একটি চড়ুই পাখি তারাপদ রায় | Ekti Chorui Pakhi শব্দার্থ ও প্রশ্নোত্তর Class 8 – Prosnodekho

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

একটি চড়ুই পাখি – তারাপদ রায়

শব্দার্থ ও টীকা
• চতুর – চালাক, কুশল, কর্মদক্ষ
• খড় কুটো – শুকনো ঘাস ও তার চেয়ে
• ছোটো বা তুচ্ছ বস্তু
• কৌতূহলী – আগ্রহী
• বিধাতা – বিধি, বিধানকর্তা
• ফুলদানি – ফুল রাখার পাত্র
• দৃষ্টি – দর্শন, অবলোকন
• দোর – দরজা
• কার্নিশ – ছাদ বা দেয়ালের বাইরে বেরিয়ে থাকা অংশ
• চাহনি – নজর, দৃষ্টিপাত
• নিতান্ত – নেহাত
• নির্জন – জনহীন, লোকশূন্য
• তাচ্ছিল্য – অবজ্ঞা, অবহেলা
• মায়া – মোহ, টান
• একাকী – একা
∆ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো:
১.১ তারাপদ রায় কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
(ক) ১৯৩৬
(খ) ১৯৩২
(গ) ১৯৩৪
(ঘ) ১৯৩৮
উত্তরঃ (ক) ১৯৩৬
১.২ তারাপদ রায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়-
(ক) ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (ক) ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে
১.৩ তারাপদ রায় যেসব পুরস্কার পেয়েছেন তাদের মধ্যে একটির
নাম লেখো ।
(ক) জ্যোতির্ময়ী পুরস্কার
(খ) শিরোমণি পুরস্কার
(গ) জগত্তারিণী পুরস্কার
(ঘ) জ্ঞান পুরস্কার
উত্তরঃ (ক) জ্যোতির্ময়ী পুরস্কার
১.৪ একটি চড়ুই পাখি কবিতাটি রচয়িতা হলেন –
(ক) তারাপদ রায়
(খ) তারাপদ মুখোপাধ্যায়
(গ) জয় গোস্বামী
(ঘ) নজরুল ইসলাম
উত্তরঃ (ক) তারাপদ রায়
১.৫ একটি চড়ুই পাখি কবিতাটি তারাপদ রায়ের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
(ক) পালা কাহিনী
(খ) বলাকা
(গ) শ্রেষ্ঠ কবিতা
(ঘ) তোমার প্রতিমা
উত্তরঃ (গ) শ্রেষ্ঠ কবিতা
১.৬ তারাপদ রায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম –
(ক) পালা কাহিনী
(খ) বলাকা
(গ) শ্রেষ্ঠ কবিতা
(ঘ) তোমার প্রতিমা
উত্তরঃ (ঘ) তোমার প্রতিমা
১.৭ কবিতায় চড়ুইপাখিকে বাসা বাঁধতে দেখা যায়—
(ক) কবির ছাদে
(খ) কবির ঘরে
(গ) কবির ঘরের সামনে তাল গাছে
(ঘ) কবির বাড়ির কার্নিশে
উত্তরঃ (খ) কবির ঘরে
১.৮ “এ-বাড়ির খরকুটো, ও বাড়ির” —
(ক) খড় কুটো (খ) ধান (গ) গম (ঘ) যব উত্তরঃ (খ) ধান
১.৯ ‘টেবিলের ফুলদানি বই-খাতা’ – কার হবে ?
(ক) কবির
(খ) চড়ুই ও কবির
(গ) চড়ুইয়ের
(ঘ) লোকটার
উত্তরঃ (গ) চড়ুইয়ের
১.১০ “কার্নিশে বসে চাহনিতে তাচ্ছিল্য”—কার?
(ক) শালিখ পাখির
(খ) চড়ুই পাখির
(গ) চতুরপাখির
(ঘ) দোয়েল পাখির
উত্তরঃ(খ) চড়ুই পাখির
১.১১ “ঘরে আছি নিতান্ত মায়ার”—কে ঘরে আছে?
(ক) কবি
(খ) কবির বন্ধু
(গ) চড়ুইপাখি
(ঘ) কবি ও পাখি
উত্তরঃ (গ) চড়ুইপাখি
১.১২. “এপাড়ায়-ওপাড়ায় বোসেদের বাড়ি”-
(ক) দুদিন পরে যেতে পারি
(খ) এখনই যেতে পারি
(গ) আজই যেতে পারি
(ঘ) কোনোদিন যাব না
উত্তরঃ (গ) আজই যেতে পারি
১.১৩. “রাত্রির _________ ঘরে আমি আর চড়ুই একাকী।”
(ক) নিঝুম
(খ) নির্জন
(গ) শান্ত
(ঘ) নীরব
উত্তরঃ (খ) নির্জন
২. অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন : প্রতিটি প্রশ্নের মান – ১
২.১ চতুর চড়ুই ঘুরে ফিরে কী করে?
উঃ চতুর চড়ুই ঘুরে ফিরে কবির ঘরেই বাসা বাঁধে।
২.২ চড়ুই পাখি এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে কি সংগ্রহ করে আনে ?
উঃ চড়ুই পাখি এবাড়ির খড়কুটো ও বাড়ির ধান সংগ্রহ করে আনে।
২.৩ কখনও কাছাকাছি এসে চড়ুই কী করে?
উঃ কখনও চড়ুইটি কাছাকাছি এসে কৌতূহলী দুই চোখ মেলে অবাকদৃষ্টিতে কবির ঘরের ফুলদানি, বইখাতা এইসব জিনিস দেখে।
২.৪ ‘হয়তো ভাবে’ – চড়ুই পাখি কী ভাবে বলে কবি মনে করেন ?
উঃ চড়ুই পাখি হয়তো ভাবে কবি চলে গেলে কবির ঘরের জানলা, দরজা, টেবিলের ফুলদানি, বইখাতা অর্থাৎ ঘরের সমস্ত সামগ্রী তারই হবে অর্থাৎ বিধাতা এসব তাকেই দেবেন।
২.৫ ‘এসব আমারই হবে’ – ‘এসব’ বলতে কোন্ জিনিস গুলিকে বোঝানো হয়েছে ?
উঃ এখানে ‘এসব’ বলতে কবির ঘরের জানলা, দরজা, টেবিলের ফুলদানি, বইখাতা অর্থাৎ ঘরের সমস্ত সামগ্রীকে বোঝানো হয়েছে।
২.৬ কার্নিশে বসে থাকা চড়ুইয়ের চাহনি কেমন?
উত্তরঃ কার্নিশে বসে থাকা চড়ুইয়ের চাহনিতে আছে তার মজার তাচ্ছিল্য, যেন মায়ার শরীর বলেই দয়া করে সে কবির ঘরে আছে।
২.৭ “আবার কার্নিশে বসে চাহনিতে তাচ্ছিল্য মজার”—তাচ্ছিল্য ভরা মজার চাহনিতে চড়ুই কী বোঝাতে চায় ?
উত্তরঃ তাচ্ছিল্যভরা মজার চাহনিতে চড়ুই বোঝাতে যায় যেন তার মায়ার শরীর বলেই সে কবির বাজে ঘরটিতে রয়ে গেছে |
২.৮ “এতটুকু দয়া করে পাখি”—সেই দয়াটি কী?
উঃ চড়ুইপাখিটি দয়া করে কবির ঘরে বাসা বাঁধে এবং নির্জন রাত্রে সঙ্গীহীন কবির নিঃসঙ্গতা দূর করে।
৩. ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন: নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান – ২
৩.১ “ছড়ায় শব্দের টুকরো”—কে কীসের শব্দ ছড়ায়?
উঃ সারাদিন বাইরে কাটিয়ে সন্ধ্যাবেলা চড়ুইপাখিটি এখান-সেখান থেকে খড়খুটো, ধান ইত্যাদি এনে ঘরের যত্রতত্র ছড়িয়ে দেয়। একইসঙ্গে চলে তার ‘কিচিমিচি গান’ । কবির মনে হয় পাখিটি শুধু খড়কুটো আর ধানই ছড়ায় না, সে তাঁর নির্জন ঘরে
‘শব্দের টুকরো’–ও ছড়িয়ে দেয়।
৩.২ “নিতান্ত মায়ার শরীর আমার তাই”—কে, কেন ভেবেছে?
উঃ ‘একটি চড়ুই পাখি’ কবিতায় প্রশ্নে উল্লিখিত উদ্ধৃত কথাটি ভেবেছে কবি তারাপদ রায়ের ঘরে বাসা-বেঁধে থাকা চড়ুইপাখিটি। কবির কল্পনায় পাখিটির নিতান্ত মায়ার শরীর বলেই সে ওই বাজে বাড়িতে থাকে । না হলে সে যখন ইচ্ছা চলে যেতে পারে বোসেদের বাড়ি, পালেদের বাড়ি বা অন্য কোথাও। তবুও এতটুকু দয়া করেই সে থেকে যায় কবির ঘরে। রাতের নির্জন ঘরে কবির সঙ্গী হয়ে থাকে ওই চড়ুইপাখিটিই ।
          হাতেকলমে
১.১ তারাপদ রায় কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন ?
উঃ তারাপদ রায় ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
১.২। তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখাে।
উঃ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম হল—“তােমার প্রতিমা’ ও ‘নীলদিগন্তে এখন ম্যাজিক।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখাে :
২.১ কবিতায় চড়ুই পাখিটিকে কোথায় বাসা বাঁধতে দেখা যায় ?
উঃ কবিতায় চড়ুইপাখিটিকে কথকের ঘরেই বাসা বাঁধতে দেখা যায়।
২.২ চড়ুই পাখি এখান-সেখান থেকে কী সংগ্রহ করে আনে ?
উঃ চড়ুইপাখি এখান-সেখান থেকে খড়কুটো এবং ধান সংগ্রহ করে আনে।
২.৩ কবির ঘরে কোন কোন জিনিস চড়ুই পাখিটির চোখে পড়ে ?
উঃ কথকের ঘরে জানালা, দরজা, টেবিল, ফুলদানি, বইখাতা ইত্যাদি জিনিস চড়ুই পাখিটির চোখে পড়ে।
২.৪ ইচ্ছে হলেই চড়ুইপাখি কোথায় চলে যেতে পারে ?
উঃ ইচ্ছে হলেই চড়ুইপাখিটি এপাড়ায়-ওপাড়ায় পালেদের-বােসেদের বাড়ি চলে যেতে পারে ।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখাে :
৩.১. “চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই/বাসা বাঁধে।”—চড়ুই পাখিকে এখানে ‘চতুর’ বলা হল কেন ?
উঃ তারাপদ রায়ের লেখা একটি চড়ুই পাখি’ কবিতা থেকে আলােচ্য উদ্ধৃতিটি গৃহীত হয়েছে। ‘চতুর’ অর্থাৎ চালাক, চড়ুই পাখি নিজেই নিজের সুবিধামতাে সবকিছু করে। সে বােঝে, বাসা তৈরি করা সহজ নয়— বেশ কঠিন ও কষ্টকর। ইচ্ছে করলেই, করা যায় না। নিজের দিকটি বজায় রেখে চড়ুইপাখিটি এমন ভাব প্রকাশ করে, যেন তার উপস্থিতি ছাড়া কথকের সব কিছুই অচল। বরং, সে আছে বলেই সবকিছু স্বাভাবিক, স্বচ্ছন্দ। চড়ুই পাখির এই ভাবনা থেকেই কথক তাকে ‘চতুর’ বলেছেন।
৩.২ কবিতায় বিধৃত চিত্রকল্পগুলি দৃষ্টান্ত-সহ আলােচনা করাে।
উঃ চিত্রকল্প’ কথাটির সাধারণ অর্থ হল— ভাবনায় বা কল্পনায় আঁকা ছবি। আবার উলটোভাবে কবি বা লেখকের বর্ণনা থেকে পাঠকরা যে ভাবচিত্র এঁকে নেয়, তাকেও চিত্রকল্প বলা যেতে পারে। কবিতায় উদ্ধৃত চিত্রকল্পগুলি হল—(১) “অন্ধকার ঠোটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে’,(২)‘চাহনিতে তাচ্ছিল্য মজার, ভাবটা’ইত্যাদি। অলােচ্য চিত্রকল্প দুটিতে সন্ধ্যা নেমে আসার পর রাত্রির অবশ্যম্ভাবী পরিণতি এবং মানুষে মানুষের সম্পর্কের উত্থান-পতনের চিত্র ভেসে ওঠে। এভাবেই কবিতায় চিত্রকল্প ব্যবহৃত হয়েছে।
৩.৩ হয়তাে ভাবে… –চড়ুই পাখি কী ভাবে বলে কবি মনে করেন ?
উঃ তারাপদ রায়ের লেখা একটি চড়ুই পাখি’ কবিতা থেকে আলােচ্য উদ্ধৃতিটি গৃহীত হয়েছে। ‘হয়তাে ভাবে’– কথাটির মাধ্যমে চড়ুই পাখির ভাবনার কথা বলা হয়েছে। সে ভাবে ঘরে থাকা এই মানুষটি অর্থাৎ, কথক চলে গেলে এই ঘর তার হয়ে যাবে। ঘরের জানালা, দরজা, টেবিল, ফুলদানি, বইখাতা সবই তার নিজের হবে। বিধাতা তাকে হয়তাে সবকিছুই দিয়ে দেবেন।
৩.৪ “আবার কার্নিশে বসে চাহনিতে তাচ্ছিল্য মজার, …” -তাচ্ছিল্যভরা মজার চাহনিতে তাকিয়ে চড়ুই কী ভাবে ?
উঃ তারাপদ রায়ের লেখা একটি চড়ুই পাখি’ কবিতা থেকে আলােচ্য উদ্ধৃতিটি গৃহীত হয়েছে। কার্নিশে বসে তাচ্ছিল্যভরা মজার চাহনিতে চড়ুইপাখির ভাবনা একটু অন্যরকম। এখানে তার ভাবনা সে এই বাজে ঘরে আছে কেবল এক মায়ার টানে। নেহাতই দায়ে পড়ে মায়ার বন্ধনে সে আবদ্ধ। তার শরীর-মন মায়ায় ভরা। তা-না-হলে ইচ্ছে করলেই সে এপাড়ার-ওপাড়ার পালেদের বা বােসেদের বাড়ি আজই চলে যেতে পারে।
৩.৫ চড়ুইপাখিকে কেন্দ্র করে কবির ভাবনা কীভাবে আবর্তিত হয়েছে, তা কবিতা অনুসরণে আলােচনা করাে।
উঃ তারাপদ রায়ের লেখা একটি চড়ুই পাখি’ কবিতায় চড়ুই পাখিকে কেন্দ্র করে কথকের নিজস্ব ভাবনাই আসলে পরিস্ফুট হয়েছে। কথক ভাবেন চতুর চড়ুই। পাখিটি কেবলমাত্র তাঁর ঘরেই বাসা বাঁধে। সে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আসে। ঘর জুড়ে কিচিমিচি গান করে। কাছাকাছি এসে অবাক চোখে ভাবে, লােকটি চলে গেলে এই ঘর, জানালা, দরজা, টেবিল, ফুলদানি, বইখাতা সবই তার হবে। বিধাতা তাকে সব দিয়ে দেবেন। আবার কার্নিশে বসে তাচ্ছিল্যের চাহনিতে মজার ভঙ্গিতে ভাবে, মায়ার শরীর বলেই সে নিতান্ত দয়াপরবশত হয়ে এঘরে আছে। ইচ্ছে হলে, পাখিটি আজই অন্য পাড়ায় পালেদের বা বােসেদের বাড়ি চলে যেতে পারে। তবুও সে যায় না। রাত্রির নির্জন ঘরে কথক আর চড়ুইপাখিটি একা থেকে যায়।
৩.৬ “তবুও যায় না চলে এতটুকু দয়া করে পাখি”—পঙক্তিটিতে কবির মানবিকতার কীরূপ প্রতিফলন লক্ষ করা যায় ?
উঃ তারাপদ রায়ের লেখা একটি চড়ুই পাখি’ কবিতা থেকে আলােচ্য উদ্ধৃতিটি গৃহীত হয়েছে। কবি অনুভব করেন, চড়ুই পাখিটির নানান ভাবভঙ্গি, চিন্তা-ভাবনা। এই অনুভবের সূত্রেই শেষপর্যন্ত কবি এক পরিচ্ছন্ন মানসিকতায় একক ভাবনায় একাত্ম হন। তিনিও চড়ুই পাখির মতন বিশ্বের অন্য সব কিছুকে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে দেখে যান। সবই নশ্বর, তবুও নিতান্ত মায়ার টানেই এই পৃথিবীতে তাঁকে থেকে যেতে হয়। পৃথিবীতে সবাই একা-নিঃসঙ্গ। কারও প্রতি কারও দায় নেই।তবুও মায়ার অদৃশ্য বন্ধনে পারস্পরিক নির্ভরতায় সবাই বাঁচে। কথকের নিঃসঙ্গ অবস্থায় চড়ুই পাখিটি তাঁকে সঙ্গ দেয়। কথকও জগতের সবাইকে সেভাবেই সাধ্যানুসারে সঙ্গ দেন। তিনিও অন্য সকলের মতাে অদৃশ্য মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকেন।
৩.৭ ছােট্ট চড়ুই পাখির জীবনবৃত্ত কীভাবে কবিতার ক্ষুদ্র পরিসরে আঁকা হয়েছে তার পরিচয় দাও।
উঃ চড়ুইপাখির জীবন নিতান্ত একঘেয়ে। কথকের ঘরে সে বাসা বেঁধেছে। সে সকালে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। আবার সন্ধ্যার সময় ফিরে আসে। তার ফিরে আসার মাধ্যমে কথক উপলব্ধি করেন, অন্ধকার সমাগত। এই ঘরের জিনিসপত্রের দাবিদার সেও। তবুও বিধাতার করুণা সে চায়। কথকের প্রতি তার একটু সহানুভূতি ও তাচ্ছিল্য ভাব আছে। আবার মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সে এই বাজে ঘর ছাড়তে চেয়েও পারে না। মানুষের যেমন নিজস্ব বিষয়ের প্রতি মায়া থাকে, পাখিটিরও তাই আছে। কথককে ফেলে সে যেতে পারে না। অথচ ভাবটি এই যে, সে চাইলে সহজেই যেতে পারে। কবিতার কথকের মতাে পাখিটিও একইরকম করে দিনপাত করে।
৩.৮ “কৌতূহলী দুই চোখ মেলে/অবাক দৃষ্টিতে দেখে—” চড়ুইপাখির চোখ কৌতূহলী’ কেন ? তার চোখে কবির সংসারের কোন্ চালচিত্র ধরা পড়ে ?
উঃ তারাপদ রায়ের লেখা একটি চড়ুই পাখি’ কবিতায় চড়ুইপাখিটি প্রতিদিনই কবির নিত্যকার জীবন প্রত্যক্ষ করে। নিত্যনতুন কিছু দেখার জন্য সে হয়তাে আগ্রহী থাকে। হয়তাে প্রতিদিনই সে নতুন কিছু দেখে। কথকের ওপর তার প্রত্যাশা বেশি। একারণেই। চড়ুইপাখিটির কৌতূহলী চোখ।
   তার চোখে কথকের সংসারের চালচিত্র এক ভাবেই ধরা পড়ে। হয়তাে তার মতােই কথক সারাদিন পরিশ্রম করে রাত্রে এই ঘরেই ফিরে আসেন। এই টেবিল ফুলদানির সামনে বইখাতা নিয়ে বসে পড়েন। কিংবা তার ঘরেই ধান ছড়িয়ে রাখে। কথক নিজের কাছে একনিষ্ঠ। হয়তাে পাখিটির মতাে কবিও অদৃশ্য মায়ার বন্ধনে নিত্যকার একঘেয়ে জীবনকে টেনে নিয়ে চলেছেন।
৩.৯ “রাত্রির নির্জন ঘরে আমি আর চড়ুই একাকী।” পঙক্তিটিতে ‘একাকী’ শব্দটি প্রয়ােগের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উঃ একাকী’ অর্থাৎ, একক অবস্থান। অন্যভাবে বলা যায় নিঃসঙ্গতা। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ভাবনায় একক ও স্বতন্ত্র। ব্যক্তি মন আলাদা অবস্থানে নিজের মতাে ভাবে। চড়ুইপাখি যেমন নিজের বিষয় নিয়ে ভাবছে, তেমনই কবিও তাঁর নিজের মতাে করে চিন্তা করছে। এই চিন্তার মধ্যে কোনাে মিল নেই। আসলে প্রত্যেকেই নিজ নিজ জগতে আলাদা। রাত্রির নির্জনতায় এই একক অনুভূতি আরও গভীরতর হয়। মনের মধ্যে আলাদা জগৎ গড়ে নিয়ে কবি ও চড়ুই পাখি নিজের মতাে করে সব কাজ করে যায় বলেই উদ্ধৃত পঙক্তিতে ‘একাকী’ কথাটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
৩.১০ ‘একটি চড়ুই পাখি’ ছাড়া কবিতাটির অন্য কোনাে নামকরণ করাে। কেন তুমি এমন নাম দিতে চাও, তা বুঝিয়ে লেখাে।
উঃ ‘একটি চড়ুই পাখি’ ছাড়া কবিতাটির যে নামকরণ করা যায়, তা হল ‘সঙ্গী। কবিতাটির বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে একটি চড়ুইপাখির জীবনকে কেন্দ্র করে কবির অনুভূতি ফুটে উঠেছে কবিতায়। কবির ঘরে সে বাসা বেঁধেছে। নিঃসঙ্গ কবিকে সঙ্গ দেয় চড়ুইপাখিটি। কবি ও পাখিটি যেন এক অদৃশ্য মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ। পাখিটির কাছে অন্যত্র বাসা বাঁধার সুযােগ থাকলেও কবিকে সে পরিত্যাগ করে যায় না। এক অদৃশ্য পারস্পরিক নির্ভরতায় তারা বেঁচে থাকে। তাই কবিতাটির বিষয় ও ভাবার্থ বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ‘সঙ্গী’ নামটিও কবিতাটির জন্য সুপ্রযুক্ত হতে পারে।
৪ নীচের শব্দগুলির প্রকৃতি-প্রত্যয় নির্ণয় করাে : সন্ধ্যা, কৌতূহলী, দৃষ্টি।
✓ সন্ধ্যা = সম্ + ধৈ + যঞ্ + আ ।
✓ কৌতুহলী = কুতূহল + অ + ঈ।
✓ দৃষ্টি = দৃশ + তি ।
৫. নীচের বাক্যগুলির ক্রিয়ার কাল নির্ণয় করাে :
৫.১ চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই বাসা বাঁধে
উঃ নিত্য বর্তমান কাল।
৫.২ বই-খাতা এসব আমার-ই হবে।
উঃ সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল।
৫.৩ আবার কার্নিশে বসে।
উঃ নিত্য বর্তমান কাল।
৫.৪ এই বাজে ঘরে আছি।
উঃ সাধারণ বর্তমান কাল।
৫.৫ ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি।
উঃ সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল।
৬. নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও :
৬.১ অন্ধকার ঠোটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে যেই সেও ফেরে। (সরল বাক্যে)
উঃ অন্ধকার ঠোটে নিয়ে সন্ধ্যার সঙ্গে সেও ফেরে।
৬.২ কখনাে সে কাছাকাছি কৌতুহলী দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে। (নিম্নরেখাঙ্কিত শব্দের বিশেষ্যের রূপ লিখে বাক্যটি আবার লেখাে )
উঃ কখনও সে কাছাকাছি কৌতূহলভরা দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে।
৬.৩। আমাকেই দেবেন বিধাতা। (না-সূচক বাক্যে)
উঃ আমাকে না-দিয়ে বিধাতা থাকবেন না।
৬.৪। এই বাজে ঘরে আছি নিতান্ত মায়ার শরীর আমার তাই। (জটিল বাক্যে)
উঃ যেহেতু আমার নিতান্তই মায়ার শরীর সেহেতু এই বাজে ঘরে আছি।
৬.৫ ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি এ পাড়ায় ও পাড়ায় পালেদের বােসেদের বাড়ি। (জটিল বাক্যে)
উঃ যদি ইচ্ছে হয় তবে আজই এ পাড়ায় ও পাড়ায় পালেদের-বােসেদের বাড়ি যেতে পারি।
৭. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করাে : চড়ুই, ধান, চোখ, জানলা, দোর, ইচ্ছে, পাখি।
» চড়ুই = চড়াই > চড়ুই = স্বরসংগতি।
» ধান = ধান্য > ধান ব্যঞ্জনধ্বনিলােপ।
» চোখ = চক্ষু > চোখ = স্বরসংগতি ও ধ্বনিলােপ।
» জানলা = জানালা > জানলা = স্বরধ্বনিলােপ।
» দোর = দ্বার > দুয়ার > দোর স্বরলােপ ও স্বরসংগতি।
» ইচ্ছে = ইচ্ছা > ইচ্ছে = স্বরসংগতি।
» পাখি = পক্ষী > পাখি = সমীকরণ/ব্যঞ্জনলােপ।
৮ ‘চোখ’ শব্দটিকে পৃথক পৃথক অর্থে ব্যবহার করে বাক্য রচনা করাে :
✓ চোখ ওঠা = (অসুখ) = তােমার চোখ এত লাল কেন—চোখ ওঠেনি তাে?
✓ চোখ বােজা = (মৃত্যু) = পরিবারকে অসহায় অবস্থায় রেখে রমেনবাবু চোখ বুজলেন।
✓ চোখ বােলানাে = (দ্রুত দেখে নেওয়া) = আর দশ মিনিট বাকি, খাতাটায় একটু চোখ বুলিয়ে নিই। )
✓ চোখে লাগা = (পছন্দ হওয়া) = ব্যাগটা চোখে লেগেছে—কিনতেই হবে।
✓ চোখের পর্দা = (লজ্জা) = বয়স্কদের সামনে ছেলেটির এই হাবভাব দেখে মনে হয় ওর চোখের পর্দা বলতে কিছু নেই।
✓ চোখের বালি = (বিরক্তির কারণ) = আমি কি তােমার চোখের বালি যে এভাবে কথা বলছ?

This Post Has One Comment

Leave a Reply