বঙ্গভূমির প্রতি কবি পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্নোত্তর / Bongobhumira Proti Question Answer [WBCHSE]

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

 

সপ্তম শ্রেণির বাংলা ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর | Class 7 Bengali ‘Bongobhumir Proti’ Question Answer wbbse

সপ্তম শ্রেণির বাংলা ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কবি পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Bongobhumir Proti Question Answer wbbse

1. সপ্তম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

3. সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

4. সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

5. সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

সপ্তম শ্রেণির বাংলা ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কবি পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Bongobhumir Proti Question Answer wbbse

কবি পরিচিতিঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের যশোহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা রাজনারায়ণ দত্ত পেশায় ছিলেন সম্ভ্রান্ত আইনজীবী, মাতা জাহ্নবী দেবীর তত্ত্বাবধানে তার লেখাপড়া গ্রামের পাঠশালায় শুরু হয়। বেশ কিছু পরে ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় এসে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। কবির জীবনে হিন্দু কলেজের যথেষ্ট প্রভাব ছিল। ইংরেজি ভাষায় ছিল তার অসাধারণ দক্ষতা । ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে বিলেতে গিয়ে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে তিনি ‘মাইকেল নাম ধারী’ হন। ছাত্রজীবন থেকে বিভিন্ন ইংরেজি রচনার পাশাপাশি ‘The Captive Lady’ এবং ‘Visions Of The Past’ নামের দুখানি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। বাংলা জগতে তিনি কিছু বাংলা নাটক রচনা করেন সেগুলি যথাক্রমে ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ ‘শর্মিষ্ঠা’ ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ পদ্মাবতী, কৃষ্ণকুমারী প্রভৃতি। আরো কিছু কাব্য গ্রন্থ লিখেছিলেন, কাব্যগ্রন্থ গুলি হল– মেঘনাদবধ কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য। ইংরেজি সনেটের অনুসরণে বাংলায় চতুর্দশপদী কবিতাবলী বাংলার প্রথম কৃতিত্ব। তার চতুর্দশপদী কবিতাবলী প্রতিভার অনন্য কৃতিত্ব । জীবনের শেষপর্বে হেক্টরবধ নামে তার একটি গদ্য প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন কবি মারা যান।
বঙ্গভূমির প্রতি 
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
“My Native Land, Good night!” : Byron
রেখো, মা, দাসেরে মনে,     এ মিনতি করি পদে।
সাধিতে মনের সাদ,
ঘটে যদি পরমাদ,
মধুহীন করো না গো।      তব মনঃকোকনদে।
প্রবাসে, দৈবের বশে,
জীব-তারা যদি খসে
এ দেহ-আকাশ হতে,-       নাহি খেদ তাহে।
জন্মিলে মরিতে হবে,
অমর কে কোথা কবে,
চিরস্থির কবে নীর,        হায় রে, জীবন-নদে?
কিন্তু যদি রাখ মনে,
নাহি মা ডরি শমনে,
মক্ষিকাও গলে না গো,        পড়িলে অমৃত-হ্রদে!
সেই ধন্য নরকুলে,
লোকে যারে নাহি ভুলে,
মনের মন্দিরে সদা         সেবে সর্বজন;—
কিন্তু কোন গুণ আছে,
যাচিব ও যে তব কাছে,
হেন অমরতা আমি,        কহ, গো, শ্যামা জন্মদে!
তবে যদি দয়া করো,
ভুল দোষ, গুণ ধরো,
অমর করিয়া বর          দেহ দাসে, সুবরদে!-
ফুটি যেন স্মৃতি- জলে,
মানসে, মা, যথা ফলে
মধুময় তামরস            কি বসন্ত, কি শরদে!

শব্দার্থ:
» মিনতি– অনুনয়, বিনীত অনুরোধ, আবেদন।
» পরমাদ– ‘প্রমাদ’-এর পরিবর্তিত (কোমল) রূপ।
» ভুল– বিস্মৃতি, অনবধানতা।
» কোকনদ– লাল পদ্ম।
» প্রবাস– বিদেশ।
» দৈব– অদৃষ্ট, ভাগ্য।
» নীর– জল।
» শমন– মৃত্যুর দেবতা যম।
» মক্ষিকা– মাছি।
» অমৃত– যা পান করলে মৃত্যু হয় না, সুধা।
» অমৃত হ্রদ– সুধায় পূর্ণ হ্রদ।
» জন্মদে– ‘জন্মদা’-র সম্বোধন রূপ, জন্ম দেয় যে, জননী।
» সুবরদে– ‘সুবরদা’-র সম্বোধন রূপ, সু (শুভ) বর দেন যিনি, বরদাত্রী।
» মধুময়– মধুতে ভরা, মধুমাখা।
» তামরস– পদ্ম।

বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার ব্যাখ্যা—

রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে।

ব্যাখ্যা : কবি নিজের দেশকে মা এবং নিজেকে তার সন্তান (দাস) হিসেবে কল্পনা করে সর্বদা প্রার্থনা করেছেন যেন দেশ তাকে সর্বদা মনে রাখে, ঠিক মা যেমন করে তার সন্তানকে মনে রাখে।

সাধিতে মনের সাধ ঘটে যদি পরমাদ,
মধুহীন করো না গো। তব মনঃকোকনদে।

ব্যাখ্যা : সাধিতে মনের সাধ অর্থাৎ মনের সাধ অথবা ইচ্ছা মেটাতে গিয়ে, ঘটে যদি পরমাদ অর্থাৎ কোন ভুল ভ্রান্তি করে বসেন, মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে অর্থাৎ তবুও যেন বঙ্গভূমি তার মনকে মধুহীন না করে। কবি এখানে বঙ্গভূমির মনকে পদ্ম ফুলের সাথে তুলনা করেছেন, পদ্মফুলে যেমন মধু থাকে বঙ্গভূমির মনেও তেমনই মধু হয়ে থাকতে চান।

প্রবাসে, দৈবের বসে, জীব-তারা যদি খসে
এ দেহ-আকাশ হতে, নাহি খেদো তাহে।

ব্যাখ্যা : (প্রবাসে) বিদেশে থাকা অবস্থায়, (দৈবের বসে) ভাগ্যের বসে, (জীব তারা যদি খসে এ দেহ-আকাশ হতে) যদি আকস্মিক মৃত্যু হয়, (নাহি খেদ তাহে) তাতেও কোন আক্ষেপ থাকবে না।
অর্থাৎ কবি প্রবাসে থাকা অবস্থায় ভাগ্যের বসে যদি আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন তাতে কবির মনে কোন আক্ষেপ থাকবে না। খেদ শব্দের অর্থ আক্ষেপ।

জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে,
চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে ?

ব্যাখ্যা : জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, অর্থাৎ কবি এখানে জগতের পরম সত্যকে স্বীকার করে বলেছেন পৃথিবীতে জন্ম নিলে একদিন মরতে হবেই, পৃথিবীতে কেউ অমর নয়। চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে ? অর্থাৎ জীবন-নদীর জলে কেউ স্থির থাকে না, সকলকেই একদিন মরতে হয়। তাই কবিও একদিন মৃত্যুবরণ করবেন।

কিন্তু যদি রাখ মনে, / নাহি, মা, ডরি শমনে ;
মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত-হ্রদে!

ব্যাখ্যা : মা যেমন তার সন্তানকে চিরদিন মনে রাখে তেমনিভাবে দেশ এবং দেশের মানুষ যদি তাকে মনে রাখে তাহলে কবি শমনে অর্থাৎ মৃত্যুতেও ভয় পান না। যেমনিভাবে মক্ষিকা তথা মাছি অমৃত হ্রদে পড়লেও মরে না, তেমনি ভাবে দেশ তথা দেশের মানুষ যদি কবিকে মনে রাখে তাহলে কবির মৃত্যু হলেও তিনি অমর হয়ে থাকবেন।

সেই ধন্য নরকূলে, / লোকে যারে নাহি ভুলে,
মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্বজন;—

ব্যাখ্যা : সেই ধন্য নরকূলে তথা পৃথিবীতে, মানুষ যাকে সর্বদা মনে রাখে এবং মনের মন্দিরে সর্বদা সেবা করে। এখানে সেবা বলতে শ্রদ্ধা বুঝানো হয়েছে।

কিন্তু কোন গুণ আছে,/যাচিব যে তব কাছে,
হেন অমরতা আমি, কহ, গো, শ্যামা জন্মদে!

ব্যাখ্যা: কবির এমন কোন গুণ নেই যে তার জন্য জন্মভূমির কাছে তাকে সারা জীবন মনে রেখে তার অমরতা চাইবেন।

তবে যদি দয়া কর, / ভুল দোষ, গুণ, ধরো
অমর করিয়া বর দেহ দাসে, সুবরদে!

ব্যাখ্যা: কবি এই লাইনটিতে গভীরভাবে আশা প্রকাশ করেছেন যে, যদি বঙ্গভূমি কবিকে দয়া করে তার দোষ গুলি ভুলে শুধুমাত্র গুণগুলি মনে রাখে তবে সু-বরদা তথা যিনি ভালো আশীর্বাদ দান করেন, তার মত করে বঙ্গভূমিও কবিকে অমরতা দান করবেন।

ফুটি যেন স্মৃতি-জলে,
মানসে, মা, যথা ফলে
মধুময় তামরস কি বসন্ত, কি শরদে!

ব্যাখ্যা: কবে এই লাইনটিতে তীব্রভাবে আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে, এদেশের মানুষের মনে, স্মৃতিতে কবি কি বসন্ত কি সরদে তথা সর্বদা মধুময় পদ্ম ফুলের মত অম্লান ফুটে থাকতে চান।

বিষয় সংক্ষেপ :

মা যেন তাঁর দাস কবিকে মনে রাখেন, বঙ্গভূমির প্রতি কবির এই মিনতি। মনের ইচ্ছা পূরণ করতে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে, তবুও মা যেন তার লালপদ্ম সদৃশ মনকে মধুহীন না করেন। বিদেশে দৈবের কারণে যদি কবির জীবন তারা খসে পড়ে দেহের আকাশ থেকে, তাতে কবির কোনো দুঃখ নেই। কারণ কবি জানেন জন্ম নিলে মরতে একদিন হবেই, কেউ কোথাও অমর নয়। নদীতে জল কখনও স্থির থাকে না, তেমনি জীবন নদীতেও প্রাণ স্থির নয়। কিন্তু মা যদি কবিকে মনে রাখেন, তাহলে কবি মৃত্যুকেও ভয় পায় না। কারণ অমরতা দানকারী অমৃতের হ্রদে যদি মাছি গিয়ে পড়ে, তবে সে অমর হয় না, তারও মৃত্যু হয়। মানব সমাজে সে ধন্য যাকে মানুষ কখনো ভোলেনা, মনের মন্দিরে চিরকালের আসন দিয়ে ধরে রাখে। কিন্তু কবির এমন কোন গুণ আছে যে দেশ-মায়ের কাছে এমন অমরতা দাবি করতে পারেন। তবে শ্যামা জন্মদাত্রী যদি তাঁকে দয়া করেন, দোষকে গুন বলে ধরে নেন, তাহলে তিনি সুবরদাত্রী বলে কবিকে অমরতা দান করতে পারেন। কবি যেন স্মৃতি জলে ফুটে থাকেন মধুমাখা পদ্মের মতো, বসন্তে কিংবা শরতে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর :

১. “সাধিতে মনের সাধ ঘটে যদি পরমাদ।” উদ্ধৃত অংশে ‘সাধিতে’ বলতে বোঝানো হয়েছে-( সাধনা করতে / ইচ্ছা করতে / সাহায্য করতে )।

উত্তরঃ সাধনা করতে।

২. বঙ্গভূমির প্রতি কবিতানুসারে নরকুলে ধন্য হলেন সে ব্যক্তি, মানুষ যাকে ( মনে রাখে / ভুলে না / স্মরণ করে )।

উত্তরঃ ভুলে না।

৩. ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কী ধরনের কবিতা?
( ব্যঙ্গ কবিতা / চতুর্দশপদী কবিতা
/ গীতিকবিতা )।

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতা

৪. দেশ জননী কবিকে মনে রাখলে তিনি কিসে ভয় পান না? ( প্রবাসে / শমনে / শরদে )।

উত্তরঃ শমনে।

৫. কোথায় না গেলে কবি হওয়া যাবে না বলে মাইকেল মধুসূদন দত্ত মনে করেছিলেন? (বিলেত / লন্ডন / জার্মান)।

উত্তরঃ বিলেত।

৬. শৈশব থেকে মধুসূদনের মনে কী হওয়ার তীব্র বাসনা ছিল? (শিক্ষক / কবি লেখক )।

উত্তরঃ কবি।

৭. ‘কোকনদে’ শব্দের অর্থ কী? ( লাল পদ্ম / নীল পদ্ম / জলপদ্ম )।

উত্তরঃ লাল পদ্ম।

৮. ‘পরমাদ’ শব্দটির অর্থ কী ? (পরমানন্দ / ভুল-ভ্রান্তি / প্রসাদ )।

উত্তরঃ ভুল-ভ্রান্তি।

৯. লোকে যারে নাহি ভুলে তাকে সবাই মনের কোথায় সেবা করে? ( অন্তরে / মন্দিরে / মসজিদে)।

উত্তরঃ মন্দিরে।

১০. ‘মানস’ শব্দের অর্থ কী ? ( মন / মস্তিষ্ক / সরোবর )।

উত্তরঃ মন।

১১. দেশজননী কবিকে মনে রাখলে তিনি ভয় পান না – ( প্রবাসে / শমনকে / শরদে )।

উত্তরঃ শমনকে।

১২. ‘রেখো মা দাসেরে মনে’-এখানে ‘দাস’
বলতে কবি বুঝিয়েছেন- ( নিজেকে / চাকরকে / সেবাকে )।

উত্তরঃ নিজেকে ।

১৩. ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি মাইকেল
মধুসূদন দত্ত নিজেকে কী হিসেবে কল্পনা
করেছেন ? (প্রভু / ঈশ্বর / দাস )

উত্তরঃ দাস।

১৪. অমৃত হ্রদে পড়লে কী গলে না ? ( ইঁদুর / মক্ষিকা / মাকড়স )।

উত্তরঃ মক্ষিকা।

১৫. “মধুহীন করো না গো ।” এ পঙক্তিতে মধু হলো – ( মৌচাক মধু / মাইকেল মধু / কৃত্রিম মধু )।

উত্তরঃ মাইকেল মধু।

১৬. ‘অমৃত’ শব্দের বিপরীতার্থ শব্দ কোনটি ? ( মৃত / গরল / জহর )।

উত্তরঃ গরল।

১৭. কবি মাতৃভূমির স্মৃতিপটে কেমন করে ফুটে থাকতে চান? (পদ্মফুলের মতো / গোলাপের মতো / যোদ্ধার মতো )।

উত্তরঃ পদ্মফুলের মতো।

হাতে কলমে’র প্রশ্নের উত্তর

১. ঠিক উত্তরটি খুঁজে নিয়ে লেখো :

১.১ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় যে শীর্ষ উল্লেখটি আছে, সেটি কবি বায়রন- এর রচনা। তাঁর রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হলো ___________।

উত্তরঃ My Native Land.

১.২ লালবর্ণের পদ্ম ‘কোকনদ’। সেরকম নীল রঙের পদ্মকে _______ ও সাদা রঙের পদ্মকে _________ বলা হয়।

উত্তরঃ ইন্দিবর, পুণ্ডরীক।

২. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:

২.১ ‘এ মিনতি করি পদে’ – কবি কার কাছে কী প্রার্থনা জানিয়েছেন ?

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি জন্মভূমিকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করে তাঁর কাছে প্রার্থনা জানিয়েছেন, তিনি যেন দাস হিসেবে কবিকে সবসময় মনে রাখেন। জীবনে যদি কবির কখনও ভুলভ্রান্তি হয় তবুও যেন বঙ্গজননীর হৃদয় থেকে কবি মধুসূদন দত্ত যেন মুছে না যান, সেই প্রার্থনাই কবি বঙ্গজননীকে জানিয়েছেন।

২.২ ‘সেই ধন্য নরকুলে’ – কোন মানুষ নরকুলে ধন্য হন ?

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবির মতে যে মানুষকে লোকে কখনও ভুলে যায় না, মনের মন্দিরে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে রাখে, সেই মানুষ নরকুলে ধন্য।

৩. গদ্যরূপ লেখো :

» পরমাদ – প্রমাদ, » যাচিব – চাইব,
» কহ – বলো, » যথা – যেমন,
» জন্মিলে – জন্মগ্রহণ করলে,
» দেহ – দাও, » হেন – এরকম,
» সাধিতে – সাধন করতে।

৪. শূন্যস্থানে উপযুক্ত বিশেষণ বসাও :

মনের মন্দির, অমৃত হ্রদ, মধুময় তামরস।

৫. স্থূলাক্ষর অংশগুলির কারক বিভক্তি নির্ণয় করো :

৫.১ রেখো, মা, দাসেরে মনে।

উত্তরঃ সম্বোধন পদে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

৫.২ এ দেহ-আকাশ হতে।

উত্তরঃ অপাদান কারকে ‘হতে’ অনুসর্গ।

৫.৩ মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে।

উত্তরঃ কর্ম কারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

৫.৪ মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্বজন।

উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

৫.৫ মক্ষিকাও গলে না গো পড়িলে অমৃত-হ্রদে

উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

৬. পদ পরিবর্তন করে বাক্য রচনা করো :

» মধু (মধুময়) – তোমার মধুময় হাসিতে সকলের আনন্দ হয়।

» প্রকাশ (প্রকাশিত) – আগামীকাল তোমাদের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে।

» দেহ (দৈহিক) – দৈহিক শক্তি সকলের সমান হয় না।

» অমর (অমরত্ব) – সব মানুষই অমরত্ব চায়।

» দোষ (দোষী) – আমি কোন দোষ করিনি তবু সবাই আমাকেই দোষী বলছে।

» বসন্ত (বাসন্তী) – আমাদের বাড়ির পাশে বাসন্তী পুজো হয়।

» দৈব (দেব) – দেবাসুরের মধ্যে দেবতারা শুভ শক্তির পরিচায়ক।

৭. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :

» প্রবাস – স্বদেশ, » অমর – নশ্বর,
» স্থির – চঞ্চল, » জীবন – মরণ,
» অমৃত – গরল।

৮. ‘পরমাদ’ শব্দটি কোন মূল শব্দ থেকে এসেছে ?

উত্তরঃ ‘পরমাদ’ শব্দটি ‘প্রমাদ’ শব্দ থেকে এসেছে।

৯. কবির নিজেকে বঙ্গভূমির দাস বলার মধ্যে দিয়ে তাঁর কোন মনোভাবের পরিচয় মেলে ?

উত্তরঃ বঙ্গভূমির দাস বলার মধ্য দিয়ে কবির জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা এবং কৃতজ্ঞতার পরিচয় মেলে।

১০. ‘মধুহীন কোরো না গো’—’মধু’ শব্দটি কোন্ দুটি অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে?

উত্তরঃ ‘মধু’ শব্দের একটি হল মিষ্টতা অর্থে। আর একটি হল কবির নাম মধুসূদন অর্থে।

১১. কবিতা থেকে পাঁচটি উপমা বা তুলনাবাচক শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো।

উত্তরঃ (ক) মনঃকোকনদ। (খ) জীবন-নদ। (গ) অমৃত-হ্রদ। (ঘ) মন মন্দির। (ঙ) মধুময় তামরস।

১২. ‘মন্দির’ শব্দটির আদি ও প্রচলিত অর্থ দুটি লেখো।

উত্তরঃ আদি অর্থ → গৃহ / বাসস্থান।
প্রচলিত অর্থ → দেবতার গৃহ।

১৩. কবিতাটিতে কোন কোন-ঋতুর উল্লেখ রয়েছে ?

উত্তরঃ করিতাটিতে শরৎ এবং বসন্ত ঋতুর উল্লেখ রয়েছে।

১৪. ‘মানস’ শব্দটি কবিতায় কোন্ কোন্ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘মানস’ বলতে মনের মণিকোঠায়। আবার ‘মানসে’ বলতে মানুষের মনের মধ্যে বোঝানো হয়েছে।

১৫. কবির দৃষ্টিতে নশ্বর মানুষ কীভাবে অমরতা লাভ করতে পারে তা লেখো।

উত্তরঃ মানুষ তার কর্ম দিয়ে যদি মানুষের স্মৃতিতে বেঁচে থাকে, তাহলে সে নশ্বর হয়েও অমরতা লাভ করে।

👉 পরবর্তী পাঠঃ

This Post Has One Comment

Leave a Reply