আঁকা, লেখা | মৃদুল দাশগুপ্ত | প্রশ্নোত্তর

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now
                    সাহিত্য মেলা
                বাংলা সপ্তম শ্রেণি 


শব্দার্থ :
» খুশ খেয়াল– খামখেয়াল, মর্জি।
» ঈষৎ– অল্প, কিঞ্চিৎ।
» চিত্র– ছবি, আলেখ্য, প্রতিলিপি।
» কাঁপন– কম্পন, স্পন্দন।
» মৎস্য– মাছ, মীন।
» পুলক– রোমাঞ্চ, আনন্দ।
» সর– দুধ, দই প্রভৃতির উপরের ঘন নরম আবরণ।
» পদক– কন্ঠভূষণ, লকেট।
» পিটপিটে– মিটমিটে, আধচোখে দেখা।
» বেজায়– অত্যন্ত, খুব।
» পুরু– ঘন, স্থূল।
» পরম– চরম, অত্যন্ত।

কবি পরিচিতিঃ

মৃদুল দাশগুপ্ত (১৯৫৫): হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে জন্ম। লেখাপড়া করেছেন উত্তরপাড়া কলেজে। বিষয় ছিল জীববিজ্ঞান। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জলপাই কাঠের এসরাজ’। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ- ‘এভাবে কাঁদে না’, ‘গোপনে হিংসার কথা বলি’, ‘সূর্যাস্তে নির্মিত গৃহ’ ইত্যাদি। ছোটোদের জন্য ছড়ার বই- ‘ঝিকিমিকি ঝিরিঝিরি’, ‘ছড়া ৫০’, ‘আমপাতা জামপাতা’। প্রবন্ধগ্রন্থ- ‘কবিতা সহায়’। তিনি বর্তমানে সাংবাদিকতার সলো যুক্ত।

সারসংক্ষেপঃ খেয়ালখুশিতে যখন কবি রং ছড়িয়ে ছবি আঁকেন তখন তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়। চড়ুই পাখি অবাক হয়ে তাকায়। মাছরাঙা পাখি মাছ ধরা ভুলে গিয়ে তার নীল রং ধার দিতে চায়। প্রজাপতির ঝাঁক বারবার চায় তাদের যেন ছবিতে আঁকা হয়। গর্ত থেকে ইঁদুর পিটপিট চোখে চেয়ে আছে। আজ দুপুরে কবিকে পেয়ে রং-তুলিরা বেজায় খুশি। যখন মাঠ ভরে ওঠে দুধের সরের মতো জ্যোৎস্নায়, বাতাসে লাগে মৃদু কাঁপন, তখন কবির ছড়া লেখা শুরু হয়। আবার যেন তারার মালা খুব গোপনে নামছে কাছে। বকুল গাছে জোনাকিরা যেন ‘অ’, ‘আ’ লিখছে। এই ছড়াই কবির কাছে আনন্দের, পদক পাওয়ার।

(হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর)

১. ‘পিটপিটে চোখ’ – শব্দটির মানে ‘যে চোখ পিটপিট করে তাকায়।’ এই রকম আরও পাঁচটি শব্দ তৈরি করো। একটি করে দেওয়া হল— ‘কুড়মুড়ে চানাচুর’।

উত্তরঃ

(ক) ঝুরঝুরে আলুভাজা।
(খ) গরম গরম লুচি।
(গ) ঝিরঝিরে বৃষ্টি।
(ঘ) তরতাজা শিশু।
(ঙ) টক-ঝাল ফুচকা

২. ঠিক বানানটি বেছে নাও :

২.১ (মৎস্য / মৎস / মংশ্য)

উত্তরঃ মৎস্য।

২.২ (দুধের স্বর / দুধের সর / দুধের শর)

উত্তরঃ দুধের সর।

২.৩ (কাপন / কাঁপন / কাঁপণ)

উত্তরঃ কাঁপন।

২.৪ (ঈশৎ / ইষৎ / ঈষৎ)

উত্তরঃ ঈষৎ।

৩. নীচে দেওয়া শব্দগুলির সমার্থক শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :

উত্তরঃ

» সামান্য > ঈষৎ।
» আনন্দ > খুশি।
» মীন > মৎস্য।
» নক্ষত্র > তারা।
» মুষিক > ইঁদুর

৪. ‘কম্পন’শব্দ থেকে এসেছে কাঁপন’ শব্দটি, অর্থাৎ ‘ম্প’ যুক্তাক্ষরটি ভেঙে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া ম’আগের ধ্বনিটিকে অনুনাসিক করে তুলেছে এবং একটি নতুন ‘আ’ ধ্বনি চলে আসছে। এই নিয়মটি মনে রেখে নীচের ছকটি সম্পূর্ণ করো।

উত্তরঃ

চন্দ্ৰ > চাঁদ।

ষণ্ড > ষাঁড়।

চম্পা > চাঁপা।

ঝম্প > ঝাঁপ!

অঙ্ক > আঁক।

৫. একসঙ্গে অনেক প্রজাপতি থাকলে আমরা বলি ‘প্রজাপতির ঝাঁক’। এই ভাবে আর কী কী শব্দ তৈরি করা যায় শব্দ ঝুড়ি থেকে শব্দ নিয়ে নীচের শূন্যস্থানগুলি পূরণ করে দেখো।

উত্তরঃ

( সারি, মূল, ঝাঁক, দল, বহর, পাল )

৫.১ ভেড়ার ___________। উত্তরঃ পাল।

৫.২ হস্তী ____________। উত্তরঃ যূথ।

৫.৩ কই মাছের __________।

উত্তরঃ ঝাঁক।

৫.৪ নৌকার ___________। উত্তরঃ বহর।

৫.৫ সুপুরি গাছের ____________।

উত্তরঃ সারি।

৫.৬ ছাত্রদের ___________। উত্তরঃ দল।

৬. নীচের বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ লেখো :

উত্তরঃ

» রং > রঙিন।
» চিত্র > চিত্রিত।
» লেখা > লিখিত।
» মাঠ > মেঠো।
» পুলক > পুলকিত।

৭. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্যরচনা করো :

উত্তরঃ

৭.১ ঈষৎ কাঁপন – বাতাসে ঈষৎ কাঁপন লাগলে তাস দিয়ে বানানো ঘর ভেঙে যাবে।

৭.২ পরম পুলক – আমার দাদা চাকরি পাওয়ায় পরম পুলকে আমার বুকটা ভরে গেল।

৭.৩ বেজায় খুশি – অতিরিক্ত গরমের জন্য ছুটি পেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা বেজায় খুশি।

৭.৪ নীল রং – আকাশের নীল রং আমার ভীষণ প্রিয়।

৭.৫ পিটপিটে চোখ – পিটপিটে চোখে ছোট্ট বাচ্চাটি কেমন তাকিয়ে আছে দেখো।

৭.৬ গোপন বাসনা – সবসময় সবাইকে গোপন বাসনা জানানো উচিত নয়।

৮. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :

উত্তরঃ

» গোপন > প্ৰকাশ। » খুশি > কষ্ট।
» পুরু > সরু। » ঈষৎ > বেশি।
» ঝগড়া > বন্ধুত্ব।

৯. নিম্নরেখ অংশগুলির কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো :

৯.১ তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়।

উত্তরঃ কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।

৯.২ গর্ত থেকে ইঁদুর, সেটাও পিটপিটে চোখ দেখছে চেয়ে।

উত্তরঃ অপাদান কারকে ‘থেকে’ অনুসর্গ।

৯.৩ প্রজাপতির ঝাঁক চাইছে তাদের রাখি আমার আঁকায়

উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘য়’ বিভক্তি।

৯.৪ এবার যেন তারার মালা খুব গোপনে নামছে কাছে।

উত্তরঃ কর্মকারকে শূন্য’ বিভক্তি।

৯.৫ সেই তো আমার পদক পাওয়া।

উত্তরঃ কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

১০. বাক্য বাড়াও :

১০.১ আমি যখন আঁকি। (কী, কীভাবে?)

উত্তরঃ আমি যখন ছবি আঁকি, খেয়াল-খুশি ভাবে।

১০.২ চাঁদের দুধের সর জমে যায়। (কোথায় ? কেমন ?)

উত্তরঃ

» পূব আকাশে চাঁদের দুধের সর জমে যায়।
» পূব আকাশে পুরু হয়ে চাঁদের দুধের সর জমে যায়।

১০.৩ পিটপিটে চোখ দেখছে চেয়ে। (কে ? কোথা থেকে ?)

উত্তরঃ

» পিটপিটে চোখে দেখছে চেয়ে বিড়াল।
» গর্ত থেকে ইঁদুর পিটপিটে চোখে দেখছে

১০.৪ ছড়া লেখার শুরু। (কার ? কখন ?)

উত্তরঃ কবির ছড়া লেখার শুরু সেই ছোট্ট বেলা থেকে।

১০.৫ ‘অ’ লিখছে ‘আ’ লিখছে। (কারা ? কোথায় ?)

উত্তরঃ

» দশ জোনাকি ‘অ’ লিখছে ‘আ’ লিখছে ।
» জোনাকিরা বকুল গাছে ‘অ’, ‘আ’ লিখছে।

১১. একটি বাক্যে উত্তর দাও :

১১.১ কবি কখন ছবি আঁকেন ?

উত্তরঃ দুপুরবেলায় কবির মন যখন খুশি আর খেয়ালে ভরে ওঠে, তখন তিনি ‘রং ছড়িয়ে’ ছবি আঁকেন।

১১.২ কখন তাঁর ছড়া লেখার শুরু ?

উত্তরঃ মাঠে চাঁদের জ্যোৎস্না দুধের সরের মতো যখন জমে যায় এবং বাতাসে সামান্য কাঁপন লাগে, তখন কবির ছড়া লেখার শুরু।

১১.৩ তিনটি শালিক কী করে ?

উত্তরঃ কবির ছবি আঁকা দেখে তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়।

১১.৪ কে অবাক হয়ে তাকায় ?

উত্তরঃ চড়ুই পাখি অবাক হয়ে তাকায়।

১১.৫ মাছরাঙা কী চায় ?

উত্তরঃ মাছরাঙা নীল রং ধার দিতে চায়।

১১.৬ প্রজাপতিদের ইচ্ছা কী ?

উত্তরঃ প্রজাপতিদের ইচ্ছে তাদেরকেও যেন এঁকে রাখা হয়।

১১.৭ গর্তে কে থাকে ?

উত্তরঃ ইঁদুর গর্তে থাকে।

১১.৮ চাঁদের পুরু দুধের সর কোথায় জমে ?

উত্তরঃ দূরের মাঠে চাঁদের পুরু দুধের সর জমে।

১১.৯ কারা, কোথায় অ-আ লিখছে ?

উত্তরঃ জোনাকিরা বকুল গাছে অ-আ লিখছে।

১১.১০ কবি কোন বিষয়কে ‘পদক পাওয়া’ মনে করেছেন ?

উত্তরঃ  ছড়া লিখে পাঠকের কাছে পৌঁছানোকে কবি ‘পদক’ পাওয়া মনে করেছেন।

১২. দু-তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :

১২.১ কবি যখন ছড়া লিখতে শুরু করেন তখন চারপাশের প্রকৃতিতে কী কী পরিবর্তন ঘটে ?

উত্তরঃ কবি যখন ছড়া লিখতে শুরু করেন, সেইসময় চাঁদের আলো দুধের সরের মতো মাঠে পুরু হয়ে জমে ওঠে এবং বাতাসে ঈষৎ কাঁপন লাগে। কবির মনে হয়, সেই সময় তারার দল মালা হয়ে খুব গোপনে তাঁর কাছে নেমে আসে।

১২.২ কবি যখন ছবি আঁকেন তখন কী কী ঘটনা ঘটে ?

উত্তরঃ কবি যখন ছবি আঁকেন তখন তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়, চড়ুই পাখি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। মাছকে ভুলে মাছরাঙা তার নীল রং ধার দিতে চায়। প্রজাপতি ছবি হতে চায়। গর্ত থেকে ইঁদুর বেরিয়ে পিটপিট চোখে চেয়ে থাকে।

১২.৩ ‘তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়’- কোন্ কবির কোন্ কবিতায় এমন তিন শালিকের প্রসঙ্গ অন্যভাবে আছে ?

উত্তরঃ তিনটি শালিকের ঝগড়া আছে রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, তাঁর ‘সহজ পাঠ ২য় ভাগের নবম পাঠে। সেখানে তিনটি শালিকের রান্নাঘরের চালে ঝগড়া করার উল্লেখ আছে– ‘তিনটি শালিক ঝগড়া করে’।

১২.৪ মাছরাঙা পাখি কেমন দেখতে ? সে মৎস্য ভুলে যায় কেন ?

উত্তরঃ মাছরাঙা পাখির চোখ তীক্ষ্ণ, ক্ষুরধার, লম্বা ঠোঁট এবং গায়ে নীল হলুদ ডোরাকাটা।
» কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ছবি আঁকা দেখে সে মৎস্য ভুলে যায় অর্থাৎ মাছ ধরা ভূলে যায়।

১২.৫ রং-তুলিরা বেজায় খুশি আজ দুপুরে আমায় পেয়ে”- কবির এমন বক্তব্যের কারণ কী ?

উত্তরঃ শিল্পী ছবি আঁকেন রং এবং তুলি দিয়ে। তাতে রং-তুলিরাও যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। কবি-শিল্পী ওই রং আর তুলি দিয়ে প্রকৃতির ছবি আঁকছেন বলে তারা খুব খুশি হয়।

১২.৬ ‘অ’ লিখছে ‘আ’ লিখছে”— কারা কীভাবে এমন লিখছে ? তাদের দেখে কী মনে হচ্ছে ?

উত্তরঃ জোনাকিরা একসঙ্গে মিলিত হয়ে ‘অ’- ‘আ’ লিখছে।
» তাদের দেখে যেন তারাদের মালা মনে হচ্ছে।

(এই উত্তরটিও লিখতে পারো)

উত্তরঃ দশটি জোনাকি উড়ে উড়ে তাদের আলো দিয়ে ‘অ’, ‘আ’ লিখছে। জোনাকিদের দেখে মনে হয়, তারা খুবই খুশি।

১৩. অনধিক দশটি বাক্যে উত্তর দাও :

১৩.১ ‘এই ছড়াতেই আজ আমাকে তোমার কাছে আনলো হাওয়া’– কাকে উদ্দেশ্য করে কবি একথা বলেছেন ? কবির আঁকা এবং লেখা-র সঙ্গে এই মানুষটির উপস্থিতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব বিচার করো।

উত্তরঃ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত এখানে তাঁর কবিতার পাঠক, বিশেষত শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন।

যখন মাঠ ভরে ওঠে দুধের সরের মতো জ্যোৎস্নায়, বাতাসে লাগে মৃদু কাঁপন, তখন কবির ছড়া লেখা শুরু হয়। ঠিক এই সময় তারার মালা আকাশ থেকে নেমে আসে গোপনে এবং নিঃশব্দে আর জোনাকিরা বকুল গাছে তাদের ক্ষুদ্র আলো দিয়ে লেখে ‘অ’, ‘আ’। কবি অনুভব করেছেন, এই হাওয়াই তাঁকে ছড়ার মাধ্যমে পাঠকদের সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছে।

এইভাবে আনন্দকে পাওয়াই হল তাঁর সকল খুশির উৎস এবং এটিই তাঁর পাওয়া শ্রেষ্ঠ ‘পদক’। কেবল লেখা নয়, ছবি আঁকার সময়ও কবি এরকমই আনন্দ পান, তাই তিনি ‘খুশ-খেয়ালে’ ছবি আঁকেন। কবির আঁকা দেখে শালিক, চড়াই, মাছরাঙা পাখিরা, প্রজাপতির ঝাঁক সেই আনন্দের অংশ হতে চায়, গর্তের ইঁদুরও চোখ পিটপিট করে কবির দিকে চেয়ে থাকে। আনন্দিত হয়ে ওঠে রং আর তুলি। প্রকৃতি, প্রাণীর বিস্ময় ও আনন্দের সঙ্গে কবির আনন্দ মিশে তখন এক ঐকতানের সৃষ্টি করে, যার প্রকাশ ঘটে তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। এই সৃষ্টি সার্থক হয়ে ওঠে শুধুমাত্র পাঠকের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে।

১৩.২ এই কবিতায় যে যে উপমা ও তুলনা ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলির ব্যবহারের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ কবিতার ভাবটিকে যথাযথভাবে প্রকাশ করার জন্য উপমা ব্যবহার করা হয়। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর ‘আঁকা, লেখা’ কবিতায় কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ উপমা সুন্দরভাবে ব্যবহার করেছেন। কবিতায় চাঁদের জ্যোৎস্নার সঙ্গে ‘দুধের সরের’ তুলনা করা হয়েছে। তারকাপুঞ্জকে বলা হয়েছে ‘তারার মালা’। খুদে পাঠকের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার পরম আনন্দকে ‘পদক’ পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে কবি এখানে তাঁর কবিতায় চমৎকারিত্ব এনেছেন। এইরকম যথাযথ উপমা প্রয়োগই কবিতাটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এইসব তুলনা এবং উপমা ব্যবহারে কবিতাটিকে সমৃদ্ধ করেছে।

১৩.৩ ছবি আঁকা, ছড়া / কবিতা লেখার মধ্যে তুমি নিজে কোন্‌টা, কেন বেশি পছন্দ করো তা লেখো।

উত্তরঃ আমি কবিতা লেখাকে বেশি পছন্দ করি।
» কারণ, কবিতা লেখার সঙ্গে আমার প্রাণের সংযোগ। কবিতার মধ্যে নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করা যায়। এই অনুভূতির মধ্যে ধরা পড়ে মনের নানা ছবি। এই ছবি হল প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ। আসলে প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের সঙ্গে মিশে যায় মন। বাস্তবের নানা উপকরণের সঙ্গে অন্তঃপ্রকৃতি মিলে গিয়ে একটা নতুন সুর, নতুন ছন্দ সৃষ্টি হয়। যা আমার মনকে
আনন্দ দেয়। তাই আমার কবিতা লিখতে অনেক বেশি ভালো লাগে।

(যারা ছবি আঁকাকে বেশি পছন্দ করে তারা নিচের উত্তর লিখবে)

উত্তরঃ আমি নিজে ছবি আঁকাকে বেশি পছন্দ করি। কারণ কবিতা লেখার মতো কল্পনাশক্তি এবং বাংলা ভাষার ওপর দখল এখনও আমার নেই। তা ছাড়া কবিতায় ব্যবহৃত ছন্দের নিয়মও আমি ঠিক বুঝতে পারি না। সেকারণেই যথাযথ শব্দ, ছন্দ, অলংকার, উপমা প্রয়োগ করে এখনও একটি কবিতা আমি লিখে উঠতে পারিনি। তার চেয়ে ছবি এঁকে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতেই আমার সুবিধা হয়। চারপাশের প্রকৃতি আমাকে ছবি আঁকায় দারুনভাবে উদ্বুদ্ধ করে।

১৩.৪ তোমার নিজের লেখা ছড়া / কবিতা, নিজের আঁকা ছবিতে ভরিয়ে চার পাতার একটি হাতে লেখা পত্রিকা তৈরি করো। পত্রিকার একটি নাম দাও। তারপর শিক্ষিকা/শিক্ষককে দেখিয়ে তাঁর মতামত জেনে নাও।

উত্তরঃ নিজে করো।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

১. “আমি যখন চিত্র আঁকি”-কবি কীভাবে চিত্র আঁকেন ?

উত্তরঃ কবি রং ছড়িয়ে খুশিতে ও খেয়ালে ছবি আঁকেন।

২. কবির ছবি আঁকায় মাছরাঙার কী ভূমিকা ছিল ?

উত্তরঃ কবির ছবি আঁকার সময়ে মাছরাঙা মাছের কথা ভুলে গিয়ে তার নীল রংটি কবিকে ধার দিতে চেয়েছিল।

৩. প্রজাপতিরা কবির কাছে কী চেয়েছিল ?

উত্তরঃ প্রজাপতির ঝাঁক চেয়েছিল কবি যেন তাদেরও ছবি আঁকেন।

৪. গর্তের ইঁদুর কবির ছবি আঁকার সময় কী করছিল ?

উত্তরঃ গর্তের ইঁদুর কবির ছবি আঁকার সময় পিটপিট করে তাকাচ্ছিল।

৫. মাছরাঙা তার কোন্ রং ধার দিতে চায় ?

উত্তরঃ মাছরাঙা তার নীল রংটি কবিকে ধার দিতে চায়।

৬. “তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়”- এই ঝগড়া থামানোর কারণ কী ?

উত্তরঃ চিত্রকর যখন ছবি আঁকেন, সেই ছবি এতই মুগ্ধতা তৈরি করে যে চারপাশের প্রকৃতি ও প্রাণীজগতও তার ব্যতিক্রম হয় না। তাই শালিকেরাও ঝগড়া থামিয়ে ছবির দিকে তাকায়।

৭. ‘আঁকা-লেখা’ কবিতায় মাঠে কী ঘটেছিল ?

উত্তরঃ চাঁদের জ্যোৎস্নার আলোয় মাঠটা এমনভাবে আলোকিত হয়েছিল যেন মনে হচ্ছিল মাঠে দুধের সর জমে গেছে।

৮. “আমার ছড়া লেখার শুরু…” – কখন কবির ছড়া লেখার শুরু ?

উত্তরঃ যখন বাতাসের কম্পন অল্প অনুভূত হয় তখনই কবি ছড়া লেখা শুরু করেন।

৯. “বাতাস ঈষৎ কাঁপন দিতেই আমার ছড়া লেখার শুরু।” – বাতাসের কাঁপনের সঙ্গে কবির ছড়া লেখা শুরু হওয়ার সম্পর্ক কী ?

উত্তরঃ বাতাসের কাঁপন কবির মনে সৌন্দর্য ও আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তোলাতেই কবি ছড়া লেখা শুরু করেন।

১০. ‘আঁকা, লেখা’ কবিতায় কীসের মালা খুব গোপনে নামছে কাছে ?

উত্তরঃ ‘আঁকা, লেখা’ কবিতায় কবির কাছে খুব গোপনে তারার মালা নেমে আসার কথা বলা হয়েছে।

১১. ‘অ’ লিখছে, ‘আ’ লিখছে- কারা কীভাবে এমন লিখছে ?

উত্তরঃ জোনাকিরা বকুল গাছে আলো দিয়ে যেন বাংলার বর্ণমালা- ‘অ’ ‘আ’ লিখছিল।

১২. “এই ছড়াতেই আজ আমাকে তোমার কাছে আনল হাওয়া”- এখানে ‘তুমি’ কে ?

উত্তরঃ এখানে ‘তুমি’ বলতে পাঠককে বোঝানো হয়েছে।

১৩. “সেই তো আমার পরম পুলক, সেই তো আমার পদক পাওয়া” – কীসের কথা বলেছেন কবি ?

উত্তরঃ ‘আঁকা, লেখা’ কবিতাতে কবি ছড়ার সূত্রে পাঠকের কাছে পৌঁছে যাওয়াকেই তাঁর আনন্দ ও পুরস্কার পাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন।

১৪. কবির ছড়া লেখায় প্রকৃতি কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল লেখো।

উত্তরঃ কবি নিজেই বলেছেন যে মাঠে যখন
জ্যোৎস্না নামে এবং বাতাস কম্পন তৈরি করে তখন তাঁর ছড়া লেখার শুরু হয়। আকাশ থেকে তখন তারার মালা নেমে আসে আর জোনাকিরা বকুল গাছে আলোর অক্ষর তৈরি করে। প্রকৃতির এই পরিবর্তনে কবি পরম পুলক বোধ করেন।

১৫. “বাতাস ঈষৎ কাঁপন দিতেই আমার ছড়া লেখার শুরু”ষ” – বাতাসের ঈষৎ কাঁপন কীভাবে কবিকে ছড়া লেখার কাজে উৎসাহিত করেছিল ?

উত্তরঃ নিসর্গপ্রকৃতি যুগ যুগ ধরে কবিদের
কাব্যরচনায় উৎসাহ যুগিয়েছে। আধুনিক কবি মৃদুল দাশগুপ্তও প্রকৃতির মায়াবী হাতছানি উপেক্ষা করতে পারেননি। তাই যখন রাত্রিবেলা প্রান্তরের ওপর দুধের সরের মতো জ্যোৎস্না জমে ওঠে এবং বাতাসের ঈষৎ কাঁপন অনুভূত হয়, তখনই প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ কবি তাঁর কবিতায় প্রকৃতির সেই রূপকে ধরে রাখতে চান। এভাবেই প্রকৃতি কবিকে অনুপ্রাণিত করে কবিতা লিখতে।

পরবর্তী পাঠঃ খোকনের প্রথম ছবি

This Post Has 3 Comments

  1. Avishek

    ১৩.৪ এর কোশ্চেন এর উত্তরটা পাঠান

    1. proshnodekho

      চেষ্টা করলে তুমিই পারবে।

Leave a Reply