ইলিয়াস নবম শ্রেণির বাংলা গল্প লিও তলস্তয় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | Class 9 Bengali ilias Solved Question and Answer WBBSE

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

নবম শ্রেণির বাংলা প্রশ্নোত্তর

West Bengal Board Class 9th Bengali ilias Question and Answer, Notes | নবম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ইলিয়াস (গল্প) লিও তলস্তয় থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer)

বিকল্প ধর্মীয় প্রশ্ন উত্তর (Multiple Choice Questions) ইলিয়াস (গল্প) লিও তলস্তয় – নবম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Class 9 Bengali ilias Question and Answer

১. ‘যখন তার বাবা মারা গেল সে না ধনী, না দরিদ্র’– কার কথা বলা হয়েছে –
(ক) অতিথিরা
(খ) শামশেমাগি
(গ) মোল্লা
(ঘ) ইলিয়াস

উত্তরঃ (ঘ) ইলিয়াস

২. কত বছরের পরিশ্রমে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিল ?
(ক) ৩০ বছর
(খ) ৩২ বছর
(গ) ৩৪ বছর
(ঘ) ৩৫ বছর

উত্তরঃ (ঘ) ৩৫ বছর।

৩. ইলিয়াসের বড়ো ছেলেটি মারা গিয়েছিল–
(ক) প্রবল জ্বরে
(খ) কলেরা রোগে
(গ) ক্যানসারে
(ঘ) মারামারি করতে গিয়ে

উত্তরঃ (ঘ) মারামারি করতে গিয়ে।

৪. ‘একদল আত্মীয় অনেক দূর থেকে এসে তার বাড়িতে অতিথি হলেন।’– আত্মীয় এসেছিল—
(ক) ইলিয়াসের কাছে
(খ) মোল্লার কাছে
(গ) ইলিয়াসের মেয়ের কাছে
(ঘ) মহম্মদ শার কাছে

উত্তরঃ (ঘ) মহম্মদ শার কাছে

৫. “এই সম্পন্ন মানুষ দুটির দূরবস্থা দেখে মহম্মদ শার দুঃখ হতো”– সম্পন্ন মানুষ দুটি হল –
(ক) ইলিয়াসের দুই ছেলে
(খ) ইলিয়াস ও তার স্ত্রী
(গ) মোল্লা ও তার স্ত্রী
(ঘ) মোহাম্মদ শা ও তার স্ত্রী

উত্তরঃ (খ) ইলিয়াস ও তার স্ত্রী

৬. ‘আমাদের সঙ্গে একটু কুমিস পান করবে’– একথা বলেছিল—
(ক) মহম্মদ শা ইলিয়াসকে
(খ) মহম্মদ শা অতিথিকে
(গ) মহম্মদ শা মোল্লাকে
(ঘ) মহম্মদ শা শাম শেমাগি

উত্তরঃ (ক) মহম্মদ শা ইলিয়াসকে

৭. ‘অতিথিরা বিস্মিত’– অতিথিদের বিস্মিত হবার কারণ—
(ক) ইলিয়াস ও তার স্ত্রী সর্বহারা হয়েও সুখে আছে
(খ) তাদের কল্যাণের জন্য এ কথা বলেছে তারা
(গ) অর্ধশতাব্দী ধরে তারা সুখ খুঁজেছে
(ঘ) আজ তারা সুখের সন্ধান পেয়েছে

উত্তরঃ (ক) ইলিয়াস ও তার স্ত্রী সর্বহারা হয়েও সুখে আছে

৮. ‘ইলিয়াস নামে একজন বাসকির বাস করত’– ইলিয়াস বাস করত—
(ক) ব্রিটেনে
(খ) উফা প্রদেশে
(গ) রাশিয়ায়
(ঘ) মস্কোয়

উত্তরঃ (খ) উফা প্রদেশে

৯. ‘ইলিয়াস প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ দিল’– ইলিয়াসের প্রতিবেশী ছিল–
(ক) মোল্লা
(খ) মহম্মদ শা
(গ) অতিথিরা
(ঘ) শাম শেমাগি

উত্তরঃ (খ) মহম্মদ শা

১০. ‘তার সবচাইতে ভালো ঘোড়াগুলো চুরি করে নিয়ে গেল’– ঘোড়াগুলি চুরি করেছিল–
(ক) কিরবিজরা
(খ) ইলিয়াসের বিতাড়িত পুত্র
(গ) ইলিয়াস
(ঘ) অতিথিরা

উত্তরঃ (ক) কিরবিজরা

১১. ‘সম্বলের মধ্যে রইল শুধু কাঁধে একটা বোঁচকা’– বোঁচকায় ছিল–
(ক) কম্বল, ঘোড়ার জিন, তাবু
(খ) লোমের তৈরি কোর্ট, জুতো, আর বুট
(গ) চা, কুমিস, মাংস, শরবত
(ঘ) অনেক মূল্যবান জিনিস

উত্তরঃ (খ) লোমের তৈরি কোর্ট, জুতো, আর বুট

১২. ‘সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল’ – সে সর্বহারা হয়েছিল—
(ক) মেয়েটি মারা যাওয়ার পর
(খ) আসল অবস্থা বুঝে উঠবার আগেই
(গ) শরীরের জোর কমে গেলে
(ঘ) বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর

উত্তরঃ (খ) আসল অবস্থা বুঝে উঠবার আগেই

১৩. “এছাড়াও যদি কখনো কিছু লাগে, বলবে তাও দেব”– কথাটি কে বলেছিল ?
(ক) ইলিয়াস
(খ) মোল্লা
(গ) মহম্মদ শা
(ঘ) অতিথি

উত্তরঃ (গ) মহম্মদ শা

১৪. “ইলিয়াস তাকে একটা বাড়ি দিল, কিছু গোরু-ঘোড়াও দিল।”– ইলিয়াস এসব দিয়েছিল—
(ক) তার একমাত্র মেয়েকে
(খ) তার বড়ো ছেলেকে
(গ) তার ছোটো ছেলেকে
(ঘ) মহম্মদ শা নামে এক প্রতিবেশীকে

উত্তরঃ (গ) তার ছোটো ছেলেকে।

১৫. “আগেকার সুখ আর এখনকার দুঃখ সম্পর্কে তোমার মনের কথা বলতো।”– একথা বলেছে–
(ক) শাম শেমাগি
(খ) অতিথি
(গ) মহম্মদ শা
(ঘ) ইলিয়াস

উত্তরঃ (খ) অতিথি

১৬. “কখনো সুখ পাইনি”– সুখ পায়নি কখন ?
(ক) যখন দুশ্চিন্তা করেছেন
(খ) যখন ধনী ছিলেন
(গ) শীতকালে
(ঘ) যখন সম্পত্তি হারিয়েছিলেন

উত্তরঃ (খ) যখন ধনী ছিলেন

১৭. “দুর্দশার একেবারে চরমে নেমে গেল”– দুর্দশা চরমে নেমে গেল–
(ক) যখন ঘরের আত্মীয় সমাগম হলো
(খ) যখন গ্রীষ্মকাল
(গ) ইলিয়াসের ৭০ বছর বয়সে
(ঘ) অতিথির কথায়

উত্তরঃ (গ) ইলিয়াসের ৭০ বছর বয়সে

১৮. “লোকটিকে কখনো চোখে দেখেনি, কিন্তু তার সুনাম ছড়িয়ে ছিল বহুদূর”– উক্তিটি কার–
(ক) গৃহস্বামীর
(খ) শাম শেমাগির
(গ) অতিথির
(ঘ) ইলিয়াসের

উত্তরঃ (গ) অতিথির

১৯. “সুখ খুঁজে খুঁজে এতদিনে পেয়েছি”– বক্তা সুখ খুঁজেছেন–
(ট) অর্ধশতাব্দী ধরে
(খ) কুড়ি বছর আগে
(গ) ৫০ বছর ধরে
(ঘ) কল্যাণের জন্য

উত্তরঃ (গ) ৫০ বছর ধরে

২০. “এ বিষয়ে তিনিই পুরো সত্য বলতে পারবেন”– সত্যটি বলেছিলেন–
(ক) মহম্মদ শা
(খ) ইলিয়াস
(গ) অতিথি
(ঘ) শাম শেমাগি

উত্তরঃ (ঘ) শাম শেমা

২১. “বন্ধুগণ হাসবেন না”– বন্ধুদের না হাসার কারণ–
(ক) কথাগুলি সব পবিত্র গ্রন্থে লেখা আছে
(খ) কথাগুলি সবই সত্য
(গ) এটা তামাশা নয়, এটাই মানুষের জীবন
(ঘ) অতিথিদের ভাবনা

উত্তরঃ (গ) এটা তামাশা নয়, এটাই মানুষের জীবন

২২. “বন্ধুগণ হাসবেন না।”– এ কথা বলেছে—
(ক) ইলিয়াস
(খ) শাম-শেমাগি
(গ) মহম্মদ শা
(ঘ) মহম্মদ শার জনৈক আত্মীয়

উত্তরঃ (ক) ইলিয়াস।

২৩. মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত অতিথিদের মধ্যে একজন ছিলেন–
(ক) পুরোহিত
(খ) মোল্লাসাহেব
(গ) ইলিয়াস
(ঘ) ইলিয়াসের ছেলে

উত্তরঃ (খ) মোল্লাসাহেব।

২৪. শীতের জন্য মজুত করে রাখা হত যথেষ্ট–
(ক) খাদ্যশস্য
(খ) খড়
(গ) ভেড়া
(ঘ) যব

উত্তরঃ (খ) খড়।

২৫. ইলিয়াসের বিয়ের এক বছর পরে যখন তার বাবা মারা গেল তখন সে ছিল–
(ক) খুব ধনী
(খ) না ধনী, না দরিদ্র
(গ) খুব গরিব
(ঘ) খুব ক্ষমতাসম্পন্ন

উত্তরঃ (খ) না ধনী, না দরিদ্র।

২৬. “সেও তো পাপ”– কোন কাজের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ?
(ক) মজুরদের ওপর কড়া নজরদারি
(খ) পশুপালনে তদারকি
(গ) পশু হত্যা
(ঘ) অতিথিদের সেবা না করা

উত্তরঃ (ক) মজুরদের ওপর কড়া নজরদারি।

২৭. “বন্ধুগণ হাসবেন না। এটা তামাশা নয়।”– এটি কার উক্তি ?
(ক) ইলিয়াসের
(খ) মোল্লার
(গ) শাম-শেমাগির
(ঘ) মহম্মদ শা-র

উত্তরঃ (ক) ইলিয়াসের উক্তি।

২৮. ‘এই তার যা কিছুই বিষয়-সম্পত্তি’–কার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) অতিথি
(খ) মহম্মদ শা
(গ) ইলিয়াস
(ঘ) শাম শেমাগি

উত্তরঃ (গ) ইলিয়াস

২৯. ‘পাশেপাশের সকলেই তাকে ঈর্ষা করে’ – ঈর্ষা করার কারণ
(ক) ইলিয়াসের নাম যশ প্রচুর
(খ) ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও
(গ) ইলিয়াস ভাগ্যবান পুরুষ
(ঘ) ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তির মালিক

উত্তরঃ (খ) ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও

৩০. ‘ইলিয়াস, তুমি আমার বাড়ি এসে আমার সঙ্গে থাকো’– একথা বলেছিল–
(ক) মোল্লা
(খ) শাম শেমাগি
(গ) মহম্মদ শা
(ঘ) অতিথিরা

উত্তরঃ (গ) মহম্মদ শা

৩১. ‘কিন্তু বড়লোক হওয়ার পরে তারা আয়েশি হয়ে উঠল’– আয়েশি হয়ে উঠেছিল–
(ক) ইলিয়াসের ছেলেমেয়েরা
(খ) মহম্মদ শা ও তার স্ত্রী
(গ) ইলিয়াস ও তার স্ত্রী
(ঘ) অতিথিরা

উত্তরঃ (ক) ইলিয়াসের ছেলেমেয়েরা

৩২. ‘বুড়ো বুড়িকে রেখে মহম্মদ শার লাভ হল’– কারণ—
(ক) সব কাজই তারা ভালোভাবে করতে পারত
(খ) নিজেরা একদিন মনিব ছিল
(গ) তারা সাধ্যমত কাজকর্ম করত
(ঘ) তারা অলস নয়

উত্তরঃ (ক) সব কাজই তারা ভালোভাবে করতে পারত

৩৩. ইলিয়াসের সবচাইতে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল–
(ক) কিরবিজরা
(খ) কজারিকা
(গ) প্রতিবেশীরা
(ঘ) মহম্মদ শা

উত্তরঃ (ক) কিরবিজরা।

৩৪. “এখনকার দুরাবস্থার কথা ভেবে কি খুব কষ্ট হচ্ছে ?”– এ কথা কে বলেছিলেন ?
(ক) মোল্লা অতিথিদের
(খ) ইলিয়াস বড় ছেলেকে
(গ) মহম্মদ শা ইলিয়াসকে
(ঘ) অতিথি ইলিয়াসের স্ত্রীকে

উত্তরঃ (ঘ) অতিথি ইলিয়াসের স্ত্রীকে

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ইলিয়াস (গল্প) লিও তলস্তয় – নবম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Bengali ilias SAQ Question and Answer :

১. ইলিয়াস কোথায় বসবাস করত ?

উত্তরঃ ইলিয়াস, উফা প্রদেশে বসবাস করতো।

২. ইলিয়াস কোন জনগোষ্ঠীর মানুষ ছিল ?

উত্তরঃ ইলিয়াস একজন বাস্‌কির জনগোষ্ঠীর মানুষ ছিলেন।

৩. “বাড়ি থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হলাে।”— কাদের কেন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল ?

উত্তরঃ ইলিয়াসের ছােটো ছেলে একটি মুখরা মেয়েকে বিয়ে করার পর বাবার আদেশ অমান্য করায় তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল।

৪. ‘ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়ল’– কেন ?

উত্তরঃ ছােটো ছেলেকে ইলিয়াস একটি বাড়ি এবং কিছু গােরু-ঘােড়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ায় তার সম্পত্তিতে টান পড়ল।

৫. ইলিয়াসের অনেকগুলি ভেড়ার কীভাবে মৃত্যু ঘটল ?

উত্তরঃ ভেড়ার পালে মড়ক লেগে ইলিয়াসের অনেকগুলি ভেড়ার মৃত্যু হয়েছিল।

৬. সত্তর বছর বয়সে দুর্দশার চরমে নেমে ইলিয়াস কী কী বিক্রি করতে বাধ্য হল ?

উত্তরঃ সত্তর বছর বয়সে দুর্দশার চরমে নেমে ইলিয়াস তার পশমের কোট,কম্বল, ঘােড়ার জিন, তাবু এবং গৃহপালিত পশুগুলি বিক্রি করতে বাধ্য হল।

৭. বৃদ্ধ বয়সে ইলিয়াস ও তার স্ত্রী কোথায় বাস করত ও কীভাবে খাবার জোগাড় করত ?

উত্তরঃ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী অপরিচিত লােকের বাড়িতে বাস করত এবং তাদের যাবতীয় কাজ করে খাবার জোগাড় করত।

৮. ইলিয়াসের স্ত্রীর নাম কী ?

উত্তরঃ ইলিয়াসের স্ত্রীর নাম ছিল শাম-শেমাগি।

৯. বৃদ্ধ বয়সে ইলিয়াসের সম্বল বলতে কী রইল ?

উত্তরঃ ইলিয়াসের সম্বল ছিল লােমের তৈরি একটি কোট, টুপি,জুতাে এবং বুট সমেত একটা বোঁচকা আর স্ত্রী শাম-শেমাগি।

১০. বৃদ্ধ ইলিয়াসকে দেখে তার প্রতি কার করুণা হয়েছিল ?

উত্তরঃ বৃদ্ধ ইলিয়াসকে দেখে মহম্মদ শা নামে এক প্রতিবেশীর করুণা হয়েছিল।

১১. মুহম্মদ শা ইলিয়াসকে কী কাজ দিল ?

উত্তরঃ মহম্মদ শা ইলিয়াসকে গ্রীষ্মকালে তরমুজের খেত দেখভাল করা এবং শীতকালে গােরু-ঘােড়াদের খাওয়ানাের কাজ দিয়েছিল।

১২. ইলিয়াসের স্ত্রীর জন্য মহম্মদ শা কী কাজ দিয়েছিল ?

উত্তরঃ মহম্মদ শা ইলিয়াসের স্ত্রীকে ঘােটকীদের দুধ দোয়ানাে এবং কুমিস তৈরির কাজ দিয়েছিল।

১৩. ইলিয়াস ও তার স্ত্রী মহম্মদ শার বাড়িতে কীসের মতাে কাজ করত ?

উত্তরঃ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী মহম্মদ শার বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের মতাে কাজ করত।

১৪. “ক্রমে ক্রমে সব সয়ে গেল”—কার কী সয়ে গেল ?

উত্তরঃ বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী প্রতিবেশী মহম্মদ শার বাড়িতে থেকে ভাড়াটে মজুরের মতাে পরিশ্রম করত। প্রথমদিকে কষ্ট হলেও পরে তাদের এই পরিশ্রম সয়ে যায়।

১৫. “তা ছাড়া তারা অলস নয়”—কারা অলস নয় ?

উত্তরঃ লিও তলস্তয়ের ইলিয়াস’ গল্পের উদ্ধৃতাংশে বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগির কথা বলা হয়েছে ।

১৬. মহম্মদ শার বাড়িতে আসা আত্মীয়দের মধ্যে একজন জাতিতে কী ছিলেন ?

উত্তরঃ মহম্মদ শার বাড়িতে আগত আত্মীয়দের মধ্যে একজন ছিলেন মুসলিম পন্ডিত বা মােল্লাসাহেব।

১৭. “এ তল্লাটের সবচেয়ে ধনী ছিল’– কে ধনী ছিল ?

উত্তরঃ আলােচ্য উবৃত্যংশে বৃদ্ধ ইলিয়াস একসময় এলাকার সবচেয়ে ধনী ছিল।

১৮. অতিথিরা ইলিয়াসের স্ত্রীর কাছে কী জানতে চেয়েছিলেন ?

উত্তরঃ অতিথিরা ইলিয়াসের স্ত্রীর কাছে আগেকার সুখী জীবন আর এখনকার কষ্টের জীবন সম্পর্কে তার মনের কথা জানতে চেয়েছিলেন।

১৯. “এই তার যা কিছু বিষয় সম্পত্তি” — কী কী বিষয়সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশে তার বিষয়সম্পত্তি বলতে সাতটা ঘােটকী, দুটো গােরু এবং কুড়িটা ভেড়ার কথা বলা হয়েছে।

২০. কত বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিল ?

উত্তরঃ দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিল।

২১. “ওর তাে মরবারই দরকার নেই।” — কার, কেন যাবার দরকার নেই ?

উত্তরঃ বিপুল সম্পত্তির মালিক ইলিয়াসের কোনাে কিছুর অভাব ছিল না বলেই প্রতিবেশীরা বলেছিল যে তার মরবারই দরকার নেই।

২২. “দূরদূরান্ত থেকে অতিথিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে।”— কার সঙ্গে অতিথিরা দেখা করতে আসে ?

উত্তরঃ দূরদূরান্ত থেকে অতিথিরা বিপুল সম্পত্তির অধিকারী প্রভাবশালী ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা করতে আসত।

২৩. ইলিয়াসের কয়টি সন্তান ছিল ?

উত্তরঃ ইলিয়াসের দুই ছেলে ও এক মেয়ে অর্থাৎ মােট তিনটি সন্তান ছিল।

২৪. ইলিয়াস যখন গরিব ছিল ছেলেরা তাকে কীভাবে সাহায্য করত ?

উত্তরঃ ইলিয়াস যখন গরিব ছিল তখন ছেলেরা তার সঙ্গে গোরু-ভেড়া চরিয়ে তার কাজে সাহায্য করত।

২৫. “তারা আয়েশি হয়ে উঠল” — কারা, কখন আয়েশি হয়ে উঠল ?

উত্তরঃ ইলিয়াস ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠলে তার ছেলেরা আয়েশি হয়ে উঠল।

২৬. ইলিয়াসের বড়াে ছেলেটির কীভাবে মৃত্যু ঘটে ?

উত্তরঃ ইলিয়াস ও তার পরিবার যখন সচ্ছল জীবন কাটাতে শুরু করে, তখন এক মারামারির ঘটনায় তার বড়ো ছেলেটির মৃত্যু ঘটে।

২৭. “অতিথিরা বিস্মিত”– কেন ?

উত্তরঃ ধনীজীবনে সুখের সন্ধান না পেয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবনে সত্যিকারের সুখের সন্ধান তারা পেয়েছেন– শাম-শেমাগির মুখে এ কথা শুনে অতিথিরা বিস্মিত হয়।

২৮. “অন্যদিকে দুশ্চিন্তা’—কোন্ দুশ্চিন্তার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ নেকড়ে এসে ঘােড়ার বাচ্চা বা গােরুর বাছুর নিয়ে গেল কিনা কিংবা চোর এসে ঘােড়াগুলােকে নিয়ে গেল কি না– এই দুশ্চিন্তার কথা বলা হয়েছে।

২৯. “সকলেই তাকে ঈর্ষা করে”– কাকে কেন সকলেই ঈর্ষা করে ?

উত্তরঃ ইলিয়াস একজন ধনী ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর প্রতিপত্তি দেখে সকলেই তাকে ঈর্ষা করতেন।

৩০. ইলিয়াস অতিথিদের কী দিয়ে সেবা করত ?

উত্তরঃ ইলিয়াস তার অতিথিদের কুমিস, শরবত, মাংস প্রভৃতি ভােজ্য ও পানীয় দিয়ে সেবা করত।

৩১. কারা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করেছিল ?

উত্তরঃ ‘কিরবিজ’-রা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করেছিল।

৩২. “কথা বলবার সময় নেই।”– কখন কথা বলবার সময় ছিল না ?

উত্তরঃ ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী, যখন ধনী ছিলেন, নানাবিধ কাজের চাপে তাদের কথা বলবার সময় ছিলনা।

৩৩. “ফলে সারারাত ঘুমই ছিল না।” – সারারাত ঘুম না থাকার কারণ কী ছিল ?

উত্তরঃ গৃহপালিত জন্তুদের অনিষ্টের আশঙ্কায় ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী-র সারারাত ঘুম হতো না।

৩৪. ইলিয়াস গল্পে কাকে ‘বাবাই’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে ?

উত্তরঃ বৃদ্ধ ইলিয়াসকে ‘বাবাই’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।

৩৫. ‘ইলিয়াস’ গল্পটি কার লেখা ?

উত্তরঃ ইলিয়াস’ গল্পটি রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়ের লেখা।

৩৬. ‘ইলিয়াস’ গল্পটি কে বাংলায় অনুবাদ করেছেন ?

উত্তরঃ ‘ইলিয়াস’ গল্পটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মণীন্দ্র দত্ত।

সংক্ষিপ্ত বা ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নোত্তর | ইলিয়াস (গল্প) লিও তলস্তয় – নবম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Bengali ilias Question and Answer :

১. “প্রতি বছরই তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগল।”– কার অবস্থার, কীভাবে উন্নতি হতে লাগল ?

উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতিতে ইলিয়াসের অবস্থার কথা বলা হয়েছে।

ইলিয়াসের বিবাহের একবছর পরে যখন তার বাবা মারা যান, তখন ইলিয়াস না ধনী, না দরিদ্র। এরপর গৃহপালিত পশুর সুপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে তার সম্পত্তি কিছু কিছু করে বাড়তে শুরু করে। ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী, ভোরবেলা সবার আগে ঘুম থেকে উঠতেন এবং সবার শেষে ঘুমোতে যেতেন, সারাদিন তাদের কাজ কর্মের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হত। এইভাবে ধারাবাহিক কঠিন পরিশ্রমের ফলে ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে।

২. “দূর দূরান্ত থেকে অথিতিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে।”– অতিথিরা কার সঙ্গে দেখা করতে আসত ? সে অতিথিদের কীভাবে সেবা করত ?

উত্তরঃ আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবার পর, ইলিয়াসের ভালো ভালো লোকের সঙ্গে পরিচয় হতে শুরু করে। দূর-দুরান্ত থেকে অতিথিরা ইলিয়াসের সাথে দেখা করতে আসতো।

আগত অথিতিদের সকলকেই ইলিয়াস ভোজ্য-পানীয় দিয়ে আপ্যায়ন করতো। অতিথীদের জন্য সর্বদায় প্রস্তুত থাকতো কুমিস, শরবত, চা এবং মাংস। অথিতিদের সেবার জন্য একটা বা দুটো ভেড়া মারা হত, এমনকি অথিতি সংখ্যায় বেশি থাকলে ঘোটকীও মারা হত।

৩. “ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও”– ‘বোলবোলাও’ শব্দের অর্থ উল্লেখ করে
উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ ‘বোলবোলাও’ শব্দের অর্থ প্রতিপত্তি।

পয়ঁত্রিশ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফলে ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি ঘটে। সাতটি ঘোটকি, দুটি গরু এবং কুড়িটি ভেড়া থেকে শুরু করে তাঁর গৃহপালিত পশুর পরিমাণ দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ এবং বারোশো ভেড়ায় পৌঁছায়। ভাড়াটে মজুরেরা গরু-ঘোড়ার দেখা শোনা করে এবং ভাড়াটে মজুরানীরা দুধ দোয়, কুমিস, মাখন ও পনীর তৈরি করে। তাঁর এই উন্নতি এবং প্রতিপত্তি দেখে পাশাপাশি সকলেই তাকে ঈর্ষা করে।

৪. ‘অতিথিরা বিস্মিত।’—অতিথিরা বিস্মিত হলেন কেন ?

উত্তরঃ লিও তলস্তয় রচিত ‘ইলিয়াস’ গল্পে অতীত জীবনের সুখ এবং বর্তমান জীবনের দুঃখের জীবন সম্পর্কে ইলিয়াস দম্পতির উপলব্ধির কথা জানতে চেয়েছিলেন মহম্মদ শার বাড়িতে আগত একজন অতিথি। এর উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগি তাঁদের জানায় যে পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্যজীবনে প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী হয়েও তারা সুখ খুঁজে পায়নি৷ কিন্তু সর্বহারা হয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবন কাটানােয় তারা প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছে। এই কথা শুনে অতিথিরা বিস্মিত হন৷

৫. “ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ল।”- ইলিয়াসের অবস্থা কীভাবে খারাপ হয়ে পড়ল ?

উত্তরঃ ইলিয়াস যখন গরীব ছিল সেই সময় তাঁর পুত্ররা ইলিয়াসের সাথে কাজ করতো। কিন্তু অবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তারা আয়েশি হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে পুত্রদের সাথে বিবাদ বাড়লে ইলিয়াস তাদের কিছু সম্পত্তির ভাগ দিয়ে আলাদা হয়ে যায়, ফলে ইলিয়াসের সম্পত্তি কমে যায়। এরপর মড়ক এবং দুর্ভিক্ষের ফলে বহু গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হয়। ‘কিরবিজ’রা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিয়ে যায়। এইভাবে সময়ের সাথে ইলিয়াসের অবস্থার অবনতি ঘটে এবং সত্তর বছর বয়সে ইলিয়াস একেবারে সর্বহারা হয়ে যায়।

৬. “তাকে দেখতে পেয়ে মহম্মদ শা অতিথিদের বলল”- ‘তাকে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? তার সম্পর্কে মহম্মদ শা অতিথিদের কী বলল ?

উত্তরঃ ‘তাকে’ বলতে এখানে ইলিয়াসের কথা বলা হয়েছে।

মহম্মদ শা তাঁর গৃহে আগত অতিথিদের বলেছিলেন যে, ইলিয়াস একসময়ের ঐ তল্লাটের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি ছিলেন, কিন্তু আজ অবস্থার ফেরে ইলিয়াস মহম্মদ শা-র গৃহে মজুরের মত থাকেন এবং তার স্ত্রী ঘোটকীর দুধ দোয়।

৭. “এ বিষয়ে তিনিই পুরো সত্য বলতে পারবেন।”– ‘তিনি’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? ‘তিনি’ সত্য বলতে পারবেন কেন ?

উত্তরঃ তিনি বলতে এখানে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগির কথা বলা হয়েছে।

মহম্মদ শা-এর গৃহে আগত অতিথিরা ইলিয়াসে বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানতে চাইলে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করতে বলেন। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রী মেয়ে মানুষ, তাঁর মনেও যা মুখেও তাই। এই কারণে শাম-শেমাগি তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সত্য কথাই বলবেন।

৮. ‘এটা খুবই জ্ঞানের কথা’ – কার, কোন্ কথাকে ‘জ্ঞানের কথা’ বলা হয়েছে ?’

উত্তরঃ ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা, তাদের মনিবের অতিথিদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছিলেন। ইলিয়াস দম্পতী বলেন, যখন তারা ধনী ছিলেন, সেইসময় তাদের জীবনে অর্থসুখ থাকলেও জীবনে কোনরূপ শান্তি ছিলনা, মন সর্বদাই দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকতো। তারা দরিদ্র হয়ে মনিবের বাড়ি কাজ করার সময় প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছেন, কারণ আজ তাদের কোনরূপ দুশ্চিন্তা নেই। এটাই প্রকৃত জীবন, তারা প্রথমে সব ধন-সম্পত্তি হারিয়ে দুঃখ পেয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের আশীর্বাদে জীবনের প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধী করতে পেরেছেন। ইলিয়াসের এই কথাগুলিকেই মোল্লা সাহেব ‘জ্ঞানের কথা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ইলিয়াস (গল্প) লিও তলস্তয় – নবম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Bengali ilias Question and Answer :

১.‘ইলিয়াস তাে ভাগ্যবান পুরুষ;”— কারা, কেন ইলিয়াসকে ভাগ্যবান পুরুষ বলেছেন ? এই উক্তি তুমি সমর্থন কর কি না যুক্তি-সহ লেখাে। ৩+২

উত্তরঃ রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়ের ‘ইলিয়াস’ গল্পে ইলিয়াসের আশেপাশে থাকা লােকজন তার সম্পর্কে মন্তব্যটি করেছিল। ইলিয়াসের বিয়ের পরে যখন তার বাবা মারা গিয়েছিল তখন সে না ধনী, না দরিদ্র। তার সম্পত্তি বলতে সাতটা ঘােটকী, দুটো গােরু আর কুড়িটা ভেড়া। কিন্তু ইলিয়াসের সুপরিচালনা এবং তার স্ত্রীর কঠোর পরিশ্রমে প্রতি বছরই ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। পঁয়ত্রিশ বছরের পরিশ্রমে ইলিয়াস দুশাে ঘােড়া, দেড়শাে গােরু-মহিষ আর বারােশাে ভেড়ার মালিক হয়। ভাড়াটে মজুররা তার গােরু-ঘােড়ার দেখাশোনা করত। ভাড়াটে মজুরানিরা দুধ দুইত, কুমিস-মাখন-পনির তৈরি করত। ইলিয়াসের নামডাক তখন চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার আশেপাশের লােকেরা তখনই হিংসায় জ্বলে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল।

ইলিয়াসের ক্ষেত্রে উদ্ধৃত উক্তিটি আমি সমর্থন করি না। ইলিয়াসের উন্নতি হয়েছিল ভাগ্যের জোরে নয়, তার পরিশ্রমের কারণে। মানুষের চেষ্টা, ইচ্ছাশক্তি আর লক্ষ্য যে তাকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তার সার্থক উদাহরণ ইলিয়াস। তাই ভাগ্যকে তার সাফল্যের ভিত্তি বললে এই পরিশ্রমের সাফল্যকেই ছােটো করে দেখানাে হয়।

২. “পঞ্চাশ বছর ধরে সুখ খুঁজে খুঁজে এতদিনে পেয়েছি।”– এই সুখের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ এই উক্তিটি ইলিয়াসের স্ত্রী শাম শেমাগির। ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী এককালে ধনী ছিলেন, ঐ অঞ্চলে তাদের প্রতিপত্তি ছিল চোখে পড়ার মতন। কিন্তু সেই সময় তাদের অর্থসুখ থাকলেও তাদের মনে শান্তি ছিল না। অতিথিরা এলে যাতে লোকনিন্দা না হয় তাই তটস্থ হয়ে তাদের সেবা করতে হত, মজুরেরা যাতে কাজে ফাঁকি না দিতে পারে তার জন্য কড়া নজর রাখতে হত, গৃহপালিত পশুর ক্ষতি হবে এই ভেবে সর্বদা মনে দুশ্চিন্তা লেগেই থাকতো। এইসবের মাঝে নিজেদের মধ্যে কথা বলা বা ঈশ্বরচিন্তা করার কোনরূপ সময় হতো না। আজ যখন তারা দরিদ্র, এখন তাদের অর্থসুখ না থাকলেও মনে শান্তি আছে। তারা সকালে উঠে নিজেদের মধ্যে কথা বলার সুযোগ পান, যথাসাধ্য মনিবের সেবা করেন এবং সেখান থেকে গ্রাসাচ্ছাদন করেন, তাদের খাদ্যাভাব নেই, রাতের শোবার জায়গার অভাব নেই, ঈশ্বরচিন্তার জন্য যথেষ্ট সময় আছে। তাই তারা বলেছেন যে পঞ্চাশ বছর ধরে খুঁজে খুঁজে তারা প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছেন।

৩. “ইলিয়াসের অতিথিবৎসলতার কথা স্মরণ করে তার খুব দুঃখ হলাে।”— কার কথা বলা হয়েছে ? সে কী করেছিল ? ইলিয়াসের জীবনে তার কী প্রভাব পড়েছিল ?

উত্তরঃ ‘ইলিয়াস’ গল্পে উল্লিখিত অংশে ইলিয়াসের প্রতিবেশী মহম্মদ শা’র কথা বলা হয়েছে।

মহম্মদ শা নিজে ধনী না হলেও তার অভাব ছিল না। সে ছিল খুব ভালাে লােক। তাই ইলিয়াসের দুরবস্থায় তার খুব দুঃখ হয় এবং সে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে এসে থাকতে বলে। এর বিনিময়ে ঠিক হয় ইলিয়াস তার ক্ষমতা অনুযায়ী গরমকালে তরমুজ খেতে কাজ করবে। আরশীতকালে গােরু-ঘােড়াদের খাওয়াবে। তার স্ত্রী শাম-শেমাগি ঘােটকীগুলাের দুধ দুইবে এবং কুমিস তৈরি করবে। মহম্মদ শা তাদের দুজনেরই খাওয়াপরার দায়িত্ব নেয়। এ ছাড়াও যদি কিছু লাগে তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়৷

ইলিয়াস এই উদারতার জন্য মহম্মদ শা-কে ধন্যবাদ দিয়েছিল। ভাড়াটে মজুরের মতাে কাজ করতে গিয়ে প্রথমদিকে তাদের খুবই কষ্ট হত, কিন্তু ক্ৰমে সবই সহ্য হয়ে গেল। যত পারত কাজ করত, আর মহম্মদ শার বাড়িতে থাকত। একদিন নিজেরা মনিব ছিল বলে তারা সব কাজই ভালােভাবে করতে পারত। কিন্তু তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে, অর্থ-সম্পত্তিই সুখের ভিত্তি নয়—তা ইলিয়াস ও তার স্ত্রী উপলব্ধি করে। কাজের বাইরে ফাঁকা সময়টা তারা গল্প করার বা ভাবার কাজে লাগাতে পারে। আগের থেকে অনেক দুশ্চিন্তামুক্ত এই জীবনেই তারা প্রকৃত সুখ খুঁজে পায়।

৪. ইলিয়াস চরিত্রটি বিশ্লেষণ করাে।

উত্তরঃ লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস’ গল্পটির অন্যতম প্রধান চরিত্র ইলিয়াস। তিনি জীবনের দুটি দিকই দেখেছেন, স্বাচ্ছন্দ্য এবং অভাব। গল্পে তার চরিত্রের যে দিকগুলি দেখা যায় সেগুলি হল—

পরিচয়ঃ উফা প্রদেশে বসবাসকারী বাসকির জনগােষ্ঠীভুক্ত ইলিয়াসের দুই পুত্র ও এক কন্যা ছিল। স্ত্রীর নাম ছিল শাম-শেমাগি। জীবনের প্রথম দিকে আর্থিক সচ্ছলতা না থাকলেও পরবর্তীকালে অক্লান্ত পরিশ্রমে ইলিয়াস ধনী হয়ে ওঠে। আবার ভাগ্যদোষে জীবনের শেষপর্যায়ে সে সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবন কাটাতে শুরু করে।

কঠোর পরিশ্রমী এবং কর্মনিষ্ঠঃ পঁয়ত্রিশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও কর্মের প্রতি নিষ্ঠা থেকেই ইলিয়াস দুশাে ঘােড়া, দেড়শাে গােরু-মােষ, বারােশাে ভেড়া এবং বহু ভাড়াটে মজুরের মালিকে পরিণত হয়। শেষজীবনে মজুরের কাজ করার সময়েও সে কঠোর পরিশ্রম করে মনিবকে তুষ্ট রাখত।

অতিথিপরায়ণঃ ইলিয়াস ছিল অতিথিবৎসল। কুমিস, চা, শরবত, মাংস দিয়ে অতিথিদের যথাযথ আপ্যায়ন করত ইলিয়াস। তার অতিথিপরায়ণতার কথা স্মরণ করেই মহম্মদ শা তাকে শেষজীবনে আশ্রয় দিয়েছিল।

কঠোর অথচ কর্তব্যপরায়ণঃ ইলিয়াস অত্যন্ত কঠোর ছিল বলেই ছােটো পুত্র ও তার ঝগড়াটে স্ত্রী তার আদেশ অমান্য করায় তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেছিল। কিন্তু সেই বিতাড়িত পুত্রকেই একটি বাড়ি এবং কিছু গৃহপালিত পশু দান করে সে তার কর্তব্যজ্ঞানেরও পরিচয় দিয়েছে।

সত্যদৃষ্টিঃ জীবনের শেষ পর্যায়ে সমস্ত সম্পত্তি ও সঞ্চয় হারিয়ে সর্বহারা হয়েও ইলিয়াস যেভাবে প্রকৃত সত্য ও সুখ উপলব্ধির কথা বলেছে, তা সকলের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ ও শিক্ষণীয়।

৫. ‘ভাগ্য যেন চাকার মতো ঘোরে।’– উক্তিটি কে, কাকে উদ্দেশ্য করে করেছেন‌ ? বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা করো। ১+৪=৫

উত্তরঃ উদ্ধৃত উক্তিটি লিও তলস্তয়ের লেখা ‘ইলিয়াস’ গল্পের অন্যতম অপ্রধান চরিত্র মহম্মদ শায়ের বাড়িতে আগত জনৈক অতিথির। অতিথি মহম্মদ শা-কে উদ্দেশ্য করে কথাগুলি বলেছেন।

‘ভাগ্য যেন চাকার মতো ঘোরে।’– বক্তার এই উক্তি যথার্থ। ইলিয়াসের ভাগ্যও চাকার মতোই আবর্তিত হয়েছিল। এই বিড়ম্বিত ভাগ্যের প্রেক্ষিতে বক্তা উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন। মহম্মদ শায়ের মুখে অতিথি শুনেছিলেন, কর্মের প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতার জোরে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি করে। অর্থ ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ার সাথে সাথে তার বহু দেশ-বিদেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় সহৃদয় ইলিয়াসের বাড়িতে তাদের যাতায়াত বাড়ে। ইলিয়াস তাদের স্বাগত জানাত এবং নানান ভোজ্য ও পানীয় সহকারে আপ্যায়ন করত। কিন্তু তার জীবনে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সে সর্বস্ব হারিয়ে একজন নিঃস্ব ব্যক্তিতে পরিণত হয়। পরবর্তীকালে ইলিয়াসের জীবন অতিবাহিত হয় প্রতিবেশী মহম্মদ শায়ের বাড়িতে ভাড়াটে মজুর হিসেবে। এই পরিস্থিতিকেই অতিথি ভাগ্যের চাকার সাথে তুলনা করেছেন। মানুষের জীবনে সৌভাগ্য বলে যেমন উত্থান ঘটে তেমনি আবার পতনও ঘটে। ইলিয়াসের সারাজীবনের ঘটনাধারা মহম্মদ শায়ের কাছে শুনে বক্তা নিজের উপলব্ধি থেকে এমন মন্তব্য করেছেন।

Leave a Reply