পিঁপড়ে – অমিয় চক্রবর্তী
(হাতে কলমে’র প্রশ্ন ও উত্তর)
১.১ অমিয় চক্রবর্তী কোথায় অধ্যাপনা করতেন?
উত্তরঃ অমিয় চক্রবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যু পলজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন।
১.২ তার দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ তার দুটি কবিতার বইয়ের নাম হল ‘পুষ্পিত ইমেজ’ ও ‘ঘরে ফেরার দিন’।
২. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
২.১ কবির কী দেখে কেমন যেন চেনা লাগে’ মনে হয়েছে?
উত্তরঃ ক্ষুদ্র জীব পিঁপড়ের আনাগোনা দেখে কবির ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ মনে হয়েছে।
২.২ ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ কবির মনে হয়েছে পিঁপড়ের গতিবিধি তার পূর্বপরিচিত, তাই তিনি একথা বলেছেন।
২.৩ কবি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি কেন?
উত্তরঃ কবির ইচ্ছা ছোটো পিঁপড়ে ধুলোর রেণু মেখে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখুক। তাই তিনি তাকে স্থানচ্যুত করে দুঃখ দিতে চাননি।
২.৪ ‘কোন অতলে ডাকুক’ – কে, কাকে এই ডাক দেয় ?
উত্তরঃ গাছের নীচে কোমল হাওয়া বইতে থাকে। সে ছোটো পিঁপড়েকে এই ডাক দেয়।
২.৫ কবি আজ প্রাণের কোন পরিচয় পেয়েছেন?
উত্তরঃ চলমানতাই জীবন আর থেমে থাকাই মৃত্যু। এই কবিতার কবি আমাদের প্রাণের চলমানতাকে বুঝিয়েছেন।
২.৬ ‘দু দিনের ঘর’ বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ আমাদের মতো মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। তাই কবি আমাদের জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বকে বোঝাতে ‘দু দিনের ঘর’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।
👉আরো দেখো : সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর।
৩. প্রার্থনা, নির্দেশ, অনুরোধ বোঝাতে বাংলায় ক্রিয়ার শেষে উক’ যোগ হয়। (যেমন এই কবিতায় থাক্ – উক = থাকুক) কবিতা থেকে এমন আরও পাঁচটি শব্দ খুঁজে বের করো।
উত্তরঃ ঘুরুক, দেখুক, রাখুক, মাখুক, ডাকুক।
৪. নীচের সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থপার্থক্য দেখিয়ে প্রত্যেকটি ব্যবহার করে পৃথক পৃথক বাক্যরচনা করো।
উত্তরঃ
» ভরে (ভরতি করে)— বাড়ির মেয়েরা কলশিতে জল ভরে আনে।
» ভোরে(খুব সকালে)— ভোরের বেলা পাখিরা আমাদের ঘুম ভাঙায়।
» ঘরে (বাড়িতে)—ঘরে ঘরে আজ উৎসব চলছে।
» ঘোরে(বেড়ায়)— মাঠে-ঘাটে ঘোরায় তার নেশা।
» ছুঁয়ে(স্পর্শ করে)—বড়োদের চরণ ছুঁয়ে আমরা প্রণাম করি।
» চুঁয়ে(ভেদ করে)— পুরানো বাড়ির ছাদ থেকে বর্ষায় জল ছুঁয়ে পড়ছে।
» আনল(নিয়ে এল)— গ্রীষ্মের বৃষ্টি আমাদের স্বস্তি বয়ে আনল।
» অনল(অগ্নি)— অনলে বন পুড়লে সহজে নেভানো রায় না।
» মধুর(মিষ্ট)— তোমার মধুর আচরণের জন্য তুমি আমার প্রিয়।
» মেদুর(মাখানো)— বাবামায়ের মমতামেদুর দৃষ্টি সন্তানকে সাহস দেয়।
৫. পাশের শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ বেছে নীচের ছকটি পূরণ করো :
শব্দঝুড়ি— মাটি, পিপীলিকা, যারা, ধুলা।
উত্তরঃ » পিপীলিকা > পিঁপড়ে
» মৃত্তিকা > মাটি
» ধুলো > ধূলা
» যাহারা > যারা
৬. কবিতা থেকে সর্বনামগুলি খুঁজে বের করে আলাদা আলাদা বাক্যে ব্যবহার করো।
উত্তরঃ সর্বনামগুলি হল— তার, ওকে, ও, কাউকে, ওই যারা।
» তার— তার কথা আমার জানা নেই।
» ওকে— ওকে আমার কাছে ধরে আনো।
» ওর— ওর কথায় আমি চলি না।
» কাউকে— একথা কাউকে বলবে না।
» ওই— ওই যে সামনের মাঠ ওখানেই আমি থাকি।
» যারা— যারা গতকাল এসেছিলে, তারা সবাই জানো।
৭. নীচের স্তম্ভদুটি মেলাও:
উত্তরঃ
» বি + স্মরণ = বিস্মরণ।
» প্রতি +দিন= প্রতিদিন।
» অ + চেনা = অচেনা।
» কু + কথা = কুকথা
» সু + মধুর = সুমধুর।
৮. কবিতা থেকে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়াগুলি খুঁজে নীচের খোপে যথাস্থানে বসাও :
উত্তরঃ
» সমাপিকা ক্রিয়া : ঘুরুক, দেখুক, থাকুক, রাখুক, মাখুক, ডাকুক, ঘিরেছে, লাগে, আনল,আছি।
» অসমাপিকা ক্রিয়া : চলায়, ছুঁয়ে, ভরে, করে, দিতে, নিতে, চলে।
৯ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৯.১ পিঁপড়ের ভাষাহীন চলাচলের মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি কেমন?
উত্তরঃ পিঁপড়ে ভাষাহীনভাবে চলাফেরা করে। সেই চলাফেরার মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি ভালোবাসা এবং ব্যস্ততার।
৯.২ “মাটির বুকে যারাই আছি এই দুদিনের ঘরে”—’এই দু-দিনের ঘরে’ বলতে কী বোঝ ? কে সবাইকে কীভাবে এই দুদিনের ঘরে আদরে ঘিরে রাখে?
উত্তরঃ আমাদের সকলে জন্মগ্রহণ করার পর নির্দিষ্ট সময়ের অবসানে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিই অর্থাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হই। এই দুদিনের ঘর’ কথার মাধ্যমে কবি আমাদের জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বকে বুঝিয়েছেন। আমাদের এই দুদিনের ঘরে’ পিঁপড়ে সকলকে ভালোবাসার বাঁধনে আদর করে ঘিরে রাখে।
৯.৩. এই কবিতায় কবির কীরূপ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ এই পৃথিবীতে আমরা বিশ্বপিতার অংশবিশেষ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি। যে জীব যত ছোটোই হোক না কেন এই পৃথিবীতে সকলের সমান অধিকার আছে। সকলে মিলে পারস্পরিক ভালোবাসার বাঁধনে আনন্দের মাধ্যমে বেঁচে থাকাই কাম্য। তাই কবিতার মূল সুরই হল সকলকে আপন করে নিয়ে সুখে ও শান্তিতে দিন অতিবাহিত করা।
৯.৪ বিভিন্ন রকমের পিঁপড়ে এবং তাদের বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনপ্রণালী সম্বন্ধে তোমার পর্যবেক্ষণগুলি একটি খাতায় লেখো। প্রয়োজনে ছবিও আঁকতে পারো।
উত্তরঃ পিঁপড়ে আমাদের পরিচিত প্রাণী। সাধারণত আমরা আমাদের চারপাশে তিনধরনের পিঁপড়ে দেখতে পায়।
১. কালাে পিপড়ে :
» বাসস্থান— মাটির নীচে।
» খাদ্যাভ্যাস— গৃহস্থের বাড়ির খাবারদাবার, চিনি মিষ্টি।
» জীবনযাত্রা— বিষাক্ত নয়, কম কামড়ায়,
দলবেঁধে থাকে, নিজেদের কাজেই ব্যস্ত থাকে। ক্ষতি করে না। এরা সঞ্চয়ী।
২. লাল পিঁপড়ে :
» বাসস্থান— মাটি।
» খাদ্যাভ্যাস— মিষ্টি জাতীয় যে-কোনাে দ্রব্য, খায়।
» জীবনযাত্রা— বিষাক্ত, কামড় দিলে জ্বালা করে। দলবেঁধে খাদ্য সূংগ্রহ করে। গন্ধের মাধ্যমে যােগাযােগ রাখে।
৩. ডেঙো পিঁপড়ে :
» বাসস্থান— মাটির নীচে গর্ত ।
» খাদ্যাভ্যাস— মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য এবং মানুষের যে-কোনাে খাদ্য মৃত জীবজন্তু।
» জীবনযাত্রা— একত্রে থাকে, শিকার ধরে।আকারে বড়াে এবং কালাে রঙের খাদ্য জোগাড় করে গর্তে জমা করে।
১০.৫ একটি লাল পিঁপড়ে ও একটি কালো পিঁপড়ের মধ্যে কাল্পনিক একটি কথোপকথন রচনা করো।
উত্তরঃ লাল ও কালো পিঁপড়ের কথোপকথন :
• কালো পিঁপড়েঃ ওহে লাল ভাই, চললে কোথায়?
» লাল পিঁপড়েঃ যাব, আর কোথা, কাবারের সন্ধানে চলেছি। দেখি কোথায় মেলে?
• কালো পিঁপড়েঃ তোমার তো খাদ্য জোগাড়ের কোনো চিন্তা নেই ভাই। যত জ্বালা আমাদের।
» লাল পিঁপড়েঃ চিন্তা নেই আবার? তবে একটা বড়ো খাবারের সন্ধান আছে। সেখান থেকে খাবার আনতে পারলে অনেকদিন আমার চলে যাবে। চিন্তা করতে হবে না।
• কালো পিঁপড়েঃ কোথায় কোথায়? বল না ভাই তাহলে আমিও তোমার সঙ্গে যাব।
» লাল পিঁপড়েঃ আরে ওটা কোনো গৃহস্থের বাড়ি নয়। ওটা রেশন দোকান। ওখানে সর্বদা কেউ পাহারা দেয় না বা ওষুধও দেওয়া থাকে না। তাই চুরি করার সমস্যা নেই।
• কালো পিঁপড়েঃ তাহলে কি করে ঢুকবে ভাই সেখানে?
» লাল পিঁপড়েঃ ঢোকার কোনো সমস্যা নেই। ছাদের নীচে একটা ঘুলঘুলি আছে। সেখান দিয়ে ঢুকে দেয়াল দিয়ে নেমে বস্তার কাছে পৌঁছোলেই হল। আর ভাবনা নেই।
• কালো পিঁপড়েঃ চলো তবে আমরা সবাই মিলে অভিযান শুরু করি। মালিক জানতে পারার আগে আমরা সবাই চিনি সরিয়ে ফেলব।