দাম (গল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Class 9 Bengali Dam Question and Answer wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্নোত্তর

দাম (গল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Class 9 Bengali Dam Question and Answer  wbbse 

বহুবিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (Multiple Choice Questions) | দাম (গল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Bengali Dam MCQ Question and Answer :

১. সুকুমার তার মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখে পত্রিকা সম্পাদকের কাছ থেকে পেয়েছিলেন–
(ক) দশ টাকা (খ) বারো টাকা
(গ) পনেরো টাকা (ঘ) কুড়ি টাকা

উত্তরঃ (ক) দশ টাকা।

২. মাস্টারমশাই ছবির মতো সাজিয়ে দিতেন—
(ক) ব্যাকরণ (খ) ভূগোল (গ) অংক
(ঘ) ইংরেজি

উত্তরঃ (গ) অংক।

৩. মাস্টারমশাই স্কুলে যে বিষয় পড়াতেন—
(ক) ইংরেজি (খ) অংক (গ) ভূগোল
(ঘ) সংস্কৃত

উত্তরঃ (খ) অংক।

৪. গল্প কথক তার বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের উক্তি ব্যবহার করেছিলেন—
(ক) ৩১ টি (খ) ১৩ টি (গ) ২১ টি (ঘ) ১২ টি

উত্তরঃ (ঘ) ১২ টি।

৫. গল্প কথক ইংরেজি কোটেশন যার নামে চালিয়েছিলেন—
(ক) উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
(খ) জন মিল্টন
(গ) জর্জ বার্নাড শ
(ঘ) এমিলী যেন ব্রন্টে

উত্তরঃ (গ) জর্জ বার্নাড শ।

৬. কথককে যে নামে অংকের শিক্ষক ডেকেছিলেন—
(ক) বিভূতি (খ) সুকুমার (গ) বিমল
(ঘ) তারিণী

উত্তরঃ (খ) সুকুমার।

৭. “সেই কুবেরের ভান্ডারকে ধরে দিয়েও যা পাওয়া যায় না”—
(ক) সম্পদ (খ) জ্ঞান (গ) ক্ষমা
(ঘ) সোনাদানা

উত্তরঃ (গ) ক্ষমা।

৮. ‘স্কুলে কি বিভীষিকাই যে ছিলেন’– স্কুলে বিভীষিকা ছিলেন—
(ক) মাস্টারমশাই (খ) সুকুমার
(গ) ভদ্রলোক (ঘ) হেডমাষ্টার

উত্তরঃ (গ) ভদ্রলোক।


বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর


৯. খসখস করে ঝড়ের গতিতে এগিয়ে চলত—
(ক) খড়ি (খ) কলম (গ) পেনসিল
(ঘ) ডাস্টার

উত্তরঃ (ক) খড়ি।

১০. “পৃথিবীতে যত _____ ছিল, সব যেন ওঁর মুখস্থ”– কী মুখস্থ ছিল ?
(ক) গল্প (খ) অংক (গ) কবিতা (ঘ) ব্যাকরণ

উত্তরঃ (খ) অংক।

১১. প্লেটোর দোরগোড়ায় লেখা ছিল—
(ক) বাংলাদেশের কলেজে বক্তৃতা দিতে হবে
(খ) স্মৃতির দিকে তাকাবার অবসর নেই
(গ) যে অংক জানে না, এখানে তার প্রবেশ নিষেধ
(ঘ) সেখানে রাজোচিত সংবর্ধনা পাওয়া যাবে।

উত্তরঃ (গ) যে অংক জানে না, এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।

১২. “এখানকার চড়ুই পাখিও সেখানে সন্মান পায়”—
(ক) রাজহংসের (খ) ময়ূরের
(গ) টিয়াপাখির (ঘ) চাতকের

উত্তরঃ (ক) রাজহংসের।

১৩. কলকাতা থেকে কেউ বাইরে গেলে সংবর্ধনা মেলে–
(ক) বীরোচিত (খ) যথোচিত (গ) রাজোচিত
(ঘ) ভদ্রোচিত

উত্তরঃ (গ) রাজোচিত।

১৪. “সভায় জাঁকিয়ে বক্তৃতা করা গেল।”– সভাটি ছিল–
(ক) সুকুমার রায়ের কলেজে
(খ) বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজে
(গ) কলকাতা এক নামী কলেজে
(ঘ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে

উত্তরঃ (খ) বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজে।

১৫. “গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করতে গেলে গাধাটাই পঞ্চত্ব পায়। এখানে ‘পঞ্চত্ব’ শব্দের অর্থ–
(ক) ক্ষতি (খ) হানি (গ) মৃত্যু (ঘ) সমস্যা

উত্তরঃ (গ) মৃত্যু

১৬. “কার একটা ইংরেজি কোটেশন চালিয়ে দিলুম _______ নামে”। –
(ক) টেনিসনের (খ) বায়রনের
(গ) শেকসপিয়রের (ঘ) বার্নার্ড শ-র

উত্তরঃ (ঘ) বার্নার্ড শ-র নামে।

১৭. দাম গল্পে সুকুমার পেশায় ছিলেন–
(ক) ডাক্তার (খ) অধ্যাপক (গ) ইঞ্জিনিয়ার
(ঘ) সাংবাদিক

উত্তরঃ (ঘ) সাংবাদিক

১৮. এম এ পাস করার পরেও সুকুমার দুঃস্বপ্ন দেখতেন–
(ক) পরীক্ষায় অঙ্ক না মেলার
(খ) চাকরি না পাওয়ার
(গ) স্কুলে শাস্তি পাওয়ার
(ঘ) খেলায় জিততে না পারার

উত্তরঃ (ক) পরীক্ষায় অঙ্ক না মেলার।

১৯. অঙ্কে যারা একশোর মধ্যে একশো পায়, তারা—
(ক) ওঁর ভয়ে কান্নাকাটি করত
(খ) ওঁর ভয়ে অজ্ঞান হত
(গ) ওঁর জন্য অপেক্ষা করত
(ঘ) ওঁর ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকত।

উত্তরঃ (ঘ) ওঁর ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকত।

২০. “…কাঁদবার জো ছিল না।”– এই কাঁদবার উপায় না থাকার কারণ–
(ক) ক্লাসের অন্য ছেলেদের সামনে কাঁদতে লজ্জা করত
(খ) চোখের জল মাস্টারমশাই সহ্য করতে পারতেন না
(গ) কাঁদলে মাস্টারমশাই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন
(ঘ) কাঁদলে আরও অঙ্ক কষতে হত

উত্তরঃ (গ) কাঁদলে মাস্টারমশাই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন

২১. “সে স্বর্গের চাইতে ______ যোজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বোধ করতুম”–
(ক) শত (খ) সহস্র (গ) লক্ষ (ঘ) কোটি

উত্তরঃ (গ) লক্ষ

২২. “ছবিটা যা ফুটলো” তা —
(ক) উজ্জ্বল নয় (খ) রঙিন নয়
(গ) সুন্দর নয় (ঘ) গোছানো নয়

উত্তরঃ (ক) উজ্জ্বল নয়।

২৩. “গাধা পিটিয়ে করতে _____ গেলে গাধাটাই পঞ্চত্ব পায়।” (শূন্যস্থান পূরণ কর)
(ক) হাতি (খ) মানুষ (গ) ঘোড়া (ঘ) বানর

উত্তরঃ (গ) ঘোড়া।

২৪. পত্রিকা থেকে ফরমাশ এসেছিল—
(ক) ছেলেবেলার গল্প লেখার
(খ) ঐতিহাসিক গল্প লেখার
(গ) প্রেমের কবিতা লেখার
(ঘ) ভ্রমণ কাহিনী লেখার

উত্তরঃ (ক) ছেলেবেলার গল্প লেখার।

২৫. পত্রিকা কত্তৃপক্ষ গল্প লেখার দক্ষিণা দিয়েছিলেন—
(ক) পাঁচশো টাকা (খ) দশ টাকা
(গ) কুড়ি টাকা (ঘ) একশো টাকা

উত্তরঃ (খ) দশ টাকা।

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ) | দাম (গল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – নবম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Bengali Dam SAQ Question and Answer :

১. “এখনি পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবাে’— কে, কাদের বলতেন ?

উত্তরঃ স্কুলে অঙ্ক না পারায় মাস্টারমশাইয়ের চড় খেয়ে যেসব ছাত্ররা কাঁদত, গল্পকথকের অঙ্কের মাস্টারমশাই সেইসব ছাত্রদের এ কথা বলতেন।

২. স্কুলে বিভীষিকা কে ছিলেন ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে কথকের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন তাদের কাছে বিভীষিকাস্বরূপ।

৩. মাস্টারমশাইয়ের চড়ের জোর থেকে ছাত্ররা কী আন্দাজ করে নিয়েছিল ?

উত্তরঃ মাস্টারমশাইয়ের চড়ের জোর থেকে ছাত্ররা আন্দাজ করেছিল যে, তাদের পা ধরে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলার শক্তি মাস্টারমশাইয়ের ছিল।

৪. প্লেটোর দোরগােড়ায় কী লেখা ছিল বলে মাষ্টারমশাই বলেছেন ?

উত্তরঃ প্লেটোর দোরগােড়ায় লেখা ছিল, “যে অঙ্ক জানে না — এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।”

৫. মাষ্টারমশাইয়ের মতে স্বর্গের দরজায় কী লেখা আছে ?

উত্তরঃ স্বর্গের দরজাতেও নাকি প্লেটোর দোরগােড়ার মতাে লেখা আছে, “যে অঙ্ক জানে না — এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।”

৬. যে স্বর্গে পা দিয়েই জ্যামিতির এক্সট্রা কষতে হয় তার সম্পর্কে লেখকের মত কী ?

উত্তরঃ লেখকের মতে যে স্বর্গে পা দিয়েই জ্যামিতির এক্সট্রা কষতে হয় তার থেকে লক্ষ যােজন দূরে থাকাই নিরাপদ।

৭. ম্যাট্রিকুলেশনের গণ্ডি পার হয়ে সুকুমার কীসের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিলেন ?

উত্তরঃ ম্যাট্রিকুলেশনের গন্ডি পার হয়ে সুকুমার অঙ্ক ও বিভীষিকাস্বরূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিলেন।

৮. অঙ্ক করার সময় খড়ি ভেঙে গেলে মাস্টারমশাই কী করতেন ?

উত্তরঃ অঙ্ক করার সময় খড়ি ভেঙে গেলে বিরক্ত মাস্টারমশাই ভাঙা টুকরাে দুটো ছাত্রদের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে আর-একটা খড়ি নিতেন।

৯. মাস্টারমশাই অঙ্ককে কেমন করে সাজিয়ে দিতেন ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে মাস্টারমশাই অঙ্ক কষে ছবির মতাে করে ব্ল্যাকবাের্ডে সাজিয়ে দিতেন৷

১০. “কিন্তু কাঁদবার জো ছিল না’– কেন কাঁদবার জো ছিল না ?

উত্তরঃ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের হাতে চড় খেয়েও কান্নার উপায় ছিল না। কারণ, তিনি আরও বকতেন এবং পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলার হুমকি দিতেন।

১১. “এম এ পাশ করবার পরেও স্বপ্ন দেখেছি”— কে, কী স্বপ্ন দেখেছেন ?

উত্তরঃ গল্পকথক সুকুমার স্বপ্ন দেখেছিলেন পরীক্ষার শেষ ঘণ্টা আসন্ন, তবু অঙ্ক মিলছে না আর মাস্টারমশাই আগুন ঝরা চোখে তাকিয়ে আছেন।

১২. “তা হলে নির্ভয়ে লিখতে পারি।”— কথকের এই নির্ভয়তার কারণ কী ?

উত্তরঃ পত্রিকাটির পাঠকসংখ্যা সীমিত হওয়ায় কথকের আত্মকথা অন্য কারও কাছে স্পর্ধার মনে হবে না, এই ভেবেই। তিনি নির্ভয়ে লিখেছিলেন।

১৩. “গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করতে গেলে গাধাটাই পঞ্চত্ব পায়”— ‘পঞ্চত্ব’ বলতে কী কী বোঝানো হয়েছে ?

উত্তরঃ এখানে গাধার ‘পঞ্চত্ব’ বলতে দুর্বল ছাত্রদের সামান্য সম্ভাবনাটুকুরও অপমৃত্যু ঘটার কথা বলা হয়েছে।

১৪. “তার প্রমাণ আমি নিজেই।”— কে, কীসের প্রমাণ ?

উত্তরঃ দাম গল্পের সেই মাস্টারমশাইয়ের শাসন ও শাস্তির মাধ্যমে যে কাউকে কিছু শেখানো যায় না, গল্পকথক সুকুমার নিজেই এ ঘটনার সবচেয়ে বড়ো প্রমাণ।

১৫. পত্রিকা কর্তৃপক্ষ সুকুমারকে কত দক্ষিণা দিয়েছিল ?

উত্তরঃ গল্পকথক নিজের স্কুলের মাস্টার মশাইকে নিয়ে গল্প লেখার জন্য পত্রিকা কর্তৃপক্ষ গল্পকথক সুকুমারকে সাম্মানিক দশ টাকা দক্ষিণা দিয়েছিল।

১৬. “মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে এইটুকুই আমার নগদ লাভ” বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ গল্পকথক মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখে দশ টাকা সাম্মানিক হিসেবে পেয়েছিলেন। একেই তিনি নগদ লাভ বলেছেন।

১৭. “আমার মনটাকে অদ্ভুতভাবে দুলিয়ে দিল।”— মন দুলে উঠেছিল কেন ?

উত্তরঃ এক অতিপরিচিত ও আশ্চর্য গলায় গল্পকথকের নাম ধরে কেউ ডাকলে তাঁর মন দুলে উঠেছিল।

১৮. “একটা ভয়ের মৃদু শিহরন আমার বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে গেল।”— এমন ঘটার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?

উত্তরঃ সুকুমারের অন্তর্মনে মাস্টারমশাই সম্পর্কে ভীতি ও আতঙ্ক প্রচ্ছন্ন থাকায় মাস্টারমশাইয়ের গলা শুনে তাঁর শরীরে শিহরন বয়ে যায়।

১৯. “…..লুকিয়ে ছিল মনের চোরাকুঠুরিতে” — কী লুকিয়ে ছিল ?

উত্তরঃ ছেলেবেলায় অঙ্ক না-পারলেই মাস্টারমশাইয়ের কাছে শাস্তি পাওয়ার স্মৃতি লুকিয়ে ছিল গল্পকথক সুকুমারের মনের চোরাকুঠুরিতে।

২০. “আর বলতে পারলেন না।” — কেন বলতে পারলেন না ?

উত্তরঃ অধ্যাপক ছাত্রের কাছে আবেগে আপ্লুত বৃদ্ধ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের চোখে জল এসে পড়ায়, তিনি তাঁর কথা শেষ করতে পারেননি।

২১. “এমন সময় একটি ছেলে এসে খবর দিলে”— কী খবর দিল ?

উত্তরঃ একটি ছেলে এসে খবর দিয়েছিল যে, এক বয়স্ক ভদ্রলোক সুকুমারের সঙ্গে দেখা করতে চান।

২২. “তারপর চোখে পড়ল মানুষটিকে।”— মানুষটি দেখতে কেমন ছিলেন ?

উত্তরঃ মানুষটির চেহারা ছিল কুঁজো ও লম্বা এবং মাঠের তরল অন্ধকারেও তাঁর সাদা চুলগুলি চিকমিক করছিল।

২৩. সুকুমার কলেজে কী পড়ান ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘দাম’ ছােটোগল্পে সুকুমার কলেজে বাংলা পড়ান।

২৪. সুকুমারের কাছে ছেলেবেলার গল্প লেখার ফরমাশ কোথা থেকে এসেছিল ?

উত্তরঃ একটি অনামি পত্রিকার পক্ষ থেকে সুকুমারের কাছে তার ছেলেবেলার গল্প লেখার ফরমাশ এসেছিল।

২৫. ‘সাহিত্যের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র বরুণ’ কাদের বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ সাহিত্যজগতের রথী-মহারথী অর্থাৎ স্বনামধন্য সাহিত্যিকদের ‘সাহিত্যের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র বরুণ’ বলা হয়েছে।

২৬. সুকুমার কাকে নিয়ে তার ছেলেবেলার গল্প লিখেছিলেন ?

উত্তরঃ সুকুমার তার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে ছেলেবেলার গল্প লিখেছিলেন।

২৭. ‘মনে এল মাস্টারমশাইয়ের কথা।’– কখন এমনটি ঘটেছে ?

উত্তরঃ দাম গল্পের প্রধান চরিত্র সুকুমার একটি পত্রিকায় তার ছেলেবেলার গল্প লেখার সময় মাস্টারমশাইয়ের কথা মনে করেছিলেন।

২৮. সুকুমার মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে কোনটাকে নগদ লাভ বলে মনে করেছিলেন ?

উত্তরঃ পত্রিকায় মাস্টারমশাইকে নিয়ে লেখা বাল্যস্মৃতির দক্ষিণা হিসেবে পাওয়া দশ টাকাকেই সুকুমার নগদ লাভ বলে মনে করেছিলেন।

২৯. গল্পকথক এর স্কুলে যে বিভীষিকা ছিলেন তিনি কে ?

উত্তরঃ গল্পকথকদের স্কুলে অঙ্কের মাস্টার মশাই ছিলেন তাদের বিভীষিকা।

৩০. ঘন্টার পর ঘন্টা ছেলেরা কী নিয়ে পন্ডশ্রম করত ?

উত্তরঃ ঘন্টার পর ঘন্টা স্কুলের ছেলেরা জটিল অংক নিয়ে পন্ডশ্রম করত।

৩১. “আমরা রোমাঞ্চিত হয়ে দেখতুম”— কী দেখার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ দাম গল্পে ছোটবেলায় যখন স্কুলে অঙ্কের মাস্টার মশাই জটিল অঙ্কগুলি অনায়াসেই ব্ল্যাকবোর্ডে ছবির মত সাজিয়ে দিতেন, তখন তা ছাত্ররা রোমাঞ্চিত হয়ে দেখতো।

৩২. “ওর ভয়ে তারাও তটস্ত হয়ে থাকতো” এখানে ‘ওর’ ও ‘তারা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পে ওর বলতে স্কুলের সেই মাস্টার মশাইয়ের কথা বলা হয়েছে এবং তারা বলতে যারা অংকে ১০০ তে ১০০ পায় তাদের কথা বলা হয়েছে।

৩৩. “তা উনি পারতেন।” — ‘উনি’ কী পারতেন ?

উত্তরঃ অংকের মাস্টারমশাই অঙ্ক না-পারা ছাত্রদের কাঁদতে দেখলে পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারতেন।

৩৪. “এখানে তাঁর প্রবেশ নিষেধ” — কোথায় কাদের প্রবেশ নিষেধ?

উত্তরঃ এখানে বলতে প্লেটোর দোরগোড়াকে বোঝানো হয়েছে। যারা অংক পারে না তাদের দার্শনিক প্লেটোর দোরগোড়ায় প্রবেশ নিষেধ।

সংক্ষিত বা ব্যাখ্যাভিত্তিক | দাম (গল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Bengali Dam Question and Answer :

১. “আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে”– বক্তার ছাত্র তাকে কীভাবে অমর করেছে ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পের অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ মাস্টারমশাই ভাবতেই পারতেন না যে তার ছাত্ররা অঙ্ক পারবে না। মেরে-ধরে-বকে ছাত্রদের তিনি অঙ্ক শেখাতে চাইতেন। ফলে ছাত্রদের কাছে তিনি ছিলেন বিভীষিকা। পরবর্তীকালে তাঁরই ছাত্র সুকুমার মাস্টারমশাইকে নিয়ে তার বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা একটি পত্রিকায় লিখেছিলেন। সেটি পড়েই সরল মনের মাস্টারমশাইয়ের মনে হয়েছিল ছাপার অক্ষরে তার কথা লিখে তার ছাত্র তাকে অমর করে দিয়েছে।

২. “স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলােক!”— এখানে যার কথা বলা হয়েছে, তিনি কেন বিভীষিকা ছিলেন?

উত্তরঃ আলােচ্য উদ্ধৃতাংশে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্পের কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে। অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ সেই মাস্টারমশাই যে-কোনাে অঙ্কই মুহুর্তে সমাধান করে ফেলতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে অঙ্ক না জানলে জীবন বৃথা। তাই মাস্টারমশাই অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ছাত্রদের অঙ্ক শেখানাের চেষ্টা করতেন। ছাত্ররা না পারলে ক্রুদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড় তাদের পিঠে নেমে আসত কিন্তু কাঁদবার জো ছিল না, একারণেই তিনি ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা ছিলেন।

৩. “দু-চোখ দিয়ে তার আগুন ঝরছে”— কার কথা বলা হয়েছে ? তার দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে কেন ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে।

অঙ্কে বরাবর দুর্বল সুকুমার এম.এ পাস করার পরও স্বপ্ন দেখতেন যে তিনি যেন অঙ্ক পরীক্ষা দিচ্ছেন। শেষ ঘণ্টা পড়ার সময় হয়ে গেছে কিন্তু তার একটি অঙ্কও মিলছে না। সুকুমারের স্কুলজীবনের অন্যতম আতঙ্ক অঙ্কের মাস্টারমশাই গার্ড হয়ে তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। ছাত্র অঙ্ক পারছে না দেখে মাস্টারমশাইয়ের দু-চোখ থেকে আগুন ঝরছে।

৪.“ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত”– কার ভয়ে কারা কেন তটস্থ হয়ে থাকত ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গােপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে যারা পরীক্ষায় একশােতে একশাে পেত তারাও তটস্থ হয়ে থাকত।

স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই অঙ্কে ছিলেন অসাধারণ দক্ষ। যে-কোনাে জটিল অঙ্কই তিনি অনায়াসে সমাধান করে ফেলতেন। মাস্টারমশাই মনে করতেন, অঙ্ক না জানলে জীবন বৃথা। তাই তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ছাত্রদের অঙ্ক শেখাতেন। কিন্তু ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে তিনি ভয়ানক রেগে গিয়ে তাদের মারতেন বলেই লেখাপড়ায় ভালাে ছাত্ররাও তাকে ভীষন ভয় পেত৷

৫. “এখনি পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবাে”— বক্তা কেন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ উক্তিটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্প থেকে নেওয়া সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের।

অঙ্ক-অন্তপ্রাণ মাস্টারমশাইয়ের ক্লাসের কোনাে ছাত্র অঙ্ক না পারলেই তার পিঠে নেমে আসত তার প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড়। সেই চড় খেয়ে কোনাে ছাত্র কাঁদলেই তাকে তিনি পা ধরে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিতেন। তার মতে অঙ্ক না পারা এবং কাঁদা, দুটোই পুরুষ মানুষের পক্ষে চরম লজ্জার বিষয়।

৬. “একটা ভয়ের মৃদু শিহরণ আমার বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে গেল”– বক্তার ভয়ের শিহরণ হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজের অন্ধকারে ঢাকা মাঠে এক ভদ্রলােক কথক সুকুমারকে নাম ধরে ডাকলে তার বুকের ভিতর দিয়ে ভয়ের শিহরণ বয়ে যায়।

অচেনা এলাকায় অপরিচিত ব্যক্তির মুখে নিজের নাম শুনে অবাক হওয়ার পরমুহূর্তেই সুকুমার কণ্ঠস্বরটি চিনতে পারেন। স্কুলের বিভীষিকারূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের গলার আওয়াজ কথকের মনে তার ছােটোবেলায় অঙ্ক না পেরে মার খাওয়ার স্মৃতিকে জাগিয়ে তােলে। এটিই ছিল তার ভয়ের প্রকৃত কারণ।

৭.“আমাদের মতাে নগণ্যের পক্ষে ততই সুখাবহ”— ‘আমাদের’ বলতে যাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের কাছে কোন্ বিষয় সুখাবহ ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পের কথক সুকুমার ‘আমাদের বলতে তার মতাে মাঝারি মাপের লেখকদের বুঝিয়েছেন৷

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়ার ডাক পেয়েছেন। কলকাতায় একজন লেখকের প্রকৃত স্থান সম্পর্কে গ্রামের মানুষের স্বচ্ছ ধারণা থাকে। লেখকের মর্যাদা এবং সম্মান পাওয়ার ব্যাপারটিকেই সুকুমার সুখাবহ বলেছেন।

৮. “মাস্টারমশাই আমাকে বলতে দিলেন না।”— বলতে না দিয়ে মাস্টারমশাই নিজে কী বলেছিলেন ?

উত্তরঃ মাস্টারমশাই কথক সুকুমারের বক্তৃতার প্রশংসা করলে, লজ্জিত কথক বাধা দিতে গেলে মাস্টারমশাই সুকুমারকে থামিয়ে দিয়ে বলেন যে, ছাত্ররাই প্রকৃত অর্থে শিক্ষকদের গর্ব ও পরিচয়। অথচ শিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্রদের কিছুই দিতে পারেননি, খালি শাসন-পীড়ন করেছেন। এরপরে পকেট থেকে এক জীর্ণ পত্রিকা বের করে মাস্টারমশাই কথকের লেখাটি দেখিয়ে বলেন ছাত্র তাকে নিয়ে গল্প লিখে তাকে অমর করে দিয়েছেন।

৯. ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল”— ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল কেন ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজে সুকুমারের খুব আবেগময় বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর কলেজের বৃদ্ধ প্রিন্সিপাল তার প্রশংসা করতে থাকেন। তখন সুকুমার বলেন যে তার শরীরটা ভালাে না থাকায় তিনি মনের মতাে বক্তৃতা করতে পারেননি। অর্থাৎ এর চেয়েও ভালাে বলার ক্ষমতা তিনি রাখেন। এ কথা শুনে ছেলেরা বিস্মিত হয় এই ভেবে যে শরীর ভালাে থাকলে তিনি আরও কত ভালাে বক্তৃতা দিতেন। এই বিস্ময়েই তাদের চোখ কপালে উঠে যায়।

১০. “পুরুষ মানুষ হয়ে অঙ্ক পারিসনে”— বক্তা কে ? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ বক্তা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছোটোগল্প থেকে উদ্ধৃত আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই।

মাস্টারমশাই নিজে ছিলেন অঙ্ক-অন্ত প্রাণ। তিনি বিশ্বাস করতেন, অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা প্রতিটি ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য। মাস্টারমশাইয়ের কাছে পৌরুষ এবং ছেলেদের অঙ্কে দক্ষতা প্রায় সমার্থক ছিল। অঙ্ক না পেরে তাঁর হাতে মার খেয়ে ছেলেরা কাঁদলে তিনি তাই তাদের পৌরুষ নিয়ে ধিক্কার জানাতেন।

১১. “এমন অঘটন কল্পনাও করতে পারতেন না”– কার সম্পর্কে বলা হয়েছে ? তিনি কোন্ অঘটন কল্পনা করতে পারতেন না ?

উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছোটোগল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

গল্পকথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কে অসাধারণ দক্ষতা ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা প্রতিটি ছাত্রের কর্তব্য। তার কাছে পৌরুষ এবং ছেলেদের অঙ্কে দক্ষতা প্রায় সমার্থক ছিল। একজন পুরুষমানুষ অঙ্ক পারে না, এটাই ছিল মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঘটন। এমন অঘটন তিনি কল্পনাও করতে পারতেন না।

১২. “প্লেটোর দোরগোড়ায় কী লেখা ছিল, জানিস ?”– প্লেটোর পরিচয় দাও ? বক্তা প্লেটোর দোরগোড়ায় কোন লেখার কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছোটোগল্পের উল্লিখিত প্লেটো ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ। তিনি সক্রেটিসের শিষ্য ছিলেন। তাঁর লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ “দ্য রিপাবলিক”।

মাস্টারমশাই বলতেন যে, প্লেটোর বাড়ির দোরগোড়ায় নাকি লেখা ছিল– ‘যারা অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।’ মাস্টারমশাইয়ের মতে স্বর্গের দরজাতেও নাকি ওই একই কথা লেখা আছে।

১৩. “সে স্বর্গের চাইতে লক্ষ যোজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বোধ করতুম”— এরকম মনে করার কারণ কী ?

উত্তরঃ ‘দাম’ ছোটোগল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঙ্ক না পারাটা ছিল অপরাধ। তিনি ছাত্রদের বলতেন যে গ্রিক গণিতজ্ঞ প্লেটোর বাড়ির দোরগোড়ায় লেখা ছিল যারা অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তাদের প্রবেশ নিষেধ। মাস্টারমশাই আরও বলতেন স্বর্গের দরজাতেও নাকি ওই একই কথা লেখা আছে। তাই সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের মনে হত, যে স্বর্গে ঢুকেই জ্যামিতির এক্সট্রা বা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক করতে হয় তার থেকে দূরে থাকাই নিরাপদ।

১৪. “সেই বিভীষিকা মন থেকে গেল না”– বক্তা এখানে কোন্ বিভীষিকার কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ ‘দাম’ ছোটোগল্পে অঙ্কে অসাধারণ মাস্টারমশাই মনে করতেন অঙ্ককে ভালোবাসা এবং অঙ্ক জানা প্রতি ছাত্রের কর্তব্য। ছাত্ররা অঙ্ক না পারলেই মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড মার খেতে হত তাদের। সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের কাছে তখন অঙ্কের ভয়কে ছাপিয়ে যেত মাস্টারমশাইয়ের মারের ভয়। অঙ্ক এবং অঙ্কের মাস্টারমশাই– এই দুই আতঙ্ক বা বিভীষিকার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

১৫. “ওঁর চড়ের জোর থেকেই আমরা তা আন্দাজ করে নিয়েছিলুম”– কার কথা বলা হয়েছে ? তার সম্পর্কে কী আন্দাজ করে নেওয়া হয়েছিল ?

উত্তরঃ উক্ত লাইনটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছোটোগল্পের কথকের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের।

মাস্টারমশাই নিজে অঙ্কে অসাধারণ ছিলেন। ছাত্ররা অঙ্ক না পারলেই তাদের পিঠে পড়ত মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচন্ড চড়। চড় খেয়ে ছাত্ররা কাঁদলে তিনি আরও রেগে গিয়ে তাদের পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। সেই চড়ের জোর থেকে ছাত্ররা আন্দাজ করে নিয়েছিল যে তাদের ফেলে দেওয়ার শক্তিও মাস্টারমশাইয়ের রয়েছে।

১৬. “ছবিটা যা ফুটল তা খুব উজ্জ্বল নয়”–
এখানে কোন ছবির কথা বলা হয়েছে? ছবিটা উজ্জ্বল নয় কেন?

উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটি দাম গল্প থেকে গৃহীত হয়েছে। দাম গল্পের প্রধান চরিত্র সুকুমার, তার স্কুলের বিভীষিকাস্বরূপ মাস্টারমশাইকে কেন্দ্র করে যে লেখা লিখেছিল, এখানে তার কথা বলা হয়েছে।

সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের স্মৃতি মোটেই সুখকর নয়। তাই পত্রিকার অনুরোধে সুকুমার যে প্রবন্ধ রচনা করেছিল তাতে মাস্টারমশাইয়ের প্রতিচ্ছবি একেবারেই উজ্জ্বল ছিল না। রচনার মূল বক্ত্যব্য ছিল ‘অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না, গাধা পিঠিয়ে ঘোড়া করতে গেলে গাধাটাই পঞ্চত্ব পায়’। লেখক প্রবন্ধ রচনার সময় বাস্তবের সঙ্গে কল্পনা মিশিয়ে তা রচনা করেছিলেন তা থেকে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কাঠিন্য এবং অপারদর্শিতার দিকটিই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।

রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Essay Type) | দাম (গল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WBBSE Class 9 Bengali Dam Question Answer

১. “এ অপরাধ আমি বইব কী করে, এ লজ্জা আমি কোথায় রাখব!”– অপরাধবােধ এবং আত্মগ্লানি দূর হয়ে কীভাবে বক্তার আত্মশুদ্ধি ঘটল তা সংক্ষেপে লেখাে।

উত্তরঃ ‘দাম’ গল্পে কথকের ছােটোবেলার বিভীষিকাস্বরূপ ছিলেন তার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই। অঙ্ক শেখানাের জন্য তার কঠোর শাসন, তীব্র বকাঝকা কথকদের কাছে আতঙ্ক হয়ে গিয়েছিল। সেই আতঙ্কের রেশ এতটাই তীব্র ছিল যে, এম.এ পাস করার পরেও দুঃস্বপ্নে মাস্টারমশাই এসে হাজির হতেন সামনে। তারপরে যখন জেগে উঠে ভাবলেন যে তিনি এখন কলেজে বাংলা পড়ান, স্কুলে অঙ্ক করেন না তখন এক গভীর তৃপ্তি অনুভব করেন। সেই মাস্টারমশাইয়ের ওপরে মধুর প্রতিশােধ নেওয়ার সুযােগ কথক পেয়ে যান যখন একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ছেলেবেলার গল্প লেখার অনুরােধ আসে। তিনি লেখেন– “অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না”—নিজের অঙ্ক শিক্ষার ব্যর্থতার কথা বলে এ কথাই বুঝিয়ে দেন কথক।

কিন্তু বাংলাদেশের প্রান্তবর্তী কলেজে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বহুদিন পরে বয়সের ভারে জীর্ণ সেই মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে যখন কথকের আবারও দেখা হয়— কথকের সব ধারণা পালটে যায়। মাস্টারমশাই শুধু সুকুমারের বক্তৃতারই প্রশংসা করেন না, জামার পকেট থেকে বের করেন সেই জীর্ণ পত্রিকা— যাতে ছিল মাস্টারমশাইকে নিয়ে কথকের লেখা বাল্যস্মৃতিটি। “আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে” — মাস্টারমশাইয়ের মুখে এ কথা শুনে পার আত্মগ্লানিতে মাটিতে মিশে যান কথক। সন্তান বড়াে হলে পিতার অন্যায় শুধরে দেবে, নিজের এই মূল্যায়নে মাস্টারমশাই যেন অনন্য মহিমা নিয়ে ধরা পড়েন কথকের সামনে। কথকের মনে হয় তিনি যেন স্নেহ-মমতা-মার এক মহাসমুদ্রের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। এই লজ্জাবােধে আর মাস্টারমশাইয়ের উদারতার সামনে নত হওয়ার মাধ্যমেই তাঁর আত্মশুদ্ধি ঘটে।

২. ‘দাম’ ছোট গল্পটি অবলম্বনে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের চরিত্র বর্ণনা করো।

উত্তরঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ একটি অসাধারণ ছােটোগল্প। গৰাট মাস্টারমশাই এক অসামান্য চারমাই।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ শিরোনামে রচিত অসাধারণ ছোটো গল্পে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের মধ্যে অসামান্য চরিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। চিরকালীন এক শিক্ষক যিনি শুধুমাত্র মানুষ করার লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে গেছেন।

অঙ্কে দক্ষঃ স্কুলের মাস্টারমশাই ছিলেন অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ। তাঁর অঙ্কে দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত। মনে হত তিনি যেন পৃথিবীর সব অঙ্ক জানেন। যে অঙ্ক নিয়ে ছাত্ররা ঘন্টার পর ঘন্টা পন্ডশ্রম করত, তা তিনি একবারমাত্র দেখে অনায়াসে সমাধান করে ফেলতে পারতেন।

কর্তব্যে কঠোরঃ এই অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন কঠোর শাসক। ছাত্রদের দুর্বল জায়গায় আঘাত করে তাদের শিখন সামর্থ্যকে আরও উন্নতি করে তোলা ছিল তার লক্ষ্য। তার জন্য তিনি কখনও ভয় দেখিয়েছেন কখনও বা মারতেও দ্বিধা করেননি।

উদারমনাঃ ছাত্র সুকুমারের বাল্যস্মৃতিতে লেখা সমালােচনাকে তিনি উদারমনে সন্তানের অধিকার বলেই গ্রহণ করেছিলেন। ছাত্র তাকে মনে রেখেছে— এইটুকুই বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের কাছে সবথেকে বড়াে পাওয়া হয়ে উঠেছে।

সারকথাঃ মাস্টারমশাই যেটা উপলব্ধি করতে পারেননি, সেটা হল সব বিষয় সকলের প্রিয় না-ও হতে পারে এবং ভীতি কোনাে বিষয়কে ভালােবাসতে শেখায় না। বরং তার থেকে আরও দূরে সরিয়ে দেয়। মাস্টারমশাইয়ের শিক্ষাপদ্ধতির এই ত্রুটির জন্য ছাত্ররা তাকে ভুল বুঝত। আসলে কিন্তু তিনি ছিলেন একজন আদর্শনিষ্ঠ, কর্তব্যপরায়ণ এবং ছাত্রদরদী শিক্ষক। তার ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে সুকুমারের দেওয়া সব আঘাত তাঁর গায়ে ছাত্রের শ্রদ্ধার ফুল হয়ে ঝরে পড়েছিল।

৩. ‘দাম’ ছােটোগল্পের সুকুমার চরিত্রটি আলােচনা করাে।

অথবা,

“আমি তাঁকে দশ টাকায় বিক্রি করেছিলুম”– এই উক্তিটির আলােকে সুকুমার চরিত্রটি আলােচনা করাে।

উত্তরঃ

অঙ্কে দুর্বলঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছােটোগল্পের কথক সুকুমার বরাবরই অঙ্কে দুর্বল ছিলেন। সুকুমারের কাছে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন মূর্তিমান বিভীষিকা। ম্যাট্রিকুলেশনের পর অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে রেহাই পেলেও দীর্ঘদিন সেই ভয় সুকুমারকে তাড়া করে ফিরত। পরবর্তীকালে বাংলার অধ্যাপক লেখক সুকুমার একটি অনামি পত্রিকায় মাস্টারমশাইকে নিয়ে তার বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার স্মৃতিকথা লিখেছিলেন।

আত্মসমালােচকঃ সুকুমার চরিত্রের সবথেকে বড়াে বৈশিষ্ট্য হল তার আত্মবিশ্লেষণ। তিনি যে মাঝারি মাপের লেখক, তার বক্তৃতা যে আবেগসর্বস্ব, অন্তঃসারশূন্য, অত প্রশংসা যে তার প্রাপ্য নয় সবটাই তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন।

শ্রদ্ধাশীলঃ বহু বছর পর তার স্কুলজীবনের বিভীষিকা অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে দেখা হতেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে কিন্তু সুকুমারের এতটুকু দেরি হয়নি। অঙ্কে মাস্টারমশাইয়ের পান্ডিত্যকেও সুকুমার মর্যাদার সঙ্গে স্বীকার করেছেন। তিনি মাস্টারমশাইকে ভয় পেয়েছেন, কিন্তু অশ্রদ্ধা করেননি।

সংবেদনশীলঃ সুকুমারের পরিণত মন বুঝেছে যে, এতদিন তিনি শুধু অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের শাসনের ভীতিকেই উপলব্ধি করেছিলেন, তাঁর স্নেহের ফল্গুধারাকে অনুভব করতে পারেননি। যে স্নেহ-মমতা-মার মহাসমুদ্র সম বিভীষিকাময় মাস্টারমশাইয়ের স্মৃতিকে তিনি দশ টাকায় বিক্রি করেছেন, সেই মানুষটির অমূল্য স্নেহ তার মাথায় ঝরে পড়েছে— এই ভেবে সুকুমার আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হন।

৪. ‘দাম’ গল্পটি ছােটোগল্প হিসেবে কতটা সার্থক আলােচনা করাে।

উত্তরঃ শুধু আয়তনের সংক্ষিপ্ততা নয়, ছােটোগল্পের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য ‘দাম’ গল্পে দেখা যায়।

চরিত্রের স্বল্পতাঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্পটিতে চরিত্রের সংখ্যা খুবই কম৷ সুকুমার এবং তার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই হলেন গল্পের প্রধান দুই চরিত্র। এ ছাড়া কলেজের প্রিন্সিপাল ও কয়েকজন ছাত্রের উল্লেখ আছে, যাদের ভূমিকা খুবই কম।

ঘটনার ঘনঘটা বর্জিতঃ ‘দাম’ গল্পে ঘটনারও বাহুল্য নেই। গল্প শুরু হয়েছে সুকুমার ও তার সহপাঠীদের সঙ্গে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের সম্পর্ক দিয়ে। এর বাইরে অতিরিক্ত কোনাে ঘটনার উল্লেখ নেই। সেইসম্পর্কেরই পরিণতিতে গল্প শেষ হয়— ফলে নিশ্চিতভাবে কাহিনিটিকে একমুখী বলা যায়।

গল্পের শেষে চমকঃ যখন গল্পের শেষদিকে এসে সুকুমারের সঙ্গে কথকের দেখা হয় এবং সুকুমার জানতে পারেন যে স্বয়ং মাস্টারমশাই তার লেখা বাল্যস্মৃতিটি পড়েছেন, তারপরে ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক যেভাবে নতুন ধারণায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তা পাঠকদের নিঃসন্দেহে চমকে দেয়।

অতৃপ্তিঃ মাস্টারমশাই তাঁর সব সমালােচনার আঘাত উদারমনে গ্রহণ করেছেন—এটা জানার পর সুকুমারের স্বগতােক্তি দিয়ে গল্প শেষ হয়। পাঠকের মনে একটা অতৃপ্তি থেকেই যায় এটা জানার জন্য যে, এরপর কী হল। সব দিক বিচার করে তাই বলাই যায় যে, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ একটি আদর্শ ছােটোগল্প।

৫. ‘আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে।’– বক্তা কে ? কীভাবে তিনি অমরত্ব লাভ করেছেন ?

উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটি লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ‘দাম’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।

গল্পে আমরা দুটি চরিত্রের সাথে পরিচিত হই, প্রথমটি হলেন গল্পের লেখক এবং দ্বিতীয়টি হলেন লেখকের অঙ্কের মাস্টারমশাই। এখানে মাস্টারমশাই তার ছাত্রের অর্থাৎ গল্পের লেখকের উদ্দেশে এই উক্তিটি করেছেন।

ছাত্রজীবনে লেখক, স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই এবং তার প্রহারকে ভীষণ ভয় পেতেন। এমনকি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবার পরেও, লেখকের মন থেকে তাঁর মাস্টারমশাইয়ের ভয়ের স্মৃতি অমলীন হয়ে থাকে। লেখক কোন একটি পত্রিকার অনুরোধে তাঁর ছেলেবেলার গল্প লেখেন এবং সেই গল্পে তিনি তাঁর মাস্টারমশাইয়ের প্রতি সমালোচনা এবং বক্রোক্তি করেন। তাঁর লেখাটি প্রশংসিত হয় এবং তা থেকে তিনি দশ টাকা রোজগার করেন।

পরবর্তী সময়ে লেখকের সাথে বিভীষিকাময় মাস্টারমশাইয়ের দেখা হয়। লেখক দেখেন যে মাস্টারমশাই তার সমালোচনামূলক লেখাটি যত্ন করে রেখে দিয়েছেন, শুধু তাই নয় সময় সুযোগ মতো তিনি সবাইকে ঐ লেখাটি দেখাতেও ভোলেন না। যে লেখাটি ছাত্রের কাছে মাস্টারমশাইয়ের প্রতি সমালোচনা বর্ষণ, ঠিক তাই যেন অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কাছে ছাত্রের শ্রদ্ধা নিবেদন। মাস্টারমশাইয়ের মনে হয় তাঁর ছাত্র যেন ঐ পত্রিকার লেখার মাধ্যমেই তাঁর মাস্টারমশাইকে অমর করে রেখেছে।

নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 9th Bengali Question and Answer / Suggestion / Notes

আরও পড়ুনঃ

নবম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর

Leave a Reply