প্রশ্ন: দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতাে হিংস্র ভঙ্গি করে।’- কে, কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল? তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করাে।

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

প্রশ্ন: ‘দাঁতগুলাে বের করে সে কামটের মতাে হিংস্র ভঙ্গি করে।’- কে, কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল? তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করাে। ১+১+৩=৫

    উত্তর: মহাশ্বেতা দেবী বিরচিত ‘ভাত’ ছোটোগল্পের মুখ্য চরিত্র ক্ষুদার্থ উচ্ছব নাইয়াকে অশৌচ বাড়ির রাঁধা ভাত খেতে তার গ্রাম সম্পর্কিত বােন বাসিনী বারণ করলে সে হিংস্র হয়ে ওঠে এবং বাসিনী’র প্রতি হিংস্র কামটের মত আচরণ করে।

      মাতলা নদীর বন্যায় সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের সর্বহারা উচ্ছব পেটের তাগিদে তার গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর সঙ্গে কলকাতায় রায়। সেখানে বাসিনী এক বড়ো বাড়িতে কাজ নিয়েছিলো। উচ্ছবও সেখানে ভাতের বিনিময়ে হোম যজ্ঞের জন্য কাঠ কাটতে শুরু করে। তার পরেও তার ভাগ্য সঙ্গ দেইনি। বুড়োকর্তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হােমযজ্ঞ শেষ না হলে খাওয়া হবে না—এই যুক্তিতে সে তার চরম কাঙ্ক্ষিত খাবার থেকে বঞ্চিত হয়। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কাঠ কাটার কাজ শেষ করার পরেও সে ভাত খেতে পাইনি কারণ মনিব বাড়ির বড়ো কর্তা মারা যান। হিন্দুদের রীতি অনুযায়ী অশৌচ হওয়ার কারণে বড় পিসিমার নির্দেশে বাসিনী রান্না করা এক হাঁড়ি ভাত বাইরে ফেলতে যায়। উচ্ছব এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি, নিজের অন্তরের লালিত ক্ষুধা নিবারণের উদ্দেশ্যে বাসিনীর হাত থেকে ডেকচি নিয়ে দূরে ফেলে আসার কথা বলে।

যে বাদার ভাতের জন্য তার দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা, সেই ভাত এখন তার হাতের মুঠোয়। ডেকচি নিয়ে উচ্ছব প্রথমে দ্রুত হেঁটে, তারপর দৌড়ে স্টেশনে পৌঁছােয়। আনন্দে আত্মহারা উচ্ছব ভাত খেতে শুরু করলে বাসিনী অশৌচ বাড়ির ভাত খেতে বারণ করে। কিন্তু ক্ষুদার্থ উচ্ছবের কাছে সামাজিক সংস্কার মূল্যহীন, তাই বাসিনী বারণ করলে সে বাদার কামটের মতো আচরণ করে। আসলে খিদের মতাে আদিম প্রবৃত্তি মানুষকে পশুর মতােই হিংস্র করে তােলে। তাই অভুক্ত উচ্ছব উদ্বৃত্ত ভাত খাওয়ার জন্য পশুর মতােই মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

আরো দেখো….
🔰ভাত গল্পের MCQ  Test  CLICK HERE


Leave a Reply