হাট–যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা | Class 6 Bengali Hat Kobitar Question Answer wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য মেলা
ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা

হাট–যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা | Class 6 Bengali Hat Kobitar Question Answer wbbse

ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা (দশম পাঠ) হাট কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 6 Bengali Hat Kobitar Question Answer wbbse

ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা (দশম পাঠ) হাট কবিতার কবিতা, কবিতার ব্যাখ্যা, কবি পরিচিতি, শব্দার্থ, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 6 Bengali Hat Kobitar Question Answer wbbse

1. ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

3. ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

4. ষষ্ঠ শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

5. ষষ্ঠ শ্রেণির পরিবেশ ও বিজ্ঞান সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

6. ষষ্ঠ শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা (দশম পাঠ) হাট কবিতার কবিতা, কবিতার ব্যাখ্যা, কবি পরিচিতি, শব্দার্থ, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 6 Bengali Hat Kobitar Question Answer wbbse

হাট
—যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত

দূরে দূরে গ্রাম দশবারোখানি,
মাঝে একখানি হাট,
সন্ধ্যায় সেথা জ্বলে না প্রদীপ
প্রভাতে পড়ে না ঝাঁট।
বেচা-কেনা সেরে বিকালবেলায়
যে যাহার সবে ঘরে ফিরে যায়;
বকের পাখায় আলোক লুকায়
ছাড়িয়া পুবের মাঠ;
দূরে দূরে গ্রামে জ্বলে ওঠে দীপ—
আঁধারেতে থাকে হাট।

নিশা নামে দূরে শ্রেণিহারা একা
ক্লান্ত কাকের পাখে;
নদীর বাতাস ছাড়ে প্রশ্বাস,
পার্শ্বে পাকুড় শাখে।
হাটের দোচালা মুদিল নয়ান,
কারো তরে তার নাই আহ্বান;
বাজে বায়ু আসি’ বিদ্রূপ-বাঁশি
জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে;
নির্জন হাটে রাত্রি নামিল
একক কাকের ডাকে।

দিবসেতে সেথা কত কোলাহল
চেনা-অচেনার ভিড়ে;
কত না ছিন্ন চরণচিহ্ন
ছড়ানো সে ঠাঁই ঘিরে।
মাল চেনাচিনি, দর জানাজানি,
কানাকড়ি নিয়ে কত টানাটানি;
হানাহানি করে কেউ নিল ভ’রে,
কেউ গেল খালি ফিরে।
দিবসে থাকে না কথার অন্ত
চেনা-অচেনার ভিড়ে।

কত কে আসিল, কত বা আসিছে,
কত না আসিবে হেথা;
ওপারের লোক নামালে পসরা
ছুটে এপারের ক্রেতা।
শিশির-বিমল প্রভাতের ফল,
শত হাতে সহি পরখের ছল —
বিকালবেলায় বিকায় হেলায়
সহিয়া নীরব ব্যথা।
হিসাব নাহি রে — এল আর গেল
কত ক্রেতা বিক্রেতা।

নূতন করিয়া বসা আর ভাঙা
পুরোনো হাটের মেলা;
দিবসরাত্রি নূতন যাত্রী
নিত্য নাটের খেলা।
খোলা আছে হাট মুক্ত বাতাসে,
বাধা নাই ওগো-যে যায় যে আসে,
কেহ কাঁদে, কেহ গাঁটে কড়ি বাঁধে
ঘরে ফিরিবার বেলা
উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে
চিরকাল একই খেলা।।

👉প্রথম স্তবক—

[ ব্যাখ্যা: অনেকগুলি গ্রামের মাঝে একটি হাট। সারাদিন বেচাকেনা করে মানুষ হাট থেকে যে যার ঘরে ফেরে। হাটে কেউ ঝাঁট দেয় না, প্রদীপ জ্বালিয়ে দেয় না। হাট অন্ধকারে থাকে। জীবনের আধার হয়েও এই বিশ্বজগৎ যেমন একা, হাটও তেমনি একা। রাত্রি নামলে হাট অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।]

👉দ্বিতীয় স্তবক—

[ব্যাখ্যা: রাত্রি নামে, দলছুট একটি ক্লান্ত কাকের ডানায়। নদীর বাতাস নদীতীরে অবস্থিত পাকুড় গাছের ডালে এমন শব্দ করে, যেন মনে হয় নিঃশ্বাস ফেলছে। হাটের দোচালা ঘুমিয়ে পড়ে। সে কারও প্রত্যাশা করে না। জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে বাতাস লেগে বাঁশির মতো আওয়াজ হয়। মনে হয়, বায়ু যেন বিদ্রুপ করছে। হাটে রাত্রি নামে, একটি কাকের ডাক শোনা যায়।]

👉তৃতীয় স্তবক—

[ব্যাখ্যা: দিনের বেলা হাটে কোলাহল থাকে। চেনা অচেনা হাজার মানুষের ভিড়। কত মানুষের পায়ের টুকরো টুকরো ছাপ পড়ে থাকে হাটের ধুলোতে। সবাই নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। সামান্য অর্থের জন্য কত কাড়াকাড়ি। হানাহানি করে কেউ লাভ করে, কেউ পারে না। সারা দিন চেনা অচেনা মানুষের ভিড়ে কথার অন্ত থাকে না।]

👉চতুর্থ স্তবক—

[ব্যাখ্যা: হাটে মানুষের আসা যাওয়ার কোনো হিসেব নেই। ওপারের বিক্রেতা পসরা নামালে এপারের ক্রেতা ছুটে যায়। সকালবেলার শিশিরভেজা তাজা ফল পরখের ছলে শত হাতে ঘুরে ঘুরে মলিন হয়, তখন তার দাম কমে যায়, অবহেলায় বিক্রি হয়। এই ভবের হাটে কত যে ক্রেতা আর বিক্রেতা এলো আর গেলো, তার হিসাব নেই।]

👉পঞ্চম স্তবক—

[ ব্যখ্যা: চির পুরাতন এই হাটের মেলা চিরকাল নতুন করে বসে আর ভাঙে (অর্থাৎ মানুষের জীবন ফুরিয়ে গেলেও চিরন্তন জীবনের প্রবাহ থেমে থাকে না)। দিন ও রাতের মতো নতুন যাত্রীর গমন ও আগমন লেগে আছে। হাট খোলা থাকবে চিরকাল। যাওয়া আসা চলতে থাকবে, বাধা নেই। কেউ কেঁদে ফিরে যাবে, কেউ ফেরার বেলায় গাঁটে কড়ি বাঁধবে। চিরকাল এই খেলা চলতে থাকবে।]

👉কবি পরিচিতিঃ

যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত (১৮৮৭–১৯৫৪) : জন্মস্থান শান্তিপুরের হরিপুর গ্রাম। পেশায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। রবীন্দ্র সমসময়ে যে সমস্ত কবি স্বাতন্ত্র্য অর্জন করতে পেরেছিলেন কবি যতীন্দ্রনাথ তাঁদের মধ্যে অন্যতম। কল্লোল গোষ্ঠীর জনপ্রিয় কবিদের মধ্যে তিনি একজন। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য মরীচিকা, মরুশিখা, মরুমায়া, ত্রিযামা, সায়ম্, নিশান্তিকা প্রভৃতি। বাংলা কাব্যজগতে তিনি দুঃখবাদী কবি অভিধা পেয়েছিলেন।

সারাংশ : দুঃখবাদী কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা হাট কবিতাটি একটি রূপকধর্মী কবিতা। এই কবিতায় কবি হাটের রূপকে মানবজীবনের এক গভীর সত্যকে তুলে ধরেছেন। হাট এখানে মানবজীবনের প্রতীক। আমাদের এই জীবনে বহু মানুষের সঙ্গে পরিচিতি, যোগাযোগ, লেনদেন ঘটে। জীবন ফুরালে সবাইকে বিদায় নিতে হয়। মানুষ আসে, মানুষ যায়, জীবনের প্রবহমানতার সাক্ষী হয়ে হাট রয়ে যায় চিরকাল।

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘হাট’ কবিতায় গ্রামের হাটের বাস্তব চিত্র যেমন প্রকাশিত হয়েছে, তেমনি হাটকে কেন্দ্র করে গ্রামের অন্যান্য কয়েকটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। দশ- বারোটি গ্রামের মানুষজনকে একই স্থানে নিয়ে আসে হাট। গ্রামীণ নদীটি বয়ে চলেছে হাটেরই পাশ দিয়ে, ওপারের মানুষ সেই নদী পার হয়ে পসরা নিয়ে উপস্থিত হয় এপারের মানুষ পণ্য কেনার উপস্থিত হয় সেখানে। এভাবেই দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে একপ্রকার আন্তরিক বন্ধন তৈরী হয় হাটকে উপলক্ষ করে।

শব্দার্থ :

» প্রভাত— সকাল।
» নিশা— রাত্রি।
» শ্রেণিহারা— দল থেকে বিচ্ছিন্ন।
» পাখে— বানায়।
» পসরা— পণ্যদ্রব্য।
» আহ্বান— আমন্ত্রণ, ডাক।
» পাকুড়— বট জাতীয় গাছ বিশেষ।
» শাখে— শাখায়, গাছের ডালে।
» দোচালা— দুটি ছাদ বা চাল যুক্ত বাড়ি।
» মুদিল— নিমীলিত করল, বুজল।
» তরে— জন্যে।
» বিদ্রূপ— ব্যঙ্গ, ঠাট্টা।
» জীর্ণ— বহু ব্যবহারে ক্ষয়প্রাপ্ত।
» কোলাহল— গোলমাল, চিৎকার।
» ছিন্ন— ছেঁড়া।
» চরণচিহ্ন— পায়ের চিহ্ন।
» ক্রেতা— খরিদ্দার।
» বিমল— নির্মল।
» পরখ— যাচাই করা।
» সহি— সহ্য করি।
» বিকায়— বিক্রি হয়।
» নিত্য— রোজ।
» হেলায়— অবহেলায়।
» গাঁট— ট্যাক, সঞ্চয়স্থান।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর’ হাট কবিতা সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Hat Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse

• সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।

১. হট কবিতাটি লিখেছেন— (নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী / শক্তি চট্টোপাধ্যায় / যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত)।

উত্তরঃ যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত।

২. বাংলা কাব্যজগতে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত যে অভিধা পেয়েছিলেন— (বিদ্রোহী কবি / দুঃখবাদী কবি / পল্লী কবি)।

উত্তরঃ দুঃখবাদী কবি।

৩. হাট কবিতায় কটা গ্রামের কথা বলা আছে ? ( ১০-১২টা / ১২-১৪টা / ১৪-১৫টা)।

উত্তরঃ ১০-১২টা।

৪. কেনা-বেচা সেরে সবাই কখন ঘরে ফিরে যায় ? ( দুপুরবেলায় / বিকাল বেলায় / সন্ধ্যা বেলায়)।

উত্তরঃ বিকাল বেলায়।

৫. হাট কবিতা অনুসারে যে পাখির ডাকে রাত্রি নামে— (কাক / কোকিল / শালিক)।

উত্তরঃ কাক

৬. হাট কবিতায় বাস ছাড়া আর যে গাছের উল্লেখ আছে— ( বট / অশ্বত্থ / পাকুড়)।

উত্তরঃ পাকুড়।

৭. ‘ _______ নিয়ে কত টানাটানি।’— শূন্যস্থানে যে শব্দটি বসবে— (টাকা কড়ি / পয়সা কড়ি / কানা কড়ি)।

উত্তরঃ কানা কড়ি।

৮. ‘ওপারের লোক নামালে পসরা’— পসরা শব্দের অর্থ— (পণ্যদ্রব্য / ফলমূল / চাল ডাল)।

উত্তরঃ পণ্যদ্রব্য।

৯. যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত পেশায় ছিলেন একজন— (ডাক্তার / ইঞ্জিনিয়ার / উকিল)।

উত্তরঃ ইঞ্জিনিয়ার।

“হাতেকলমে’র প্রশ্নোত্তর” হাট কবিতা সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Hat Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse

১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ

১.১ কোন সাহিত্যিক-গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্ৰনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ?

উত্তরঃ কল্লোল সাহিত্যিক-গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তরঃ তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলি হল মরীচিকা, মরুশিখা, মরুমায়া, ত্রিযামা, সায়ম, নিশান্তিকা।

২. নীচের বাক্যগুলি থেকে এমন শব্দ খুঁজে বের করো যার প্রতিশব্দ কবিতার মধ্যে আছে। কবিতার সেই শব্দটি পাশে লেখোঃ

২.১ ‘আঁধার-সাঁঝে বনের মাঝে উল্লাসে প্রাণ
ঢেলেছে।’

উত্তরঃ সাঁঝে = সন্ধ্যায়।

২.২ ‘আলো, আমার আলো, ওগো আলো ভুবন-ভরা।

উত্তরঃ আলো = আলোক।

২.৩ ‘তুমি আমার সকালবেলার সুর।’

উত্তরঃ সকালবেলা = প্রভাত ।

২.৪ ‘আমার রাত পোহাল শারদ-প্রাতে।’

উত্তরঃ রাত = রাত্রি,নিশা এবং প্রাতে = প্রভাতে ।

২.৫ ‘দিনেরবেলা বাঁশী তোমার বাজিয়েছিলে।’

উত্তরঃ দিনেরবেলা = দিবসেতে।

৩. সমোচ্চারিত বা প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দযুগলের অর্থপার্থক্য দেখাওঃ

» দীপ = বাতি, আলোর প্ৰদীপ
» দ্বীপ = জলবেষ্টিত‌ স্থলভাগ

» দর = গর্ত, ফাটল
» দড় = শক্ত, দক্ষ

» শাখ = গাছের ডাল
» শাঁখ = শঙ্খ

» বাধা = বিঘ্ন, নিষেধ
» বাঁধা = গচ্ছিত,বন্ধন

» নিত্য = দৈনিক, রোজ
» নৃত্য = নাচ

৪. নীচের শব্দগুলি গদ্যে ব্যবহার করলে কেমন হবে লেখোঃ (সহিয়া, সেথা, সহি, সবে, তবে, মুদিল)

» সহিয়া— সহ্য করা
» সেথা— সেখানে
» সহি— সহ্য করি
» সবে— সবাই
» তবে— তাহলে
» মুদিল— বন্ধ করল

৫. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখোঃ

৫.১ কতগুলি গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে ?

উত্তরঃ দশ বারো টি গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে।

৫.২ হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না কেন ?

উত্তরঃ সারাদিন হাটে সবার প্রয়োজন মিটে গেলে যে যার ঘরে ফিরে যায় ফলে একা পড়ে থাকে হাট, তাই হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না।

৫.৩ কার ডাকে রাত্রি নেমে আসে ?

উত্তরঃ একটি কাকের ডাকে রাত্রি নেমে আসে।

৫.৪ ওপারের লোক কেন এ পারেতে আসে ?

উত্তরঃ ওপারের লোক জিনিসপত্রের পসরা নামালে ভালো জিনিসের লোভে এপারের লোক কেনার জন্য ছুটে আসে।

৫.৫ ‘হিসাব নাহিরে – এল আর গেল
কত ক্রেতা বিক্রেতা।’ – কোনো হিসাব নেই
কেন ?

উত্তরঃ হাটে অসংখ্য মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে কেনাবেচার জন্য আসে। প্রতিদিনের এই চেনা-অচেনা মানুষের হিসাব রাখা সম্ভব নয়। তাই কোনো হিসাব নেই।

৬. কবিতায় বর্ণিত হাটের চেহারা কেমন লেখোঃ

» হাট বসার আগে :
হাট বসার আগে হাটের স্থানটি জনশূন্য,
ফাঁকা এবং অপরিচ্ছন্ন ভাবে পড়ে থাকে।

» হাট চলাকালীন :
হাটে অনেক মানুষের আনাগোনা দেখা যায়। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দেখা যায় কেনা বেচা ও দর কষাকষি। হাট চলাকালীন বহু মানুষের ভিড়ে হাটের পরিবেশ কোলাহলমুখর হয়ে ওঠে।

» হাট ভাঙার পর :
হাট ভাঙার পর সব বিক্রেতা নিজের নিজের হিসাব সামলে নিয়ে ঘরে ফিরে যায়। আবার
সন্ধ্যায় নেমে আসে হাটের বুকে নিস্তব্ধতা,
জনশূন্যতা আর কালো অন্ধকার।

৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :

৭.১ হাটের স্থান ছড়িয়ে দূরের গ্রামের ছবি কীভাবে কবিতায় ফুটে উঠেছে?

উত্তরঃ হাট কবিতায় দেখা যায় দশ-বারোখানি গ্রামের মাঝখানে একটি হাট। সেই গ্রামের লোকজন হাট থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে যে যার ঘরে ফিরে যায়। সন্ধ্যাবেলায় গ্রামগুলিতে প্রত্যেক ঘরে ঘরে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে ওঠে। দূরে অবস্থিত
হলেও অন্ধকারে ঢাকা নির্জন এক হাট সেই গ্রামের পার্শ্ববর্তী নদীর বাতাসের দীর্ঘনিশ্বাস শুনতে পায়। গ্রামের মানুষজন তখন নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকলেও হাট একাকী পড়ে থাকে চেনা-অচেনা মানুষের অপেক্ষায়।

৭.২ প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে—তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ দুঃখবাদী কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত তাঁর রূপক কবিতা ‘হাট’-এ অসীম মমতায় প্রকৃতির ছবি এঁকেছেন। কবি প্রাণহীন হাটের মধ্যে প্রাণসত্ত্বার করে তার একটি জীবন্ত বর্ণনা দিয়েছেন। সন্ধ্যায় হাট ভেঙে যায় এবং সবাই নিজ নিজ গৃহে ফেরে। কেউ হাটে সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালায় না বা সকালে ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করে না। হাট সারারাত আঁধারে থাকে। হাট সারারাত নির্জনে একা থাকে। হাটের দরজা সর্বদা খোলা সকলের
জন্য। উদার আকাশতলে মুক্ত বাতাসের পরশে চিরকাল একই খেলা চলতে থাকে।

৭.৩ “বাজে বায়ু আসি বিদ্রুপ-বাঁশি”— কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?

উত্তরঃ সন্ধ্যা হলে হাট ভেঙ্গে যায়। সকলে যে যার ঘরে ফেরে। হাট নির্জনে একা বিরাজ করে। প্রবহমান বাতাস জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে প্রবেশ করে এক বাঁশির মতো আওয়াজ করে। কবি কল্পনা করছেন হাটের নির্জনতাকে প্রকৃতি বিদ্রুপ করছে তার একাকীত্বের জন্য।

৭.৪ “উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে চিরকাল একই খেলা”—কোন প্রসঙ্গে কবি আলোচ্য পঙক্তিটি লিখেছেন ? তিনি এখানে কোন ‘খেলা’-র কথা বলেছেন ? ‘চিরকাল’ চলে বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

উত্তরঃ কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, ‘হাট’ কবিতায় একটি হাটের চিত্র সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে গিয়ে পঙক্তি দুটির অবতারণা করেছেন।

এখানে ‘খেলা’ বলতে একদিকে যেমন হাটের প্রতিবার বসা আর ভাঙার কথা বলেছেন, তেমনি তারই মধ্য দিয়ে কবি আসা-যাওয়া অর্থাৎ জন্ম ও মৃত্যুর কথা বুঝিয়েছেন।

হাটের মতোই পৃথিবীর বুকে মানুষ আসে আর যায়। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের জীবনে আসা-যাওয়া অর্থাৎ জন্মমৃত্যুর খেলা চলছে। অর্থাৎ এই চলমানতা চিরন্তন বা সনাতন। তাই কবি একথা বলেছেন। একজন মানুষ তার জীবন কাটিয়ে চলে যায় তার বদলে আরেকজন শিশু জন্মগ্রহণ করে। একেই ‘চিরকালের খেলা’ বলেছেন কবি।

৭.৭ এখন ‘হাট’ ও ‘বাজার’-এর মধ্যে কোন তফাৎ খুঁজে পাও ? এ বিষয়ে তোমার মতামত জানিয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।

উত্তরঃ হাট’ মূলত গ্রাম কেন্দ্রিক অন্যদিকে ‘বাজার’ শহর কেন্দ্রিক। হাট বা বাজার দুটি জায়গাতেই অসংখ মানুষ আসেন। অনেকগুলি গ্রামকে চারপাশে রেখে সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে হাট বসে। কিন্তু শহরে রোজই বাজার বসে। হাটে যে সমস্ত জিনিস পাওয়া যায় সেগুলি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। কিন্তু বাজারে বিলাস সামগ্রীও কিনতে পাওয়া যায়। হাট যেহেতু প্রধানত গ্রামে দেখতে পাওয়া যায় তাই হাটে মানমাত্র কিছু দোচালার দেখা মিললেও হাটের দিন খোলা পরিবেশের মধ্যেই বেচাকেনা চলে আর শহরকেন্দ্রিক বাজারের অধিকাংশই দোকান পাকা ও ছাদওয়ালা।

Leave a Reply