সাহিত্যমেলা
অষ্টম শ্রেণি বাংলা
চিঠি গল্পের প্রশ্ন উত্তর (মাইকেল মধুসূদন দত্ত) অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Chithi Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse
চিঠি
—মাইকেল মধুসূদন দত্ত
1. অষ্টম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. অষ্টম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
হাতে কলমে প্রশ্নোত্তর : চিঠি – মাইকেল মধুসূদন দত্ত অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Chithi Golper Hate Kolome Question Answer Class 8 Bengali wbbse
১.১ মধুসূদন দত্ত কোন্ কলেজের ছাত্র ছিলেন ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত হিন্দু কলেজের ছাত্র ছিলেন।
১.২ ‘পদ্মাবতী’ নাটকে তিনি কোন ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন ?
উত্তরঃ ‘পদ্মাবতী’ নাটকে তিনি অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।
২। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :
২.১ মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু গৌরদাস বসাককে কোথা থেকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন ? তার যাত্রাপথের বিবরণ পত্রটিতে কীভাবে ধরা পড়েছে আলােচনা করাে।
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু গৌরদাস বসাককে লন্ডন যাওয়ার সময় ‘সীলােন’ নামক জাহাজ থেকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন।
যাত্রাপথের বিবরণ দিয়ে লেখা এই চিঠিতে মধুসূদন দত্তের সৌন্দর্যবােধ, তীক্ষ্ণ অনুভূতি, নিজের কর্তব্যকর্ম ও কৌতুক রসবােধের পরিচয় পায়। জাহাজের ভিতরের জাঁকজমকপূর্ণ ও বিশালতাকে তিনি রাজবাড়ির প্রাসাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, জাহাজের কেবিনগুলাে রাজকুমারদের উপযােগী। পত্রাকার ভূমধ্যসাগরের মধ্যে দিয়ে ভেসে চলতে চলতে উত্তর অফ্রিকার পর্বতাকীর্ণ উপকূল দেখতে পাচ্ছিলেন। উত্তাল সমুদ্রের পাশাপাশি তিনি সমুদ্রের শান্তরূপও প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এই শান্ত সমুদ্রকে তিনি হুগলি নদীর সাথে তুলনা করেছেন। এছাড়াও সেখানকার আবহাওয়া যতটা ঠান্ডা হবে বলে কবি ভেবেছিলেন, বস্তুত, তা সেরকম নয়। বরং, অনেকটাই আমাদের দেশের নভেম্বর মাসের মতাে। এই ভ্রমণের মধ্যে যে একটা বিষন্নতা রয়েছে তাও তিনি উল্লেখ করেছেন। কবি, শিশুকাল থেকে এই দেশ সম্পর্কে চিন্তা করে এসেছেন, ফলে বাস্তবে তিনি যখন সেই দেশের নিকটবর্তী হয়েছেন, তখন স্বভাবতই ভাবপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। তার পরিচয়ই আলােচ্য চিঠিতে রয়েছে।
২.২ মধুসূদনের জীবনের উচ্চাশার স্বপ্ন কীভাবে পত্রটিতে প্রতিভাসিত হয়ে উঠেছে ?
উত্তরঃ ‘সীলোন’ জাহাজে চেপে ইংল্যান্ডে যাওয়ার সময় মাইকেল মধুসুদন দত্ত তাঁর বন্ধু গৌরদাস বসাককে যে চিঠিটি লিখেছিলেন, তাতে লেখকের উচ্চাশা ও স্বপ্নের স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়।
মধুসূদন আইনশিক্ষার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেই শিক্ষা যথাযথভাবে সম্পূর্ণ করে, সেই সূত্রে একটি সম্মানজনক জীবিকা অর্জনে তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন। এ কথা তাঁর চিঠিতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। চিঠিতে তিনি এও লেখেন যে, পড়াশোনায় মন দিতে গিয়ে তিনি হয়তো বন্ধুদের বেশি সময় দিতে পারবেন না। বন্ধুকে তিনি আরও জানান যে, ছোটোবেলা থেকে ইংল্যান্ড সম্পর্কে কতই না স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। কিন্তু যখন তিনি সত্যিই সেই স্বপ্নের দেশের দিকে প্রতি মুহূর্তে একটু একটু করে এগিয়ে চলেছেন, তখন তাঁর নিজের কাছেই তা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। ছোটোবেলা থেকেই ইংরেজি ভাষা, সাহিত্য এবং ইংরেজদের প্রতি মধুসূদনের গভীর আকর্ষণ ছিল। ইংল্যান্ড ছিল তাঁর স্বপ্নের দেশ। তিনি যে তাঁর স্বপ্নের দেশের খুব কাছাকাছি এসে পড়েছেন এ চিঠি থেকে তা জানা যায়।
২.৩ বিদেশে পাড়ি জমানাের সময়েও তাঁর নিজের দেশের কথা কীভাবে পত্ৰলেখকের মনে এসেছে ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের উচ্চাশা ও বিদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠালাভের স্বপ্ন থাকলেও নিজের দেশের প্রতি তাঁর ভালােবাসা ছিল অকৃত্রিম ও চিরন্তন। তাই বিদেশে পাড়ি জমানাের সময় তিনি বারবার নিজের দেশের কথা স্মরণ করেছেন। প্রথমত, যাত্রাপথের সুনিপুণ বর্ণনা তিনি ইন্ডিয়ান ফিল্ড পত্রিকায় দিতে চেয়েছেন। এই বর্ণনা হবে সুদীর্ঘ ও বিস্তারিত। আসলে তিনি সৃষ্টির ভাবনায় নিজের দেশের কথা মনে রেখেছেন। দ্বিতীয়ত, কতদিন আগে কলকাতায় ছিলেন তাও স্পষ্ট করে বলেছেন। তৃতীয়ত, জাহাজে থাকার সময় যদি আধা-ডজনখানেক দেশের লােক থাকত, তবে তিনি একটি গােষ্ঠী গড়ে তুলতেন, এটিও জানিয়েছেন। চতুর্থত, বন্ধুর কাছে হরির কথাও জানতে চেয়েছেন। পঞ্চমত, জিব্রাল্টার বর্ণনায় বলেছেন, এখানকার সমুদ্র যেন কলকাতার হুগলি নদীর মতাে বেশ শান্ত। ষষ্ঠত, এখানকার আবহাওয়া দেশের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি যেমন হয়, তেমনই নাতিশীতােষ্ণ। এভাবে মাইকেল মধুসূদন দত্ত যাত্রাপথে একাধিকবার নানা প্রসঙ্গে নিজের দেশের কথা মনে করেছেন।
২.৫ “এ কথা যেন আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।”— কোন কথা ? সে-কথাকে বক্তার অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছে কেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর শৈশব থেকে লন্ডন সম্পর্কে যেসব চিন্তাভাবনা করে এসেছিলেন, আজ তা তাঁর নিকটবর্তী হতে চলেছে– এই কথাটিই যেন তাঁর বিশ্বাস হচ্ছে না।
আসলে স্বপ্ন ও বাস্তবের এই মিলন যেন তাঁর কাছে অবিশ্বাস্য। ছােটোবেলা থেকে তিনি স্বপ্ন দেখতেন, লন্ডনে যাবেন। সেখানকার বিদ্বৎসমাজে তাঁর খ্যাতি হবে, প্রতিপত্তি হবে। কিন্তু সেই যশােলাভ ইচ্ছা তাঁর এতদিন পূরণ হয়নি। বরং তিনি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। আর আজ সেখানে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে জীবিকানির্বাহের পেশা অর্জনের আশায় তিনি ব্যারিস্টারি পড়তে চলেছেন। শুধু তাই নয়— প্রতি মুহূর্তে সেই দেশ তাঁর নিকটবর্তী হচ্ছে। এতকাল যে-চিন্তা, ধ্যানধারণা মনে পােষণ করে এসেছেন, আজ তার বাস্তব রূপায়ণ দেখে তিনি উচ্ছ্বসিত, আবেগতাড়িত। কল্পনা যে বাস্তব রূপ নিতে পারে, সেই অদ্ভুত বিষয়টি কার্যে পরিণত হওয়ার ব্যাপারেই তিনি এ কথা বলেছেন।
২.৫ প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে হৃদ্যতার ছবি পত্রটিতে কীভাবে ফুটে উঠেছে তা প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি-সহ আলােচনা করাে।
উত্তরঃ মানুষে মানুষে হৃদ্যতার ছবি তাদের কথাবার্তা ও আলাপ-আলােচনায় স্পষ্ট হয়। মধুসূদন দত্ত বন্ধুকে চিঠি লিখেছেন সেই আলাপের ঢঙে। বন্ধুর সঙ্গে কেবল কেজো-কথার সম্পর্ক নয়, তার সঙ্গে থাকে আন্তরিকতা, ব্যক্তিগত উৎসাহ ও পরিমিতি বােধ। সেখানে তাদের রুচিবােধও ফুটে ওঠে। সেই দিকটি গৌরদাস বসাককে লেখা মধুসূদন দত্তের চিঠিতে স্পষ্ট। জাহাজ যাত্রার বিষন্ন ব্যাপার তুলে ধরার আগে সকৌতুকে তিনি তাই লেখেন—“ধৈর্য ধরাে বন্ধু, ধারণ করাে ধৈর্য।” এই সমস্ত ক্ষেত্রই হৃদ্যতার পরিচয় বহন করে। আবার তিনি বলেন, লন্ডনে পৌঁছােনাের পর তিনি ঠিকানা দিলে তবেই যেন চিঠি লেখা হয়। তখন অনবরত পত্রাঘাত করা সম্ভব হবে, সঙ্গে নিজের কর্তব্যকর্ম সম্পর্কে উল্লেখ করে বন্ধুকে বলেন, সেখানে গিয়ে তিনি নিজে বন্ধুদের জন্য বেশি সময় খরচ করতে পারবেন না। এইসব কথা কেবলমাত্র পরম বন্ধুকেই বলা যায়। আর এখানেই মধুসূদন দত্তের সঙ্গে তার প্রিয় বন্ধু গৌরদাস বসাকের হৃদ্যতার ছবি ফুটে উঠেছে।
২.৬ রাজনারায়ণ বসুকে লেখা পত্রে লেখক তার এই প্রিয় বন্ধুটির কাছে কোন আবেদন জানিয়েছেন ?
উত্তরঃ বন্ধু রাজনারায়ণ বসুকে লেখা চিঠিতে মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ সম্পর্কে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ছেন, কাব্যটি খুব জনপ্রিয় হচ্ছে। মিলটনের চেয়ে উৎকৃষ্টতর বলে অনেকে প্রশংসা করলেও সেটি তিনি তা মানেন না— এটিও বলেছেন। তবে কাব্য সম্পর্কে যে যাই বলুক, রাজনারায়ণের খােলামেলা অভিমত তাঁর কাছে অনেক বেশি গ্রহণযােগ্য। তিনি বন্ধুকে বলেন, তাঁর স্ত্রী যাতে বইটি পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত। সুতরাং, চিঠিতে এ কথা স্পষ্ট যে- মধুসূদন দত্ত তাঁর কাব্য বিষয়েই বন্ধু রাজনারায়ণ বসুকে যাবতীয় আবেদন জানিয়েছেন এবং তাঁর মতামত প্রত্যাশা করেছেন।
২.৭ “এই কাব্য অদ্ভুতরকম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।”— কোন কাব্যের কথা বলা হয়েছে ? সে কাব্যের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে লেখক কোন্ কোন্ প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন ?
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটির মাধ্যমে পত্রলেখক মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর কথা বলেছেন।
এই কাব্যের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে তিনি দেশি-বিদেশি একাধিক কবি ও কাব্যের কথা বলেছেন। বিদেশি কবি মিলটন, ভার্জিল ও তাসের প্রসঙ্গও সেক্ষেত্রে উঠে এসেছে। আর সেইসঙ্গে দেশি কবি কালিদাসের প্রসঙ্গও এনেছেন। মিলটন ও তাঁর কাব্য ‘প্যারাডাইস লস্ট’-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন— মিলটনের সঙ্গে তুলনায় তাঁর কাব্য উৎকৃষ্টতর নয়, কারণ মিলটনের কাব্য স্বর্গীয়। তবে ভার্জিল, তাসসা কিংবা কালিদাসের সমতুল্য হওয়া অসম্ভব নয়। কবির নিজের কথায়—“অনেকে বলেছেন এটি কালিদাসের কাছাকাছি এ কথায় আমার কোনাে আপত্তি নেই। ভার্জিল, কালিদাস বা তাসাের সমতুল্য হওয়া আমি অসম্ভব বলে মনে করিনে। তাঁরা যদিও কীর্তিমান, তবুও তারা নশ্বর পৃথিবীর কবি, কিন্তু মিলটন স্বর্গীয়।” তিনি এও শুনেছেন যে, অনেক হিন্দু মহিলা বইটি পড়ে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন। তাই বন্ধু গৌরদাস বসাকের স্ত্রীও যাতে বইটি পড়তে পারেন, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা করার পরামর্শও তিনি বন্ধুকে দিয়েছেন। যদিও মধুসূদন দত্ত তাঁর বন্ধুর উদ্দেশ্যে বলেছেন, হাজার-হাজার জয়ধ্বনির থেকেও তার বন্ধুর অভিমত তাঁর কাছে অনেক নির্ভরযােগ্য
২.৮ প্রিয় বন্ধুর প্রতি, সর্বোপরি সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগের যে-পরিচয় রাজনারায়ণ বসুকে লেখা পত্রটিতে পাওয়া যায়, তা বিশ্লেষণ করাে।
উত্তরঃ প্রিয় বন্ধু রাজনারায়ণ বসু ও তাঁর সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগের প্রসঙ্গে মাইকেল বলেছেন— তাঁর কাছ থেকে তিনি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। তিনি তাঁর রায় জানার জন্য অপেক্ষা করছেন। একই সঙ্গে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ সম্পর্কে অনেকের সমালােচনার চেয়ে রাজনারায়ণ বসুর অভিমত তাঁর কাছে যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ, সে কথাও জানিয়েছেন। মেঘনাদকে বধ করতে গিয়ে তাকে অনেক অশ্রুপাতও করতে হয়েছে। সে-কথা জানিয়েই বলেছেন, “তােমার যা মনে হয়েছে তুমি তা লিখে জানাবেই। এরকম হাজার হাজার মানুষের জয়ধ্বনির চেয়ে তােমার অভিমত অনেক নির্ভরযােগ্য।” অনেক হিন্দু মহিলা কাব্যটি পড়েছেন শুনে তিনি বন্ধুকে বলেছেন, তাঁর স্ত্রীও যাতে সেটি পড়তে পারে, তার ব্যবস্থা করাও বন্ধুর কর্তব্য। সঙ্গে বন্ধুর সমালােচনা প্রসঙ্গে তাঁর আন্তরিক ভাবের প্রকাশ করে বলেছেন যে, তিনি রাজনারায়ণ বসুর অকপট বক্তব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ অনুরাগী। এছাড়াও, আলােচনা প্রসঙ্গে কবি মিলটন, ভার্জিল, টাসাে, কালিদাস প্রমুখ বিশ্ববিখ্যাত কবির নাম উঠে এসেছে। এর থেকেই সাহিত্যের প্রতি কবির অনুরাগের পরিচয় পাওয়া যায়।
২.৯ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ৩ নভেম্বর ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে লেখা মধুসূদনের চিঠিটির বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
উত্তরঃ ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর বিদ্যাসাগরকে লেখা চিঠিতে মধুসূদন দত্ত তাঁর লন্ডনে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে তাঁর বিষয়-আশয়ের দেখভাল করা সম্পর্কে গভীর কৃতজ্ঞতার কথা বলেছেন। একই সঙ্গে লন্ডনে গিয়ে তাঁকে যেন কোনাে নতুন বিপদের মধ্যে না-পড়তে হয়, সে দিকটি দেখারও অনুরােধ করেছেন। এরপর তিনি সেখানকার জলবায়ু ও আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য দিয়ে সেখানে কীভাবে আছেন তাও বলেছেন। ঠান্ডার বিষয়ে বলেছেন, এদেশের ঠান্ডার চেয়ে সেখানে ছয় গুণ বেশি শীত। ভারতচন্দ্রের লেখার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি ইউরােপের প্রচণ্ড শীতের উল্লেখ করেছেন। তিনি যে ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান, জার্মানি প্রভৃতি ভাষা শিখছেন, তা-ও বলেছেন। অর্থাৎ, মধুসূদন দত্ত বিদ্যাসাগরকে লেখা চিঠিতে তাঁর সম্পত্তি উদ্ধার, দেখভাল ও তাঁকে সাহায্য করার কথা এবং প্রবাসে বসবাস করার কথা জানিয়েছেন।
২.১০ বিদ্যাসাগরকে লেখা পত্রটিতে মধুসূদনের জীবনে তাঁর ভূমিকার যে আভাস মেলে, তা বিশদভাবে আলােচনা করাে।
উত্তরঃ বিদ্যাসাগরকে লেখা চিঠিতে মধুসূদন তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ওপর বিদ্যাসাগরের গভীর প্রভাবের কথা বলেছেন। আমরা জানি, মধুসূদন দত্ত ব্যক্তিজীবনে বেপরােয়া ভাবে খরচ করতেন। তারপর তাঁর বাবা তাঁকে সম্পত্তিচ্যুত করেন। এই অবস্থায় তাঁকে সংকটে পড়তে হয়। এই সময় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁকে উদ্ধার করেন। তিনি একা লন্ডন যাবেন, তাই তাঁর বিষয়সম্পত্তি দেখাশােনার দায়িত্ব তিনি বিদ্যাসাগরকেই দিতে চান। আন্তরিক কৃতজ্ঞতায় নিজের ওপর তার সার্বিক ভূমিকার কথা স্বীকার করে মধু কবি তাই বলেন—“যে ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ জলরাশি থেকে আপনি আমাদের উদ্ধার করেছেন, আবার গিয়ে সেই বিপদে না পড়ি আপনি তা দেখবেন।” এর থেকে বােঝা যায়— বেপরােয়া ও বেহিসেবি মধুসূদন দত্ত তাঁর আর্থিক দায়ভার ও যাবতীয় বিষয়-সম্পত্তি বিদ্যাসাগরের হাতে সমর্পণ করে নিশ্চিন্ত থেকেছেন।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর : চিঠি – মাইকেল মধুসূদন দত্ত অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Chithi Golper Extra Question Answer Class 8 Bengali wbbse
বহু বিকল্পীয় (MCQ) প্রশ্নোত্তর : চিঠি – মাইকেল মধুসূদন দত্ত অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Chithi Golper MCQ Question Answer Class 8 Bengali wbbse
১. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘চিঠি’ গল্পে কয়টি চিঠির উল্লেখ আছে ?
(ক) ১টি (খ) ২টি (গ) ৩টি (ঘ) ৪টি
উত্তরঃ (গ) ৩টি।
২. ‘চিঠি’ গল্পে প্রথম ‘চিঠি’টি কাকে উদ্দেশ্য করে লেখা ?
(ক) গৌরদাস বসাক
(খ) রাজনারায়ণ বসু
(গ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরঃ (গ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
৩. প্রথম চিঠি লেখা হয়েছিল-
(ক) ৩ নভেম্বর ১৮৬৫
(খ) ২ নভেম্বর ১৮৬৪
(গ) ৪ নভেম্বর ১৮৬৫
(ঘ) ৩ নভেম্বর ১৮৬৪
উত্তরঃ (ঘ) ৩ নভেম্বর ১৮৬৪
৪.’চিঠি’ গল্পে দ্বিতীয় ‘চিঠি’টি কাকে উদ্দেশ্য করে লেখা ?
(ক) গৌরদাস বসাক
(খ) রাজনারায়ণ বসু
(গ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরঃ (ক) গৌরদাস বসাক।
৫.’চিঠি’ গল্পে তৃতীয় ‘চিঠি’টি কাকে উদ্দেশ্য করে লেখা ?
(ক) গৌরদাস বসাক
(খ) রাজনারায়ণ বসু
(গ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরঃ (খ) রাজনারায়ণ বসু।
৬. “চিঠি’ রচনাটির তিনটি চিঠিই তরজমা করেন-
(ক) সুশীল রায় (খ) সুশীল ঘােষ
(গ) সুশীল বর্মন (ঘ) সুশীল বসু
উত্তরঃ (ক) সুশীল রায়।
৭. ‘শীতকাল এলে বলে এবার মারাত্মক শীত পড়বে।’- কোথায় মারাত্মক শীত পড়বে ?
(ক) ইউরোপে (খ) আফ্রিকায়
(গ) আমেরিকায় (ঘ) ভারতে
উত্তরঃ (ক) ইউরোপে।
৮. বাঘের বিক্রম সম মাঘের_________। শূন্যস্থান পূরণ করো।
(ক) শিশির (খ) যামিনী (গ) শীতলত
(ঘ) হিমানী
উত্তরঃ (ঘ) হিমানী।
৯.কোথায় পৌঁছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত সমুদ্রযাত্রার বিবরণ দেবেন ?
(ক) ইউরোপে (খ) ভারতে (গ) ইংল্যান্ডে
(ঘ) আমেরিকায়
উত্তরঃ (গ) ইংল্যান্ডে।
১০. চিঠি গল্পটি মাইকেল মধুসূদনের কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
(ক) কৃষ্ণকুমারী
(খ) পদ্মাবতী
(গ) মাইকেল মধুসূদনের ছিন্নপত্র
(ঘ) মাইকেল মধুসূদনের পত্রাবলী
উত্তরঃ (ঘ) মাইকেল মধুসূদনের পত্রাবলী।
১১. পাঠ্য ‘চিঠি’গুলি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কোন ভাষায় লিখেছিলেন ?
(ক) বাংলা (খ) ইংরেজি (গ) সংস্কৃত
(ঘ) হিন্দি
উত্তরঃ (খ) ইংরেজি।
১২. “জার্মান হচ্ছে অদ্ভুত ভাষা” কথাটি বলেছেন–
(ক) বিদ্যাসাগর (খ) মধুসূদন
(গ) রাজনারায়ণ (ঘ) গৌরদাস
উত্তরঃ (খ) মধুসূদন।
১৩. জার্মান ভাষার বর্ণমালা—
(ক) গ্রিকের মতাে (খ) ইতালীয়
(গ) রােমানের মতাে (ঘ) রােমান নয়
উত্তরঃ (ঘ) রােমান নয়।
১৪. মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিদ্যাসাগরকে চিঠি লিখেছিলেন ___________থেকে ।
(ক) কলকাতা (খ) জার্মানি (গ) ফ্রান্স
(ঘ) লন্ডন
উত্তরঃ (গ) ফ্রান্স।
১৫.’হে প্রিয় বন্ধু’- প্রিয় বন্ধুটি হলেন–
(ক) রাজনারায়ণ (খ) বিদ্যাসাগর
(গ) গৌরদাস (ঘ) মধুসূদন
উত্তরঃ (খ) বিদ্যাসাগর।
১৬.গৌড় দাসকে লেখাপত্র অনুযায়ী সমুদ্রপথে ইংল্যান্ড যাত্রার ঠিক 22 দিন আগে মাইকেল কোথায় ছিলেন ?
(ক) কলকাতায় (খ) দিল্লিতে (গ) লন্ডনে
(ঘ) ইতালিতে
উত্তরঃ (ক) কলকাতায়।
১৭.রাজনারায়ণ বসু কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ?
(ক) মেদিনীপুর গভর্মেন্ট স্কুল
(খ) মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল
(গ) মেদিনীপুর জেলা স্কুল
(ঘ) মেদিনীপুর কনভেন্ট স্কুল
উত্তরঃ (ক) মেদিনীপুর গভর্মেন্ট স্কুল।
১৮. “হে আমার প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু”-বন্ধুটি হলেন–
(ক) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(খ) রাজনারায়ণ বসু
(গ) মধুসূদন দত্ত
(ঘ) গৌরদাস বসাক
উত্তরঃ (ঘ) গৌরদাস বসাক।
১৯. মধুসুদন যে জাহাজে ইংল্যান্ড যাত্রা করেন সেই জাহাজটির নাম-
(ক) হর্ষবর্ধন (খ) সীলােন (গ) ইউরেকা
(ঘ) ইংল্যান্ড মার্চেন্ট
উত্তরঃ (খ) সীলােন।
২০.’অনেক হিন্দু মহিলা বইটি পড়েছেন’- বইটি হল–
(ক) বীরাঙ্গনা কাব্য (খ) মেঘনাথবধ কাব্য
(গ) পদ্মাবতী কাব্য (ঘ) ব্রজাঙ্গনা কাব্য
উত্তরঃ (খ) মেঘনাথবধ কাব্য।
২১.’আমি ষষ্ঠ সর্গ শেষ করেছি’- ষষ্ঠ সর্গের লাইন সংখ্যা-
(ক) ৭৪০ (খ) ৭৬০ (গ) ৭৫০ (ঘ) ৭৫৫
উত্তরঃ (গ) ৭৫০
২২.’আমি অকপট ও আন্তরিকভাবে তোমার সর্বশ্রেষ্ঠ অনুরাগী’- বক্তা—
(ক) রাজনারায়ণ (খ) বিদ্যাসাগর
(গ) গৌরদাস (ঘ) মধুসূদন
উত্তরঃ (ঘ) মধুসূদন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : চিঠি – মাইকেল মধুসূদন দত্ত অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Chithi Golper Very Short Answer Type Question Answer Class 8 Bengali wbbse
১. মধুসূদন দত্ত রচিত তিনটি চিঠির তরজমা করেছেন কে ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত চিঠি তিনটির তরজমা করেছেন সুশীল রায়।
২. মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে কবে চিঠি লেখেন ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ৩ নভেম্বর, ১৮৬৪ সালে চিঠি লেখেন।
৩.মাইকেল মধুসূদন দত্ত কোন্ কোন্ বিদেশি ভাষা রপ্ত করেছিলেন ?
উত্তরঃ বিদ্যাসাগরকে লেখা চিঠি অনুসারে মধুসূদন ফরাসি, ইতালীয় ভাষা প্রায় রপ্ত করেছিলেন, এরই সঙ্গে জার্মান ভাষাও রপ্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
৪. বিদ্যাসাগরকে নিয়ে লেখা মধুসূদনের একটি সনেটের উল্লেখ করাে।
উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে লেখা মধুসূদনের সনেট হল ‘পন্ডিতপ্রবর শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।’
৫. মধুসূদন কত খ্রিস্টাব্দে আইন পড়তে ইংল্যান্ডে যান?
উত্তরঃ মধুসূদন ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে আইন পড়তে ইংল্যান্ডে যান৷
৬. “বাঘের বিক্রম সম মাঘের হিমানী”— উক্তিটির মূল রচয়িতা কে?
উত্তরঃ উল্লিখিত উক্তিটির মূল রচয়িতা হলেন ভারতচন্দ্র রায়।
৭. বিদ্যাসাগর মধুসূদনকে বারংবার সাহায্য করেছেন— এমনই একটি ঘটনার উল্লেখ করাে।
উত্তরঃ ফ্রান্সের ভার্সাই শহরে থাকাকালীন মধুসূদন দত্ত চরম আর্থিক সংকটৈ পড়েন, সে সময় বিদ্যাসাগর তাঁকে টাকা পাঠিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
৮. মধুসূদন ইউরােপের শীত সম্বন্ধে কী জানিয়েছেন?
উত্তরঃ শরৎকাল হওয়া সত্ত্বেও পত্র লেখক কে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে রাখতে হয়েছে এবং তিনি গায়ে অনেক গরম জামা পরে আছেন। আমাদের দেশের সবচেয়ে ঠান্ডা দিনের থেকেও ওখানে ছয় গুণ বেশি ঠান্ডা।
৯. মধুসূদন দত্ত কোন জাহাজে চড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত বন্ধু গৌর দাসকে লেখা চিঠিতে ‘সীলোন’ নামক জাহাজে চলে যাওয়ার কথা বলেছিলেন।
১০. মধুসূদন দত্ত দ্বিতীয় পত্রে কাকে প্রিয় পুরাতন বন্ধু বলে সম্বোধন করেছেন ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত দ্বিতীয় পত্রের শুরুতে গৌরদাস বসাককে আমার প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু বলে সম্বোধন করেছেন।
১১. দ্বিতীয় চিঠি লেখার আগের দিন মধুসূদন দত্ত কোথায় ছিলেন ?
উত্তরঃ দ্বিতীয় চিঠি লেখার আগের দিন মধুসূদন দত্ত মলটা নামক দেশে ছিলেন।
১২. মাইকেল কোন পত্রিকায় তার সমুদ্রযাত্রার এক সুদীর্ঘ ও বিস্তারিত বিবরণ লেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ?
উত্তরঃ মাইকেল ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ড’ নামক পত্রিকায় তাঁর সমুদ্রযাত্রার এক সুদীর্ঘ ও বিস্তারিত বিবরণ লেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
১৩. মধুসূদনের দ্বিতীয় চিঠিতে আমাদের দেশের কোন নদীর উল্লেখ আছে ?
উত্তরঃ মধুসূদনের দ্বিতীয় চিঠিতে আমাদের দেশের হুগলি নদীর উল্লেখ আছে।
১৪. ‘এই কাব্য অদ্ভুত রকমের জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।’- কোন কাব্যের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের কথা বলা হয়েছে।
১৫.মাইকেল মধুসূদন দত্ত কাকে স্বর্গীয় কবি আখ্যা দিয়েছেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত মিল্টনকে স্বর্গীয় কবি আখ্যা দিয়েছেন।
১৬. মাইকেল মধুসূদন দত্ত যে তিনজন ব্যক্তি কে চিঠি লিখেছিলেন তাদের প্রত্যেকের পুরো নাম লেখ।
উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, গৌরদাস বসাক ও রাজনারায়ণ বসু।
১৭. ‘সীলোন’ জাহাজে চেপে মধুসূদন দত্ত কোথায় চলেছেন ?
উত্তরঃ সিলন নামক জাহাজে চেপে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘লন্ডন’ চলেছেন।