ধীবর-বৃত্তান্ত (কালিদাস) নাটকের বিষয় বস্তু, সারাংশ, আলোচনা | Dhibor-Brittanto Natoker Alochona
ধীবর-বৃত্তান্ত
—কালিদাস
নাট্যাংশের পূর্বসূত্র
মহর্ষি কণ্বের তপোবনে তাঁর অনুপস্থিতিতে শকুন্তলাকে বিয়ে করে রাজা দুষ্মন্ত রাজধানীতে ফিরে গেছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরেও শকুন্তলার খোঁজ নিতে কোনো দূত তপোবনে এল না। স্বামীর চিন্তায় যখন শকুন্তলা অন্যমনা তখন তপোবনে এলেন ঋষি দুর্বাসা। শকুন্তলা তা টের না পাওয়ায় ঋষি অপমানিত বোধ করলেন এবং অভিশাপ দিলেন, যাঁর চিন্তায় সে মগ্ন, সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন। শেষপর্যন্ত সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি বললেন যে, কোনো নিদর্শন দেখাতে পারলে তবে শাপের প্রভাব দূর হবে।
দুষ্মন্ত রাজধানীর উদ্দেশে বিদায় গ্রহণের সময় শকুন্তলাকে যে আংটি পরিয়ে দিয়েছিলেন, সখীরা মনে করলেন সেই আংটিই হবে ভবিষ্যতের স্মারকচিহ্ন।
মহর্ষি কণ্ব তীর্থ থেকে ফিরে শকুন্তলাকে পতিগৃহে পাঠানোর আয়োজন করলেন। দুষ্মন্ত-সমীপে উপস্থিত হলে তিনি শকুন্তলাকে চিনতেও পারলেন না। এদিকে পথে শচীতীর্থে স্নানের পর অঞ্জলি দেওয়ার সময় হাত থেকে খুলে পড়ে গেছে শকুন্তলার হাতের আংটি। শকুন্তলা অপমানিতা হলেন রাজসভায়।
ঘটনাক্রমে সেই আংটি পেল এক ধীবর….
(নাট্যাংশ পাঠ)
(তারপর নগর-রক্ষায় নিযুক্ত রাজ-শ্যালক এবং পিছনে হাতবাঁধা অবস্থায় এক পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে দুই রক্ষীর প্রবেশ।)
দুই রক্ষী— (তাড়না করে) ওরে ব্যাটা চোর, বল্-মণিখচিত, রাজার নাম খোদাই করা এই (রাজার) আংটি তুই কোথায় পেলি ?
পুরুষ— (ভয় পাওয়ার অভিনয় করে) আপনারা শান্ত হন। আমি এরকম কাজ (অর্থাৎ চুরি) করিনি।
প্রথম রক্ষী— তবে কি তোকে সদ ব্রাহ্মণ বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন ?
পুরুষ— আপনারা অনুগ্রহ করে শুনুন। আমি একজন জেলে, শত্রুাবতারে আমি থাকি।
দ্বিতীয় রক্ষী— ব্যাটা বাটপাড়, আমরা কি তোর জাতির কথা জিজ্ঞাসা করেছি ?
শ্যালক— সূচক, একে পূর্বাপর সব বলতে দাও। মধ্যে বাধা দিয়ো না।
দুই রক্ষী— তা আপনি যা আদেশ করেন। বল্, কী বলছিলি।
পুরুষ— আমি জাল, বড়শি ইত্যাদি নানা উপায়ে মাছ ধরে সংসার চালাই।
শ্যালক— (হেসে) তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি।
পুরুষ— শুনুন মহাশয়, এরকম বলবেন না।
যে বৃত্তি নিয়ে যে মানুষ জন্মেছে, সেই বৃত্তি নিন্দনীয় (ঘৃণ্য) হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়াপরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।
শ্যালক— তারপর, তারপর ?
পুরুষ— একদিন একটা রুই মাছ যখন আমি খণ্ড খণ্ড করে কাটলাম, তখন সেই মাছের পেটের মধ্যে মণিমুক্তায় ঝলমলে এই আংটিটা দেখতে পেলাম। পরে সেই আংটিটা বিক্রি করার জন্য যখন লোককে দেখাচ্ছিলাম তখন আপনারা আমায় ধরলেন। এখন মারতে হয় মারুন, ছেড়ে দিতে হয় ছেড়ে দিন। কীভাবে এই আংটি আমার কাছে এল-তা বললাম।
শ্যালক— জানুক, এর গা থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ আসছে। এ অবশ্যই গোসাপ-খাওয়া জেলে হবে। তবে আংটি পাবার ব্যাপারে যা বলল তা একবার অনুসন্ধান করে দেখতে হবে। সুতরাং রাজবাড়িতেই যাই।
দুই রক্ষী— তবে তাই হোক। চল রে গাঁটকাটা।
(সবাই এগিয়ে চললেন)
শ্যালক— সূচক, সদর দরজায় সাবধানে এই চোরকে নিয়ে অপেক্ষা কর। ইতিমধ্যে এই আংটি কীভাবে পাওয়া গেল সে-সব বিষয় মহারাজকে নিবেদন করে তাঁর আদেশ নিয়ে ফিরছি।
দুই রক্ষী— আপনি প্রবেশ করুন। মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুব খুশি হবেন।
(রাজশ্যালক বেরিয়ে গেলেন)
প্রথম রক্ষী— আমাদের প্রভুর দেখি খুব বিলম্ব হচ্ছে।
দ্বিতীয় রক্ষী— আরে বাবা, অবসর বুঝে তবে না রাজার কাছে যাওয়া যায়।
প্রথম রক্ষী— জানুক, একে মারার আগে (এর গলায় যে) ফুলের মালা পরানো হাবে, তা গাঁথতে আমার হাত দুটো (এখনই) নিশপিশ করছে। (জেলেকে দেখিয়ে দিল)
পুরুষ (জেলে)— মহাশয়, বিনা দোষে আমাকে মারবেন না।
দ্বিতীয় রক্ষী— (তাকিয়ে দেখে) এই তো আমাদের প্রভু, মহারাজের হুকুমনামা হাতে নিয়ে এদিকে আসছেন। হয় তোকে শকুনি দিয়ে খাওয়ানো হবে, না হয় কুকুর দিয়ে খাওয়ানো হবে।
(রাজশ্যালক প্রবেশ করে)
শ্যালক— সূচক, এই জেলেকে ছেড়ে দাও। আংটি পাওয়ার ব্যাপারে এ যা বলেছে তা সব সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে।
সূচক— তা প্রভু যা আদেশ করেন।
দ্বিতীয় রক্ষী— এই জেলে যমের বাড়ি গিয়ে আবার ফিরে এল। (জেলের হাতের বাঁধন খুলে দিল)
পুরুষ— (শ্যালককে প্রণাম করে) প্রভু, আজ আমার সংসার চলবে কীভাবে ?
শ্যালক— মহারাজ আংটির মূল্যের সমান পরিমাণ এই অর্থ খুশি হয়ে তোমায় দিয়েছেন। (জেলেকে টাকা দিলেন)
পুরুষ— (প্রণাম করে গ্রহণ করে) প্রভু, অনুগৃহীত হলাম।
সূচক— এ কি যা-তা অনুগ্রহ। এ যে শূল থেকে নামিয়ে একেবারে হাতির পিঠে চড়িয়ে দেওয়া হলো।
জানুক— হুজুর, যে পরিমাণ পারিতোষিক দেখছি-তাতেই বোঝা যাচ্ছে সেই আংটিটা রাজার (খুব) প্রিয় ছিল।
শ্যালক— দামি রত্ন বসানো বলেই আংটিটা রাজার কাছে মূল্যবান মনে হয়েছে–এমনটা আমার মনে হয় না। সেই আংটি দেখে মহারাজের কোনো প্রিয়জনের কথা মনে পড়েছে। স্বভাবত গম্ভীর প্রকৃতির হলেও মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন।
সূচক— তাহলে আপনি মহারাজের একটা সেবা করলেন বলতে হয়।
জানুক— তার চেয়ে বল– এই জেলের সেবা করলেন। (জেলেকে হিংসায় ভরা দৃষ্টিতে দেখলেন)
পুরুষ (জেলে)—মহাশয়, এই পারিতোষিকের অর্ধেক আপনাদের ফুলের দাম হিসাবে দিচ্ছি।
জানুক— এটা তুমি ঠিকই বলেছ।
শ্যালক— শোনো ধীবর, এখন থেকে তুমি আমার একজন বিশিষ্ট প্রিয় বন্ধু হলে।
(সংক্ষেপিত ও সম্পাদিত)
তরজমা: সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী
মূল বিষয়ঃ ধীবর বৃত্তান্ত নাট্যাংশে ধীবর নামক একজন সাধারণ মানুষের সততা, সত্যবাদিতা ও ন্যায়পরায়ণতার পরিচয় ফুটে উঠেছে। নাট্যাংশের শুরুতে ধীবর রাজনামাঙ্কিত একটি আংটি চুরির অপরাধে গ্রেপ্তার হন। কিন্তু তিনি নির্ভীকচিত্তে সত্য কথা বলেন এবং আংটিটি যেভাবে পেয়েছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেন। ধীবরের সততা ও সত্যবাদিতার কাছে মুগ্ধ হয়ে রাজশ্যালক তাকে মুক্তি দেন।
নাট্যকার পরিচিতি—
ভূমিকাঃ সংস্কৃত সাহিত্যে বাল্মীকি এবং ব্যাসদেবের পরেই উচ্চারিত হয় কালিদাসের নাম।
ব্যক্তিগত জীবন ও আবির্ভাবকালঃ কালিদাসের ব্যক্তিগত জীবন ও আবির্ভাবের সময় নিয়ে বিশেষ কিছু জানা যায় না। উজ্জয়িনী, কলিঙ্গ এমনকি কাশ্মীরকেও তাঁর জন্মস্থান বলে ভাবা হয়। কালিদাস সম্পর্কে কিংবদন্তি আছে যে প্রথম জীবনে যথেষ্ট বুদ্ধিমান না হলেও পরবর্তীতে তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটে। বিক্রমাদিত্যের নবরত্ব সভার অন্যতম রত্ন ছিলেন কালিদাস। এই হিসেবে ৩০০ থেকে ৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তিনি বর্তমান ছিলেন মনে করা হয়।
সাহিত্যকর্মঃ কালিদাস তিনটি নাটক রচনা করেছিলেন— অভিজ্ঞান শকুন্তলম্, বিক্রমোর্বশীয়ম্, মালবিকাগ্নিমিত্রম্। রচনা করেছিলেন রঘুবংশ এবং কুমারসম্ভব-এর মতো মহাকাব্যতুল্য কাব্যগ্রন্থ এবং মেঘদূত ও ঋতুসংহার নামে দুটি খণ্ডকাব্য।
কবিপ্রতিভাঃ রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, ছন্দ, অলংকার, বেদ, ব্যাকরণ ইত্যাদি বহু বিষয়েই কালিদাসের দখল ছিল। তিনি প্রায় তিরিশ প্রকারের ছন্দ ব্যবহার করেছেন। কালিদাসের কাব্যে ধ্বনিময়তা ও ব্যঞ্জনা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। মেঘদূত কাব্যে মেঘের মাধ্যমে বিরহিণী প্রিয়ার কাছে নির্বাসিত যক্ষের বার্তা পাঠানো কিংবা ঋতুসংহার কাব্যে ছয় ঋতুর বর্ণনা — ভারতীয় কাব্যসাহিত্যে রোমান্টিকতার সূচনা করেছিল। শেক্সপিয়ার, মিলটন প্রমুখ বিশ্বসাহিত্যের স্মরণীয় স্রষ্টাদের সঙ্গে কালিদাসকেও এক আসনে বসানো হয়।
উৎসঃ কালিদাসের অভিজ্ঞান শকুন্তলম্ নাটকের ষষ্ঠ অঙ্ক থেকে ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশটি নেওয়া হয়েছে। বাংলায় এটির তরজমা করেছেন সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী।
নাট্যাংশের পূর্বসূত্রঃ রাজা দুষ্মন্ত মহর্ষি কণ্বের আশ্রমে শকুন্তলাকে বিয়ে করে রাজধানীতে ফিরে যান এবং তারপরে শকুন্তলার খোঁজ নিতে আর কেউ সেখানে আসে না। স্বামীর চিন্তায় অন্যমনস্কা হয়ে থাকেন শকুন্তলা। তিনি খেয়ালও করেন না যে মহর্ষির আশ্রমে মুনি দুর্বাসার আগমন হয়েছে। অপমানিত দুর্বাসা অভিশাপ দেন যে, যে ব্যক্তির চিন্তায় শকুন্তলা মগ্ন হয়ে দুর্বাসাকে উপেক্ষা করেছেন সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন। শকুন্তলার সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে দুর্বাসা বলেন যে, রাজাকে যদি শকুন্তলা কোনো স্মারকচিহ্ন দেখাতে পারেন তাহলেই এই অভিশাপের প্রভাব দূর হবে। সখীদের তখন মনে হয়, বিদায় নেওয়ার সময়ে শকুন্তলাকে রাজা দুষ্মন্তের দেওয়া আংটিই হতে পারে সেই স্মারকচিহ্ন।
কিন্তু মহর্ষি কণ্বের উদ্যোগে শকুন্তলা দুষ্মন্তের কাছে গেলেও যাত্রাপথে শচীতীর্থে স্নানের পরে অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে তার হাতের আংটিটি জলে পড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই শকুন্তলা কোনো চিহ্ন দেখাতে না পারায় দুষ্মন্তও শকুন্তলাকে চিনতে পারেন না। ঘটনাচক্রে সেই আংটি এক ধীবর পান।
বিষয় সংক্ষেপঃ রাজার নাম লেখা আংটি রাখার অপরাধে এক ধীবরকে ধরে নিয়ে আসেন রাজার শ্যালক এবং রক্ষীরা। ধীবর বলে যে সে চুরি করেনি। সেই কথা বলার পরও রক্ষীরা তাকে তীব্র ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে, এমনকি তার জীবিকা নিয়েও ব্যঙ্গ করতে ছাড়ে না। ধীবর এর তীব্র প্রতিবাদ করে। সে জানায়, রুই মাছ টুকরো করে কাটার সময়েই মাছের পেট থেকে এই আংটিটা সে পেয়েছে। সেই আংটি বিক্রির সময়েই ধীবর ধরা পড়ে যায়। রাজশ্যালক পুরো ঘটনা মহারাজকে জানাতে যান। ধীবরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য রক্ষীরা উৎসুক হয়ে পড়ে। কিন্তু শ্যালক ফিরে এসে ধীবরের বক্তব্য সত্য বলে জানান এবং তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। শুধু তা-ই নয়, মহারাজ আংটির সমপরিমাণ মূল্যও ধীবরকে দিয়েছেন বলে জানান। আংটির কথা শুনে রাজা যে বিহ্বল হয়ে পড়েন, সে কথাও রাজশ্যালক উল্লেখ করেন। ধীবরের এই সৌভাগ্য – দ্বার রক্ষীরা ঈর্ষান্বিত হয়। কিন্তু রাজশ্যালক ধীবরকে তাঁর বিশিষ্ট প্রিয় বন্ধু হিসেবে মেনে নেন ।
নামকরণঃ যে-কোনো সাহিত্যে প্রবেশের চাবিকাঠি হল তার নামকরণ। এই নামকরণ নানান দিক থেকে হতে পারে। কখনও তা হয় ব্যঞ্জনাধর্মী, কখনও বিষয়বস্তুকেন্দ্রিক, কখনও বা চরিত্রকেন্দ্রিক। এক্ষেত্রে আমাদের পাঠ্য ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশটির নামকরণ কতদূর সার্থক, তাই বিচার্য। রাজা দুষ্মন্তের শকুন্তলাকে ভুলে যাওয়া— শকুন্তলাকে দুর্বাসা মুনির অভিশাপ দেওয়ার ঘটনা— শকুন্তলাকে দেওয়া আংটি দেখে দুষ্মন্তের সব মনে পড়ে যাওয়া— এইসব কাহিনির মধ্যে ধীবর চরিত্রটির অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ। শচীতীর্থের ঘাটে স্নান সেরে অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে শকুন্তলার হাতের আংটিটি জলে পড়ে যায়। কিন্তু এই আংটিই ছিল একমাত্র স্মৃতিচিহ্ন, যেটি রাজা দুষ্মন্তকে দেখালে রাজা শকুন্তলাকে চিনতে পারতেন। ধীবর তার ধরা রুই মাছ কাটতে গিয়ে আংটিটি পায় ও সেটি বিক্রি করতে গিয়ে রাজার শ্যালক এবং রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে। সে সত্যি কথা বলতে চাইলেও কেউই তার কথা বিশ্বাস করে না। তাকে ব্যঙ্গ করা হয়। শাস্তি দেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে রক্ষীরা। কিন্তু রাজার কাছ থেকে ঘুরে এসে রাজার শ্যালক জানান, ধীবর সত্যি কথাই বলেছে। অতএব তার কোনো শাস্তি হয় না, বরং আংটি দেখে রাজার শকুন্তলাকে মনে পড়ে যাওয়ায় তিনি আংটির মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ পুরস্কার হিসেবে ধীবরকে দেন। রাজার শ্যালকের বন্ধুত্বের মর্যাদাও লাভ করে ওই ধীবর। এইভাবে এই নাট্যাংশে দুষ্মন্ত ও শকুন্তলা অপেক্ষা ধীবর চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটি তারই কাহিনি। দুষ্মন্ত শকুন্তলা যেখানে নিতান্তই পরোক্ষভাবে আছেন ৷ তাই কাহিনির নাম ধীবর বৃত্তান্ত অত্যন্ত সার্থক ও যথাযথ হয়েছে।
শব্দার্থঃ
» মহর্ষি— মহান ঋষি
» তপোবন— মুনি-ঋষির আশ্রম
» অনুপস্থিতিতে— হাজিরা না থাকাকালীন
» দীর্ঘ— লম্বা সময়
» খোঁজ— অনুসন্ধান বা অন্বেষণ
» দূত— খবর বা সংবাদবাহক
» স্বামী— বর, পতি
» অন্যমনা— অমনোযোগী
» অভিশাপ— অমঙ্গল কামনা
» সখী— সহচরী
» নিদর্শন— উদাহরণ
» শাপ— অমঙ্গল কামনা
» প্রভাব— জোর খাটানো
» তীর্থ— পুণ্যস্থান
» সমীপে— কাছে, নিকটে
» উপস্থিত— হাজির
» অঞ্জলি— জোড়হাত
» ধীবর— জেলে
» নগর— বড়ো শহর
» জানুক— নগররক্ষার জন্য নিযুক্ত দ্বিতীয়
রক্ষী
» নিযুক্ত— নিয়োজিত
» প্রবেশ— ঢোকা
» রক্ষী— প্রহরী
» অনুগ্রহ— দয়া
» বাটপাড়— ঠগ
» জিজ্ঞাসা— জানবার ইচ্ছা
» আদেশ— হুকুম
» বড়শি— বাঁকা সূচালো লোহার কাঁটা
» উপায়— কৌশল
» পবিত্র— শুদ্ধ
» বৃত্তি— পেশা
» নিন্দনীয়— নিন্দার যোগ্য
» পরিত্যাগ— ছেড়ে চলে যায়
» বেদজ্ঞ— বেদে অভিজ্ঞ, শাস্ত্রজ্ঞ
» নির্দয়— নিষ্ঠুর
» খন্ড— টুকরো
» গাঁটকাটা— পকেটমার
» বিলম্ব— দেরি
» নিশপিশ— চঞ্চলতা প্রকাশ
» অনুগৃহীত— উপকৃত
» পারিতোষিক— বকশিশ
» দামি— মূল্যবান
» হুজুর— মালিক
» স্বভাবতই– স্বাভাবিক কারণে
আরও পড়ুনঃ
নবম শ্রেণির ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর