সাহিত্য মেলা
ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা
এক ভূতুড়ে কান্ড (শিবরাম চক্রবর্তী) গল্পের প্ৰশ্ন উত্তর ষষ্ঠ শ্ৰেণি বাংলা | Ek Bhuture Kando Solved Question Answer Bengali Class 6 wbbse
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা (ষোলো পাঠ) এক ভূতুড়ে কান্ড (শিবরাম চক্রবর্তী) গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর | Ek Bhuture Kando Golper Question Answer Class 6 Bengali wbbse
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা এক ভূতুড়ে কান্ড (শিবরাম চক্রবর্তী) গল্পের লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর | Ek Bhuture Kando Golper Question Answer Class 6 Bengali wbbse
1. ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
3. ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
4. ষষ্ঠ শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
5. ষষ্ঠ শ্রেণির পরিবেশ ও বিজ্ঞান সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
6. ষষ্ঠ শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা এক ভূতুড়ে কান্ড (শিবরাম চক্রবর্তী) গল্পের লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর | Ek Bhuture Kando Golper Question Answer Class 6 Bengali wbbse
এক ভূতুরে কান্ড
—শিবরাম চক্রবর্তী
লেখক পরিচিতিঃ
শিবরাম চক্রবর্তী (১৯০৩-১৯৮০): পোশাকি নাম চঞ্চল। লেখার ক্ষেত্রে শিবরাম নামেই পরিচিত। বাংলা রম্যরচনা ও মজার গল্পে তিনি অগ্রগণ্য। বাড়ি থেকে পালিয়ে, হাসির টেক্কা, হর্ষবর্ধন ও গোবর্ধন, মস্কো বনাম পন্ডিচেরি, ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা তাঁর বিখ্যাত বই।
বিষয় সংক্ষেপ : লেখকের জীবনের রাঁচির সরকারি রাস্তায় একটা অদ্ভুত ঘটনার বিবরণ এই গল্পে বর্ণনা করা হয়েছে।
ভূত লেখককে কোনােদিন দেখা দেননি। দিলেও লেখক তাদের দেখতে পারতেন না। ভূত নিয়ে লেখকের না আছে মােহ না আছে ইচ্ছা। পরের একটা সাইকেল পেয়ে রাঁচি থেকে কিছু দূরে লেখক হুড্রু জলপ্রপাত দেখতে গিয়েছিলেন।
সাত মাইল পথ অতিক্রম করার পর তার সাইকেলের টায়ার একটা ফেঁসে গেল। আরও মাইল পাঁচেক যেতে পারলে গাঁয়ে পৌঁছতে পরবেন।
অবশেষে রাঁচিমুখী একটি লরি দেখা গেলেও সামনে এসে না থেমে চলে গেল। এরফলে তিনি অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর একটি বেবি অস্টিন গাড়ি দেখতে পেলেন। সেটিকে থামানাের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করলেন কিন্তু দাঁড়াল না। গাড়িটি আস্তে আস্তে চলছিল। তখন তিনি দৌড়ে গিয়ে সেই চলন্ত গাড়িতে উঠলেন গাড়িতে ওঠার পর তিনি বুঝতে পারেন ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই এবং ইঞ্জিনও বন্ধ। তিনি বুঝতে পারেন ভূতের খপ্পরে পড়েছেন তবুও অলসতার কারণে গাড়ি থেকে নামেন নি। গাড়িটি চলতেই থাকে। অবশেষে লেভেল ক্রসিং সামনে এলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লেখক গাড়ি থেকে নেমে পড়েন।
এরপর গাড়িটি থামলে, গাড়ির পিছন থেকে এক চশমা পরিহিত ভদ্রলোক বেরিয়ে আসেন এবং জানান গাড়ির কল বিগড়ে যাওয়ার জন্য প্রায় আট মাইল দূর থেকে তিনি গাড়িটিকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে আসেন এবং তিনি অবশেষে লেখকের কাছে সাহায্য চান এবং লেখক গাড়িটি ঠেলে তার বাড়ি অবধি পৌঁছে দেন। এখানেই গল্পের শেষ। কথক নিশ্চিত ছিলেন না ভদ্রলোক ভূত কি না। তবে ব্যাপারটি যে অদ্ভুত—এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কারণেই তিনি গল্পের নাম দিয়েছেন ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’।
নামকরণঃ
রাঁচি থেকে হুড্রুর উদ্দেশে কথক একবার সাইকেলে চড়ে যাওয়ার পথে তাঁর সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর একটি গাড়ি আসলে লেখক টর্চ দেখালেও না থেমে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর বেবি অস্টিন গাড়ি আসে এবং এটিও না থেমে আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে দেখে কথক চলন্ত গাড়িতে উঠে পড়েন। কিন্তু উঠেই দেখেন কোনো ড্রাইভার নেই—তা আপনা আপনি চলছে। লেখক ভয় পেলেও কিন্তু নামেন নি। অনেকটা পথ এভাবে আসবার পর তিনি বুঝতে পারেন। সামনেই রেললাইন এবং তা ধরে ট্রেন ছুটে আসছে। কথক কোনোভাবে দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন। সেই মুহূর্তেই গাড়িটি দাঁড়িয়ে যায় এবং এক ভদ্রলোক মোটরগাড়ির পেছন থেকে সামনে এসে বলেন, কল-বিগড়ানো গাড়িটি দুজন মিলে ঠেলে যদি কিছুদূরে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া যায় তাহলে খুব উপকার হয়। এখানেই গল্পের শেষ। কথক নিশ্চিত ছিলেন না ভদ্রলোক ভূত কি না। তবে ব্যাপারটি যে অদ্ভুত—এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কারণেই তিনি গল্পের নাম দিয়েছেন ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’, বিষয়বস্তু অনুসারে যে নামকরণ একেবারে সার্থক।
শব্দার্থ :
» কৃপা করে— দয়া করে
» দর্শন দিলে— দেখা দিলে
» হার্ট— হৃদয় » উইক— দুর্বল
» উইকেড— দুষ্টু ও ক্ষতিকর।
» গারদে— জেলখানায়
» দরাজ— ব্যাপ্ত, প্রশস্ত, লম্বা চওড়া।
» পরস্মৈপদী— এখানে ‘অন্যের’ বোঝানো হয়েছে। » পাল্লা— তুলনা, প্রতিযোগিতা।
» মানসপটে— মনের মধ্যে।
» অবশ্যম্ভাবী— যা নিশ্চয় হবে।
» বেবি অস্টিন— অস্টিন কোম্পানির ছোটো গাড়ি। » পুনঃপুনঃ— বার বার
» জনমানবহীন— যেখানে লোকজন নেই।
» উৎরে গিয়ে— পার হয়ে
» বাহুবলে— হাতের জোরে
» মন্থর— ধীর, আস্তে
» দূর্লক্ষণ— খারাপ লক্ষণ
» ধরাশায়ী— মাটিতে পড়ে থাকা
» উবে গেল— উধাও হয়ে গেল
» টাকরা— মুখের ভেতরের উপরের তালু
» বাক্ শক্তি— কথা বলার শক্তি
» কর্ণপাত— কানে শোনা
» অভূতপূর্ব— পূর্বে কখনো ঘটেনি এমন
» কায়ক্লেশে— শারীরিক পরিশ্রম করে।
» লেভেল ক্রসিং— রেলগেট
» অগত্যা— অন্য গতি নাই বলে, বাধ্য হয়ে।
» আগায়মান— আসছে
“হাতে কলমে প্রশ্নোত্তর” এক ভূতুড়ে কান্ড গল্প ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা | Ek Bhuture Kando Golper Extra Question Answer Class 6 Bengali wbbse
১.১ শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম কী ?
উত্তরঃ শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম চঞ্চল।
১.২ তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ এবং ‘হাসির টেক্কা’।
২. নীচের বাক্যগুলি কী ধরনের (সরল/ যৌগিক/জটিল) তা নির্দেশ করে।
২.১ ভূত বলে কিছু আছে ?
উত্তরঃ সরলবাক্য।
২.২ যেখানে সন্ধে সেইখানেই সাইকেলের টায়ার ফাঁসে।
উত্তরঃ জটিল বাক্য।
২.৩ একটা পরস্মৈপদী সাইকেল হাতে পেয়ে হুড্রুর দিকে পাড়ি জমিয়েছিলাম, কিন্তু মাইল খানেক না যেতেই তার একটা টায়ার ফেঁসে গেল।
উত্তরঃ যৌগিক বাক্য
২.৪ আমার টর্চবাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘােরাতে লাগলাম।
উত্তরঃ সরলবাক্য।
২.৫ যেখানটায় ড্রাইভার থাকবার কথা, সেখানে কেউ নেই।
উত্তরঃ জটিলবাক্য।
৩. নীচের বাক্যগুলিতে কী কী অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়েছে লেখাে :
৩.১ সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে।
উত্তরঃ করে, হলেই।
৩.২ কয়েক মিনিট বাদে সেখান থেকে নামলাম।
উত্তরঃ বাদে, থেকে।
৩.৩ তার চেয়ে বাঘের পেটের মধ্যে দিয়ে স্বর্গে যাওয়া ঢের শর্টকাট।
উত্তরঃ মধ্যে, চেয়ে, দিয়ে।
৩.৪ আপনা থেকেই আমার মুখ দিয়েই বেরিয়ে গেল।
উত্তরঃ থেকেই, দিয়েই।
৪. নীচের বাক্যগুলিকে কর্তাখণ্ড ও ক্রিয়াখণ্ডে ভাগ করো :
৪.১ আসতে আসতে গাড়িটা আমার সামনে এসে পড়ল।
কর্তাখণ্ড— আসতে আসতে গাড়িটা
ক্রিয়াখণ্ড— আমার সামনে এসে পড়ল।
৪.২ দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে।
কর্তাখণ্ড— দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে
ক্রিয়াখণ্ড— দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে।
৪.৩ চিরদিনই আমি আশাবাদী।
কর্তাখণ্ড— চিরদিনই আমি।
ক্রিয়াখণ্ড— আশাবাদী।
৪.৪ এগিয়ে এস বললেন ভদ্রলোক।
কর্তাখণ্ড— ভদ্রলোক।
ক্রিয়াখণ্ড— এগিয়ে এস বললেন।
৫. নীচের বাক্যগুলির মধ্যে থেকে সন্ধিবদ্ধ শব্দ বেছে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো।
৫.১ কিন্তু গাড়িটার থামবার কোনো লক্ষণ নেই।
উত্তরঃ কিন্তু— কিম্ + তু
৫.২ আমার পাশ কাটিয়ে যাবার দুর্লক্ষণ দেখে আমি মরিয়া হয়ে উঠলাম।
উত্তরঃ দুর্লক্ষণ = দুঃ + লক্ষণ।
৫.৩ শেষ পর্যন্ত আস্তে আস্তে আসছিল গাড়িটা।
উত্তরঃ পর্যন্ত = পরি + অন্ত।
৫.৪ কাল সকালে উদ্ধার করা যাবে।
উত্তরঃ উদ্ধার = উৎ + হার।
৬. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
৬.১ ‘সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে!’ লেখকের গন্তব্য কোথায় ? সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন?
উত্তরঃ লেখক শিবরাম চক্রবর্তীর গন্তব্যস্থল ছিল রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাত।
মাইল সাতেক পথ অতিক্রম করার পর লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। তখন তিনি কীভাবে ফিরবেন সেটা বুঝতে পারছিলেন না। ফলে সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে।
৬.২ ‘যেখান বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়’—প্রবাদটির মর্মার্থ কী ? একই ভাব বোঝাতে তুমি আরেকটি প্রবাদ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ‘যেখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়’—এই প্রবাদটির মর্মার্থ যেখানে বিপদ আসার ভয় সেখানেই বিপদ এসে যায়।
এরকম আরেকটি প্রবাদ হল—’ভূতের ভয়ে উঠলাম গাছে ভূত বলল পেলাম কাছে।’
৬.৩ ‘চিরদিনই আমি আশাবাদী’ এই আশাবাদের গুণে লেখক কীভাবে পুরস্কৃত হলেন ?
উত্তরঃ লেখক চিরকালই আশাবাদী এই কারণে তার জীবনে বিপদ এলে তা থেকে মুক্ত হওয়ার একটি পথ তিনি অবশ্যই পেয়ে যাবেন।
রাঁচি যাওয়ার পথে লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। তিনি অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেও কোনো যানবাহন পেলেন না। অবশেষে আশার আলো তিনি দেখলেন, একটি বেবি অস্টিন গাড়ি ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছিল। সেই গাড়িতে চেপে তিনি রাঁচির কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন। লেখকের আশাবাদ এইভাবে চরিতার্থ হয়েছিল।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৭.১ অনর্থক কেবল টর্চটাকে আর নিজেকে টর্চার করা’— কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির অবতারণা ? টর্চ আর ‘টিচার’ শব্দের প্রয়োগে যে শব্দ নিয়ে খেলা তৈরি হয়েছে, গল্প থেকে খুঁজে এমন কয়েকটি উদাহরণ দাও। তুমি নিজে এ জাতীয় কয়েকটি বাক্য লেখো।
উত্তরঃ একবার রাঁচির রাস্তায় সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যাওয়ায় লেখক খুব বিপদে পড়েন। তখন তিনি ফেরার জন্য গাড়ির অপেক্ষায় রইলেন। কিন্তু কোনো গাড়ির দেখা পেলেন না। এমন সময় একটা লরি এলেও সে লেখকের টর্চের সংকেত উপেক্ষা করে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে লেখক উদ্ধৃতিটির অবতারণা করেছেন। উদাহরণগুলি হল—(১) রাজপথ না হলেও সেটা বেশ দরাজ পথ। (২) অঘটনগুলো ঘটবে না। (৩) এসপার ওসপার যা হোক। (৪) কিন্তু পেরে লাভ। লাভ তো ডিমের! (৫) হুশ হুশ করে ট্রেনটা চলে যাবার পর আমার হুঁশ হলো।
৭.২ গল্প অনুসরণে সেই নির্জন বনপথে লেখকের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
উত্তরঃ লেখক রাঁচী থেকে ফেরার পথে তার সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যাওয়ায় তিনি জঙ্গলে ঘেরা নির্জন পথে আটকে পড়েন। অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর একটা লরির দেখা মিললেও তা না থেমে চলে যায়, কিন্তু কিছুক্ষন পর একটি বেবি অস্টিন গাড়ি খুব ধীর গতিতে আসতে দেখা যায়। লেখক গাড়িটিকে টর্চের ঈশারা করলেও তা না থামলে লেখক জোর করে গাড়িতে উঠে পড়েন। কিন্তু চরম আতঙ্কে তিনি দেখেন যে গাড়িতে কোনও চালক নেই। এভাবেই লেখক বনের মধ্যে এক ভূতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন।
৭.৩ বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ওরকম উদার হতে পারে না।’— কোন্ উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে ? লেখকের কাছে সেই ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ কতটা উদারতা নিয়ে এসেছিল, তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ এখানে ড্রাইভারহীন বিকল বেবি অস্টিন গাড়িটির উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে। লেখক রাঁচির রাস্তায় সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যাওয়ার জন্য অন্য গাড়ির অপেক্ষায় অনেকক্ষণ ধরে ছিলেন। অবশেষে বেবি অস্টিন গাড়িটি ধীর গতিতে ওই রাস্তার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। লেখক ওই গাড়িতে উঠে পড়ে রাঁচিতে ফিরতে সমর্থ হয়েছিলেন। ওই গাড়িটার জন্য তিনি বিপদের হাত থেকে উদ্ধার পেলেন। সেই কারণেই বেবি অস্টিন গাড়ির দৃষ্টিভঙ্গি লেখকের কাছে বিশাল উদারতা নিয়ে এসেছিল।
৭.৪ ‘এই হয়ত সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ’— কোন্ সুযোগের কথা বলা হয়েছে ? লেখক কীভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগালেন ?
উত্তরঃ লেখক রাঁচি ফেরার জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন কিন্তু কোনো যানবাহন পেলেন না। অবশেষে একটি বেবি অস্টিন গাড়ি ধীর গতিতে আসছিল। ওই ধীরগতিসম্পন্ন বেবি অস্টিন গাড়িতে চেপে রাঁচি পৌঁছানোর সুযোগের কথা বলা হয়েছে।
লেখক গাড়িটির কাছে এগিয়ে গিয়ে দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে গাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়লেন। কায়দা করে কোনো গতিতে তিনি গাড়িতে উঠে পড়লেন। তিনি মনে করলেন এই হয়তো সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ।
৭.৫ ‘আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম’– লেখক কেন তাঁর কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন ?
উত্তরঃ লেখক রাঁচির রাস্তায় বেবি অস্টিন গাড়ি পেয়ে তাতে উঠে পড়লেন। গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে বিস্ময়ে ভয়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তিনি দেখলেন ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই। ইঞ্জিন বিকল অথচ গাড়িটি ধীরে ধীরে ঠিকপথে চলছিল। এই ঘটনা দেখে লেখক তাঁর কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।
৭.৬ ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল’— ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি’ চলার প্রকৃত কারণটি কীভাবে গল্পে উন্মোচিত হল ?
উত্তরঃ লেখক রাঁচির রাস্তায় বেবি অস্টিন গাড়িতে উঠে দেখলেন গাড়িতে কোনো ড্রাইভার নেই। ঘণ্টা দুয়েক গাড়িটা চলার পর লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে যখন প্রায় রেল লাইনের সামনে এসে পড়েছে তখন দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় লেখক গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন। এমন সময় চশমা পরা একজন লোক মোটরের পেছন থেকে এসে লেখককে গাড়িটা ঠেলতে অনুরোধ করলেন। তিনি বললেন ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় তিনি আটমাইল দূর থেকে গাড়িটা ঠেলতে ঠেলতে আসছেন। এইভাবেই ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি’ চলার প্রকৃত কারণ উন্মোচিত হলো।
৭.৭ ‘এবারও আমার আলস্যই জয়ী হলো শেষটায়।’— গল্প অনুসরণে লেখকের উৎকণ্ঠা, আলস্য ও কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তরঃ লেখক বেবি অস্টিন গাড়ির দেখা পেয়ে খুব উৎফুল্ল হয়েছিলেন কারণ তাঁর কাছে সেই সময় একটি যানবাহনের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। তিনি গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলেন কারণ ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই অথচ গাড়ি চলছে।
লেখকের উৎকণ্ঠার দৃষ্টান্ত— প্রাণের মায়া ছেড়ে সেই ভূতুড়ে গাড়িকেই আশ্রয় করে রইলেন।
আলস্যের দৃষ্টান্ত— লেখক নেমে হেঁটে যাবার চেষ্টা করেননি। ফলে তাঁর আলস্যই জয়ী হয়েছিল।
কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত— রেলগাড়ি আসার শব্দ শোনামাত্র লেখকের হুঁশ ফিরল এবং তিনি গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন বিপদের আশঙ্কায়।
৭.৮ শেষ পর্যন্ত লেখক সেই ‘বেবি অস্টিন’ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কেন ? এরপর তিনি কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন ?
উত্তরঃ ভূতুড়ে গাড়ি করে লেখক যখন শেষ পর্যন্ত স্টেশনের কাছে লেভেল ক্রসিং পেরুলেন তখন রেললাইনের কাছে গাড়ির ইঞ্জিনের শব্দ শুনে নিজের প্রাণ বাঁচাতে তিনি বেবি অস্টিন গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।
এরপর গাড়ির পিছন থেকে চশমা পরা এক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। যিনি গাড়িটাকে আটমাইল দুর থেকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে আসছিলেন। তিনি লেখককে অনুরোধ করলেন হাত লাগিয়ে গাড়িটাকে ঠেলার জন্য যাতে তিনি গাড়িটাকে গন্তব্যস্থলে নিয়ে যেতে পারেন। এরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন লেখক।
“অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর” এক ভূতুড়ে কান্ড গল্প ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা | Ek Bhuture Kando Golper Extra Question Answer Class 6 Bengali wbbse
সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।
১. লেখকের মতে ভুতেরা হল খুব—
(ক) বুদ্ধিমান (খ) সিরিয়াস (গ) নটি
(ঘ) উইকেড
উত্তরঃ (ঘ) উইকেড।
২. লেখক একটা অদ্ভুদ ব্যাপার দেখেছিলেন—
(ক) রাঁচিতে (খ) ঢাকায় (গ) কলকাতায়
(ঘ) পুণেতে
উত্তরঃ (ক) রাঁচিতে।
৩. মাইল ________ না-যেতেই তার একটা টায়ার ফেঁসে গেল।
(ক) পাঁচেক (খ) সাতেক (গ) দুয়েক
(ঘ) চারেক
উত্তরঃ (খ) সাতেক।
৪. তখন লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায় তখনও—
(ক) সকাল হয়নি (খ) ভোর হয়নি
(গ) রাত্রি হয়নি (ঘ) সন্ধে হয়নি
উত্তরঃ (ঘ) সন্ধে হয়নি
৫. এক ভূতুড়ে কান্ড গল্পে লরিটি যাচ্ছিল—
(ক) রাঁচির দিকে (খ) গিরিডির দিকে
(গ) ঝাড়খন্ডের দিকে (ঘ) কলকাতার দিকে
উত্তরঃ (ক) রাঁচির দিকে।
৭. এক ভূতুড়ে কান্ড গল্পে লেখক বিপদে পড়েছিলেন—
(ক) শীত কালে (খ) গ্রীষ্ম কালে
(গ) বর্ষা কালে (ঘ) শরৎ কালে
উত্তরঃ (ক) শীত কালে।
৮. লরির পরে রাস্তা ধরে এসেছিল __________ গাড়ি।
(ক) অ্যামবাসাডার (খ) অল্টো (গ) ফিয়েট
(ঘ) বেবি অস্টিন
উত্তরঃ (ঘ) বেবি অস্টিন।
৯. কথকের সাইকেলটা রাস্তার ধারে—
(ক) চিৎ হয়ে থাকল
(খ) ধরাশায়ী হয়ে থাকল
(গ) সোজা হয়ে থাকল
(ঘ) উবু হয়ে থাকল
উত্তরঃ (খ) ধরাশায়ী হয়ে থাকল।
১০. _________ সঙ্গে আমি কোনোদিনই পারি না।
(ক) পরিশ্রমের (খ) যুক্তির (গ) আলস্যের
(ঘ) তর্কের
উত্তরঃ (গ) আলস্যের।
১১. ‘দুটো হলদে রঙের চোখ’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
(ক) বাঘের চোখকে
(খ) বেবি অস্টিনের লাইটকে
(গ) বাসের লাইটকে
(ঘ) লরির লাইটকে
উত্তরঃ (খ) বেবি অস্টিনের লাইটকে।
১২. কত দূর থেকে ড্রাইভারটি তার গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসছিল ?
(ক) সাতমাইল (খ) আট মাইল
(গ) নয় মাইল (ঘ) দশ মাইল
উত্তরঃ (খ) আট মাইল।
১৩. রেললাইনের লেভেল ক্রসিং থেকে লোকটির বাড়ি পৌঁছতে লাগে—
(ক) এক মিনিট (খ) মিনিট দুয়েক
(গ) দু-মিনিট (ঘ) মিনিট তিনেক
উত্তরঃ (ক) এক মিনিট।
১৪. ‘গাড়িটা একটা লেভেল ক্রসিং এর মুখে পৌঁছেছে’– কখন ?
(ক) ৩০ মিনিট পরে
(খ) এক ঘন্টা পরে
(গ) ঘন্টা দুয়েক পরে
(ঘ) ঘন্টা তিনেক পরে
উত্তরঃ (গ) ঘন্টা দুয়েক পরে
১৫. এক ভুতুড়ে কান্ড গল্পটির লেখক হলেন—
(ক) আশিষ কুমার মুখোপাধ্যায়
(খ) অমিয় চক্রবর্তী
(গ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
(ঘ) শিবরাম চক্রবর্তী
উত্তরঃ (ঘ) শিবরাম চক্রবর্তী।
১৬. কথক বেবি অস্টিন গাড়িতে উঠে কোন মোড়টাই নামতে চেয়েছিলেন—
(ক) লালপুরার মোড়
(খ) রাঁচি মোড়
(গ) হুড্রু জলপ্রপাত মোড়
(ঘ) কাছারি মোড়
উত্তরঃ (ক) লালপুরার মোড়
২. অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্নোত্তর।
১. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ রচনাংশে লেখক কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিলেন ?
উত্তরঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ রচনাংশে লেখক রাঁচি থেকে হুড্রু যাচ্ছিলেন।
২. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্প অনুযায়ী রাঁচি থেকে হুজুর দূরত্ব মোটামুটি কত মাইল ?
উত্তরঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্প অনুযায়ী রাঁচি থেকে হুড্রুর দূরত্ব মোটামুটি বারো মাইল।
৩. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গদ্যাংশ অনুসারে কে লেখককে কখনও দেখা দেননি ?
উত্তরঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গদ্যাংশ অনুসারে ভূত লেখককে কখনও দেখা দেননি ।
৪. লেখকের মতে তাঁর ‘হার্ট’ কীরূপ ?
উত্তরঃ লেখকের মতে তাঁর ‘হার্ট’ ‘উইক’ বা দুর্বল।
৫. লেখকের মতে, যেখানে সন্ধে হয় সেখানে আর কী ঘটে ?
উত্তরঃ লেখকের মতে, যেখানে সন্ধে হয় সেখানে সাইকেলের টায়ার ফাঁসে।
৬. ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্পে কোন্ কালের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্পে শীতকালের কথা বলা হয়েছে।
৭. লেখকের মতে, কার দৃষ্টিভঙ্গি উদার হতে পারে না’ ?
উত্তরঃ লেখকের মতে, বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ‘উদার’ হতে পারে না।
৮. গল্পে কোন্ কোম্পানির মোটরগাড়ির উল্লেখ রয়েছে ?
উত্তরঃ গল্পে অস্টিন কোম্পানির মোটরগাড়ির উল্লেখ রয়েছে।
৩. নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
১. “এই একই প্রশ্ন প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে পুনঃপুনঃ আমার মানসপটে উদিত হয়েছে।”—কথকের মনে কোন্ প্রশ্ন কেন বারবার জেগেছিল ?
উত্তরঃ গল্পের কথক রাঁচি থেকে হুড্রুর পথে সাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝ রাস্তায় তাঁর সাইকেল খারাপ হয়ে যায়। তিনি বুঝতে পারেন না সাইকেল ফেলে তিনি হাঁটা দেবেন, নাকি অপেক্ষা করবেন নাকি রাঁচি ফিরে যাবেন। শেষপর্যন্ত কি এই দীর্ঘ পথ তাঁকে হেঁটেই যেতে হবে ? এই প্রশ্নই তখন কথকের মনে বারবার জেগেছিল।
২. “আমার টর্চ বাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘোরাতে লাগলাম।”—কথকের এই কাজের পরিণাম কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ শীতের রাতের কুয়াশা এবং চাঁদের আলো ফিকে হয়ে আসা সত্ত্বেও কথকের টর্চের আলো একটি লরির ড্রাইভার দেখতে পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কথককে পাত্তা না দিয়ে লরি না থামিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পথের বাঁকে দূরে অদৃশ্য হয়ে যান। কথকের প্রচেষ্টা এভাবে ব্যর্থ হয়।