নাটোরের কথা প্রশ্ন উত্তর | শব্দার্থ ও টিকা | অষ্টম শ্রেণি বাংলা | MCQ Question Answer [WBBSE]

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

 

          নাটোরের কথা

                —অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
 
উৎস : নাটোরের কথা রচনা ছুটি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ঘরোয়া গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
 
• শব্দার্থ ও টীকা :
» স্বদেশি যুগ— ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময়কাল
» প্রচলন— শুরু
» ভূমিকম্প—”প্রাকৃতিক ঘটনা, মাটি কেঁপে ওঠা
» রিসেপশন কমিটি— অভ্যর্থনা পরিষদ
» সম্ভাষণ— ডাকা
» ইন্দ্রপুরী— ইন্দ্রের বাসভূমি
» গড়গড়া— তামাক খাওয়ার বড়ো হুঁকো
» হালুইকর— যিনি মিষ্টান্ন প্রস্তুত করেন, ময়রা।
» স্কেচ— ছবি আঁকার খসরা
» সমারোহ— জাঁকজমক
» অন্দরমহল— বাড়ির ভিতরের অংশ
» রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স— গোলটেবিল বৈঠক
» প্রিসাইড— সভাপতিত্ব করা
» পাবলিকলি— (publicly), খোলাখুলি, জনসমক্ষে
» ইংরেজিদুরস্ত— নির্ভুল ইংরেজি বলতে দক্ষ
 
• বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন উত্তর :
 
১. নাটোরের কথা রচনাটি কার লেখা ? 
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(খ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(গ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 
(ঘ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
 
উত্তরঃ (ঘ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
 
২. অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবার নাম— 
(ক) গীরেন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(খ) গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(গ) জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(ঘ) সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর
 
উত্তরঃ (খ) গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
 
৩. নাটোরের মহারাজার নাম—
(ক) ত্রৈলোক্যনাথ 
(খ) জগদীন্দ্রনাথ 
(গ) শিবনাথ
(ঘ) চন্দ্রনাথ
 
উত্তরঃ (খ) জগদীন্দ্রনাথ।
 
৪. লেখক নাটোরে যাওয়ার জন্য তৈরি হলেন— 
(ক) ধুতি পড়ে
(খ) প্যান্ট শার্ট পড়ে
(গ) পা জামা পাঞ্জাবী পড়ে
(ঘ) চোগাচাপকান পড়ে
 
উত্তরঃ (ঘ) চোগাচাপকান পড়ে।
 
৫. লেখক নাটোরে পৌঁছে পড়বেন— 
(ক) ধুতি 
(খ) প্যান্ট শার্ট 
(গ) পা জামা পাঞ্জাবী 
(ঘ) চোগাচাপকান 
 
উত্তরঃ (ক) ধুতি।
 
৬. প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স হবে— 
(ক) নাটোরে 
(খ) খুলনায় 
(গ) সিঙ্গাপুরে 
(ঘ) ঢাকায়
 
উত্তরঃ (ক) নাটোরে।
 
৭. প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষায় হওয়ার প্রস্তাব দেন— 
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(খ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(গ) দিপুদা 
(ঘ) জানকীনাথ
 
উত্তরঃ (ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
 
৮. নাটোররাজের বাড়ি ও বৈঠকখানার আতিশয্যকে লেখক কিসের সাথে তুলনা করেছেন 
(ক) ইন্দ্রপুরী 
(খ) যক্ষপুরী 
(গ) পাতালপুরি
(ঘ) যমপুরি
 
উত্তরঃ (ক) ইন্দ্রপুরী।
 
৯. ‘রবি কাকাকে বললুম, ছেড়ো না’— কী না ছাড়ার কথা বলা হয়েছে? 
(ক) মাতৃভাষা  
(খ) ইংরেজি ভাষা
(গ) বাংলা ভাষা
(ঘ) হিন্দি ভাষা
 
উত্তরঃ (গ) বাংলা ভাষা।
 
১০. অবনীন্দ্রনাথের ন-পিসেমশাই এর নাম কি? (ক) জগদানন্দ ঘোষাল 
(খ) জানকীনাথ ঘোষাল 
(গ) দীননাথ ঘোষাল 
(ঘ) জোনাকিনাথ ঘোষাল
 
উত্তরঃ (খ) জানকীনাথ ঘোষাল।
 
১১. ‘নানা রকমের মিষ্টি করে দিচ্ছে’— কে ?
(ক) ময়রা
(খ) মিষ্টি কাকু
(গ) হালুইকর
(ঘ) হালুইদা 
 
উত্তরঃ (গ) হালুইকর।
 
১২. ‘গোল হয়ে সবাই বসেছি’— কোথায় ?
(ক) গানের আসরে 
(খ) খাওয়ার টেবিলে 
(গ) কনফারেন্স টেবিলে 
(ঘ) হিসাব-নিকাশের জন্য
 
উত্তরঃ (গ) কনফারেন্স টেবিলে।
 
১৩. যে গানটি সেই সময় গাওয়া হয়েছিল—
(ক) জনগণমন
(খ) ধনধান্য
(গ) সোনার বাংলা
(ঘ) বন্দে মাতরম্
 
উত্তরঃ (গ) সোনার বাংলা।
 
১৪. ‘তার মত ইংরেজিতে কেউ বলতে পারত না’— কার মতো ?
(ক) অরবিন্দ ঘোষ 
(খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(গ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
(ঘ) লালমোহন ঘোষ
 
উত্তরঃ (ঘ) লালমোহন ঘোষ।
 
 
        (হাতে কলমে’র প্রশ্ন ও উত্তর)  
 
১.২ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দু-টি বইয়ের নাম লেখাে। 
 
উত্তরঃ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুটি বইয়ের নাম ‘রাজকাহিনী’ ও ‘বাংলার ব্রত’।
 
১.২ তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কোন সম্পর্কে সম্পর্কিত ?
 
উত্তরঃ তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কাকা-ভাইপাে সম্পর্কে সম্পর্কিত।
 
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :
 
২.১ ‘আজ সকালে মনে পড়ল একটি গল্প’—লেখকের অনুসরণে সেই গল্পটি নিজের ভাষায় বিবৃত করাে। 
 
উত্তরঃ গল্পটি হল, নাটোরে অনুষ্ঠিত প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সে বাংলা ভাষার প্রচলন। লেখক-শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তাঁর কাকা রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্যদের সঙ্গে গিয়েছিলেন নাটোরে। সে এক হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার। প্রথমে স্পেশাল ট্রেন ও পরে স্টিমারে করে পদ্মা পেরিয়ে নাটোর। এই সম্মেলনের অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি নাটোর-মহারাজ জগদিন্দ্রনাথ। তাঁর ব্যবস্থাপনায় এক রাজকীয় আয়ােজন। যেমন— খাওয়াদাওয়া, তেমনই অন্যান্য সব ব্যবস্থা। তারপর যথারীতি শুরু হয় গােলটেবিল বৈঠক এবং বক্তৃতা। ইংরেজিতে যেই বক্তৃতা শুরু হয়, সঙ্গে সঙ্গে ‘বাংলা, বাংলা’ বলে অবনীন্দ্রনাথ ও তাঁর সঙ্গীরা প্রতিবাদ শুরু করেন। এরপর কেউ আর ইংরেজিতে বক্তৃতা করতে পারেননি। এমনকি ইংরেজি দুরস্ত লালমােহন ঘােষও শেষপর্যন্ত বাংলায় বলতে বাধ্য হন। এটি লেখকের মনে রাখার মতােই ঘটনা। এভাবেই কনফারেন্সে বাংলা ভাষা চালু হয়। এ সম্পর্কে লেখক জানান, সেই প্রথম আমরা পাবলিকলি বাংলা ভাষার জন্য লড়লুম।
 
২.২ লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, তখনকার নাটোরের মহারাজার নাম কী ছিল ?
 
উত্তরঃ লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, তখনকার নাটোরের মহারাজার নাম ছিল জগদিন্দ্রনাথ (রায়)। লেখকরা তাঁকে ‘নাটোর’ বলেই ডাকতেন।
 
২.৩ তিনি কোন রিসেপশন কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন ? 
 
উত্তরঃ তিনি অর্থাৎ, নাটোরের মহারাজা প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সের রিসেপশন কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
 
২.৪ ‘নাটোর নেমন্তন্ন করলেন…’— সেই নেমন্তন্নের তালিকায় কাদের নাম ছিল বলে লেখক স্মরণ করতে পেরেছেন?
 
উত্তরঃ সেই নেমন্তন্নের তালিকায় ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির সবাই, যেমন— দীপুদা, রবিকাকা, জাতীয় কংগ্রেসের নেতারা, ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘােষাল, ডাবলিউ সি ব্যানার্জি, মেজো-জ্যাঠামশায়, লালমােহন ঘােষ প্রমুখ ছিলেন।
 
২.৫ ‘রওনা হলুম সবাই মিলে হৈ হৈ করতে করতে।’— কোথায় রওনা হলেন ? কীভাবেই বা রওনা হলেন ? 
 
উত্তরঃ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নাটোরের কথা’ গদ্যাংশের এই উক্তি অনুসারে লেখক-সহ বাড়ির অন্যান্য নিমন্ত্রিতরা নাটোরে প্রাদেশিক সম্মেলনে যােগ দিতে রওনা হলেন।
 
» রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-সহ বাড়ির অন্যান্য সবাই নাটোর যাত্রার ব্যাপারে নানান হাঙ্গামার কথা প্রকাশ করেন। কিন্তু মহারাজ আশ্বস্ত করে বলেন- চিন্তার কিছু নেই, কিছু ভাবতে হবে না। তিনি অতিথিদের জন্য স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেন। তারপর লেখকেরা প্রথমে স্পেশাল ট্রেন ও পরে পদ্মা নদী পার হওয়ার জন্য স্টিমারে চড়ে নাটোরে রওনা হলেন।
 
২.৬ সরাঘাট থেকে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা কোন নদীতে স্টিমার চড়েছিলেন ?
 
উত্তরঃ সরাঘাট থেকে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা পদ্মা নদীতে স্টিমার চড়েছিলেন।
 
২.৭ স্টিমারে খাওয়াদাওয়ার প্রসঙ্গ আলােচনায় লেখকের সরস মনের পরিচয় কীভাবে দেদীপ্যমান হয়ে উঠেছে তা বুঝিয়ে দাও।
 
উত্তরঃ স্টিমারে খাওয়াদাওয়ার সময় একটি লম্বা টেবিলের একদিকে হােমরাচোমরা চাঁইরা, অন্যদিকে দীপুদাসহ লেখকরা বা অল্পবয়স্করা ছিলেন। ‘বয়’-রা যেই খাবার নিয়ে আসে, অমনি চলে যায় চাঁইদের অর্থাৎ, নেতাদের দিকে। কারণ, তাদের আগে দিয়ে তারপর লেখকদেরকে দেওয়ার নিয়ম। একটি চাঁইয়ের কাছে খাবার এলে প্রায় শেষ হয়ে যায়। কাটলেট এলেই সে তুলে নেয় ছ-সাতখানা। পুডিং এলেও তুলে নেয় অর্ধেকের বেশি। লেখকের আর পুডিং জোটে না। দীপুদা শেষে বয়কে একটু ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন, খাবারটি যেন আগে তাঁদের দিকেই যায়। তারপর থেকে খাবার আসত দু-টি ডিশে। একটি লেখকের দিকে, তাে অন্যটি অন্যদিকে। কিন্তু লেখক চাঁইটির ‘জাইগ্যানটিক’ খাওয়া দেখে আশ্চর্য হয়েছিলেন।
 
২.৮ ‘যেন ইন্দ্রপুরী।’— কীসের সঙ্গে ইন্দ্রপুরী’র তুলনা করা হয়েছে ? কেনই বা লেখক এমন তুলনা করেছেন? 
 
উত্তরঃ নাটোর-রাজের বাড়িকে ইন্দ্রপুরীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
 
   » ‘ইন্দ্রপুরী’ হল— দেবরাজ ইন্দ্রের সুসজ্জিত বিলাসবহুল আবাসস্থল। বিষয়-বৈভবে তা তুলনাহীন। লেখক নাটোরের বাড়ির ঐশ্বর্য দেখে মুগ্ধ হন। তাঁর বাড়িকে ইন্দ্রপুরীর সঙ্গে তুলনা করার কারণ, বাড়ির চারিদিকের এলাহি ব্যাপার-স্যাপার। সুন্দর করে সাজানাে বাড়ি, বৈঠকখানা, যথাস্থানে ঝাড়লণ্ঠন, তাকিয়া, ভালাে ভালাে দামি ফুলদানি, কার্পেট, যা সমস্তই অতুলনীয়। 
 
২.৯ ‘একেই বলে রাজ সমাদর।’— উদ্ধৃতিটির আলােকে নাটোরের মহারাজার অতিথি-বাৎসল্যের পরিচয় দাও। 
 
উত্তরঃ নাটোরের মহারাজার রাজসমাদর বলার মতাে। কারণ, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর বাড়ির সকলেই ছিলেন নাটোর-মহারাজের নিমন্ত্রিত। আর সেই মহারাজের ব্যবস্থাপনায় নিমন্ত্রিতরা মােটঘাট ছাড়াই নাটোর পৌঁছােন। সেখানে ধুতি-চাদর সবই ছিল রাজকীয় । স্টিমারে খাওয়া-দাওয়ারও মহা আয়ােজন ছিল। মাছ-মাংস-ডিম কিংবা মিষ্টি সবই এবেলা-ওবেলা পাওয়া যেত। সকালের দিকে কার কীরকম পানীয়, নেশা, সে সবও প্রস্তুত ছিল। ডাবের জল, সােডা, হুঁকো, কিছুরই অসুবিধা নেই। সর্বোপরি ছিল, আন্তরিকতা আর আতিথেয়তার অপূর্ব নিদর্শন। তাই লেখক সংগত কারণেই নাটোরের মহারাজের অতিথি-বাৎসল্যকে ‘রাজ-সমাদর’ আখ্যা দিয়েছেন।
 
২.১০ ‘নাটোরের খুব আগ্রহ’—কোন প্রসঙ্গে তাঁর আগ্রহের কথা এখানে বলা হয়েছে ?
 
উত্তরঃ নাটোরের মহারাজার আমন্ত্রণে প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ-সহ ঠাকুর বাড়ির বহু তরুণ সদস্য নাটোরে গেলে তারা সবাই ঘুরে ঘুরে গ্রাম দেখতে বের হন। যেখানে পুরােনাে বাড়ি, মন্দির, ঘর যা লেখকের চোখে পড়ছে তিনি স্কেচ করে নিচ্ছেন। এমনকি সম্মেলনে উপস্থিত বিশেষ অতিথি অর্থাৎ চাঁইদেরও বেশ কিছু স্কেচ তিনি করেন। অবনীন্দ্রনাথের আঁকা বিভিন্ন স্কেচ দেখে মহারাজ খুব প্রশংসা করেন। শিল্পী অবনীন্দ্রনাথকে এরপর তিনি অন্দরমহলে রানি ভবানীর ঘরে নিয়ে যান। সেখানে বেশ সুন্দর সুন্দর ইঁটের কাজ করা ছিল। মহারাজের রাজত্বে যেখানে যত সুন্দর জিনিস আছে, লেখককে তিনি তা দেখাতে লাগলেন। শুধু তাই নয়, লেখকও যাতে সেসবের স্কেচ করে নেন, তারও সুযােগ করে দেন। এমনকি, তাঁর করা স্কেচও বেশ আনন্দের সঙ্গে তিনি দেখতে চান। সেইসঙ্গে নানান জিনিসের স্কেচ করে দেওয়ার ফরমাশও করতে থাকেন। নাটোরের শৈল্পিক দ্রব্যাদি অভ্যাগতদের দেখানাে ও অবনীন্দ্রনাথের স্কেচ করে নেওয়ায় নাটোর-মহারাজ তৃপ্ত হন। আর এতে তাঁর শৈল্পিক মনের পরিচয় পাওয়ার প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে।
 
২.১১ ‘আগে থেকেই ঠিক ছিল’— আগে থেকে কী ঠিক থাকার কথা বলা হয়েছে ? সেই উপলক্ষ্যে কোন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা পাঠ্যাংশে রয়েছে, তা আলােচনা করাে।
 
উত্তরঃ আগে থেকেই ঠিক ছিল প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সের ভাষা হবে বাংলা এবং এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
 
   » এই উপলক্ষ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা হল, চাঁইদের সঙ্গে অর্থাৎ, বিশেষ অতিথিদের সঙ্গে অবনীন্দ্রনাথ-সহ অন্যান্য ছােকরাদের বিরােধ । চাঁইরা চেয়েছিল ইংরেজিতে বক্তৃতা ও ছােকরার দল চেয়েছিল বাংলায় বক্তৃতা। ইংরেজিতে যেই প্রথম বক্তৃতা শুরু হয়, অমনি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে ছােকরারা বলে ওঠে—‘বাংলা, বাংলা …’। এই ছােকরাদের হৈ হৈ-তে শেষ পর্যন্ত ইংরেজি-দুরস্ত লালমােহন ঘােষও বাংলায় বলতে বাধ্য হন।
 
২.১২ নাটোরে প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন গানটি পরিবেশন করেছিলেন ?
 
উত্তরঃ নাটোরে প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নিজের লেখা “আমার সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালােবাসি” গানটি পরিবেশন করেছিলেন। 
 
২.১৩ ‘আমাদের তাে জয়জয়কার।’—কী কারণে লেখক ও তাঁর সঙ্গীদের জয়জয়কার’ হল ?
 
উত্তরঃ নাটোরে অনুষ্ঠিত প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা চেয়েছিলেন যে, কনফারেন্সে বক্তৃতার ভাষা হবে বাংলা। ইংরেজিপথী চাঁইদের সঙ্গে বিরােধ হলেও শেষপর্যন্ত লেখকেরা বাংলা ভাষায় তাঁদের বক্তৃতা করতে বাধ্য করলেন। অর্থাৎ, তাদের চাওয়াটাই প্রাধান্য পেল এবং ইংরেজিপন্থী প্রাজ্ঞরা পরাজিত হলেন। সর্বোপরি স্বদেশি যুগের বাংলাপন্থী নবীনরা জয়যুক্ত হলেন। একারণেই লেখক ও তাঁর সঙ্গীদের জয়জয়কার। 
 
২.১৪ ‘সেই প্রথম আমরা পাবলিকলি বাংলা ভাষার জন্য লড়লুম।”—লেখকের অনুসরণে সেই ‘লড়াই’-এর বিশদ বিবরণ দাও।
 
উত্তরঃ লড়াইটি হল ইংরেজির সঙ্গে বাংলা ভাষার লড়াই। স্বদেশি যুগে একটি প্রভিনশিয়াল কনফারেন্স হয় নাটোরে। সেখানে রবি ঠাকুর থেকে শুরু করে লেখক ও তাঁর দলবলেরা চেয়েছিলেন, বক্তৃতা বা অন্যান্য কাজ সবই হবে বাংলা ভাষায়। কিন্তু আরেক শ্রেণির ঝোঁক ছিল ইংরেজিতে। তাই সভাপতি যেই ইংরেজিতে বক্তৃতা করতে ওঠেন, অমনি লেখকরা ‘বাংলা, বাংলা’ বলে বিরােধিতা শুরু করেন চাঁইদের সঙ্গে। ফলে তখনকার দিনে ইংরেজি-দুরস্ত পার্লামেন্টারি বক্তা লালমােহন ঘােষ পর্যন্ত শেষকালে বাংলায় চমৎকার বক্তৃতা করলেন। এই হল লেখকদের পাবলিকলি বাংলা ভাষার জন্য লড়াই এবং জয়।
 
৩. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করাে :
 
৩.১ আজ সকালে মনে পড়ল একটি গল্প—সেই প্রথম স্বদেশি যুগের সময়কার, কী করে আমরা বাংলা ভাষার প্রচলন করলুম। (জটিল বাক্যে)
 
উত্তরঃ আজ সকালে যে গল্পটি মনে পড়ল সেটি হল প্রথম স্বদেশি যুগের সময়ে আমরা কী করে বাংলা ভাষার প্রচলন করলুম।
 
৩.২ ভূমিকম্পের বছর সেটা। প্রভিনশিয়াল কনফারেন্স হবে নাটোরে। (বাক্য দু-টিকে জুড়ে লেখাে) 
 
উত্তরঃ ভূমিকম্পের বছরে নাটোরে প্রভিনশিয়াল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে।
 
৩.৩ নাটোর নেমন্তন্ন করলেন আমাদের বাড়ির সবাইকে। (যৌগিক বাক্যে)
 
উত্তরঃ নাটোর নেমন্তন্ন করলেন আমাকে এবং আমাদের বাড়ির সবাইকে।
 
৩.৪ আরও অনেকে ছিলেন—সবার নাম কি মনে আসছে এখন। (না-সূচক বাক্যে)
 
উত্তরঃ আরও অনেকে ছিলেন, যাঁদের সবার নাম এখন মনে নেই।
 
৩.৫ নাটোর বললেন, কিছু ভেবাে না। সব ঠিক আছে। (পরােক্ষ উক্তিতে) ) 
 
উত্তরঃ নাটোর আশ্বস্ত করে বললেন, কিছু ভাবার দরকার নেই সব ঠিক আছে।
 
৩.৬ অমন ‘জাইগ্যানটিক’ খাওয়া আমরা কেউ কখনাে দেখিনি। (নিম্নরেখ শব্দের পরিবর্তে বাংলা শব্দ ব্যবহার করে বাক্যটি আবার লেখাে)
 
উত্তরঃ অমন ‘দৈত্যের মতো’ খাওয়া আমরা কেউ কখনাে দেখিনি। 
 
৩.৭ ছােকরার দলের কথায় আমলই দেন না। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে) 
 
উত্তরঃ ছােকরার দলের কথা উপেক্ষা করেন। 
 
৩.৮ ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘােষাল রিপাের্ট লিখছেন আর কলম ঝাড়ছেন। (বাক্যটিকে দু-টি বাক্যে ভেঙে লেখাে)
 
উত্তরঃ ন-পিসেমশাইয়ের হলেন জানকীনাথ ঘােষাল। তিনি রিপাের্ট লিখছেন আর কলম ঝাড়ছেন।
 
৩.৯ গরম গরম সন্দেশ আজ চায়ের সঙ্গে খাবার কথা আছে যে অবনদা। (নিম্নরেখ শব্দের প্রকার নির্দেশ করাে এবং অর্থ এক রেখে অন্য শব্দ ব্যবহার করে বাক্যটি আবার লেখে)।
 
উত্তরঃ গরম গরম—শব্দদ্বৈত। বিকল্প শব্দ টাটকা। আজ চায়ের সঙ্গে টাটকা সন্দেশ খাবার কথা আছে যে অবনদা।
 
৩.১০ হাতের কাছে খাবার এলেই তলিয়ে দিতেম (জটিল বাক্যে)
 
উত্তরঃ যখনই হাতের কাছে খাবার আসত, তখনই তা তলিয়ে দিতেম।
 
৪. নীচের বাক্যগুলি থেকে সন্ধিবদ্ধ শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধি বিচ্ছেদ করাে :
 
৪.১ স্টিমারে নির্ভাবনায় উঠে গেলুম।
 
» নির্ভাবনায় = নিঃ + ভাবনায় ।
 
 ৪.২ তিনি অর্ধেকের বেশি নিজের প্লেটে তুলে নিলেন।
 
» অর্ধেকের = অর্ধ + একের (এক + এর)।
 
৫ নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করাে : হাঙ্গাম, আপশােস, চান, তক্কাতক্কি, জিজ্ঞেস। 
 
» হাঙ্গাম < হাঙ্গামা— (অন্ত্যস্বরলােপ)। 
 
» আপশােস < আফশােস— (ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তন)। 
 
» চান < স্নান— (ধ্বনিলােপ ও ধ্বন্যাগম)। 
 
» তক্কাতক্কি < তর্কাতর্কি— (পরাগত সমীভবন)। 
 
» জিজ্ঞেস < জিজ্ঞাসা— (স্বরসংগতি)।
 
৬ নীচের শব্দগুলির প্রকৃতি-প্রত্যয় নির্দেশ করাে :স্বদেশি, জিজ্ঞাসা, ঢাকাই। 
 
» স্বদেশি— স্বদেশ + ই।
 
» জিজ্ঞাসা— জ্ঞা-সন্ + অ + আ । 
 
» ঢাকাই— ঢাকা + আই। 
 
৭. ব্যাসবাক্য-সহ সমাসের নাম লেখাে : চোগাচাপকান, বিছানাবাক্স, ইন্দ্রপুরী, রাজসমাদর, গুজব, অন্দরমহল।
 
» চোগাচাপকান— যা-ই চোগা, তা-ই চাপকান। (সাধারণ কর্মধারয় সমাস), 
 চোগা ও চাপকান (দ্বন্দ্ব সমাস)
 
» বিছানাবাক্স— বিছানা ও বাক্স। (দ্বন্দ্ব সমাস) 
 
» ইন্দ্রপুরী— ইন্দ্রের পুরী। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
 
» রাজসমাদর— রাজার ন্যায় সমাদর (উপমান কর্মধারয় সমাস) 
রাজসুলভ সমাদর (মধ্যপদলোপি কর্মধারয় সমাস)।
 
» গল্প-গুজব— গল্প ও গুজব (সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস) 
 
» অন্দরমহল— অন্দরের মহল (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
 
৮ কোনটি কী ধরনের সর্বনাম তা লেখাে : আমরা, সেটা, তাঁকে, সবাই, তিনি, আমি, এটা 
 
» আমরা— ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। 
 
» সেটা— নির্দেশক সর্বনাম। 
 
» তাঁকে— ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। 
 
» সবাই— সমষ্টিবাচক সর্বনাম  
 
» তিনি— ব্যক্তিবাচক / সাকল্যবাচক সর্বনাম । 
 
» আমি— ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। 
 
» এটা— নির্দেশক সর্বনাম।

This Post Has One Comment

Leave a Reply