গাধার কান গল্পের প্রশ্ন উত্তর সপ্তম শ্রেণি | Gadhar Kan Golper Question Answer Class 7 [WBBSE]

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

গাধার কান গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Gadhar Kan Golper Question Answer Class 7 Bengali wbbse

সাহিত্য মেলা
সপ্তম শ্রেণি বাংলা

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (নবম পাঠ) গাধার কান গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর | Class 7 Bengali Gadhar Kan Golper Question Answer wbbse

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (নবম পাঠ) গাধার কান গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Gadhar Kan Golper Question Answer wbbse

1. সপ্তম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

3. সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

4. সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

5. সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (নবম পাঠ) গাধার কান গল্পের লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Gadhar Kan Golper Question Answer wbbse

গাধার কান
—শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়

লেখক পরিচিতিঃ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৯ – ১৯৭০) : বিহারের পূর্ণিয়ায় জন্ম। ‘গৌড় মল্লার’, ‘তুঙ্গভদ্রার তীরে’ ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘ’ প্রভৃতি ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সীর ডিটেকটিভ কাহিনি গুলি শরদিন্দু-র স্মরণীয় সৃষ্টি। বড়োদের গল্প উপন্যাস রচনার পাশাপাশি শিশু কিশোরদের জন্য তাঁর লেখালেখির পরিমাণও কম নয়। শিশু সাহিত্যে তাঁর একটি স্মরণীয় নায়ক চরিত্র ‘সদাশিব’। পরিণত বয়সে অনেকটা সময় মুম্বাই ও পুণেতে কাটানোয় শিবাজি-র প্রথম জীবনের নানা ধরনের বিচিত্র রসের কাহিনি ধরা দিয়েছে তাঁর ছোটোগল্পে।

শব্দার্থ :
» রেষারেষি— বিদ্বেষপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
» কাতার— শ্রেণি, পক্তি।
» রণসজ্জা— যুদ্ধের বেশ / সাজ।
» কোমর বন্ধ— কোমরে বাঁধার পটি, বেল্ট। » তুক— জাদুমন্ত্র, বশীকরণের প্রকরণ।
» হস্তদন্ত— ব্যস্তসমস্ত, অতি ব্যস্ত ও উৎকণ্ঠিত।
» উস্কোখুস্কো—রু ক্ষ ও অবিন্যস্ত।
» বিমর্ষ— দুঃখিত, বিষণ্ণ।
» লোপাট — নিশ্চিহ্ন, লুপ্ত।
» বিষণ্ণ— দুঃখিত, স্নান।
» বিদ্যুৎবেগে—অতি দ্রুত বেগে।
» ভ্যাবাচাকা— হতবুদ্ধি বা বিহ্বল অবস্থা। » জটলা— বহুলোকের একত্র সমাবেশ।
» উপক্রম— সূত্রপাত, আরম্ভ।
» উত্তেজনা — উদ্দীপনা, তীব্র প্রবল মানসিক আবেগ।
» উৎসাহ— আগ্রহ, উদ্যম, অধ্যবসায়।
» আক্রমণ— অন্যের প্রতি বলপ্রয়োগ, অধিকার বা জয় করবার জন্য হানা।
» প্রতিজ্ঞা—সংকল্প, দৃঢ় পণ/অঙ্গীকার, শপথ।
» সাড়া সোরগোল।
» ক্যাপটেন—অধিনায়ক।
» ক্ষীণ—সামান্য।
» জার্সি— খেলার পোশাক।
» ভ্রুকুটি— ভূরু কোঁচকানো।
» ঠাট্টা— তামাশা।
» হন্তদন্ত—অত্যন্ত বাস্ত/ উৎকণ্ঠিত।
» মুষড়ে— হতাশ হয়ে।
» হিমশিম— নাজেহাল।
» বিদ্যুৎগে—ক্ষিপ্র গতিতে।।
» কথবেল— ছোটো গোল আকারের
» অম্লস্বাদ বিশিষ্ট ফল বিশেষ।
» হুমদো— মোটাসোটা।

সারসংক্ষেপ : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গাধার কান গদ্যাংশে দেখি টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের মধ্যে ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে মজাদার গল্প। টাউন স্কুলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধারণা ছিল খেলার আগে গাধার কান মুললে তারা জয়ী হবে। তাই খেলার আগে টাউন স্কুলের সমরেশ গাধা খুঁজতে যায়। কিন্তু সে গাধা পায় না। গাধার কান মলার প্রসঙ্গে টাউন স্কুলের টুনু হাসলে সমরেশ টুনুর কান মুলে দেয়। এরপর খেলা শুরু হলে হাফ টাইমের আগে টুনু ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে ব্যথা পায়। সে ব্যথায় এতটাই কাতর হয়ে পড়ে যে পায়ের কাছে বল এলেও সেটা পাস করে দেয়। এই সুযোগে মিশন স্কুল গোল করে। হাফ-টাইমে গিরীন নিজের আঘাত দেখিয়ে টুনুকে বোঝায় যে খেলার সময় নিজের ব্যথার কথা ভুলে গিয়ে খেলতে হয়। তখন জেতাটাই হয় লক্ষ্য। টুনু চাইলেই তারা জিতবে। টুনু যদি চায় তাহলে সে তিন গোল করতে পারে। সে চাইলেই তাদের স্কুলকে জেতাতে পারে। গিরীন টুনুকে বোঝায় সেই তাদের স্কুলের ভরসা। এরপর টুনুর জেদ চাপে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খেলে সে নিজের স্কুলকে জেতায়। খেলার শেষে দেখা যায় তাদের স্কুল চার গোল করেছে। সকলে টুনুকে অভিনন্দন জানায়। শেষে সমরেশ রসিকতা করে বলে খেলা শুরুর আগে সে টুনুর কান মুলেছিল তাই তারা জিতেছে। এরপর শানু বলে, এবার থেকে টুনুর কান মুলেই তারা খেলতে নামবে।

মূলকথা : লেখক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর গদ্যাংশের মধ্যে দিয়ে আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন যে, মনে যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থাকে, তাহলে জয় নিশ্চিত। অন্ধবিশ্বাসের প্রতি আনুগত্য কখনও সাফল্য আনতে পারে না। এরজন্য দরকার প্রবল উৎসাহ ও মানসিক জোর। আর তাই এই গদ্যাংশে লেখক দেখিয়েছেন গাধার কান না মুললেও টাউন স্কুল জিতে যায় শুধুমাত্র টুনু ও অন্যান্য খেলোয়াড়দের মানসিক জোরে। পায়ে ব্যথা পেয়েছে টুনু তবু নিজের মনের জোরে সব বাধা ভুলে গিরীনের কথামতো শুধু খেলায় মন দেয়। খেলায় জেতার কথা ভাবে। গোল করাকেই লক্ষ্য করে। আর তাই শেষ পর্যন্ত চারগোল করে মিশন স্কুলকে হারিয়ে জিতে যায় টাউন স্কুল।

হাতে কলমে’র প্রশ্নোত্তর : গাধার কান গল্পের সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Gadhar Kan Golper Question Answer Class 7 Bengali wbbse

১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

১.১ শহরের মধ্যে বেশ একটু সাড়া পড়ে গেছে—এই ‘সাড়া পড়ার কারণ কী ?

উত্তরঃ টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের মধ্যে ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ তাই শহরের মধ্যে বেশ একটু সাড়া পড়ে গেছে।

১.২ ‘এই দুই স্কুলের ছেলেদের চিরকালের রেষারেষি’— কোন দুই স্কুলের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ আলোচ্য অংশে টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের কথা বলা হয়েছে।

১.৩ হিঃ হিঃ— তুক করা হল না’—বক্তা কে ? কাকে সে একথা বলেছে ? কখন বলেছে ?

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটির বক্তা শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কানা’ গল্পের টুনু।

» সে তার স্কুল অর্থাৎ টাউন স্কুলের খেলোয়াড় সমরেশদাকে একথা বলেছে।

» গাধা খুঁজে না পেয়ে বিমর্ষ হয়ে সমরেশ যখন পায়ে অ্যাঙ্কলেট আটকাতে আটকাতে ভাবছিল তারা এবার মিশন স্কুলকে হারাতে পারবে না তখন টুনু উপরিউক্ত কথাটি বলেছে।

১.৪ গল্পে ফুটবল খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু শব্দ রয়েছে, যেমন— হাফ-ব্যাক, রাইট-ইন, গোলকিপার, সেন্টার ফরোয়ার্ড, ব্যাক- এরিয়া ইত্যাদি। আরো কিছু শব্দ তুমি গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো। এছাড়াও নিজস্ব কিছু সংযোজনও করতে পার।

উত্তরঃ গল্পে ফুটবল খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত যে শব্দগুলি আছে, সেগুলি হল—অ্যাঙ্কলেট, রেফারি, টস, কর্নার, চার্জ, কিক, শুট, ফাউল, পেনাল্টি, অফসাইড গোল।

এছাড়াও ফুটবল খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও কয়েকটি শব্দ হল—টাইব্রেকার, পাস, রিসিভিং, স্ট্রাইকার, হেড।

২. নীচের শব্দগুলি কোন মূল শব্দ থেকে এসেছে ?

উত্তরঃ
» ভূরু— ভ্রু » চোখ—চক্ষু।
» গাধা— গর্দভ। » বাঁশি— বংশী
» দুপুর— বি-প্রহর। » পাঁচ— পঞ্চম।

৩. পদ পরিবর্তন করো :

উত্তরঃ
» সন্দেহ— সন্দিগ্ধ। » উপস্থিত—উপস্থিতি।
» সজ্জিত— সজ্জা। » শব্দ— শাব্দিক ।
» সর্বনাশ— সর্বনাশা।

৪. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :

উত্তরঃ

» রেষারেষি— মেলামেশা।
» ক্ষীণ— উজ্জ্বল।
» বিষণ্ণ— আনন্দ।
» বিষম— সামান্য।
» উৎসাহ— অনুৎসাহ, নিরুৎসাহ।

৫. সন্ধি বিচ্ছেদ করো :

উত্তরঃ
» আশ্চর্য – আঃ + চর্য।
» উপস্থিত— উহঃ + থিত
» দুশ্চিন্তা— দুঃ + চিন্তা।

৬. ‘ফিসফিস করে বললে’ অর্থ অত্যন্ত আস্তে / নিচু গলায় বলা বোঝায়। ‘কথা বলা’র ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে, এমন কয়েকটি ধ্বন্যাত্মক শব্দ লেখো।

উত্তরঃ মিনমিন, ক্যাটক্যাট, ট্যাকট্যাক।

৭. ‘খেলোয়াড়গণ’—‘খেলোয়াড়’ শব্দের সঙ্গে ‘গণ’ জুড়ে তাকে বহুবচনের রূপ দেওয়া হয়েছে। একবচন থেকে বহুবচনের রূপ পাওয়ার পাঁচটি কৌশল নতুন শব্দ গঠন করে দেখাও।

উত্তরঃ
১. ‘গুলো’ যোগ করে— বইগুলো।
২. ‘রাজি’ যোগ করে— পুষ্পরাজি।
৩. ‘পুণ্ড্র’ যোগ করে— মেঘপুঞ্জ।
৪. ‘বৃন্দ’ যোগ করে— দর্শকবৃন্দ।
৫. ‘মণ্ডলী’ যোগ করে— শিক্ষকমণ্ডলী।

৮. গল্প অনুসরণে নিজের ভাষায় উত্তর দাও :

৮.১ ‘আজকের খেলাটা যে খুব জমবে তাতে সন্দেহ নেই।’— কোন্ বিশেষ দিনের কথা এখানে বলা হয়েছে ? সেদিনের সেই ‘খেলা’র মাঠের দৃশ্যটি নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ নামক পাঠ্য গদ্যাংশ থেকে উদ্ধৃত। এখানে টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের ফাইনাল ফুটবল ম্যাচ খেলার দিনের কথা বলা হয়েছে।

পাঁচটা থেকে খেলা আরম্ভ। কিন্তু চারটে বাজতে না বাজতেই মাঠে লোক জমতে শুরু করেছে। দুই স্কুলের ছেলেরা মাঠের দু’ধারে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু দু-পাশের খেলোয়াড়রা এখনও আসেনি। খেলার মাঠ থেকে কিছু দূরে বটগাছের তলায় টাউন স্কুলের ছেলেরা তৈরি হচ্ছিল। দুইপক্ষের খেলোয়াড়রা মাঠে দাঁড়াল। রেফারি টস করল। প্রথম দশ মিনিট মিশন স্কুল চেপে থাকল, বল আর টাউন স্কুলের গোলের কাছ থেকে দূরে যায় না। গোল বাঁচাতে বাঁচাতে টাউন স্কুলের গোলকিপার প্রশান্ত হিমসিম খেল। টুনুর পায়ে বল আসতেই সে বিদ্যুৎবেগে ছুটল। মিশন স্কুলের হাফ ব্যাকেরা সব এগিয়ে ছিল ফলে ব্যাক আর গোলকিপার ছাড়া কোনো বাধা ছিল না। টুনু গোলে বল শুট করবার আগেই প্রতিপক্ষের বুটের আঘাত লাগল পায়ে, হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল। রেফারি টাউন স্কুলের বিরুদ্ধে অফসাইড দিলেন। টুনু বেশি দৌড়তে পারল না। হঠাৎ মিশন স্কুল গোল করল। হাফ-টাইম হল। গিরীন টুনুকে উৎসাহ দিল। বলল পায়ের ব্যথা ভুলে গিয়ে শুধু জেতার কথা মাথায় রাখতে। খেলা আরম্ভ হল। টুনুর পায়ে বল এল। একের পর এক গোল করতে লাগল টুনু। মিশন স্কুল একেবারে দমে গেল। খেলা যখন শেষ হল তখন টাউন স্কুল চার গোল আর মিশন স্কুল মোটে এক গোল।

৮.২ ‘সমরেশদা কোথায় গেছে ?’—এই সমরেশদার পরিচয় দাও। সে কোথায়, কোন্ উদ্দেশ্যে গিয়েছিল ? তার উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল কী ?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গদ্যাংশ থেকে গৃহীত।

গদ্যাংশে দেখি সমরেশদা হল টাউন স্কুলের ছাত্র। মিশন স্কুলের সঙ্গে ফুটবলের ফাইনাল খেলায় সমরেশদা একজন প্রতিযোগী। সমরেশদা অত্যন্ত কুসংস্কারগ্রস্ত। তার মনে একটা ধারণা ছিল গাধার কান না মুললে তাদের স্কুল খেলায় জিতবে না। এই অন্ধবিশ্বাস থেকে সে খেলার আগে সারা দুপুর গাধা খুঁজে বেড়ায়। আবার সমরেশকে রসিক বলেও মনে হয়। কারণ গাধা না পেয়ে খেলা জেতার পর সে রসিকতা করে বলে টুনুর কান যেহেতু সে মুলে দিয়েছিল তাই তারা জিতেছে।

সে গাধা খোঁজার উদ্দেশ্যে সারা শহর ঘুরেছিল। না, তার উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ গাধা পাওয়া যায়নি।

৮.৩. ‘এই সময় মাঠে রেফারির বাঁশি বেজে উঠল—’রেফারিটি কে ? তাঁর সম্পর্কে ছেলেদের ধারণা কীরূপ ছিল ? খেলার মাঠে তিনি কেমন ভূমিকা পালন করলেন ?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গদ্যাংশ থেকে গৃহীত। ‘রেফারিটি হলেন দিব্যেন্দুবাবু।

তার সম্পর্কে ছেলেদের ধারণা ছিল যে তিনি খুব জিলিপি ভালোবাসেন আর তাই যে দল তাকে জিলিপি খাওয়ায় তিনি সেই পক্ষকে জিতিয়ে দেবার চেষ্টা করেন।

খেলার মাঠে তিনি প্রথমদিকে পেনাল্টি হওয়া সত্ত্বেও অফসাইড দিয়ে দেন। কিন্তু এরপর থেকে অবশ্য তাকে একচোখামি করতে দেখা যায় না। তিনি ন্যায় পথেই খেলা পরিচালনা করেছিলেন।

৮.৪ খেলায় যে ফলাফল হল, তাতে তুমি কি খুশি হলে ? তোমার উত্তরের সমর্থনে যুক্তি দাও।

উত্তরঃ খেলায় যে ফলাফল হল তাতে আমি খুশি হয়েছি। কারণ যদি টাউন স্কুল হেরে যেত তাহলে টাউন স্কুলের ছাত্রদের মনের মধ্যে থাকা অন্ধবিশ্বাস স্থায়ী আকার ধারণ করত। তাদের ধারণা বিশ্বাসে পরিণত হত। কিন্তু টাউন স্কুল জেতায় এটাই প্রমাণিত হল যে মনের জোর থাকলে, সত্যিকারের ইচ্ছা থাকলে সমস্ত সমস্যাকেই অতিক্রম করা যায়। লক্ষ্যে স্থির থাকলে জয় নিশ্চিত।

৮.৫ গল্পে যে ফলাফলের কথা বলা হয়েছে, তার বিপরীতটি যদি ঘটত, তা হলে গল্পের উপসংহারটি কেমন হত তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ গল্পে যে ফলাফলের কথা বলা হয়েছে, তার বিপরীতটি যদি ঘটত তাহলে মিশন স্কুল জয়ী হত। তাহলে গল্পের উপসংহারটি হত এরকম—

খেলায় জিতে মিশন স্কুলের খেলোয়াড়রা আনন্দ করতে করতে বাড়ি ফিরত। আর টাউন স্কুলের খেলোয়াড়রা মাথা নীচু করে, মুখ চুন করে বাড়ি ফিরত। সমরেশ, গিরীন, প্রণব সকলে মিলে বলাবলি করত গাধা পাওয়া গেল না বলেই এরকম হল। আর টুনুর মনে হত খেলার আগে সে যে বিষয়টি ঠাট্টার সঙ্গে উড়িয়ে দিয়েছিল সেটাই সত্যি। গাধার কান মুলে দিলেই হয়তো তারা জিতে যেত।

৮.৬ গল্পে বলা হয়েছে— ‘আজ টুনুই আমাদের হিরো।’— তোমার টুনু চরিত্রটিকে কেমন লাগল ? সত্যিই কি নায়কের সম্মান তার প্রাপ্য ?

উত্তরঃ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’গল্পের টুনু চরিত্রটিকে আমার খুব ভালো লেগেছে। গল্পের প্রথমেই তাকে দেখে বুঝতে পারি সে কুসংস্কারগ্রস্ত নয়। দলের সকলে যখন গাধা পাওয়া যায়নি বলে মনখারাপ করে তখন সে এই বিষয়টিকে হেসে উড়িয়ে দেয়। আবার তার ইচ্ছাশক্তিও প্রবল। তাই পায়ে আঘাত পাওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খেলে সে তার স্কুলকে জিতিয়ে দেয়।

সত্যিই নায়কের সম্মান টুলুর প্রাপ্য। কারণ হাফ-টাইমের আগে মিশন স্কুল এক গোল দিয়েছিল। টাউন স্কুল তখন মনমরা হয়ে গেছিল। কিন্তু হাফ-টাইমের পর সে পায়ে অসম্ভব যন্ত্রণা সত্ত্বেও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খেলে। সুদক্ষ খেলোয়াড়ের মতো বুদ্ধি করে সে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ করে। প্রতিপক্ষ দলের পাঁচজন তাকে ঘিরে থাকলেও সে অত্যন্ত কৌশলের সঙ্গে তাদের মাঝখান থেকে বেরিয়ে আসে। প্রতিপক্ষরা যখন তাকে বাধা দিতে ব্যস্ত তখন সে অত্যন্ত সুকৌশলে নিজের দলের খেলোয়াড় রণজিৎকে বল পাস করে দেয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রণজিৎও গোল করে। তার দক্ষতার কারণেই টাউন স্কুল চারগোল করে ফাইনালে জিতে যায়। আবার নিজের পায়ে আঘাত পাওয়া সত্ত্বেও সে নিজের ব্যথার কথা ভুলে গিয়ে দক্ষতার সঙ্গে খেলে স্কুলকে জিতিয়েছে। তাই বলা যায় নায়কের সম্মান তারই প্রাপ্য।

৮.৭ গিরীন কীভাবে খেলার মাঠে টুনুকে ক্রমাগত উৎসাহ আর সাহস জুগিয়েছিল তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গদ্যাংশে দেখি হাফ-টাইমের আগে টুনু ডান পায়ে খুব আঘাত পায়। তার ডান পায়ের বুড়ো আঙুল ভেঙে যায়। পা খুব ব্যথা করছিল তাই হাফ-টাইমের আগে দু’একবার বল পেলেও আর একজনকে পাস করে দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। এই সুযোগে মিশন স্কুল গোল করে। এরপর হাফ-টাইমে গিরীন আসে টুনুর কাছে। টুনু তখন পায়ে বরফ চেপে ধরে বসে ছিল। গিরীন তার আঙুল টেনে দেখে, টুনু তার যন্ত্রণার কথা গিরীনকে জানায়। তখন গিরীন নিজের পায়ের ব্যথা টুনুকে দেখায়। গিরীনের হাঁটুর নীচে কথবেলের মতো ফুলে গেছিল।

তা সত্ত্বেও সে সব ভুলে খেলছিল। গিরীন টুনুকে বোঝায় খেলার সময় এসব মনে রাখতে নেই। তখন একটাই লক্ষ্য গোল। গিরীন আরও বলে টুনুই তাদের স্কুলের ভরসা। সে চাইলেই পারবে। যদি চেষ্টা করে টুনু তিনটে গোল করতে পারে। তাদের স্কুলকে জিততে হবেই। এইভাবে গিরীন খেলার মাঠে টুনুকে সাহস আর উৎসাহ জুগিয়েছিল। আর শেষ পর্যন্ত অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে খেলে টুনু তাদের স্কুলকে জিতিয়েছিল।

৮.৮ ‘অন্ধসংস্কারের প্রতি আনুগত্যের জোরে নয়, প্রবল প্রচেষ্টা আর মানসিক জোরেই জীবনে সাফল্য আসে—’গালর কান’ গল্পটি অনুসরণে উদ্ধৃতিটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।

উত্তরঃ অন্ধ কুসংস্কারকে আঁকড়ে বসে থাকলে জীবনে কখনও সাফল্য আসে না। জীবনে সফল হওয়ার জন্য চাই অসম্ভব মানসিক জোর ও প্রবল প্রচেষ্টা। মনে যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থাকে তাহলে সাফল্য আসবেই। আর এই কথাটিই লেখক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝাতে চেয়েছেন তাঁর ‘গাধার কান’ গদ্যাংশে।

গদ্যাংশে দেখি ফুটবল খেলার ফাইনালে হাফ-টাইমের আগে ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে আঘাত পেয়ে টুনু হাল ছেড়ে দেয়। সে ধরেই নেয় যে সে আর খেলতে পারবে না। পায়ে অসহ্য ব্যথা হওয়ায় সে পায়ের কাছে বল পেলেও সেটা পাস করে দেয়। এই সুযোগে প্রতিপক্ষ দল গোল করে। এরপর হাফ-টাইমে গিরীন নিজের আঘাত দেখিয়ে টুনুকে বোঝায় যে খেলার সময় এইসব সামান্য আঘাতের কথা মনে রাখতে নেই। খেলার সময় একটাই লক্ষ্য গোল করা। ব্যথার কথা ভুলে তখন একটা কথাই মনে রাখতে হবে যে তাদের জিততে হবে। তাছাড়া টুনুই তাদের ভরসা। সে চেষ্টা করলেই পারবে। সে যদি চায় তিনগোল করতে পারে। সে চাইলেই তাদের স্কুলকে জেতাতে পারে। গিরীনের এইসমস্ত কথায় টুনুর মনেও জেদ চাপে। সেও উৎসাহ পেয়ে যায় এবং হাফ-টাইমের পর অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খেলে তার স্কুলকে জিতিয়ে দেয়। খেলার শেষে দেখা যায় তাদের স্কুল চারগোল করেছে। যদিও খেলা শুরুর আগে তারা ভেবেছিল জিতবে না। কারণ খেলার আগে গাধার কান না মুললে তাদের পক্ষে জেতা সম্ভব নয়— এটাই ছিল তাদের ধারণা। সেদিনও তাই গাধার খোঁজ করা হয়েছিল কিন্তু পাওয়া যায়নি। তাই তারা ধরেই নিয়েছিল হেরে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টুনুর ও দলের সকলের মানসিক জোর ও প্রবল প্রচেষ্টায় তারা ফাইনালে জিতে যায়।

সুতরাং, এটাই প্রমাণিত হল যে আনুগত্যের জোরে নয়, মানসিক জোর ও প্রবল চেষ্টাই সাফল্য নিয়ে আসে।

৯. তোমার দেখা / খেলা কোনো ফুটবল ম্যাচের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি লেখো।

১০১/সি দ্বারভাঙ্গা রোড
ভদ্রকালী, হুগলি
তারিখ : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৫

প্রিয় শুভম,
কেমন, আছিস ? পরীক্ষা কেমন হল ? কাকু-কাকিমা ভালো আছেন তো ? কতদিন তোর কোন খবর পাইনা। চিঠি লিখিস না কেন ? আমার আগের চিঠির উত্তর পাইনি। এই চিঠিরও যদি উত্তর না দিস তাহলে আর চিঠি লিখব না। যাইহোক আর ঝগড়া করব না। যেজন্য তোকে চিঠি লেখা, এবার সেটা বলি।

জানিস কদিন আগে আমাদের পাড়ায় একটা ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়েছিল। আমার তো সবে পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তা-ই স্কুল ছুটি ছিল। সারা দুপুর আমি মাঠে বসে খেলা দেখেছি। দুপুর ১২টায় খেলা আরম্ভ হয়। দুটো দলই আমার অচেনা ছিল। তাই কোন্ দলকে সমর্থন করব ঠিক করতে পারছিলাম না। যে-কোনো দলের গোল হলেই আনন্দ পাচ্ছিলাম। আমি আর কাকাই খেলা দেখতে গেছিলাম। একটা দলের জার্সি ছিল সবুজ আর একটা দলের হলুদ। একটা দল এসেছিল বারাসাত থেকে, আর একটা দল আমাদেরই এলাকা ব্যারাকপুর থেকে। হাফ-টাইমের আগে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। আমি ভাবলাম হয়তো খেলা ড্র হবে। নিজে কাকাইয়ের কাছে এই ভবিষ্যৎবাণী করায় কাকাই বলল এসব নাকি আগে থেকে বলা যায় না। যখন তখন যা তা হতে পারে। হাফ-টাইমের পর আবার খেলা আরম্ভ হল। বারাসাত থেকে যে দল এসেছিল তাদের এক জন আহত হয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেল। তারপর দলে আবার নতুন খেলোয়াড় এল। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলতে লাগল। অবশেষে বারাসাত দলই প্রথম গোল করল। খেলার তখন আর দশ মিনিট বাকি। বারাসাত দলের খেলোয়াড় বেশি আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে পড়ল। হঠাৎ দেখলাম ব্যারাকপুরের দল গোল করল। আমার মন খুব খুশি হল। মনে মনে বললাম ‘বেশ হয়েছে।’ এরপর আবার গোল করল ব্যারাকপুর। শেষপর্যন্ত বারাসাত আর গোল শোধ করতে পারল না। ব্যারাকপুরের দলটা জিতে গেল। সারামাঠ আনন্দে ফেটে পড়ল। আমারও খুব আনন্দ হল। তবে শেষে বারাসাত দলের ছেলেদের দেখে কষ্টও হল। মনে হচ্ছিল ড্র হলেই বোধহয় ভালো হত।

যাইহোক, এখানেই চিঠি শেষ করছি। তুইও তোর দেখা কোনো ম্যাচের কথা আমায় জানাস্ চিঠি লিখে। তোর চিঠির আশায় থাকব। ভালো থাকিস। কাকু কাকিমাকে আমার প্রণাম জানাস, তুইও ভালোবাসা নিস।

ইতি—
তোর বন্ধু দিলীপ

ডাকটিকিট
শাশ্বতী দত্ত
প্রযত্নে– অমল দত্ত ৪৯/এ
হরিতলা লেন,
ব্যারাকপুর।

This Post Has 2 Comments

  1. Sajal

    Thanks

Leave a Reply