2020
LIFE SCIENCE
Time-Three Hours Fifteen Minutes
(First FIFTEEN minutes for reading the question paper only)
Full Marks – 90
(For Regular and Sightless Regular Candidates)
Full Marks-100
(For External and Sightless External Candidates)
Special credit will be given for answers which are brief and to the point. Marks will be deducted for spelling mistakes, untidiness and bad handwriting.
নির্দেশাবলী
নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ বিভাগের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
[দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা ]
“ঘ’বিভাগের ৪.১ প্রশ্নের পরিবর্তে ৪.১(A) প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের ‘ক’, ‘খ’,‘গ’, ‘ঘ’ ছাড়াও অতিরিক্ত ‘ঙ’ বিভাগের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
কোন্ বিভাগ হ’তে ক’টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে তা ওই বিভাগের শুরুতেই বলা আছে।
বিভাগ – ‘ক’
(সমস্ত প্রশ্নের উত্তর করা আবশ্যিক)
১। প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যা সহ বাক্যটি সম্পূর্ণ করে লেখো। ১×১৫=১৫
১.১ সঠিক জোড়টি নির্বাচন করো—
(ক) গুরু মস্তিষ্ক – দেহের ভারসাম্য রক্ষা
(খ) হাইপোথ্যালামাস – বুদ্ধি ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ
(গ) লঘু মস্তিষ্ক – দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
(ঘ) সুষুম্নাশীর্ষক- হৃদস্পন্দন ও খাদ্য
গলাধঃকরণ নিয়ন্ত্রণ
উত্তরঃ (ঘ) সুষুম্নাশীর্ষক – হৃদস্পন্দন ও খাদ্য গলাধঃকরণ নিয়ন্ত্রণ।
১.২ ইনসুলিন সম্পর্কিত নিচের কোন বক্তব্যটি সঠিক নয় তা শনাক্ত করো—
(ক) রক্ত থেকে অধিকাংশ দেহ কোষে
গ্লুকোজের শোষণে সাহায্য করে
(খ) যকৃত ও পেশি কোষের ভিতর গ্লুকোজকে রূপান্তরিত করে
(গ) ফ্যাট ও প্রোটিনকে গ্লুকোজে রূপান্তরে সাহায্য করে
(ঘ) প্রোটিন ও ফ্যাটের গ্লুকোজে রুপান্তরে
বাধা দেয়
উত্তরঃ (গ) ফ্যাট ও প্রোটিনকে গ্লুকোজে রূপান্তরে সাহায্য করে।
১.৩ ‘ক’ স্তম্ভের দেওয়া শব্দের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভে দেওয়া শব্দের মধ্যে সমতা বিধান করে নিচের উত্তরগুলোর মধ্যে কোনটি সঠিক নির্বাচন করো—
‘ক’ স্তম্ভ | ‘খ’ স্তম্ভ |
---|---|
A. ফ্লেক্সন | (i) কোয়াড্রিসেপস |
B. এক্সটেনশন | (ii) পাইরিফরমিস |
C. রোটেশন | (iii) বাইসেপস |
(ক) A – (i) B- (ii) C- (iii)
(খ) A – (ii) B- (iii) C- (i)
(গ) A – (iii) B- (i) C- (ii)
(ঘ) A – (ii) B- (i) C-(iii)
উত্তরঃ (গ) A-(iii) B- (i) C – (ii)
১.৪ মাইটোসিস কোষ বিভাজনের
ক্যারিওকাইনেসিসে নিম্নলিখিত ঘটনা দুটি কোন কোন দশায় ঘটে তা নিচের উত্তরগুলো থেকে নির্বাচন করো—
(অ) অপত্য ক্রোমোজোম দুটি পরস্পর থেকে তাদের নিজস্ব মেরুর দিকে সরতে থাকে
(আ) নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাস অবলুপ্ত হয়
(ক) (অ) প্রোফেজ (আ) অ্যানাফেজ
(খ) (অ) অ্যানাফেজ (আ) প্রোফেজ
(গ) (অ) টেলোফেজ (আ) মেটাফেজ
(ঘ) (অ) মেটাফেজ (আ) টেলোফেজ
উত্তরঃ (খ) (অ) অ্যানাফেজ (আ) প্রোফেজ।
১.৫ নিম্নলিখিত কোনটি ইতর পরাগযোগ এর বৈশিষ্ট্য তা নির্বাচন করো—
(ক) একই গাছের একটি ফুলের মধ্যেই
ঘটে
(খ) বাহকের প্রয়োজন হয়না
(গ) নতুন বৈশিষ্ট্য সঞ্চার হওয়ার সম্ভাবনা
কম থাকে
(ঘ) পরাগরেণুর অপচয় বেশি হয়।
উত্তরঃ (ঘ) পরাগরেণুর অপচয় বেশি হয়৷
১.৬ মানবদেহের মাইটোসিস কোষ বিভাজনের সদ্য সৃষ্ট অপত্য কোষের প্রতিটি ক্রোমোজোম কটি DNA অণুর কুণ্ডলীকৃত হয়ে গঠিত হয় তা স্থির করো।
(ক) 46 (খ) 1 (গ) 23 (ঘ) অসংখ্য
উত্তরঃ (ক) 46
১.৭ কালো বর্ণ ও অমসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের জিনোটাইপ শনাক্ত করো—
(ক) BbRr, BBRr (খ) BBrr, Bbrr
(গ) bbRR, bbRr (ঘ) bbrr, bbRr
উত্তরঃ (ক) BbRr, BBRr
১.৮ নিচের কোন্ দুটিকে মেন্ডেল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন তা, স্থির করো—
(ক) ফুলের বর্ণ – বেগুনি,ফুলের অবস্থান -কাক্ষিক
(খ) কান্ডের দৈর্ঘ্য – খর্ব, পরিণত বীজের আকার – কুঞ্চিত
(গ) পরিণত বীজের আকার – গোল, বীজের বর্ণ – হলুদ
(ঘ) ফুলের অবস্থান – কাক্ষিক, কান্ডের দৈর্ঘ্য – লম্বা
উত্তরঃ (খ) কান্ডের দৈর্ঘ্য – খর্ব, পরিণত বীজের আকার – কুঞ্চিত ।
১.৯ হিমোফিলিক পুত্র ও স্বাভাবিক কন্যা হয়েছে রয়েছে এমন পিতা-মাতার সম্ভাব্য জিনোটাইপ কী কী হতে পারে তা নিচের গুলো থেকে নির্ধারণ করো-
(ক) H∥h,h∣↾ (খ) H∥H,H∣↾
(গ) H∥H,h∣↾ (ঘ) H∥h,H∣↾
উত্তরঃ (ঘ) H∥h,H∣↾
১.১০ আমাদের দেশে পার্থেনিয়াম একটি বহিরাগত প্রজাতি। এটি যেখানে জন্মায় সেখানে অনেক দেশীয় প্রজাতির উদ্ভিদ বাঁচতে পারে না। এটি ডারউইনের তত্ত্বের একটি প্রতিপাদ্য প্রতিষ্ঠিত করে। প্রতিপাদ্যটি শনাক্ত করো।
(ক) অন্তঃপ্রজাতি সংগ্ৰাম
(খ) আন্তঃপ্রজাতি সংগ্ৰাম
(গ) পরিবেশের সঙ্গে সংগ্ৰাম
(ঘ) নতুন প্রজাতির উৎপত্তি
উত্তরঃ (খ) আন্তঃপ্রজাতি সংগ্ৰাম।
১.১১ মিলার ও উরে তাঁদের পরীক্ষায় প্রাণ সৃষ্টির কতগুলো প্রাথমিক উপাদান সংশ্লেষ করতে সক্ষম হন। সেগুলোর মধ্যে কোনগুলো অ্যামাইনো অ্যাসিড ছিল তার শনাক্ত করো—
(ক) ল্যাকটিক অ্যাসিড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড
(খ) ইউরিয়া, অ্যাডেনিন
(গ) গ্লাইসিন, অ্যালানিন
(ঘ) ফরমিক অ্যাসিড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড
উত্তরঃ (গ) গ্লাইসিন, অ্যালানিন।
১.১২ নিচের কোন প্রয়োজনের জন্য মৌমাছিগুলো নৃত্য করে তা স্থির করো—
(ক) প্রজনন সঙ্গী খোঁজা
(খ) অন্যান্য শ্রমিক মৌমাছিদের মৌচাক থেকে খাদ্যের উৎস অভিমুখ ও দূরত্ব জানানো
(গ) নতুন মৌচাকের স্থান নির্বাচন করা
(ঘ) সম্ভাব্য শত্রুর আক্রমণ এড়ানো
উত্তরঃ (খ) অন্যান্য শ্রমিক মৌমাছিদের মৌচাক থেকে খাদ্যের উৎস অভিমুখ ও দূরত্ব জানানো ।
১.১৩ নিচের কোনটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ সম্পর্কিত সঠিক তথ্য তার শনাক্ত করো—
(ক) বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের সাথে স্থানীয় মানুষ ও অন্যান্য জীব সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ করা হয়
(খ) জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এর অন্তর্ভুক্ত নয়
(গ) বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণে স্থানীয় মানুষের উপস্থিতি এবং অংশগ্রহণ অনুমোদিত নয়
(ঘ) এর আকার সাধারণত একটি অভয়ারণ্যের থেকে ছোট হয়
উত্তরঃ (ক) বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের সাথে স্থানীয় মানুষ ও অন্যান্য জীব সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ করা হয়।
১.১৪ নিচের কোন্ জোড়াটি সঠিক নয় তা স্থির করো—
(ক) চোরাশিকার – গরিলার বিপন্নতা বৃদ্ধি
(খ) বহিরাগত প্রজাতি – ল্যান্টানা তেলাপিয়া
(গ) হটস্পট নির্ধারণ – স্থানীয় প্রজাতি ও বিপন্ন প্রজাতির সংখ্যা
(ঘ) গ্রীন হাউস গ্যাস – ইউট্রোফিকেশন
উত্তরঃ (ঘ) গ্রীন হাউস গ্যাস – ইউট্রোফিকেশন।
১.১৫ নিম্নলিখিত ব্যাঘ্র প্রকল্পগুলোর মধ্যে কোনটি আমাদের রাজ্যে অবস্থিত তা স্থির করো—
(ক) বন্দিপুর (খ) সিমলিপাল
(গ) সুন্দরবন (ঘ) কানহা
উত্তরঃ (গ) সুন্দরবন ।
বিভাগ – ‘খ’
২। নিচের ২৬টি প্রশ্ন থেকে ২১টি প্রশ্নের উত্তর নির্দেশ অনুসারে লেখঃ (১×২১) = ২১
নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থানগুলোতে উপযুক্ত শব্দ বসাও (যেকোনো পাঁচটি) ( ১×৫=৫)
২.১ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু লজ্জাবতী এবং বনচাঁড়াল উদ্ভিদের বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা পাঠিয়ে উদ্ভিদ-এর সংবেদনশীলতা ধর্মটি প্রমাণ করেন ৷
২.২ মানুষের মধ্যে যদি মিয়োসিস এর পরিবর্তে মাইটোসিস দ্বারা গ্যামেট উৎপন্ন হতো, তবে অপত্য সন্তানের একটি দেহকোষে অটোজোম সংখ্যা হত ৮৮ টি।
২.৩ মানুষের পপুলেশনে ‘X’ ক্রোমোজোম বাহিত প্রচ্ছন্ন জিন ঘটিত একটি রোগ হল হিমোফিলিয়া।
২.৪ আধুনিক ঘোড়ার খুর হল তাদের পূর্বপুরুষের ৩ নম্বর আঙ্গুলের রূপান্তর ।
২.৫ নাইট্রোজেন চক্রের নাইট্রিফিকেশন পর্যায়ে অ্যামোনিয়া কতগুলো ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে নাইট্রাইট এবং নাইট্রেটে রূপান্তরিত হয়।
২.৬ বাজারে বহুল বিকৃত বোতলজাত ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুত করতে ভৌম জলের প্রচুর অপচয় ঘটে ।
নিচের বাক্যগুলো সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো (যেকোনো পাঁচটি):
২.৭ ট্রপিক চলন হলো উদ্ভিদের বৃদ্ধি জনিত চলন। (সত্য)
২.৮ মাইটোসিস কোষ বিভাজনে ক্রসিং ওভার ঘটে। (মিথ্যা)
২.৯ মেন্ডেল তাঁর বংশগতি সংক্রান্ত পরীক্ষাগুলোর বর্ণনায় জিন শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। (মিথ্যা)
২.১০ বাষ্পমোচনের হার হ্রাস করার জন্য ক্যাকটাসের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে।
(সত্য)।
২.১১ পূর্ব হিমালয় হটস্পটে সংরক্ষিত একটি বিপন্ন উদ্ভিদ হল রডোডেনড্রন। (সত্য)।
২.১২ কোরয়েড লেন্সের বক্রতা ও আকারের পরিবর্তন ঘটিয়ে চোখের উপযোজনে সাহায্য করে।
(মিথ্যা)
A-স্তম্ভে দেওয়া শব্দের সঙ্গে B – স্তম্ভে দেওয়া সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত শব্দটির সমতা বিধান করে উভয় স্তম্ভের ক্রমিক নম্বর উল্লেখ সহ সঠিক জোড় টি পুনরায় লেখ ৷ (যে কোনো পাঁচটি) : ১×৫=৫
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
২.১৩ জিব্বেরেলিন | (ক) rrYY |
২.১৪ শাখা কলম | (খ) ভূগর্ভস্থ জলের পূনর্নবীকরন |
২.১৫ কুঞ্চিত ও হলুদ বর্ণের বীজ যুক্ত মটর গাছের জিনোটাইপ | (গ) পিরিমিডিন ক্ষারক |
২.১৬ সমসংস্থ অঙ্গ | (ঘ) মুকুল ও বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে |
২.১৭ জলাভূমি | (ঙ) গঠন এক কিন্তু কাজ ভিন্ন |
২.১৮ থাইমিন ও ইউরাসিল | (চ) RRYy |
(ছ) গোলাপ |
উত্তরঃ ২.১৩–ঘ, ২.১৪–ছ, ২.১৫–ক, ২.১৬–ঙ, ২.১৭–খ, ২.১৮–গ।
একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও(যে কোন ছটি) : ১×৬ = ৬
২.১৯ বিসদৃশ শব্দটি বেছে লেখঃ
গুরুমস্তিষ্ক, হাইপো থ্যালামাস, পনস, থ্যালামাস।
উত্তরঃ পনস।
২.২০ সোয়ান কোশ কোথায় থাকে ?
উত্তরঃ নিউরোনের অ্যানের বাইরের আবরণীতে সোয়ান কোশ থাকে ।
২.২১ নীচে সম্পর্কযুক্ত একটি শব্দ জোড় দেওয়া আছে। প্রথম জোড়টির সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় জোড়টির শূণ্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও।
মাইটোসিস : ভ্রূণমূল :: মিয়োসিস : ________।
উত্তরঃ ভ্রুণস্থলী / রেণুমাতৃকোশ।
২.২২ মেন্ডেল তাঁর দ্বিসংকর জনন পরীক্ষা থেকে কোন সূত্রে উপনীত হয়েছিলেন ?
উত্তরঃ স্বাধীন সঞ্চারণ সূত্র বা স্বাধীন বিন্যাস সুত্র।
২.২৩ সুস্থ মানুষের মধ্যে দেখা যায়, এমন একটি বংশাণুক্রমিকভাবে সঞ্চারিত প্রকরণের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ রোলার জিভ / যুক্ত ও মুক্ত কানের লতি।
২.২৪ শিম্পাঞ্জিরা কীভাবে শক্ত খোলা ভেঙে বাদাম খায় ?
উত্তরঃ শক্ত পাথরের পাটাতনে (নেহাই) বাদাম রেখে পাথর বা গাছের শক্ত ডালকে হাতুড়ির মতো চালিয়ে বাদাম ভেঙে খায়।
২.২৫ নীচের চারটি বিষয়ের মধ্যে তিনটি একটি বিষয়ের অন্তর্গত। সেই বিষয়টি খুঁজে বার করো এবং লেখো :
SPM, বায়ুদূষণ, গ্রিণহাউস গ্যাস, ফুসফুসের রোগ
উত্তরঃ বায়ুদূষণ।
২.২৬ স্থানীয় মানুষ ও বনদপ্তর যৌথভাবে জঙ্গল পুনরুদ্ধারের জন্য যে ব্যবস্থা অনুসরণ করে তার নাম লেখো ।
উত্তরঃ জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট (JFM) ।
বিভাগ — ‘গ’
৩. নীচের ১৭টি প্রশ্ন থেকে যে-কোনো ১২টি প্রশ্নের উত্তর দুই-তিন বাক্যে লেখো । ২ x ১২ = ২৪
৩.১ নিম্নলিখিত বিষয়ে হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের কাজের পার্থক্য নিরূপণ করো —
• কাজের প্রকৃতি • কাজের গতি • কাজের স্থায়িত্ব • পরিণতি
বিষয় | হরমোন | স্নায়ুতন্ত্র |
---|---|---|
কাজের প্রকৃতি | রাসায়নিক সমন্বায়ক | ভৌত সমন্বায়ক |
কাজের গতি | মন্থর | দ্রুত |
কাজের স্থায়িত্ব | স্থায়ী | অস্থায়ী |
পরিণতি | বিনষ্ট হয় | বিনষ্ট হয় না |
৩.২ কোনো একজন মানুষ ‘দূরের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পেলেও কাছের জিনিস ভালোভাবে দেখতে পান না’— এরকম সমস্যার কারণ ও প্রতিকার কী কী হতে পারে তা অনুমান করে লেখো।
উত্তরঃ কোনো একজন মানুষ দূরের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পেলেও কাছের জিনিস ভালোভাবে দেখতে পান না, এরকম সমস্যাকে হাইপারমেট্রোপিয়া বলা হয়।
কারণঃ অক্ষিগোলকের আকার স্বাভাবিকের তুলনায় ছোটো হওয়ায়, বস্তু থেকে আগত আলোকরশ্মি রেটিনার পিছনে প্রতিবিম্ব গঠন করে। রেটিনার ওপরে ওই বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না। ফলে দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখা গেলেও কাছের বস্তু অস্পষ্ট দেখায়।
প্রতিকারঃ উত্তল কৃত্রিম লেন্সের (+) পাওয়ারযুক্ত চশমা ব্যবহার করলে, এই ত্রুটি সংশোধন করা যায়।
৩.৩ কৃষির ফলনবৃদ্ধি ও আগাছা সমস্যা সমাধানে সংশ্লেষিত উদ্ভিদ হরমোনের একটি ভূমিকা বিশ্লেষণ করো৷
উত্তরঃ কৃষির ফলনবৃদ্ধিঃ অপরিণত ফলের মোচন রোধে 2, 4-D নামক কৃত্রিম অক্সিন ব্যবহৃত হয়। জবা, গোলাপ, আম প্রভৃতি গাছের শাখাকলম তৈরি করার সময় অস্থানিক মূল উৎপাদনের জন্য কৃত্রিম অক্সিন (NAA, IBA) ব্যবহৃত হয় ফলে কৃষিজ ফলন বৃদ্ধি পায়।
আগাছা সমস্যা সমাধানঃ অক্সিন আগাছা নাশ করতে সাহায্য করে। যেমন—নির্দিষ্ট মাত্রার অক্সিন দ্বিবীজপত্রী আগাছাকে মেরে ফেলে। সুতরাং আগাছা যদি দ্বিবীজপত্রী হয় তাহলে নির্দিষ্ট মাত্রার অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করে ওই আগাছা নির্মূল করা যাবে। একাজে বিশেষভাবে কার্যকরী হয় 2, 4-D নামক কৃত্রিম অক্সিনটি।
৩.৪ ‘LH ও ICSH মানবদেহে জননগ্রন্থির হরমোন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে’— বক্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।
উত্তরঃ হাইপোথ্যালামাস নিঃসৃত GnRH বা গোনাডোট্রপিন রিলিজিং হরমোন অগ্রপিটুইটারি থেকে GTH অর্থাৎ গোনাডোট্রোপিক হরমোনগুলির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এই GTH হরমোনগুলির মধ্যে অন্যতম হল LH (লিউটিনাইজিং হরমোন) ও ICSH (ইন্টারস্টিশিয়াল সেল স্টিমুলেটিং হরমোন) LH সাধারণত স্ত্রীদেহে পরিণত ডিম্বথলি থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণে সাহায্য করে পরিণত ডিম্বথলিকে পীতগ্রন্থিতে রূপান্তরিত করে এবং পীতগ্রন্থিকে প্রোজেস্টেরন হরমোন ক্ষরণে উদ্দীপিত করে এর ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। আবার ICSH পুরুষ দেহে শুক্রাশয়ের ইন্টারস্টিশিয়াল কোশ বা লেডিগের আন্তরকোশকে উদ্দীপিত করে টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
৩.৫ বেমতন্তু গঠন ও সাইটোকাইনেসিস পদ্ধতি — এই দুটি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে তুমি কিভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশে মাইটোসিসের পার্থক্য নিরূপণ করবে ?
উত্তরঃ
বিষয় | উদ্ভিদকোশের মাইটোসিস | প্রাণীকোশের মাইটোসিস |
---|---|---|
1. বেমতন্তুর গঠন | মূলত কোশীয় কঙ্কাল, যেমন— অণুনালিকা থেকে বেমতন্তু গঠিত হয়। | সেন্ট্রিওল থেকে বেমতন্তু গঠিত হয়। |
2.সাইটো কাইনেসিস পদ্ধতি | ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট ও কোশপাত গঠনের দ্বারা এই পদ্ধতি ঘটে থাকে। | ক্লিভেজ বা খাঁজ বা ফারোয়িং-এর মাধ্যমে এই পদ্ধতি ঘটে। |
৩.৬ কোশচক্রে নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হওয়ার সঙ্গে মানব দেহে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার সৃষ্টি হওয়ার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করো।
উত্তরঃ কোশ বিভাজনের বিভিন্ন ত্রুটি এড়াবার জন্য কোশচক্রের স্থানে স্থানে চেকপয়েন্ট বা নিয়ন্ত্রণ বিন্দু থাকে। কোনো পরিবেশগত বা জিনগত কারণে যদি এই নিয়ন্ত্রণ বিন্দুর কার্যকারিতা বিনষ্ট হয়, তাহলে কোশ বিভাজনও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, এবং এই অনিয়ন্ত্রিত কোশ বিভাজনের ফলে টিউমার সৃষ্টি হয়। অনেকসময় কোশস্থ DNA-র মিউটেশন বা স্পিন্ডিল-এর গঠনগত ত্রুটি থাকলেও নিয়ন্ত্রণ বিন্দুর ত্রুটিজনিত কারণে কোশটি কোশবিভাজনে প্রবেশ করে, ফলে ত্রুটিপূর্ণ অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়, যা পার্শ্ববর্তী অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত কোশ বিভাজন ঘটায়। এটিই ম্যালিগন্যান্ট টিউমার।
৩.৭ ‘অস্থানিক পত্রজ মুকুল উদ্ভিদের প্রাকৃতিক অঙ্গজ বংশবিস্তারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে’ — একটি উপযুক্ত উদাহরণের সাহায্যে বক্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।
উত্তরঃ কিছু কিছু উদ্ভিদের ক্ষেত্রে, যেমন—পাথরকুচি, Begonia (বিলোনিয়া) প্রভৃতির পাতার কিনারা থেকে অস্থানিক মুকুল জন্মায়। একে পত্রাশ্রয়ী মুকুল বলে। এই পত্রাশ্রয়ী মুকুলের নীচের দিক থেকে আবার প্রচুর অস্থানিক মূল বের হয়। পরে মূলসহ প্রতিটি পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে অনুকূল পরিবেশে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়। অর্থাৎ উপরোক্ত উদাহরণ থেকে বোঝা যায় যে অস্থানিক পত্রজমুকুল প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভিদের অঙ্গজ বংশবিস্তারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
৩.৮ বাবা ও মায়ের মধ্যে অপত্যের লিঙ্গ নির্ধারণে কার গুরুত্ব বেশি তা একটি ক্রশের মাধ্যমে দেখাও ।
উত্তরঃ মানব সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে মাতার ক্রোমোজোমগত ভূমিকা পরোক্ষ হয়ে থাকে। কারণ মাতা কেবলমাত্র একপ্রকার গ্যামেট (X ক্রোমোজোমযুক্ত) উৎপাদন করতে পারেন। পিতার জনন কোশে দু-প্রকার যৌন ক্রোমোজোম উপস্থিত থাকে এবং তিনি দুই প্রকার গ্যামেট (X অথবা Y ক্রোমোজোমযুক্ত) উৎপাদনে সক্ষম হন। অর্থাৎ, X অথবা Y ক্রোমোজোম দানের মাধ্যমে লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার ক্রোমোজোমগত ভূমিকাই প্রধান।
অর্থাৎ পিতা যদি Y ক্রোমোজোম দান করেন তাহলে সন্তান পুত্র হয়, আবার যদি X ক্রোমোজোম দান করেন তাহলে সন্তান কন্যা হয়। তাই লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার গুরুত্বই বেশি।
৩.৯ ‘ভিন্ন ভিন্ন জিনোটাইপ একই ফিনোটাইপ উৎপন্ন করে’— মটর গাছের দ্বিসংকর জননের পরীক্ষার ফলাফলের একটি উদাহরণ নিয়ে সারণির সাহায্যে বক্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ করো।
উত্তরঃ ভিন্ন ভিন্ন জিনোটাইপ যে একই ফিনোটাইপ উৎপন্ন করে তা নীচে F₂ জনুর চেকার বোর্ডের মাধ্যমে দেখানো হল। যেখানে হলুদ গোল ( YYRR) ও সবুজ কুঞ্চিত (yyEE) বীজযুক্ত মটর গাছের মধ্যে ক্রস করানো হয়েছে।
F₂ জনুর চেকার বোর্ড
উক্ত ছকে আমরা দেখতে পাই যে হলদে গোল বীজযুক্ত মটর গাছের জিনোটাইপ 9 রকমের হতে পারে। অর্থাৎ একটি ফিনোটাইপ বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য একাধিক জিনোটাইপ দায়ী হয়।
৩.১০ সমাজ থেকে তোমার জানা একটি জিনগত রোগের বিস্তার রোধ করতে বিয়ের আগে হবু দম্পতিকে কী কী পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে তোমার মতামত জানাও।
উত্তরঃ সাধারণত প্রধান যে জিনগত রোগটি সম্বন্ধে হবু দম্পতিকে অবগত করা যেতে পারে। সেটি হলো থ্যালাসেমিয়া। এই রোগটি প্রতিরোধ করতে গেলে—
(১) প্রথমে হবু দম্পতির রক্তপরীক্ষা একান্ত প্রয়োজন কারণ এর মাধ্যমে হবু দম্পতি কেউ যদি থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হন সে সম্বন্ধে জানা যাবে।
(২) বিয়ের আগে জেনেটিক কাউন্সেলারের কাছে যাওয়ার কথা বলা যেতে পারে, এর ফলে যদি তারা কেউ থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, তাহলে সন্তানের মধ্যে সেই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কতটা সেটি জানা যায়।
(৩) পরিবারে কারোর যদি থ্যালাসেমিয়া রোগের কোনো ইতিহাস থাকে তবে সেই সম্বন্ধে অবগত হওয়া ও বিয়ের আগে প্রয়োজন মত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলা যেতে পারে।
৩.১১ প্রাকৃতিকভাবে শুধু বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ আছে, এমন একটি পুকুরে বেশ কিছু তিলাপিয়া মাছ ছাড়া হলো। বেঁচে থাকতে গেলে ওই তিলাপিয়াদের যে যে ধরনের জীবনসংগ্রাম করতে হবে তা ভেবে লেখো।
উত্তরঃ
(১) অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম— তেলাপিয়া মাছগুলিকে নিজেদের মধ্যে খাদ্য ও সীমিত বাসস্থানের জন্য সংগ্রাম করতে হবে।
(২) আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম— পুকুরে থাকা দেশীয় প্রজাতির মাছগুলির সঙ্গে খাদ্য ও সীমিত বাসস্থানের জন্য সংগ্রাম করতে হবে।
(৩) পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম— তেলাপিয়া মাছটিকে পুকুরের জলের নতুন তাপমাত্রা, অম্লতা, ক্ষারত্ব প্রভৃতি পরিবেশ সংক্রান্ত সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে।
৩.১২ বাতাসে ওড়ার জন্য পায়রার বায়ুথলি যে যে ভূমিকা পালন করে তার তালিকা তৈরি করো।
উত্তরঃ
1. আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাসঃ
ওড়বার মুহূর্তে বায়ুথলিগুলি বায়ুদ্বারা পূর্ণ হওয়ায়, পায়রার দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাস পায়।
2. শক্তি উৎপাদনে ও O₂ -এর জোগানে সাহায্য করা। বায়ুথলিগুলি অতিরিক্ত O₂ সংগ্রহে ও শক্তি উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
৩.১৩ • গঠন ও কাজ • বিবর্তনের ধরন নির্দেশক
উপরোক্ত দুটি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সমবৃত্তীয় অঙ্গের ধারণাটি উপযুক্ত উদাহরণ সহ প্রতিষ্ঠিত করো।
উত্তরঃ
(১) গঠন ও কাজঃ যেসব অঙ্গ উৎপত্তি ও গঠনগত দিক থেকে ভিন্ন হলেও কার্যগত দিক থেকে এক, তাদের সমবৃত্তীয় অঙ্গ বলা হয়। পতঙ্গ ও পাখির ডানা ওড়ার জন্য ব্যবহৃত হলেও এদের উৎপত্তি ও গঠনগত দিক থেকে কোনো সাদৃশ্য নেই। পতঙ্গের ডানা কিউটিকল বা বহিঃকঙ্কালের প্রসারিত অংশ, অন্যদিকে পাখির ডানা পালক আবৃত অগ্রপদ বিশেষ ।
» সমবৃত্তীয় অঙ্গ— ডানা
» প্রাণী— পাখি, পতঙ্গ
» উৎপত্তি ও গঠন— অগ্রপদের রূপান্তর ও পালকে তা ঢাকা, কিউটিকলের প্রসারিত গঠন।
» কাজ— ওড়া
(২) বিবর্তনের ধরণ নির্দেশকঃ পাখি ও পতঙ্গের ধরণগুলি থেকে বোঝা যায় যে, অভিব্যক্তিতে দুটি ভিন্ন প্রজাতির জীব একই প্রাকৃতিক পরিবেশে অভিযোজনের জন্য বাহ্যিক গঠন ও কার্যগতভাবে এক হয়। তাই এটি অভিসারী বিবর্তনের পরিচায়ক।
৩.১৪ মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের ফলে নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হওয়ার সঙ্গে নিম্নলিখিত ঘটনাগুলোর সম্পর্ক স্থাপন করো—
• বিশ্ব উষ্ণায়ন
• নদী এবং হ্রদের মাটি ও জলের অম্লীকরণ
উত্তরঃ (১) বিশ্ব উষ্ণায়নঃ পরিবেশের N₂O (নাইট্রাস অক্সাইড) বৃদ্ধির 40% হল মনুষ্যসৃষ্ট জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত দহন ও নাইট্রোজেন সার অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলস্বরূপ N₂O পরিবেশে মুক্ত হয়। এই নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসটি তাপশোষী গ্রিনহাউস গ্যাস বা সূর্যালোকের প্রতিফলনে সৃষ্ট অবলোহিত আলো যা উত্তাপ শোষণ করে গ্রিনহাউস প্রভাব তথা বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটায়।
(২) নদী, হ্রদের মাটি ও জলের অম্লীকরণঃ নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলি বৃষ্টির জলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে, যা অম্লবৃষ্টির অন্যতম উপাদান। অম্লবৃষ্টি জলজ জীব ও উদ্ভিদ ধ্বংস করে নদী, হ্রদ, পুকুর প্রভৃতির বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য বিনষ্ট করে। এ ছাড়া অম্লবৃষ্টির প্রভাবে বনজ সম্পদের বিনাশ ঘটে, স্থাপত্য ও স্মৃতিসৌধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও এদের উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে যায়।
৩.১৫ ইলিশ, মৌমাছি, পেঙ্গুইন, সর্পগন্ধা —
উপরোক্ত জীবগুলোর বিপন্নতার কারণ কী কী হতে পারে তা নির্ধারণ করো।
উত্তরঃ
• ইলিশঃ জলদূষণ, জাল ফেলে খোকা ইলিশ ধরা। এইভাবে প্রজননে সক্ষম হওয়ার আগেই ধরে ফেলার ফলে ইলিশের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
• মৌমাছিঃ বনবিনাশ, জৈববৈচিত্র্যের হ্রাস (উদ্ভিদ প্রজাতি) । পেষ্টিসাইডের ব্যবহার দ্বারা মৌমাছির বিনাশ ঘটছে ও তারা প্রজননে অক্ষম হয়ে পড়ছে।
• পেঙ্গুইনঃ বিশ্বউষ্ণায়নে বরফ গলনের ফলে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে তাদের খাদ্যের অভাব দেখা দিচ্ছে। ফলস্বরূপ পেঙ্গুইন মারা যাচ্ছে।
• সর্পগন্ধাঃ অতিব্যবহারের ফলে সর্পগন্ধা-জাতীয় ভেষজ উদ্ভিদের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
৩.১৬ স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পিপলস বায়োডাইভারসিটি রেজিস্ট্রার (PBR) -এর যে কোনো দুটি ভূমিকা আলোচনা করো ।
উত্তরঃ (১) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে PBR-এর ভূমিকা বা গুরুত্ব: OPBR স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়। তার ওপর নির্ভর করে বিপন্ন জীবগুলির সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। (২) স্থানীয় মানুষকে জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণের ব্যাপারে অবগত করে সংরক্ষণে অংশীদার করতে সাহায্য করে PBR ।
৩.১৭ বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে অভয়ারণ্যে যে যে কাজ নিষিদ্ধ তার যে কোনো চারটি তালিকাভুক্ত করো।
উত্তরঃ বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে অভয়ারণ্যে যে কাজ নিষিদ্ধ সেগুলি হল- (১) অনুমতি ছাড়া অভয়ারণ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ। (২) অভয়ারণ্যে অনুমতি ছাড়া কাঠ কাটা, চাষআবাদ করা যায় না। (৩) অনুমতি ছাড়া বনজসম্পদ আহরণ করা যায় না। (৪) সর্বোপরি, বন্যপ্রাণী হত্যা বা শিকার করা যায় না।
বিভাগ — ‘ঘ’
৪. নীচের ৬টি প্রশ্ন বা তা’র বিকল্প প্রশ্নের উত্তর লেখো । দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের ৪.১ নং প্রশ্নের পরিবর্তে ৪.১ (A) নং প্রশ্নের উত্তর করতে হবে । ৫ x ৬ = ৩০
৪.১ মানুষের চোখের অক্ষিগোলকের লম্বচ্ছেদ -এর একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র অংকন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলো চিহ্নিত কর : ৩ + ২ = ৫
(ক) কোরয়েড (খ) অপটিক স্নায়ু
(গ) আইরিশ (ঘ) পীতবিন্দু
অথবা,
একটি প্রাণীকোশের মাইটোসিস কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশার পরিচ্ছন্ন চিত্র অংকন করে নিম্নলিখিত অংশগুলো চিহ্নিত করো : ৩ + ২ = ৫
(ক) ক্রোমাটিড (খ) সেন্ট্রোমিয়ার
(গ) মেরু অঞ্চল (ঘ) বেমতন্তু
উত্তরঃ
(কেবলমাত্র দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য)
৪.১ (A) মানুষের চোখের অক্ষিগোলকের নিম্নলিখিত প্রত্যেকটি অংশের একটি করে কাজ লেখো : 1×5=5
(ক) ভিট্রিয়াস হিউমর (খ) স্ক্লেরা
(গ) আইরিশ (ঘ) লেন্স
(ঙ) রেটিনা
৪.২ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে প্রাণীদের মাইটোসিস ও মিয়োসিস কোশ বিভাজনের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো :
• সম্পাদনের স্থান • ক্রোমোজোম বিভাজনের প্রকৃতি • উৎপন্ন কোশের সংখ্যা
উত্তরঃ
বিষয় | মাইটোসিস | মিয়োসিস |
---|---|---|
1. সম্পাদনের স্থান | দেহকোশ এবং সাধারণ অবস্থায় কোশ সংখ্যা বৃদ্ধির সময় জনন কোশে মাইটোসিস ঘটে। | জনন মাতৃকোশ থেকে জননকোশ বা গ্যামেট সৃষ্টির সময় ঘটে। |
2. ক্রোমোজোম বিভাজনের প্রকৃতি | এটি সমবিভাজন, অর্থাৎ উৎপন্ন অপত্য কোশ দুটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা জনিতৃ কোশের সমান (21) থাকে। | এটি হ্রাসবিভাজন, অর্থাৎ উৎপন্ন চারটি অপত্য কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোশের (2n) অর্ধেক হয়ে যায় (n)। |
3. উৎপন্ন কোশের সংখ্যা | একটি জনিতৃকোশ থেকে একবার বিভাজন দ্বারা দুটি অপত্য কোশ উৎপন্ন হয়। | জনিতৃকোশ থেকে দু-বার বিভাজন দ্বারা চারটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়। |
মানব বিকাশের বার্ধক্য দশায় জ্ঞানেন্দ্রিয় ও অস্থির কী কী পরিবর্তন হয় তা তালিকাবদ্ধ করো । ৩+২=৫
উত্তরঃ
মানব বিকাশের বার্ধক্য দশায় জ্ঞানেন্দ্রিয়র পরিবর্তন—
(১) এই দশায় ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি ও স্মৃতিশক্তি ক্রমশ হ্রাস পায়।
(২) অস্থির পরিবর্তন: অস্থি ও অস্থিসন্ধির ক্ষয়ের ফলে এইসময় অস্থিজনিত বিভিন্ন রোগ, যথা — অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওআথ্রাইটিস দেখা দেয়।
অথবা,
একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের নিম্নলিখিত অংশগুলোর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো :
• সেন্ট্রোমিয়ার • টেলোমিয়ার
• সেন্ট্রোমিয়ারের গুরুত্বঃ (১) এটিতে বেম সংলগ্ন হয় বলে অ্যানাফেজ চলন সম্ভব হয়। (২) এটি ক্রোমোজোমের দুটি বাহুকে যুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
• টেলোমিয়ারের গুরুত্বঃ (১) ক্রোমোজোমের প্রান্তকে অন্য কোনো ক্রোমোজোমে সংলগ্ন হওয়া থেকে রক্ষা করে। (২) টেলোমিয়ার কোশের জরা ও বয়ঃবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
জীবের বৃদ্ধি, প্রজনন ও ক্ষয়পূরণ কীভাবে কোশবিভাজন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তা বিশ্লেষণ করো । ২+৩=৫
উত্তরঃ
(১) জীবের বৃদ্ধিঃ কোশ বিভাজনের ফলে কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। উৎপন্ন কোশগুলি আবার আকারে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ জীবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কোশ বিভাজনের ওপরেই নির্ভর করে।
(২) প্রজনন মাইটোসিস, অ্যামাইটোসিস ও মিয়োসিস কোশ বিভাজন বিভিন্ন প্রকার জননে সহায়তা করে। যেমন- মিয়োসিস কোশ বিভাজনের মাধ্যমে গ্যামেট (শুক্রাণু, ডিম্বাণু) এবং রেণু উৎপন্ন হয় যা, যথাক্রমে যৌন ও অযৌন জননের একক। মাইটোসিস, অযৌন জনন ও অঙ্গজ জননের মাধ্যমে জীবের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যামিবা অ্যামাইটোসিস পদ্ধতিতে প্রজনন সম্পন্ন করে।
(৩) ক্ষয়পূরণঃ জীবের ক্ষতস্থান নিরাময়, অঙ্গের পুনরুৎপত্তি মূলত মাইটোসিস কোশ বিভাজনের ফলেই ঘটে থাকে।
৪.৩ মেন্ডেল দ্বারা নির্বাচিত মটরগাছের তিনজোড়া প্রকট-প্রচ্ছন্ন গুণ সারণির সাহায্যে লেখো। এক-সংকর জনন পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত মেন্ডেলের প্রথম সূত্রটি বিবৃত করো । ৩+২=৫
উত্তরঃ
মেন্ডেল কর্তৃক নির্বাচিত সাত জোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য: মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটর গাছের যে বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য নির্বাচন করেছিলেন তার মধ্যে তিন জোড়া নীচে সারণির আকারে দেখানো হল।
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য | প্রকট | প্ৰচ্ছন্ন |
---|---|---|
1. গাছের দৈর্ঘ্য | লম্বা | বেঁটে |
2. কাণ্ডে ফুল এবং ফলের অবস্থান | কাক্ষিক | শীর্ষস্থ |
3. ফলের আকৃতি | স্ফীত | খাঁজযুক্ত |
কোনো জীবের নির্দিষ্ট একটি চরিত্রের অন্তর্গত একজোড়া বিপরীত বৈশিষ্ট্যের উপাদানগুলি জনিতৃ থেকে অপত্যে সঞ্চারিত হলেও তারা পরস্পর মিশে যায় না বরং অপত্যের গ্যামেট তৈরির সময়ে তারা পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়। এটিই মেন্ডেলের বংশগতির প্রথম সূত্র বা পৃথকীভবন সূত্র হিসেবে পরিচিত।
অথবা,
একজন বর্ণান্ধ মহিলা, একজন স্বাভাবিক পুরুষকে বিবাহ করলেন । প্রথম অপত্য বংশে তাঁদের সন্তানদের মধ্যে বর্ণান্ধতার সম্ভাবনা বিচার করো । সন্ধ্যামালতী ফুলের ক্ষেত্রে F₂ জনুতে মেন্ডেলের বংশগতি সংক্রান্ত প্রথম সূত্রের বিচ্যুতি কীভাবে প্রকাশিত হয় তা একটি ক্রশের মাধ্যমে দেখাও। ৩+২=৫
উত্তরঃ
একজন বর্ণান্ধ মহিলা একজন স্বাভাবিক পুরুষকে বিবাহ করলে তাঁদের সন্তান-সন্ততির মধ্যে বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নীচে ক্রসের সাহায্যে দেখানো হল—
যেহেতু মা বর্ণান্ধ তাই ক্রিস-ক্রস উত্তরাধিকার সূত্র অনুযায়ী সমস্ত পুত্র বর্ণান্ধতার শিকার হবে এবং সমস্ত কন্যা স্বাভাবিক হলেও বাহক হবে ।
এক্ষেত্রে ওই দম্পতির পুত্ররা বর্ণান্ধ ও কন্যারা বাহক হবে।
• সন্ধ্যামালতী (Mirabilis jalapa) নামক উদ্ভিদে লাল এবং সাদা এই দুইপ্রকার ফুল হয়। এই উদ্ভিদে ফুলের লাল রং, সাদা রং-এর ওপর অসম্পূর্ণভাবে প্রকট। বিশুদ্ধ লাল ফুলযুক্ত (RR) সন্ধ্যামালতী উদ্ভিদের সঙ্গে বিশুদ্ধ সাদা ফুলযুক্ত (IT) সন্ধ্যামালতী উদ্ভিদের সংকরায়ণ ঘটানো হলে প্রথম অপত্য জনুতে (F₁) জনু উৎপন্ন উদ্ভিদগুলি লাল বা সাদা ফুলযুক্ত না হয়ে সবই গোলাপি ফুলযুক্ত হয়। এই F₁ জনুর উদ্ভিদগুলির মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটানো হলে দ্বিতীয় অপত্য জনুতে (₁ জনু) তিনপ্রকার ফিনোটাইপ ( লাল, গোলাপি ও সাদা) ও তিনপ্রকার জিনোটাইপযুক্ত উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়।
F₂ জনুতে ফিনোটাইপিক অনুপাত- লাল গোলাপি : সাদা = 1 : 2 : 1 এবং জিনোটাইপিক অনুপাত — বিশুদ্ধ লাল (RR) : সংকর গোলাপি (Rr) : বিশুদ্ধ সাদা (IT) = 1 : 2 : 1
অর্থাৎ, অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে F₂ জনুতে উৎপন্ন অপত্য উদ্ভিদগুলির ফিনোটাইপিক অনুপাত ও জিনোটাইপিক অনুপাত একই (1 : 2 : 1)।
উক্ত ক্রসের মাধ্যমে মেন্ডেলের প্রথম সূত্রের বিচ্যুতি প্রমাণ করা যায়- কারণ মেন্ডেলের প্রথম সূত্রে বলা হয়েছেল যে, গ্যামেট গঠনকালে বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যগুলি পরস্পরের থেকে পৃথক হয়ে যায়, কখনোই মিশ্রিত হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য (লাল ফুল ও সাদা ফুল) এক জনু থেকে অপর জনুতে সঞ্চারিত হওয়ার সময় প্রকট বৈশিষ্ট্যের (লাল ফুল) প্রকাশ না ঘটিয়ে একটি মিশ্র বৈশিষ্ট্যের (গোলাপি ফুল) প্রকাশ ঘটায়।
৪.৪ প্রাণের উৎপত্তির পরে জৈব অভিব্যক্তির মুখ্য ঘটনাবলী তীরচিহ্নের সাহায্যে ক্রমানুসারে দেখাও। ৫
উত্তরঃ
অভিব্যক্তির মুখ্য ঘটনাসমূহ: সভ্যতার সৃষ্টিকাল থেকেই পৃথিবীর উৎপত্তি ও প্রাণের উৎপত্তি অত্যন্ত রহস্যময় ও জটিল প্রক্রিয়া। বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন সময়ে এই রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করেন। এইসব বিজ্ঞানীদের মতবাদ ও ধারণা থেকে পৃথিবী এবং প্রাণের উৎপত্তি ও জীবের অভিবাক্তি সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানা সম্ভব হয়। অভিব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহ নীচে পর্যায়চিত্রের মাধ্যমে দেওয়া হল—
অথবা,
ডারউইনের অভিব্যক্তি সংক্রান্ত তত্ত্বের নিম্নলিখিত তিনটি বিষয়ে আলোচনা করো :
• অধিকহারে বংশবৃদ্ধি • প্রকরণের উদ্ভব • প্রাকৃতিক নির্বাচন
‘জীবের আকার, শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ ও আচরণের পরিবর্তন হলো অভিযোজন’ —যে কোনো দুটি উদাহরণসহ বক্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ করো। ৩+২=৫
উত্তরঃ
• অত্যধিক মাত্রায় বংশবৃদ্ধি: ডারউইনের মতে জীবের সহজাত বৈশিষ্ট্য হল অত্যধিক হারে বংশবৃদ্ধি করা। ডারউইন লক্ষ করেন জীবের সংখ্যা বৃদ্ধি জ্যামিতিক হারে ঘটে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় একটি স্ত্রী স্যামন মাছ একটি প্রজনন ঋতুতে প্রায় তিন কোটি ডিম পাড়ে। একটি ঝিনুক এক বছরে প্রায় 6 মিলিয়ন ডিম্বাণু উৎপাদন করে ।
• প্রকরণের উদ্ভব: ডারউইনের মতে, পৃথিবীতে যে-কোনো দুটি জীব কখনোই অবিকল একই রকমের হতে পারে না, কিছু- না-কিছু পার্থক্য অবশ্যই থাকবে। এই পার্থক্যকেই ভ্যারিয়েশন বা প্রকরণ বা ভেদ বলে। অনুকূল প্রকরণ (favourable variation) জীবনসংগ্রামে জীবকে সাহায্য করে। অপরদিকে প্রতিকূল প্রকরণ জীবের বিলুপ্তির কারণ হয়।
• প্রাকৃতিক নির্বাচন: ডারউইনের মতে, জীবনসংগ্রামের ফলে উদ্ভূত প্রকরণগুলির মধ্যে কিছু অনুকূল ও কিছু প্রকরণ প্রতিকূল হয়। অনুকূল প্রকরণগুলি জীবকে অভিযোজনে সহায়তা করে কিন্তু প্রতিকূল প্রকরণগুলি অভিযোজনে সহায়তা করতে পারে না। ফলে প্রতিকূল প্রকরণযুক্ত জীব ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হয় এবং অনুকূল প্রকরণযুক্ত জীব পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য নির্বাচিত হয়। একে যোগ্যতমের উদ্বর্তন বলে। প্রকৃতি উপযুক্ত প্রকরণযুক্ত জীবকে টিকে থাকার জন্য নির্বাচন করে। একে প্রাকৃতিক নির্বাচন বলা হয়।
“জীবের আকার, শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ ও আচরণের পরিবর্তনই হল অভিযোজন— এই বক্তব্যটির যথার্থতা বিচার করতে প্রথমেই জীবের আকার বা আকৃতি প্রসঙ্গে আসা যাক, পরিবেশে বেঁচে থাকতে গেলে জীবের বাহ্যিক কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে, যা তাকে সেই পরিবেশে মানিয়ে নিতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, (১) মরু ও শুষ্ক অঞ্চলে থাকা উদ্ভিদ ক্যাকটাসে বাষ্পমোচন রোধ করতে বেশিরভাগ পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয় এবং পাতা থাকলেও তার সংখ্যা খুব কম হয় ও আকার ছোটো হয়। (২) মাছ ও পাখির দেহ মাকু আকৃতির হয়ে থাকে যা তাদের জল বা বায়ুর বাধা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
আবার শুধু জীবের আকারই নয়, পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলার জন্য জীবের কিছু শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপের পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মরু অঞ্চলে বসবাসরত উটের দেহে জলক্ষয় সহনের জন্য — (১) তাদের 49°C এও ঘর্মক্ষরণ হয় না। (২) নিশ্বাসের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প নির্গমন রোধ করতে নাসাপথে মিউকাস বিন্যস্ত থাকে ইত্যাদি।
৪.৫ নিম্নলিখিত দূষকগুলো পরিবেশ ও বাসস্থানের কী কী প্রভাব ফেলে তা মূল্যায়ন করো : ৫
• অভঙ্গুর কীটনাশক
• পরাগরেণু
• ফসফেট ও নাইট্রেট সমৃদ্ধ রাসায়নিক সার
• স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জীবাণুসমৃদ্ধ আবর্জনা
• ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
উত্তরঃ
• অভঙ্গুর কীটনাশকঃ অভঙ্গুর কীটনাশক বৃষ্টির জলে ধুয়ে জলে মেশে ফলে জলদূষণ ঘটায়, যা জলে থাকা জীবের খাদ্য ও বাসস্থানের ভারসাম্য নষ্ট করে ও জলে দ্রবীভূত O₂ এর পরিমাণ কমায়।
• পরাগরেণুঃ এটি হল অতিক্ষুদ্র একপ্রকারের জৈব দূষক, যার আকার 1 মাইক্রন। এদের SPM বা Suspended Panticulate matter বলে। এগুলি প্রধানত শ্বাসক্রিয়ার মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে ফুসফুসে জমা হয় ও ফুসফুসের কার্যকারিতা হ্রাস করে শ্বাসক্রিয়াজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জীবাণুসমৃদ্ধ আবর্জনা, মৃত্তিকাদূষণ ও রোগসংক্রমণ: সুস্থ ব্যক্তির দেহেও রোগসংক্রমণ ঘটে।
• ফসফেট ও নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সারঃ কৃষিজমিতে ব্যবহৃত অজৈব সার NPK, সুপার ফসফেট ইত্যাদিতে নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের মাত্রা বেশি থাকে, এই সার যখন নদীতে বা কোনো জলাশয়ে গিয়ে পড়ে, তখন সেই জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হয়, ইউট্রোফিকেশন ঘটে, এবং জলদূষণের পাশাপাশি এই সারের অতিরিক্ত ব্যবহারে মৃত্তিকাদূষণও ঘটে।
• ক্লোরোফ্লুরোকার্বনঃ বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তর হ্রাস করে, ফলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করে, যা মানবদেহে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের জন্ম দেয়।
অথবা,
নিম্নলিখিত ঘটনাগুলোর প্রত্যেকটির সম্ভাব্য কারণ কী হতে পারে তা অনুমান করো : ৫
• নিদ্রাহীনতা, রক্তচাপ বৃদ্ধি, আংশিক বা সম্পূর্ণ বধিরতা
• জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস ও মরা মাছ ভেসে ওঠা
• কুমিরের সংখ্যা হ্রাস
• ফুসফুসের বায়ুচলাচল পথে প্রদাহ
• পরাগমিলনে সাহায্যকারী পতঙ্গের সংখ্যা হ্রাস
উত্তরঃ
রক্তচাপ বৃদ্ধি, আংশিক বা সম্পূর্ণ নিদ্রাহীনতা, বধিরতা শব্দদুষণ।
জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস ও মরা মাছ ভেসে ওঠা— জলদূষণ ও ইউট্রোফিকেশন।
কুমিরের সংখ্যা হ্রাস — জলদূষণ ও চামড়ার লোভে কুমির শিকার। ফুসফুসের বায়ুচলাচল পথে প্রদাহ — বায়ুদূষণ, ধূমপান, SPM দূষণ। পরাগমিলনে সাহায্যকারী পতঙ্গের সংখ্যা হ্রাস– বায়ুদূষণ, পেস্টিসাইডের অতিরিক্ত ব্যবহার।
৪.৬ ‘ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ভূগর্ভস্থ জলের সংকট তৈরী করেছে’— তোমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বক্তব্যটি যুক্তিসহ সমর্থন করো । মানুষের বসতি বৃদ্ধি কীভাবে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলছে তার একটি ধারণা মানচিত্র নির্মাণ করো । ৩+২=৫
উত্তরঃ
(১) স্বাদুজলের অতিব্যবহারে ভৌমজলের ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। মূলত মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে অতিরিক্ত জলের প্রয়োজন হয়।
(২) অপ্রয়োজনে জল নষ্ট করা, যেমন রাস্তায় ফেলে বা বাড়িতে অনবরত জল নষ্টের ফলে জল সংকট তৈরি হয়েছে।
(৩) শহুরে অঞ্চলে পুকুর বুজিয়ে বাড়ি তৈরিতে ভৌমজল মাটির নিচে ফিরে যেতে পারছে না। এর ফলেও জলসমস্যা দেখা দিচ্ছে। সুতরাং উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে বোঝা যায় যে ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ভূ-গর্ভস্থ জলের সংকট তৈরি করে।
মানুষের বসতি বৃদ্ধি (সুন্দরবন) :
→ মিষ্টিজলের অতিব্যবহার ও জলসংকট
→অরণ্যবিনাশ (সুন্দরী)
→ ঝড়ঝঞ্জা বৃদ্ধি
→ খাদ্য-খাদক ভারসাম্যের ব্যাঘাত
→ জলদূষণ, বায়ুদূষণ
→ জলজ প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস
→ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিপন্নতা বাড়ছে।
ধারণা মানচিত্র; মানুষের বসতিবৃদ্ধিতে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রে প্রভাব।
অথবা,
পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশের জলাময় ঘাসভূমিতেই শুধু পাওয়া যায় এরকম একটি বিলুপ্তপ্রায় স্তন্যপায়ীর সংখ্যাবৃদ্ধি করার জন্য কী কী সংরক্ষণ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে তার সংক্ষিপ্তসার লেখো । নদীর বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব আলোচনা করো ৩+২=৫
উত্তরঃ
• পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে জলাময় ঘাসভূমিতে পাওয়া যায়, এরকম একটি বিলুপ্তপ্রায় স্তন্যপায়ী প্রাণী হল গন্ডার। তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য যে যে প্রকল্পগুলি গ্রহণ করা হয় তা হল— ভারতে 85% গন্ডার অসমে পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক সংস্থা WWF (World Wide Fund for Nature)-এর সহযোগিতায় অসমের বনদপ্তর একটি প্রকল্প গ্রহণ করে, যার নাম ইন্ডিয়ান রাইনো ভিশন 2020 বা IRV 2020 । এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল, 2020 সালের মধ্যে অসমে গন্ডারের সংখ্যা 3000-এ নিয়ে যাওয়া। এই প্রকল্পের সাফল্যের কারণে 2013 সালে এই সংখ্যা অসমে 2544-3 এসে দাঁড়িয়েছে। 2013-এর সুমারি অনুযায়ী শুধু কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কেই গন্ডারের সংখ্যা 1855 থেকে 2329 দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া (১) গন্ডারের প্রজননে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ, (২) চোরাশিকার রোধ, (৩) গন্ডারের বাসস্থান, পানীয় ও উপযুক্ত খাদ্যের ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যদিও পরোক্ষভাবে গন্ডারের বংশবৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
• (১) জীববৈচিত্র্য অন্যান্য প্রাণীদের খাদ্য ও বাসস্থানের জোগান দিয়ে নদীতে বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করে।
(২) জীববৈচিত্র্য খাদ্যের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির জীবের মধ্যে সংগ্রাম কমায়, ফলে কোনো এক প্রজাতির জীব সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ হয়ে যায় না এবং বাস্তুতন্ত্র বজায় থাকে।
(৩) অনেক জলজ প্রাণী (যেমন- বিভিন্ন ধরনের মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি ইত্যাদি) মানবসমাজে খাদ্য হিসেবেও গৃহীত হয়, ফলে সেই সমস্ত জীবের যথেষ্ট শিকার এসব প্রজাতির সংখ্যা কমিয়ে নদীর বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করতে পারে, কিন্তু জীববৈচিত্র্য সেই সব জীবের জোগান দেয় ফলে বাস্তুতন্ত্র অটুট থাকে।
(৪) জলদূষণের ফলে নদীতে থাকা প্রাণী মারা যাওয়ায় বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়, কিন্তু জীববৈচিত্র্য সেই দূষিত পরিবেশেও বেঁচে থাকার মতো কিছু জীবের জোগান দেয় (যেমন—কিগ্লিফিস নামক একধরনের মাছ দুষিত জলেও বেঁচে থাকতে পারে) ফলে নদীর বাস্তুতন্ত্র বজায় থাকে।
Credit: ছায়াপ্রকাশনী।
MP Life Science Question Paper | ||||
---|---|---|---|---|
2017 | 2018 | 2019 | 2020 | 2021 |
2022 | 2023 |
Pingback: WB Madhyamik Life Science Question Paper 2022 |মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র ২০২২ -
Pingback: Last 5 Years Madhyamik Question Papers All Subject উত্তর সহ বিগত বছরের মাধ্যমিক প্রশ্নপত্র। - Prosnodekho