে। অথচ উচ্ছব বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা হয়েও তার ভাত জোটে না। বাবুদের বাদার খোঁজ নেওয়ার ইচ্ছে হয় উচ্ছবের। মনে প্রশ্ন জাগে-
‘সে কোন বাদা ? উচ্ছবের বাদায় শুধু গুগলি-গঁড়ি-কচুশাক-শুশনো শাক।’ এদিকে বুড়াে কর্তা মারা গেলে বড় পিসিমার নির্দেশে অশৌচের সমস্ত ভাত ফেলে দিতে যায় বাসিনী। কিন্তু বাসিনীর নিষেধ অমান্য করে ভাতের ডেকচি নিয়ে পালায় উচ্ছব। রেল স্টেশনে বসে ভাত খেতে খেতে ফের বাদার কথা মনে জাগে।
‘বাদার ভাত। বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন। আছে আর একটা বাধা আছে সে বাঁধাটা খোঁজ নির্ঘাত পাবে উচ্ছব।’
প্রাণভরে ভাত খেয়ে ভরা পেটে ভাতের ডেকচি জাপ্টে ধরে কানায় মাথা ছুঁইয়ে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। সকালে বাবুর বাড়ির লোকজন এসে উৎসবকে ধরে ফেলে। পিতলের চুরির অপরাধে তাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। আসল বাদা খোঁজার বাসনা তার বুকের মাঝে চাপা পড়ে যায়।
আরো দেখো….