গাছের কথা প্রশ্ন ও উত্তর (জগদীশচন্দ্র বসু) অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Gacher Kotha Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য মেলা
অষ্টম শ্রেণি বাংলা

গাছের কথা (জগদীশচন্দ্র বসু) প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Gacher Kotha Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

গাছের কথা গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Gacher Kotha Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

গাছের কথা গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয়সংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Gacher Kotha Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

1. অষ্টম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. অষ্টম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

গাছের কথা গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয়সংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Gacher Kotha Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

গাছের কথা
—জগদীশচন্দ্র বসু

লেখক পরিচিতিঃ জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭) : বিজ্ঞানসাধক, পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী এই লেখকের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত বিক্রমপুরে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম অন্তরঙ্গ জগদীশচন্দ্র বিশিষ্ট সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। তিনি ১৩২৩-১৩২৫ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তাঁর রচিত বাংলা রচনাগুলি অব্যক্ত গ্রন্থে সংকলিত হয়ে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। বাংলায় লেখা তাঁর চিঠিপত্র পত্রাবলী নামে ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।

বিষয় সংক্ষেপঃ গাছ কোনো কথা বলে না কিন্তু গাছের সুন্দর জগৎ ও জীবন রয়েছে। তাদের মধ্যে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, রোগ সবকিছুর অনুভূতি রয়েছে যা আমরা আগে বুঝতাম না। দুঃখ, কষ্টে পড়ে তারা অনেক সময় চুরিও করে। গাছের কোনো গতি দেখা যায় না, তা বলে এরা নির্জীব নয়। এরা ডালপালা মেলে কত সুন্দরভাবে নিজেদের ছড়িয়ে দেয়। বীজগুলি হচ্ছে গাছের ডিম এর মধ্যে গাছের শিশু ঘুমিয়ে থাকে। মাটির উত্তাপ, জল পেলে বীজ থেকে শিশুর জন্ম নেয়। বীজের উপর ঢাকনা থাকে সেটা খুবই কঠিন, আকৃতিও নানা ধরনের হয়। বট একটি বিশাল বৃক্ষ অথচ তার বীজ অতি ক্ষুদ্র। এই ক্ষুদ্র বীজের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক বিশাল শক্তি। ঝড়ঝাপটা ও পাখিদের মলের সাথে গাছের বীজ দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যেক বীজ থেকে যে গাছ জন্মাবে এমন কোনো কথা নেই। অঙ্কুর বের হতে গেলে চাই উত্তাপ, জল ও মাটি। বীজ যেখানে পড়ে সেখানে অনেক দিন পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে। বেড়ে উঠবার মতো উপযুক্ত স্থান যতদিন না পায় ততদিন বীজের বাইরের কঠিন ঢাকনা গাছের শিশুটিকে নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে। গাছের বীজ বিভিন্ন সময় পাকে। আম, লিচু বৈশাখে পাকে, ধান, যব পাকে আশ্বিন-কার্তিক মাসে। বীজগুলি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়ে যায় কে বলতে পারে। তারা দীর্ঘদিন আমাদের চোখের বাইরে থাকতে পারে। কিন্তু বিধাতাপুরুষের চোখের বাইরে যেতে পারে না। পৃথিবী তাকে কোলে তুলে মাটির নীচে নিরাপদ আশ্রয় দেয়, ঝড়বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে, বীজটি নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকে।

নামকরণঃ নামকরণ সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠক বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো সাহিত্য-বিষয়টি পাঠ করার আগেই সাহিত্য-বিষয়টি সম্পর্কে খানিক ধারণা লাভ করতে পারেন। সাহিত্যে নামকরণ নানা উপায়ে হতে পারে। যথা – চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি।

প্রবন্ধের নামকরণ তার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পূর্ণ সংগতিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান প্রবন্ধে লেখক ‘গাছ’ অর্থাৎ উদ্ভিদের মধ্যে জীবনের লক্ষণ, প্রাণীদের সঙ্গে তার সাদৃশ্য, বীজ থেকে গাছের জন্মের উপযুক্ত পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছেন। অর্থাৎ গাছেদের বিষয়ে নানা কথাই এখানে বলা হয়েছে। সুতরাং ‘গাছের কথা’ নামকরণটি সার্থক এবং সুপ্রযুক্ত হয়েছে এ কথা বলাই যায়।

∆∆শব্দার্থ ও টীকা

১. কীটপতঙ্গ— পোকামাকড়
সদ্‌গুণ— ভালো গুণ
২. পার্শ্বে— পাশে
৩. লক্ষণ— উপসর্গ, চিহ্ন
৪. সর্বদা— সবসময়
৫. শুষ্ক— শুকনো
৬. প্রভেদ— পার্থক্য
৭. দ্বীপ— চারদিকে জলে ঘেরা স্থল
৮. বৃক্ষশিশু— ছোটো/চারা গাছ
৯. জনমানবশূন্য— যেখানে লোকজন নেই, নির্জন
১০. দেশদেশান্তরে— এক দেশ থেকে অন্য দেশে
১১. বিধাতা— সৃষ্টিকর্তা

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর গাছের কথা অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Extra Question Answer Gacher Kotha Class 8 Bengali wbbse

∆∆ সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখ।

১. ‘গাছের কথা’ রচনাটি’র লেখক হলেন—
(ক) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(খ) জগদীশচন্দ্র বসু
(গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(ঘ) শক্তি চট্টোপাধ্যায়

উত্তরঃ নিজে করো।

২. ‘গাছের কথা’ রচনাটি নেওয়া হয়েছে যে গ্রন্থ থেকে—
(ক) অব্যক্ত (খ) গাছের কথা (গ) পত্রাবলী
(ঘ) ছিন্নপত্র

উত্তরঃ নিজে করো।

৩. জীবিতের লক্ষণ হল—
(ক) নড়াচড়া করা (খ) শ্বাস নেওয়া
(গ) বৃদ্ধি পাওয়া (ঘ) উপরের সব কটিই

উত্তরঃ (ঘ) উপরের সব কটিই।

৪. ‘জীবন ধারণ করিবার জন্য ইহার দিকেও ব্যস্ত থাকিতে হয়’— কাদের ?
(ক) মানুষদের (খ) পশু-পাখিদের
(গ) বন মানুষদের (ঘ) গাছেদের

উত্তরঃ (ঘ) গাছেদের।

৫. ‘ডিম হইতে পাখির ছানা জন্ম লাভ করে’— কীভাবে ?
(ক) ভাঙলে (খ) জল দিলে
(গ) উত্তাপ পেলে (ঘ) মাটিতে রাখলে

উত্তরঃ (গ) উত্তাপ পেলে।

৬. গাছের বীজ কারা ছড়ায় ?
(ক) মানুষ (খ) পশু পাখি (গ) বাতাস
(ঘ) উপরের সব কটিই

উত্তরঃ (ঘ) উপরের সব কটিই।

৭. ‘মানুষের চক্ষুর আড়াল হইল’—
(ক) গাছের বীজ (খ) চাঁদ (গ) জগদীশচন্দ্র
(ঘ) সূর্য

উত্তরঃ (ক) গাছের বীজ।

৮.’এই রূপে নিরাপদে ________ ঘুমাইয়া পড়িল’— কে ঘুমিয়ে পড়ল ?
(ক) বাচ্চা ছেলেটি (খ) বৃক্ষ শিশুটি
(গ) ক্লান্ত পথিক (ঘ) মৃত শিশুটি

উত্তরঃ (খ) বৃক্ষ শিশুটি।

৯. বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়—
(ক) ফলের মধ্যে
(খ) বীজের কঠিন ঢাকনার মধ্যে
(গ) ফুলের মধ্যেয
(ঘ) মাটির মধ্যে

উত্তরঃ (খ) বীজের কঠিন ঢাকনার মধ্যে।

১০. শিমুল ফল ফেটে যায়—
(ক) বাতাসে (খ) ঝড়ে (গ) রোদে
(ঘ) বাইরের আঘাতে

উত্তরঃ (গ) রোদে।

১১. অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য চাই—
(ক) বাতাস ও জল (খ) সার (গ) খাবার
(ঘ) উত্তাপ, জল ও মাটি

উত্তরঃ (ঘ) উত্তাপ, জল ও মাটি।

১২. আম, লিচু পাকে কোন্ মাসে ?
(ক) বৈশাখ মাসে (খ) জ্যৈষ্ঠ মাসে
(গ) শ্রাবণ মাসে (ঘ) চৈত্র মাসে

উত্তরঃ (ক) বৈশাখ মাসে।

১৩. গাছের শিশুকে নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে—
(ক) বাইরের কঠিন ঢাকনা (খ) শিকড়
(গ) পাখি (ঘ) জল ও উত্তাপ

উত্তরঃ (ক) বাইরের কঠিন ঢাকনা।

১৪. “বড়ো ঝড় হয়”- যে মাসে—
(ক) বৈশাখ মাসে
(খ) আশ্বিন মাসের শেষে
(গ) আষাঢ় মাসের প্রথমে
(ঘ) ভাদ্র মাসে

উত্তরঃ (খ) আশ্বিন মাসের শেষে।

১৫. ধান, যব ইত্যাদি কোন্ মাসে পাকে ?
(ক) আশ্বিন-কার্তিক মাসে
(খ) কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে
(গ) শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে
(ঘ) বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে

উত্তরঃ (ক) আশ্বিন-কার্তিক মাসে।

১৬. জগদীশ চন্দ্র বসুর বাংলা চিঠি পত্রের সংকলনের নাম—
(ক) পত্র সংকলন (খ) নির্বাচিত পত্রসমূহ
(গ) পত্রাবলী (ঘ) ছিন্নপত্র

উত্তরঃ (গ) পত্রাবলী

∆∆ সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন উত্তর।

১. গাছ আর মরা ডালে কী প্রভেদ ?

উত্তরঃ গাছেদের বৃদ্ধি আছে কিন্তু মরা ডাল ক্ষয় হতে থাকে। গাছেদের জীবন আছে, মরা ডালে জীবন নেই।

২. জনমানব শূন্য দ্বীপে গাছ কেমন করে জন্মায় ?

উত্তরঃ পাখি ফল খেয়ে তার বীজ দূর দেশে জন মানবহীন নির্জন দ্বীপে পৌঁছোয়, সেখানে মলত্যাগ করে আর সেই মলে থাকা বীজ থেকেই নতুন গাছ জন্মায়।

৩. জগদীশ চন্দ্র বসু ছেলেবেলায় কোন গাছের বীজ ধরবার জন্য ছুটে যেতেন ?

উত্তরঃ জগদীশচন্দ্র বসু ছেলেবেলায় শিমুল গাছের বীজ যা রৌদ্রে ফেটে গিয়ে তুলোর সঙ্গে উড়তে থাকে, সেই বীজ ধরার জন্য ছুটতেন।

৪. প্রত্যেক বীজ থেকে গাছ জন্মায় না কেন ?

উত্তরঃ কোন কঠিন পাথরের উপর বীজ পর্ড়লে সেখানে গাছের অঙ্কুর বার হতে পারে না।

৫. বৃক্ষশিশু কোথায় অনেকদিন পর্যন্ত নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকতে পারে ?

উত্তরঃ বৃক্ষশিশু অনেকদিন পর্যন্ত বীজের মধ্যে নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকতে পারে।

৬. বৃক্ষশিশু বীজ ছাড়া আর কোথায় নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকে ?

উত্তরঃ মাটিতে ঢাকা পড়লে বৃক্ষ শিশু নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকতে পারে।

হাতে কলমে প্রশ্নোত্তর গাছের কথা অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Hate Kolome Question Answer Gacher Kotha Class 8 Bengali wbbse

১.১ জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখাে।

উত্তরঃ জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম ‘অব্যক্ত।

১.২ জগদীশচন্দ্র বসু কী আবিষ্কার করেছিলেন ?

উত্তরঃ জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছিলেন গাছেদেরও প্রাণ আছে। এ ছাড়াও তিনি ক্রেসকোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন।

২. নীচের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটি বাক্যে লেখাে :

২.১ লেখক কবে থেকে গাছেদের অনেক কথা বুঝতে পারেন ?

উত্তরঃ লেখক যেদিন থেকে গাছ, পাখি ও নানান কীটপতঙ্গকে ভালােবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই গাছেদের অনেক কথা বুঝতে পারেন।

২.২ ‘ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়। —কী দেখা যায় ?

উত্তরঃ মানুষের মধ্যে যেমন সদগুণ বা ভালো কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে, গাছেদের মধ্যেও তার কিছু কিছু দেখা যায়।

২.৩ জীবিতের লক্ষণ কী তা লেখকের অনুসরণে উল্লেখ করাে।

উত্তরঃ জীবিতের লক্ষণ হল— যা জীবিত তা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং যার গতি আছে। অর্থাৎ, জীবিতের লক্ষণ। হল— বৃদ্ধি ও গতি।

২.৪ বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।বৃক্ষশিশু কোথায় নিদ্রা যায় ?

উত্তরঃ বীজের উপরে থাকা কঠিন ঢাকনার মধ্যে বৃক্ষ শিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।

২.৫ অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য কী কী প্রয়ােজন ?

উত্তরঃ বীজ থেকে অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য উপযুক্ত উত্তাপ, জল ও মাটি প্রয়ােজন।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :

৩.১ ‘আগে এসব কিছুই জানিতাম না।’— কোন্ বিষয়টি লেখকের কাছে অজানা ছিল ?

উত্তরঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু গাছের যে জীবন আছে, গাছও যে মানুষের মতো আহার করে, দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়— এসব তিনি আগে জানতেন না বলে অকপটে স্বীকার করেছেন। যেদিন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদের ভালােবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই তিনি গাছেদের অনেক কথাই বুঝতে পারেন বলে জানিয়েছেন।

৩.২ ‘ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।’ – কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের মধ্যে কী লক্ষ করা যায় ? আলােচ্য অংশে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গের কথা বলা হয়েছে।

উত্তরঃ আমাদের জীবনে যেমন মাঝে মাঝে অভাব, দুঃখ ও কষ্ট দেখা যায়, তেমনই এদের মধ্যেও সেগুলি দেখা যায়। কষ্টে পড়ে এরাও আমাদের মতাে কেউ কেউ চুরি-ডাকাতি করে। মানুষের মধ্যে যেমন সচরাচর কিছু কিছু সদগুণ লক্ষ করা যায়, তেমনই এদের মধ্যেও সেই সমস্ত সদগুণের প্রকাশ লক্ষ করা যায়।

৩.৩ ‘গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র। – লেখকের এমন উক্তি অবতারণার কারণ বিশ্লেষণ করাে।

উত্তরঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু গাছকে নিবিড়ভাবে ভালােবেসে তাদের জীবনের বিভিন্ন দিকগুলিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর থেকে তাঁর মনে হয়েছে, গাছের বৈশিষ্ট্যগুলি মানুষের মধ্যেকার নানান স্বভাব বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। মানুষের মতাে এদের জীবনেও অভাব-অনটন এবং দুঃখকষ্ট আছে। অভাবে পড়ে এরাও মানুষের মতাে চুরি-ডাকাতি করে। মানুষের মধ্যে যেমন সদগুণ আছে, এদের মধ্যেও সেই সগুণের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যায়। এরাও একে অন্যকে সাহায্য করে। এদের মধ্যেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যায়। মানুষের প্রধান গুণ। হল— স্বার্থত্যাগ। এই গুণটি গাছেদের মধ্যেও লক্ষ করা যায়। মনুষ্য সমাজে মা তার নিজের জীবন দিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষা করে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও এই মানবিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় মেলে। এই সমস্ত লক্ষণের প্রতি দৃষ্টিপাত করে জগদীশচন্দ্র বসু বলেছেন, “গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র”।

৩.৪ জীবনের ধর্ম কীভাবে রচনাংশটিতে আলােচিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করাে।

উত্তরঃ ‘গাছের কথা’ নামক রচনায় বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গাছের জীবনধর্মের আলােচনা প্রসঙ্গে জীবনের স্বাভাবিক ও সাধারণ ধর্ম সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। শুকনাে ডাল আর জীবিত গাছের তুলনা করে তিনি বলেছেন— বিকাশ, বৃদ্ধি ও গতি হল জীবনের ধর্ম। শুকনাে ডালের এই বৈশিষ্ট্য নেই।‘গতি’ বােঝাতে লেখক লতানাে গাছের উদাহরণ দিয়েছেন। বিকাশ ও পরিণতি যে প্রাণের ধর্ম— তা বােঝাতে তিনি বীজ ও ডিমের কথা বলেছেন। উত্তাপ, জল ও মাটির সংস্পর্শে বীজ থেকে অঙ্কুরােদগম হয় এবং তা থেকে যথাসময়ে চারাগাছ বৃদ্ধি পেয়ে পরিণত হয়ে ওঠে। অনুরূপভাবে, মানব জীবনেও উপযুক্ত পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

৩.৫ নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়াইয়া যায়। উপায়গুলি পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলােচনা করাে।

উত্তরঃ বীজ ছড়ানাের প্রক্রিয়া সম্পর্কে লেখক জানিয়েছেন প্রথমত, পাখিরা ফল খেয়ে দূর দূর দেশে বীজ নিয়ে যায়। ফলে অনেক জনমানবহীন দ্বীপেও গাছ জন্মে থাকে। এ ছাড়া অনেক সময় বীজ প্রবল বাতাসে উড়ে গিয়ে দূর দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত, শিমুল গাছের ফল রৌদ্রে ফেটে যাওয়ার পর তার বীজ তুলাের সঙ্গে উড়ে বেড়াতে থাকে। এইভাবে দিনরাত দেশদেশান্তরে বীজ ছড়িয়ে পড়ছে।

৩.৬ লেখক তার ছেলেবেলার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্মরণ করেছেন, তা আলােচনা করাে।

উত্তরঃ বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর গাছের কথা নামক প্রবন্ধে নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতি-অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে ছেলেবেলার দিনগুলির কথা স্মরণ করেছেন। প্রবন্ধের শুরুতেই তিনি বলেছেন— ছেলেবেলায় একা মাঠে বা পাহাড়ে বেড়াতে গেলে সবকিছুই যেন খালি খালি লাগত। গাছ, পাখি, কীটপতঙ্গকে লেখক তখনও সেভাবে ভালােবাসতে শেখেননি। পরে যখন ভালােবাসতে শিখলেন, তখন তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বুঝতে পারলেন যে, গাছ কথা না-বললেও এদের জীবন আছে। লেখক প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে অপার আনন্দ লাভ করতে শিখলেন। পেয়ে গেলেন চেতনার চাবিকাঠি। দৃশ্যমান প্রকৃতিতে তিনি নিয়ম-শাসিত বলিষ্ঠ অন্য জীবনের সন্ধান পেলেন। এরপর শিমুল ফল ফেটে তুলাের সঙ্গে হাওয়ায় উড়তে থাকার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি ছােটোবেলার কথা মনে করেছেন। বাতাসে ভাসতে থাকা তুলাের পিছনে তিনি যখন ছুটোছুটি করতেন, সেগুলি বাতাসের গতিতে এদিক-ওদিক চলে যেত। হাত বাড়িয়ে ধরা সম্ভব হত না। কিন্তু লেখক এর মধ্যে খেলার আনন্দ খুঁজে পেতেন। এভাবেই লেখক পাঠ্যাংশে তাঁর ছেলেবেলার কথা স্মরণ করেছেন।

৩.৭ ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বীজ পাকিয়া থাকে। উদ্ধৃতিটির সাপেক্ষে নীচের ছকটি পূরণ করাে।

১. আম, কাঁঠাল — গ্রীষ্ম ঋতু

২. লিচু, জাম — গ্রীষ্ম ঋতু

৩. তাল — বর্ষা ঋতু

৪. ধান — শরৎ ও হেমন্ত ঋতু

৫. কূল — বসন্ত ঋতু

৩.৮ পৃথিবী মাতার ন্যায় তাহাকে কোলে লইলেন। —বিশ্বপ্রকৃতি সম্পর্কে লেখকের গভীর উপলব্ধি উদ্ধৃতিটিতে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলােচনা করাে।

উত্তরঃ জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানী হলেও তাঁর মধ্যে ভারতীয় দর্শন চেতনা ছিল প্রবল। ভারতীয় দর্শনে প্রকৃতির মধ্যে মাতৃত্বসত্তার প্রকাশ লক্ষ করা যায়। তাই গাছের কথা’ প্রবন্ধে প্রাকৃতিক ঘটনার মধ্যে মাতৃসত্তার বিকাশকে লক্ষ করেছেন লেখক। বিশ্ব প্রকৃতিকে লেখক মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। মা যেমন সন্তানকে পরম স্নেহে কোলে তুলে নেয় এবং সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে সন্তানকে আড়াল করে তাকে লালিত পালিত করে, বিশ্ব প্রকৃতিও তেমনই গাছের বীজকে সন্তান স্নেহে কোলে তুলে নেয়। তার ধুলাে ও মাটি দ্বারা তাকে আবৃত করে রাখে এবং শীত ও ঝড়ের হাত থেকে তাকে রক্ষা করে। মায়ের মতাে বিশ্বপ্রকৃতিও বীজরূপী সন্তানকে ধীরে ধীরে জল-আলাে-বাতাস ও মাটি দ্বারা ছােট্ট চারা গাছ থেকে বৃহৎ বৃক্ষে পরিণত করে। এভাবে বিশ্বপ্রকৃতি যথার্থ মায়ের ভূমিকা পালন করে।

৩.৯ প্রত্যেক বীজ হইতে গাছ জন্মে কিনা, কেহ বলিতে পারে না। বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি আলােচনা করাে।

উত্তরঃ বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি হল—উত্তাপ, জল ও মাটি। প্রতিটি বীজ থেকে গাছ। জন্মায় কিনা তা কেউ বলতে পারে না। কারণ, কোনাে। বীজ হয়তাে পাথরের ওপর পড়ল, ফলে সেখানে সেই বীজ থেকে অঙ্কুর বের হওয়া সম্ভব হল না। যতক্ষণ মাটির সংস্পর্শে উপযুক্ত স্থানে বীজ পড়ে— ততক্ষণ পর্যন্ত তা থেকে অঙ্কুর জন্মাতে পারে না। জল ছাড়া বীজের অঙ্কুরােদগম সম্ভব হয় না। জল শােষণ করেই বীজ থেকে গাছ জন্মায়। অতিরিক্ত উন্নতা বা শীতলতা। বীজের অঙ্কুরােদগমের পক্ষে সহায়ক নয়। যথােপযুক্ত অনুকুল উয়তা প্রয়ােজন। সর্বোপরি যথােপযুক্ত অনুকূল পরিবেশেই বীজের অঙ্কুরােদগম ঘটে।

৩.১০ ‘তখন সব খালি খালি লাগিত।’— কখনকার অনুভূতির কথা বলা হল ? কেন তখন সব খালি-খালি লাগত ? ক্রমশ তা কীভাবে অন্য চেহারা পেল তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যখন একা একাই মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতেন, তখনকার অনুভূতির কথা বলা হয়েছে।

» তখন সব খালি খালি লাগত। কারণ তখন তিনি গাছ পাখি বা কীটপতঙ্গদেরকে নিবিড়ভাবে ভালােবাসতে পারেননি। ফলে তাদের সঙ্গে তাঁর হার্দিক সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি। তাই সব খালি খালি লাগত।

» লেখক যখন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদের গভীরভাবে ভালােবেসেছেন, তখন থেকেই তাদের জীবনের অনেক কথা তিনি বুঝতে পারেন। তারাও যে আমাদের মতাে আহার করে, দিন দিন বেড়ে ওঠে, মানুষের মতাে তাদেরও যে আলাদা আলাদা চরিত্র-বৈশিষ্ট্য আছে, তা তিনি বুঝতে পারলেন। ফলে, তার একাকিত্ব আর হয় না।

৪. নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করাে।

৪.১ আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে যাইতাম, তখন সব খালি খালি লাগিত।(সরল বাক্যে)

উত্তরঃ আগে একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে গেলে সব খালি খালি লাগত।

৪.২ তাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা পারিতাম না। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)

উত্তরঃ তাহাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা বুঝিতে অপারগ ছিলাম।

৪.৩ ইহাদের মধ্যেও আমাদের মতাে অভাব, দুঃখ-কষ্ট দেখিতে পাই। (জটিল বাক্যে)

উত্তরঃ আমাদের মধ্যে যে অভাব, দুঃখকষ্ট আছে ইহাদের মধ্যেও তাহা দেখিতে পাই।

৪.৪ তােমরা শুষ্ক গাছের ডাল সকলেই দেখিয়াছ। (না-সূচক বাক্যে)

উত্তরঃ তােমাদের মধ্যে এমন কেহ নাই যারা শুষ্ক গাছের ডাল দ্যাখাে নাই।

৪.৫ প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কে বলিতে পারে ? (প্রশ্ন পরিহার করাে)

উত্তরঃ প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কেহ বলিতে পারে না।

৫. নীচের শব্দগুলির ব্যাসবাক্য-সহ সমাসের নাম লেখাে : কীটপতঙ্গ, স্বার্থত্যাগ, বৃক্ষশিশু, বনজঙ্গল, জনমানবশূন্য, দিনরাত্রি, দেশান্তরে, নিরাপদ।

উত্তরঃ

» কীটপতঙ্গ = কীট ও পতঙ্গ – দ্বন্দ্ব সমাস।

» স্বার্থত্যাগ = স্বার্থকে ত্যাগ —কর্ম তৎপুরুষ সমাস।

» বৃক্ষশিশু = বৃক্ষের শিশু — সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস।

» বনজঙ্গল = বন ও জঙ্গল— সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস।

» জনমানবশূন্য = জনমানব শূন্য যে স্থান— কর্মধারয় সমাস।

» দিনরাত্রি = দিন ও রাত্রি— বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব সমাস।

» দেশান্তরে = অন্য দেশে— নিত্য সমাস।

» নিরাপদ = নয় আপদ— নঞ-তৎপুরুষ সমাস।

৬. নিম্নেরেখাঙ্কিত অংশের কারক-বিভক্তি নির্দেশ করাে :

৬.১ ইহাদের মধ্যে একের সহিত অপরের বন্ধুত্ব হয়।

উত্তরঃ বন্ধুত্ব = কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।

৬.২ আর কিছুকাল পরে ইহার চিহ্নও থাকিবে না।

উত্তরঃ ইহার = সম্বন্ধপদে ‘র’ বিভক্তি।

৬.৩ বীজ দেখিয়া গাছ কত বড়াে হইবে বলা যায় না।

উত্তরঃ বীজ = কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।

৬.৪ মানুষের সর্বোচ্চ গুণ যে স্বার্থত্যাগ, গাছে তাহাও দেখা যায়।

উত্তরঃ গাছে = অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

৭. সন্ধিবদ্ধ পদগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করাে :

৭.১ তাহার মধ্যে বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।

উত্তরঃ নিরাপদে = নিঃ + আপদে।

৭.২ অতি প্রকাণ্ড বটগাছ সরিষা অপেক্ষা ছােটো বীজ হইতে জন্মে।

উত্তরঃ অপেক্ষা = অপ + ঈক্ষা।

৭.৩ এই প্রকারে দিনরাত্রি দেশদেশান্তরে বীজ ছড়াইয়া পড়িতেছে।

উত্তরঃ দেশান্তরে =দেশ + অন্তরে।

আরও পড়ুনঃ

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গাছের কথা প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা হাওয়ার গান কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা কী করে বুঝব গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নাটোরের কথা গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গড়াই নদীর তীরে কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছোটোদের পথের পাঁচালী (নবম থেকে অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ) প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ভাষাচর্চা ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নির্মিতি ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

Leave a Reply