দেবতাত্মা হিমালয় গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Debotatma Himaloy Golper Question Answer Class 7 Bengali wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

দেবতাত্মা হিমালয় গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Debotatma Himaloy Golper Question Answer Class 7 Bengali wbbse

সাহিত্য মেলা
সপ্তম শ্রেণি বাংলা

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (একাদশ পাঠ) দেবতাত্মা হিমালয় গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর | Class 7 Bengali Debotatma Himaloy Golper Question Answer wbbse

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (একাদশ পাঠ) দেবতাত্মা হিমালয় গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Debotatma Himaloy Golper Question Answer wbbse

1. সপ্তম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

3. সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

4. সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

5. সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (একাদশ পাঠ) দেবতাত্মা হিমালয় গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Debotatma Himaloy Golper Question Answer wbbse

দেবত্মাতা হিমালয়
—প্রবোধকুমার সান্যাল

প্রবোধকুমার সান্যাল (১৯০৫-১৯৮৩): বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক এবং ভ্রমণকাহিনি রচয়িতা। ‘কল্লোল’ পত্রিকার লেখকদের অন্যতম। প্রথম উপন্যাস ‘যাযাবর’। ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ নামে বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনি লিখে প্রবোধকুমার বাংলা সাহিত্যে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন; এই গ্রন্থেই ভ্রমণ এবং উপন্যাসের একটি মিশ্র রূপ সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীকালে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ‘চেনা ও জানা’, ‘নিশিপদ্ম’, ‘তুচ্ছ’ প্রভৃতি ছোটোগল্প সংকলন, এবং ‘প্রিয়বান্ধবী’, ‘নদ ও নদী’, ‘বনহংসী’ প্রভৃতি উপন্যাস তাঁর বিপুল সৃষ্টিসম্ভারের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য। তাঁর আত্মজীবনীর নাম ‘বনস্পতির বৈঠক’।

‘দেবতাত্মা হিমালয়’ (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড) তাঁর ভ্রামণিক সত্তার একটি উজ্জ্বল পরিচয়। পাঠ্য অংশটি ‘দেবতাত্মা হিমালয়’-এর প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ’ অধ্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে।

পাঠ্যাংশের সারসংক্ষেপ : ভোরে প্রাতরাশ সেরে লেখক কালিম্পঙ শহর ঘুরতে বের হয়ে কালিম্পঙের উপর দিয়ে রেনক রোড হয়ে তিব্বতের দিকে চলেছেন। এপথে দুর্যোগ বেশি এবং দুঃসাধ্যও। তাই এই পথ দিয়ে সচরাচর কেউ যায় না। সকলেই গ্যাংটকের পথ দিয়ে যায়। কিন্তু তিনজন জগৎ প্রসিদ্ধ বাঙালি এই পথ দিয়ে তিব্বতে যান, তারা হলেন বিক্রমপুর ঢাকার অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, রাজা রামমোহন রায় এবং শরৎচন্দ্র দাস। শরৎ দাস ছদ্মবেশে তিব্বতে যান। তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্ত থেকে সাহায্য নিয়েই স্যার ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ড তিব্বত যান। অতীশ দীপঙ্করকে তিব্বতীরা বোধিসত্ত্ব উপাধি দেন। এ ছাড়াও আরেকজন ভারতবরেণ্য বাঙালি যিনি তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি পান তিনি হলেন যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত।

কালিম্পঙের প্রধান ব্যবসা পশম, এখানকার ল্যান্ডমার্ক বড়ো গির্জা। এখানকার গ্রেহামস্ হোমে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান এবং সাহেব সুবার অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে।

ঘণ্টা তিনেক ঘুরে আবার লেখক বাড়ি ফিরে আসেন। লেখক ছিলেন অভিজাত পল্লিতে। তার পাশেই ছিল প্রচলিত ঠাকুরবাড়ি যেখানে লেখক পূর্বে থেকেছিলেন। সেসময় কালিম্পঙে এসে লেখক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য পান। ২৫ বৈশাখের অপরাহ্ণে গৌরীপুর প্রাসাদে কবির সঙ্গী ছিলেন এটর্নি হীরেন দত্ত ও রথীন্দ্রনাথ, প্রতিমা দেবী, অনিলচন্দ প্রমুখ। লেখক কবিকে ‘যুগান্তর’ পত্রিকার ‘রবীন্দ্র জয়ন্তী সংখ্যা দেখান। তাঁর জন্মদিনে হাতে তুলে দেন অমল হোমের কলম ও রজনীগন্ধার গুচ্ছ। সেই ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় কবির নবরচিত কবিতা বেতারযোগে কালিম্পঙ থেকে কলকাতায় সরাসরি সম্প্রচারের জন্য কলকাতা বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা ও কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের ব্যবস্থা করেন। এর আগে কালিম্পঙে টেলিফোনের ব্যবস্থা ছিল না। বেতার বিশেষজ্ঞরা কবির বাসগৃহে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা আটটা নাগাদ বেল বাজার সঙ্গে সঙ্গে কবি গিয়ে বসেন নধর মখমল চেয়ারে টেলিফোনের সামনে। কাচের ঘরে দরজা বন্ধ করে দীর্ঘ দীপ্ত উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে পনেরো মিনিট ধরে পাঠ করেন কবিতা। সেদিন বাইরে ছিল জ্যোৎস্না। কবির কণ্ঠস্বর সকলের মধ্যে মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নালোকের সৃষ্টি করে।

পাঠ্যাংশের নামকরণ : প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্য গদ্যাংশে লেখক শুরুতে তিব্বত ও কালিম্পঙের কিছু ইতিহাস, ভৌগোলিক বিবরণ আলোচনা করলেও পাঠ্যাংশের মূলকেন্দ্রে রয়েছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। একবার কালিম্পঙে থাকাকালীন কীভাবে কবির জন্মদিন পালিত হয়, সেকথাই পাঠ্যাংশে আলোচিত হয়েছে। কবির জন্মদিনে তাঁর নবরচিত কবিতা সরাসরি বেতার যোগে সম্প্রসারণের জন্য কলকাতার বেতার কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা ও কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোন ব্যবস্থা চালু করেন। কীভাবে সেই সন্ধ্যা কবির দীর্ঘ দীপ্ত উচ্ছ্বসিত কবিতা পাঠে স্মরণীয় হয়ে ওঠে সেকথাও লেখক আলোচনা করেছেন। কবির সেই জন্মদিনে ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় কবির রেখাচিত্র ছাপানো হয়। রেখাচিত্রে কবিকে হিমালয়ের চেয়েও বড়ো দেখানো হয়। তাঁকে পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়। গদ্যাংশের কোথাও হিমালয় পর্বতের আলোচনা না থাকলেও বুঝতে অসুবিধা হয় না লেখক এখানে দেবতাত্মা হিমালয় বলতে কাকে বুঝিয়েছেন। ‘দেবতাত্মা’ অর্থাৎ দেবতাতুল্য। লেখক এখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেবতাত্মারূপ হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং কবির জন্মদিনে তাঁর সঙ্গে কালিম্পঙে কাটানো লেখকের ব্যক্তিগত মুহূর্তকে তুলে ধরেছেন। বিশ্বকবির ব্যক্তিত্ব, তাঁর উপস্থিতি যে কতটা সমুজ্জ্বল সেই বিষয়টিকেই লেখক নামকরণের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। আর সেদিক থেকে বিচার করে বলা যায় গদ্যাংশের নামকরণ যথার্থ ও সার্থক হয়েছে।

শব্দার্থ :
»প্রাতরাশ— সকালের আহার, জলখাবার।
»দুর্যোগ— ঝড় বৃষ্টি প্রভৃতি প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা ভরা সময়।
»গিরিসংকট— পর্বতশ্রেণির মধ্যে সংকীর্ণ নিম্ন ভূমি, যা পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
»কুলগুরু— বংশপরম্পরায় সকলেই যে গুরুর শিষ্য।
»আনুপূর্বিক— প্রথম থেকে শেষ, ক্রম অনুযায়ী।
»ভারতবরেণ্য— ভারতের বরণীয় বা শ্রেষ্ঠ মানুষ।
»রাজপুত্র— রাজকুমার।
»রাজকীয়— রাজ-সম্বন্ধীয়, সরকারি।
»সম্বর্ধনা— সম্মান জানানোর অনুষ্ঠান।
»অগম্য— দুর্গম, সহজে যাওয়া যায় না যেখানে।
»কুঠিবাড়ি— রাজপুরুষ বা পদস্থ কর্মচারীর কার্যালয় ও বাসস্থান।
»অভিজাত— সমৃদ্ধ, কুলীন, শ্রেষ্ঠকুলজাত।
»সংকীর্ণ— অপ্রশস্ত, সরু। চত্বর- চাতাল।
»ঝুপসি— বায়ুপ্রবাহহীন আলোকশূন্য ঝোপঝাড়ের পরিবেশে অবস্থিত।
»ব্যক্তিত্ব— ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য/ স্বাতন্ত্র্য।
»বৈদান্তিক— বেদান্তদর্শনে অভিজ্ঞ।
»রেখাচিত্র— কেবল রেখা দিয়ে আঁকা ছবি। »দিগ্বলয়— দিগন্তরেখা
»দুরূহ— কঠিন, কষ্টসাধ্য।
»সৌম্য— প্রিয়দর্শন, প্রশান্ত।
»সুহাস— শোভন হাস্যযুক্ত।
»রক্তিমাভা— লাল আভা।
»শ্বেতশ্মশ্রুময়— সাদা দাড়ি ভরা। ⟩অর্ধশয়ান— আধশোওয়া।
»বাক্যবাণ— কথার আঘাত যা বিদ্ধ করে, নিষ্ঠুর কথা।
»নবরচিত— নতুন রচনা করা হয়েছে এমন।
»বেতারযোগে— রেডিয়োর মাধ্যমে।
»কর্তৃপক্ষ— যাদের ওপর পরিচালনার ভার।
»বন্দোবস্ত— ব্যবস্থা।
»অর্থব্যয়—অনেক টাকা খরচ।
»বিশেষজ্ঞ— কোনো বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান আছে যার।
»স্বনামখ্যাত— যে নিজের নামেই পরিচিত বা বিখ্যাত।
»বিদীর্ণ— ভগ্ন, খন্ডিত।
»ফরমাশ— আদেশ, নির্দেশ।
»নধর— সরস কোমল লাবণ্যময়।
»তৎক্ষণাৎ— তখনই।
»রোমাঞ— পুলক, হর্ষ।
»পুলক— হর্ষ, আনন্দ।
»মূর্ছনা— সুরের আরোহণ ও অবরোহণ।
»উচ্ছ্বসিত— স্ফুরিত, স্পন্দিত, উৎফুল্ল। »বিলুপ্ত— সম্পূর্ণ লোপ।
»ছাড়পত্র— রসিদ, দাবি-ত্যাগের প্রমাণপত্র।
»মায়াচ্ছন্ন — মায়ায় ঢাকা।
»স্বপ্নলোক— স্বপ্নের রাজ্য।
»অস্তিত্ব— সত্তা, বিদ্যমানতা।

মূলভাব : প্রবোধকুমার সান্যাল তাঁর ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ’ অধ্যায়ের অন্তর্গত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্যাংশে কালিম্পঙ, তিব্বতের ভৌগোলিক বিবরণ আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে কালিম্পঙে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কাটানো একটি ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যার স্মৃতিচারণ করেছেন। কবির কালিম্পঙে থাকাকালীন কলকাতা বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ তাঁর জন্মদিনে কলকাতা-কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোন ব্যবস্থা তৈরি করে বেতারযোগে কবির নবরচিত কবিতা পাঠের সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেন। কীভাবে এই বিশাল কর্মটি সম্পন্ন হয়, সেকথাই লেখক স্মৃতিচারণার মধ্যে দিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। রবীন্দ্রনাথের হিমালয়সমান ব্যক্তিত্ব ও উপস্থিতি লেখকের মনে কতটা প্রভাব ফেলেছিল সেকথাও আমরা পাঠ্যাংশ থেকে জানতে পারি।

হাতে কলমে’র প্রশ্নোত্তর : দেবতাত্মা হিমালয় সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Debotatma Himaloy Golper Question Answer Class 7 Bengali wbbse

১. বন্ধনীতে দেওয়া একাধিক উত্তরের মধ্যে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে নীচের বাক্যগুলি আবার লেখো :

১.১ লামারা রাজকীয় সম্বর্ধনা জানিয়েছিলেন রাজপুত্র (তিষ্য রক্ষিত / শান্ত রক্ষিত / কুমার রক্ষিত) কে।

উত্তরঃ শান্ত রক্ষিতকে।

১.২ তিব্বতীদের প্রধান ব্যবসা (পশম / রেশম / তাঁতবস্ত্র)-এর ।

উত্তরঃ পশম।

১.৩ কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক (বড়ো মন্দির / বড়ো মসজিদ / বড়ো গির্জা)।

উত্তরঃ বড়ো গির্জা।

১.৪ রবীন্দ্রনাথের হাতে লেখক তুলে দিয়েছিলেন (অমৃতবাজার পত্রিকা / যুগান্তর / আন্দবাজার পত্রিকা)-র রবীন্দ্র জয়ন্তী সংখ্যা’।

উত্তরঃ যুগান্তর।

১.৫ নবরচিত একটি কবিতা রেডিওতে আবৃত্তি করতে রবীন্দ্রনাথের সময় লেগেছিল (আধঘণ্টা / পঁয়তাল্লিশ মিনিট / পনেরো মিনিট)

উত্তরঃ পনেরো মিনিট।

২. ঘটে যাওয়া ঘটনার ক্রম অনুযায়ী নাচের এলোমেলো ঘটনাগুলি সাজিয়ে লেখো :

২.১ কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল. “ও.কে’।

২.২ কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন।

২.৩ ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় জন্মদিন উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ দেশবাসীর উদ্দেশে একটি কবিতা পাঠ করবেন। হ্যালো….?

২.৪ প্রস্তুতির সময়ে নরম মখমল বসানো চেয়ারে বসে কয়েকবার ডাকলুম, হ্যালো ক্যালকাটা…

২.৫ সে জন্য পাহাড়ে পাহাড়ে টেলিফোনের খুঁটি বসানো এবং তার খাটানো হলো কদিন ধরে।

২.৬ বেতার কর্তৃপক্ষ কবির কণ্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করলেন, তাই এই ব্যবস্থা।

২.৭ কবির জন্মদিনের কবিতাপাঠের জন্য কলকাতা-কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত হল।

উত্তরঃ
২.৩ ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় জন্মদিন উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ দেশবাসীর উদ্দেশে একটি কবিতা পাঠ করবেন।

২.৭ কবির জন্মদিনের কবিতাপাঠের জন্য কলকাতা-কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত হলো।

২.৫ সেজন্য পাহাড়ে পাহাড়ে টেলিফোনের খুঁটি বসানো এবং তার খাটানো হল কদিন ধরে।

২.৬ বেতার কর্তৃপক্ষ কবির কন্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করবেন, তাই এই ব্যবস্থা।

২.২ কবি তাঁর ঘরের সামনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন।

২.৪ প্রস্তুতির সময়ে নরম মখমল বসানো চেয়ারে বসে কয়েকবার ডাকলুম, হ্যালো ক্যালকাটা …. হ্যালো !

২.১. কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল— ‘ও.কে’।

৩. নিচের বাক্যগুলিতে দাগ দেওয়া শব্দগুলোর অনুরূপ শব্দ পাঠ্য অংশটিতে পাবে উপযুক্ত শব্দ খুঁজে নিয়ে বাক্যগুলি আবার লেখো :

৩.১ শরৎচন্দ্র দাসের ভ্রমণের বিবরণ থেকেই প্রথম তিব্বতের কথা জানা যায়।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র দাসের ভ্রমণবৃত্তান্ত থেকেই প্রথম তিব্বতের কথা জানা যায়।

৩.২ এই পথে তিনজন বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়েছিলেন।

উত্তরঃ এই পথে তিনজন জগৎপ্রসিদ্ধ বাঙালি তিব্বতে গিয়েছিলেন।

৩.৩ সবার অগোচরে আত্মগোপনের জন্য অন্য রকম পোশাক পরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র একদিন কলকাতা ছেড়ে দিয়েছিলেন।

উত্তরঃ সবার অগোচরে ছদ্মবেশে নেতাজি সুভাষচন্দ্র একদিন কলকাতা ছেড়ে গিয়েছিলেন।।

৩.৪ ভূল মানুষমাত্রেরই হতে পারে, তবে নিজের দোষ স্বীকার করে নেওয়ার সাহসও থাকা উচিত।

উত্তরঃ ভুল মানুষমাত্রেরই হতে পারে তবে স্বীকারোক্তির সাহসও থাকা উচিত।

৩.৫ যাদের ওপর পরিচালনার ভার, এ-কাজের জন্য আগে তাদের দাবি ত্যাগের প্রমাণপত্র প্রয়োজন।

উত্তরঃ যারা কর্তৃপক্ষ, একাজের জন্য আগে তাদের ছাড়পত্র প্রয়োজন।

৩.৬ যাঁরা নিজের নামেই বিখ্যাত, ভারতের সেই বরণীয় মানুষদেরই সম্মাননার আয়োজন হয়েছে এই সভায়।

উত্তরঃ স্বনামখ্যাত ভারতবরেণ্য মানুষদেরই সম্বর্ধনার আয়োজন হয়েছে এই সভায়।

৪. নীচের বাক্যগুলিতে যে ইংরেজি শব্দগুলি আছে, তার বদলে বাংলা শব্দ বসিয়ে বাক্যগুলি আবার লেখো : (বাংলা শব্দের জন্য পাশের শব্দঝুড়ির সাহায্য নিতে পারো)

[শব্দঝুড়ি— পথনির্দেশক চিহ্ন, সম্প্রচার, ঘন্টা, মহাকাব্য, দূরভাষ, খাবারঘর, গাড়িচালক]

৪.১ ডাক্তার গৃহিণীর ডাইনিং হলে প্রাতরাশ সারা হল।

উত্তরঃ চিকিৎসক গৃহিণীর খাবারঘরে প্রাতরাশ সারা হল।

৪.২ অত বড় এপিক পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যে নেই।

উত্তরঃ অত বড়ো মহাকাব্য পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যে নেই।

৪.৩ কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না।

উত্তরঃ কালিম্পঙে দূরভাষ ছিল না।

৪.৪ বেতার-কর্তৃপক্ষ তাঁর সে ব্রডকাস্ট করবেন।

উত্তরঃ বেতার-কর্তৃপক্ষ তাঁর কন্ঠস্বর সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রচার করবেন।

৪.৫ ভোরে আমার ড্রাইভার এল গাড়ি নিয়ে।

উত্তরঃ ভোরে আমার গাড়িচালক এল গাড়ি নিয়ে।

৪.৬ একটা বুঝি বেল বাজল।

উত্তরঃ একটা বুঝি ঘণ্টা বাজল।

৪.৭ গির্জাটা হল কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক

উত্তরঃ গির্জাটা হল কালিম্পঙের পথনির্দেশক

৫. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্য রচনা করো :

» মেঘময়— বর্ষাকালে মেঘময় আকাশ দেখা যায়।

» ভীষণ— ভীষণ গরমে লোকটি হাঁসফাঁস করতে লাগলো।

» মায়াচ্ছন্ন— খেলা দেখানোর সময় জাদুকররা মায়াচ্ছন্ন অবস্থার সৃষ্টি করে।

» সূক্ষ্ম— সেলাই হল সূক্ষ্ম হাতের কাজ।

» দীপ্ত— সায়াহ্নের পূর্বে দীপ্ত সূর্যের রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ে।

» অগম্য— পার্বত্য অঞ্চলে অনেক অগম্য স্থান থাকে।

» বিপুল— সমুদ্রে বিপুল জলরাশি দেখা যায়।

» ঝুপসি— সমাজকর্মীরা ঝুপসি এলাকায় গিয়ে দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে।

৬. নীচের বিশেষ্যগুলির আগে উপযুক্ত বিশেষণ বসিয়ে বাক্যরচনা করো :

» কন্ঠস্বর— কোকিলের সুরেলা কন্ঠস্বর শুনতে আমার ভালো লাগে।

» স্বপ্নলোক— আমরা প্রায় সকলেই অবান্তর স্বপ্নলোকে বিচরণ করতে ভালোবাসি।

» ব্যক্তিত্ব— ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।

» আশঙ্কা— বর্তমানে দূরপাল্লার ট্রেনযাত্রা অনেকের মনে সাংঘাতিক আশঙ্কা জাগায়।

» ইতিবৃত্ত— বিভিন্ন ঘটনার সমস্ত ইতিবৃত্ত আমরা খবরের কাগজ পড়ে জানতে পারি।

» কীর্তি— তাজমহল সম্রাট শাহজাহানের মহৎ কীর্তির নিদর্শন।

» রেখাচিত্র— বাড়ি তৈরির আগে সঠিক রেখাচিত্র করে নেওয়া দরকার।

» দিগ্বলয়— বিশাল প্রান্তরের একপারে দাঁড়িয়ে, অন্যপারে তাকালে বিস্তৃত সরলরৈখিক দিগ্বলয় চোখে পড়ে।

৭. নীচের দাগ দেওয়া শব্দগুলি কী জাতীয় ? শব্দগুলির বিশিষ্টতা উল্লোখ করে শব্দগুলি দিয়ে নতুন বাক্যরচনা করো।

৭.১ শীতের হাওয়া ছিল কনকনে

৭.২ ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে।

৭.৩ পায়ের নীচে কালিম্পঙ থরথর করতে লাগল কিনা আর মনে রইল না।

উত্তরঃ উপরের দাগ দেওয়া শব্দগুলি অনুকারবাচক বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়।

৭.১ কনকনে— বরফ খুব কনকনে ঠান্ডা হয়।

৭.২ বিরঝিরে— বর্ষাকালে মাঝেমাঝে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়।

৭.৩ থরথর— অন্ধকারে ভূতের ভয় পেয়ে মলিনা থরথর করে কাঁপতে লাগল।

৮. নীচের বাক্যগুলি থেকে তারতম্যসূচক শব্দগুলি খুঁজে বার করো। কোনটি দুয়ের মধ্যে তুলনা, আর কোনটি বহুর মধ্যে তুলনা, তা নির্দেশ করে শব্দগুলি দিয়ো নতুন বাক্য রচনা করো :

৮.১ পৃথিবীর উচ্চতম শিখর তিনি।

উত্তরঃ উচ্চতম— এটি তারতম্যসূচক শব্দ। এটি বহুর মধ্যে তুলনা।

বাক্য— মাউন্ট এভারেস্ট হল পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ।

৮.২ এর চেয়ে মহত্তর উদ্যোগ আরদেখিনি।

উত্তরঃ মহত্তর—এটি তারতম্যসূচক শব্দ। এটি দুয়ের মধ্যে তুলনা।

বাক্য— স্বার্থশূন্য হয়ে মহৎ উদ্দেশ্যে জীবনদান করা খুব সামান্য ব্যাপার নয়।

৮.৩ বাংলার এই পথই সর্বশ্রেষ্ঠ।

উত্তরঃ সর্বশ্রেষ্ঠ— এটি তারতম্যসূচক শব্দ। এটি বহুর মধ্যে তুলনা।
বাক্য— সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব হল দুর্গাপুজা।

৮.৪ পাশের গলিটি সংকীর্ণতর হয়ে এসেছে।

উত্তরঃ সংকীর্ণতর এটি তারতম্যসূচক শব্দ। এটি দুয়ের মধ্যে তুলন

বাক্য— রাজপথের চেয়ে গলি সাধারণত সংকীর্ণতরই হয়।

৮.৫ অল্প আয়োজনে শুরু হল দীর্ঘতম যাত্রা।

উত্তরঃ দীর্ঘতম— এটি তারতম্যসূচক শব্দ। এটি বহুর মধ্যে তুলনা।

বাক্য— খড়গপুর হল পৃথিবীর দীর্ঘতম রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম।

৯. নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক শব্দ, অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ আর পুরণবাচক শব্দগুলি খুঁজে বার করে লেখো।

৯.১ গ্যাংটক থেকে নাথুরাম গিরিসংকট হল মাত্র ছাব্বিশ মাইল।

উত্তরঃ ছাব্বিশ—সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.২ তিনি তেরো বছর সেখানে বাস করেছিলেন।

উত্তরঃ তেরো—সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.৩ দ্বিতীয় ব্যাক্তি হলেন আধুনিক ভারতের কুলগুরু রাজা রামমোহন রায়।

উত্তরঃ দ্বিতীয়—পূরণবাচক শব্দ।

৯.৪ শরৎচন্দ্র দাস গিয়েছিলেন উনিশ শতকের শেষ ভাগে।

উত্তরঃ উনিশ শতকের শেষভাগে — অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.৫ অষ্টম শতাব্দীতে রাজপুত্র তিব্বতে যান।

উত্তরঃ অষ্টম—পূরণবাচক শব্দ।

৯.৬ বিমানে গেলে কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছতে লাগে সাড়ে তিন ঘন্টা, সেই গতিতে গেলে লাসা পৌঁছতে ঘণ্টা তিনেক লাগে কি ?

উত্তরঃ সাড়ে তিন ঘণ্টা— সংখ্যাবাচক শব্দ। ঘণ্টা তিনেক— অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.৭ একটু আধটু দেখে বেড়াতেই ঘণ্টাখানেক সময় লাগল।

উত্তরঃ ঘণ্টাখানেক— অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.৮ মনে পড়ে সেই ২৫ বৈশাখের অপরাহ্ন।

উত্তরঃ ২৫ বৈশাখ— সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.৯ যেখানে বছর চৌদ্দ আগে একটি রাত্রি বাস করে গিয়েছিলাম।

উত্তরঃ চৌদ্দ— অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ।

৯.১০ কবি মাত্র পনেরো মিনিটকাল তাঁর কবিতা পাঠ করবেন।

উত্তরঃ পনেরো— সংখ্যাবাচক শব্দ।

১০. নীচের বিশেষগুলিকে বিশেষণে বদলে লেখো : প্রণাম, অনুরোধ, পৃথিবী, উদ্বোধন, পূজা, উদবেগ, পুলক, আশঙ্কা

উত্তরঃ

বিশেষ্য বিশেষণ
প্রণাম প্রণত
অনুরোধ অনুরুদ্ধ
পৃথিবী পার্থিব
উদ্বোধন উদ্‌বোধিত
পূজা পূজিত
উদবেগ উদ্বিগ্ন
পুলক পুলকিত
আশঙ্কা আশঙ্কিত

১১. নীচের বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে বদলে লেখো : বৈদান্তিক, নবরচিত, অভিজাত, উচ্ছ্বসিত, প্রসিদ্ধ, প্রচলিত, প্রচুর, প্রধান

উত্তরঃ

বিশেষণ বিশেষ্য
বৈদান্তিক বেদান্ত
নবরচিত নবরচনা
অভিজাত আভিজাত্য
উচ্ছ্বসিত উচ্ছ্বাস
প্রসিদ্ধ প্রসিদ্ধি
প্রচলিত প্রচলন
প্রচুর প্রাচুর্য
প্রধান প্রাধান্য

১২. নীচের শব্দগুলো সন্ধি ভেঙে লেখো :

উত্তরঃ

» শশাঙ্ক— শশ + অঙ্ক।

» হিমালয়— হিম + আলয় ।

» সর্বাপেক্ষা— সর্ব + অপ + ঈক্ষা ।

» অন্যান্য— অন্য + অন্য।

» রক্তিমাভা— রক্তিম্ + আভা।

» যুগান্তর— যুগ + অন্তর।

» মায়াচ্ছন্ন— মায়া + আ + ছদ্ + ন ।

» অপরাহ্ণ— অপর + অহ্ণ।

» সর্বাধিক— সর্ব + অধিক।

» রথীন্দ্র— রথী + ইন্দ্র ।

» নৃপেন্দ্ৰ— নৃপ + ইন্দ্ৰ।

» স্বীকারোক্তি— স্বীকার + উক্তি।

» শয়ন— শে + অন।

» সম্বর্ধনা— সম্ + বর্ধনা।

» উন্নতি— উৎ + নতি।

» অপরিচ্ছন্ন— অ + পরি + ছদ্ + ন ।

» দিগ্বলয়— দিক্‌ + বলয়

» বারম্বার— বারম্ + বার।

» উদবোধন— উৎ + বোধন।

» উচ্ছ্বশিত— উৎ + শ্বসিত।

১৩. নীচের প্রতিটি শব্দের মধ্যেই দুটি করে শব্দ আছে, বুঝে নিয়ে ভেঙে লেখো :

উত্তরঃ

» জগৎপ্রসিদ্ধ— জগৎ + প্রসিদ্ধ ।

» গিরিসংকট— গিরি + সংকট।

» কুলগুরু— কুল + গুরু ।

» ঠাকুরবাড়ি— ঠাকুর + বাড়ি ।

» ভ্রমণবৃত্তান্ত— ভ্রমণ + বৃত্তান্ত ।

» রাজপুত্র— রাজ + পুত্র।

» ছদ্মবেশ— ছদ্ম + বেশ।

» স্বনামখ্যাত— স্বনাম + খ্যাত।

» অর্থব্যয়— অর্থ + ব্যয়।

» নবরচিত— নব + রচিত।

» মহাকবি— মহা + কবি।

» ভারতবরেণ্য— ভারত + বরেণ্য।

» স্বপ্নলোক— স্বপ্ন + লোক।

» জন্মদিন— জন্ম + দিন।

» কুঠিবাড়ি— কুঠি + বাড়ি।

১৪. নিম্নরেখাঙ্কিত পদগুলির কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো :

১৪.১ তিব্বতবাসীরা তাঁর মূর্তিকে আজও বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে।

উত্তরঃ
তিব্বতবাসীরা— কর্তৃ কারকে ‘রা’ বিভক্তি।

মূর্তিকে— কর্ম কারকে ‘কে’ বিভক্তি।

১৪.২ তিনি ছদ্মবেশে গিয়েছিলেন তিব্বতে।

উত্তরঃ ছদ্মবেশে— করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

১৪.৩ কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন।

উত্তরঃ ঘরের আসনে— অধিকরণ কারকে ‘এ’ টেলিফোনে— বিভক্তি। করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

১৪.৪ কবি সেদিন আমাকে বাগে পেয়েছিলেন।

উত্তরঃ আমাকে— কর্ম কারকে ‘কে’ বিভক্তি।

১৪.৫ শরৎ দাসের ভ্রমণবৃত্তান্ত থেকেই তিনি সর্বাধিক সাহায্য লাভ করেছিলেন।

উত্তরঃ ভ্রমণবৃত্তান্ত— অপাদান কারকে ‘থেকেই’ অনুসর্গ।

১৫. একটি বাক্যে উত্তর দাও :

১৫.১ প্রাচীন পথ ধরে কোন্ তিনজন প্রসিদ্ধ বাঙালি অতীতে তিব্বতে গিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ প্রাচীন পথ ধরে যে তিনজন প্রসিদ্ধ বাঙালি অতীতে তিব্বতে গিয়েছিলেন তাঁরা হলেন—অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, রাজা রামমোহন, যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত।

১৫.২ কোন্ প্রাচীন পথের রেখা ধরে তারা গিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট আর সেখান থেকে জেলাপ-লা গিরিসংকটে, আর তারপরেই তিব্বত সীমানা— এই প্রাচীন পথের রেখা ধরে তারা গিয়েছিলেন।

১৫.৩ এখনকার পর্যটকরা এই প্রাচীন পথটি পরিহার করেন কেন ?

উত্তরঃ এই প্রাচীন পথে দুর্যোগ বেশি এবং দুঃসাধ্যও বটে তাই এখনকার পর্যটকরা এই পথ পরিহার করেন।

১৫.৪ কোন্ দুই বিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন ?

উত্তরঃ অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ও যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন।

১৫.৫ ছদ্মবেশে কে গিয়েছিলেন তিব্বতে ?

উত্তরঃ ছদ্মবেশে শরৎচন্দ্র দাস তিব্বতে গিয়েছিলেন।

১৫.৬ স্যার ফ্রান্সিস ইয়াংহাসব্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল তিব্বত-বিষয়ক কোন বইটি ?

উত্তরঃ স্যার ফ্রান্সিস ইয়াংহাসব্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল শরৎচন্দ্র দাসের ‘ভ্রমণবৃত্তান্ত’ বইটি।

১৫.৭ কালিম্পঙের কোথায় পড়াশুনো করে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও ইংরেজ অনাথ ছেলেমেয়েরা ?

উত্তরঃ কালিম্পঙের গ্রেহামস হোমে পড়াশুনা করে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও ইংরেজ অনাথ ছেলেমেয়েরা।

১৫.৮ গৌরীপুর প্রাসাদে কারা ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী ?

উত্তরঃ গৌরীপুর প্রাসাদে বৈদান্তিক এটর্নি হীরেন দত্ত, রথীন্দ্রনাথ, প্রতিমা দেবী, অনিল চন্দ, মৈত্রেয়ী, আর চিত্রিতা ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী।

১৫.৯ লেখকের অনুরোধে কোন পত্রিকার জন্য অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ?

উত্তরঃ লেখকের অনুরোধে ‘যুগান্তর’ পত্রিকার জন্য অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ।

১৫.১০ ২৫ বৈশাখের সেই বিশেষ দিনটি যে ছিল শত্রুপক্ষ, লেখা থেকে সেকথা জানতে পারো কেমন করে ?

উত্তরঃ ২৫ বৈশাখের সেই দিনটি ছিল শুল্কপক্ষ তা আমরা পাঠ্যাংশের একটি বাক্য থেকে জানতে পারি। বাক্যটি হল— “জ্যোৎস্না ছিল সেদিন বাইরে।”

১৬. চার-পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও :

১৬.১ কীভাবে গেলে পৌঁছানো যায় কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এ ? এই হোমটির বিশিষ্টতা কী ?

উত্তরঃ কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক বড়ো গির্জার পাশ দিয়ে চলে গেছে। যে চড়াই পথ সেটা ধরে অনেক উঁচুতে গেলে গ্রেহামস হোম-এ পৌঁছানো যায়।

এই হোমে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান এবং সাহেব সুবার অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করে।

১৬.২ ২৫ বৈশাখের ‘যুগান্তর’ পত্রিকার প্রথম পাতায় শিল্পীর আঁকা যে বিশেষ রেখাচিত্রটি প্রকাশ পেয়েছিল, তার বিষয় কী ছিল ? রবীন্দ্র-জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে ছবির এই বিষয়টি তোমার যথার্থ মনে হয় কি না, লেখো।

উত্তরঃ ২৫ বৈশাখের ‘যুগান্তর’ পত্রিকার প্রথম পাতায় শিল্পীর আঁকা কবির একখানা রেখাচিত্র প্রকাশ পেয়েছিল। “গ্রাম-নগর-দেশ-মহাদেশ এবং দিগ্‌বলয় ছাড়িয়ে কবির মাথা উঠেছে ধবলাধার গৌরীশৃঙ্গের মতো, —হিমালয়ের চেয়ে তিনি বড়ো,— পৃথিবীর উচ্চতম শিখর তিনি !” ছবিখানার মধ্যে এই ছিল রেখাচিত্রটির বিষয়।

রবীন্দ্রনাথের রেখাচিত্রটির মধ্যে দিয়ে তাঁর সমুজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, বিশ্বজনীনতা প্রকাশ পেয়েছে। তাই রবীন্দ্র-জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে ছবির এই বিষয়টি আমার যথার্থ বলেই মনে হয়।

১৬.৩ ‘কাজটি দুরূহ, অনেকদিন সময় লাগবে’— কোন কাজটি সম্পন্ন করবার ইচ্ছে লেখককে জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ? কেন সে-কাজ করার ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর ? কার সাহায্য প্রত্যাশা করেছিলেন ওই কাজে ?

উত্তরঃ উপরিউক্ত অংশটি প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’-এর প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ্’ অধ্যায়ের অন্তর্গত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্য ভ্রমণমূলক গদ্যাংশ থেকে গৃহীত। সমগ্র মহাভারত নিজের হাতে লেখার ইচ্ছা লেখককে জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ।

মহাভারতের মতো এত বড়ো এপিক পৃথিবীর কোনো সাহিত্যে নেই। তাই এটি নিজের হাতে লেখার ইচ্ছা হয় রবীন্দ্রনাথের।

বৈদান্তিক এটর্নী হীরেন দত্তের সাহায্য প্রত্যাশা করেছিলেন ওই কাজে।

১৬.৪ ‘এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায় হে ?’— কোন্ প্রসঙ্গে এই পরিহাস রবীন্দ্রনাথের ?

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত “দেবতাত্মা হিমালয়” গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ অধ্যায়ের অন্তর্গত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্যাংশে দেখি লেখক যখন রবীন্দ্রনাথকে জানান তিনি কালিম্পঙের এক ঠাকুরবাড়িতে উঠেছেন তখন রবীন্দ্রনাথ উপরিউক্ত পরিহাসটি করেন।

১৬.৫ ‘কবি সেদিন আমাকে বাগে পেয়েছিলেন।’ ‘বাগে পেয়েছিলেন’— এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ কী ? তাঁকে কবির বাগে পাওয়ার কী পরিচয় রয়েছে লেখকের সেদিনের বিবরণে ?

উত্তরঃ ‘বাগে পেয়েছিলেন’ এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ নাগাল বা আয়ত্তে পাওয়া।

লেখক জানিয়েছেন সেদিন দু-চারটি কথার পরেই কবির সরস-পরিহাস পূর্ণ বাক্যবাণ ছুটছিল। আর সেই বাক্যবাণে বারংবার বিদ্ধ হচ্ছিলেন লেখক। আর চারদিকে হাসির রোল উঠছিল। কবির লেখককে বাগে পাওয়ারে এই পরিচয়ই রয়েছে। লেখকের সেদিনের বিবরণে।

১৬.৬ ‘কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না, এই উপলক্ষে তার প্রথম উদ্বোধন’— কোন বিশেষ উপলক্ষে, কীভাবে এই উদ্বোধন সম্পন্ন হল ?

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’-এর প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ অধ্যায়ের অন্তর্গত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্য গদ্যাংশ থেকে জানতে পারি ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি নবরচিত কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন বলে কলকাতার বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা ও কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন।

১৬.৭ ‘কিন্তু নৃপেন্দ্রবাবুর ফরমাশ শুনতেই হল’ — নৃপেন্দ্রবাবু কে ? কী ছিল তাঁর ফরমাশ ? কীভাবে তা শুনেছিলেন লেখক ?

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ভ্রমণমূলক গ্রন্থ ‘দেবতাত্মা হিমালয়’-এর প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ অধ্যায়ের ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্য গদ্যাংশ থেকে জানতে পারি নৃপেন্দ্রবাবু অর্থাৎ নৃপেন্দ্র মজুমদার হলেন স্বনামখ্যাত বেতারবিশেষজ্ঞ; তাঁর ফরমাশ ছিল কবির নধর মখমল বসানো চেয়ারে বসে যন্ত্রে মুখ রেখে কলকাতাকে একবার ডাকা। নৃপেন্দ্রবাবুর ফরমাশ শুনে লেখক কেঁপে উঠেছিলেন। কিন্তু তার ফরমাশ শুনতে হল। নধর মখমল বসানো চেয়ারে বসে তিনি কয়েকবার হ্যালো……. ক্যাল্কাটা……. হ্যালো বলে ডাকলেন। তৎক্ষণাৎ কলকাতা থেকে জবাব এলো ‘ও কে’।

১৬.৮ জন্মদিনে কবির স্বকণ্ঠে বেতার-সম্প্রচারিত কবিতা শোনাবার মুহূর্তটি কীভাবে ধরা দিয়েছিল তাঁর শ্রোতাদের চেতনায় ?

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ অধ্যায়ের ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্যাংশে দেখি এক ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় কলকাতা বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ বিশ্বকবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি নবরচিত কবিতা বেতার যোগে সরাসরি সম্প্রচারের জন্য কলকাতা ও কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন। বোধ হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা কিংবা আটটা নাগাদ বেল বাজার পর কবি উঠে যন্ত্রের সামনে বসলেন। সবাই বাইরে এসে দাঁড়াল । কাচের ঘরে দরজা বন্ধ করে কবি পনেরো মিনিট কবিতা পাঠ করেন। সকল শ্রোতার পায়ের নীচে কালিম্পঙ থর থর করতে লাগল কি না তখন আর কারো মনে রইল না। বাইরে ছিল জ্যোৎস্না। একটা মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের মধ্যে সকলে হারিয়ে যেতে থাকল। সকলেই পরস্পরের অস্তিত্ব ভুলে গেছিল।

১৭. দশটি বাক্যের মধ্যে উত্তর দাও :

১৭.১ এ-লেখায় একটা হারিয়ে যাওয়া সময়ের ছবি আছে, ভারতবর্ষ তথা বাংলার শ্রেষ্ঠ কয়েকজন সন্তানের কথা আছে, যাদের সঙ্গে একসময় তিব্বতের নিবিড় যোগ রচিত হয়েছিল। লেখাটি অনুসরণ করে বাংলার এই শ্রেষ্ঠ মানুষগুলি সম্পর্কে তোমার যে ধারণা হয়েছে, নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক ভ্রমণমূলক গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের কলিম্পঙ্ অধ্যায় থেকে গৃহীত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্যাংশ থেকে জানতে পারি কয়েকজন জগৎপ্রসিদ্ধ বাঙালি যেমন—অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, রাজা রামমোহন রায়, শরৎচন্দ্র দাস, যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত তিব্বতে গেছিলেন।

অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য প্রায় নয়শো বছর আগে তিব্বতে গেছিলেন। তিনি প্রায় তেরো বছর সেখানে ছিলেন। তিনি ছিলেন ঢাকা বিক্রমপুরের সন্তান। লাসার কাছেই তাঁর মৃত্যু হয়। গৌতমবুদ্ধের পরে তিব্বতবাসীরা তাঁর মূর্তিকে আজও বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে।

আধুনিক ভারতের কুলগুরু রাজা রামমোহন রায়ও তিব্বত যাত্রা করেছিলেন। ছদ্মবেশে উনিশ শতকের শেষভাগে তিব্বতে গেছিলেন শরৎচন্দ্র দাস। তাঁর কাছে আধুনিক ভারতবর্ষ ঋণী, কেননা তাঁরই ভ্রমণবৃত্তান্ত শুনে আমরা প্রথম তিব্বতের বিষয়ে জানতে পারি। বিংশ শতাব্দীর প্রথমে স্যার ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ড যখন তিব্বতে যান তখন শরৎচন্দ্র দাসের ভ্রমণবৃত্তান্ত থেকেই সর্বাধিক সাহায্য লাভ করেছিলেন।

এ ছাড়াও অষ্টম শতাব্দীতে যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত তিব্বতে যান। ইনিও বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেন।

১৭.২ এই লেখার একটি প্রধান চরিত্র রবীন্দ্রনাথ আর তাঁর ব্যক্তিত্বময় উপস্থিতি। কালিম্পঙ শহরে অতিবাহিত একটি বিশেষ জন্মদিন উদযাপনের সম্পূর্ণ ছবিটি যেভাবে এখানে ফুটে উঠেছে, তার পরিচয় দাও।

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ভ্রমণমূলক কাহিনি ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ‘কালিম্পঙ’ অধ্যায় থেকে গৃহীত ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ নামক পাঠ্যাংশে দেখি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার নিজের জন্মদিন কালিম্পঙ শহরে অতিবাহিত করেন। সেই ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে নবরচিত একটি কবিতা বেতার যোগে পাঠ করবেন বলে কলকাতার বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কালিম্পঙ ও কলকাতার মধ্যে প্রচুর অর্থব্যয় করে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেন। এর আগে কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না। ঠিক হয় কবি তাঁর ঘরের সামনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন এবং বেতার কর্তৃপক্ষ তাঁর কণ্ঠস্বর ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি সম্প্রচার করবেন। এই কারণে কয়েকজন বেতার বিশেষজ্ঞ কবির বাসভবনে যান। স্বনামখ্যাত নৃপেন্দ্র মজুমদারও সেখানে ছিলেন। তাঁর অনুরোধে লেখক কবির নধর মখমল বসানো চেয়ারে বসে টেলিফোনে হ্যালো… ক্যালকাটা… হ্যালো ? বলেন। কলকাতা থেকেও তৎক্ষণাৎ জবাব আসে ও কে।’ এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা-আটটা নাগাদ বেল বাজার সঙ্গে সঙ্গে কবি যন্ত্রের সামনে এসে বসেন; বাকিরা সকলে বাইরে বেরিয়ে আসেন। কাচের ঘরে দরজা বন্ধ করে পনেরো মিনিট কবি তাঁর দীর্ঘ দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনায় কবিতা পাঠ করেন। বাইরে জ্যোৎস্না আলো। আর তারই মাঝে কবির উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বর শ্রোতাদের মধ্যে মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের সৃষ্টি করে। সকলে ভুলে যায় পরস্পরের অস্তিত্ব।

১৭.৩ ইতিহাস-ভূগোলের ইতিবৃত্তে জড়ানো কালিম্পঙ নামে একটা শহরকে নতুন করে চিনতে তোমার কেমন লাগল, একটা অনুচ্ছেদে তা লেখো।

উত্তরঃ প্রবোধকুমার সান্যাল রচিত ভ্রমণমূলক গ্রন্থ ‘দেবতাত্মা হিমালয়-এর প্রথম খণ্ডের কালিম্পঙ অধ্যায়ের থেকে গৃহীত পাঠ্য ‘দেবতাত্মা হিমালয়’ গদ্যাংশ থেকে আমরা ইতিহাস-ভূগোলের ইতিবৃত্তে জড়ানো কালিম্পঙ শহরকে নতুন করে চিনতে পারলাম। সমগ্র উত্তর ভারতের মধ্যে কালিম্পঙ থেকে তিব্বত সর্বাপেক্ষা নিকটবর্তী। কালিম্পঙের উপর দিয়েই রেনক রোড তিব্বতের দিকে চলে গেছে। কালিম্পঙের পাশ দিয়ে উত্তর দিকে চলে যাওয়া পথেই পশমের ঘাঁটি। পশম এখানকার প্রধান ব্যাবসা। বড়ো গির্জা হল কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক। তার পাশ দিয়ে অনেক উঁচুতে উঠে গ্রেহামস হোম। এখানেই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান এবং সাহেব সুবার অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করে। কালিম্পঙের প্রাকৃতিক পরিবেশ মনোরম। শীতের কনকনে হাওয়া, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি সবমিলিয়ে কালিম্পঙ আমাদের মন কেড়ে নেয়। লেখকের বর্ণনাময় সাজানো গোছানো, বড়ো বড়ো অট্টালিকা ও কুঠিবাড়ি পূর্ণ কালিম্পঙ শহর আমাদের চোখের সামনে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।

Leave a Reply