দাঁড়াও (শক্তি চট্টোপাধ্যায়) কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Darao Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য মেলা
অষ্টম শ্রেণি বাংলা

দাঁড়াও (শক্তি চট্টোপাধ্যায়) কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Darao Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse

অষ্টম শ্রেণির বাংলা দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর | Darao Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse

অষ্টম শ্রেণির বাংলা দাঁড়াও কবিতার কবিতা, কবি পরিচিতি, কবিতার ব্যাখ্যা, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর | Darao Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse

1. অষ্টম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. অষ্টম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

অষ্টম শ্রেণির বাংলা দাঁড়াও কবিতার কবিতা, কবি পরিচিতি, কবিতার ব্যাখ্যা, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর | Darao Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse

দাঁড়াও
—শক্তি চট্টোপাধ্যায়

বিষয়সংক্ষেপঃ

‘মানুষ’ শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘মান’ ও ‘হুশ’ এর অর্থ। কিন্তু যত মানুষ আধুনিকতার শিখরে উত্তীর্ণ হয়েছে, ততই মানবিকতার অবক্ষয় দেখা গিয়েছে। মানুষ হয়ে উঠেছে আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, সুযােগসন্ধানী ও ক্ষমতালােভী। মানবিকবােধ সম্পন্ন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘দাঁড়াও’ কবিতাটির মধ্যে মানুষের মানবিকতার অবক্ষয়ের দিকটিকে তুলে ধরেছেন। মনুষ্যত্ব, বিবেকবােধ ইত্যাদি যেগুলি মানুষের সদগুণ বলে বিবেচিত, সেইসমস্ত গুণসম্পন্ন মানুষকে তিনি অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানাের আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সমস্ত মানুষের কথা কবি সর্বদা মনে করেন এবং যেভাবেই হােক, প্রতিটি মানুষ যেন প্রত্যেক মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়। এটাই কবির একমাত্র প্রার্থনীয় বিষয়।

আসলে কবি বিশ্বাস করেন যে, কোনাে প্রাকৃতিক দুর্যোগে হােক কিংবা নিঃসঙ্গতা, অসহায়তায় হােক, মানবিকতার বােধ থেকে মানুষ যেন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হয়, ব্যথিত মানুষের সমব্যথী হয়ে ওঠে। ‘পাশে দাঁড়াও’ বা পাশে এসে দাঁড়াও’ এই শব্দগুলি যথাক্রমে ৩ বার করে মােট ৬ বার কবি এই কবিতায় ব্যবহার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে কবি মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অন্তর-মানবিক চেতনাকে জাগ্রত করে পাঠকমনকে মানবতাবােধে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

নামকরণঃ

নামকরণ যখন বিষয়কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে, তখন সাহিত্যের নামকরণ-এর মধ্য দিয়ে বিষয়বস্তুর গভীরে সরাসরি প্রবেশ করা সম্ভব হয়। বিষয়কেন্দ্রিক নামকরণ তখনই আরাে সার্থক হয়ে ওঠে, যখন সেই নামকরণ হয় ব্যঞ্জনাবাহী। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় আলােচ্য কবিতাটির নাম রেখেছেন ‘দাঁড়াও। নামকরণ করার ক্ষেত্রে যে-বিষয়গুলি বিবেচ্য, কাহিনির ব্যঞ্জনাধর্মিতা তাদের মধ্যে একটি, যেটি প্রদত্ত কবিতার ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়েছে। কবিতাটির কাহিনির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, অবক্ষয়ী সমাজে জীবন-যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। সুতরাং, মানুষ হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার-উৎপীড়ন না-চালিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানাে উচিত বলে কবির ধারণাপকবিতাটির মূল বিষয় হল—মানুষ অসহায় হয়ে কাঁদছে। ফলে মনুষ্যত্ব ও বিবেকবােধসম্পন্ন মানুষ সেই অসহায় ক্রন্দনরত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াক। সমগ্র কবিতাটির বক্তব্য-বিষয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানাের বিষয়টিতে কবি বেশি জোর দিয়েছেন। কারণ, যেভাবেই হােক এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালােবেসে দাঁড়াও”— মানুষের পাশে দাঁড়ানাের এটি একটি আকুল আবেদন। তাই কবিতাটির নামকরণ ‘দাঁড়াও’ অত্যন্ত সুপ্রযুক্ত ও সার্থক হয়েছে।

হাতেকলমে প্রশ্নোত্তর দাঁড়াও কবিতা অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Hate Kolome Question Answer Darao Kobita Class 8 Bengali wbbse

১.১ শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ?

উত্তরঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড়ু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

১.২ তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখাে। ।

উত্তরঃ তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম হল- ‘কুয়োতলা’।

২. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

২.১‘মতাে’ শব্দ ব্যবহার করা হয় কখন ? তােমার যুক্তির পক্ষে দুটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ দুটি বিষম বস্তুর সঙ্গে তুলনা বােঝাতে বা সাদৃশ্য কিংবা বৈসাদৃশ্য কল্পনা করতে ‘মতাে’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যেমন— ফুলের সৌন্দর্য ও সতেজতার সঙ্গে শিশু বা কিশোরদের তুলনা করে বলা হয় ‘ফুলের মত শিশু’। সাধারণত গানে ও কবিতায় এই ধরনের তুলনা বেশি পাওয়া যায়।

» আমাদের পাঠ্য কবি জীবনানন্দ দাশের ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ কবিতা থেকে উদাহরণ দিয়ে বলা যায়—“নকশাপেড়ে শাড়িখানা মেয়েটির রৌদ্রের ভিতর/হলুদ পাতার মতাে সরে যায়” কবি এখানে রৌদ্রের ভিতর মেয়েটির শাড়ির সঙ্গে জীর্ণ, হলুদ পাতার তুলনা করে ‘মতাে’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

২.২ কবি পাখির মতাে পাশে দাঁড়াতে বলছেন কেন ?

উত্তরঃ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় : জীবনকে কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে দেখেছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ বড়াে অসহায়, বড়াে একা। ফলে তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতাকে পরিত্যাগ করে মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে পাখির আছে স্বাধীনতা, গতিবেগ ও চঞ্চলতা। পাখিদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা বা বিচ্ছিন্নতাবাদী মনােভাব নেই। নেই সামাজিক জটিলতার স্পর্শ। তাই কবি পাখির মতাে মানুষকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে বলেছেন।

২.৩ ‘মানুষই ফাঁদ পাতছে’—কবি এ কথা কেন বলেছেন ? ‘মানুষ’ শব্দের সঙ্গে ‘ই’ ধ্বনি যােগ করেছেন কেন তােমার কী মনে হয় ?

উত্তরঃ মানুষের যাবতীয় দুর্দশার কারণ মানুষ নিজেই, মানুষের তৈরি হিংসা লোভ লালসার হাত থেকে মানুষ বাঁচতে পারে না। এই সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষের মধ্যে থেকে মনুষ্যত্ববােধ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। একে অপরকে আক্রমণ করার জন্য, ঠকাবার জন্য মানুষ যেন জাল পেতে আছে। তাই কবি এখানে বলেছেন—“মানুষই ফাঁদ পাতছে”।
» ‘মানসই ফাঁদ পাচ্ছে’, অংশে মানুষের প্রতি মানুষেরই বর্বরতার কথা জোর দিয়ে বোঝাতে ‘ই’ ধ্বনিটি যোগ করা হয়েছে।

২.৪ তােমার মতাে মনে পড়ছে’ –এই পঙক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ কী ?

উত্তরঃ ‘দাঁড়াও’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় যে ‘তুমি’র প্রসঙ্গ এনেছেন, তা কোনো বিশেষ ব্যক্তি নন, বরং বলা যেতে পারে এই ‘তুমি” হল মানবিকতা, সমগ্র পৃথিবীর মানুষের শুভবোধ | বর্তমান পৃথিবীতে নিত্যদিন মনুষ্যত্বের বিকৃতি, মানুষের প্রতি মানুষের হিংস্র আচরণ কবিকে পীড়িত করছে। তাই কবি চিরন্তন মানবিকতা ও মনুষ্যত্বকে মনে মনে কামনা
করছেন এবং মানবিক গুণগুলির যাতে পুনর্জাগরণ ঘটে, তা-ই চেয়েছেন।

২.৫ “এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালােবেসে দাঁড়াও”– এই পঙক্তিটির বিশেষত্ব কোথায় ? এই ধরনের দুটি বাক্য তুমি তৈরি করাে।

উত্তরঃ আলােচ্য পৃঙক্তিটির বিশেষত্ব নানাভাবে লক্ষণীয়। প্রথমতঃ ‘এসে,ভেসে’, ‘বেসে’—তিনটিই অসমাপিকা ক্রিয়াপদ সম্পূর্ণ বাক্যটি তিনটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদ দ্বারা গঠিত। দ্বিতীয়তঃ শব্দগুলির মধ্যে একটি ছন্দগত মিল লক্ষ করা যায়। পর পর দুই মাত্রার শব্দ বসিয়ে আলাদা ধ্বনি ঝংকার সৃষ্টি করা হয়েছে। তৃতীয়তঃ ‘এ’-কার-সহ ‘স’ অক্ষরটি তিনবার বসে বৃত্ত্যনুপ্রাস অলংকার সৃষ্টি করেছে।

» এমন ধরনের দুটি বাক্য হল— (ক) এদেশে ভালোবেসে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সকলে এসএমএসে।(খ) হেঁটে যাও ছুটে যাও তারপর জুটে যাও।

৩. “মানুষ বড়াে কাঁদছে”— কী কারণে কবি এই কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ সমগ্র পৃথিবী জুড়েই চলছে ক্ষমতার রাজনীতি। ফলে রাজনীতি, অর্থনীতি ও ক্ষমতায়নের খেলায় সময়ও অস্থির। দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ, ঠান্ডা লড়াই, বিচ্ছিন্নতাবাদ, উগ্রপন্থী মানসিকতা মানুষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সমাজমনস্ক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় জীবনকে দেখেছেন কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে। সেহেতু সমাজের বিকৃতি ও ব্যভিচার দেখে কবি মর্মাহত। সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে স্বার্থান্বেষী মানুষরা মেতে উঠেছে অত্যাচার ও উৎপীড়নের খেলায় । তারা বিচ্ছিন্ন ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে জীবন যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ছে। এই সমস্ত মানুষদের জন্য কবি খুবই মর্মাহত হয়েছেন। তাই তিনি মানুষেরই কাছে। মানুষের কান্নার কথাকে তুলে ধরেছেন।

৪. “মানুষ বড়াে একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও”। এই পঙক্তিটিকে তিনবার ব্যবহার করার কারণ কী হতে পারে বলে তােমার মনে হয় ?

উত্তরঃ আলােচ্য পঙক্তিটিকে সমগ্র কবিতায় তিনবার ব্যবহার করে কবি দুটি বিষয়কে তীব্রতর করে তােলার চেষ্টা করেছেন। একটি হল ‘মানুষ বড়াে একা এবং দ্বিতীয়টি হল ‘তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও। অর্থাৎ, মানুষের অসহায়তা, একাকিত্ব এবং মানুষের দ্বারাই সেগুলি নিরাময় করার প্রচেষ্টাকে সমগ্র কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে। তাই আলােচ্য বাক্যটিকে তিনটি অনুচ্ছেদে তিনবার ব্যবহার করে কবি তাঁর বক্তব্যকে খুব জোরালাে, স্পষ্টতর ও প্রবলতর করার চেষ্টা করেছেন।

৫. কবিতাটির নাম ‘দাঁড়াও’ কতটা সার্থক ? কবিতাটির নাম ‘মানুষ বড়াে কাঁদছে’ হতে পারে কি— তােমার উত্তরের ক্ষেত্রে যুক্তি দাও।

উত্তরঃ নামকরণ যখন বিষয়কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে, তখন সাহিত্যের নামকরণ-এর মধ্য দিয়ে বিষয়বস্তুর গভীরে সরাসরি প্রবেশ করা সম্ভব হয়। বিষয়কেন্দ্রিক নামকরণ তখনই আরাে সার্থক হয়ে ওঠে, যখন সেই নামকরণ হয় ব্যঞ্জনাবাহী। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় আলােচ্য কবিতাটির নাম রেখেছেন ‘দাঁড়াও। নামকরণ করার ক্ষেত্রে যে-বিষয়গুলি বিবেচ্য, কাহিনির ব্যঞ্জনাধর্মিতা তাদের মধ্যে একটি, যেটি প্রদত্ত কবিতার ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়েছে। কবিতাটির কাহিনির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, অবক্ষয়ী সমাজে জীবন-যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। সুতরাং, মানুষ হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার-উৎপীড়ন না-চালিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানাে উচিত বলে কবির ধারণা। কবিতাটির মূল বিষয় হল—মানুষ অসহায় হয়ে কাঁদছে। ফলে মনুষ্যত্ব ও বিবেকবােধ সম্পন্ন মানুষ সেই অসহায় ক্রন্দনরত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াক। সমগ্র কবিতাটির বক্তব্য-বিষয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানাের বিষয়টিতে কবি বেশি জোর দিয়েছেন। কারণ, যেভাবেই হােক “এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালােবেসে দাঁড়াও”—মানুষের পাশে দাঁড়ানাের এটি একটি আকুল আবেদন। তাই কবিতাটির নামকরণ ‘দাঁড়াও’ অত্যন্ত সুপ্রযুক্ত ও সার্থক হয়েছে।

» কবিতাটির নাম ‘মানুষ বড়াে কাঁদছে’ও হতে পারত নিঃসন্দেহে। কারণ, কবিতার বিষয়বস্তুর সঙ্গে এই নামটির পুরাে মাত্রায় সংগতি আছে। তবুও তুলনামূলক বিচারে মানুষ বড়াে কাঁদছে’ নামটির চেয়ে ‘দাঁড়াও’ নামটি বেশি সংগত। উল্লেখ্য, মানুষ বড়াে কাঁদছে’ নামে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অন্য একটি কাব্যগ্রন্থ আছে।

৬. কবি কাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরােধ করছেন বলে তােমার মনে হয় ?

উত্তরঃ প্রদত্ত কবিতাটিতে কবি মানুষকেই তাদের হারিয়ে যাওয়া শুভ চেতনা, মনুষ্যত্ববােধ জাগরণের মধ্য দিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে অনুরােধ করেছেন। এই বােধই পারে মানুষকে অমানুষিক তথা বর্বর আচরণ থেকে মুক্ত করতে। বর্তমান সময়ে কিছু মানুষ হিংসায় মত্ত হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার করতে কুণ্ঠিত হয় না। সমাজ থেকে সত্য-সুন্দরকে তারা মুছে ফেলতে চায়। তাই কবি বিবেকবান মানুষকে সেই সমস্ত উৎপীড়িত অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানাের আহ্বান জানিয়েছেন।

৭. কবিতাটি চলিত বাংলায় লেখা, শুধু একটা শব্দ সাধু ভাষার। শব্দটি খুঁজে বার করাে এবং শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করেছেন কেন কবি ?

উত্তরঃ আলােচ্য কবিতাটি চলিত ভাষায় লেখা। শুধু একটিমাত্র শব্দ সাধুভাষায় লেখা, সেটি হল দ্বিতীয় স্তবকের শেষ লাইনে লেখা ‘তাহার’।

» শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করে কবি সম্ভবত অসহায় মানুষদের বিশেষভাবে চিহ্নিত করতে চেয়েছেন। কারণ, জীবনযন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত মানুষের জন্য শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিমন কেঁদে উঠেছে। তাই সেই মানুষদের পাশে দাঁড়ানাের জন্যই কবির একান্ত আকুল প্রার্থনা। এই অসহায় নির্যাতিত মানুষদেরকে চিহ্নিত করতে কবিতার মধ্যে হঠাৎ একটু ব্যতিক্রমী শব্দ ব্যবহার করে কবি তাদের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সচেষ্ট হয়েছেন। তা ছাড়া নিত্য ব্যবহার্য শব্দের বদলে বা তার পাশাপাশি সাধু শব্দ ‘তাহার’ ব্যবহার করে বক্তব্যকে আরও গভীর করে তুলতে চেয়েছেন। সম্ভবত, এ কারণেই তিনি কবিতার মধ্যে ওই জাতীয় শব্দ ব্যবহার করেছেন। আসলে ‘তার’ শব্দের পরিবর্তে ‘তাহার’ শব্দের বিস্তৃতি অনেক বেশি। তাই, চলিত ভাষার মধ্যে সাধু শব্দের ব্যবহার সেই ব্যপ্তিকেই ব্যঞ্জিত করে তােলে।

৮. প্রথম স্তবকের তিনটি পঙক্তির প্রত্যেকটির দলসংখ্যা কত ? প্রতিটি পঙক্তি ক-টি রুদ্ধদল ও মুক্তদল নিয়ে তৈরি ?

উত্তরঃ

» প্রথম চরণ = মানুষ বড়াে কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও-মানুষ (মানুষ), বড়াে (বডাে), কাঁদছে (কাঁদ-ছে), তুমি (তুমি), মানুষ (মানুষ), হয়ে (হ-য়ে), পাশে (পা-শে), দাঁড়াও (দাঁ – ড়াও), দলসংখ্যা—১৬টি।

» দ্বিতীয় চরণ = মানুষই ফাঁদ পাতছে, তুমি পাখির মতাে পাশে দাঁড়াও—মানুষই (মা-নুষ-ই), ফাঁদ (ফাঁদ), পাতছে (পাত-ছে), তুমি (তুমি), পাখির (পাখির), মতাে (ম-তাে), পাশে (পা-শে), দাঁড়াও (দাঁ-ড়াও), = দলসংখ্যা ১৬টি। )

» তৃতীয় চরণ = মানুষ বড়াে একলা তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও—মানুষ (মা – নুষ), বড়াে (ব – ড়াে), একলা (এক্ – লা), তুমি (তু – মি), তাহার (তা – হার), পাশে (পা – শে), এসে (এ – সে), দাঁড়াও (দাঁ – ড়াও), = দলসংখ্যা—১৬টি।

» প্রথম স্তবকের তিনটি পঙক্তির প্রত্যেকটির দল সংখ্যা ১৬ (ষোলাে)। প্রথম পঙক্তি— ১২ টি মুক্তদল এবং ৪টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।

দ্বিতীয় পঙক্তি— ১১টি মুক্তদল এবং ৫টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।

তৃতীয় পঙক্তি— ১২ টি মুক্তদল এবং ৪টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।

৯. কী ঘটেছে লেখাে : সন্ধ্যা > সন্ধে। ফাদ > ফাঁদ।

» সন্ধ্যা > সন্ধে (স্বরসংগতি)।

» ফাদ > ফাঁদ (স্বতােনাসিক্যীভবন)।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর দাঁড়াও কবিতা অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Extra Question Answer Darao Kobita Class 8 Bengali wbbse

• ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।

১. ‘দাঁড়াও’ কবিতাটির রচয়িতা হলেন—
(ক) শক্তি চট্টোপাধ্যায়
(খ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
(গ) রূপসী বাংলা
(ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

উত্তরঃ (ক) শক্তি চট্টোপাধ্যায়

২. দাঁড়াও কবিতাটির উৎস কী ?
(ক) যেতে পারি কিন্তু কেন যাব
(খ) হে প্রেম হে নৈ: শব্দ
(গ) মানুষ বড় কাঁদছে
(ঘ) জ্বলন্ত রুমাল

উত্তরঃ (গ) মানুষ বড় কাঁদছে।

৩. ‘দাঁড়াও’ কবিতাটিতে কবি কার পাশে দাঁড়াতে বলেছেন?
(ক) বন্ধুর
(খ) মানুষের
(গ) বন্যের
(ঘ) ঈশ্বরের

উত্তরঃ (খ) মানুষের।

৪. শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের একটি উপন্যাসের নাম হল—
(ক) কুয়োতলা
(খ) উত্তরায়ণ
(গ) প্রথম কদম ফুল
(ঘ) বন্দীর বন্দনা

উত্তরঃ (ক) কুয়োতলা।

৫. শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের একটি উল্লেখযোগ্য কাব্য হলো—
(ক) কলকাতার যীশু
(খ) সাতটি তারার তিমির
(গ) হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান
(ঘ) যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল

উত্তরঃ (গ) হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান

৬. শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ হল—
(ক) সোনার মাছি খুন করেছি
(খ) যেতে পারি কিন্তু কেন যাব
(গ) হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য
(ঘ) রূপসী বাংলা

উত্তরঃ (গ) হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য

৭. শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম—
(ক) শ্বাশ্বতী
(খ) হাওয়ার গান
(গ) সোনার মাছি খুন করেছি
(ঘ) অর্ন্তনিহিত

উত্তরঃ (গ) সোনার মাছি খুন করেছি।

৮. কার সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায় শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘যম’ কবিতাটি প্রকাশিত হয় ?
(ক) সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
(খ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
(গ) বুদ্ধদেব বসু
(ঘ) বিষ্ণু দে

উত্তরঃ (গ) বুদ্ধদেব বসু।

৯. শক্তি চট্টোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন কোথায় ?
(ক) নদিয়ায়
(খ) দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ু গ্রামে
(গ) চব্বিশ পরগনার কাঁঠালপাড়া
(ঘ) পুরুলিয়ার বলরামপুর

উত্তরঃ (খ) দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ু গ্রামে।

১০. শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোন পত্রিকার সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন ?
(ক) উল্টো রথ
(খ) নব কল্লোল
(গ) কৃত্তিবাস
(ঘ) প্রসাদ

উত্তরঃ (গ) কৃত্তিবাস।

১১. “তোমাকে সেই সকাল থেকে _______
মতো মনে পড়ছে”— কার মতো ?
(ক) প্রতিবেশীর মতো
(খ) তোমার মতো
(গ) তাদের মতো
(ঘ) বন্ধুর মতো

উত্তরঃ (খ) তোমার মতো।

১২. কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় কখন থেকে বসবাস শুরু করেন ?
(ক) ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে থেকে
(খ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে
(গ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে থেকে
(ঘ) ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে

• নিচের প্রশ্নগুলি সংক্ষেপে উত্তর দাও :

১. দাঁড়াও কবিতার কবি নাম লেখো। কবিতাটি কবির কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?

উত্তরঃ দাঁড়াও কবিতার রচয়িতা হলেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়। কবিতাটি ‘মানুষ বড় কাঁদছে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ।

বি:দ্র: কোন কোন নোট বইতে ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ কাব্যগ্রন্থের উল্লেখ আছে।

২.‘দাঁড়াও’ কবিতায় প্রথম স্তবকে ‘মানুষ’ শব্দটি কতবার আছে ?

উত্তরঃ ‘দাঁড়াও’ কবিতার প্রথম স্তবকে ‘মানুষ’ শব্দটি চারবার আছে।

৩. দাঁড়াও কবিতায় তোমাকে ________ কবির কখন কখন মনে পড়েছে ?

উত্তরঃ দাঁড়াও কবিতায় তোমাকে কবির সকাল-সন্ধে ও রাতের বেলা মনে পড়ছে।

৪. কবি কাকে পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন ?

উত্তরঃ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন।

৫.“মানুষ বড়ো কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও”—কার লেখা, কোন্ কবিতা?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘দাঁড়াও’ কবিতার প্রথম পক্তির অন্তর্গত।

৬. ‘দাঁড়াও’ কবিতাটি কার লেখা ?

উত্তরঃ ‘দাঁড়াও’ কবিতাটি লিখেছেন এযুগের অন্যতম শক্তিশালী কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়।

৭. কবি কাদের ফাঁদ পাতার কথা বলেছেন?

উত্তরঃ শিকারি যেমন ফাঁদ পেতে পশুপাখি ধরে, মানুষও তেমন গোপনে চতুরতার সঙ্গে অন্য মানুষকে চাইছে বিপদে ফেলতে ।

ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান–৩

১. “মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও”— মানুষ একলা কেন ? মানুষের জন্য কী করা দরকার ?

উত্তরঃ আজকের সমাজের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। কেউ কারও
কথা ভাবে না বলেই মানুষ আজ অসহায় একলা ।
» সেজন্য প্রত্যেক মানুষের মানবতার বোধ নিয়ে এগিয়ে এসে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার।

২, “তোমার মতো মনে পড়ছে”-পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য কী ?

উত্তরঃ যান্ত্রিক সভ্যতালব্ধ অস্থির সামাজিক পরিবেশে কবি মানবিকতার অভাব বোধ করেছেন। সেজন্য মানবিকতার স্পর্শযুক্ত মানুষকে খুঁজতে চেয়েছেন। এখানে ‘তোমার মতো’ বলতে কোনো বিশেষ ব্যক্তি নয়, সমগ্ৰ পৃথিবীর মানুষের মানবিকতা ও শুভবোধের প্রতি কবি ইঙ্গিত করেছেন।
তিনি মানুষের মানবিক গুণগুলির জেগে ওঠার কামনা করেছেন।

আরও পড়ুনঃ

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গাছের কথা প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা হাওয়ার গান কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা কী করে বুঝব গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নাটোরের কথা গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গড়াই নদীর তীরে কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছোটোদের পথের পাঁচালী (নবম থেকে অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ) প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ভাষাচর্চা ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নির্মিতি ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

Leave a Reply