FIRST SUMMATIVE EVALUATION
BENGALI QUESTION PAPER CLASS 10 WBBSE
1. দশম শ্রেণি সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র | Class 10 All Subject Unit Test Question Paper CLICK HERE
2. দশম শ্রেণি বাংলা পাঠ্যবই সমাধান | Class 10 Bengali Textbook Solution CLICK HERE
3. মাধ্যমিক বাংলা পাঠ্যসূচী ২০২৪-২৫ | Madhyamik Bengali Syllabus 2024-25 CLICK HERE
4. মাধ্যমিক পরীক্ষার রুটিন ২০২৫ | Madhyamik Exam Routine 2025 CLICK HERE
5. মাধ্যমিক বিগত বছরের সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্র | Madhyamik Previous Years Question Paper CLICK HERE
6. মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি অনলাইন MCQ মক্ টেস্ট | Madhyamik Preparation MCQ Mock Test CLICK HERE
Set-4
প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
দশম শ্রেণি বিষয় : বাংলা
সময় ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট পূর্ণমান -৪০
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে সম্পূর্ণ বাক্যে লেখো। ১×৮=৮
১.১ ‘লাঠি তোমার দিন ফুরাহয়াছে’- উক্তিটি হলো–
(ক) রবীন্দ্রনাথের
(খ) শরৎচন্দ্রের
(গ) বঙ্কিমচন্দ্রের
(ঘ) বিভূতিভূষণের
উত্তরঃ (গ) বঙ্কিমচন্দ্রের।
১,২ তপনের নতুন মেসোমশাই একজন–
(ক) লেখক
(খ) চলচ্চিত্রকার
(গ) কবি
(ঘ) নাট্যকার
উত্তরঃ (ক) লেখক
১.৩ “হাজার বছর ধরে ডুবেছিল ধ্যানে”- কারা ধ্যানে ডুবেছিল ?
(ক) হরপ্পার শিবমূর্তিরা
(খ) মন্দিরের দেবতারা
(গ) শান্ত হলুদ দেবতারা
(ঘ) ঝুলন্ত বিছানার শিশুরা
উত্তরঃ (গ) শান্ত হলুদ দেবতারা।
১.৪ ‘প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল’- কে ছিনিয়ে গেল ?
(ক) সাম্রাজ্যবাদীরা
(খ) স্রষ্টা
(গ) নির্লজ্জ অমানুষ
(খ) রুদ্র সমুদ্রের বাহু
উত্তরঃ (খ) রুদ্র সমুদ্রের বাহু।
১.৫ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ?
(ক) জলই পাষাণ হয়ে আছে
(খ) দিনগুলি রাতগুলি
(গ) পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ
(ঘ) নিহিত পাতাল ছায়া
উত্তরঃ (ক) জলই পাষাণ হয়ে আছে
১.৬ “শিশুরা খেলছিল মায়ের কোলে।” নিম্নরেখ পদটির কারক- বিভক্তি হবে–
(ক) সম্বোধনে শূন্য বিভক্তি
(খ) করণকারকে ‘এ’ বিভক্তি
(গ) কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি
(ঘ) অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি
উত্তরঃ (গ) কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
১.৭ বাক্যমধ্যস্থ যে সমস্ত বিশিষ্ট পদ বা পদগুচ্ছ বাক্যের ক্রিয়ার পাত্র বা আধাররূপে ব্যবহৃত হয়, তাকে বলে-
(ক) অধিকরণ কারক
(খ) অপাদান কারক
(গ) করণকারক
(ঘ) কর্মকারক
উত্তরঃ (ক) অধিকরণ কারক
১.৮ যে-কারকে অনুসর্গ ব্যবহারের প্রাবল্য দেখা যায়, সেটি হল—
(ক) করণ কারক
(খ) অপাদান কারক
(গ) অধিকরণ কারক
(ঘ) কর্মকারক
উত্তরঃ (খ) অপাদান কারক।
২. কম-বেশি ২০টি শব্দের মধ্যে প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো (যে-কোনো পাঁচটি): ১x৫=৫
২.১ ‘কঙ্কাবতী-ডমরুধর’-এর লেখকের নাম কী ?
উত্তরঃ ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়।
২.২ ‘ঠিক আছে, তোমার গল্প আমি ছাপিয়ে দেবো’- কোন্ পত্রিকায় ছাপানোর কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায়।
২.৩ “নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন” – কোন্ প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও লেখক সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ সত্যজিৎ রায়।
২.৪ ‘পাবলো নেরুদা’ নামটির উৎস কী ?
উত্তরঃ নেরুদা নামটির উৎস চেক লেখক জান নেরুদা এবং পাবলো নামটির সম্ভাব্য উৎস হলেন পল ভারলেইন।
২.৫ প্রদোষকালে পশুরা কোথা থেকে বেরিয়ে এসেছিল ?
উত্তরঃ গুপ্ত গহ্বর থেকে।
২.৬ ‘ক্ষমা করো’ – কাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ যুগান্তের কবিকে।
২.৭ ‘ডান পাশে ধ্বস’ ও ‘বাঁয়ে গিরিখাত’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তরঃ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় ‘ডান পাশে ধ্বস’ ও ‘বাঁয়ে গিরিখাদ’ বলতে কবি আসলে মানুষের পদে পদে বিপদের আশঙ্কার কথা বুঝিয়েছেন।
৩। কম-বেশি ২০টি শব্দের মধ্যে প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো (যে-কোনো তিনটি): ১×৩=৩
৩.১ তির্যক বিভক্তি কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে বিভক্তি একাধিক কারকে ব্যবহৃত হয়, তাকেই তির্যক বিভক্তি বলে।
৩.২ প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে কর্তা অন্য কর্তার প্রযোজনায় কাজ করে, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে।
৩.৩ যন্ত্রাত্মক করণ বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ করণ বাচক পদটি যদি হয় ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, তবে উক্ত করণকে যন্ত্রাত্মক করণ বলা হয়।
যেমনঃ এই কলমে লেখা যায়না।
৩.৪ ‘তারতম্যবাচক অপাদান’ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ দুইয়ের মধ্যে তুলনা বোঝালে ‘চেয়ে’ ‘থেকে’ প্রভৃতি অনুসর্গ বিশিষ্ট পদটিকে তারতম্য-বাচক বা তুলনা-বাচক অপাদান বলে।
৩.৫ অনুসর্গযুক্ত করণ কারকের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ দা দিয়ে বাঁশ কাটো।
৪। কম-বেশি ৬০টি শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো।
৪.১ ‘জন্ম নিল ফাউন্টেনপেন’-কার চেষ্টায়, কী কারণে ‘ফাউন্টেন পেন’ জন্ম নিল ?
উত্তরঃ লুইস অ্যাডশন ওয়াটারম্যান ব্যাবসা চুক্তি স্বাক্ষর করতে গিয়ে চুক্তিপত্রে দোয়াতের কালি পড়ায়, আবার বাড়ি থেকে কালি সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্যাবসা হাতছাড়া হয়ে যায়। তাই তিনি ফাউন্টেন পেন তৈরি করেন।
৪.২ সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়’– কাদের বাড়িতে, কী কারণে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল ?
উত্তরঃ সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কারণ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল। ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।
৫. কম-বেশি ৬০টি শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো : ২`frac১{২}`
৫.১ ‘তারপর যুদ্ধ এলো’- কীসের আকারে যুদ্ধ এলো ? সেই যুদ্ধে কারা খুন হলো আর কার মৃত্যু হলো না ?
উত্তরঃ পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি একটি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে। কবির মতে, সেই যুদ্ধ এসেছিল ‘রক্তের আগ্নেয়পাহাড়ের মতো’।
এক আগ্নেয়পাহাড় থেকে লাভা নিঃসরণের ফলে যেমন মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, কবিতায় উল্লেখিত যুদ্ধের প্রকৃতি ছিল তেমনি ভয়াবহ, তেমনি সর্বগ্রাসী। যুদ্ধের ফলে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, এমনকি শিশুরাও এর হাত থেকে রেহাই পায়নি। শুধু তাই নয়, কথকের বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হলেও কবির প্রিয়তমার মৃত্যু হয়নি।
৫.২ ‘এল ওরা’- ওরা কারা ? তারা কী নিয়ে কেন এসেছিল ?
উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদী শাসক সম্প্রদায় : তথাকথিত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকা কবিতায় ওরা বলে চিহ্নিত করেছেন।
লােহার হাতকড়ি :সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষরা বারবার আফ্রিকার ওপর অত্যাচার করে। কালাে রঙের এই মানুষদের তারা উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখে। এই সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষদের নিজের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। তাদের হাতে পরিয়ে দেওয়া হয় দাসত্বের শৃঙ্খল। বিপন্ন হয় আফ্রিকার স্বাধীনতা।
৫.৩ ‘আমাদের পথ নেই কোনো।’- আমাদের বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? পথ না থাকার কারণ কী ?
উত্তরঃ এখানে ‘আমাদের’ বলতে কবি সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছেন।
পথ না-থাকার কারণ– আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদের থাবায় আর যুদ্ধবাজদের আক্রমণে সাধারণ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। নিরীহ সাধারণ মানুষ আজ অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। মানুষের আদর্শহীনতা, স্বার্থপরতা চলার পথকে দুর্গম করেছে। মাথার উপরে বোমারু বিমানের আনাগোনা ধ্বংস ও মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছে। মানুষ নিরাশ্রয় হয়েছে। শিশুদের মৃতদেহ ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। এই পরিস্থিতিতে তাদের আর বেঁচে থাকার পথ নেই বলে কবি মনে করেন।
৬। কম-বেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো: ৫x১=৫
৬.১ ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে’- কে, কাকে, কীভাবে ছিনিয়ে নিয়ে গেল ? ২+৩
উত্তরঃ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উদ্ধৃত অংশে ‘তোমাকে’ বলতে উদ্ভ্রান্ত আদিম যুগে সদ্য গঠিত ‘আফ্রিকা’ মহাদেশকে বুঝিয়েছেন। ‘প্রাচী ধরিত্রীর বুক থেকে’ অর্থাৎ প্রাচ্য ভূখণ্ড থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ‘রুদ্র সমুদ্রের বাহু’।
জগৎসৃষ্টির উষালগ্নে চলছিল নানা র ভাঙাগড়া। সৃষ্টিকর্তা কিছুতেই তাঁর মনের মতো করে গড়ে তুলতে পারছিলেন না এই বিশ্বজগৎকে। সৃষ্টির আদিম যুগে যে ন, আফ্রিকা প্রাচ্য মহাদেশের অন্তর্গত ছিল, নানা ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে তা আলাদা ভূখণ্ডে পরিণত হয়। আদিম পৃথিবীর বুকে ঘটে যাওয়া ভৌগোলিক বিবর্তনকে এখানে কবি ফুটিয়ে তুলেছেন এক আশ্চর্য ব্যঞ্জনায়। বৈজ্ঞানিকদের মতে টেকটনিক প্লেটগুলির নড়াচড়ার ফলেই এশিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে আফ্রিকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কবি এরই কাব্যিক রূপ দিয়ে বলেছেন, রুদ্র সমুদ্র মূল ভূখণ্ড থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে যেন বনস্পতির নিবিড় পাহারায় কৃপণ আলোর অন্তরালে তাকে নিক্ষেপ করেছিল।
৬.২ ‘আমাদের শিশুদের শব/ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে’- কবির এই উক্তির অর্থ কী ? কবি এই বিপন্ন পরিস্থিতি থেকে মুক্তির কোন্ পথনির্দেশিকা দিয়েছেন ?
উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা থেকে গৃহীত। এই কবিতাটি তাঁর ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আজ মানুষের চারপাশ বিপৎসংকুল। তাই রাষ্ট্রীয় বর্বরতার নগ্ন ভয়াবহতা থেকে শিশুরাও এখন আর বাদ যায় না। এইজন্য ‘কাছে-দূরে’ অর্থাৎ যত্রতত্র নারকীয় হানাহানি কিংবা প্রাণঘাতী হিংসার বলি হিসেবে ছড়িয়ে থাকে শিশুর মৃতদেহ। এভাবেই ক্ষমতার দখলদার তথা শক্তিশালী প্রবল একদিকে নির্বিবাদে শিশুহত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেমন ধ্বংস করে, অন্যদিকে তেমনি আপামর জনসাধারণের মনে এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়। শিশু তো দেশের ভবিষ্যৎ, তাই তার হত্যা হলে, ভবিষ্যৎশূন্য হয় দেশ। নতুন ভাবনার ধারক ও বাহকের পথ নিশ্চিহ্ন হয় চিরতরে। সুতরাং, যে-সমাজ ও রাষ্ট্র শিশুহত্যার চক্রান্ত করে, সে সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব-বিরোধী। অন্যদিকে, নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না-পারা যেন আমাদেরই অক্ষমতা ও কলঙ্কের চিহ্ন। তাই কবি এই শিশুঘাতী মারণযজ্ঞের হাত থেকে মানবতায় উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন।
৭। কম-বেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো: ৫x১=৫
৭.১ ‘আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি’— সহজ কালি তৈরির পদ্ধতিগুলি বিবৃত করো। লেখক শৈশবের ‘হোমটাস্ক’ কীভাবে সম্পন্ন করতেন ? ৩+২
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ও তাঁর সতীর্থরা নিজেরাই কালি তৈরি করতেন। লেখকদের কালি তৈরির পদ্ধতিটি ছিল বেশ সহজ। বাড়ির রান্না হত কাঠের আগুনে, সেখানে রান্নার পর কড়াইয়ের নীচে প্রচুর কালি জমত। লাউপাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে একটা পাথরের বাটিতে রেখে তাঁরা জল দিয়ে গুলে নিতেন। এভাবেই প্রাবন্ধিকরা কালি তৈরি করতেন। তবে যারা কালি তৈরিতে ওস্তাদ ছিল, তারা ওই কালো জলে হরতকী ঘষত। কখনো কখনো আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে ওই কালো জলে মেশাত। সব ভালোভাবে মেশানোর পর খুন্তির গোড়ার দিকটা পুড়িয়ে লাল টকটকে করে সেই জলে ছ্যাঁকা দিত জল ফোটানোর জন্য। কিছু সময় টগবগ করে ফোটানোর পর ঠান্ডা হলে ন্যাকড়ায় ছেঁকে দোয়াতে ঢেলে নিলেই লেখার জন্য কালি প্রস্তুত হয়ে যেত।
লেখকরা সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে তার মুখ ছুঁচোলো করে কলম তৈরি করে নিতে হত। তারপর সেই কঞ্চির ছুঁচোলো মুখটা চিরে দেওয়া হত যাতে একসঙ্গে অনেকটা কালি গড়িয়ে না পড়ে। সে সময় লেখার জন্য কাগজের পরিবর্তে ব্যবহার করা হত কলাপাতা। সেগুলি কাগজের মতো মাপ করে কেটে নিয়ে তার উপর কঞ্চির কলমে ঘরে তৈরি কালি দিয়ে লিখে হোম-টাস্ক করতে হত তখনকার ছাত্রদের। ওই কলাপাতাগুলি বান্ডিল করে স্কুলে নিয়ে যেতে হত। শিক্ষক মহাশয় হোমটাস্ক দেখে বুঝে আড়াআড়িভাবে একটানে তা ছিঁড়ে পড়ুয়াদের ফেরত দিতেন।
৭.২ “তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই/তার চেয়ে অপমানের।” —প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্ধৃতি মধ্যস্থ ‘দুঃখ’ ও ‘অপমান’-এর কারণ বিশ্লেষণ করো। ২+৩
উত্তরঃ কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নায়ক তপনের এ কথা মনে হয়েছিল।
শিশুমন কোমল, সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে। এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে। অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে। সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপা হয়। স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। নানান বিরূপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে। কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময়। সে দ্যাখে প্রকাশিত গল্পে তার লেখার লেশমাত্র নেই। কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল। এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয়। তার চোখে জল এসে যায়। নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখ ও যন্ত্রণা তাকে কুরেকুরে খায়। তার মনে হয় লেখাটা তার নয়। নিজের লেখার আমূল পরিবর্তন দেখে তপন দুঃখ পায় ও অপমানিত বোধ করে।
৮। কম-বেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো: ৫x১=৫
৮.১ ‘ওইটুকু সময়ের মধ্যেই সে দেখে নিয়েছে’– কার পর্যবেক্ষণের কথা এখানে বলা হয়েছে ? ‘তিনি কী কী দেখে নিয়েছেন’- প্রসঙ্গ উল্লেখসহ বিবৃত করো। ১+৪
উত্তরঃ মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের একজন সাঁতার কোচ ক্ষিতিশ সিংহের পর্যবেক্ষণের কথা এখানে বলা হয়েছে।
কোনি নামে মেয়েটিকে তিনি প্রথম গঙ্গার ঘাটে সাঁতার দিতে দেখেছিলেন। রবীন্দ্র সরোবরের এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতাতেও তিনি কোনিকে লক্ষ করেছিলেন। এখানেই তিনি কোনির দাদার কাছে প্রস্তাব দেন যে, তিনি কোনিকে সাঁতার শেখাতে চান। সেখানেই কোনির দাদা তাঁকে নিজেদের দারিদ্র্যের কথা অকপটে জানায়। তাই ইচ্ছে থাকলেও যে কোনিকে সাঁতার শেখানোর সামর্থ্য কমলের নেই, তা সে ক্ষিতীশকে জানায়। এই কথা শুনে ক্ষিতীশ সিংহ তাঁর পরোপকারী, দরদি মানসিকতা নিয়ে কোনির সব দায়িত্ব গ্রহণের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
তারপর ক্ষিতীশ একদিন কোনিদের বস্তির ঘরের দুয়ারে হাজির হন হাতে জুপিটার ক্লাবে সুইমার হিসেবে ভরতি হওয়ার ফর্ম নিয়ে। সেখানে গিয়ে ক্ষিতীশ তাদের সংসারের চরম আর্থিক দৈন্য দুর্দশার ছবি নিজের চোখে দেখেন। ক্ষিতীশ ঘরের ভিতরে না ঢুকলেও ওইটুকু সময়ের মধ্যেই সে দেখে নিয়েছে কয়েকটা কাঁচা লঙ্কা, কাঁচা পেঁয়াজ, ফ্যান এবং সম্ভবত তার মধ্যে কিছু ভাত আছে আর তেতুল। পাঁচটি প্রাণী কলাই আর অ্যালুমিনিয়ামের থালা নিয়ে বসে। ঘরে একটা তক্তপোশ। তোষক নেই, শুধু চিটচিটে ছোট কয়েকটা বালিশ। দেয়ালে টাঙানো দড়িতে কিছু ময়লা জামা-প্যান্ট। খোলার চালের এই ঘরে একটি মাত্র জানলা, যার নিচেই থকথকে পাঁকে ভরা নর্দমা।
৮.২ ‘চ্যাম্পিয়নরা জন্মায়, ওদের তৈরি করা যায় না’– কাকে উদ্দেশ্য করে, কে, কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন ? ২+৩
উত্তরঃ সাহিত্যিক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে জুপিটারের প্রেসিডেন্ট বিনোদ ভড়ের কথার সূত্র ধরে ক্ষিতীশ সিংহ উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন। ক্ষিতীশ মনে করেন, প্রতিভাধর সাঁতারুকে নিয়মিত কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন বানানো যায়। তাই কোচকেই সর্বদা চোখ-কান খোলা রাখতে হয় কোন সাতারুর মধ্যে চ্যাম্পিয়নের লক্ষণ রয়েছে তা বুঝে নেওয়ার জন্য।
“কোনি” উপন্যাসে বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটে আম কুড়ানোর সময় ক্ষিতীশ কোনির যে আগ্রাসী মনোভাব ও সাঁতার দেখেছিলেন তা থেকেই চ্যাম্পিয়নের একটি ছবি তাঁর মনে ধরা পড়েছিল। এরপর কুড়ি ঘণ্টা অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় কোনির ধৈর্যের পরিচয় পেয়ে তার মধ্যে থাকা চ্যাম্পিয়নের লক্ষণগুলি সম্পর্কে নিশ্চিত হন তিনি। আর এই চিন্তা থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগেই তিলে তিলে তিনি কোনিকে যোগ্য সাঁতারুতে পরিণত করেন। নানারকম বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে কোনি জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত সফলও হয়। সুতরাং বক্তা যে প্রশ্নোদৃত কথাটি বলেন তা যেকোনো অংশেই যে ভুল নয় তা তিনি কোনিকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে গড়ে তুলে প্রমাণ করেন।
৯। চলিত গদ্যে অনুবাদ করো : ৪
A patriot is a man who loves his country, works for it, and is willing to fight and die for it. Every soldier is bound to do his duty, but the best soldiers more than this. They risk their lives because they love the country. They are the best friends of the people.
দেশপ্রেমিক হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি তাঁর দেশকে ভালোবাসেন, তার জন্য কাজ করেন এবং তার জন্য যুদ্ধ করতে ও প্রাণ দিতে প্রস্তুত থাকেন। প্রতিটি সৈনিক নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধ, কিন্তু শ্রেষ্ঠ সৈনিকেরা এর থেকেও কিছু বেশি করেন। তাঁরা তাঁদের জীবনে ঝুঁকি নেন, কেন-না তাঁরা দেশকে ভালোবাসেন। তারা মানুষের সেরা বন্ধু।