চিন্তাশীল নাটকের প্রশ্ন ও উত্তর সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Chintashil Natoker Question Answer Class 7 Bengali wbbse
সাহিত্য মেলা
সপ্তম শ্রেণি বাংলা
সপ্তম শ্রেণির বাংলা (দশম পাঠ) চিন্তাশীল নাটকের গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর | Class 7 Bengali Chintashil Natoker Question Answer wbbse
সপ্তম শ্রেণির বাংলা (দশম পাঠ) চিন্তাশীল নাটকের গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Chintashil Natoker Question Answer wbbse
1. সপ্তম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
3. সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
4. সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
5. সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
সপ্তম শ্রেণির বাংলা (দশম পাঠ) চিন্তাশীল নাটকের গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Chintashil Natoker Question Answer wbbse
চিন্তাশীল
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নাট্যকার পরিচিতি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) : জন্ম কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। অল্পবয়স থেকেই ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ‘ভারতী’ ও ‘বালক’ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। ‘কথা ও কাহিনী’, ‘সহজপাঠ’, ‘রাজর্ষি’, ‘ছেলেবেলা’, ‘শিশু’, ‘শিশু ভোলানাথ’, ‘ হাস্যকৌতুক, ‘ডাকঘর’, ‘গল্পগুচ্ছ’- সহ তাঁর বহু রচনাই শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করে। দীর্ঘ জীবনে অজস্র কবিতা, গান, নাটক, ছোটোগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ লিখেছেন, ছবি এঁকেছেন। ১৯১৩ সালে ‘Song Offerings’- এর জন্যে প্রথম এশিয়াবাসী হিসেবে নোবেল পুরস্কার পান। দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত আর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তাঁর রচনা। ‘চিন্তাশীল’ নাটিকাটি তাঁর ‘হাস্যকৌতুক’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
নামকরণ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত পাঠ্য ‘চিন্তাশীল’ নাটকের প্রধান চরিত্র নরহরি একজন অলস প্রকৃতির মানুষ। সে সবসময় ভাবতে থাকে। সে ভাবে শব্দের যথাযথ প্রয়োগ হল কি না, কোন শব্দ কীভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেছে ইত্যাদি। এ ছাড়াও নানা খুঁটিনাটি তার ভাবনার বিষয়। ভাগ্নেকে আদর করার আগেও সে ভাবে কীভাবে আদর করবে। নাটকে ভাবা ছাড়া আর কোনো কাজই করতে তাকে আমরা দেখি না। নাটকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সে শুধু ভেবেই গেছে। আর তাই সেদিক থেকে বিচার করে বলা যায় নাটকটির ‘চিন্তাশীল’ নামকরণ সার্থক হয়েছে।
সারসংক্ষেপ : নাটকের শুরুতে আমরা দেখি নরহরিকে তার মা ‘বাছা’ বলে সম্বোধন করে খেতে বসতে বলে। তখন নরহরি জানায় ‘বাছা’ শব্দটির মূল ধাতু ‘বস’। তাই এটি সামান্য শব্দ নয়। তারপর তাকে খেতে বসার সময় ‘লক্ষ্মী’ বলে সম্বোধন করলে সে জানায়, পূর্বে ‘লক্ষ্মী’ অর্থে বিশেষ দেবীকে বোঝাত। পরে গুন অনুযায়ী সুশীলা মেয়েকে বোঝাত আর বর্তমানে ছেলেদের ক্ষেত্রেও ‘লক্ষ্মী’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এরপর তার মাসিমা এসে খেতে বসতে বলে। আরও বলে যে তার কথাবার্তা শুনলে সুবলের মা হেসে কুরুক্ষেত্র করবে। কিন্তু নরহরির মতে কুরুক্ষেত্র আর্যগৌরবের শ্মশানক্ষেত্র। এর কথা মনে পড়লেই শরীর রোমাঞ্চিত হয়। তাই বলা উচিত ‘কেঁদেই কুরুক্ষেত্র”। তারপর সে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।পরে দিদিমা এসে নরহরিকে জানায় সূর্য অস্ত যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে। এতেও নরহরির বক্তব্য হলো সূর্য অস্ত যায় না, সূর্য স্থির ‘পৃথিবীই উল্টে যায়”। এরপর তার দিদিমা যখন বলে ভাতে মাছি ভনভন করছে, তখন আবার নরহরি বলে মাছি ভনভন করে না। এটি তার ডানার শব্দ এবং এটা সে প্রমাণ করেও দিতে পারে। এরপর নরহরির ভাগ্নে হরিদাসকে নরহরির মা নরহরির উদ্দেশ্যে দণ্ডবৎ করতে বলায়, নরহরি বলে দণ্ডবৎ করে না, দণ্ডবৎ হয়। এটি একটি ভুল প্রয়োগ। এরপর তার মা ভাগ্নেকে আদর করতে বললে সে একটু ভেবে নিতে চায়, কারণ ছেলেবেলাকার আদরের উপরে ছেলের সমস্ত ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। এরপর তার মা ভাগ্নের সঙ্গে কথা বলতে বললে সে তাতেও একটু ভেবে নিতে চায়। কারণ তার মতে এমন কথা বলা উচিত যাতে ওর আমোদ ও শিক্ষা দুই-ই হয়। এরপর সে ভাগ্নেকে তার নামের সমাস জিজ্ঞাসা করে। এক্ষেত্রেও তার মত অল্প অল্প করে এখন থেকে মুখস্থ করানো উচিত। এসব শুনে তার মা কাশী চলে যেতে চাইলে সে তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যায়। কিন্তু টাকার বন্দোবস্ত করতে বললে আবার নরহরি ভাবতে বসে।
মূলকথা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকের প্রধান চরিত্র নরহরি সারাক্ষণ শুধু ভাবে। ভাবা ছাড়া তার আর কোনো কাজ নেই। স্নান খাওয়া-দাওয়া করলে সে শুধু ভাবতেই থাকে। মা, মাসিমা, দিদিমা যে কেউই তাকে বোঝাতে যাক না কেন, প্রত্যেকের কথারই সে ভুল বের করে। আর ভাবতে থাকে। ভাগ্নেকে আদর করা, তার সঙ্গে কথা বলার সময়ও সে ভাবতে বসে। শেষে তার মা কাশী যেতে চাইলে কোনো কিছু না ভেবেই সে রাজি হয়ে যায়। শুধু টাকার বন্দোবস্ত করতে বললেই সে আবার ভাবতে বসে।
শব্দার্থ :
» ব্যামো— অসুখ, রোগ। » বাছা— বৎস।
» বৎসর— বছর। » গুরুতর— কঠিন।
» কুরুক্ষেত্র— মহাভারতে বর্ণিত কৌরব ও পাণ্ডবদের যুদ্ধক্ষেত্র। » রোমাঞ্চিত— গায়ে কাঁটা দেওয়া, শিহরিত। » অধীর— অস্থির। » অন্তঃকরণ— হৃদয়। » মুণ্ডু— মাথা।
» পাড়াপুচ্ছ— সমস্ত পল্লি।
» রোসো— অপেক্ষা করো।
» দণ্ডবৎ—দণ্ডের মতো ভূমিতে পড়ে প্রণাম।
» ভাগ্নে— বোনের ছেলে। » বৃহৎ— বড়ো।
» আচ্ছাদিত— ঢাকা, আবৃত।
» কাশী— উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত বাবা বিশ্বনাথের মন্দির সংলগ্ন হিন্দুদের এক তীর্থস্থান। » হপ্তা— সপ্তাহ।
» বন্দোবস্ত— ব্যবস্থা। » নিতান্ত— অত্যন্ত।
হাতে কলমে’র প্রশ্নোত্তর : চিন্তাশীল নাটক সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Chintashil Natoker Question Answer Class 7 Bengali wbbse
১. একই অর্ধযুক্ত শব্দ নাটক থেকে খুঁজে বের করে লেখো।
উত্তরঃ
» মক্ষিকা— মাছি। » হাজির— উপস্থিত।
» ব্যবস্থা— বন্দোবস্ত। » অস্থির—অধীর।
» ঢাকা বা আবৃত— আচ্ছাদিত।
২. শূন্যস্থান পূরণ করো :
বিশেষ্য | বিশেষণ |
আদর | — — — |
— — — | ভেতো |
শোক | — — — |
— — — | প্রামাণ্য |
নির্ভর | — — — |
— — — | আমুদে |
উত্তরঃ
বিশেষ্য | বিশেষণ |
আদর | আদৃত |
ভাত | ভেতো |
শোক | শোকার্ত |
প্রমাণ | প্রামাণ্য |
নির্ভর | নির্ভরতা |
আমোদ | আমুদে |
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৩.১ ‘কথাটা বড়ো সামান্য নয়’— বক্তা কে ? কার কোন কথাটা সামান্য নয় ?
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটির বক্তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত “চিন্তাশীল’ নাটকের প্রধান চরিত্র নরহরি।
» নরহরির মা তাকে ‘বাছা’ বলে সম্বোধন করলে নরহরি জানায় ‘বাছা’ শব্দটা সামান্য নয়। এর উৎস হল ‘বৎস’। এই শব্দ থেকেই ‘বাছা’ শব্দটা এসেছে। তাই নরহরির মতে একটু ভাবলেই বোঝা যাবে ‘বাছা’ শব্দটা সামান্য নয়।
৩.২ ‘এই সব বাজে ভাবনা নিয়ে থাকা ভালো ?’ — কে কাকে এই কথা বলেছে ? কোন ভাবনাকে বাজে বলা হয়েছে ? তা কী সত্যিই ‘বাজে ভাবনা’ তোমার কী মনে ?
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকে নরহরির মা নরহরিকে বলেছে।
» নরহরি সবসময় বিভিন্ন শব্দের ধাতুর বর্তমান রূপ, অতীত রূপ, তাদের প্রয়োগ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করে। তার মা তাকে লক্ষ্মী বললে সে জানায়, লক্ষ্মী শব্দটা পূর্বে দেবী অর্থে ব্যবহৃত হত। কিন্তু বর্তমানে সুশীলা মেয়ে বা শান্ত স্বভাবের ছেলেকেও লক্ষ্মী বলতে ব্যবহৃত হয়। এসব ভাবলেই আশ্চর্য হতে হয়। নরহরির এইসব ভাবনাকে বাজে ভাবনা বলা হয়েছে।
» নরহরির ভাবনা বাজে নয়। তার কথাগুলো যুক্তিযুক্ত। কিন্তু সবসময় শব্দের খুটিনাটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করাটা ঠিক নয়। প্রত্যেক কথার যদি এভাবে মানে করতে হয়, তাহলে ভাবনাচিন্তা করতে করতেই জীবন কেটে যাবে।
৩.৩ ‘আমাদের কথা শুনলেই এর শোক উপস্থিত হয়।’— বক্তা কে ? তার কোন কথায় নরহরি শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকের প্রধান চরিত্র নরহরির মাসিমা।
» নরহরির মাসিমা যখন বলে নরহরির উলটোপালটা কথা শুনে তাকে দেখে সুবলের মা হেসেই কুরুক্ষেত্র, তখন নরহরি জানায় কুরুক্ষেত্র ‘আর্যগৌরবের শ্মশানক্ষেত্র’। মনে পড়লেই শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে পড়ে। তাই ‘হেঁসে কুরুক্ষেত্র’ না বলে ‘কেঁদেই কুরুক্ষেত্ৰ’ বলা ভালো। কুরুক্ষেত্রর প্রসঙ্গ তোলাতেই নরহরি শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
৩.৪ ‘রোসো’ আমি তোমাকে প্রমাণ করে দিচ্ছি’— নরহরি কার কাছে কী প্রমাণ করে দিতে চেয়েছিল?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকের অন্যতম চরিত্র নরহরির দিদিমা যখন নরহরিকে বলে তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে নিতে কারণ ভাতের চারপাশে মাছি ভনভন করছে তখন নরহরি জানায় মাছি ভনভন করে না। মাছির ডানা থেকে ভনভন শব্দ হয়। আর এটাকেই সে দিদিমার কাছে প্রমাণ করে দিতে চেয়েছিল।
৩.৫. ‘আদর করবি, তাতেও ভাবতে হবে নরু ? এর প্রত্যুত্তরে নরু মাকে কী কী বলেছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকে নরহরির মা নরহরির ভাগ্নেকে আদর করতে বলায় সে বলে আদর করার আগে কীভাবে আদর করবে তা ভাবতে হবে তখন তার মা উপরিউক্ত কথাটি বলে। এর প্রত্যুত্তরে নরু জানায়, ছোটোবেলাকার আদরের উপরে ছেলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। ছেলেবেলাকার এক-একটা সামান্য ঘটনার ছায়া বৃহৎ আকার ধরে সমস্ত যৌবন, জীবন আচ্ছন্ন করে রাখে। এটা ভাবলেই আর ছেলেকে আদর করা একটা সামান্য কাজ বলে মনে হয় না।
৩.৬ ‘তোমার ইচ্ছে হয়েছে, আমি বাধা দেব না।’— কে কাকে বাধা দিতে চায়নি ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকের প্রধান চরিত্র নরহরির আচার আচরণ দেখে তার মা কাশী চলে যেতে চাইলে নরহরি তাকে বাধা দেয়নি।
৩.৭ ‘এটাতে বড়ো বেশি ভাবতে হল না।’— কার স্বগতোক্তি ? কাকে বেশি ভাবতে হল না ? কেন ?
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটকে নরহরির মার স্বগতোক্তি।
» নরহরিকে বেশি ভাবতে হল না। কারণ তার মার কাশী চলে যাবার সঙ্গে তার কোনো কার্যকারিতা জড়িয়ে নেই। তাকে যখন কোনো কাজে বা বিষয়ে জড়ানো হয় তখনই সে ভাবতে বসে।
৪. ‘চিন্তাশীল নরহরি সবার সব কথাতেই চিন্তামগ্ন হয়ে পড়ে, অথচ মায়ের কাশীবাসী হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে শুনে তখনই সে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু তার মা সেই টাকার বন্দোবস্ত করতে বলেন, সে আবার ভারতে বলেন – এ থেকে নরহরি চরিত্রটি সম্পর্কে তোমার কেমন ধারণা হলো ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত “চিন্তাশীল’ নাটকের প্রধান চরিত্র নরহরি সকলের সমস্ত কথাতেই ভাবতে বসে। শব্দের যথাযথ প্রয়োগ, শব্দার্থ পরিবর্তন এ ছাড়াও চারপাশের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সারাদিন ভাবতে থাকে। তার এই ভাবনার জেরে বাড়ির সকলের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে। ছেলের এই অবস্থা দেখে তার মা কাশীবাসী হতে চাইলে সে তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যায়। কিন্তু যখন তার মা টাকার বন্দোবস্ত করতে বলেন তখন আবার সে ভাবতে বসে। এ থেকে বুঝতে পারি যখনই কোনো বিষয়ের সঙ্গে তার কার্যকারিতা জড়িয়ে থাকে তখনই সে ভাবতে বসে। তার মায়ের কাশী যাওয়ার সঙ্গে তাকে কোনোভাবে জড়াতে হবে না, কোনো কিছু বলাতে হবে না দেখে সে কোনো কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যায়। সে হয়তো আরও ভাবে তার ভাবনায় আর কেউ বাধা দিতে আসবে না তাই তার মা চলে গেলে সে নিজের মতো বসে বসে ভাবতে পারবে। কিন্তু যখনই তাকে টাকার বন্দোবন্ধ করতে বলা হয় তখনই আবার সে ভাবতে বসে। কারণ, এক্ষেত্রে তাকে কাজ করতে হবে। নিজের ভাবনাকে সরিয়ে টাকার জোগাড় করতে হবে। আসলে নিজের ভাবনাকে নিয়ে থাকতেই সে ভালোবাসে। এ ছাড়া তাকে অত্যন্ত অলস প্রকৃতির বলেও মনে হয়।
৫. ঠিক বানানটি বেছে নিয়ে লেখো :
» ব্যমো / ব্যামো উত্তরঃ ব্যামো
» পরিবর্তন / পরিবর্তন উত্তরঃ পরিবর্তন
» লক্ষ্মী / লক্ষী উত্তরঃ লক্ষ্মী
» প্রমান / প্রমাণ উত্তরঃ প্রমাণ
» ব্যাস্ত / ব্যস্ত উত্তরঃ ব্যস্ত
» মুখস্থ / মুখস্ত উত্তরঃ মুখস্থ
৬. নিচের বাক্যগুলিকে বদলে চলিত রীতিতে লেখো :
৬.১ ভাত শুকাইতেছে, মা মাছি তাড়াইতেছেন।
উত্তরঃ ভাত শুকোচ্ছে, মা মাছি তাড়াচ্ছেন।
৬.২ নরহরির শিশু ভাগিনেয়কে কোলে করিয়া মাতার প্রবেশ।
উত্তরঃ নরহরির ছোটো ভাগ্নেকে কোলে করে মায়ের প্রবেশ।
৬.৩ নরহরি মাথায় হাত দিয়া পুনশ্চ চিন্তায় মগ্ন।
উত্তরঃ নরহরি মাথায় হাত দিয়ে আবার চিন্তায় ডুবল।
৭. অর্থ লেখো :
উত্তরঃ
» বৎস— বাছা।
» ভাগিনেয়— ভাগ্নে / বোনের ছেলে।
» রোসো— অপেক্ষা করো।
» বন্দোবস্তু— ব্যবস্থ
» দণ্ডবৎ— দণ্ডের মতো ভূমিতে পড়ে প্রণাম করা।
৮. সমার্থক শব্দ লেখো :
উত্তরঃ
» পৃথিবী— ধরণি, ধরা, অবনি।
» সূর্য— ভানু, তরুণ, অরুণ।
» স্ত্রীলোক— মহিলা, নারী, রমণী।
» মা— জননী, মাতা, জন্মদাত্রী।
৯. নাটক থেকে পাঁচটি নির্দেশক ও অনির্দেশক শব্দ খুঁজে নিয়ো লেখো :
উত্তরঃ
» নির্দেশক— এই, এদিকে, এইরকম, এইটে, ওকে।
» অনির্দেশক— কিছুদিন, এককালে, দুটো কথা, কিছু টাকা।
১০. ‘বাছা’ শব্দটি কোন ধাতুনিষ্পন্ন শব্দ। ‘বাছা’ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ লেখো ।
উত্তরঃ
» ‘বাছা’ শব্দটি ‘বৎস’ ধাতুনিষ্পন্ন শব্দ।
» বাছা শব্দের দুটি প্রতিশব্দ হল— বৎস, বাছাধন।
১১. ‘দাড়ি’ শব্দের সাধু রূপটি লেখো।
উত্তরঃ ‘দাড়ি’ শব্দের সাধুরূপটি হলো শ্মশ্রু।
১২. ‘হেসেই কুরুক্ষেত্র’— শব্দবন্ধের মূল ভাবটি কী ?
উত্তরঃ ‘হেসেই কুরুক্ষেত্র’ শব্দবন্ধের মূল ভাবটি হল— হেসে একাকার কাণ্ড।
১৩. ‘গুরু’ শব্দটিকে দুটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্যরচনা করো।
উত্তরঃ
» গুরু (বড়োদের)— গুরুজনদের কথা সবসময় মেনে চলা উচিত।
» গুরু (কঠিন / মহান)— বাপ-মা হারা কমলকে এত অল্প বয়সে গুরুদায়িত্ব নিতে হয়েছে।
১৪. ‘সূর্য তো অস্ত যায় না’ এখানে কোন বৈজ্ঞানিক সত্যের আভাস দেওয়া হয়েছে ?
উত্তরঃ সূর্য স্থির, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে এই বৈজ্ঞানিক সত্যের আভাস দেওয়া হয়েছে।
১৫. ‘মাথা’ শব্দটি কোন্ তৎসম শব্দ থেকে এসেছে ?
উত্তরঃ ‘মাথা’ শব্দটি সংস্কৃত ‘মস্তক’ শব্দ থেকে এসেছে।
১৬. ‘ভাত জুড়িয়ে গেল’—এখানে কথাটির অর্থ ভাত ঠান্ডা হয়ে গেল / শুকিয়ে গেল। জুড়িয়ে গেল’ শব্দবন্ধকে অন্য অর্থে প্রয়োগ করে একটি বাক্য লেখো।
উত্তরঃ ‘জুড়িয়ে গেল’ (ভালো লাগল / তৃপ্তি হল)— কাঞ্চনজঙ্ঘার শৃঙ্গ দেখে আমার চোখ জুড়িয়ে গেল।
১৭. ‘মাছি ভন ভন করছে’—‘ভন ভন’-এর মতো আরও পাঁচটি ধ্বন্যাত্মক / অনুকার শব্দদ্বৈত তৈরি করো।
উত্তরঃ ঝনঝন, ঠনঠন, কলকল, হনহন, বনবন।
১৮. ‘কাশী’ কোন রাজ্যে অবস্থিত ? ‘কাশী’র প্রসিদ্ধির কারণ কী ?
উত্তরঃ কাশী উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত।
» কাশীতে বাবা বিশ্বনাথের মন্দির আছে, তাই এই স্থান প্রসিদ্ধ।
১৯. নাটকটিতে মোট কটি দৃশ্য রয়েছে ? কোন্ কোন্ দৃশ্যে কাদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় ?
উত্তরঃ নাটকটিতে মোট দুটি দৃশ্য আছে।
» প্রথম দৃশ্যে— নরহরি, নরহরির মা, মাসিমা, দিদিমার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
» দ্বিতীয় দৃশ্যে— নরহরি, নরহরির মা ও নরহরির ভাগ্নে হরিদাসের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
২০. গুরুতর— এরকম শব্দের পরে ‘তর’ যোগ করে পাঁচটি নতুন শব্দ লেখো।
উত্তরঃ “তর’ যোগ করে পাঁচটি শব্দ হল—
উত্তরঃ অধিকতর, মহত্তর, বৃহত্তর, লঘুতর,তিক্ততর।
২১. সন্ধিবিচ্ছেদ করো— আশ্চর্য, উপস্থিত, পুনশ্চ।
উত্তরঃ আশ্চর্য— আঃ + চর্য। উপস্থিত— উপঃ + থিত। পুনশ্চ— পুনঃ + চ
২২. উচ্চারণে বিকৃত শব্দগুলির পাশাপাশি মূল শব্দগুলি লেখো :
» জিজ্ঞেস— জিজ্ঞাসা। » ব্যামো— ব্যারাম।
» কও— কহ। » হপ্তা— সপ্তাহ।
» দিকি— দেখি। » সমুখে— সম্মুখে।
২৩. নরহরির ভাগ্নের ডাকনামটি কী তা পাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তরঃ নরহরির ভাগ্নের ডাকনাম হল জাদু।
২৪. শব্দযুগলের অর্থ পার্থক্য দেখাও :
উত্তরঃ
» বাঁচা— জীবিত থাকা।
» বাছা— বৎস।
» পুরুষ— পুরুষ মানুষ।
» পরুষ— বীরত্ব।
» সকল— সমস্ত।
» শকল— মাছের আঁশ।
» পারা— সমর্থ হওয়া।
» পাড়া— নামানো।
» ভাষা— মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমে।
» ভাসা— ভেসে থাকা।
২৫. ‘মাথা’ শব্দটিকে পাঁচটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে বাক্যরচনা করো।
» মাথা (বুদ্ধি অর্থে )— সৌরভের অঙ্কে খুব মাথা।
» মাথা (প্রধান অর্থে)— মহিমবাবু আমাদের গ্রামের মাথা।
» মাথা (আত্মসম্মান অর্থে)—সংসারে মাথা উঁচু করে চলা খুবই কঠিন।
» মাথা (মাথা ধরা অর্থে)— ঠান্ডায় আমার খুব মাথা ধরেছে।
» মাথা (উত্তেজিত অর্থে)— মাথা গরম করে কোনো কাজ করা উচিত নয়।
২৬. নাটকটির নামকরণ তোমার যথাযথ মনে হয়েছে কি না তা যুক্তিসহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামকরণ থেকেই সাহিত্যের মূলভাব বা বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাঠ্য ‘চিন্তাশীল’ নাটকে দেখি প্রধান চরিত্র নরহরি একটি অলস প্রকৃতির মানুষ। সারাক্ষণই সে ভাবতে থাকে। শব্দের যথাযথ প্রয়োগ হল কিনা, কোন্ শব্দ কীভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেছে এছাড়াও নানা খুঁটিনাটি তার ভাবনার বিষয়। ভাগ্নেকে আদর করার আগেও সে ভাবে কীভাবে আদর করবে। নাটকে ভাবা ছাড়া আর কোনো কাজ করতে তাকে আমরা দেখি না। নাটকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সে শুধু ভেবেই গেছে। আর তাই সেদিক থেকে বিচার করে বলা যায়, নাটকটির ‘চিন্তাশীল’ নামকরণ যথাযথ হয়েছে।
২৭.
মূল শব্দ | আদি অর্থ | প্রচলিত অর্থ |
লক্ষ্মী | ||
অন্ন | ||
বৎস |
উত্তরঃ
মূল শব্দ | আদি অর্থ | প্রচলিত অর্থ |
লক্ষ্মী | বিশেষ দেবী | শান্ত, সুশীল ছেলে বা মেয়ে। |
অন্ন | যে-কোনো খাদ্য | ভাত |
বৎস | যে-কোনো বাচ্চা | বাছা |