সাহিত্য মেলা
সপ্তম শ্রেণি বাংলা
সপ্তম শ্রেণির বাংলা (ষষ্ঠ পাঠ) চিরদিনের কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Smriti Chinho Kobitar Question Answer wbbse
সপ্তম শ্রেণির বাংলা (ষষ্ঠ পাঠ) চিরদিনের কবিতা, কবি পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Smriti Chinho Kobitar Question Answer wbbse
1. সপ্তম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
3. সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
4. সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
5. সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
সপ্তম শ্রেণির বাংলা (ষষ্ঠ পাঠ) চিরদিনের কবিতার কবি পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Smriti Chinho Kobitar Question Answer wbbse
চিরদিনের
—সুকান্ত ভট্টাচার্য
এখানে বৃষ্টিমুখর লাজুক গাঁয়ে
এসে থেমে গেছে ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা,
সবুজ মাঠেরা পথ দেয় পায়ে পায়ে
পথ নেই, তবু এখানে যে পথ হাঁটা।
জোড়া দিঘি, তার পাড়েতে তালের সারি দূরে বাঁশঝাড়ে আত্মদানের সাড়া,
পচা জল আর মশায় অহংকারী
নীরব এখানে অমর কিষাণপাড়া।
এ গ্রামের পাশে মজা নদী বারো মাস
বর্ষায় আজ বিদ্রোহ বুঝি করে,
গোয়ালে পাঠায় ইশারা সবুজ ঘাস
এ গ্রাম নতুন সবুজ ঘাগরা পরে।
রাত্রি এখানে স্বাগত সান্ধ্য শাঁখে
কিষাণকে ঘরে পাঠায় যে আল-পথ;
বুড়ো বটতলা পরস্পরকে ডাকে
সন্ধ্যা সেখানে জড়ো করে জনমত।
দুর্ভিক্ষের আঁচল জড়ানো গায়ে
এ গ্রামের লোক আজো সব কাজ করে, কৃষক-বধূরা ঢেঁকিকে নাচায় পায়ে
প্রতি সন্ধ্যায় দীপ জ্বলে ঘরে ঘরে।
রাত্রি হলেই দাওয়ার অন্ধকারে
ঠাকুমা গল্প শোনায় যে নাতনিকে,
কেমন করে সে আকালেতে গতবারে,
চলে গেল লোক দিশাহারা দিকে দিকে। এখানে সকাল ঘোষিত পাখির গানে
কামার, কুমোর, তাঁতি তার কাজে জোটে, সারাটা দুপুর ক্ষেতের চাষির কানে
একটানা আর বিচিত্র ধ্বনি ওঠে।
হঠাৎ সেদিন জল আনবার পথে
কৃষক-বধূ সে থমকে তাকায় পাশে,
ঘোমটা তুলে সে দেখে নেয় কোনোমতে, সবুজ ফসলে সুবর্ণ যুগ আসে ৷।
‘অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর’ চিরদিনের কবিতা সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Chirodiner Kobitar Question Answer Class 7 Bengali wbbse
• অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর।
১. বাংলা সাহিত্যে কিশোর কবি হলেন—
(ক) দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (খ) সুকান্ত ভট্টাচার্য
(গ) জীবনানন্দ দাশ (ঘ) সুকুমার রায়
উত্তরঃ (খ) সুকান্ত ভট্টাচার্য।
২. ‘চিরদিনের’ কবিতাটির রচয়িতা হলেন—
(ক) নজরুল ইসলাম (খ) সুকুমার রায়
(গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ঘ) সুকান্ত ভট্টাচার্য
উত্তরঃ (ঘ) সুকান্ত ভট্টাচার্য
৩. জোড়া দিঘির পাড়ে যে গাছের সারি—
(ক) খেজুরের (খ) বটের (গ) শটিবনের
(ঘ) তালের
উত্তরঃ (ঘ) তালের।
৪. ‘নীরব এখানে অমর _________।’— শূন্যস্থানে সঠিক শব্দটি বসাও।
(ক) জেলে পাড়া (খ) কিষাণপাড়া (গ) কুমোর পাড়া
(ঘ) তাঁতি পাড়া
উত্তরঃ (খ) কিষাণপাড়া।
৫. ‘বর্ষায় আজ বিদ্রোহ বুঝি করে’- এখানে কার বিদ্রোহ করার কথা বলা হয়েছে?
(ক) অহংকারী মশার (খ) কিষাণের
(গ) জোড়া দিঘির (ঘ) মজা নদীর
উত্তরঃ (ঘ) মজা নদীর।
৬. ‘চিরদিনের’ কবিতায় যে সময়ের
দুর্ভিক্ষের কথা এসেছে-
(ক) ১৯৪৩ খ্রিঃ (খ) ১৯৪৪ খ্রিঃ
(গ) ১৯৫০ খ্রিঃ (ঘ) ১৯৭৬ খ্রিঃ
উত্তরঃ (ক) ১৯৪৩ খ্রিঃ
৭. ঢেঁকিকে নাচায় পায়ে—
(ক) গ্রাম্যবধূ (খ) কৃষক-বধূরা
(গ) গ্রামের কৃষকেরা (ঘ) ঠাকুমা
উত্তরঃ (খ) কৃষক-বধূরা।
৮. ঠাকুমা গল্প শোনায়—
(ক) শিশুদের (খ) নাতনিকে (গ) নাতিকে
(ঘ) পাড়াপড়শিকে
উত্তরঃ (খ) নাতনিকে।
৯. এখানে সকাল ঘোষিত হয়—
(ক) কোকিলের কলতানে
(খ) পাখির গানে
(গ) ঝিঁঝির ডাকে
(ঘ) মেঘের ডাকে
উত্তরঃ (খ) পাখির গানে।
১০. সুবর্ণ যুগ আসে—
(ক) সোনালি ধানে (খ) নব দিগন্তে
(গ) নীল আকাশে (ঘ) সবুজ ফসলে
উত্তরঃ (ঘ) সবুজ ফসলে।
১১. চিরদিনের কবিতাটি সুকান্ত ভট্টাচার্যের যে কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত—
(ক) ছাড়পত্র (খ) ঘুম নেই (গ) পূর্বাভাস
(ঘ) মিটে কড়া
উত্তরঃ (খ) ঘুম নেই।
কবি পরিচিতি : সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের এক বিস্ময়কর কবি। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি পরলোকগমন করেন । মাত্র একুশ বছরের জীবনেই কবিতা রচনায় তিনি যে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তা পাঠককে চমকে দেয়। বাংলা ভাষা-সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি ‘কিশোর-কবি নামে পরিচিত বাংলা কবিতায় তিনি সাম্যবাদী চেতনার বিস্তার ঘটান। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল— ‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই, ‘পূর্বাভাস’, ‘মিঠেকড়া’ প্রভৃতি। স্বল্পায়ু এই কবি আর একটু দীর্ঘজীবী হলে আধুনিক বাংলা কবিতার দিগন্ত আরও নতুন সৃষ্টি সম্ভাবনায় পূর্ণ হয়ে উঠতে পারত। ‘চিরদিনের’ কবিতাটি তাঁর ‘ঘুম নেই’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।
গদ্যরূপ : এখানে বৃষ্টিমুখর এবং লাজুক গাঁয়ে ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা এসে থেমে গেছে। এখানে পথ নেই তবু সবুজ মাঠে পায়ে পায়ে যে পথ তৈরি হয় সেই পথেই হাঁটা। জোড়া দিঘির পাড় দিয়ে রয়েছে তালগাছের সারি, দূরে থাকা বাঁশঝাড় থেকে যেন আত্মদানের সাড়া মেলে, সুন্দরের পাশাপাশি আছে পচা জল আর মশার অহংকার, এইসব নিয়েই এখানে নীরব কিন্তু অমর কিষাণ পাড়ার অবস্থান। এই গ্রামের পাশেই আছে মজা নদী, কিন্তু বর্ষাকালে তা যেন বিদ্রোহ করে ওঠে। গোয়ালঘরে সবুজ ঘাস ইশারা পাঠায়, গ্রাম যেন নতুন সবুজ ঘাগরা পরে নেয়। সন্ধ্যায় শঙ্খধ্বনিতে রাত্রিকে স্বাগত জানানো হয়, আল-পথ দিয়ে কৃষকেরা ঘরে ফেরে। বুড়ো বটতলাগুলো যেন পরস্পরকে ডাক পাঠায়, সন্ধ্যায় এই বটতলাগুলোতেই নানা জনমত জড়ো হয়। যদিও দুর্ভিক্ষের কষ্ট-যন্ত্রণা আছে তবুও এ গ্রামের লোক আজও সবাই কাজ করে। কৃষকদের বউরা পা দিয়ে ঢেঁকি নাচায়, প্রতি সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বলে ওঠে। সন্ধ্যা হলেই ঠাকুমা দাওয়ায় বা উঠোনে বসে নাতনিকে গল্প শোনায়। সেই গল্পে থাকে আকালে কেমন করে দিশাহারা লোক দিকে দিকে চলে গেল তার কাহিনি। এখানে পাখির ডাকে সকাল ঘোষণা হয়। কামার, কুমোর, তাঁতি সকলে কাজ করতে যায়। সারা দুপুর খেটে চাষির কানে একটানা বিচিত্র শব্দ বাজতে থাকে। হঠাৎ সেদিন জল আনতে যাবার পথে কৃষক-রমণীরা ঘোমটা তুলে কোনোমতে পাশে তাকিয়ে দেখে নেয় সবুজ ফসলে সোনার যুগের আগমন।
সারাংশ : “চিরদিনের’ কবিতায় সাম্যবাদী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এক চিরন্তন গ্রামের ছবি এঁকেছেন। যেখানে সুন্দর-অসুন্দর পাশাপাশি অবস্থান করে। সেখানে একদিকে যেমন আছে সবুজের সমারোহ, প্রাণের অফুরন্ত সম্ভার, অন্যদিকে তেমনই আছে দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্যের হাহাকার। শুধুমাত্র বাংলার চিরন্তন গ্রামের বিপরীত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেই থেমে থাকেননি কবি ; সচেতনভাবে তুলে ধরেছেন মানুষের জীবন-যাপনের চিত্র। কৃষিজীবী-শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপন, গ্রামের বধূদের কাজের পদ্ধতিও। এমনকি ঠাকুমা-দিদিমার গল্পের মধ্যে দিয়ে কিশোর নাতি-নাতনির ইতিহাসজ্ঞানের কথা উল্লেখ করতেও ভোলেননি তিনি। সাম্যবাদী কিশোর কবি তাই সবুজ ফসলে সুবর্ণযুগের আশ্বাস বুনে দিয়েই কবিতা শেষ করেন।
• শব্দার্থ :
» বৃষ্টিমুখর— বৃষ্টিপতনের ধ্বনিপূর্ণ। ঘোষিত— প্রচারিত।
» আত্মদান— পরার্থে জীবন দান।
» ঢেঁকি— শস্য ভানবার বা কুটবার যন্ত্রবিশেষ।
» মজা নদী— বুজে যাওয়া নদী।
» দাওয়া— বারান্দা, রোয়াক।
» সান্ধ্য— সন্ধ্যাকালীন।
» আকাল— দুর্ভিক্ষ, দুঃসময়।
» কিষাণ— কৃষাণ, কৃষক, চাষি।
» দিশাহারা— দিগ্ভ্রান্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
» জনমত— সাধারণ বা অধিকাংশ
লোকের অভিমত।
» ধ্বনি— শব্দ, রব।
(হাতে কলমে’র প্রশ্ন ও উত্তর)
১. নীচের শব্দগুলির অন্তত দুটি অর্থ লেখো এবং দুটি পার্থক্য বাক্যে প্রয়োগ করো :
উত্তরঃ
• কাঁটা :
(ক) গাছের কাঁটা— গোলাপ গাছে কাঁটা থাকে বলেই গোলাপ ফুল এত সুন্দর।
(খ) পুলক/রোমাঞ— ভূতের গল্প শুনলে অনেকেরই গায়ে কাঁটা দেয়।
• তাল :
(ক) গাছবিশেষ—তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
(খ) দলা বা পিণ্ড—একতাল কাদা শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় মূর্তি হয়ে ওঠে।
• জোড়া :
(ক) যুগল/দুটি—মানিক বাবু আজ একজোড়া ইলিশ মাছ নিয়ে ফিরেছেন।
(খ) যুক্ত/আঠা—আঠা ভালো হলে কাঠের সঙ্গে কাচও জোড়া লাগে।
• সারি :
(ক) শ্রেণি/পক্তি—সারি সারি সৈন্য গ্রামে ঢুকেছে।
(খ) মাঝি মাল্লাদের গান বিশেষ—আজও বাংলার বহু গ্রামে সারি গান শোনা যায়।
• মজা :
(ক) আনন্দ— পুজোর সময় মজা করার জন্য রিঙ্কু মুখিয়ে আছে।
(খ) বদ্ধ— মজা পুকুরের জলে স্নান করা উচিত নয়।
• পাশ :
(ক) নৈকট্য—স্বার্থপর লোকেরা বিপদের দিনে বন্ধুদের পাশ কাটিয়ে যায়।
(খ) সাফল্য—মাধ্যমিক পাশ করার পর মা আমাকে হাতঘড়ি উপহার দিল।
২. নীচের শব্দযুগলের অর্থ পার্থক্য নির্দেশ করে দুটি আলাদা বাক্য তৈরি করো :
উত্তরঃ
» কাঁটা (কণ্টক) : চুলের কাঁটা মহিলাদের অলংকার বিশেষ ।
» কাটা (ছেদন করা) : নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
» পার (কিনারা) : (১) নদীর পারে বসে সূর্যাস্ত দেখতে ভালো লাগে। (২) নদীর পারে কাশবন।
» পার (উদ্ধার) : এবার চালাকি করে পার পাওয়া যাবে না।
» পাড় (বস্ত্রের প্রান্ত) : পাড়ওয়ালা ধুতি পরতে শৌখিন লোকেরা পছন্দ করে।
» জড়ো (জমায়েত) : মিছিলের জন্য চারহাজার মানুষ জড়ো হয়েছে।
» জড় (প্রাণহীন) : জীব ও জড়ের বৈচিত্র্যে প্রকৃতি অপরিসীম সুন্দর।
» সব (সমস্ত) : ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে।’
» শব (মৃতদেহ) : রাজুর শব ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
» দীপ (বাতি) : সন্ধ্যা বেলায় দীপ জ্বালা গ্রামবাংলার রেওয়াজ ।
» দ্বীপ (প্রাকৃতিক জলবেষ্টিত স্থান) : আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বেড়াতে যাব।
৩. ঠিক বানানটি বেছে নাও :
উত্তরঃ
» ব্যাস্ত/ব্যস্ত ✓ » দূর্ভিক্ষ / দুর্ভিক্ষ ✓
» ✓ ধ্বনি / ধনি » ✓ সান্ধ্য/সান্ধ
» বধু / বধূ ✓ » সুবর্ন / সুবর্ণা ✓
৪. নীচের শব্দগুলির কোনটি বিশেষ্য এবং কোনটি বিশেষণ বাছাই করে আলাদা দুটি স্তম্ভে সাজাও। এরপর বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ এবং বিশেষণগুলির বিশেষ্যের রূপ লেখো।
(লাজুক, ব্যস্ত, মাঠ, সন্ধ্যা, গ্রাম, ঘর, ঘোষিত, চাষি)
বিশেষ্য বিশেষণ
মাঠ মেঠো।
সন্ধ্যা সান্ধ্য।
গ্রাম গ্রাম্য
চাষি চাষযোগ্য।
ঘর ঘরোয়া।
ফসল ফসলি।
বিশেষণ বিশেষ্য
লাজুক লাজ।
ব্যস্ত ব্যস্ততা।
ঘোষিত ঘোষণা।
জলীয় জল
৫. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
উত্তরঃ
» মুখর— মৌন। » অহংকারী— অহংকারহীন।
» অন্ধকার— আলো। » একটানা— বিশ্রাম।
» বিচিত্র— সরল।
৬. ঘড়ির কাঁটা’— এখানে ‘ঘড়ি’ আর ‘কাঁটা’, এই দুটি শব্দের মধ্যে সম্বন্ধ তৈরি করেছে ‘র’ বিভক্তিটি, ‘ঘড়ির কাঁটা’কে তাই আমরা বলব সম্বন্ধ পদ। এই কবিতায় এই রকম আরো ক’টি উদাহরণ খুঁজে পাচ্ছ লেখো।একটি করে দেওয়া হল—তালের সারি।
উত্তরঃ ঘড়ির কাঁটা, দুর্ভিক্ষের আঁচল, দাওয়ার অন্ধকার, পাখির গান, ক্ষেতের (খেতের) চাষি।
৭. সন্ধিবিচ্ছেদ করো :
উত্তরঃ
» বৃষ্টি— বৃষ্ + তি,
» স্বাগত— সু + আগত,
» অহংকার— অহম্ + কার,
» পরস্পর— পরঃ + পর,
» দুর্ভিক্ষ— দুঃ + ভিক্ষ।
৮. নিম্নরেখ পদগুলির কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো :
৮.১ রাত্রি এখানে স্বাগত সান্ধ্য শাঁখে।
উত্তরঃ করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৮.২ এখানে সকাল ঘোষিত পাখির গান ।
উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৮.৩ এ গ্রামের পাশে মজা নদী বারো মাস।
উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৮.৪ ঠাকুমা গল্প শোনায় যে নাতনিকে ।
উত্তরঃ কর্মকারকে ‘কে’ বিভক্তি।
৮.৫ কৃষক-বধূরা ঢেঁকিকে নাচায় পায়ে ।
উত্তরঃ কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তি।
৯. বাক্য বাড়াও :
৯.১ চলে গেল লোক। (কখন ? কেন ? কোথায় ?)
উত্তরঃ
» (কখন ?)— চলে গেল লোক সকালে।
» (কেন ?)— চলে গেল লোক আকালেতে।
» (কোথায় ?)— চলে গেল লোক দিকে দিকে ভ্রমে।
৯.২ আজ বিদ্ৰোহ বুঝি করে। (কে? কখন ?)
উত্তরঃ
» (কে ?)— মজা নদী আজ বিদ্রোহ বুঝি করে।
» (কখন ?)— বর্ষায় আজ বিদ্রোহ বুঝি করে।
৯.৩ ঘোমটা তুলে দেখে নেয় কোনোমতে। (কে? কী ? কোথায় ?)
উত্তরঃ
» (কে ?)— কৃষক বধূ ঘোমটা তুলে দেখে নেয় কোনোমতে।
» (কী ?)— ঘোমটা তুলে দেখে নেয় কোনোমতে, সুবর্ণ যুগ আসে।
» (কোথায় ?)— ঘোমটা তুলে দেখে নেয় কোনোমতে, সবুজ ফসলে।
৯.৪ এ গ্রাম সবুজ ঘাঘরা পরে। (কেমন ? কীসের ?)
উত্তরঃ
» (কেমন ?)— এ গ্রাম নতুন সবুজ ঘাঘরা পরে।
» (কীসের ?)— সবুজ ঘাসের এ গ্রাম সবুজ ঘাঘরা পরে।
৯.৫ দীপ জ্বলে। (কোথায় ? কখন ?)
উত্তরঃ
» (কোথায় ?)— গ্রামে দীপ জ্বলে।
» (কখন ?)— প্রতি সন্ধ্যায় দীপ জ্বলে।
১০. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১০.১ ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা কোথায় গিয়ে থেমে গেছে ?
উত্তরঃ ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা বৃষ্টিমুখর লাজুক গাঁয়ে গিয়ে থেমে গেছে।
১০.২ তালের সারি কোথায় রয়েছে ?
উত্তরঃ জোড়া দিঘির পাড়েতে তালের সারি রয়েছে।
১০.৩ কিষাণপাড়া নীরব কেন ?
উত্তরঃ কিষাণপাড়ার নীরবতার কারণ পচা জল আর মশার অহংকার।
১০.৪ বর্ষায় কে বিদ্রোহ করে ?
উত্তরঃ গ্রামের পাশের মজা নদী বর্ষায় বিদ্রোহ করে।
১০.৫ কে গোয়ালে ইশারা পাঠায় ?
উত্তরঃ সবুজ ঘাস গোয়ালে ইশারা পাঠায়।
১০.৬ রাত্রিকে কীভাবে স্বাগত জানানো হয় ?
উত্তরঃ সান্ধ্য শাঁখে রাত্রিকে স্বাগত জানানো হয় ৷
১০.৭ কোথায় জনমত গড়ে ওঠে ?
উত্তরঃ বুড়ো বটতলায় জনমত গড়ে ওঠে।
১০.৮ ঠাকুমা কাকে, কখন গল্প শোনান ?
উত্তরঃ ঠাকুমা নাতনিকে, রাত্রি হলেই গল্প শোনান।
১০.৯ কোন্ গল্প তিনি বলেন ?
উত্তরঃ গতবারের আকালে দিশাহারা লোকের দিকে দিকে চলে যাবার গল্প তিনি শোনান।
১০.১০ সকালের আগমন কীভাবে ঘোষিত হয় ?
উত্তরঃ পাখির ডাকে সকালের আগমন ঘোষিত হয়।
১০.১১ কবিতায় কোন্ কোন্ জীবিকার মানুষের কথা আছে ?
উত্তরঃ কবিতায় কৃষক, কামার, কুমোর, তাঁতি প্রভৃতি জীবিকার মানুষের কথা আছে।
১১. আট দশটি বাক্যে উত্তর দাও :
১১.১. এই কবিতায় বাংলার পল্লি প্রকৃতির যে বর্ণনা আছে তা নিজের ভাষায় সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা ‘চিরদিনের’ কবিতায় বাংলার পল্লি প্রকৃতির নিপুণ চিত্র বর্ণিত হয়েছে। পল্লিপ্রকৃতির আপাত সুন্দর রূপেই কবি সীমাবদ্ধ থাকেননি, তার অসুন্দর, তার লড়াইয়ের ছবিও কবি তুলে ধরেছেন। সেখানে শহুরে ব্যস্ততা নেই, বৃষ্টিমুখর লাজুক তার রূপ। পাকা রাস্তা না থাকলেও সবুজ মাঠের বুকে পায়ে পায়ে তৈরি হয় পথ। জোড়া দিঘির পাড়ে তালের সারি, দূরে বাঁশঝাড় পল্লিপ্রকৃতিকে মোহময় করে তোলে। বর্ষার আগমনে পল্লিপ্রকৃতিতে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়, মজা নদী নতুন করে ফুলে ফেঁপে ওঠে। চারিদিকে সবুজের সমারোহ নতুনের বার্তা বয়ে আনে। এই পল্লিপ্রকৃতিতে পচা জল, মশার উৎপাত, আকাল দুর্ভিক্ষও আছে কিন্তু তা পল্লিজীবনের স্পন্দনকে স্তব্ধ করতে পারে না। সবুজ ফসলে পল্লিবাংলার মানুষ তাই সোনা যুগের আহ্বান শুনতে পায় ৷
১১.২. কবিতাটিতে গ্রামীণ মানুষের জীবনযাপনের যে ছবিটি পাও তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
উত্তরঃ কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা ‘চিরদিনের’কবিতাটিতে পল্লি বাংলার চিরায়ত পরিবেশে সাধারণ শ্রমজীবী কৃষিজীবী মানুষের জীবনযাপনের ছবিও নিপুণ ভাবে আঁকা হয়েছে। পল্লি-বাংলার মানুষের জীবন যেন নিজস্ব সুর ও ছন্দে বয়ে চলে। পাখির কলকাকলিতে তাদের দিন শুরু হয়। সারাদিন কৃষকেরা খেতে সোনার ফসল উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে। কামার, কুমোর, তাঁতি প্রত্যেকেই নিজ নিজ কাজ ধারাবাহিক ভাবে করে যান। গ্রামের বধূরাও একদিকে পায়ে পায়ে ঢেঁকি নাচান, তারপর শাঁখের শব্দে, দীপের আলোয় রাত্রিকে স্বাগত জানান। সন্ধ্যাবেলায় বুড়ো বটতলায় জড়ো হন গ্রামের মানুষ, সেখানেই গড়ে ওঠে জনমত। আকাল, দুর্ভিক্ষ তাদের বারবার বিপর্যস্ত করলেও সোনার ফসলের স্বপ্ন তাদের প্রাণ স্পন্দন কেড়ে নিতে পারে না ।
১১.৩. আকাল ও দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে মানুষের সম্মিলিত শ্রম আর জীবনীশক্তি কীভাবে বিজয়ী হয়েছে, কবিতাটি অবলম্বনে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ গ্রামবাংলার মানুষের বুকে আজও অনুরণিত হয় পঞ্চাশের মন্বন্তরের হাহাকার। সেই পটভূমি উঠে এসেছে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘চিরদিনের’ কবিতাটিতে। কিন্তু সাম্যবাদী কবি হাহাকারেই কবিতা শেষ করেননি, মানুষের সম্মিলিত শ্রম আর জীবনীশক্তিকে অবলম্বন করে মুক্তিপথের অনুসন্ধান করেছেন। তাইতো চরম বিপর্যয়ের পরও কিষান লাঙল হাতে
মাঠে নামে। কাজে যায় কামার, কুমোর, তাঁতি। আর তাদের সম্মিলিত উদ্যোগেই পল্লি-বাংলা নতুন প্রাণ ফিরে পায়।
১১.৪. “কোনো বিশেষ সময়ের নয়, বরং আবহমান কালের বাংলাদেশ তার প্রকৃতি ও মানুষকে নিয়ে জীবনের যে জয়গান গেয়ে চলেছে, এই কবিতায় তারই প্রকাশ দেখতে পাই।”—উপরের উদ্ধৃতিটির সাপেক্ষে কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তরঃ সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা ‘চিরদিনের’ কবিতাটির ছত্রে ছত্রে চিরন্তন গ্রাম বাংলার আবহমান রূপ ধরা পড়েছে। পল্লিপ্রকৃতির সুন্দর-অসুন্দরের বিন্যাসে কৃষক-শ্রমজীবী মানুষের জীবনের চিরাচরিত ছবি। দুর্ভিক্ষ-আকালের মতো বিপর্যয়ও সেখানে কড়া নাড়ে কিন্তু গ্রাম বাংলার মানুষের অফুরন্ত জীবনীশক্তি তাকে পরাস্ত করে নতুন জীবনের গান বয়ে আনে। আর সেই ইতিহাস বিধৃত থাকে ঠাকুমা-দিদিমার গল্পে যা বংশ পরম্পরায় ধাবিত হয়। আর সে কারণেই কবিতাটির নামকরণ
সার্থক।
১২. ব্যাখ্যা করো :
১২.১ “এখানে বৃষ্টিমুখর ….. ঘড়ির কাঁটা”।
উত্তরঃ পল্লিবাংলায় শহুরে ব্যস্ততা নেই। কাজের জন্য মানুষকে এখানে যন্ত্রের মতো ছুটতে হয় না। ঋতুচক্রের সাবলীল পরিক্রমণে পল্লিসুন্দর, আর তাই সে উদ্ধত নয় লাজুক।
১২.২. “এ গ্রামের পাশে….. বিদ্রোহ বুঝি করে”।
উত্তরঃ গ্রামের পাশে ছোট্ট নদী, এ বাংলার অতিপরিচিত চিত্র। বর্ষার জলে পুষ্ট নদীগুলি অন্য সময় মজে থাকলেও বর্ষাকালে তারা প্রবল আকার ধারণ করে, দেখে মনে হয় তারা যেন বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে।
১২.৩. “দুর্ভিক্ষের আঁচল….কাজ করে”।
উত্তরঃ খরা, বন্যা, মহামারি গ্রামে লেগেই থাকে। এই সব ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় বারবার গ্রামবাংলাকে বিপর্যস্ত করে। এখানে পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিতে গ্রামের মানুষ যে প্রবল জীবন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রেখেছিল তার কথা এসেছে।
১২.৪. “সারাটা দুপুর……বিচিত্র ধ্বনি ওঠে”।
উত্তরঃ গ্রামের চাষিরা সকালে কাজে যান সারা দুপুর তারা খেতে কাজ করেন। তারা যখন একটানা কাজ করেন তখন কাজের সময় তৈরি হওয়া নানান চেনা-বিচিত্র শব্দ তাদের কানে বাজতে থাকে।
১২.৫ “সবুজ ফসলের সুবর্ণযুগ আসে”।
উত্তরঃ সাম্যবাদী কবি সোনার ফসলের স্বপ্ন বুনে কবিতাটি শেষ করতে চেয়েছেন। আজও গ্রাম বাংলার জীবন যেহেতু কৃষির ওপর নির্ভরশীল তাই চাষবাসকে ঘিরেই গড়ে ওঠে তাদের জীবন সংগ্রাম। আর সোনার ফসলের আগমনে সে সংগ্রামে আসে জয়।
১৩. তোমার দেখা একটি গ্রামের কথা ডায়েরিতে লেখো। গ্রামটি কোথায়, সেখানে কোন্ কোন্ জীবিকার কতজন মানুষ থাকেন ইত্যাদি জানিয়ে গ্রামটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানুষজনের জীবনযাপন পদ্ধতি, বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার কথা লেখো। গ্রামটির উন্নতিসাধনে যদি কোনো পরামর্শ দেওয়ার থাকে, অবশ্যই সেকথা লিখবে।
📌আরও পড়ুনঃ
📌 সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র | All Subject Unit Test Question Paper Click Here
📌 সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
📌 সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
📌 সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
Pingback: সপ্তম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর | WBBSE Class 7 Bengali Question Answer - Prosnodekho -
আমার একটা প্রশ্ন করতে পারছিণা
শব্দেথর :পার, জীবণ
দুটো বাক্য সংযোজন করা হলো।
I don’t know😒📝
ব্যাখ্যা করো – প্রশ্নের উত্তর গুলি মনের মত হয়ে নি
চেষ্টা করবো পরিবর্তন করার।