চিঠি প্রবন্ধ স্বামী বিবেকানন্দ নবম শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর | Chithi Probondher Question Answer Class 9 Bengali wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

চিঠি প্রবন্ধ স্বামী বিবেকানন্দ নবম শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর | Chithi Probondher Question Answer Class 9 Bengali wbbse

সাহিত্য সঞ্চয়ন
নবম শ্রেণি বাংলা (প্রথম ভাষা)

নবম শ্রেণি বাংলা চিঠি প্রবন্ধ স্বামী বিবেকানন্দ প্রশ্ন উত্তর | Class 9 Bengali Chithi Probondher Question Answer wbbse

নবম শ্রেণির বাংলা চিঠি প্রবন্ধ (স্বামী বিবেকানন্দ) লেখক পরিচিতি, উৎস, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, বহু বিকল্পীয়, অতি সংক্ষিপ্ত, ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | West Bengal Class 9 Bengali Chithi Probondher Question Answer wbbse

1. নবম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. নবম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

নবম শ্রেণির বাংলা চিঠি প্রবন্ধ (স্বামী বিবেকানন্দ) লেখক পরিচিতি, উৎস, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, বহু বিকল্পীয়, অতি সংক্ষিপ্ত, ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | West Bengal Class 9 Bengali Chithi Probondher Question Answer wbbse

লেখক পরিচিতিঃ স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩ – ১৯০২) : বিবেকানন্দের বাল্যনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। জন্ম কলকাতার শিমুলিয়ায়। পিতা বিশ্বনাথ দত্ত। লেখাপড়া করেছেন মেট্রোপলিটান ইন্সটিটিউশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইন্সটিটিউশনে। কিছুকাল মেট্রোপলিটান স্কুলে শিক্ষকতাও করেন। শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে মানব সেবার দীক্ষা নিয়ে ১৮৮৬ খ্রি: বরানগরে মঠ স্থাপন করে বিবেকানন্দ নাম গ্রহণ করেন। পরিব্রাজক হিসেবে সারা ভারত ভ্রমণ করেন। ১৮৯৩ খ্রি: শিকাগো ধর্মমহাসভায় যোগদানের জন্য আমেরিকা যান। ১৮৯৭ খ্রি: রামকৃষ্ণ মিশন ও ১৮৯৯ খ্রি: বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলায় উদ্বোধন ও ইংরেজিতে প্রবুদ্ধ ভারত নামে দুটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে- পরিব্রাজক, ভাববার কথা, বর্তমান ভারত, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য প্রভৃতি। সাহিত্যে বাংলা কথ্য ভাষার অন্যতম প্রচারক হিসেবে স্বামী বিবেকানন্দের অবদান অনস্বীকার্য। পাঠ্য চিঠিটির উৎস: পত্রাবলী- স্বামী বিবেকানন্দ। প্রকাশক-উদ্বোধন কার্যালয়।

মূলবিষয়ঃ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা চিঠি প্রবন্ধটি একটি অসামান্য রচনা। এই রচনায় তিনি চিঠির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, চিঠি হল মানুষের মনের ভাব প্রকাশের একটি মাধ্যম। চিঠির মাধ্যমে আমরা আমাদের আবেগ, অনুভূতি, স্নেহ, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, সহানুভূতি ইত্যাদি প্রকাশ করতে পারি। চিঠির মাধ্যমে আমরা দূরবর্তী প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারি। চিঠি আমাদের মনকে প্রশান্ত করে এবং আমাদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।

উৎসঃ পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধটি স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা গ্রন্থের সপ্তম খণ্ডে (তৃতীয় সংস্করণ, আগস্ট ১৯৭৩) আছে। এই গ্রন্থের এটি ৩৬০তম চিঠি।
উদ্‌বোধন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত পত্রাবলী- স্বামী বিবেকানন্দ গ্রন্থের ৫৮৫ পৃষ্ঠায় পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধটি স্বামীজি ইংরেজি ভাষায় লিখেছিলেন। তাঁর ইংরেজি চিঠিগুলির আবিষ্কারক মেরি লুই বার্ক। কমপ্লিট ওয়ার্কস অব স্বামী বিবেকানন্দ বইয়ের অষ্টম খণ্ডে মূল ইংরেজি চিঠিটি পাওয়া যায়।

বিষয়সংক্ষেপঃ ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই ভারতের আলমোড়া থেকে মিস মার্গারেট নোব্‌ল্‌কে লেখা চিঠিতে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁকে ভারতবর্ষে গঠনমূলক কাজ করতে আসার জন্য স্বাগত জানান। এর পাশাপাশি ভারতবর্ষের প্রাকৃতিক ও সামাজিক প্রতিকূলতা, শ্বেতাঙ্গদের প্রতি ভারতীয়দের মনোভাব, ভারতীয়দের প্রতি শ্বেতাঙ্গদের মনোভাব কেমন তাও তিনি জানিয়েছেন। প্রসঙ্গক্রমে এদেশে কাজ করতে আসার পর মিস নোব্‌লের কর্মপ্রণালী কেমন হবে সে বিষয়েও চিঠিতে আলোকপাত করেছেন স্বামীজি।

স্টার্ডি সাহেবের চিঠি পড়ে স্বামীজি জেনেছেন মিস নোব্‌ল্‌ ভারতে আসতে এবং ভারতবর্ষের পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখতে দৃঢ়সংকল্প। এ ছাড়াও স্বামীজি মিস মুলারের কাছে নোব্‌লের সম্পর্কে যা শুনেছেন, তাতে তাঁর মনে হয়েছে সমগ্র বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মিস নোব্‌ল্‌কে চিঠি লেখাই শ্রেয়। স্বামীজির দৃঢ়বিশ্বাস ভারতের কাজে মিস নোব্‌লের এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে। ভারতবর্ষের নারীসমাজের উন্নতির জন্য যেরূপ নারীর প্রয়োজন, মিস নোব্‌লের উপস্থিতি সেই প্রয়োজন মেটাবে বলে তিনি আশা করেন। মিস নোব্‌লের শিক্ষা, তাঁর ঐকান্তিকতা, পবিত্র মনোভাব, অসীম ভালোবাসা এবং চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং সর্বোপরি তাঁর ধমনিতে বয়ে যাওয়া কেলটিক রক্তের জন্য তাঁকেই বিশেষ প্রয়োজন বলে স্বামীজি মনে করেন।

এদেশে কাজের জন্য মিস নোব্‌ল্‌ এসে পৌঁছোনোর আগেই স্বামীজি তাঁকে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি জানিয়েছেন। স্বামীজি তাঁকে এ কথাও জানিয়েছেন যে তিনি ভারতবর্ষে নিজের প্রভাব অনুযায়ী সবরকমভাবে নোব্‌ল্‌কে সাহায্য করবেন। কাজ শুরু করার আগে তিনি সে বিষয়ে মিস নোব্‌ল্‌কে গভীরভাবে চিন্তা করার কথা জানিয়েছেন। একইসাথে স্বামীজি মিস নোব্‌ল্‌কে লিখেছেন যদি মিস নোব্‌ল্‌ তাঁর কাজে ব্যর্থ হন কিংবা কাজে কখনও তাঁর বিরক্তি আসে, তাহলেও তিনি সবসময় স্বামীজিকে তাঁর পাশেই পাবেন।

প্রসঙ্গত স্বামীজি নোব্‌ল্‌কে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অর্থাৎ স্বাবলম্বী হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এদেশে এসে যেন মিস নোব্‌ল্‌ কখনোই মিস মুলার কিংবা অন্য কারও আশ্রয় গ্রহণ না করেন—সে বিষয়ে তাঁকে সতর্কও করেছেন স্বামীজি। মিস মুলারের মনোভাবের সমালোচনা করে স্বামীজি জানিয়েছেন দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারণা ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মাথায় ঢুকেছে যে, তিনি আজন্ম নেত্রী আর দুনিয়াকে ওলটপালট করে দিতে টাকা ছাড়া অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই। এই মনোভাবের কারণেই তাঁর সঙ্গে মানিয়ে চলা অসম্ভব বলে স্বামীজি মনে করেন।

এরপর চিঠি প্রবন্ধতে উঠে এসেছে সেভিয়ার দম্পতির কথা। ভারতবর্ষে এসে নারীকুলের রত্ন, স্নেহময়ী মিসেস সেভিয়ার এবং মিস্টার সেভিয়ার ভারতীয়দের ঘৃণা না করে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু তাঁরা এখনও তাঁদের কাজের পদ্ধতি স্থির করতে পারেননি। মিস নোব্‌ল্‌ ভারতে এসে তাঁর কাজে এঁদের পাশে পেতে পারেন বলে স্বামীজি জানিয়েছেন। আমেরিকার সংবাদে স্বামীজি জেনেছেন যে তাঁর দুজন বন্ধু মিস ম্যাকলাউড এবং বস্টনের মিসেস বুল আসন্ন শরৎকালে ভারত পরিভ্রমণে আসবেন। যেহেতু তাঁরা ইউরোপ হয়েই ভারতবর্ষে আসবেন। সেহেতু স্বামীজি মিস নোব্‌ল্‌কে তাঁদের সঙ্গী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে তাঁর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ক্লান্তি দূর হতে পারে। শেষে স্বামীজি আবার মিস্টার স্টার্ডির চিঠির কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, তাঁর চিঠিটি অত্যন্ত শুষ্ক এবং প্রাণহীন। লন্ডনের কাজ ব্যর্থ হওয়ায় মিস্টার স্টাডি যে যথেষ্ট হতাশ, চিঠিটি পড়ে তা বুঝতে স্বামীজির অসুবিধা হয়নি। এরপর মিস নোব্‌ল্‌কে অনন্ত ভালোবাসা জানিয়ে স্বামীজি তাঁর চিঠি শেষ করেছেন।

নামকরণঃ মিস মার্গারেট নোব্‌ল্‌ ভারতবর্ষে সমাজসেবামূলক এবং গঠনমূলক কাজ করতে আসবেন, এ কথা জেনে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি নোব্‌ল্‌কে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশনা দেন। এদেশে তাঁর কাজের ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা, আবহাওয়ার বিরূপতা, সুখস্বাচ্ছন্দ্যের অভাব ইত্যাদি যে বাধা হয়ে উঠতে পারে বিবেকানন্দ সে বিষয়ে মিস নোব্‌ল্‌কে সচেতন করেন। এদেশের মানুষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব ইত্যাদিও যে তাঁর কাজকে কঠিন করে তুলতে পারে সে-কথাও তিনি মিস নোব্‌লকে জানিয়ে রাখেন। তবে তিনি নিজে যে আমৃত্যু তাঁর পাশে থাকবেন সে- কথা জানাতেও বিবেকানন্দ দ্বিধা করেননি। ভারতে কাজের ক্ষেত্রে মিস নোব্‌লের যে নিজের মতো করে পরিকল্পনা করা এবং কারও দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া উচিত সে-কথা জানিয়েও বিবেকানন্দ তাঁকে সাবধান করে দিয়েছেন। এদেশের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হওয়া বিভিন্ন ইউরোপীয় নারীদের সম্পর্কে বিবেকানন্দ নিজের অভিমত প্রকাশ করেন। ভারতের মতো দেশে, বিশেষত নারীদের উন্নতির জন্য মিস মার্গারেট নোব্‌লের মতো মানুষের যে বিশেষ প্রয়োজন সে-কথা তাঁর চিঠি থেকে জানা যায়। তাঁর শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, ভালোবাসা, দৃঢ়তা ইত্যাদি তাঁকে যেভাবে গড়ে তুলেছে, ঠিক সেরকম নারী-ই যে ভারতের দরকার তাও বিবেকানন্দ স্পষ্ট করে বলেছেন। এইভাবে মিস নোব্‌লকে লেখা চিঠির মধ্য দিয়ে গোটা রচনাটিতে স্বামীজি নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাই আঙ্গিকের দিক থেকে রচনাটির চিঠি নামকরণ যথাযথ হয়েছে বলা যায়।

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর চিঠি প্রবন্ধ (স্বামী বিবেকানন্দ) নবম শ্রেণি বাংলা | MCQ Question Answer Class 9 Bengali wbbse

• ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১

১. ‘কাল তার উত্তর দিয়েছি’– কীসের উত্তর দিয়েছেন ?
(ক) মি. স্টার্ডির চিঠির।
(খ) মিসেস সেভিয়ারের চিঠির
(গ) ভগিনী নিবেদিতার চিঠির
(ঘ) মিস মুলারের চিঠির

উত্তরঃ (ক) মি. স্টার্ডির চিঠির।

২. “শিক্ষার প্রচলনের জন্য কলকাতার বাগবাজারে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন।”– বিদ্যালয়টির নাম —
(ক) বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুল
(খ) বাগবাজার বালিকা বিদ্যালয়
(গ) ভগিনী নিবেদিতা বিদ্যালয়
(ঘ) নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়

উত্তরঃ (ঘ) নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়

৩. ‘The Master as I saw him’, ‘Web of Indian Life’ গ্ৰন্থ দুটির রচয়িতা কে ?
(ক) স্বামী বিবেকানন্দ
(খ) মিস ম্যাকলাউড
(গ) মিসেস বুল
(ঘ) মিস নোবল

উত্তরঃ (ঘ) মিস নোবল

৪. ‘একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন।’– এখানে লেখক ‘সিংহী’ বলতে বুঝিয়েছেন—
(ক) শিক্ষিকাকে
(খ) মিস নোব্‌ল্‌কে
(গ) নেত্রীকে
(ঘ) মিসেস সেভিয়ারকে

উত্তরঃ (খ) মিস নোব্‌ল্‌কে

৫. “ভয়েই হোক বা ঘৃণাতেই হোক তারা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে”– কারা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে ?
(ক) ইউরোপিয়ানরা
(খ) ভারতীয়রা
(গ) আমেরিকানরা
(ঘ) বিবেকানন্দের প্রবাসী বন্ধুরা

উত্তরঃ (খ) ভারতীয়রা।

৬. “সর্বদাই আগুনের হলকা চলছে।”– আগুনের হলকা চলছে—
(ক) পূর্বাঞ্চলে
(খ) পশ্চিমাঞ্চলে
(গ) উত্তরাখলে
(ঘ) দক্ষিণাঞ্চলে

উত্তরঃ (ঘ) দক্ষিণাঞ্চলে

৭. “রামকৃষ্ণ সংঘে ‘মাদার’ নামে পরিচিত ছিলেন”– ‘মাদার’ নামে পরিচিত ছিলেন—
(ক) মিস ম্যাকলাউড
(খ) ভগিনী নিবেদিতা
(গ) মিসেস সেভিয়ার
(ঘ) মাদার টেরেসা

উত্তরঃ (গ) মিসেস সেভিয়ার

৮. ‘মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন—
(ক) মিস ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল
(খ) মিস মুলার ও মিসেস বুল
(গ) মিসেস সেভিয়ার
(ঘ) মিস ম্যাকলাউড ও মি. ই টি স্টার্ডি

উত্তরঃ (গ) মিসেস সেভিয়ার

৯. স্বামীজি ‘জো’ নামে ডাকতেন—
(ক) মিস ম্যাকলাউডকে
(খ) মিসেস বুলকে
(গ) মিসেস মুলারকে
(ঘ) মিস নোবলকে

উত্তরঃ (ক) মিস ম্যাকলাউডকে

১০. মিসেস বুল যেখানকার বাসিন্দা—
(ক) লন্ডনের
(খ) নিউইয়র্কের
(গ) বস্টনের
(ঘ) প্যারিসের

উত্তরঃ (গ) বস্টনের

১১. “সেই পারি ফ্যাশনের পোশাক পরিহিতা মহিলাটি” হলেন—
(ক) মিসেস সেভিয়ার
(খ) মিস বুল
(গ) মার্গারেট নোবল
(ঘ) মিস ম্যাকলাউড

উত্তরঃ (ঘ) মিস ম্যাকলাউড

১২. মিসেস বুলের বয়স প্রায়—
(ক) চল্লিশ বছর
(খ) সত্তর বছর
(গ) পঞ্চাশ বছর
(ঘ) পঞ্চান্ন বছর

উত্তরঃ (গ) পঞ্চাশ বছর

১৩. ‘একখানা চিঠি কাল পেয়েছি’– যাঁর চিঠি পাওয়ার কথা তিনি হলেন—
(ক) মিসেস সেভিয়ার
(খ) মিঃ ই টি স্টার্ডি
(গ) মিস মুলার
(ঘ) মিস নোব্‌ল

উত্তরঃ (খ) মিঃ ই টি স্টার্ডি

১৪. সর্বোপরি তোমার ধমনিতে প্রবাহিত—
(ক) ভারতীয় রক্ত
(খ) ইংরেজ রক্ত
(গ) কেল্টিক রক্ত
(ঘ) মিশরীয় রক্ত

উত্তরঃ (গ) কেল্টিক রক্ত

১৫. “তিনি আমেরিকায় আমার বিশেষ উপকারী বন্ধু ছিলেন”– এখানে উপকারী বন্ধু হলেন–
(ক) মিসেস বুল
(খ) মিসেস সেভিয়ার
(গ) মিস ম্যাকলাউড
(ঘ) মার্গারেট নোব্‌ল

উত্তরঃ (ক) মিসেস বুল

১৬. “কর্মে ঝাঁপ দেবার পূর্বে বিশেষভাবে চিন্তা করো”– কার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) নিবেদিতা
(খ) মিসেস সেভিয়ার
(গ) মিসেস বুল
(ঘ) মি. স্টার্ডি

উত্তরঃ (ক) নিবেদিতা

১৭. স্বামী বিবেকানন্দ যাকে উদ্দেশ্য করে এই চিঠিটি লিখেছিলেন তিনি হলেন—
(ক) মি. ই টি স্টার্ডি
(খ) মিস নোবল
(গ) মিসেস সেভিয়ার
(ঘ) মিসেস বুল

উত্তরঃ (খ) মিস নোবল

১৮. স্বামীজি মিস নোব্‌লকে কোথা থেকে চিঠি লিখেছিলেন—
(ক) আলমোড়া
(খ) সিকিম
(গ) দার্জিলিং
(ঘ) কার্সিয়াং

উত্তরঃ (ক) আলমোড়া

১৯. ‘কল্যাণীয়া মিস’ বলে স্বামী বিবেকানন্দ সম্বোধন করেছেন —
(ক) স্টার্ডিকে
(খ) মুলারকে
(গ) ম্যাকলাউডকে
(ঘ) নোবলকে

উত্তরঃ (ঘ) নোবলকে

২০. মিস নোবল্-এর সম্পূর্ণ নাম কী ?
(ক) মিস হেনরিয়েটা নোব্‌ল্
(খ) মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল্
(গ) মিস জোসেফাইন নোবল
(ঘ) মিস জোসেফাইন মার্গারেট নোবল

উত্তরঃ (খ) মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল্

২১. মার্গারেট নোবল্ ভারতবর্ষে কী নামে পরিচিত ?
(ক) ভগিনী নিবেদিতা
(খ) মিস নোবল
(গ) নিবেদিতা
(ঘ) মিস মার্গারেট নোবল

উত্তরঃ (ক) ভগিনী নিবেদিতা

২২. ইংল্যান্ডে বেদান্ত প্রচারের কাজে স্বামী বিবেকানন্দকে বিশেষ সাহায্য করেছিল–
(ক) মিস্টার ই টি স্টার্ডি
(খ) মিস হেনরিয়েটা মুলার
(গ) ক্যাপ্টেন যে এইচ সেভিয়ার
(ঘ) মিসেস সারা বুল

উত্তরঃ (ক) মিস্টার ই টি স্টার্ডি

২৩. স্বামী বিবেকানন্দ পাঠ্য ‘চিঠি’ টি লিখেছেন –
(ক) মাদ্রাজ থেকে
(খ) শিলং থেকে
(গ) আলমোড়া থেকে
(ঘ) আমেরিকা থেকে

উত্তরঃ (গ) আলমোড়া থেকে

২৪. ‘নারীকূলের রত্নবিশেষ; হলেন–
(ক) মিস মুলার
(খ) মিসেস সেভিয়ার
(গ) মিস নোব্‌ল্‌
(ঘ) মিসেস বুল।

উত্তরঃ (খ) মিসেস সেভিয়ার

২৫. … তুমি ঠিক সেইরূপ নারী–
(ক) যে বিদ্রোহিণী
(খ) যে শান্ত
(গ) যাকে আজ প্রয়োজন
(ঘ) যে সরল প্রকৃতির

উত্তরঃ (গ) যাকে আজ প্রয়োজন

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর চিঠি প্রবন্ধ (স্বামী বিবেকানন্দ) নবম শ্রেণি বাংলা | Very Short Type Question Answer Class 9 Bengali wbbse

• কম-বেশী ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১

১. ‘একখানা চিঠি কাল পেয়েছি’– এখানে স্বামী বিবেকানন্দ কার চিঠি পাওয়ার কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ মি ই টি স্টার্ডির কাছ থেকে চিঠি পেয়েছিলেন।

২. ‘কল্যাণীয়া মিস নোবেল’ বলে সম্বোধন করে স্বামী বিবেকানন্দ যাকে চিঠি লিখেছেন তার সম্পূর্ণ নাম কী ?

উত্তরঃ কল্যাণীয়া মিস নোবেল বলে যাকে সম্বোধন করা হয়েছে, তার সম্পূর্ণ নাম মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল।

৩. কোথা থেকে স্বামীজি মিস নোবেলকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন ?

উত্তরঃ ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আলমোড়া অঞ্চল থেকে স্বামী বিবেকনন্দ মিস নোবেলকে চিঠি লিখেছিলেন।

৪. “সর্বোপরি তোমার ধমনীতে প্রবাহিত রক্ত”- এখানে কোন রক্তের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ এখানে মিস নোবেলের ধমনীতে কেল্টিক জাতির রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে বলা হয়েছে।

৫. “স্টার্ডির একখানি চিঠি কাল পেয়েছি।”- স্টার্ডি কে ?

উত্তরঃ মি. ই টি স্টার্ডি ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের একজন ইংরেজ ভক্ত, যিনি স্বামীজিকে ইংল্যান্ডে বেদান্ত প্রচারে সহায়তা করেন।

৬. “তিনি আমেরিকায় আমার বিশেষ উপকারী বন্ধু ছিলেন”– এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ এখানে মিসেস বুলের কথা বলেছেন।

৭. “… তা তুমি ধারণা করতে পারবে না।”- কী ধারণা করতে না পারার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ স্বামীজি মিস নোবেলকে ভারতবর্ষের মানুষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব প্রভৃতির ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা করতে না পারার কথা বলেছেন।

৮. ‘কর্মে ঝাঁপ দেবার পুর্বে বিশেষ ভাবে চিন্তা করো’- কাকে কী চিন্তা করার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ এখানে স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে বিশেষ করে কর্মের প্রতিকূল দিকগুলির কথা চিন্তা করে দেখতে বলা হয়েছে।

৯. “… এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে …”- বিশ্বাসটি কী ?

উত্তরঃ স্বামীজির দৃঢ়বিশ্বাস হয়েছে যে, ভারতের কাজে মিস নোবেলের এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।

১০. ভারতের নারীসমাজের উন্নতির জন্য কেমন ব্যক্তির প্রয়োজন ?

উত্তরঃ ভারতের নারীসমাজের উন্নতির জন্য একজন প্রকৃত সিংহীর মতো তেজস্বিনী নারীর প্রয়োজন।

১১. “… তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন।”- মিস নোবেলের মধ্যে কোন্ গুণাবলী লক্ষ করে স্বামীজি এ কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ মিস নোবেলের শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা, দৃঢ়তা ইত্যাদি গুণ লক্ষ করে স্বামীজি এ কথা বলেছেন।

১২. “কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।”- কোন্ কাজে বিঘ্ন আছে ?

উত্তরঃ ভারতবর্ষের, বিশেষত ভারতের নারীসমাজের সার্বিক উন্নয়নের কাজে প্রচুর বিঘ্ন আছে।

১৩. “কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।”– বিঘ্নগুলি কী কী ?

উত্তরঃ ভারতবর্ষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব, জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা ইত্যাদি দেশের উন্নতির কাজে বিঘ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে।

১৪. “সরাসরি তোমাকে লেখা ভালো”– এখানে তোমাকে বলতে স্বামীজী কাকে বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ এখানে তোমাকে বলতে স্বামীজী মিস নোবেলের কথা বলেছেন।

১৫. মিস নোবেল এদেশে এলে নিজেকে কীভাবে দেখতে পাবেন ?

উত্তরঃ মিস নোবেল এদেশে এলে নিজেকে অসংখ্য অর্ধ-উলঙ্গ নরনারীতে পরিবেষ্টিত অবস্থায় দেখতে পাবেন।

১৬. শ্বেতাঙ্গরা ভারতীয়দের প্রতি কীরূপ মনোভাব পোষণ করে ?

উত্তরঃ শ্বেতাঙ্গরা ভারতীয়দের প্রতি অত্যন্ত ঘৃণার মনোভাব পোষণ করে।

১৭. মিসেস বুলের বয়স কত ?

উত্তরঃ মিসেস বুলের বয়স প্রায় পঞ্চাশ বছর।

১৮. ‘চিঠি’ গদ্যাংশে স্বামীজি ভারতবর্ষের জলবায়ু কেমন বলে বর্ণনা করেছেন ?

উত্তরঃ ভারতবর্ষের জলবায়ু অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান। এদেশের শীত ইউরোপের গ্রীষ্মের মতো আর দক্ষিণাঞ্চলে সর্বদাই আগুনের হলকা প্রবাহিত হয়।

১৯. “.. তবু আমার যেটুকু প্রভাব আছে …”- সেই প্রভাব দিয়ে বক্তা কী করবেন বলেছেন ?

উত্তরঃ বক্তার যেটুকু প্রভাব আছে, তা দিয়ে তিনি ভারতীয়দের উন্নতির কাজে মিস নোবেলকে সাহায্য করবেন বলেছেন।

২০. কর্মে ঝাপ দেওয়ার পরে সাফল্যের পাশাপাশি আর কী কী ঘটার সম্ভাবনা থাকতে পারে ?

উত্তরঃ মানবসেবার কর্মে ঝাপ দেওয়ার পর সে কাজে বিফল হওয়ার এবং কর্মে বিরক্তি আসার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

২১. “মরদ কি বাত হাতি কা দাত”— প্রবাদটির অর্থ লেখো।

উত্তরঃ হাতির দাঁত যেমন একবার বেরোলে আর ভিতরে যায় না তেমনি যথার্থ পুরুষের প্রতিশ্রুতির কখনও নড়চড় হয় না।

২২. “এই ধারণা ছেলেবেলা থেকেই তার মাথায় ঢুকেছে …”– কার মাথায় কোন্ ধারণা ঢুকেছে ?

উত্তরঃ মিস মুলারের বদ্ধমূল ধারণা যে তিনি আজন্ম নেত্রী এবং টাকা দিয়ে গোটা পৃথিবীকেই ওলট-পালট করা যায়।

২৩. “তিনি আজন্ম নেত্রী!”– কার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ এ কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ মিস মুলার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ এ কথা বলেছেন যে, তিনি নিজেকে আজন্ম নেত্রী বলে মনে করেন।

২৪. “তার বর্তমান সংকল্প এই যে”- কোন্ সংকল্পের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ এখানে মিসেস মুলারের কলকাতা তার নিজের এবং ইউরোপ থেকে আসা বন্ধুদের জন্য বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

২৫. স্বামী বিবেকানন্দ মিসেস সেভিয়ারকে কোন্ অভিধায় ভূষিত করেছেন ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ মিসেস সেভিয়ারকে ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২৬. ‘…তার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।”- কার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় ?

উত্তরঃ যে ব্যক্তি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন অর্থাৎ স্বনির্ভর হতে পারেন, তার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।

২৭. সেভিয়ার দম্পতি কেমন মানুষ ?

উত্তরঃ সেভিয়ার দম্পতি ভারতবর্ষের মানুষকে ঘৃণা করেন না এবং ভারতীয়দের ওপর কর্তৃত্ব ফলাতে তারা এদেশে আসেননি।

২৮. “আমেরিকার সংবাদে জানলাম যে…”– বক্তা কী জানলেন ?

উত্তরঃ বক্তা স্বামীজি জেনেছেন যে তার দুই বন্ধু মিস ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল এই শরৎকালেই ভারতভ্রমণে আসছেন।

২৯. ‘সেই পারি-ফ্যাশনের পোশাক’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উত্তরঃ পারি ফ্যাশনের পোশাক বলতে ফ্রান্সের প্যারিস শহরের ফ্যাশন অনুযায়ী তৈরি পোশাককে বোঝানো হয়েছে।

৩০. “… আমার পরামর্শ এই যে…”- স্বামীজি মিস নোবেলকে কী পরামর্শ দিয়েছেন ?

উত্তরঃ স্বামীজি পরামর্শ দিয়েছেন, মিস নোবেল যেন মিস ম্যাকলাউড ও মিসেস বুলের সঙ্গে এদেশে আসেন।

৩১. মি. স্টাডির লেখা চিঠিটি কেমন ছিল ?

উত্তরঃ মি. স্টার্ডির লেখা চিঠিটি ছিল বড়ো শুষ্ক, প্রাণহীন এবং হতাশাপূর্ণ।

৩২. মি. স্টার্ডি হতাশ হয়েছিলেন কেন ?

উত্তরঃ লন্ডনের কাজ পন্ড হওয়ায় মি. স্টার্ডি হতাশ হয়েছেন বলে তার চিঠিতে সেই হতাশা ফুটে উঠেছে।

৩৩. ভগিনী নিবেদিতার প্রকৃত নাম কী ?

উত্তরঃ ভগিনী নিবেদিতার প্রকৃত নাম মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল।

৩৪. মিস নোবেলের লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তরঃ মিস নোবেলের লেখা একটি বই The Master as I saw him.

৩৫. ‘নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়’ কে কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?

উত্তরঃ ভারতীয় আদর্শে স্ত্রীশিক্ষা প্রচলনের উদ্দেশ্যে মিস নোবেল (ভগিনী নিবেদিতা) নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।

৩৬. ধীরামাতা কে ?

উত্তরঃ স্বামীজীর শিষ্যা মিসেস সারা বুলকে তিনি অনেক চিঠিতে ধীরামাতা নামে সম্বোধন করেছেন।

৩৭. মিসেস সেভিয়ারের শ্রেষ্ঠ কীর্তি কী‌ ?

উত্তরঃ মিসেস সেভিয়ারের শ্রেষ্ঠ কীর্তি হল স্বামীজির ইচ্ছায় বেদান্ত প্রচারের উদ্দেশ্যে ‘মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করা।

৩৮. মিস মুলারের সম্পূর্ণ নাম কী ?

উত্তরঃ মিস মুলারের সম্পূর্ণ নাম মিস হেনরিয়েটা মুলার।

ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর চিঠি প্রবন্ধ (স্বামী বিবেকানন্দ) নবম শ্রেণি বাংলা | Descriptive Short Type Question Answer Class 9 Bengali wbbse

• কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩

১. কোন বিশেষ প্রয়োজনে স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দের ইংরেজ ভক্ত মিস্টার স্টার্ডির চিঠি পড়ে তিনি জানতে পেরেছেন, মিস নোবেল ভারতে এসে ভারতবাসীর সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে আগ্রহী। তাই স্বামীজী এই চিঠির মাধ্যমে তাকে সব দিক বিবেচনা করার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। তবে তিনি তার মনের আবেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে তার মতো নারীর খুব প্রয়োজন ভারতবর্ষকে উদ্ধার করার জন্য। তার ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন।

২. একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন।”- কে কাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছেন ? বক্তা তাকে ‘প্রকৃত সিংহী’ বলেছেন কেন ?

উত্তরঃ ‘চিঠি’ রচনার উল্লিখিত অংশে স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে ‘প্রকৃত সিংহী’ বলেছেন।

বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবে দেখেছেন। তার মধ্যে রয়েছে নেতৃত্বদানের ক্ষমতা। মিস নোবেল শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা, দৃঢ়তাসম্পন্ন এক ব্যক্তিত্বময়ী নারী এবং তার ধমনিতে প্রবাহিত কেল্টিক রক্তের জন্য তিনি অনন্যা। তাই বিবেকানন্দ ভেবেছেন, তাকে এদেশের প্রয়োজন। এইসব গুণের কারণেই তিনি সিংহীর সমকক্ষ হয়ে উঠেছেন।

৩. “কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।”- কোন্ কোন্ বিয়ের কথা বলা হয়েছে লেখো ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে যেসব বিঘ্নের কথা বলেছেন, তারমধ্যে প্রথমেই উল্লেখ্য এদেশের মানুষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব। মানুষের দারিদ্র্য একটা প্রধান বাধা! জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা তাদের আলাদা করে রেখেছে। ভয় অথবা ঘৃণা যে কারণেই হোক, তারা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে। তাই মিস নোবেলকে তারা সন্দেহ করবে। আবার ভারতীয়দের সাহায্য করতে চাইলে শ্বেতাঙ্গরা তাকে সন্দেহের চোখে দেখবে। এ ছাড়া গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ুতে বাস করা তার মতো শীতপ্রধান দেশের মানুষের পক্ষে কষ্টকর। শহরের বাইরে সুখস্বাচ্ছন্দ্যের অভাবও মিস নোবেল বোধ করবেন।

৪. ‘মরদ কী বাত, হাতি কী দাঁত’ কথাটি কোন অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে ?

উত্তরঃ এই প্রবাদটি স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে লেখা তার চিঠিতে তার চরিত্রের কাঠিন্য বোঝাতে ব্যবহার করেছেন। এই প্রবাদটির অর্থ হল হাতির দাঁত একবার গজালে যেমন আর ভেতরে প্রবেশ করে না, তেমনি পুরুষ বা মরদ একবার কোনো কথা দিলে তা থেকে আর পিছপা হন না। স্বামী বিবেকানন্দ তার চিঠিতে প্রথমেই বলেছেন যে তিনি মিস নোবেলকে সর্বদাই সাহায্য করবেন। কিন্তু ভারতে এসে নানা প্রতিকূলতার সামনে পড়ে যদি তিনি বিরক্ত হন এবং এই কাজে অসফল হন তা স্বত্ত্বেও স্বামীজী তার পাশে থাকবেন ও তাকে পূর্ববত স্নেহ করবেন। কারণ তিনি কথা দিয়েছেন ও তার কথায় কোনো নড়চড় নেই।

৫. তোমাকে একটু সাবধান করা দরকার…” – কাকে, কেন সাবধান করা দরকার ? কী বিষয়ে সাবধান করা দরকার ?

উত্তরঃ মিস নোবেল ভারতবর্ষে এসে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় স্বামী বিবেকানন্দ তাকে কিছু বিষয়ে সাবধান করা দরকার বলে মনে করেছেন। এর কারণ হল, ভারতে এসে যে বৃহৎ ও মহৎ কর্মযজ্ঞে মিস নোবেল নামতে চলেছেন, তাতে তাকে অবশ্যই স্বনির্ভর হতে হবে। মিস মুলারের মত কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লে মার্গারেটের জনসেবার কাজটি বিঘ্নিত হবে। প্রধানত এ বিষয়েই স্বামীজি মিস নোবেলকে সাবধান করেছিলেন।

৬. “তার সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।”– কার সম্পর্কে কেন এ মন্তব্য করা হয়েছে ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে উদ্দেশ্য করে মিস্ মুলার সম্পর্কে মন্তব্যটি করেছেন। মিস মুলার, বিবেকানন্দের মতে, তার নিজের ভাবে চমৎকার মহিলা। কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই নিজেকে নেত্রী ভাবা এবং নিজের ক্ষমতায় অতিরিক্ত বিশ্বাস তাকে বিচ্ছিন্ন করে তুলেছে। তার মতে টাকার বিনিময়ে যে কোনো অসম্ভব কাজ করা সম্ভব। বিবেকানন্দের মনে হয়েছে যে মিস নোবেল অল্পদিনেই বুঝে নিতে পারবেন যে, মিস মুলারের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয় কারণ তার মেজাজ রুক্ষ, চিত্ত অস্থির।

৭. “তার বর্তমান সংকল্প এই যে..”– ‘তার’ বলতে কাকে বোঝানও হয়েছে ? তার বর্তমান সংকল্প কী লেখো।

উত্তরঃ ‘চিঠি’ রচনার উল্লিখিত অংশে ‘তার’ বলতে মিস মুলারের কথা বলা হয়েছে।

মিস মুলার, স্বামী বিবেকানন্দের একজন ভক্ত, যিনি নিজেকে ‘আজন্ম নেত্রী’ বলে মনে করতেন। তিনি সংকল্প করেছিলেন যে, কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেবেন। এই বাড়িটিতে তিনি, মিস নোবেল আর ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে যেসব বন্ধুদের আসার সম্ভাবনা আছে তারা থাকবেন বলে মিস মুলার ভেবেছিলেন।

৮. যারা এদেশীয়দের ঘৃণা করেন না”– ‘যারা’ কারা ? তাদের সম্পর্কে যা জান লেখো।

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ তার ‘চিঠি’ রচনার উল্লিখিত অংশে ‘যারা’ বলতে সেভিয়ার দম্পতির কথা বলেছেন।

মিস নোবেলের ভারতে আসার আগে বিবেকানন্দ অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে তাকে এদেশে আগত ইউরোপীয় বা অন্য বিদেশি যারা ভারতের জন্য কাজে উদ্যোগী তাদের সম্পর্কেও ধারণা দিতে চেয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন মিসেস সেভিয়ার এবং তার স্বামী ক্যাপটেন জে এইচ সেভিয়ার বেদান্ত প্রচারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং স্বামীজির ইচ্ছাতেই তারা ‘মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন। ইউরোপীয় হওয়া সত্ত্বেও এদেশের মানুষদের প্রতি তাদের কোনো ঘৃণার ভাব ছিল না। এদেশের মানুষদের ওপরে প্রভুত্ব করার কোনো চেষ্টাও তারা করতেন না।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর চিঠি প্রবন্ধ (স্বামী বিবেকানন্দ) নবম শ্রেণি বাংলা | Essay Type Question Answer Class 9 Bengali wbbse

• কমবেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ৫

১. পত্রসাহিত্য বলতে কী বোঝ ? পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধকে কী পত্রসাহিত্যের দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করা যায় ? যুক্তিসহ লেখো।

উত্তরঃ ব্যক্তিগত বা সাধারণ খবরাখবর, তথ্য ইত্যাদির গণ্ডি পেরিয়ে একটি চিঠি বা পত্রে যখন সমাজ, প্রকৃতি, কল্পনা ইত্যাদি প্রাধান্য পায় এবং তা সর্বজনীন হয়ে ওঠে তখন তা পত্রসাহিত্য হিসেবে বিবেচিত হয়। চিঠি প্রবন্ধের বিষয় যখন ব্যক্তিগত ভাবনা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে চিরন্তন সত্যকেও প্রকাশ করে তখন তা সাহিত্য হয়ে ওঠে।

পাঠ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধের পত্রসাহিত্য হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা আছে কী না, তার আমরা তুলে ধরবো। স্বামী বিবেকানন্দের বেশ কিছু চিঠি প্রবন্ধের সৃজনশীলতার গুণে সাহিত্য হয়ে উঠেছে। আলোচ্য চিঠি প্রবন্ধটি এমনই একটি দৃষ্টান্ত। এখানে ব্যক্তিগত তথ্যের চেয়ে বড়ো হয়ে উঠেছে লেখকের সমাজভাবনা এবং স্বদেশপ্রীতি। সাহিত্য সমাজের এবং মানুষের কথা বলে। স্বামীজি তৎকালীন ভারতের মানুষের দুর্দশায় ও নারীসমাজের লাঞ্ছনায় পীড়িত ছিলেন। তাই তিনি মিস নোব্‌ল্‌কে লেখেন, এদেশের কুসংস্কার, দুঃখ, দাসত্ব প্রভৃতি কী ধরনের, তা তুমি ধারণা করতে পারো না। জাতিবর্ণের বৈষম্য, অস্পৃশ্যতা, দারিদ্র্য, শ্বেতাঙ্গ ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার ইত্যাদি থেকে ভারতবাসীর মুক্তির পথ খুঁজেছেন স্বামীজি। বিশেষত ভারতের নারীসমাজের উন্নতির জন্য মিস নোব্‌লের মতো দৃঢ়চেতা, পবিত্র নারীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন তিনি। সাধারণ মানুষের মঙ্গল তথা মানবতার মুক্তিই যে তাঁর কাম্য তা ফুটে উঠেছে পাঠ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধ-তে। তাই এ চিঠি প্রবন্ধের বিষয়বস্তু সর্বজনীনতা ও সমাজভাবনার কারণে সাহিত্যের মর্যাদায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

২. স্বামী বিবেকানন্দ রচিত পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধকে ব্যক্তিগত পত্র না সামাজিক পত্র– কোন শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা যায় ?

উত্তরঃ পত্রের ধরন অনুযায়ী, বিষয়বস্তু অনুসারে চিঠি প্রবন্ধকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে প্রধান দুটি ভাগ হল ব্যক্তিগত পত্র ও সামাজিক পত্ৰ ৷ পাঠ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধটি একজন ব্যক্তি স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোব্‌লের উদ্দেশ্যে লিখেছেন। সেদিক থেকে এই চিঠি প্রবন্ধকে ব্যক্তিগত পত্র বলাই যায়। কিন্তু সব চিঠি প্রবন্ধই ব্যক্তির সঙ্গে কোনো-না-কোনোভাবে সম্পর্কিত। তবে স্বামীজির এই চিঠি প্রবন্ধটি ব্যক্তিগত স্তর অতিক্রম করে সামাজিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়েছে, কারণ এই চিঠিতে উনিশ শতকের ভারত ও তার দুর্দশাময় সমাজের চিত্র ফুটে উঠেছে। মানবসেবার বৃহত্তর স্বার্থে এ চিঠি প্রবন্ধ লিখিত, ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়। ভারতীয় সমাজে মানবসেবার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে মিস নোব্‌ল্‌ এদেশে আসতে চান। এ কথা জেনে স্বামীজি তাঁকে এদেশের সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতটি বোঝানোর জন্য এ চিঠি প্রবন্ধ লিখেছেন। ভারতীয়দের দাসত্ব, দুঃখদারিদ্র্য, কুসংস্কার, বর্ণবৈষম্য, অস্পৃশ্যতার কথা স্বামীজি মিস নোব্‌ল্‌কে জানিয়েছেন। শ্বেতাঙ্গদের প্রতি ভারতবাসীর মনোভাব, এখানকার আবহাওয়া ইত্যাদি সম্পর্কেও আগাম ধারণা দিতে চেয়েছেন তিনি। এ চিঠি প্রবন্ধের ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের কথা নেই, আছে ভারতীয়দের দুঃখ এবং দুঃখ থেকে মুক্তির পথ সন্ধানের প্রসঙ্গ। তাই আলোচ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধকে সামাজিক পত্ররূপে গ্রহণ করাই যথাযথ।

৩. পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধটিকে উনিশ শতকের ভারতের একটি ঐতিহাসিক ও সামাজিক দলিলরূপে গ্রহণ করা যায় কি না আলোচনা করো।

অথবা,

বিবেকানন্দের চিঠি প্রবন্ধটি উনিশ শতকে ভারতের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের এক ঐতিহাসিক ভাষ্য।— আলোচনা করো।

উত্তরঃ ঐতিহাসিক গুরুত্বঃ পাঠ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধের লেখক স্বামী বিবেকানন্দ এবং প্রাপক মিস নোব্‌ল্‌- উভয়েই ঐতিহাসিক ব্যক্তি। দুজনেই ভারতের ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছিলেন এবং মানবসভ্যতার ইতিহাসে অমূল্য অবদান রেখে গেছেন। অন্যদিকে, উনিশ শতকের শেষভাগে ভারতবাসীর জীবনযাত্রা, মানুষের বিশ্বাস-ধারণা, দুঃখ-বেদনা ইত্যাদির উল্লেখে একটি বিশেষ সময়ের পরিচয় আলোচ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধ থেকে পাওয়া যায়। তাই ‘চিঠি’ প্রবন্ধটিকে একটি ঐতিহাসিক দলিলরূপে গ্রহণ করা যায়।
অপরদিকে, যে দুর্দশাগ্রস্ত ভারতে মানবসেবার ব্রত নিয়ে মিস নোব্‌ল্‌ আসতে চান তার সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতটি এই চিঠি প্রবন্ধতে বর্ণিত হয়েছে। চিঠি প্রবন্ধটিতে স্বামীজি নোব্‌ল্‌কে জানিয়েছেন এদেশের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব প্রভৃতির শিকড় অনেক গভীরে গাঁথা। জাতি-বর্ণের বৈষম্য, অস্পৃশ্যতা ভারতীয় জনজীবনের অভিশাপ। অন্নবস্ত্রের অভাবে এদেশের অসংখ্য নরনারী অর্ধ-ভুক্ত, অর্ধ-উলঙ্গ। নারীদের শিক্ষার সুযোগ নেই। তার ওপর রয়েছে ইংরেজ শাসকদের শোষণ অত্যাচার। ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের ভয় এবং ঘৃণা করে। শ্বেতাঙ্গরাও ঘৃণার চোখে দেখে এদেশের মানুষকে। এমনই এক সমাজে মিস নোব্‌ল্‌কে মানবসেবার কাজ করতে হবে। সুতরাং আলোচ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধটিকে উনিশ শতকীয় ভারতের একটি ঐতিহাসিক ও সামাজিক দলিলরূপে চিহ্নিত করাই যায়।

৪. পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধটিতে স্বামী বিবেকানন্দের চরিত্রের কী পরিচয় পাওয়া যায় ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা পাঠ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধটিতে তাঁর চরিত্রের নানা বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।

দূরদর্শিতাঃ মিস নোব্‌ল্‌ যে ভারতের, বিশেষত ভারতীয় নারীসমাজের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবেন, তা স্বামীজি বুঝেছিলেন। এবং এই কারণে তাঁকে ভারতে স্বাগত জানিয়েছেন।

বিচক্ষণতাঃ ভারতের জলবায়ু, সমাজকেন্দ্রিক নানা সমস্যা যে ইংল্যান্ডের থেকে আলাদা এবং নানা বাধাবিপত্তির মধ্যে মিস নোব্‌ল্‌কে কাজ করতে হবে, সে বিষয়ে তাঁকে স্বামীজি আগে থেকে সচেতন করেছেন। পরোক্ষে কর্মে ঝাঁপ দেওয়ার আগে মানসিকভাবে দৃঢ় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

স্নেহশীলতা ও উদারতাঃ ভারতের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে মিস নোব্‌ল্‌ স্বামীজির সাহায্য পাবেন এবং এদেশের জন্য কাজ না করলে বা বেদান্ত ধর্ম ত্যাগ করলেও সারাজীবন তিনি নোব্‌লের পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

নারীজাতির প্রতি সম্মানঃ নপীড়িত ভারতীয় নারীদের শিক্ষা ও উন্নতির চিন্তা, মিস মুলারকে ‘চমৎকার মহিলা’ বলা এবং মিসেস সেভিয়ারকে ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’ বলে অভিহিত করার মধ্যে নারীজাতির প্রতি স্বামীজির সম্মানবোধ প্রকাশ পায়।

সমাজচেতনা ও স্বদেশপ্রীতিঃ প্রখরভাবে সমাজসচেতন স্বামীজি এদেশের সামাজিক ব্যাধিগুলি সম্পর্কে বিচলিত হয়েছেন। ইংরেজ কুশাসনের পাশাপাশি দুঃখদারিদ্র্য, কুসংস্কার, অস্পৃশ্যতা ইত্যাদি থেকে তিনি ভারতবাসীকে মুক্তি দিতে চেয়েছেন।

৫. পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধ অবলম্বনে স্বামী বিবেকানন্দের বিচক্ষণতা ও উদারতার পরিচয় দাও।

উত্তরঃ মিস নোব্‌ল্‌কে সতর্ক করে দেওয়াঃ মিস্টার স্টার্ডির চিঠি প্রবন্ধ থেকে স্বামী বিবেকানন্দ যখন জেনেছেন মিস নোব্‌ল্‌ ভারতে আসতে এবং এদেশের জন্য কাজ করতে দৃঢ়সংকল্প তখন তিনি তাঁকে প্রয়োজনীয় কতকগুলো তথ্য ও উপদেশ দিয়েছেন। ইউরোপ বা আমেরিকার পরিবেশের তুলনায় ভারতের সামাজিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা তাই সরাসরি মিস নোব্‌ল্‌কে চিঠি প্রবন্ধটি লিখে স্বামীজি তাঁকে এদেশের মানুষের জীবনযাত্রা, সামাজিক সমস্যা, বাধাবিঘ্ন আর জলবায়ু সম্পর্কে সচেতন করেছেন এবং ‘নিজের পায়ে দাঁড়াবার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে স্বামীজির বিচক্ষণতার পরিচয় পাওয়া যায়।

উদারতা ও সহমর্মিতাঃ অন্যদিকে, স্বামীজির উদারতা প্রকাশ পায় যখন তিনি মিস নোব্‌ল্‌কে লেখেন যে, মিস নোব্‌ল্‌ ভারতবর্ষের জন্য কাজ করুন বা না করুন এবং বেদান্ত ধর্ম গ্রহণ করুন বা ত্যাগ করুন, স্বামীজি তাঁকে আজীবন সাহায্য করে যাবেন। আবার, মিস মুলারের স্বভাবের কিছু ত্রুটির কথা জেনেও স্বামীজি তাঁর সহৃদয়তার প্রশংসা করেছেন। মিসেস সেভিয়ারকে ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’, ‘ভালো’, ‘স্নেহময়ী’ বলে উল্লেখ করে তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য তিনি নোব্‌ল্‌কে পরামর্শ দিয়েছেন। দীর্ঘ যাত্রাপথের একঘেয়েমি দূর করার জন্য স্বামীজি মিস ম্যাকলাউড ও মিসেস বুলের সহযাত্রী হয়ে নোব্‌ল্‌কে ভারতে আসার পরামর্শ দিয়েছেন। এসব ভাবনা ও সুপরামর্শের মধ্য দিয়ে স্বামীজির উদারতার পরিচয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

৬. পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধটি স্বামী বিবেকানন্দ কত সাল– তারিখে কোথা থেকে কার উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন ? এই চিঠি প্রবন্ধের পরিপ্রেক্ষিত কী ছিল ?

উত্তরঃ পাঠ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধটি স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই ভারতবর্ষের আলমোড়া থেকে মিস নোব্‌লের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন।

মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল্‌ ছিলেন স্বামীজির শিষ্যাদের মধ্যে অগ্রগণ্যা। স্বামীজির অনুপ্রেরণায় তিনি ভারতে এসেছিলেন এবং এদেশের মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ভারতের নারীসমাজের কল্যাণে, স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে, স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে লন্ডনে স্বামীজির বক্তৃতা শুনে অনুপ্রাণিত হন মিস নোব্‌ল্‌। এরপর স্বামীজির অন্যান্য বক্তৃতা শুনে, তাঁর কর্মধারা ও স্বদেশের নারীদের কল্যাণের সংকল্পের কথা জেনে মিস নোব্‌ল্‌ ভারতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতেই স্বামীজি তাঁকে জানান, ভারতের জন্য, বিশেষত ভারতের নারীসমাজের জন্য, পুরুষের চেয়ে নারীর একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন।

মিস নোব্‌লের শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, ভালোবাসা, দৃঢ়তা ইত্যাদি গুণের কারণে তিনিই সেই নারী হতে পারেন। কিন্তু ভারতের জলবায়ু, জীবনযাত্রা তাঁর পক্ষে অনুকূল নয়। মানবসেবার কাজেও বাধাবিপত্তি আছে প্রচুর। এসব সত্ত্বেও মিস নোব্‌ল্‌ যদি ভারতে আসতে চান তবে স্বামীজি তাঁকে শতবার স্বাগত জানিয়ে আলোচ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধটি লিখেছিলেন।

৭. স্বামী বিবেকানন্দ লিখিত পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধর বিষয়বস্তু আলোচনা করো।

উত্তরঃ বিষয়বস্তুঃ লন্ডনে স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে মিস নোব্‌লের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। স্বামীজির বক্তৃতায় তিনি অনুপ্রাণিত হন। পরবর্তীকালে ইংরেজ ভক্ত মি. স্টার্ডির চিঠি প্রবন্ধ থেকে স্বামীজি জেনেছেন যে, মিস নোব্‌ল্‌‌ ভারতে এসে সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে দৃঢ়সংকল্প। মিস মুলারের কাছ থেকে স্বামীজি নোব্‌লের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে জেনেছেন। কিন্তু ভারতের সামগ্রিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি ইউরোপ-আমেরিকার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কুসংস্কার, অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ, ইংরেজ প্রভুর দাসত্ব আর প্রবল দারিদ্র্য প্রভৃতি এখানকার মানুষদের আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। এদেশের আবহাওয়াও উষ্ণপ্রধান। এসব জেনেও যদি মিস নোব্‌ল্‌ ভারতের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে চান, তাহলে সেখানে তার সামনে এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় নারীসমাজ তাঁর দ্বারা অসীম উপকৃত হতে পারে। তাঁর মতো শিক্ষিতা, একনিষ্ঠ পবিত্র, প্রেমময়ী, দৃঢ়চেতা এবং সুপ্রাচীন কেলটিক সভ্যতাজাত উন্নত চরিত্রের নারীকে এদেশের প্রয়োজন। এদেশে এসে স্বনির্ভর হয়ে তাঁকে কাজ করতে হবে। তাঁর পাশে স্বামীজি আমরণ থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এইসব, তথ্য ও মতামত জানিয়ে মিস নোব্‌ল্‌কে স্বামীজি সরাসরি চিঠি প্রবন্ধটি লিখেছেন। এ ছাড়া কয়েকজন ইউরোপীয় ব্যক্তির চরিত্র বিশ্লেষণ ও কর্মপদ্ধতি এই চিঠি প্রবন্ধটিতে আলোচনা করেছেন লেখক। তারপর তিনি মিস নোব্‌ল্‌ এদেশে এলে তাঁর কী কাজ হবে সে বিষয়েও নির্দেশ দিয়েছেন।

কল্যাণীয়া মিস নোব্‌ল্ এই সম্বোধন থেকে শুরু করে আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে, এরূপ আশ্বাসে মিস নোব্‌লের প্রতি স্বামীজির যে স্নেহশীলতা প্রকাশ পেয়েছে তা সংক্ষেপে লেখো।
স্নেহশীলতার প্রকাশ – মিস নোব্‌ল্‌ ভারতে আসার প্রায় মাস ছয়েক আগে স্বামীজি মি. স্টার্ডির চিঠি প্রবন্ধতে জেনেছিলেন নোব্‌ল্‌ এদেশে আসতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তখন তিনি এই তরুণীকে লিখলেন, তোমাকে খোলাখুলি বলছি, এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে, ভারতের কাজে তোমার এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে। ভারতের জলবায়ু আর কাজের পরিবেশের সঙ্গে বিদেশিনি নোব্‌ল্‌ মানিয়ে নিতে পারবেন কি না –এই চিন্তা ছিল স্বামীজির। তাই তিনি তাঁর চিঠি প্রবন্ধটিতে মিস মার্গারেট নোব্‌ল্‌কে এখানকার বাধাবিঘ্নময় পরিবেশ এবং সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে সচেতন করে দিয়েছেন। এখানে এসে কারও ছত্রছায়ায় না থেকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন নোব্‌ল্‌কে আর বলেছেন কাজে নামার আগে ভালো করে ভেবে নিতে। স্বামীজি জানিয়েছেন, এদেশে তাঁর যতটুকু প্রভাব আছে তা দিয়ে তিনি নোবলের কাজে যথাসাধ্য সাহায্য করবেন। এদেশে কাজ করতে করতে যদি মিস নোব্‌লের বিরক্তি আসে, যদি তিনি কাজে বিফল হন এবং ভারতের জন্য আর কাজ না করতে চান, বেদান্ত ধর্ম ত্যাগও করেন তবুও তাঁর প্রতি স্বামীজির দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে না বলে স্বামীজি জানান। — আমার দিক থেকে নিশ্চয় জেনো যে, আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে। আশ্বাসে বিশ্বাসে ভরসায় নির্ভরতায় এভাবেই মিস নোব্‌লের প্রতি স্বামীজির অকৃত্রিম স্নেহ প্রকাশ পেয়েছে সমগ্র চিঠি প্রবন্ধটিতে।

৮. স্বামী বিবেকানন্দের লেখা চিঠি প্রবন্ধটি থেকে মিস ম্যাকলাউড এবং মিস মুলার সম্পর্কে যা জানা যায় লেখো।

উত্তরঃ মিস ম্যাকলাউড– ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই আলমোড়া থেকে স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোব্‌ল্‌কে যে চিঠি প্রবন্ধটি লিখেছিলেন তাতে মিস ম্যাকলাউড এবং মিস মুলারের প্রসঙ্গ পাওয়া যায়। মিস জোসেফাইন ম্যাকলাউড ছিলেন স্বামীজির ইউরোপীয় ভক্তদের মধ্যে অন্যতমা। আমেরিকার সংবাদে স্বামীজি জেনেছেন, মিস ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল সে বছর শরৎকালেই ভারত পরিভ্রমণে আসছেন। ‘পারি ফ্যাশনের’ অর্থাৎ প্যারিসের ফ্যাশন অনুযায়ী তৈরি পোশাকে ম্যাকলাউডকে লন্ডনে মিস নোব্‌ল্‌ দেখেছেন। সেই ম্যাকলাউডদের সঙ্গেই মিস নোব্‌ল্‌কে ভারতে আসার পরামর্শ দিয়েছেন স্বামীজি।

মিস মুলার– মিস মুলার এমনিতে চমৎকার মহিলা, কিন্তু তাঁর ধারণা তিনি আজন্ম নেত্রী এবং দুনিয়াটা বদলে দিতে টাকা ছাড়া আর কিছুর প্রয়োজন নেই। তাঁর নিজের, নোব্‌লের এবং আমেরিকা-ইউরোপ থেকে আগত বন্ধুদের জন্য তিনি কলকাতায় একটা বাড়ি ভাড়া নিতে চান। এদিক থেকে তাকে সহৃদয় ও অমায়িক বলা যায়। অন্যদিকে, মানসিকভাবে তিনি খুব অস্থির এবং তাঁর মেজাজ অত্যন্ত রুক্ষ। তাঁর সঙ্গে দূর থেকে বন্ধুত্ব করাই ভালো বলে মনে করেছেন স্বামীজি। ভারতে এসে তাঁর সঙ্গে মিস নোব্‌ল্‌ মানিয়ে চলতে পারবেন না। তাই স্বামীজির পরামর্শ মিস মুলার বা অন্য কারও আশ্রয়ে না থেকে মিস নোব্‌ল্‌ যেন কার্যক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হন।

৯. পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধ থেকে মিসেস সেভিয়ার ও মিসেস বুল সম্পর্কে কী জানা যায় ?

উত্তরঃ মিসেস সেভিয়ার– পাঠ্য চিঠি প্রবন্ধর-তে স্বামী বিবেকানন্দ মিসেস সেভিয়ারকে ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’ বলেছেন। ‘এত ভালো, এত স্নেহময়ী তিনি’ কথাগুলির মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতি স্বামীজির অত্যন্ত উচ্চ ধারণাই প্রকাশ পায়। এই স্নেহশীলা নারী এবং তাঁর স্বামী ইংরেজ হওয়া সত্ত্বেও অন্য ইংরেজদের মতো ভারতীয়দের ঘৃণা করেন না। তাঁরা এদেশে এসেছেন মানুষের সেবার মনোভাব নিয়ে, কর্তৃত্ব ফলানোর কোনো ইচ্ছা বা মানসিকতা তাঁদের নেই। মিসেস সেভিয়ার বেদান্ত ধর্ম প্রচারের কাজে নিবেদিত ছিলেন আজীবন। আলোচ্য ‘চিঠি’ প্রবন্ধ রচনার সময়ে এদেশে কাজের বিষয়ে মিসেস সেভিয়ারের কোনো নির্দিষ্ট কার্যপ্রণালী গড়ে ওঠেনি। তাই মিস নোব্‌ল্‌ ভারতের কাজে তাঁকে সহকর্মীরূপে পেলে উভয়েরই সুবিধা হবে বলে স্বামীজি জানিয়েছেন।

মিসেস বুল– মিসেস সারা বুলও ছিলেন স্বামীজির অন্যতমা শিষ্যা। স্বামীজি তাঁকে কোনো কোনো চিঠি প্রবন্ধতে ‘মা’বা ‘ধীরামাতা’ বলে সম্বোধন করেছেন। ইনিও অত্যন্ত স্নেহশীলা রমণী। স্বামীজি যখন আমেরিকায় ছিলেন তখন তিনি বস্টনের বাসিন্দা মিসেস বুলের কাছ থেকে বিশেষ উপকার পেয়েছিলেন। স্বামীজি খবর পেয়েছিলেন, মিস ম্যাকলাউডের সঙ্গে মিসেস বুল শরৎকালে ইউরোপ হয়ে ভারতে আসছেন। দীর্ঘপথের একঘেয়েমি দূর করতে স্বামীজি মিস নোব্‌ল্‌কে মিসেস বুল এবং মিস ম্যাকলাউডের সঙ্গে এদেশে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।

১০. চিঠি রচনা অবলম্বনে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশভাবনার পরিচয় দেয়।

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন প্রকৃত ভারতপ্রেমী। তিনি আমরণ তার কাজের মাধ্যমে দেশের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনের জন্য চেষ্টা করেছেন। আলোচ্য চিঠিটি স্বামীজি তার শিষ্যা মিস নোবেলকে লিখেছেন ও তার বিষয়বস্তুও সম্পূর্ণ আলাদা। চিঠির মূল উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও চিঠির মাধ্যমে ভারতবাসীদের প্রতি তার মনোভাব স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে।

স্বামীজি বিশেষ করে ভারতের পিছিয়ে পড়া নারী সমাজকে নিয়ে তিনি বিশেষভাবে চিন্তিত। তার মতে ভারতের নারী সমাজের উন্নতির জন্য একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন। শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা, দৃঢ়তা দিয়ে নারী সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি নোবেলকে আহ্বান জানিয়েছেন। আবার ভারতের মানুষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব, মানুষের দারিদ্র্য জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। এই ভাবে ভালো খারাপ মিশিয়ে তিনি তার স্বদেশকে সম্পূগ্রুপে গ্রহণ করেছেন। নোবেলের কাছে তিনি ভারতের গ্লানি প্রকাশ করে তার প্রতিকারের ব্যাপারে যে কতটা আগ্রহী তা ব্যক্ত করেছেন। এভাবে দুঃস্থ দেশের প্রতি তার গভীর মমতা প্রকাশ পেয়েছে।

Leave a Reply