গড়াই নদীর তীরে প্রশ্ন উত্তর | শব্দার্থ ও টিকা | বহুবিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর Class 8 Bengali [WBBSE]

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

 

• সূচিপত্র : 

১. উৎস।
২. সারসংক্ষেপ। 
৩. শব্দার্থ ও টিকা।
৪. বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন উত্তর।
৫. হাতে কলমে’র প্রশ্ন ও উত্তর।
 
        গড়াই নদীর তীরে
                    —জসিমউদ্দিন
 
১. উৎস : ‘গড়াই নদীর তীরে’ কাব্যাংশটি পল্লিকবি জসীমউদ্দীন রচিত ‘সোজন
বাদিয়ার ঘাট’ শীর্ষক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ।
 
২. সারসংক্ষেপ : জসীমউদ্দীন রচিত ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ শীর্ষক কাব্যাংশে একটি গ্রামের নদীতীরের দৃশ্য বর্ণিত হয়েছে । গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত কুটিরটিকে পরম মমতায় ঘিরে রয়েছে গাছের লতাপাতা। সকাল-সন্ধ্যায় ফুটে ওঠা নামহীন বুনোফুল আলো-বাতাসের ছোঁয়ায় যেন হেসে ওঠে। মাচানের উপর থেকে সিম, লাউ আর কুমড়ো গাছ তাদের ফুলগুলিকে আড়াআড়িভাবে সাজিয়ে যেন সেই কুটিরের শোভা বাড়িয়ে তুলেছে। কুটিরের সামনের জমিতে সারিবদ্ধভাবে লাল নটে শাক যেন রঙের ঢেউ ছড়িয়ে দিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে, যেন সেই কুটিরের কোনো বধূ তার লাল শাড়িটিকে রোদে বিছিয়ে দিয়েছেন। আশেপাশের ডোবা থেকে মেয়ে ডাহুক পাখিরা তাদের ছানাদের সঙ্গে নিয়ে বিচিত্র স্বরে গান গেয়ে নির্ভয়ে কুটিরের সামনে ঘুরে বেড়ায়। মানুষের থাকার কথা তারা যেন টের পায়নি—এমনই স্বচ্ছন্দ আর স্বাভাবিক তাদের চলাফেরা। কুটিরের বাইরে রোদে সযত্নে শুকোতে দেওয়া হয়েছে মটরের ডাল, মসুরের ডাল, কালোজিরে, ধনে, লংকা, মরিচ ইত্যাদি, যার মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে সুখী স্বচ্ছল গৃহস্থালির পরিচয়। কবির মনে হয়েছে সেখানে যেন বিচিত্র রং দিয়ে অপূর্ব আলপনা আঁকা হয়েছে। সন্ধ্যা-সকালের রঙিন মেঘেরাও আকাশে;ভেসে বেড়ানোর সময়ে এই কুটিরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে থমকে দাঁড়ায়। অর্থাৎ কবি গ্রামবাংলার প্রকৃতির নানা উপকরণের মধ্যেই রঙের সমারোহ লক্ষ করেছেন। আর সেই মুক্ত পরিবেশের মধ্যেই যেন একটি গ্রাম্য পরিবার
সুখে আনন্দে তাদের দিন কাটায়।
 
৩. শব্দার্থ ও টীকা
» ফুটি— ফুটিয়া বা ফুটে
» ঝাড়— ছোটো ঝোপ
» আড়া-আড়ি— কোনা-কুনি
» বুনো— বন্য
» মাচান— বাঁশ দিয়ে তৈরি উঁচু মাচা
» তল— তলা বা নীচ
» এঁদো— পানাপড়া, পাঁক-ভরতি
» ডাহুক— জলে বিচরণকারী এক ধরনের পাখি, ডাকপাখি
» হেথায়— এখানে
» বসত— বাসস্থান
» সাঁঝ-সকাল— সন্ধ্যা সকাল 
» সযতনে— যত্নের সঙ্গে। 
» আখরে— অক্ষরে 
» জীবন্ত— প্রাণবন্ত
 
৪. বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন উত্তর :
 
১. গড়াই নদীর তীরে কবিতাটি কার লেখা ?
(ক) সুকান্ত ভট্টাচার্য (খ) বুদ্ধদেব দাশ 
(গ) জসীমউদ্দীন (ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
 
উত্তরঃ (গ) জসিমউদ্দিন।
 
২. গড়াই নদীর তীরে কবিতাটি জসীমউদ্দীনের যে কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে—
(ক) নকশী কাঁথার মাঠ 
(খ) ধান খেত 
(গ) সোজনবাদিয়ার ঘাট 
(ঘ) বালুচর
 
উত্তরঃ (গ) সোজনবাদিয়ার ঘাট।
 
৩. পল্লীকবি জসিম উদ্দিন জন্ম নেন বর্তমান বাংলাদেশের যে জেলায়—
(ক) ঢাকা (খ) ময়মনসিংহ (গ) কুমিল্লা 
(ঘ) ফরিদপুর
 
উত্তরঃ (ঘ) ফরিদপুর।
 
৪. ‘_______ লতা পাতায় ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে।’— শূন্যস্থানে সঠিক শব্দটি বসাও।
(ক) কুটিরখানিরে (খ) গ্রামখানিরে 
(গ) বাড়িখানিরে (ঘ) ঘরখানিরে
 
উত্তরঃ (ক) কুটিরখানিরে।
 
৫. উঠানের কোণে বুনো ফুলগুলি হেসে কি হয় ?
(ক) লটোপুটি হয় (খ) কুটি কুটি হয়
(গ) গড়াগড়ি হয় (ঘ) খুনোখুনি হয়
 
উত্তরঃ (খ) কুটি কুটি হয়।
 
৬. গড়াই নদীর তীরে কবিতায় উঠোনের রোদে শুকোচ্ছে— 
(ক) জামা কাপড় (খ) ধান (গ) লঙ্কা মরিচ 
(ঘ) কোনোটিই নয়
 
উত্তরঃ (গ) লঙ্কা মরিচ।
 
৭. এখনো কারা বোঝেনি কুটিরে মানুষ বাস করে ?
(ক) বাঘ (খ) বানর (গ) মানুষ (ঘ) পাখি
 
উত্তরঃ (ঘ) পাখি।
 
৮. এ বাড়ীর যত আনন্দ হাসি আঁকা যেন—
(ক) ডুবন্ত (খ) জীবন্ত (গ) ফুটন্ত (ঘ) উড়ন্ত
 
উত্তরঃ (খ) জীবন্ত।
 
৯. গড়াই নদীর তীরে কবিতায় বাংলার যে দুটি সবজির নাম একত্রে উচ্চারিত হয়েছে, তা হল—
(ক) পটল-সিম (খ) লাউ-কুমড়ো (গ) বেগুন-লাউ 
(ঘ) শিম-লাউ
 
উত্তরঃ (খ) লাউ-কুমড়ো।
 
১০. লাল শাড়ি খানি রোদে দিয়ে গেছে 
(ক) এ বাড়ির কোন বধূ 
(খ) ও বাড়ির কাকিমা 
(গ) এ বাড়ির কাজের লোক 
(ঘ) ও বাড়ির ছোট্ট মেয়েটি
 
উত্তরঃ (ক) এ বাড়ির কোন বধূ।
 
১১. ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় দুটি ডালের কথা আছে, ডাল দুটি হলো—
(ক) মুগ ও মসুর (খ) ছোলা ও মুগ 
(গ) মটর ও ছোলা (ঘ) মসুর ও মটর
 
উত্তরঃ (ঘ) মসুর ও মটর।
 
১২. সাঁঝ সকালে গড়াই নদীর তীরে কারা বেড়াতে আসে ?
(ক) রঙিন পাখিরা (খ) রঙিন মেঘেরা
(গ) রঙিন প্রজাপতিরা (ঘ) রঙিন মৌমাছিরা
 
উত্তরঃ (খ) রঙিন মেঘেরা।
 
১৩. মাচানের নিচে যে শাক্ হয়েছে—
(ক) নটে শাক (খ) পাটের শাক (গ) মূলো শাক
(ঘ) কলমি শাক 
 
উত্তরঃ (ক) নটে শাক।


৫. হাতে কলমে’র প্রশ্ন ও উত্তর।
 
১.১ কবি জসীমউদ্দীন কোন্ অভিধায় অভিহিত ?
 
উত্তরঃ কবি জসীমউদ্দীন ‘পল্লিকবি’ অভিধায় অভিহিত।
 
১.২ তাঁর লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখাে। 
 
উত্তরঃ তাঁর লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম হল ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ ও ‘রাখালী।
 
২. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
 
২.১ কবিতায় বর্ণিত নদীটির নাম কী ?
 
উত্তরঃ কবিতায় বর্ণিত নদীটির নাম গড়াই নদী। 
 
২.২ মাচানের পরে কী আছে ?
 
উত্তরঃ মাচানের পরে সিম-লতা এবং লাউ-কুমড়ার ঝাড় আছে।
 
২.৩ মানুষের বসত করার কথা এখানে কারা বােঝেনি ?
 
উত্তরঃ এখানে মানুষের বসত করার কথা বােঝেনি বনের পাখিরা।
 
২.৪ উঠানেতে কী কী শুকোচ্ছে ?
 
উত্তরঃ উঠানেতে মটরের ডাল, মুসুরের ডাল, কালোজিরা, ধনে, লংকা আর গােল মরিচ শুকোচ্ছে।
 
২.৫ বাড়িটিকে ভালােবেসে কারা বেড়াতে এলে কিছুক্ষণ থেমে রয় ?
 
উত্তরঃ বাড়িটিকে ভালােবেসে সন্ধ্যা-সকালে রঙিন মেঘেরা বেড়াতে এলে কিছুক্ষণ থেমে রয়।
 
৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
 
৩.১ ‘কুটিরখানিরে লতাপাতা ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে।’ —এখানে কুটিরটিকে লতাপাতা-ফুলের মায়া দিয়ে ঘিরে রাখা বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? 
 
উত্তরঃ গড়াই নদীর তীরে ছােট্ট একটি কুটির, যাকে নানা রকমের লতা জাতীয় গাছ এবং নানা প্রকারের ফুল গাছ পরস্পর মায়া মমতায় ঘিরে রেখেছে। ফুল গাছগুলি মৃদু বাতাসের তালে তাল রেখে হেলে-দুলে এবং আলােতে খেলা করে সন্ধ্যা ও সকালে প্রস্ফুটিত হয়। উঠোনের কোণায় ফুটে থাকা বুনাে ফুলগুলিও হেসে লুটোপুটি খেতে থাকে। এ ছাড়া, মাচার ওপর থাকা সিম-লতা এবং লাউকুমড়াে গাছগুলিও আড়াআড়িভাবে শরীর দোলাতে থাকে। মাচার তলায় গজিয়ে ওঠা লাল রঙের নটে শাকগুলি তাদের রঙের ঢেউ মেলে দিয়েছে। এদের সবার সঙ্গে গৃহটির যেন এক হার্দিক সম্পর্ক। এরা মায়া-মমতা দিয়ে কুটিরটিকে বেষ্টন করে আছে।
 
৩.২ ‘ডাহুক মেয়েরা বেড়াইতে আসে গানে গানে কথা কয়ে’— ‘ডাহুক মেয়ে’ কারা ? তারা কাদের নিয়ে আসে ? তারা কীভাবে কথা বলে ?
 
উত্তরঃ ‘ডাহুক মেয়ে’ বলতে, এক জাতীয় জলচর স্ত্রী পাখিকে বােঝানাে হয়েছে।
 
» ডাহুক মেয়েরা নােংরা পঙ্কিল জলাশয় থেকে তাদের ছােটো ছােটো ছানাদের নিয়ে আসে।
 
  » ডাহুক পাখিরা সাধারণত জলাশয়ে বিচরণ করে। এই গড়াই নদীর তীরে এসে গানে গানে তারা তাদের সুখের-আনন্দের কাহিনি একে অপরকে শােনায়।
 
৩.৩ “যেন একখানি সুখের কাহিনি নানান আখরে ভরি’’ —“আখর’ শব্দটির অর্থ কী ? সুখের কাহিনির যে নানা ছবি কবি এঁকেছেন তার মধ্যে কোনটি তােমার সবচেয়ে বেশি ভালাে লেগেছে এবং কেন ? 
 
উত্তরঃ ‘আখর’ শব্দটির অর্থ হল—অক্ষর বা বর্ণ।
 
   » পাঠ্য কবিতাটিতে কবি জসীমউদ্দীন সুখের অনেকগুলি ছবি এঁকেছেন। এই সুখের চিত্রের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালাে লেগেছে মটরের ডাল, মসুরের ডাল, কালােজিরা, ধনে এবং লংকা-মরিচ দিয়ে যে সুন্দর আলপনার মতাে আঁকা হয়েছে—সেই চিত্রটি। এ চিত্র উপদ্রবহীন, শান্তিপূর্ণ সুখের নীড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। গ্রামের অতি পরিচিত শাকসবজির একত্র সমাবেশ আমাদেরকে মুগ্ধ করে। মটর, মসুর, কালােজিরা, ধনে, লংকা-মরিচ একসঙ্গে উঠোনে শুকোতে দেওয়া— শস্য-শ্যামলা বঙ্গভূমির কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই এই চিত্রটিকে আমার ভালাে লেগেছে।
 
৩.৪ ”কিছুখন যেন থামিয়া রয়েছে এ বাড়িরে ভালােবেসে।” —রঙিন মেঘেরা বাড়িটিকে ভালােবেসে থেমে থাকে। এর মধ্য দিয়ে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন ? 
 
উত্তরঃ পল্লিকবি জসীমউদ্দিনের ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত পঙক্তিটি নেওয়া হয়েছে। নদীতীরে কুটিরের ওপর দিয়ে নিরন্তর সােনালি মেঘের আনাগােনা দেখা যায়। রঙিন মেঘেরা হাওয়ায় সর্বত্র ভেসে বেড়ায়। অবিরাম-অবিশ্রান্ত তাদের চলা। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত তাদের বাধাহীন যাতায়াত। কোথাও থামে না তারা। কিন্তু তারা যখন গড়াই নদীর তীরে এই ছােট্ট কুটিরের কাছে আসে, তখন তারা শুধুমাত্র ভালােবাসার টানে তাদের ব্যস্ততার মধ্যেও একটু থেমে যায়। অন্যদের মতাে তারাও গড়াই নদীর তীরের কুটিরটিকে ভালােবাসে। কুটিরটিকে ভালােবেসে থেমে থাকার মধ্যে দিয়ে কবি এক হৃদয়ের সম্পর্ককে বােঝাতে চেয়েছেন।
 
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :
৪.১ ‘এ বাড়ির যত আনন্দ হাসি আঁকা জীবন্ত করি’ কবিতায় কবি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম যে গ্রামীণ কুটিরের জীবন্ত ছবি এঁকেছেন, তার বিবরণ দাও।
 
উত্তরঃ কবি জসীমউদ্দীন গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত একটি কুটিরের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্কের এক জীবন্ত ছবি এঁকেছেন। কুটিরটিকে ঘিরে আছে নানান জাতীয় লতাপাতা ও বিভিন্ন রকমের বুনাে ফুল গাছ। লাউ-কুমড়াের ঝাড়ের নীচে নটে শাকের লাল রঙের উজ্জ্বলতা মনকে ভরিয়ে দেয়। বিভিন্ন পাখিও এই কুটিরের টানে এখানে আসে এবং গাছের শাখায় বসে নির্ভয়ে গান ধরে। উঠোনে শুকোতে দেওয়া মটর, মসুরের ডাল, কালােজিরা, ধনে এবং লংকামরিচকে দেখে মনে হয় যেন আলপনা আঁকা উঠোন। ছােট্ট এই কুটিরটির সমস্ত আনন্দই যেন জীবন্ত ছবির মতাে প্রকাশ পেয়েছে। সমস্ত প্রকৃতি মায়া-মমতায় এই গ্রামীণ কুটিরটিকে বেষ্টন করে আছে।
 
৪.২ ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় কবি পরম মমতায় গ্রামীণ কুটিরের ছবি এঁকেছেন। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজের বাড়ির সঙ্গে এমন একটি মমতাময় সম্পর্ক আছে। তুমি তােমার বাড়ির বিভিন্ন অনুষঙ্গের বিবরণ দিয়ে একটি অনুচ্ছেদ লেখাে। 
 
উত্তরঃ গড়াই নদীর তীরে কবিতায় কবি পরম মমতায় গ্রামীণ কুটিরের ছবি এঁকেছেন। সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশের বর্ণনা দিয়ে কবি বলেছেন— সুপারি গাছ, খেজুর গাছ ও আম গাছ দিয়ে ঘেরা এই ছােট্ট কুটির। বাড়ির উঠোনের পাশে গাঁদা ফুলগুলি উঠোনটিকে যেন আলাে করে রাখে। অন্যান্য গাছপালাগুলি সমস্ত ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে বাড়িটিকে রক্ষা করে। প্রবল ঝড়কে তারা প্রতিহত করে। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে তারা কুটিরটিতে সযত্নে ছায়া বিছিয়ে রাখে। বাড়ির সঙ্গে এই সমস্ত গাছগাছালির যেন এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের পাখিরাও নির্ভয়ে এসে গাছে বসে বাড়িটিকে কলকাকলিতে ভরিয়ে তােলে। পাখিগুলাের সঙ্গে বাড়ির মানুষের যেন আত্মিক সম্পর্ক। কেউ কারাে কোনাে ক্ষতি করে না। পাখিরা নিশ্চিন্তে বসে থাকে, উঠানে চরে বেড়ায়। নানারকমের পাখি, যারা সারাদিন খাদ্যের খোঁজে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ায়, তারা সন্ধে বেলা পরম নিশ্চিন্তে বাড়ির বাগানের গাছে এসে আশ্রয় নেয়। এভাবেই বাড়ির সাথে বিভিন্ন গাছপালা ও পাখিদের এক নিবিড় ভালােবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
 
৫. নীচের বাক্যগুলি থেকে ক্রিয়ার কাল নির্ণয় করাে :
 
৫.১ কুটিরখানিরে লতাপাতা ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে। 
 
উত্তরঃ পুরাঘটিত বর্তমান কাল।
 
৫.২ উঠানের কোণে বুনাে ফুলগুলি হেসে হয় কুটিকুটি। 
 
উত্তরঃ সাধারণ বর্তমান কাল।
 
৫.৩ লংকা-মরিচ রােদে শুকাইছে উঠোনেতে সযতনে। 
 
উত্তরঃ ঘটমান বর্তমান কাল।
 
৫.৪ জিরা ও ধনের রঙের পাশেতে আলপনা আঁকা কার ! 
 
উত্তরঃ সাধারণ বর্তমান কাল।
 
৫.৫ কিছুখন যেন থামিয়া রয়েছে এ বাড়িরে ভালােবেসে। 
 
উত্তরঃ পুরাঘটিত বর্তমান কাল।
 
৬. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করাে :
 
৬.১ লাল শাড়িখানি রােদে দিয়ে গেছে এ বাড়ির বধূ কেউ। (জটিল বাক্যে)
 
উত্তরঃ লাল শাড়িখানি যে রােদে দিয়ে গিয়েছে, সে এ বাড়িরই কোনাে বধূ।
 
৬.২ ডাহুক মেয়েরা বেড়াইতে আসে গানে গানে কথা কয়ে। (চলিত গদ্যে)
 
উত্তরঃ ডাহুক মেয়েরা গানে গানে কথা বলে বেড়াতে আসে। 
 
৬.৩ গাছের শাখায় বনের পাখিরা নির্ভয়ে গান ধরে। (না-সূচক বাক্যে) 
 
উত্তরঃ গাছের শাখায় বনের পাখিদের গান ধরাতে ভয় পায় না। 
 
৬.৪ এখনাে তাহারা বােঝেনি হেথায় মানুষ বসত করে।(যৌগিক বাক্যে)
 
উত্তরঃ হেথায় মানুষ বসত করে কিন্তু এখনাে তাহারা তা বােঝেনি। 
 
৭. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করাে : কুমড়া, কালিজিরা, উঠান, সযতনে, আখর, সাঁঝ।
 
» কুমড়া— কুষ্মাণ্ড > কুস্মাডঅ > কামাড় > কুমড়া > কুমড়াে (স্বরসংগতি)।
 
» কালিজিরা— কালােজিরা > কালিজিরা (স্বরসংগতি)।  
 
» উঠান— উঠান > উঠোন (স্বরসংগতি)।
 
» সযতনে— সযত্নে > সযতনে (স্বরভক্তি)।
 
» আখর— অক্ষর > আখর (ক্ষতিপূরক দীর্ঘিভবন)। 
 
» সাঁঝ— সন্ধ্যা > সাঁঝ (নাসিক্যভবন)।
 
৮. কারক-বিভক্তি নির্ণয় করাে :
 
৮.১ গড়াই নদীর তীরে।
 
» তীরে — অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
 
৮.২ উঠানের কোণে বুনাে ফুলগুলি হেসে হয় কুটি কুটি।
 
» বুনাে ফুলগুল— কর্তৃকারকে ‘গুলি’ নির্দেশক। 
 
৮.৩ গাছের শাখায় বনের পাখিরা নির্ভয়ে গান ধরে।
 
» গান — কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
 
৮.৪ যেন একখানি সুখের কাহিনি নানান আখরে ভরি। 
 
» আখরে — করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
 
৮.৫ সাঁঝ-সকালের রঙিন মেঘেরা এখানে বেড়াতে এসে।
 
» রঙিন-মেঘেরা — কর্তৃকারকে ‘এরা’ বিভক্তি।
 
৯. নীচের শব্দগুলির মধ্যে কোনটি কোন শ্রেণির বিশেষ্য তা নির্দেশ করাে :মানুষ, আনন্দ, ফুলগুলি, আলপনা ।
 
» মানুষ— জাতিবাচক বিশেষ্য।
 
» আনন্দ— ভাববাচক বিশেষ্য।
 
» ফুলগুলি— বস্তুবাচক বিশেষ্য।
 
» আলপনা— ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য ।
 
১০. নীচের শব্দগুলির মধ্যে কোটি কোন্ শ্রেণির সর্বনাম তা নির্দেশ করাে : যার, তাহারা, কেউ, তার।
 
» যার— অনির্দেশক সর্বনাম ।
 
» তাহারা— ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।
 
» কেউ— অনির্দেশক সর্বনাম।
 
» তার— ব্যক্তিবাচক সর্বনাম ।
 
১১. এঁদো, লাল, বুননা, রঙিন— বিশেষণগুলির সাহায্যে নতুন শব্দবন্ধ তৈরি করাে :
 
» এঁদো— এঁদো গলি।
 
» লাল— লাল-ঝুঁটি।
 
» বুননা— বুনাে ওল। 
 
» রঙিন— রঙিন মোজা।

This Post Has One Comment

Leave a Reply