নিরুদ্দেশ গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | Niruddesh Golper Question Answer Class 9 Bengali wbbse
সাহিত্য সঞ্চয়ন
নবম শ্রেণি বাংলা (প্রথম ভাষা)
নবম শ্রেণি বাংলা নিরুদ্দেশ গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Class 9 Bengali Niruddesh Golper Question Answer wbbse
নবম শ্রেণির বাংলা নিরুদ্দেশ গল্পের বহু বিকল্পীয়, অতি সংক্ষিপ্ত, ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | West Bengal Class 9 Bengali Niruddesh Golper Question Answer wbbse
1. নবম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. নবম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
নবম শ্রেণির বাংলা নিরুদ্দেশ গল্পের বহু বিকল্পীয়, অতি সংক্ষিপ্ত, ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | West Bengal Class 9 Bengali Niruddesh Golper Question Answer wbbse
বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর : নিরুদ্দেশ গল্প (প্রেমেন্দ্র মিত্র) নবম শ্রেণি বাংলা | MCQ Question Answer Class 9 Bengali wbbse
• ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১. নিরুদ্দেশ’ গল্পটির লেখক হলেন—
(ক) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
(খ) তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়
(গ) প্রেমেন্দ্র মিত্র
(ঘ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
উত্তরঃ (গ) প্রেমেন্দ্র মিত্র
২. দিনটা ছিল—
(ক) ভারী ঠান্ডা
(খ) ভারী গরম
(গ) ভারী রৌদ্রোজ্জ্বল
(ঘ) ভারী বিশ্রী
উত্তরঃ (ঘ) ভারী বিশ্রী
৩. ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে যে ঋতুর কথা বলা হয়েছে—
(ক) শীত ঋতুর কথা
(খ) বসন্ত ঋতুর কথা
(গ) বর্ষা ঋতুর কথা
(ঘ) শরৎ ঋতুর কথা
উত্তরঃ (ক) শীত ঋতুর কথা
৪. শোভনের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন—
(ক) জমিদার
(খ) স্বাধীনতা সংগ্রামী
(গ) কৃষিজীবী
(ঘ) কোনোটিই
উত্তরঃ (ক) জমিদার
৫. আকাশ ও ম্লান পৃথিবী কেমন মৃতের মতো অসাড় হইয়া আছে।’—আকাশের অবস্থা ছিল—
(ক) রৌদ্রোজ্জ্বল
(খ) মেঘাচ্ছন্ন
(গ) মেঘে ঢাকা
(ঘ) জ্যোৎস্নালোকিত
উত্তরঃ (খ) মেঘাচ্ছন্ন
৬. লেখকের কাছে শীতের দিনে সবচেয়ে অস্বস্তিকর হলো—
(ক) প্রচণ্ড রোদ
(খ) দুর্ঘটনা
(গ) বাদলা
(ঘ) বরফ পড়া
উত্তরঃ (গ) বাদলা
৭. লেখকের বাড়িতে হঠাৎ দুপুরে এসে উপস্থিত হয়েছিল—
(ক) মহেশ
(খ) সোমেশ
(গ) সুরেশ
(ঘ) রমেশ
উত্তরঃ (খ) সোমেশ
৮. ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে কথক হলেন–
(ক) রমেশ
(খ) সুরেশ
(গ) বীরেশ
(ঘ) সোমেশ
উত্তরঃ (ঘ) সোমেশ
৯. একটা আশ্চর্য ব্যাপার দেখেছ?’-আশ্চর্য ব্যাপারটি হল—
(ক) খবরের কাগজে একসঙ্গে সাত-সাতটা নিরুদ্দেশ-এর বিজ্ঞাপন
(খ) খবরের কাগজের বেশিরভাগ পাতা বিজ্ঞাপনে ভর্তি
(গ) খবরের কাগজে সেদিন কোনো নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন ছিল না
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (ক) খবরের কাগজে একসঙ্গে সাত-সাতটা নিরুদ্দেশ-এর বিজ্ঞাপন
১০. ‘সোমেশ কোনো কৌতূহলই প্রকাশ করিল না।’— যেটি দেখে সোমেশ কোনো কৌতূহলই প্রকাশ করল না, সেটি হল—
(ক) থিয়েটার
(খ) সিনেমা
(গ) মেঘলা আকাশ
(ঘ) নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন
উত্তরঃ (ঘ) নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন
১১. ‘সোমেশ কোনো কৌতূহলই প্রকাশ করিল না।” —সোমেশের এই কৌতূহল প্রকাশ না করার কারণ—
(ক) নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন অতি স্বাভাবিক ঘটনা
(খ) তিনি জানেন এই বিজ্ঞাপনের পিছনে অনেক সত্যকার ট্র্যাজেডি থাকে
(গ) তিনি নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপনটি ইতিমধ্যে দেখেছে
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (খ) তিনি জানেন এই বিজ্ঞাপনের পিছনে অনেক সত্যকার ট্র্যাজেডি থাকে
১২. ‘বাইরের অসাড়তা যেন আমাদের মনের উপরও চাপিয়া ধরিয়াছে।’—এরূপ হওয়ার কারণ—
(ক) শীতের তীব্রতা
(খ) বাইরে তুষারপাতের ফলে স্তব্ধ জনজীবন
(গ) শীতের মেঘাচ্ছন্ন নিশ্চল স্তব্ধতা মনে প্রভাব বিস্তার করেছে
(ঘ) কথকের কর্মনাশা অবস্থা
উত্তরঃ (গ) শীতের মেঘাচ্ছন্ন নিশ্চল স্তব্ধতা মনে প্রভাব বিস্তার করেছে
১৩.’লুকোনো পুঁজি থেকে মা বিকেলে ছেলের পিড়াপিড়িতে টাকা কটা বার করে দিয়েছেন।’—মা, ছেলেকে এই টাকা দিয়েছিলেন, কারণ—
(ক) ছেলে কোনো বন্ধুকে সাহায্য করবে
(খ) ছেলে থিয়েটার দেখবে
(গ) ছেলে ভালো খাবার খাবে
(ঘ) ছেলে সিনেমা দেখবে
উত্তরঃ (খ) ছেলে থিয়েটার দেখবে
১৪. ‘তিনি জেনে শুনে মিথ্যে আর বলতে পারেন না চুপ করে থাকেন।’—এখানে ‘তিনি’ হলেন—
(ক) বক্তা
(খ) সোমেশ
(গ) জনৈক মা
(ঘ) শোভনের মা
উত্তরঃ (গ) জনৈক মা
১৫. ‘পয়সাগুলো আমার খোলামখুচি কিনা, তাই নবাবপুত্তুর যা খুশি তাই করছেন।’—এখানে ‘যা খুশি তাই’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
(ক) বেড়াতে যাওয়া
(খ) বই কেনা
(গ) বন্ধুকে সাহায্য করা
(ঘ) থিয়েটার দেখে রাত করে বাড়ি ফেরা
উত্তরঃ (ঘ) থিয়েটার দেখে রাত করে বাড়ি ফেরা
১৬. দুর করে দেবো, এবার দুর করে দেবো।’-বাবা ছেলেকে দুর করে দেবেন কারণ—
(ক) ছেলেটি রাত করে বাড়ি ফেরে
(খ) ছেলেটি নানাভাবে টাকার অপচয় করে
(গ) ছেলেটি গতবার পরীক্ষায় পাস করেনি
(ঘ) সবকটি
উত্তরঃ (ক) ছেলেটি রাত করে বাড়ি ফেরে
১৭. হয়তো ব্যাপারটা শেষ হতে পারত।’—কীভাবে শেষ হতে পারত?
(ক) মৌখিক আস্ফালনে
(খ) কথা বলায়
(গ) দণ্ড দেখিয়ে
(ঘ) অশ্রুসিক্ত স্বরে
উত্তরঃ (ক) মৌখিক আস্ফালনে
১৮. ‘শেষ পর্যন্ত বাবা বলেন’—শেষপর্যন্ত বাবা যা বলেন, তা হল—
(ক) ‘এত রাত্রেও বাবুর আসবার সময় হল না’
(খ) ‘কোথায় গেলেন বাবু! তোমার গুণধর পুত্রটি’
(গ) ‘দূর করে দেবো, এবার দূর করে দেবো’
(ঘ) ‘এমন ছেলের আমার দরকার নেই—বেরিয়ে যা’
উত্তরঃ (ঘ) ‘এমন ছেলের আমার দরকার নেই—বেরিয়ে যা’
১৯. ‘অভিমানী ছেলে আর কিছু না হোক, পিতৃদেবের এ আদেশ তৎক্ষণাৎ পালন করতে উদ্যত হয়।—ছেলেটি পিতৃদেবের যে-আদেশ পালন করতে উদ্যত হয়, তা হল—
(ক) রাত করে বাড়ি না-ফেরা
(খ) পড়াশোনায় মন দেওয়া
(গ) বাড়িতে আর না-থেকে সেই মুহূর্তেই বেরিয়ে যাওয়া
(ঘ) সিনেমা না-দেখা
উত্তরঃ (গ) বাড়িতে আর না-থেকে সেই মুহূর্তেই বেরিয়ে যাওয়া
২০. ‘পরের দিন ভয়ানক কাণ্ড’— কাণ্ডটি কী ?
(ক) ছেলে অসুস্থ
(খ) মা অসুস্থ
(গ) মা রাত থেকে দাঁতে কুটি কাটেননি
(ঘ) ছেলে নিরুদ্দেশ
উত্তরঃ (গ) মা রাত থেকে দাঁতে কুটি কাটেননি
২১. ‘অমন ছেলে যাওয়াই ভালো।’—এখানে বক্তা হলেন—
(ক) জনৈক গৃহিণী
(খ) রাস্তার একটি ছেলে
(গ) জনৈক বাবা
(ঘ) শোভনের বাবা
উত্তরঃ (গ) জনৈক বাবা
২২. ‘আমরা কি এতদিন রামযাত্রা বার করেছি।’—উদ্ধৃত উক্তিটির বস্তুা হলেন-
(ক) খবরের কাগজের অফিসের লোক
(খ) সোমেশের বাবা
(গ) লেখক
(ঘ) খাজাঞ্চিমশাই
উত্তরঃ (ক) খবরের কাগজের অফিসের লোক
২৩. ‘বাবা একটু হতভম্ব হয়ে একবার অসহায় ভাবে চারিদিকে তাকান।’-বাবা অসহায়ভাবে চারিদিকে তাকান, কারণ—
(ক) খেতে বসে ছেলের কথা মনে পড়ে গেছে বলে
(খ) মা শয্যা থেকে আর উঠবেন না পণ করেছেন বলে
(গ) খবরের কাগজের অফিসে কোথায়, কী করতে হয় তিনি জানেন না বলে
(ঘ) বাড়িতে ভয়ানকভাবে চুরি হয়ে গেছে বলে
উত্তরঃ (গ) খবরের কাগজের অফিসে কোথায়, কী করতে হয় তিনি জানেন না বলে
২৪. ‘আশ্বস্ত হয়ে বাবা ঘরে ফেরেন।’- বাবা ঘরে ফিরে দেখেন—
(ক) ছেলে ফিরে এসেছে
(খ) ছেলে অনুতপ্ত
(গ) ছেলে ঘরে এসে হাজির
(ঘ) ছেলে বিপদগ্রস্ত
উত্তরঃ (গ) ছেলে ঘরে এসে হাজির
২৫. ‘আঃ আর বকাবকি কেন ?’- কথাটি হল—
(ক) জনৈক বাবার
(খ) জনৈক মায়ের
(গ) গল্পকথকের
(ঘ) সোমেসের
উত্তরঃ (ক) জনৈক বাবার
২৬. ‘এই বিজ্ঞাপনের পেছনে অনেক সত্যকার ট্র্যাজিডি থাকে।’- বক্তা হলেন—
(ক) লেখক
(খ) শোভন
(গ) সোমেশ
(ঘ) নায়েমশাই
উত্তরঃ (গ) সোমেশ
২৭. ‘মনে হইতেছে আমরা যেন’—কী মনে হচ্ছে ?
(ক) পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি
(খ) সমস্ত পৃথিবী হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছি
(গ) ট্র্যাজেডির শিকার
(ঘ) সম্পূর্ণ একটি কাহিনি শুনছি
উত্তরঃ (খ) সমস্ত পৃথিবী হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছি
২৮. ‘আমরা যেন সমস্ত পৃথিবী হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছি।’—এরূপ মনে হওয়ার কারণ—
(ক) জলমগ্ন প্রকৃতি
(খ) কাচের জানলার বাইরে বৃষ্টির প্রাবল্য তাঁদের বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে
(গ) চারদিকে রাত্রির অন্ধকার
(ঘ) বৃষ্টির কারণে তারা ঘরে আটকা পড়েছে
উত্তরঃ (খ) কাচের জানলার বাইরে বৃষ্টির প্রাবল্য তাঁদের বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে
২৯. পুরানো খবরের কাগজের ফাইল যদি উলটে দেখো, -পুরোনো খবরের কাগজের ফাইল উলটে দেখলে যা দেখা যাবে, তা হল—
(ক) সেখানে কোনো নিরুদ্দেশের খবর থাকত না
(খ) লেখকের একটি বিশেষ লেখা ছাপা হয়েছিল
(গ) একটি প্রধান সংবাদপত্রের পাতায় দিনের পর দিন ধারাবাহিকভাবে একটি নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছে
(ঘ) কোনো চাকরির বিজ্ঞাপন থাকত না
উত্তরঃ একটি প্রধান সংবাদপত্রের পাতায় দিনের পর দিন ধারাবাহিকভাবে একটি নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছে
৩০. ‘সে বিজ্ঞাপন নয়, সম্পূর্ণ একটি ইতিহাস।’—এই বিজ্ঞাপনে যার কথা বলা হয়েছে, তিনি হলেন—
(ক) শোভন
(খ) নায়েবমশাই
(গ) খাজাঞ্জি মশাই
(ঘ) সোমেশ
উত্তরঃ শোভন
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : গল্প নিরুদ্দেশ (প্রেমেন্দ্র মিত্র) নবম শ্রেণি বাংলা | Very Short Type Question Answer Class 9 Bengali wbbse
• কম-বেশী ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১. ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পটি কোন গল্প সংকলনের অন্তর্গত ?
উত্তরঃ নিরুদ্দেশ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল প্রবাসী পত্রিকায়। পরবর্তীকালে এই গল্পটি 1947 খ্রিস্টাব্দে ‘সামনে চড়াই’ গল্প সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
২. ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পটি কোন ঋতুর পটভূমিতে রচিত ?
উত্তরঃ নিরুদ্দেশ’ গল্পটি শীত ঋতুর পটভূমিতে রচিত।
৩.’একটা আশ্চর্য ব্যাপার দেখেছো’- আশ্চর্য ব্যাপারটা কী ?
উত্তরঃ আশ্চর্যের ব্যাপারটি হল, খবরের কাগজে একসঙ্গে সাতসাতটা নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন৷
৪. সােমেশ হঠাৎ এসে পড়ায় কথকের কী সুবিধা হয়েছিল ?
উত্তরঃ সােমেশ হঠাৎ এসে পড়ায় কথকের শীতের মেঘলা দুপুর কাটানাের সুবিধা হয়েছিল ।
৫. কাগজে সাতটি বিজ্ঞাপনের কথা শুনে সােমেশের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?
উত্তরঃ বিজ্ঞাপনের কথা শুনে সােমেশ কোনাে কৌতূহল না দেখিয়ে উদাসীনভাবে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে থাকে।
৬. কত বছর পর শোভন তার নিজের বাড়ি ফিরেছিল ?
উত্তরঃ দুই বছর পর নিরুদ্দিষ্ট শোভন তার বাড়ি ফিরে এসেছিল।
৭.’আমার হাসি পায়।’— কীসে বক্তা হাসি পাওয়ার কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ কথক বলেছেন যে কাগজে ‘নিরুদ্দেশ’ এর বিজ্ঞাপনগুলাে দেখলে তার হাসি পায়।
৮. নিরুদ্দেশ’ গল্পে ছেলের পীড়াপীড়িতে মা কী করেছিলেন?
উত্তরঃ ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে ছেলের পীড়াপীড়িতে মা লুকোনাে পুঁজি থেকে টাকা বের করে দিয়েছিলেন।
৯. ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে বাবা তার থিয়েটার দেখতে যাওয়া ছেলে ফিরলে কী করবেন বলেছেন ?
উত্তরঃ ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে বাবা তার থিয়েটার দেখে ফেরা ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেবেন বলেছেন।
১০. শোভনের উদ্দেশ্যে শেষ বিজ্ঞাপনটি কী ছিল ?
উত্তরঃ নিরুদ্দিষ্ট শোভনের উদ্দেশ্যে শেষ বিজ্ঞাপনটি ছিল— “শোভন, তোমার মার সাথে আর তোমার বুঝি দেখা হলো না। তিনি শুধু তোমার নামই করছেন এখনো।”
১১. ছেলে নিরুদ্দেশে চলে যাওয়ার পরে মার কী অবস্থা হয় ?
উত্তরঃ ছেলে নিরুদ্দেশে চলে যাওয়ার পরে মা খাওয়া বন্ধ করে দেন এবং বিছানায় সজ্জা কত হয়েছিলেন।
১২.’এ অশান্তির চেয়ে বনবাস ভালাে|’— কে কখন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ?
অথবা, ‘এ অশান্তির চেয়ে বনবাস ভালাে|’—কোন্ অশান্তির কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছিলেন নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটির বাবা৷ বেশি রাত করে বাড়ি ফেরায় ছেলেকে বেরিয়ে যেতে বলাতে ছেলেও তখনি বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এদিকে পুত্রশােকে মা খাওয়া বন্ধ করে দেন। পরদিন সন্ধ্যাবেলা অফিস থেকে ফিরে বাবা দেখেন যে মা বিছানা থেকে উঠবেন না বলে পণ করেছেন। এই সমস্ত ঘটনায় বিব্রত হয়েই বাবা এমন মন্তব্য করেন।
১৩.বাবা ছেলের খোঁজ পাওয়ার জন্য কী করতে গিয়েছিলেন ?
উত্তরঃ বাবা ছেলের খোঁজ পাওয়ার জন্য খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিতে গিয়েছিলেন।
১৪. বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটির বাবার কাছে কী কী জানতে চাওয়া হয়েছিল ?
উত্তরঃ বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটির বাবার কাছে স্পেসের পরিমাপ ও বিজ্ঞাপনের কপি এনেছেন কিনা জানতে চাওয়া হয়েছিল।
১৫. নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপনে বাবা কী লিখতে চেয়েছিলেন ?
উত্তরঃ নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপনে বাবা ছেলেকে ফিরে আসার আবেদন জানাতে চেয়েছিলেন।
১৬. ছেলের নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময়ে বাবা সবথেকে বেশি কী নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময়ে নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটির মায়ের জলগ্রহণ না করার বিষয়টি নিয়েই তার বাবা সবথেকে বেশি চিন্তিত ছিলেন।
১৭. খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন প্রকাশের আগেই কী ঘটনা ঘটল?
উত্তরঃ খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন প্রকাশের আগেই নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটি বাড়িতে ফিরে এসেছিল।
১৮. ছেলেটি বাড়িতে ফিরে এসেছিল কেন?
উত্তরঃ ছেলেটি তার গােটাকতক বই নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে ফিরে এসেছিল।
১৯. “পুরানাে খবরের কাগজের ফাইল যদি উলটে দেখাে…” —কী দেখা যাবে?
উত্তরঃ পুরােনাে খবরের কাগজের ফাইল ওলটালে দেখা যাবে দিনের পর দিন একটি বিশেষ নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন ধারাবাহিকভাবে বেরিয়েছে।
২০.“মনে হয় ছাপার লেখায় সত্যি যেন কান পাতলে কাতর আর্তনাদ শোনা যাবে।”– এই আর্তনাদ কীসের জন্য ছিল?
উত্তরঃ এই আর্তনাদ ছিল নিরুদ্দিষ্ট ছেলের ফিরে আসার জন্য মায়ের কাতর আবেদন।
২১. বিজ্ঞাপনের অফিস থেকে বাড়ি ফিরে জনৈক প্রভা বাকি দেখেছিলেন ?
উত্তরঃ ‘নিরুদ্দেশ’ গল্প অনুসারে খবরের কাগজের অফিস থেকে বাড়ি ফিরে বাবা দেখেন তাঁর ছেলে ফিরে এসেছে।
২২. নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটির পরিচয়ের কী বিশেষ চিহ্ন ছিল ?
উত্তরঃ নিরুদ্দিষ্ট ছেলেটির পরিচয়ের বিশেষ চিহ্ন হিসেবে তার ঘাড়ের দিকে ডান কানের কাছে ছিল একটি বড়াে জড়ুল।
২৩.”এতটা আশঙ্কা করেনি।”—কী আশঙ্কা না করার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ দুবছর নিরুদ্দেশে থাকার ফলে তার কিছু পরিবর্তন হলেও জমিদারির কর্মচারীরা তাকে চিনতে পারবে না এটা শােভন আশা করেনি।
২৪. “মিছিমিছি কেলেংকারি করে লাভ নেই” —কাকে ‘কেলেংকারি’ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ জোর করে শােভনের বাড়ির ভিতরে যাওয়ার চেষ্টাকে বৃদ্ধ নায়েবমশাই ‘কেলেংকারি’ বলেছেন।
২৫. “….একটা ড্রয়ার খুলে তিনি একটা জিনিস এনে শােভনের হাতে দিলেন।” -এখানে কী দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ড্রয়ার খুলে নায়েবমশাইয় সােমেশকে শােভনের পুরােনাে ফোটো দেওয়ার কথা এখানে বলা হয়েছে।
২৬. “নাঃ, এ অসহ্য।”— কী অসহ্য বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ যেভাবে ফোটো দেখিয়ে শােভনকে পরীক্ষা করা হচ্ছিল যে, তার নিজের ছবি সে নিজে চিনতে পারে কিনা তা শােভনের কাছে অসহ্য মনে হয়েছিল।
২৭. “শােভন উদ্ভ্রান্তভাবে সকলের দিকে চেয়ে দেখল।”—শােভন তাকিয়ে কী দেখেছিল ?
উত্তরঃ শােভন উদ্ভ্রান্তভাবে সকলের দিকে তাকিয়ে দেখেছিল যে সকলের দৃষ্টিতেই তার প্রতি অবিশ্বাস রয়েছে।
২৮. শােভনের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে বলে নায়েবমশাই জানিয়েছিল?
উত্তরঃ শােভনের মৃত্যু গাড়ি চাপা পড়ে অপঘাতে হয়েছে বলে নায়েবমশাই জানিয়েছিলেন।
২৯. শোভনের পরিচয় নিয়ে তার বাড়িতে কতজন লোক এসেছিল ?
উত্তরঃ সোমেশ বর্ণিত কাহিনী অনুসারে নিরুদ্দিষ্ট শোভনের পরিচয় নিয়ে তার আগে আরো দুজন লোক বাড়িতে এসেছিল ।
৩০. হঠাৎ করে বিজ্ঞাপন বন্ধ হওয়ার কারণ কী ছিল ?
উত্তরঃ ছেলের ফিরে না-আসার চূড়ান্ত হতাশা থেকেই বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়েছিল, কারণ নিরুদ্দিষ্টের মায়ের শরীর এতটাই খারাপ হয়েছিল যে বিজ্ঞাপন অর্থহীন হয়ে গিয়েছিল।
ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : গল্প নিরুদ্দেশ (প্রেমেন্দ্র মিত্র) নবম শ্রেণি বাংলা | SAE Question Answer Class 9 Bengali wbbse
• কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : (প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান-৩)
১.“আমরা কি এতদিন রামযাত্রা বার করেছি!”—কে কেন মন্তব্যটি করেছে?
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে কোনাে একটি ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলে তার মা খাওয়া-দাওয়া ত্যাগ করেন এবং বিছানা নেন! বিব্রত বাবা খবরের কাগজের অফিসে গিয়ে হাজির হন এবং সেখানে এক কর্মীকে জানান যে তিনি তাদের কাগজে একটা খবর বের করতে চান। তাতে সেই নিরীহ চেহারার ভদ্রলােকটি ব্যঙ্গের সুরে বলেন যে তাদের খবরগুলাে বুঝি ছেলেটির বাবার পছন্দ হচ্ছে না। এপ্রসঙ্গে তিনি প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিও করেন।
২.বিজ্ঞাপনের পেছনে অনেক সত্যকার ট্র্যাজিডি থাকে।”—মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করাে।
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে কথক খবরের কাগজের নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে বলেন যে এই নিরুদ্দিষ্টরা অনেক সময়ই রাগের মাথায় বা অভিমান করে বাড়ি ছাড়ে, তারপরে কিছুদিন বাদে রাগ আর অভিমান কমলে বাড়ি ফিরেও আসে। কিন্তু বন্ধু সােমেশের মনে হয় বিষয়টি এত সহজনয়। বহু নিরুদ্দেশের ঘটনার পিছনেই থাকে জীবন থেকে চিরকালের মতাে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে হয় ফিরে আসা সম্ভব হয় না, বা ফিরে আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
৩. যেন কান পাতলে কাতর আর্তনাদ শােনা যাবে।”- মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করাে।
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে পুরােনাে খবরের কাগজে বহুদিন ধরে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞাপনের কথা রয়েছে। বিজ্ঞাপনটি নিরুদ্দেশের। একজন মা কাতরভাবে ছেলেকে ফিরে আসার জন্য অনুরােধ করেছেন। সেখানে অস্পষ্ট আড়ষ্ট ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে মায়ের মনের আকুলতা। একসময়ে সেই আকুলতা মিলিয়ে যায়। এরপর সংবাদপত্রের পৃষ্ঠায় ভেসে ওঠে পিতার কম্পিত, ধীর এবং শান্ত স্বর—যেখানে মার অসুস্থতার কথা জানিয়ে ছেলেকে ফিরে আসতে বলা হয়। এইসব অনুরােধ, আবেদনই আর্তনাদের মতাে শােনায়।
৪. “শােভন এই অবস্থাতে না হেসে পারলে না।”—শােভনের হাসির কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ শােভন মা বাবার কাছে যেতে চাইলে নায়েবমশাই তাকে নিবৃত্ত করার জন্য বলেন যে, তাদের কাছে খবর আছে শােভন সাত দিন আগেই মারা গিয়েছে। উদ্ভ্রান্ত শােভন এই কথা শুনেই হেসে ফেলে। সে নিজে সশরীরে উপস্থিত, আর তাকেই কিনা তার মৃত্যুসংবাদ শােনানাে হচ্ছে—এই ঘটনা
শােভনকে হাসতে বাধ্য করে। কণ্ঠস্বরে বিদ্রুপ মিশিয়ে তাই সে জানতে চায় শােভন কীভাবে মারা গেল।
৫. সে মুখের বেদনাময় বিমূঢ়তা শােভনের বুকে ছুরির মতাে বিধল ।”— কোন্ মুখের কথা বলা হয়েছে ? প্রসঙ্গটি উল্লেখ করাে।
উত্তরঃ ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পের উল্লিখিত অংশে শােভনের বৃদ্ধ বাবার মুখের বেদনাময় বিমূঢ়তার কথা বলা হয়েছে।
বৃদ্ধ নায়েবমশাই যখন নিরুদ্দিষ্ট শােভনকে তারই মৃত্যুসংবাদ শােনাচ্ছিলেন সেইসময় সে তার বাবাকে বাড়ি থেকে বেরােতে দেখে। বাবাকে দেখে তার ঝড়ে ভাঙা গাছের মতােই বিধবস্ত মনে হয়। সকলে কিছু বােঝার আগেই শােভন দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়৷ ‘বাবা’ বলে বৃদ্ধকে ডাকে। আর সেই গলার আওয়াজ শুনে বৃদ্ধ থমকে দাঁড়ান। তখন তার প্রতিক্রিয়া উল্লেখ করতে গিয়েই মন্তব্যটি করা হয়েছে।
৬. ‘বিজ্ঞাপন বদলে গিয়ে হলাে সাধারণ একটি বিজ্ঞপ্তি মাত্র।’ –বিজ্ঞপ্তির বক্তব্য কী হলাে লেখাে।
উত্তরঃ বিজ্ঞাপন বদলে গিয়ে হলাে বিজ্ঞপ্তি এবং তাতে নিরুদ্দিষ্ট ছেলের চেহারা, বয়স ও পরিচয় চিহ্নের কথা। চেহারা দোহারা ছিপছিপে। বয়স ষােলাে-সতেরাে। পরিচয় হলাে ঘাড়ের দিকে ডান কানের কাছে একটা বড়াে জড়ুল। এক বছর হলাে তার কোনাে সন্ধান নেই। সন্ধান দিতে পারলে পুরস্কার দেওয়া হবে। পরে বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারের পরিমাণ বাড়তে লাগল। শেষ অবধি বলা হলাে জীবিত বা মৃত এটুকু জানাতে পারলেও পুরস্কৃত করা হবে।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর : নিরুদ্দেশ গল্প (প্রেমেন্দ্র মিত্র) নবম শ্রেণি বাংলা | Essay Type Question Answer Niruddesh Class 9 Bengali wbbse
• কমবেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : (প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান-৫)
১. ‘’ফিরে আসারই ভয়ানক একটা ট্র্যাজিডির কথা আমি জানি।”— সােমেশের জানা কাহিনি অনুসরনণে নিরুদ্দিষ্ট ছেলে শােভনের বাড়ি ফিরে আসার ভয়ানক ট্র্যাজিক পরিণাম আলােচনা করাে।
উত্তরঃ গল্পকথকে কথায়, কখনাে-কখনাে সত্যিই যে যায় সে আর ফেরে না। গল্পকথকের কথা সােমেশ অস্বীকার করে না। তবে ব্যতিক্রমও আছে। আর তা হলাে নিরুদ্দিষ্ট ছেলের ঘরে ফিরে আসারই ভয়ানক একটা ট্র্যাজেডির কথা সােমেশ জানে।
নিরুদ্দিষ্ট ছেলে হলাে এক পুরােনাে জমিদার পরিবারের সন্তান শােভন। ওই পরিবারের একমাত্র উত্তরাধিকারীও শােভনই। নির্লিপ্ত ও উদাসী মনের ষােলাে-সতেরাে বছরের ছেলেটি অভিমানে নয়, স্বভাবগত কারণে সামান্য ছুতােয় বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়। দীর্ঘ দু-বছর ধরে বাড়ি ফেরার জন্য তার মা-বাবার পক্ষ থেকে ধারাবাহিক বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতে থাকে। যেদিন বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ হয়, শােভন সেদিন উদাসীন ভাব কাটিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বিচলিত হয়ে ওঠে। দু-বছরের স্বাধীন জীবনের দুঃখকষ্ট তার দেহ ও মনের ওপর ছাপ ফেলে এবং তার অনেকটাই পরিবর্তন ঘটে।
শােভন দেশে ফিরে সােজাসুজি বাড়িতে ঢুকতে গেলে প্রথম বাধা পায় তাদের পুরােনাে নায়েবমশাইয়ের কাছে। ওই চতুর লােকটি শােভনকে বাড়িতে ঢুকতে না দিয়ে কায়দা করে বারবাড়িতে নিয়ে যায়। শোভন সেখানে পরিচিত মানুষ হিসেবে দেখে বুড়াে খাজাঞ্চিমশাইকে। সে লক্ষ করে, সবার অবিশ্বাসী দৃষ্টি তার ওপরে।
সে ফের বাড়ির ভিতরে জোর করে যাওয়ার চেষ্টা করলে নায়েব মশাই বাধা দেন এবং বলেন ‘গিয়ে লাভ নেই, তাতে ফল হবে না কিছু।’ শােভন তখন জানতে চায় নায়েবমশাইরা তাকে চিনতে পেরেছেন কিনা। নায়েবমশাই তখন তার হাতে একখান ফটো ধরিয়ে দেন, যা শােভনের নিজের। নায়েবমশাই জানান এর আগে আরও দুজন এসেছিল নিরুদ্দিষ্ট ছেলের পরিচয় দিয়ে। তা ছাড়া সাতদিন আগে গাড়ি চাপা পড়ে শােভন মারা গেছে। পরিশেষে শােভনের হাতে এক তাগড়া নােট গুঁজে দিয়ে বলেন-
স্বয়ং জমিদার মিনতি করেছেন, সে যেন মুমূর্ষ গৃহিণীর কাছে নিরুদ্দিষ্ট পুত্রের পরিচয় দেয়। এর থেকে ট্র্যাজিক বা মর্মন্তুদ পরিণাম আর কী হতে পারে ।
২. ‘মিছিমিছিই আমি একলা বকে মরছি।’— গল্পকথকের এই বিরক্তির কারণ কী ? গল্পকারের এই উক্তিতে সােমেশের কী প্রতিক্রিয়া আলােচনা করাে।
উত্তরঃ গল্পকথকের বলা নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপনকেন্দ্রিক কাহিনি শেষ হয়েছে। সােমেশের সিগারেটও ততক্ষণে শেষ হয়েছে। গল্পকথক লক্ষ করেছেন তার বলা কাহিনিতে সােমেশ মনােযােগী হয়নি। এমনকি ওই সময়ের মধ্যে একবারও একটু নড়েচড়ে বসেনি। এটাই হলাে গল্পকথকের বিরক্তির কারণ। যে বিরক্তির প্রকাশ ঘটেছে তাঁর উক্তিতে— ‘মিছিমিছিই আমি একলা বকে মরছি।’
গল্পকথকের বিরক্তি প্রকাশের প্রতিক্রিয়া দেখা গেল সােমেশের মধ্যে তার আচরণে আর বক্তব্যে। সে গল্পকথকের কথার কোনাে উত্তর দিল না। সে হঠাৎ ছড়ানাে পা, যা এতক্ষণ একটু নাড়াচাড়াও করেনি, তা গুটিয়ে নিল। তারপর বসল সােজা হয়ে। বসে সিগারেটের পুড়ে যাওয়ার পরেও যে অংশটুকু ধরা ছিল হাতে, তা ফেলে দিল। তারপর বললে যে, গল্পকথক জানেন না, ওই নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপনের পিছনে অনেক সত্যকার ট্র্যাজেডি লুকিয়ে থাকে।
প্রকৃতপক্ষে গল্পকথকের বলা কাহিনি কিন্তু সােমেশ শুনেছে। যাই হােক, গল্পকথক সােমেশের ট্র্যাজেডির কথা স্বীকার করে নিলেন। অবশ্য সেই সঙ্গে বললেন যে, কখনাে-কখনাে যে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় সে আর ফেরে না। সােমেশ ওই কথার জবাবে একটু হাসল। তারপর বলল যে, সে তা বলছে না। তার বক্তব্য হলাে যে, নিরুদ্দিষ্ট ছেলের ফিরে আসারই ভয়ানক একটা ট্র্যাজেডির কথা তার জানা আছে। প্রকৃতপক্ষে সােমেশের প্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ এক নিরুদ্দিষ্ট ছেলের ঘরে ফেরার ঘটনাকে ঘিরে ট্র্যাজিক কাহিনির প্রকাশ।
৩. প্রখ্যাত গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ গল্প অবলম্বনে শােভন চৱিত্রটি আলােচনা করাে।
উত্তরঃ সন্তান, বয়স, দেহের গঠন, পরিচয়-চিহ্ন। প্রখ্যাত গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পের প্রধান চরিত্র শােভন। সে জমিদার পুত্র। বিশাল জমিদারির একমাত্র উত্তরাধিকারী। বয়স ষােলাে-সতেরাে। দোহারা চেহারা, ছিপছিপে গড়ন। ঘাড়ের দিকে ডান কানের কাছে একটি বড়াে জডুল। এই তার পরিচয়-চিহ্ন।
নিরুদ্দেশেৱ কারণ, মানসিক গঠন, স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য : নিরুদ্দিষ্ট শােভন আর পাঁচটা নিরুদ্দিষ্ট ছেলের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। নিরুদ্দেশের কারণ, মানসিক গঠন, স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি নানা বিষয়ে শােভন একেবারে স্বতন্ত্র। সে অভিমানে বাড়ি ছাড়েনি। সামান্য ছুতােয় অতি সহজে সে নিরুদ্দেশ হয়েছে। জন্মসূত্রে সে নির্লিপ্ত মনের ছেলে। সে কঠোর হৃদয়হীন নয়। তার মন যেন। তৈলাক্ত। যা পিচ্ছিল ও যার ওপরে সহজে রেখাপাত হয় না। সে কাগজের বিজ্ঞাপন হয়তাে দেখেছে। তবে তা অনুসরণ করেনি। দেখলেও তার স্বভাবগত ভােলা মনের জন্য ভুলেছে। বাড়ির বাইরে থাকার জন্য দুঃখ-কষ্ট অসুবিধার মধ্যেও সে পেয়েছে মুক্তির স্বাদ। ছোটো সংসারে আদরের দুলাল হয়ে সুখে-স্বচ্ছন্দে থাকা। তার স্বভাববিরুদ্ধ।
মা-বাবার প্রতি মমত্ববােধ। মজার ব্যাপার, মা-বাবার পক্ষ থেকে খবরের কাগজে নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন যেদিন বন্ধ হয়েছে সেদিনই তার উদাসীন নন বাড়ির জন্য বিচলিত হয়েছে। সে দেশে ফিরেছে। মা-বাবার জন্য উদবিগ্ন হয়ে সােজাসুজি বাড়িতে ঢুকতে তার গৃহপ্রবেশে সবচেয়ে বড় বাধা হয়েছে তাদের পুরােনাে নায়েব। মা-বাবার শারীরিক ব্যাপার নিয়ে তার উদবিগ্ন হয়ে ওঠা মা-বাবার প্রতি তার মমত্ববােধের পরিচয়। ঝড়ে ভাঙা গাছের মতো তার পিতার বিধ্বস্ত চেহারা দেখে সে দুঃখে কাতর হয়েছে তার মুখের বেদনাময় তার বুকে ছুরির ফলার মতো হয়েছে।
সংযমী স্বভাব, ট্র্যাজিক পরিণামের শিকার: ব্যবহার তাকে উত্যক্ত করেছে। তাতে সে মর্মাহত হয়েছে। অসহ বােধ করে মাথার চুল মুঠো করে ধরেছে। কিন্তু কোনো সম. সে সংযম হারায়নি। উত্তেজিত হয়ে অশােভনীয় কিছু করে, তার ঘরে ফেরার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সে ভয়ানক ট্র্যাজিক পরিণত শিকার হয়েছে।
৪. “এ অশান্তির চেয়ে বনবাস ভালো।”- বক্তা কেন এ কথা বলেছিলেন ? অশান্তি এড়াতে তিনি কি করেছিলেন ?
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প “নিরুদ্দেশ”-এ, ছেলেকে মধ্যরাতের পর বাড়িতে আসতে দেখে বাবা তাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। সেই মুহূর্তে ছেলেটাও চলে যায়। সন্তানের জন্য শোকাহত মা সেই রাত থেকে খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কীভাবে তার ছেলে পুরো রাত ঠান্ডায় কাটিয়েছে বা রাগের বশে ছেলে কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলে কিনা তা নিয়ে মা চিন্তিত। পরের দিন সন্ধ্যায় বাবা কাজ থেকে ফিরে দেখেন ছেলেও বাড়ি ফেরেনি এবং তার মা বিছানা না ছাড়ার দাবি করেছেন। এই অবস্থা দেখে ক্লান্ত বাবাকে বিচলিত হতে দেখা গেল। তখনই সে উদ্ধৃতাংশটি বলেন।
বাবা এই সমস্যা সমাধানের জন্য পত্রিকার অফিসে গেলেন। সেখানে সংবাদপত্রের কর্মচারীকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন এবং বলেন যে বিজ্ঞাপনটিতে নিরুদ্দেশ হওয়া ছেলেটির ফিরে আসার অনুরোধ করা হবে। কাগজের কর্মচারীর কথায়, তিনি ছেলের নাম, পরিচয় ইত্যাদি লিখে দিলেন। তিনি বিনীতভাবে অনুরোধ করলেন একটু ভালো করে বিজ্ঞাপনটি লিখতে যাতে ছেলে ফিরে আসে কারণ আগেরদিন রাত থেকে তার মা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। কাগজের কর্মচারী তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার পর তিনি বাড়ি ফিরে যান।
৫. “অধিকাংশ নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপনের ইতিহাসই এই”।- বিজ্ঞাপনের কোন ইতিহাসের কথা এখানে বলা হয়েছে নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের “নিরুদ্দেশ” ছোটগল্পে, কথক সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনটি দেখার পর নিরুদ্দেশের পটভূমিকে নিজ আঙ্গিকে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন।
একটি ছেলে মাঝে মাঝে থিয়েটার দেখে দেরি করে বাড়ি ফেরার জন্য বাবা তার উপর প্রচন্ড রেগে যায়। বাবা বুঝতে পারেন যে তার ছেলে আগের বছর পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পর এবারও সফল হতে পারবে না। তিনি তার ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেছেন আর ছেলেও সেই মুহূর্তে বাড়ি ফেরে। রাগের বশে তিনি ছেলেকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন এবং ছেলেটি সাথে সাথে চলে যায়। বাবার সাথে এই ঝামেলার পরই মা ছেলের দুঃখে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। পরের দিন কাজ থেকে বাড়ি ফিরে, স্ত্রীকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখে তিনি বিরক্ত হলেন। একটি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য, তিনি সংবাদপত্রের অফিসে যান। তবে বাবা বাড়ি দেখেন বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার আগেই ছেলে ফিরে এসেছে। কিন্তু থাকার পরিবর্তে কয়েকটি বই নিয়ে যেতে । এবার, ছেলেকে সামনে পেয়ে মা এবং বাবার ভূমিকা অদ্ভুত উপায়ে পরিবর্তিত হয়। মা তার ছেলেকে সামান্যতম বকুনির জন্যও গৃহ পরিত্যাগ করার কারণে শাস্তি দেন এবং “কুলাঙ্গার” বলে অভিহিত করেন। কিন্তু তার বাবা তাকে বকাবকি করতে নিষেধ করেন। নিরুদেশের বিজ্ঞাপনের ইতিহাসের বেশিরভাগই এইরকম বলে কথক মন্তব্য করেন।
৬. “হঠাৎ শোভনের কাছে সমস্ত ব্যাপারটা ভয়ংকর ভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠলো।”- শোভনের কাছে কি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল ? সেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছিল কি ?
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প ‘নিরুদ্দেশ’-এ সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে, শোভন বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু বৃদ্ধ নায়েবমশাই বাসভবনে প্রবেশ করতেই তাকে বাধা দেন। মা ঠিক আছে কি না বা কিছু হয়েছে কি না সেসব প্রশ্নের উত্তর তাকে সোজাসাপ্টা বা খোলামেলাভাবে দেওয়া হয় না। এমনকি খাজাঞ্চিমশাইয়ের কথার সুরও স্বাভাবিক মনে হয় না। শোভনের জোর করে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টার জবাবে দরজার কাছে এগিয়ে নায়েবমশাই বলেন, কেলেঙ্কারির প্রয়োজন নেই। সেই সময়ে, শোভন বুঝতে পারে যে এই ব্যক্তিরা তাকে শোভন হিসাবে মেনে নিতে পারেনি।
শোভন এই সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। এর কারণ সাত দিন আগে শোভনের মৃত্যুর খবর তারা বিশ্বাস করেছে। এমনকি শোভনের বৃদ্ধ বাবাও তাকে চিনতে পারেননি। কিন্তু যখন শোভনকে টাকা দেওয়া হয় এবং তাকে তার বৃদ্ধ মায়ের সামনে শোভন হওয়ার ভান করতে বলা হয়, তখন দৃশ্যটি হতাশাজনক মোড় নেয়। সমস্যাটি নির্মূল করার পরিবর্তে একটি ট্র্যাজিক চরিত্রের ভূমিকা গ্রহণ করে শোভন।
৭. “সকলের দৃষ্টিতে অবিশ্বাস।”- কাদের কথা বলা হয়েছে? এই অবিশ্বাসের কারণ আলোচনা কর।
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প “নিরুদ্দেশ”-এ উদ্ধৃতাংশটি শোভনের বাড়ির নায়েবমশাই এবং অন্যান্য গৃহকর্মীকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে।
দীর্ঘ নিরুদ্দেশে থাকার পর শোভন যখন বাড়ি আসে তখন বাড়ির কর্মচারীরা মনে করে পুরস্কার প্রত্যাশীদের মধ্যে সেও একজন। এ কারণে বারবাড়িতে তাকে বসতে দেওয়া হয়। শোভনের জোর করে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টার জবাবে দরজার কাছে এগিয়ে নায়েবমশাই বলেন প্রতারণার কোন প্রয়োজন নেই, তাতে কোনো লাভ হবে না। এমনকি তার যৌবনের ছবি থেকে শোভন তাকে চিনতে পেরেছে, কিন্তু তার নির্ভরযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
নায়েবমশাইয়ের মতে শোভন এবং ছবির মধ্যে কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে, যদিও তিনি উল্লেখ করেছেন যে এর আগে আগত আরও দু’জনের সাথে শোভনের সাদৃশ্য ছিল, এমনকি জরুল পর্যন্ত। কিন্তু এই অবিশ্বাস শুধু পুরস্কারের বিপুল সংখ্যক প্রতিযোগী এবং শোভনের দীর্ঘক্ষণ অনুপস্থিতির কারণে ঘটেনি; শোভন মারা গেছেন এই খবরটিও অনেকাংশে অবিশ্বাসের কারণ। কিছু প্রত্যক্ষদর্শক ও হাসপাতালসূত্রে জানা গেছিলো সাতদিন আগে শোভন একটি গাড়ির ধাক্কায় মারা গেছে। ফলে শোভন বাড়ি ফেরার পর তাকে কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি।
৮. “সেই জন্যই গল্প বানানো সহজ হলো।”- এই মন্তব্যের আলোয় সোমেশের চরিত্র বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের “নিরুদেশ” ছোটগল্পে সোমেশকে গল্পকারের বন্ধু হিসেবে পাওয়া যায়। কথকের নিরুদ্দেশের কল্পিত কাহিনী শোনার পর সোমেশ একটি নিরুদ্দিষ্ট ছেলে ও তার বাড়ি ফিরে আসার করুন ট্র্যাজিক কাহিনী শোনান।
শোভন হলো সেই গল্পের নায়ক যে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হলেও দুবছর পর বাড়িতে ফেরত আসে। দুর্ভাগ্যবশত, নায়েবমশাই বা খাজাঞ্চিবাবু কেউই তাকে শোভন বলে মেনে নেয়নি। তাকে সম্পত্তির অনিচ্ছাকৃত দাবিদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনকি শোভনের বাবাও তাকে চিনতে পারেননি। জোর করে বাড়ির ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে চলে যেতে বলা হয়। গল্পের সবচেয়ে কষ্টকর দিকটি হলো, অবশেষে শোভনের হাতে টাকা দিয়ে তাকে তার মৃত্যুপথযাত্রী মায়ের কাছে শোভনের ভূমিকায় অভিনয় করতে বলা হয়। ফলস্বরূপ, শোভনের জীবন এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে নিমজ্জিত হয়। তাকে সত্যিকারের চরিত্র থেকে নকল হয়ে যেতে হয়। যখন সোমেশের গল্পের সমাপ্তি ঘটে, তখন দেখা যায় যে সোমেশের কানের পাশেও একটি জড়ুল আছে, অবিকল গল্পের শোভনের মতো। গল্প তৈরি করা সহজ বলে দাবি করে বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও গল্পকার বুঝতে পারে যে সোমেশই আসলে গল্পের শোভন।
৯. “ছেলে বিশাল পৃথিবীতে নিরুদ্দেশ যাত্রায় বেরিয়ে পড়ে।” – ছেলের নিরুদ্দেশ যাত্রায় বেরিয়ে পড়ার কারণ কি? তার ঘরে ফেরা পর্যন্ত ঘটনার বিবরণ দাও।
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘নিরুদ্দেশ’ ছোটগল্পে একটি সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের উপর ভিত্তি করে, কথক তার বন্ধু সোমেশকে নিখোঁজ হওয়া এক যুবকের গল্প বলে। সেই গল্পে বাবা, গভীর রাতে ছেলেটি বাড়ি ফিরছে না দেখে ছেলেটির মায়ের কাছে তার রাগ দেখায়। এরকম মাঝে মাঝেই ঘটে। সে খুব বিরক্তির সাথে বলে “পয়সাগুলো আমার খোলামকুচি কিনা, তাই নবাবপুত্তুর যা খুশি তাই করছেন।” ছেলে বাড়ি আসলে বাবা তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলে। বাবার রাগ সেদিন মৌখিকভাবে আটকে থাকেনি কারণ ছেলে তখনই বাড়িতে ফেরে। তিনি অবিলম্বে রাগের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তার ছেলেকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন। একথা শুনে ছেলেটি অভিমান করে সাথে সাথে ঘর ছেড়ে চলে যায়। মায়ের অনুযোেগ বাবাকে আরও ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল। ছেলেটি তখন নিরুদ্দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
বাবার সাথে এই ঝামেলার পরই মা ছেলের দুঃখে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। পরের দিন কাজ থেকে বাড়ি ফিরে, স্ত্রীকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখে তিনি বিরক্ত হলেন। একটি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য, তিনি সংবাদপত্রের অফিসে যান। তবে বাবা বাড়ি দেখেন বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার আগেই ছেলে ফিরে এসেছে। কিন্তু থাকার পরিবর্তে কয়েকটি বই নিতে। এবার, ছেলেকে সামনে পেয়ে মা এবং বাবার ভূমিকা অদ্ভুত উপায়ে পরিবর্তিত হয়। মা তার ছেলেকে সামান্যতম বকুনির জন্যও গৃহ পরিত্যাগ করার কারণে শাস্তি দেন এবং “কুলাঙ্গার” বলে অভিহিত করেন। কিন্তু তার বাবা তাকে বকাবকি করতে নিষেধ করেন।
১০. “নায়েব মশাই নোটের তাড়াটা শোভনের হাতে গুঁজে দিলেন।” -নায়েব মশাই কেন নোটের তাড়া শোভনের হাতে গুঁজে দিয়েছিলেন।
উত্তরঃ “নিরুদ্দেশ” গল্পে শোভন প্রায় দুই বছর পর নিরুদ্দেশ থেকে বাড়ি ফিরে আসে, কিন্তু জমিদারের কর্মীরা তাকে চিনতে পারে না। বারবাড়িতে তাকে বসতে বলা হয়। তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে, শোভনকে বলা হয়েছিল যে, আরও অনেক ব্যক্তি সেখানে এসে নিজেদের শোভন বলে দাবি করেছিল, কিন্তু তারা খবর পায় যে, আসল শোভন একটি গাড়ির ধাক্কায় সাত দিন আগে মারা গেছে। শোভনের দুর্ভাগ্যের বিষয় হল তার বৃদ্ধ বাবাও তাকে চিনতে পারেননি। হতাশ শোভনের সংবিত ফেরে কারণ নায়েকমশাই প্রচুর টাকা দিয়ে তাকে একটি কাজ করার জন্য অনুরোধ করেন, তা হলো শোভনকে তার মৃত্যুপথযাত্রী মায়ের সামনে শোভনের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। কারণ সে সব দিক থেকে শোভনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। জমিদার নিজে এই মৃত্যুপথযাত্রীকে শেষ সান্ত্বনা দিতে তাকে অনুরোধ করেছিলেন। তার পারিশ্রমিক হিসেবে নায়েব মশাই নোটের তাড়াটি শোভনের হাতে দেন।
১১.” শোভন এই অবস্থাতে না হেসে পারলে না,”- শোভন কে ? এখানে কোন অবস্থার কথা বলা হয়েছে ? শোভন কেন হেসে উঠেছিল ?
উত্তরঃ ‘নিরুদ্দেশ’ ছোটগল্পে শোভন হল জমিদার বংশের একক উত্তরসূরি, যে দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ ছিল।
দুই বছর পর, শোভন বাড়ি ফিরে আসে, কিন্তু বাড়িতে তাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। বারবাড়িতে তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়। শোভনের জোর করে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টার জবাবে দরজার কাছে এগিয়ে নায়েবমশাই বলেন প্রতারণার কোন প্রয়োজন নেই। তাকে বলা হয়েছিল যে আরও দু’জন লোক আগে এসেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে তারা শোভন। এই পরিস্থিতিতে শোভন অবাক হয়ে যায়।
শোভন তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করার অনুরোধ করেন, কিন্তু নায়েবমশাই তাকে জানান যে শোভন সাত দিন আগে মারা গেছেন। একথা শুনে অবাক হয়েও শোভন হাসে। সে নিজে উপস্থিত এবং তাকেই তার মৃত্যুর খবর দেওয়া হচ্ছে, এই ঘটনা শোভনকে হাসতে বাধ্য করে। সে তার কণ্ঠে অবজ্ঞা নিয়ে শোভনের মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞেস করে।
Pingback: নবম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর | WBBSE Class 9 Bengali Question Answer - Prosnodekho -