ব্যোমযাত্রীর ডায়রি
—সত্যজিৎ রায়
বহুবিকল্পীয় (MCQ) প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি ব্যোমযাত্রীর ডায়রি | সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ) [প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১. প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রিটা যাঁর থেকে পাওয়া গিয়েছিল, তিনি হলেন-
(ক) প্রোফেসর শঙ্কু (খ) তারক চাটুজ্যে
(গ) প্রহ্লাদ (ঘ) অবিনাশবাবু
উত্তরঃ (খ) তারক চাটুজ্যে।
২. তারকবাবু তাঁর সব ঘটনায় টেনে আনতেন—
(ক) রোবটটিকে (খ) হরিণকে (গ) বিড়ালকে
(ঘ) বাঘকে
উত্তরঃ (ঘ) বাঘকে।
৩. তারকবাবু সুন্দরবন থেকে ডায়রি ছাড়া পেয়েছিলেন –
(ক) হরিণের শিং (খ) গোসাপের চামড়া
(গ) কিছু ছবি (ঘ) কিছু পাথর
উত্তরঃ (খ) গোসাপের চামড়া।
৪. শঙ্কুর ডায়রির লেখায় লেখক প্রথমবার যে রংটি দেখেছিলেন-
(ক) লাল (খ) সবুজ (গ) হলুদ (ঘ) কালো
উত্তরঃ (খ) সবুজ।
৫. বিজ্ঞানের কথা উঠলেই শঙ্কুর সঙ্গে ঠাট্টা
করতেন –
(ক) প্রহ্লাদ (খ) বিধুশেখর (গ) অবিনাশবাবু
(ঘ) তারকবাবু
উত্তরঃ (গ) অবিনাশবাবু।
৬. ‘আজ দিনের শুরুতেই একটা বিশ্রী কাণ্ড ঘটে গেল।’ – উদ্ধৃতাংশে যে দিনটির প্রসঙ্গ রয়েছে সেটি হল –
(ক) ১লা জানুয়ারি (খ) ৫ই জানুয়ারি
(গ) ১২ই জানুয়ারি (ঘ) ২৫শে জানুয়ারি
উত্তরঃ (ক) ১লা জানুয়ারি।
৭. প্রোফেসর শঙ্কুর চাকর তার কাছে রয়েছে—
(ক) ১২ বৎসর (খ) ১৮ বৎসর
(গ) ২৭ বৎসর (ঘ) ২৮ বৎসর
উত্তরঃ (গ) ২৭ বৎসর।
৮. প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রিটা খেয়েছিল—
(ক) কুকুরে (খ) পাগলে
(গ) বিড়ালে (ঘ) ডেঁয়োপিঁপড়েতে
উত্তরঃ (ঘ) ডেঁয়োপিঁপড়েতে।
৯. প্রোফেসর শঙ্কু মানুষের ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য আবিষ্কার করেন—
(ক) বটিকা-ইণ্ডিকা (খ) ফিসপিল
(গ) শাঙ্কোভাইট (ঘ) নস্যাস্ত্র
উত্তরঃ (ক) বটিকা-ইণ্ডিকা।
১০. উল্কার গর্তে কী উঁকি মারছিল ?
(ক) শেয়ালের বাচ্চা (খ) গো-সাপ
(গ) ডায়রি (ঘ) জ্বলন্ত উল্কাখন্ড
উত্তরঃ (গ) ডায়রি উঁকি।
১১. ব্যোমযাত্রী হল—
(ক) পাতাল যাত্রী (খ) আকাশ যাত্রী
(গ) অরণ্য যাত্রী (ঘ) জেল যাত্রী
উত্তরঃ (খ) আকাশ যাত্রী।
১২. মঙ্গলগ্রহের রং কী ছিল ?
(ক) নীল (খ) লাল (গ) হলুদ (ঘ) সবুজ
উত্তরঃ (খ) লাল ছিল।
১৩. প্রোফেসর শঙ্কু ফিস পিল (Fish pill)
বানিয়েছিলেন –
(ক) নিজের জন্য (খ) নিউটনের জন্য
(গ) বিধুশেখরের জন্য (ঘ) প্রহ্লাদের জন্য
উত্তরঃ (খ) নিউটনের জন্য।
১৪. তারকবাবু শঙ্কুর ডায়রি সুন্দরবনের কোন অঞ্চলে পান –
(ক) ঝড়খালি (খ) মাথারিয়া (গ) বাঘমারি (ঘ) সজনেখালি
উত্তরঃ (খ) মাথারিয়া অঞ্চলে।
১৫. কোন গ্রন্থ বের করতে গিয়ে আলমারি থেকে শঙ্কুর ডায়রি বেরিয়ে পড়ে –
(ক) গীতাঞ্জলি (খ) জলাজঙ্গল
(গ) আরোগ্যনিকেতন (ঘ) চলন্তিকা
উত্তরঃ (ঘ) চলন্তিকা
১৬. লেখক কত রাত পর্যন্ত জেগে শঙ্কুর ডায়রি পড়ে শেষ করেন–
(ক) ১২টা (খ) ১টা (গ) ২টো (ঘ) ৩টে
উত্তরঃ (ঘ) ৩টে
১৭. আয়নার ওপর থেকে প্রহ্লাদ ক্যালেণ্ডারটা নামিয়ে রেখেছিল কারণ-
(ক) বছর শেষ হয়ে গেছে
(খ) আয়না দেখার জন্য
(গ) আয়না ভেঙে গেছে
(ঘ) ক্যালেণ্ডারের প্রয়োজন নেই
উত্তরঃ (ক) বছর শেষ হয়ে গেছে।
১৮. বাইকর্নিক অ্যাসিডের শিশি উলটে ফেলে দেয় –
(ক) বেড়াল (খ) আরশোলা (গ) টিয়া
(ঘ) টিকটিকি
উত্তরঃ (ঘ) টিকটিকি।
১৯. প্রোফেসর শঙ্কুর ওজন-
(ক) দু’মন সাত সের
(খ) সাড়ে পাঁচ মন
(গ) এক মন এগারো সের
(ঘ) এক মন সাত সের
উত্তরঃ (গ) এক মন এগারো সের।
২০. মঙ্গলে নদীর জল দেখলে ঠিক মনে হয় যেন স্বচ্ছ –
(ক) পেয়ারার জেলি (খ) আপেলের জেলি (গ) আমের জেলি (ঘ) লিচুর জেলি
উত্তরঃ (ক) পেয়ারার জেলি।
অতি সংক্ষিপ্ত (VSAQ) প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি ব্যোমযাত্রীর ডায়রি | Very Short Answer Type Question Answer [প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১. “সময় হলে আত্মপ্রকাশ করবেন।” – প্রোফেসর শঙ্কু সম্পর্কে এমন মন্তব্যের কারণ কী ?
উত্তরঃ প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু পনেরো বছর নিরুদ্দেশ থাকায় এক্সপেরিমেন্টে প্রাণ হারানো, গা-ঢাকা দেওয়ার মতো রটনা ওঠায় এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
২. “খাতাটা হাতে নিয়ে খুলে কেমন যেন খটকা লাগল।” – ‘খটকা’ লেগেছিল কেন ?
উত্তরঃ লেখক শঙ্কুর ডায়রি প্রথমবার যখন দেখেছিলেন, তখন কালির রং সবুজ থাকলেও কিছুদিন পর দেখল কালির রং লাল, তাই খটকা লেগেছিল।
৩. “প্রথমবারের কেলেঙ্কারিটার জন্য একমাত্র প্রহ্লাদই দায়ী।” – ‘কেলেঙ্কারিটা কী ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদ ঘড়িতে দম দিতে গিয়ে কাঁটাটা ঘুরিয়ে সাড়ে তিনঘণ্টা লেট করে ফেলে, যার ফলে রকেট উঠতে গিয়ে গোঁৎতা খেয়ে অবিনাশবাবুর মুলোর খেতে পড়ে কেলেঙ্কারি ঘটায়।
৪. “আমার রকেট কুড়ি মন পর্যন্ত জিনিস নির্ভয়ে নেওয়া চলতে পারে।”– রকেটে নেওয়া জিনিসগুলির ওজন লেখো।
উত্তরঃ প্রহ্লাদ– দু-মন সাত সের, শঙ্কু– এক মন এগারো সের, বিধুশেখর– সাড়ে পাঁচ মন আর জিনিসপত্তর সরঞ্জাম মিলিয়ে পাঁচ মন; সর্বমোট ১৩ মন ৩৮ সের।
৫. “আর কোনো চিন্তা নেই।” – চিন্তা না থাকার কারণ কী ?
উত্তরঃ শঙ্কুর বেড়াল নিউটন মঙ্গল অভিযানে যাওয়ার জন্য মাছের মুড়োর বদলে Fish Pill বড়ি খাওয়ায় প্রোফেসর চিন্তামুক্ত হন।
৬. “বিধুশেখরও প্রহ্লাদকে দেখে হাসছিল।” – হাসার কারণ কী ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদকে মঙ্গলযাত্রার প্রয়োজনীয় পোশাক ও হেলমেট পরানোয় তার বিচিত্র চেহারা এবং হাবভাব দেখে বিধুশেখরের হাসি পেয়েছিল।
৭. “সে দিব্যি নিশ্চিন্ত আছে।” – কে, কেন নিশ্চিন্ত ছিল ?
উত্তরঃ সরল বিশ্বাসে বিশ্বাসী প্রহ্লাদ মনে করে গ্রহের নাম মঙ্গল বলে সেখানে কোনো অনিষ্ট হতে পারে না, তাই সে নিশ্চিন্তে ছিল।
৮. “আরেকটা জন্তু কোথা থেকে এসে প্রহ্লাদকে তাড়া করে।” – প্রহ্লাদকে তাড়া করার কারণ কী ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদের সঙ্গে থাকা নিউটন মঙ্গল গ্রহের জন্তুটাকে মাছ ভেবে এক লাফে কাছে গিয়ে হাঁটুতে কামড়ে দেওয়ায় আরেকটা জন্তু প্রহ্লাদকে তাড়া করে।
৯. “বিধুশেখর আশ্চর্য সাহসের পরিচয় দিয়েছিল।” – ‘আশ্চর্য সাহস’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদ ও রকেটের দিকে ধেয়ে আসা মঙ্গলীয় এক সৈন্যকে লোহার হাতের বাড়ি দিয়ে ঘায়েল করে আরো তিনশো জন্তুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে যাওয়া হল ‘আশ্চর্য সাহস’।
১০. “কিন্তু তা হবার জো নেই।” – কী হবার জো নেই এবং কেন ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রিটা ছাপিয়ে, পরে বৈজ্ঞানিককে দিয়ে পরীক্ষা করে জাদুঘরে রাখার জো নেই; কারণ ডায়রিটা প্রায় শ-খানেক বুভুক্ষু ডেয়োপিঁপড়ে উদরসাৎ করে ফেলেছিল।
১১. প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়রিটি লেখক কার কাছ থেকে পেয়েছিলেন ?
উত্তরঃ প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়রিটি লেখক তারক চাটুজ্যে নামের এক গরিব ভদ্রলোকের কাছ থেকে পেয়েছিলেন।
১২. প্রোফেসর শঙ্কুর নিরুদ্দেশ সম্পর্কে কী কী কথা প্রচলিত ছিল ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর নিরুদ্দেশ সম্পর্কে বলা হত যে, এক্সপেরিমেন্টের কারণে তিনি হয় মৃত, না হয় কোথাও লুকিয়ে কাজ করছেন।
১৩. তারকবাবু কোন্ জিনিস প্রসঙ্গে গোল্ড মাইন বলেছিলেন ?
উত্তরঃ তারকবাবু প্রোফেসর শঙ্কুর লাল ডায়রিটি প্রসঙ্গে গোল্ড মাইন বলেছিলেন।
১৪. তারকবাবুকে দেখে লেখকের কেন গরিব মনে হত ?
উত্তরঃ তারকবাবুর ছেঁড়া পোশাক-আশাক দেখে লেখকের মনে হত ভদ্রলোক বেশ গরিব।
১৫. ব্যোমযাত্রীর ডায়রি গল্পে প্রোফেসর শঙ্কুকে কত বছর নিরুদ্দেশ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কু বছর পনেরো নিরুদ্দেশ ছিলেন বলা হয়েছে।
১৬. তারকবাবুর কাছে প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রিটা পৌঁছেছিল কী করে ?
উত্তরঃ সুন্দরবনে উল্কাপাতের ঘটনার পর সেখানে বাঘছালের খোঁজে গিয়ে তারকবাবু উল্কাপাতের গর্তে প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রিটা পেয়েছিলেন।
১৭. তারকবাবু তাঁর প্রতি কথায় কী প্রসঙ্গ টেনে আনতেন ?
উত্তরঃ সত্যজিৎ রায় রচিত ব্যোমযাত্রীর ডায়রি গল্পের চরিত্র তারকবাবু তাঁর প্রতি কথায় বাঘের প্রসঙ্গ টেনে আনতেন।
১৮. ‘এটা সত্যি ঘটনা। কাগজে বেরিয়েছিল।’- এখানে কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ব্যোমযাত্রীর ডায়রি কাহিনি থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে সুন্দরবনের মাথারিয়া অঞ্চলের উল্কাপাতের কথা বলা হয়েছে।
১৯. উল্কাপাতের ঘটনা সম্পর্কে ব্যোমযাত্রীর ডায়রিতে কী বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ সুন্দরবনের মাথারিয়া অঞ্চলে উল্কাপাতের পাথরটি ছিল বিশাল, কলকাতার জাদুঘরে রাখা পাথরের প্রায় দ্বিগুণ।
২০. ‘কিন্তু সেগুড়ে বালি’ – উক্তিটির প্রসঙ্গ বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ তারকবাবু সুন্দরবনে উল্কাপাতের পর বাঘছাল পাওয়ার আশায় সেখানে গিয়েছিলেন কিন্তু তা না পাওয়ায় এই আক্ষেপ করেছিলেন।
২১. উল্কাপাতের সঙ্গে খাতার কী সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ উল্কাপাতের পর বাঘছাল পাওয়ার আশায় তারকবাবু সুন্দরবনে গেলেও বাঘছালের বদলে উল্কাপাতের গর্তে প্রোফেসর শঙ্কুর খাতাটি পেয়েছিলেন।
২২. ‘তারপর এক আশ্চর্য অদ্ভুত ব্যাপার’– লেখকের কেন এরকম মনে হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রির কালির রং সবুজ থেকে লাল এবং পরে নীলে পরিণত হয়, তারপর নীল হয়ে যায় হলুদ। তাই লেখকের ব্যাপারটি আশ্চর্য মনে হয়েছে।
২৩. প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রির পৃষ্ঠাগুলির বিশেষত্ব সম্পর্কে ব্যোমযাত্রীর ডায়রি-তে লেখক কী জানিয়েছেন ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রির পাতাগুলি টানলে রবারের মতো বেড়ে যেত, তা ছেঁড়া ও পোড়ানো ছিল অসম্ভব। আবার কালির রংও বদলে যেত।
২৪. প্রহ্লাদ কত দিন ধরে প্রোফেসর শঙ্কুর ভৃত্য হিসেবে নিযুক্ত ছিল ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদ সাতাশ বছর ধরে প্রোফেসর শঙ্কুর ভৃত্য হিসেবে নিযুক্ত ছিল।
২৫. প্রহ্লাদকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রোফেসর শঙ্কু কী প্রয়োগ করেছিলেন ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রোফেসর শঙ্কু নিজের আবিষ্কৃত নস্যাস্ত্র তার ওপর প্রয়োগ করেছিলেন।
২৬. প্রহ্লাদের ওপর নস্যাস্ত্র প্রয়োগের ফল কী হবে জানিয়েছেন শঙ্কু ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদের ওপর নস্যাস্ত্র প্রয়োগের ফলে প্রোফেসর শঙ্কুর হিসাব অনুযায়ী তেত্রিশ ঘণ্টার আগে তার হাঁচি থামবে না।
২৭. প্রোফেসর শঙ্কুর প্রথমবার রকেটযাত্রায় কেলেঙ্কারির জন্য কে দায়ী ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর প্রথমবার রকেট যাত্রায় কেলেঙ্কারির জন্য দায়ী ছিল ভৃত্য প্রহ্লাদ।
২৮. প্রোফেসর শঙ্কুর বিড়ালের নাম কী ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর বিড়ালের নাম ছিল নিউটন।
২৯. প্রোফেসর শঙ্কুর প্রথমবার রকেটযাত্রায় কী কেলেঙ্কারি হয়েছিল?
উত্তরঃ ভৃত্য প্রহ্লাদের ভুলে প্রোফেসর শঙ্কুর রকেট সাড়ে তিন ঘণ্টা দেরি হয়ে যাওয়ার কারণে কিছুটা উঠে অবিনাশবাবুর মুলোর খেতে পড়ে গিয়েছিল।
৩০. অবিনাশবাবু পাঁচশো টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন কেন ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর রকেট পড়ে অবিনাশবাবুর মুলোর খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি পাঁচশো টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন।
৩১. ‘একেই বলে দিনে ডাকাতি’- কোন্ ঘটনাকে দিনে ডাকাতি বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর রকেট অবিনাশবাবুর মুলোর খেতে ভেঙে পড়ে। এজন্য অবিনাশবাবুর ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিকে দিনে ডাকাতি বলা হয়েছে।
৩২. প্রোফেসর শঙ্কু প্রহ্লাদকে কেন সঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদ বোকা হলেও সাহসী ছিল বলেই প্রোফেসর শঙ্কু প্রহ্লাদকে সঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন।
৩৩. প্রোফেসর শঙ্কুর দলের সদস্যদের কার কত ওজন ছিল ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর দলের সদস্য প্রহ্লাদের দুই মন সাত সের, শঙ্কুর এক মন এগারো সের, বিধুশেখরের সাড়ে পাঁচ মন ওজন ছিল।
৩৪. শঙ্কুর রকেটের পোশাকের আস্তিনে কী ঢুকেছিল ?
উত্তরঃ শঙ্কুর রকেটের পোশাকের আস্তিনে কতকগুলো উচ্চিংড়ে ঢুকেছিল।
৩৫. ‘এই হল অবিনাশবাবুর রসিকতার নমুনা’ রসিকতা কী ছিল ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর মঙ্গলযাত্রা প্রসঙ্গে অবিনাশবাবু চাঁদপুর না মঙ্গলপুর কোথায় চললেন বলে রসিকতা করেছিলেন।
৩৬. অবিনাশবাবু চা-এ চিনির বদলে কী খেতেন ?
উত্তরঃ অবিনাশবাবু চা-এ চিনির বদলে স্যাকারিন খেতেন।
৩৭. নিউটনকে মঙ্গলযাত্রায় সঙ্গী করার জন্য প্রোফেসর শঙ্কু কী করেছিলেন ?
উত্তরঃ নিউটনকে মঙ্গলযাত্রায় সঙ্গী করার জন্য প্রোফেসর শঙ্কু ফিসপিল বানিয়েছিলেন। এর একটা খেলেই নিউটনের সাত দিনের খাওয়া হয়ে যেত।
৩৮. ব্যোমযাত্রীর ডায়রি-তে একটি বেড়াল ও একটি কুকুরের নাম পাওয়া যায়। সেগুলি কী কী ?
উত্তরঃ ব্যোমযাত্রীর ডায়রি-তে প্রোফেসর শঙ্কুর বেড়ালটির নাম ছিল নিউটন এবং লেখকের কুকুরটির নাম ছিল ভুলো।
৩৯. প্রোফেসর শঙ্কু আশ্বিন-কার্তিক মাসে প্রতিদিন রাতে খাবার পরে বাগানের আরামকেদারায় তিন ঘণ্টা শুয়ে কাটাতেন কেন ?
উত্তরঃ আশ্বিন-কার্তিক মাসে উল্কাপাত দেখার জন্য প্রতিদিন রাতে খাবার পরে প্রোফেসর শঙ্কু বাগানের আরামকেদারায় শুয়ে দু-তিন ঘণ্টা কাটাতেন।
৪০. কত তারিখ, ক’টায় প্রোফেসর শঙ্কু মঙ্গলযাত্রা করেছিলেন ?
উত্তরঃ ১৩ জানুয়ারি ভোর পাঁচটায় শঙ্কু মঙ্গলযাত্রা করেছিলেন।
৪১. প্রোফেসর শঙ্কুর রকেটের সর্বোচ্চ কত ওজন নেওয়ার ক্ষমতা ছিল ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কুর রকেটের সর্বোচ্চ কুড়ি মন পর্যন্ত ওজন নেওয়ার ক্ষমতা ছিল।
৪২. মহাকাশযাত্রার সময় প্রোফেসর শঙ্কুর রকেটে যাত্রী ও মালপত্র সমেত কত ওজন নেওয়া হয়েছিল ?
উত্তরঃ মহাকাশযাত্রার সময় প্রোফেসর শঙ্কুর রকেটে যাত্রী ও মালপত্র সমেত পনেরো মন বত্রিশ সের তিন ছটাক ওজন নেওয়া হয়েছিল।
৪৩. প্রোফেসর শঙ্কু তাঁর যাত্রীদলের খাওয়াদাওয়ার কীরকম ব্যবস্থা করেছিলেন ?
উত্তরঃ শঙ্কু নিউটনের জন্য fish pill এবং নিজের ও প্রহ্লাদের জন্য বটিকা-ইন্ডিকা নামক হোমিওপ্যাথিক বড়ি নিয়েছিলেন।
৪৪. নিউটনের Fish Pill খেলে কী হয় ?
উত্তরঃ Fish Pill খেলে নিউটনের সাতদিনের খিদে মিটে যায়।
৪৫. বটিকা-ইন্ডিকা কী ?
উত্তরঃ বটিকা-ইন্ডিকা হল বটফলের রস থেকে তৈরি বড়ি, যা খেলে চব্বিশ ঘণ্টার জন্য খিদে তেষ্টা মিটে যায়।
৪৬. ‘আমাদের যে সমস্ত জিনিস সঙ্গে নিয়ে নামতে হবে সেগুলো গুছিয়ে রেখেছি’– জিনিসগুলি কী কী ?
উত্তরঃ মঙ্গলে নামার জন্য প্রোফেসর শঙ্কুর সঙ্গের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি হল ক্যামেরা, দূরবিন, অস্ত্রশস্ত্র এবং ফার্স্ট-এড বক্স।
৪৭. ‘আমরা তো ঝাঁকুনির চোটে সব কেবিনের মেঝেয় গড়াগড়ি’- কেন এরকম হয়েছিল ?
উত্তরঃ যন্ত্রমানব বিধুশেখর যন্ত্রপাতির বোর্ডের কাছে গিয়ে রকেট উলটোদিকে যাওয়ার হ্যান্ডেলটিতে প্রচণ্ড টান দিলে সবাই কেবিনের মেঝেতে গড়াগড়ি দিয়েছিল।
৪৮. মঙ্গলগ্রহে জল কীরকম ছিল ?
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহে নদীর জল ছিল লালচে স্বচ্ছ পেয়ারার জেলির মতো এবং স্বাদ ছিল অমৃতের মতো। তা ছিল শরীর ও মনের ক্লান্তিনাশক।
৪৯. ‘কিন্তু এর কাছে সে জল কিছুই না’ – প্রসঙ্গটি কী ?
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহে জল পান করার প্রসঙ্গে গারো পাহাড়ের ঝরনার জল পানের তুলনা টেনে প্রশ্নোদ্ধৃত কথাটি লিখেছিলেন প্রোফেসর শঙ্কু।
৫০. ‘অগত্যা বিধুশেখরকে রকেটে রেখেই আমরা তিনটি প্রাণী মঙ্গলগ্রহের মাটিতে পদার্পণ করলাম’- এই তিনটি প্রাণী কে কে ?
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতিতে তিনটি প্রাণী বলতে স্বয়ং প্রোফেসর শঙ্কু, ভৃত্য প্রহ্লাদ এবং বেড়াল নিউটনকে বোঝানো হয়েছে।
৫১. মঙ্গলগ্রহে কোথায় বসে শঙ্কু ডায়রি লিখেছিলেন ?
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহে একটা হলদে রঙের নরম পাথরের ঢিপির উপরে বসে শঙ্কু তাঁর ডায়রি লিখেছিলেন।
৫২. মঙ্গলীয় সৈন্যরা দেখতে কেমন ?
উত্তরঃ মঙ্গলীয় সৈন্যরা মানুষও না, জন্তুও নয়, মাছও নয়। কিন্তু এই তিনের সঙ্গেই তাদের কিছু কিছু সাদৃশ্য ছিল।
৫৩. ‘সেটাও অসম্ভব বলে মনে হয়’ – কোন্ বিষয়কে অসম্ভব বলে মনে হয় ?
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহের প্রাণীরা যে মানুষের মতো কিছু হবে সেটাকে অসম্ভব বলে মনে হয়েছে।
৫৪. ‘সে দিব্যি নিশ্চিন্ত আছে’ – নিশ্চিন্ত আছে ?
উত্তরঃ গ্রহের নাম যেহেতু মঙ্গল তাই সেখানে কোনো অনিষ্ট হতে পারে না ভেবে প্রহ্লাদ নিশ্চিন্ত হয়ে ছিল।
৫৫. ‘তাই বোধহয় ওর মাথাটা বিগড়ে গিয়েছিল’ – কার মাথা কেন বিগড়ে গিয়েছিল ?
উত্তরঃ বিধুশেখরের মনের ওপরে চাপ পড়াতেই সম্ভবত তার মাথা বিগড়ে গিয়েছিল বলে শঙ্কু মনে করেছেন।
৫৬. ‘সেটাকে প্রথমে নদী বলে বুঝিনি’ – এই না বোঝার কারণ কী ছিল ?
উত্তরঃ নদীর জল লালচে স্বচ্ছ পেয়ারার জেলির মতো লাগছিল বলে সেটাকে নদী বলে বোঝা যাচ্ছিল না।
৫৭. মঙ্গলে নামার পরে প্রোফেসর শঙ্কুরা কেমন আবহাওয়া পেয়েছিলেন ?
উত্তরঃ মঙ্গলে কোনো ঠাণ্ডা ছিল না, বরং আবহাওয়া গরমের দিকে। মাঝে মাঝে আসা ঠাণ্ডা হাওয়া শুধু হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছিল।
৫৮. ‘বিধুশেখরকে নিয়ে আজ এক ফ্যাসাদ’ – এই ফ্যাসাদের কারণ কী ?
উত্তরঃ রকেট মঙ্গলে ল্যান্ড করার পরে বোতাম টিপে চালু করা সত্ত্বেও বিধুশেখর কোনো নড়াচড়া করছিল না, এটাই ছিল ফ্যাসাদ।
৫৯. ‘তারপর দেখলাম প্রহ্লাদকে’ – প্রহ্লাদকে কীভাবে দেখা গিয়েছিল ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদ ডান হাতের মুঠোয় নিউটনকে ধরে ঊর্ধ্বশ্বাসে লাফাতে লাফাতে রকেটের দিকে চলেছিল।
৬০. যে জন্তুটা প্রহ্লাদকে তাড়া করেছিল তাকে দেখতে কেন ?
উত্তরঃ যে জন্তুটা প্রহ্লাদকে তাকে তাড়া করেছিল সে মানুষও নয়, জন্তুও নয়, মাছও নয়, কিন্তু এই তিনের সঙ্গেই তার কিছু কিছু মিল ছিল।
৬১. ‘তাই হয়তো প্রহ্লাদের নাগাল পাবে না’ – কে কেন প্রহ্লাদের নাগাল পাবে না ?
উত্তরঃ প্রহ্লাদকে তাড়া করেছিল যে মঙ্গলীয় জন্তুটা সে ভালো ছুটতে পারে না বলেই পহ্লাদের নাগাল পাবে না।
৬২. ‘আমার মাথা ঘুরছে’ – কীসে বক্তার মাথা ঘুরছিল ?
উত্তরঃ মঙ্গলীয় সৈন্যদের গায়ের আঁশটে গন্ধে প্রোফেসর শঙ্কুর মাথা ঘুরছিল।
৬৩. ‘এখনও রয়ে গেছে’ – কী থাকার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহ থেকে পালিয়ে রকেটে উড়ে চলার সময়ে প্রোফেসর শঙ্কু উপলব্ধি করেন যে ডান পায়ে একটা চিনচিনে যন্ত্রণা ও কেবিনের মধ্যে একটা মেছো গন্ধ তখনও রয়ে গেছে।
৬৪. ‘নিউটনের অরুচিটাও কমেছে’ – নিউটনের অরুচির কী কারণ ভাবা হয়েছিল ?
উত্তরঃ প্রোফেসর শঙ্কু অনুমান করেন যে, মঙ্গলীয় সৈন্যের গায়ে দাঁত বসানোর ফলেই নিউটনের অরুচি হয়েছিল।
৬৫. ‘ও স্পষ্ট উচ্চারণে বলল, থ্যাঙ্ক ইউ’ – কে কখন এ কথা বলেছিল ?
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহ থেকে রকেটে উড়ে চলার সময় প্রহ্লাদকে সঙ্গে নিয়ে শঙ্কু বিধুশেখরকে নাড়া দিয়ে কাঁধের বোতাম টিপে দিতেই সে স্পষ্ট উচ্চারণে ধন্যবাদ জানায়।
৬৬. বিধুশেখর চলিত ভাষা ছেড়ে শুদ্ধ ভাষা ব্যবহার করছিল কেন ?
উত্তরঃ সম্ভবত প্রহ্লাদের মুখে রামায়ণ, মহাভারত শোনার ফলে বিধুশেখর চলিত ভাষা ছেড়ে শুদ্ধ ভাষা ব্যবহার করছিল।
৬৭. ‘এর আগে বিধুশেখরের কথা না শুনে ঠকেছি’ – নতুন করে না ঠকার জন্য শঙ্কু কী করেছিলেন ?
উত্তরঃ নতুন করে না ঠকার জন্য প্রোফেসর শঙ্কু বিধুশেখরের নির্দেশমতো রকেটের জানলা খুলে দিয়েছিলেন।
৬৮. ‘এই একটা নতুন কথা কদিনই ওর মুখে শুনছি’ – নতুন কথাটি কী ছিল ?
উত্তরঃ বিধুশেখরের মুখে কথাটি ছিল আসলে একটা নতুন শব্দ ‘টাফা’।
৬৯. বিধুশেখর টাফায় কাদের বাস বলেছিল ?
উত্তরঃ বিধুশেখর বলেছিল যে টাফায় সৌরজগতের সব থেকে সভ্য লোকেরা বাস করে।
৭০. টাফায় প্রোফেসর শঙ্কুদের অভ্যর্থনাকারীরা কেমন দেখতে ছিল?
উত্তরঃ টাফায় প্রোফেসর শঙ্কুদের যারা অভ্যর্থনা করতে এসেছিল তারা একে-বারেই মানুষের মতো নয়, বরং পিঁপড়ে জাতীয় প্রাণীর সঙ্গে তাদের মিল ছিল।
৭১. টাফার অধিবাসীরা কোথায় থাকে ?
উত্তরঃ টাফার অধিবাসীরা গর্ত দিয়ে মাটির ভিতরে ঢুকে যায় এবং সেখানেই বাস করে।
৭২. ‘কিন্তু তাতে তার কিছু হলো না’ – কার কী হল না ?
উত্তরঃ টাফার লোকটিকে শঙ্কু নস্যাস্ত্র প্রয়োগ করলেও তাতে তার কিছু হল না, কারণ তারা হাঁচতেই শেখেনি।
৭৩. ‘রকেট থেকে নেমেই সেটা টের পেলাম’ রকেট থেকে নেমে কী টের পেলেন ?
উত্তরঃ রকেট থেকে নেমেই প্রোফেসর শঙ্কু মঙ্গলগ্রহে একটা বিশেষ গন্ধ টের পেলেন যা গাছপালা বা জলমাটির গন্ধের থেকে আলাদ।
৭৪. ব্যোমযাত্রীর ডায়রির প্রথম তারিখ ও শেষ তারিখ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ব্যোমযাত্রীর ডায়রির প্রথম তারিখ ছিল ১ জানুয়ারি, শেষ তারিখ ছিল ২৫ জানুয়ারি।
রচনাধর্মী (LAQ) প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি ব্যোমযাত্রীর ডায়রি | Large Answer Type Question Answer [প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
১. “কিন্তু সে ডায়রি তারকবাবুর কাছে এলো কী করে ?” – প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রি তারকবাবুর হস্তগত হওয়ার বৃত্তান্ত সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তরঃ ভবঘুরে তারক চাটুজ্জ্যের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, সুন্দরবনের মাথারিয়া অঞ্চলে এক বার একটা উল্কাখণ্ড পড়েছিল। খবরের কাগজ পড়ে তিনি জানতে পারেন পাথরটা বেশ বড়ো। সেই সঙ্গে এই খবরও জানতে পারেন যে, অতো বড়ো উল্কাপাতের ফলে সেখানে অনেক জন্তু-জানোয়ার মারা যায়। তাই সুযোগ সন্ধানী তারকবাবু সেখানে গিয়েছিলেন বাঘছাল পাওয়ার আশায়। জন্তু-জানোয়ারের ছাল বিক্রি করে অর্থলাভের আকাঙ্খায় সুন্দরবনে গেলেও সেখানে পৌঁছাতে তার ‘লেট’ হয়ে যায়। ফলে আশাহত হন তারকবাবু। বাঘ-হরিণের আশা ত্যাগ করে গোসাপের ছাল নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেন না তিনি। তাই উল্কা পড়া গর্তে তখনো খোঁজ চালিয়ে যেতে থাকেন আশাবাদী চাটুজ্জ্যে মশাই। হঠাৎ উল্কার পাথরটির খুব কাছেই মাটির মধ্যে ‘লাল কী একটা’ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তারপর টেনে তুলে দেখেন ডায়রি, আর তা খুলে দেখতে পান প্রোফেসর শঙ্কুর নাম।
এভাবেই তারকবাবু সুন্দরবনের মাথারিয়া অঞ্চলে উল্কা পড়া গর্ত থেকে প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রিটা পান।
২. শঙ্কুর ল্যাবরেটারিতে করা এক্সপেরিমেন্ট এবং তার আবিষ্কার সম্পর্কে ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ থেকে যা জানা যায় লেখো।
উত্তরঃ ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ গল্প থেকে আমরা জানতে পারি যে প্রোফেসর শঙ্কু তার ল্যাবরেটারিতে নিত্যদিন বিভিন্ন রাসায়নিক এবং বিভিন্ন ধরণের যন্ত্র নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতেন।
প্রফেসরের পরীক্ষাগুলি একাধারে যেমন রোমাঞ্চকর তেমনই বিপদজনক, যেমন একটি ঘটনায় তাঁর ল্যাবে রাখা প্যারাডক্সাইট পাউডারের স্তূপের সঙ্গে বাইকর্নিক অ্যাসিড ‘কনট্যাক্ট’ হয়ে সাংঘাতিক বিস্ফোরণ ঘটার পরিস্থিতি তৈরি হয়। আবার, তিনি রকেট তৈরি করার উপাদান হিসাবে এক বিশেষ ধরনের ধাতু আবিষ্কারের জন্য যে কমপাউন্ড তৈরি করেন তার উপাদান ছিল – ব্যাঙের ছাতা, সাপের খোলস আর কচ্ছপের ডিমের খোলা। আবার কমপাউন্ডের সঙ্গে একুইয়স ভেলোসিলিকা মিশিয়ে নতুন একটি ধাতু তৈরি করেন।
এছাড়া, প্রোফেসরের আবিষ্কারের কীর্তিও নেহাৎ কম নয়! মঙ্গল গ্রহে যাবার জন্য কুড়ি মন ওজন বহন সক্ষম রকেট তিনি আবিস্কার করেন। বছরের পর বছর রকেটে যাত্রাকালীন সময়ে বেঁচে থাকার জন্য বেড়াল নিউটনের জন্য আবিষ্কার করেন Fish Pill -যা একটা খেলে সাত দিনের খাওয়া হয়ে যায়। প্রহ্লাদ ও নিজের জন্য বটফলের রস থেকে তৈরি করেছিলেন ‘বটিক-ইন্ডিকা’ নামের বড়ি, যা খেলে পুরো একদিনের জন্য খিদে-তেষ্টা মিটে যায়। এছাড়া মঙ্গল যাত্রীদের জন্য হেলমেট ও পোশাক আবিষ্কার করেন। বিস্ময়কর যন্ত্রমানব বিধুশেখর তৈরি করেন। ‘Snuff-gun’ (নস্যাস্ত্র) নামক তেত্রিশ ঘণ্টার হাঁচি উৎপাদক বন্দুক এবং ভয়ংকর স্বপ্ন উৎপাদক ‘জুম্ভনাস্ত্র’ বড়ি-ও ছিল তাঁর আবিষ্কারের ঝুলিতে।
৩. ‘আমরা দুঘণ্টা হল মঙ্গল গ্রহে নেমেছি।’-
তারা নামার পর মঙ্গলের প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং প্রাণী যা দেখেছিল তার বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ সত্যজিৎ রায় রচিত কল্পবিজ্ঞানের গল্প ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’-তে বর্ণিত মঙ্গল গ্রহের পাথরের ঢিপিগুলির রং হলদে। গাছপালা মাটি পাথর সবই নরম রবারের মতো। সেখানকার নদীতে বহমান জলের বর্ণ লাল। প্রবাহিত জল তরল নয় বরং স্বচ্ছ পেয়ারার জেলির মতো। মঙ্গলের ঘাস আর গাছপালা সব নীল রঙের, আর আকাশের রং সবুজ। পৃথিবীর তুলনায় উলটো রকমের মঙ্গলে বিচিত্র আবহাওয়া এবং বরফের পাহাড় বিরাজমান। মঙ্গল গ্রহের মাধুর্যময় ভোরের আকাশে সবুজ রঙের ওপর লালের ছোপ পড়ে অসাধারণ হয়ে ওঠে। সুতরাং সব মিলিয়ে প্রোফেসর শঙ্কু এবং তার সহযাত্রীরা মঙ্গল গ্রহের যে নিসর্গ সৌন্দর্য্য অবলোকন করেছিলেন, তা এককথায় বিস্ময়কর।
এদিকে মঙ্গলের জীবগুলিকে অদ্ভুত দেখতে। আঁশটে গন্ধে পূর্ণ মঙ্গল গোছের জীব দেখতে মানুষও নয়, জন্তুও নয় আবার মাছও নয়; আসলে তিনের সঙ্গেই কিছু কিছু মিল আছে। এরা লম্বায় তিন হাত পরিমাণ। এদের পা রয়েছে, তবে হাতের বদলে মাছের মতো ডানা। অস্বাভাবিক রূপের সেই প্রাণীদের মাথায় ‘মুখজোড়া দন্তহীন হাঁ, ঠিক মাঝখানে প্রকান্ড একটা সবুজ চোখ’। এদের সর্বাঙ্গে চামড়ার বদলে মাছের মতো আঁশ। এরা ভালো ছুটতে পারে না, মানুষের মতো কথা বলতে পারে না। সামান্য বেড়ালের কামড় খেয়ে পালায়, ঝিঝির মতো ‘তিন্তিড়ি তিন্তিড়ি’ বলে ডাকে আর প্রচণ্ড আঘাত পেলে ‘চী’ শব্দ করে। তবে এদের একটা গুণ রয়েছে, বিপদ বুঝলে সঙ্গবদ্ধ প্রতিরোধ ও আক্রমণ করে।
৪. “মঙ্গলে যে কত অমঙ্গল হতে পারে, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি।”– মঙ্গল কীভাবে অমঙ্গল হয়ে উঠেছিল আলোচনা করো।
উত্তরঃ উক্তিটি সত্যজিৎ রায় রচিত ব্যোমযাত্রীর ডায়রি ছোটগল্প থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। গল্পের প্রথমে আমরা জানতে পেরেছি যে, প্রফেসর শঙ্কু তার সঙ্গীদের নিয়ে, তাঁর সৃষ্ট মহাকাশযানে চড়ে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছেছেন। মঙ্গলে অবতরণের পর, তারা নানান সমস্যার সম্মুখীন হন।
প্রথম ভোরে পাথর কুড়োতে ব্যস্ত প্রহ্লাদ হঠাৎ দেখে যে বিড়াল নিউটন একলাফে এক মঙ্গলীয় প্রাণীর হাঁটুতে কামড় বসিয়েছে। মঙ্গলীয় প্রাণীটি মানুষও নয়, জন্তুও নয় আবার মাছও নয়, বরং এই তিন
রকম প্রাণীর সাথেই তাঁর মিল আছে। নিউটনের কামড় খেয়ে ভীত জন্তুটা ঝিঝির মতো বিকট চিৎকার করে পালিয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু আরেকটা জন্তু কোথা থেকে এসে প্রহ্লাদকে তাড়া করে। বিপদ বুঝে প্রহ্লাদ নিউটনকে নিয়ে উর্ধ্বশ্বাসে রকেটের দিকে দৌড়ে যায়। প্রহ্লাদ দৌড়ে জন্তুটাকে পরাস্ত করে রকেটে উঠে পড়লে সেই মূহূর্তে প্রফেসর শঙ্কুর যন্ত্রমানব বিধুশেখর লাফ দিয়ে রকেট থেকে জন্তুটার সামনে এসে দাঁড়ায়। এবং এরপর চোখের পলকে বিধুশেখরের লোেহার হাতের বাড়ি খেয়ে জন্তুটা ‘চী’ শব্দ করে ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে মাটিতে পড়ে যায়। এই সময়ে শত শত মঙ্গলীয় সৈন্য রকেটের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। কয়েক মুহুর্তের মধ্যে প্রোফেসরের সামনে এই ঘটনাগুলি ঘটে যায় এবং বেগতিক বুঝে উত্তেজিত বিধুশেখরকে বোতাম টিপে বিকল করে দেন। এদিকে একশো গজের মধ্যে চলে আসা শত-সহস্র মঙ্গলীয় সৈন্যের প্রতিহিংসা থেকে বাঁচতে কোনো রকমে বিধুশেখরকে দুটুকরো করে আলাদা আলাদা করে টেনে হিচড়ে রকেটে তোলেন।
দরজা বন্ধের মূহূর্তে মঙ্গলীয়ের ঝাপটা খেয়ে শঙ্কু জ্ঞান হারান এবং কোন অলৌকিক উপায়ে তাদের ব্যোমযান পুনরায় চালু হয়ে মঙ্গলের মাটি ছেড়ে মহাকাশে ভেসে যায়। মঙ্গল গ্রহের এই অদ্ভুত ঘটনাকেই প্রফেসর শঙ্কু অমঙ্গল বলে উল্লেখ করেছেন।
৫. “সে তার চেয়ারে বসে দুলছে ও মধ্যে মধ্যে ‘টাফা’ বলছে।” – ‘টাফা’ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তরঃ সত্যজিৎ রায় রচিত কল্পবিজ্ঞানের গল্প ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’-তে আমরা টাফা গ্রহের বিবরণ পাই। এক অবিশ্বাস্য জগতের মধ্যে অবস্থিত ‘টাফা’ যেখানে আকাশময় কেবল সোনার বুদবুদ ফুটছে আর ফাটছে বলে মনে হয়। মনোহরণকারী আলোর আতসবাজির উৎসব যেখানে অনবরত চলে, যে জগতে ভয়ঙ্কর পাথরের অগ্নিপিণ্ডও বিচরণ করে। সেই জগতের এক মনোমুগ্ধকর ঝলমলে সাদা গ্রহ হল ‘টাফা’। বিধুশেখরের বিবরণ থেকে জানা যায় টাফাতে সৌরজগতের প্রথম সভ্য লোকেরা বাস করে। পৃথিবীর চেয়ে কয়েক কোটি বছরের পুরানো তাদের সভ্যতা; তাদের গ্রহের প্রত্যেকে বৈজ্ঞানিক ও বুদ্ধিমান। তাই টাফাবাসীদের প্রয়োজনে তারা অন্যান্য সব গ্রহ থেকে কমবুদ্ধি লোক বেছে টাফায় আনিয়ে বসবাস করাচ্ছে।
কিন্তু টাফায় পৌঁছে প্রফেসর শঙ্কু বুঝতে পারেন যে বিষয়টি ঠিক তার উল্টো। অর্থাৎ টাফাবাসীরা মানুষের অবস্থার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। টাফাবৃন্দরা আসলে অতিকায় পিঁপড়ে জাতীয় – ‘বিরাট মাথা আর চোখ, কিন্তু সেই অনুপাতে হাত-পা সরু। তাদের ঘরবাড়ি কিছু নেই, এমনকী সেখানে গাছপালাও নেই। এরা গর্ত দিয়ে মাটির ভিতর ঢুকে যায় আর সেখানে বসবাস করে।
তবে টাফাবৃন্দরা প্রোফেসর ও তাঁর সঙ্গীদের থাকার জন্য যথাযথ আয়োজন করে। তাই টাফাতে প্রহ্লাদ, নিউটন, প্রোফেসরের যত্নের কোন অভাব হয় না। টাফাবাসীরা বাংলা ভাষাও জানে দেখে প্রোফেসর বিস্মিত হন।
৬. প্রোফেসর শঙ্কু সম্বন্ধে কী তথ্য আমরা জানতে পারি ? তাঁর দুটি আবিষ্কারের নাম লেখো। যে কোন একতি আবিষ্কারের কার্যকারিতা লেখো। ১+২+২
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ “সত্যজিৎ রায়” রচিত “প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি”-র অন্তর্গত “ব্যোমযাত্রীর ডায়রি” আমাদের পাঠ্য রূপে গৃহীত হয়েছে।
প্রফেসর শঙ্কুর পরিচয়ঃ প্রফেসর শঙ্কু বিগত পনের বছর ধরে নিরুদ্দেশ রয়েছেন। অনেকে বলেন যে, তিনি কোনো একটি ভীষণ এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার অনেকে মনে করেন যে, তিনি ভারতের কোনো এক অখ্যাত-অজ্ঞাত অঞ্চলে আত্মগোপন করে নিজের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। উপযুক্ত সময়ে তিনি আত্মপ্রকাশ করবেন বলেও অনেকের বিশ্বাস।
প্রফেসর শঙ্কু নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে নিয়োজিত থাকতেন। তার অসংখ্য আবিষ্কারের মধ্যে অন্যতম দুটি আবিষ্কার হল ফিস পিল ও বটিক ইন্ডিকা।
আবিষ্কারের কার্যকারিতাঃ প্রফেসর শঙ্কু বটফলের রস থেকে বটিক ইন্ডিকা তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল একটি হোমিওপ্যাথিক বড়ি। বটিক ইন্ডিকার একটি বড়ি সেবন করলে চব্বিশ ঘন্টার জন্য খিদে তেষ্টা দূর হয়ে যায়। প্রফেসর শঙ্কু প্রায় এক মণ বটিক ইন্ডিকা বড়ি সাথে নিয়ে মঙ্গলযাত্রা করেছিলেন।
৭. “একদিনের কথা খুব বেশি করে মনে পড়ে”- কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে ? ৫
উত্তরঃ বাঙালির গর্ব “সত্যজিৎ রায়” রচিত “প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি”-র অন্তর্গত “ব্যোমযাত্রীর ডায়রি” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গঃ যন্ত্রমানব বিধুশেখরের কার্যকলাপের পরিচয় প্রদান করতে গিয়ে প্রফেসর শঙ্কু তার ডায়রিতে এই প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন।
ঘটনার বিবরণঃ মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি স্বরূপ প্রফেসর শঙ্কু যখন তার রকেট তৈরি করছিলেন তখন তিনি কোন রাসায়নিক দিয়ে তার কাঙ্খিত ধাতু তৈরি করতে সক্ষম হবেন সেই বিষয়ে সন্দিহান ছিলেন।
প্রফেসর শঙ্কু অনেক গবেষণা করে ব্যাঙের ছাতা, কচ্ছপের খোল, সাপের খোলস আর ডিমের খোলার মিশ্রণ তৈরি করার পরে তাতে ট্যান্ট্রাম বোরোপ্যাক্সিনেট নাকি একুইয়স্ ভেলোসিলিকা মেশাবেন তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
যখন প্রফেসর শঙ্কু সেই দ্রবণে ট্যানট্রাম বোরোপ্যাক্সিনেট মেশাতে উদ্যত হন, ঠিক তখনই বিধুশেখর ভয়ংকর শব্দ করে বারণ করার ভঙ্গিতে মাথা নাড়তে থাকে। আবার প্রফেসর শঙ্কু যখন একুইয়স্ ভেলোসিলিকা মেশাতে চান তখন বিধুশেখর সম্মতিজ্ঞানপনের মতো মাথা ঝাঁকাতে থাকে।
শেষপর্যন্ত একুইয়স্ ভেলোসিলিকা মিশিয়েই প্রফেসর শঙ্কু তার মঙ্গলযান নির্মাণ করেন। আর তিনি পরীক্ষামূলকভাবে যখন তিনি ট্যানট্রাম বোরোপ্যাক্সিনেট সেই দ্রবণে মেশান তখন তিনি যে চোখ-ধঁধানো সবুজ আলো আর বিষ্ফোরণের শব্দ শুনেছিলেন তা কখনো ভুলবেন না বলেই জানিয়েছেন।
এইরূপে আমরা প্রফেসর শঙ্কুর স্মৃতিচারনায় একটি বিশেষ ঘটনার পরিচয় লাভ করি।
৮. “একটা বিশেষ দিন থেকে এটা আমি অনুভব করে আসছি”- বক্তা কে ? কোন বিশেষ দিনের কথা বলা হয়েছে ? বক্তা ওই দিন থেকে কী অনুভব করে আসছেন ?
উত্তরঃ বক্তার পরিচয়– সত্যজিৎ রায় রচিত ব্যোমযাত্রীর ডায়রি শীর্ষক কল্পবিজ্ঞান কাহিনি থেকে উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য অংশের বক্তা হলেন প্রোফেসর শঙ্কু।
বক্তার অনুভব – উদ্ধৃতিটিতে উল্লিখিত বিশেষ দিনটি ছিল আশ্বিন মাসের। প্রোফেসর শঙ্কু আশ্বিন-কার্তিক মাসে তাঁর বাড়ির বাগানে রোজ রাত্রে খাওয়ার পর আরামকেদারায় শুয়ে বেশ কিছু সময় উপভোগ করতেন। এই দুই মাসে উল্কাপাত বেশি হওয়ায় এক ঘণ্টায় অন্তত আট- দশটা উল্কাপাত রোজ দেখতেন তিনি।
মঙ্গলযাত্রার দশ-বারো বছর আগে এইরকম একদিন রাত্রে হঠাৎ একটি উল্কা তাঁর দিকে ছুটে আসে এবং তাঁর বাগানের পশ্চিম দিকের গোলঞ্চ গাছের পাশে প্রকাণ্ড জোনাকির মতো জ্বলতে থাকে। এই আশ্চর্য ঘটনাটি স্বপ্নের ভেতর ঘটলেও এর জন্য তাঁর মনে দুটি বিষয়ে খটকা লাগে। এর প্রথমটি হল, এরপর থেকেই তিনি রকেট নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। আর দ্বিতীয়টি হল তাঁর সেই গোলঞ্চ গাছ, যা সেদিন থেকেই এক নতুন ধরনের ফুল দিতে শুরু করে। সেই ফুলে ছিল আঙুলের মতো পাঁচটা করে ঝোলা পাপড়ি, আর সেটা দিনের বেলায় কালো কিন্তু রাত্রে ফসফরাসের মতো জ্বলত। ফুলগুলি হাওয়ায় দোলা খেলে মনে হত হাতছানি দিয়ে কেউ ডাকছে।
৯. “ঘটনাটা ঘটল প্রথম দিনেই”- প্রথম দিনেই কী ঘটনা ঘটেছিল লেখো।
উত্তরঃ মঙ্গলগ্রহে পৌঁছানোর পরে প্রথম দিনেই এক বিভীষিকাময় ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় প্রোফেসর শঙ্কু ও তাঁর সঙ্গীদের। সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শঙ্কু ভাবছিলেন যে টিলার উপরে উঠে জায়গাটা দেখবেন। এরকম সময় আঁশটে গন্ধ আর একটা অদ্ভুত শব্দ তিনি শুনতে পেলেন। শঙ্কু ওই আওয়াজের উৎস খুঁজতে শুরু করলে এক বিকট চিৎকার শোনেন এবং দেখেন যে, হাতের মুঠোয় নিউটনকে ধরে প্রহ্লাদ উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে চলেছে রকেটের দিকে। তার পিছু নিয়েছে এক অদ্ভুত জীব যেটি মানুষ, জন্তু এবং মাছ তিনটির কোনোটাই নয়, কিন্তু তিনেরই মিশেল। প্রহ্লাদকে বাঁচানোর জন্য শঙ্কু অস্ত্র হাতে জন্তুটাকে অনুসরণ করেন। প্রহ্লাদ অবশ্য নিরাপদে রকেটে উঠে যায়। কিন্তু বিধুশেখর রকেট থেকে নেমে জন্তুটার মুখোমুখি দাঁড়ায়। এদিকে আরও দু-তিনশো জন্তু তাদের দিকে আসতে থাকে। বিধুশেখরের হাতের এক আঘাতে অনুসরণ করে আসা জন্তুটি মাটিতে পড়ে যায়। শঙ্কু তাকে আটকাতে চেষ্টা করেন। শেষপর্যন্ত শঙ্কু বোতাম টিপে বিধুশেখরকে অচল করেন। তারপর তাকে দু-ভাগ করে রকেটের দরজায় কাছে নিয়ে আসেন। ততক্ষণে প্রায় হাজার মঙ্গলীয় সৈন্য জড়ো হয়েছে দেখা যায়। প্রহ্লাদের সাহায্যে বিধুশেখরকে কেবিনে তুলে দরজা বন্ধ করে দেন। তারপরেই শঙ্কু জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরলে দেখেন রকেট উড়ে চলেছে।
👉নোঙর কবিতার প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | Nongor Kobitar Question Answer Class 9 Bengali
👉ব্যোমযাত্রীর ডাইরি প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | Byomjatrir Diary Question Answer Class 9 Bengali