পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন (আন্তর্জাতিক কবিতা) বের্টোল্ট ব্রেখ্ট – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা MCQ, SAQ, বড় প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE HS Bengali Porte Jane Emon Ek Mojurer Prosno MCQ, SAQ, Essay Type Solved Question Answer

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর

পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন (আন্তর্জাতিক কবিতা) বের্টোল্ট ব্রেখ্ট – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা MCQ, SAQ, বড় প্রশ্ন (Essay Type) উত্তর | WBCHSE HS Bengali Solved Question Answer

বের্টোল্ট ব্রেখ্ট রচিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ আন্তর্জাতিক কবিতা থেকে বহুবিকল্পীয়, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) আগামী পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ (আন্তর্জাতিক কবিতা) বের্টোল্ট ব্রেখ্ট – উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer

বহুবিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (MCQ) | ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ (আন্তর্জাতিক কবিতা) বের্টোল্ট ব্রেখ্ট – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer

১. ব্যবিলন বিখ্যাত ছিল যে কারণে—
(ক) শূন্য মাঠ (খ) শূন্য পুরী
(গ) শূন্য মরুভূমি (ঘ) শূন্য উদ্যান।

উত্তরঃ (ঘ) শূন্য উদ্যান

২. ‘কে জিতেছিল ? একলা সে ?’ —একলা বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) সিজার
(খ) স্পেনের ফিলিপ
(গ) দ্বিতীয় ফ্রেডারিক
(ঘ) আলেকজান্ডার।

উত্তরঃ (গ) দ্বিতীয় ফ্রেডারিক

৩. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন—
(ক) অনিন্দ্য সৌরভ
(খ) মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
(গ) শঙ্খ ঘোষ
(ঘ) উৎপল কুমার বসু।

উত্তরঃ (গ) শঙ্খ ঘোষ

৪. “আর্মাডা ডুবে গেলে কেঁদেছিলেন”—
(ক) ফ্রেডারিক (খ) সিজার (গ) ফিলিপ
(ঘ) আলেকজান্ডার।

উত্তরঃ (গ) ফিলিপ

৫. “সেখানে কি সবাই প্রাসাদেই থাকত ?”— কোন জায়গার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) ব্যাবিলন (খ) বাইজেনটিয়াম
(গ) রোম (ঘ) আটলান্টিস্

উত্তরঃ (ঘ) বাইজেনটিয়াম

৬. “সাত বছরের যুদ্ধ জিতেছিল”—
(ক) দ্বিতীয় ফ্রেডারিক
(খ) আলেকজান্ডার
(গ) সিজার (ঘ) ফিলিপ

উত্তরঃ (ক) দ্বিতীয় ফ্রেডারিক

৭. আলেকজান্ডার জয় করেছিলেন—
(ক) জাপান (খ) শ্রীলঙ্কা (গ) ভারত
(ঘ) ব্রহ্মদেশ।

উত্তরঃ (গ) ভারত

৮. ‘গলদের’ নিপাত করেছিল–
(ক) আলেকজান্ডার (খ) সিজার
(গ) দ্বিতীয় ফ্রেডরিক (ঘ) হিটলার।

উত্তরঃ (খ) সিজার

৯. ‘গলদের নিপাত করেছিল সিজার।’- ‘গল’ যে দেশের প্রাচীন নাম তা হল—
(ক) ইতালি (খ) ফ্রান্স (গ) গ্রিস
(ঘ) স্পেন।

উত্তরঃ (খ) ফ্রান্স

১০. মহনীয় রোম কী ছিল ?
(ক) কল্পিত নগরী (খ) প্রাচীন নগরী
(গ) প্রাচীন সৌধ (ঘ) দ্বীপ রাষ্ট্র।

উত্তরঃ (খ) প্রাচীন নগর

১১. ‘….. উপকথার আটলান্টিস, যখন সমুদ্র তাকে খেল’– ‘আটলান্টিস’ কী ?
(ক) জাহাজ (খ) শহর (গ) গ্রাসাদ
(ঘ) উদ্যাননগরী।

উত্তরঃ (ঘ) উদ্যাননগরী

১২. উপকথার নগরীর নাম কী ছিল ?
(ক) বাইজেন্টিয়ান (খ) লিমা (গ) রোম (ঘ) থিবস্।

উত্তরঃ (ক) বাইজেন্টিয়ান

১৩. লিমা যারা বানিয়েছিল, তারা হল—
(ক) পুরোহিত (খ) রাজা (গ) মজুর (ঘ) মন্ত্রী।

উত্তরঃ (গ) মজুর

১৪. ‘যখন সমুদ্র তাকে খেল’— সমুদ্র কাকে খেল ?
(ক) রোমকে (খ) আটলান্টিসকে
(গ) ব্যাবিলনকে (ঘ) লিমাকে।

উত্তরঃ (খ) আটলান্টিসকে

১৫. ‘আটলান্টিস’ কী ?
(ক) জাহাজ (খ) উপকথার রাজ্য
(গ) রোমের রাজধানী (ঘ) মহাসাগর।

উত্তরঃ (খ) উপকথার রাজ্য

১৬. থিবস শহরের দরজা ছিল ?
(ক) সাতটি (খ) একটি (গ) পাঁচটি
(ঘ) তিনটি

উত্তরঃ (ক) সাতটি

১৭. মোহনীয় রোম ছিল ?
(ক) জয়তোরনে ঠাসা
(খ) ধার্মিকদের পীঠস্থান
(গ) সোনার ঝকঝকে
(ঘ) উপকথার দেশ

উত্তরঃ (ক) জয়তোরনে ঠাসা

১৮. ব্যাবিলন সভ্যতা হল আসলে প্রাচীনকালের—
(ক) মায়া সভ্যতা
(খ) আজটেক সভ্যতা
(গ) সিন্ধু সভ্যতা
(ঘ) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা

উত্তরঃ (ঘ) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা

১৯. কবি শঙ্খ ঘোষের পোশাকি নাম হলো—
(ক) চিত্ত প্রিয় ঘোষ
(খ) সত্য প্রিয় ঘোষ
(গ) নিত্য প্রিয় ঘোষ
(ঘ) বারিদবরণ ঘোষ

উত্তরঃ (ক) চিত্ত প্রিয় ঘোষ।

২০. আলেকজান্ডার ছিলেন ?
(ক) ম্যাসিডনের রাজা (খ) রোমের রাজা
(গ) ইতালির রাজা (ঘ) ভারতের রাজা

উত্তরঃ ম্যাসিডনের রাজা।

২১. থিবস শহরের দরজা ছিল ?
(ক) সাতটি (খ) একটি (গ) পাঁচটি (ঘ) তিনটি

উত্তরঃ (ক) সাতটি

২২. দ্বিতীয় ফেডারিক জিতেছিলেন ?
(ক) পাঁচ বছরের যুদ্ধে
(খ) তিন বছরের যুদ্ধে
(গ) সাত বছরের যুদ্ধে
(ঘ) এক বছরের যুদ্ধে

উত্তরঃ (গ) সাত বছরের যুদ্ধে

২৩. ‘সেখানে কি সবাই প্রাসাদেই থাকত ?’- সেখানে বলতে—
(ক) লিমা
(খ) বাইজেন্টিয়াম
(গ) ব্রেবলিন
(ঘ) আইলান্টিস

উত্তরঃ (খ) বাইজেন্টিয়াম

২৪. ব্যাবিলন সভ্যতা হল আসলে প্রাচীনকালের—
(ক) মায়া সভ্যতা
(খ) আজটেক সভ্যতা
(গ) সিন্ধু সভ্যতা
(ঘ) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা

উত্তরঃ (ঘ) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা

২৫. চীনের প্রাচীর তৈরি কাজ শেষ হয়েছিল ?
(ক) সকাল বেলা
(খ) রাতের বেলা
(গ) সন্ধ্যা বেলা
(ঘ) দিনের বেলা

উত্তরঃ (গ) সন্ধ্যা বেলা

২৬. আলেকজান্ডার জয় করেছিলেন ?
(ক) জাপান (খ) ভারত (গ) শ্রীলঙ্কা (ঘ) বাংলাদেশ

উত্তরঃ (খ) ভারত

২৭. গলদের নিপাত করেছিল ?
(ক) আলেকজান্ডার
(খ) দ্বিতীয় ফেডারিক
(গ) জুলিয়াস সিজার
(ঘ) ফিলিপ

উত্তরঃ (গ) জুলিয়াস সিজার

২৮. ব্রেটল্ট ব্রেখট কবি ছাড়াও প্রখ্যাত ?
(ক) ঔপন্যাশিক
(খ) নাট্যকার
(গ) গল্পকার
(ঘ) চিত্রশিল্পী

উত্তরঃ (খ) নাট্যকার

২৯. ‘বইয়ে লেখা’ কার নাম ?
(ক) রাজার (খ) রানীর (গ) রাজমিস্ত্রির
(ঘ) রাধুনির

উত্তরঃ রাজার

৩০. ‘ডুবতে ডুবতে সেই রাতে চিৎকার উঠেছিল’ – কাদের উদ্দেশ্যে ?
(ক) রাজার (খ) নাবিকের (গ) ক্রীতদাস
(ঘ) ঈশ্বর

উত্তরঃ ক্রীতদাস

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন (আন্তর্জাতিক কবিতা) বের্টোল্ট ব্রেখট – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Porte Jane Amon Mojurer Proshno Question and Answer :

১. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটি অনুবাদ করেন শঙ্খ ঘোষ। শঙ্খ ঘোষের অনুবাদকাব্য ‘বহুল দেবতা, বহু স্বর’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটি ।

২. ব্যাবিলন কীজন্য বিখ্যাত ?

উত্তরঃ সম্রাট নেবুকাডনেজার খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে তাঁর সম্রাজ্ঞীর জন্য একটি ‘ঝুলন্ত বাগান’ বা ‘শূন্য উদ্যান’ তৈরি করেন। এটি বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি, তাই ব্যাবিলন বিখ্যাত ।

৩. ‘কাদের জয় করল সিজার ?’ – ‘সিজার’ কে ছিলেন ?

উত্তরঃ জুলিয়াস সিজার ছিলেন বিখ্যাত রোমান সম্রাট। সিজারের সময়ে রোমান সাম্রাজ্য ইংলিশ চ্যানেল থেকে রাইন নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।

৪. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটি কে অনুবাদ করেন ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটি অনুবাদ করেন কবি শঙ্খ ঘোষ।

৫. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় কবি ইতিহাসের প্রকৃত নির্মাতা বলে কাদের চিহ্নিত করেছেন ?

উত্তরঃ কবি বের্টোল্ট ব্রেশ্ট ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় ইতিহাসের প্রকৃত নির্মাতা হিসেবে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষকে চিহ্নিত করেছেন।

৬. ইতিহাসের নায়ক হিসেবে প্রচলিত বইয়ে কাদের নাম লেখা হয় ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে প্রচলিত বইয়ে ইতিহাসের নায়ক হিসেবে কোনো এক রাজার নাম লেখা থাকে।

৭. ‘কে বানিয়েছিল সাত দরজাওলা থিবস্ ?’– কবি কেন এরকম প্রশ্ন করেছেন ?

উত্তরঃ কবি বের্টোল্ট ব্রেখট তাঁর ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতার সূচনায় প্রশ্ন করেছেন সাত দরজাওলা থিবস্-এর নির্মাণকারী কে ? তাঁর এমন প্রশ্নের কারণ, সমাজের কাছে এই প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে তিনি উত্তর দিয়েছেন শ্রমজীবী মানুষের পরিশ্রমেই তৈরি থিবস্। ইতিহাসে রাজার নাম থাকলেও তিনি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।

৮. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে ‘থিবস্’– এর বৈশিষ্ট্য কী ছিল ?

উত্তরঃ কবি ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে থিবসের সাতটি দরজা তথা সাতটি পৃথক প্রবেশপথ ছিল।

৯. থিবস্ কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ থিবস্ হল নীলনদের তীরে অবস্থিত মিশরের বিখ্যাত শহর। এই শহরের সাতটি প্রবেশপথ ছিল।

১০. ‘বইয়ে লেখে রাজার নাম।’— এমন বলা হয়েছে কেন ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে থিবস্-এর মতো স্থাপত্যকীর্তির নির্মাতা শ্রমিকেরা হলেও প্রচলিত বইয়ে রাজাদের নাম লেখা থাকে।

১১. ‘রাজারা কি পাথর ঘাড়ে করে আনত ?’– কারা পাথর আনার শ্রম দিত ও কাদের খ্যাতি হত ?

উত্তরঃ সাত দরজাওলা থিবস্‌ বানিয়েছিল সাধারণ শ্রমিকের দল; তাই পাথর আনার শ্রমও দিত তারা। এ কাজে রাজাদের কোনো সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল না; রাজাদের কেবল খ্যাতি হয়।

১২. ‘ব্যাবিলন এতবার গুঁড়ো হল’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ পারস্যের সম্রাটদের আক্রমণে ব্যাবিলনের বারবার পর্যুদস্ত হওয়াকে বোঝাতেই কবি এ কথা বলেছেন।

১৩. ‘কে আবার গড়ে তুলল এতবার ?’— কে, কী গড়ে তুলেছিল ?

উত্তরঃ পারস্যের সম্রাটদের আক্রমণে বারবার ধ্বংস হয়ে যাওয়া ব্যাবিলনকে শ্রমিকরাই গড়ে তুলেছিল।

১৪. ‘আর ব্যাবিলন এতবার গুঁড়ো হল’— ব্যাবিলন কোথায়, অবস্থিত ?

উত্তরঃ বর্তমান ইরাকের রাজধানী বাগদাদ শহর থেকে ৫৫ মাইল দূরে অবস্থিত ব্যাবিলোনিয়ার রাজধানী ছিল ব্যাবিলন ।

১৫. ‘আর ব্যাবিলন এতবার গুঁড়ো হল’— ‘এতবার’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় পারসিক সম্রাটদের দ্বারা ব্যাবিলনের বারবার ধ্বংস এবং শ্রমিকদের দ্বারা এর পুনর্নির্মাণের ঐতিহাসিক সত্যকে ফুটিয়ে তুলতে কবি ব্রেখট ‘এতবার’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

১৬. ‘সোনা ঝকঝকে লিমা’ কী ?

উত্তরঃ পেরুর রাজধানী এবং প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হল লিমা। প্রাচীন লিমার ধনসম্পদে পূর্ণ বৈভবকে বোঝাতে ‘সোনা ঝকঝকে’ শব্দবন্ধটি ব্যবহৃত হয়েছে।

১৭. ‘তারা থাকত কোন বাসায় ?’— কাদের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় বৈভবে ঐশ্বর্যে পূর্ণ লিমার আসল কারিগরেরা অর্থাৎ শ্রমজীবী মানুষেরা কোথায় থাকত, জানা যায় না। কারণ তাদের শ্রমকে ইতিহাস স্বীকৃতি জানায় না।

১৮. ‘তারা থাকত কোন্ বাসায় ?’ — তা জানা যায় না কেন ?

উত্তরঃ শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগ ও অবদানের কথা ইতিহাসে উল্লিখিত হয় না; তাই বৈভবপূর্ণ লিমায় শ্রমিকেরা কোথায় থাকত তা জানা যায় না।

১৯. ‘চিনের প্রাচীর যখন শেষ হল’ — তখন কী হয়েছিল ?

উত্তরঃ কবি ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে বিস্ময়কর চিনের প্রাচীরের কাজ শেষ হওয়ার পরে রাজমিস্ত্রিরা চিরতরে ইতিহাসের অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল।

২০. ‘সেই সন্ধ্যায় কোথায় গেল রাজমিস্ত্রিরা ?’– কোন্ সন্ধ্যার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় চিনের প্রাচীর নির্মাণকার্য শেষ হওয়ার পরের সন্ধ্যার কথা বলা হয়েছে।

২১. ‘জয়তোরণে ঠাসা মহনীয় রোম’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি এবং স্থাপত্য ও শিল্পকলার সমৃদ্ধির ছবি ফুটিয়ে তুলতে কবি প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

২২. ‘কাদের জয় করল সিজার।’–সিজার কাদের জয় করেছিলেন ?

উত্তরঃ রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার গল্‌দের পরাস্ত করেছিলেন।

২৩. ‘এত যে শুনি বাইজেনটিয়াম’— ‘বাইজেনটিয়াম’ কী ?

উত্তরঃ মধ্যযুগে কনস্টান্টিনোপলকে কেন্দ্র করে গ্রিকভাষী রোমানরা যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল তাকে বোঝাতেই ‘বাইজেনটিয়াম’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

২৪. ‘সেখানে কি সবাই প্রাসাদেই থাকত ?’— ‘সবাই’ কারা ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় ‘সবাই’ বলতে বাইজেনটিয়াম সভ্যতার সাধারণ শ্রমজীবী মানুষকে বোঝানো হয়েছে।

২৫. ‘সেখানে কি সবাই প্রাসাদেই থাকত ?’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ বাইজানটিয়াম সভ্যতায় সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের বৈভবপূর্ণ প্রাসাদগুলিতে কোনো স্থান ছিল না। এ কথাই কবি বলতে চেয়েছেন।

২৬. ‘এমনকী উপকথার আটলান্টিস ….’ – আটলান্টিস কী ?

উত্তরঃ প্রাচীন গ্রিক কাহিনি অনুসারে ভূমিকম্পের ফলে সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাওয়া একটি উন্নত দ্বীপরাষ্ট্র।

২৭. ‘যখন সমুদ্র তাকে খেল’— সমুদ্র কী খেয়েছিল ?

উত্তরঃ গ্রিক পুরাণ অনুসারে আটলান্টিস দ্বীপটি সমুদ্রের অতলে ডুবে গিয়েছিল। কবি এ কথা বোঝাতেই ‘সমুদ্র তাকে খেল’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২৮. ‘ডুবতে ডুবতে সেই রাতে চিৎকার উঠেছিল’— ‘চিৎকার’ ওঠার কারণ কী ছিল ?

উত্তরঃ উপকথার আটলান্টিস দ্বীপে ডুবতে ডুবতে চিৎকার উঠেছিল ক্রীতদাসদের জন্য।

২৯. ‘ডুবতে ডুবতে সেই রাতে চিৎকার উঠেছিল’ — এখানে কোন্ রাতের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে উপকথার আটলান্টিস দ্বীপ সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার রাতে চিৎকার ওঠার কথা বলা হয়েছে।

৩০. ‘ভারত জয় করেছিল তরুণ আলেকজান্ডার’– কখন জয় করেছিলেন ?

উত্তরঃ ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় তরুণ আলেকজান্ডার হিদাস্পিসের যুদ্ধে রাজা পুরুকে হারিয়ে ভারত জয় করেছিলেন।

৩১. ‘একলাই না কি’— কে, কীভাবে ভারত জয় করেছিল ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা অনুসারে তরুণ আলেকজান্ডার দক্ষ ও অনুগত এক বিশাল সেনাদলের সাহায্যে পুরুকে হারিয়ে ভারত জয় করেছিলেন।

৩২. ‘গল্‌দের নিপাত করেছিল’ — ‘গল্’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় ‘গল্’ বলতে ফ্রান্সের আদিম উপজাতিদের কথা বলা হয়েছে ।

৩৩. ‘গল্‌দের নিপাত করেছিল’ — কে করেছিল ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ অনুসারে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার যুদ্ধে গল্‌দের নিপাত বা ধ্বংস করেছিলেন।

৩৪. ‘নিদেন একটা রাঁধুনি তো ছিল ?’ — কার সঙ্গে, কখন রাঁধুনি থাকার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় কবি গলদের যুদ্ধে পরাস্ত করার সময় জুলিয়াস সিজারের সঙ্গে নিদেনপক্ষে একটা রাঁধুনি থাকার কথা বলেছেন।

৩৫. বিরাট আর্মাডা যখন ডুবল’— ‘আর্মাডা’ কী ?

উত্তরঃ ১৫৮৮ খ্রিস্টাব্দে অ্যাংলো–স্প্যানিশ যুদ্ধে স্পেনের সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যে বিরাট রণতরি পাঠিয়েছিলেন, তা আর্মাডা নামে পরিচিত।

৩৬. ‘বিরাট আর্মাডা যখন ডুবল’– আর্মাডা ডুবেছিল কেন ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত স্প্যানিশ আর্মাডা ইংল্যান্ডের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ডুবে গিয়েছিল।

৩৭. ‘স্পেনের ফিলিপ কেঁদেছিল খুব’— ‘ফিলিপ’ কে ছিলেন ?

উত্তরঃ কবি ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতার ফিলিপ হলেন ষোড়শ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপ। ইনি ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্পেনের রাজা ছিলেন।

৩৮. স্পেনের ফিলিপ কেঁদেছিল খুব’– ফিলিপ কেন কেঁদে ছিলেন ? [ সংসদ নমুনা প্রশ্ন।

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় উল্লিখিত রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ স্প্যানিশ আর্মাডা ডুবে যাওয়ার দুঃখে ও হতাশায় কেঁদে ফেলেছিলেন।

৩৯. ‘আর কেউ কাঁদেনি’ বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ কবি ব্রেশ্ট ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় স্প্যানিশ আর্মাডার পতনে রাজা ফিলিপের সঙ্গে যে সমগ্র স্পেনবাসী কেঁদে উঠেছিল সেই কথাই বলতে চেয়েছেন।

৪০. ‘সাত বছরের যুদ্ধ জিতেছিল দ্বিতীয় ফ্রেডারিক’ — দ্বিতীয় ফ্রেডারিক যুদ্ধ জয় করেছিলেন কীভাবে ?

উত্তরঃ ফ্রেডারিক দ্য গ্রেট বা দ্বিতীয় ফ্রেডারিক প্রাশিয়ার রাজা। ১৭৫৬ থেকে ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দ ব্যাপী সাত বছর যুদ্ধ হয়েছিল। প্রাশিয়া – ইংল্যান্ডের যৌথবাহিনীর সঙ্গে ফ্রান্স – অস্ট্রিয়া – রাশিয়া -সুইডেন – স্যাকসনি রাষ্ট্রসমূহের সম্মিলিত বাহিনীর যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে জয়ী হন প্রাশিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডারিক। তিনি যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন সৈন্যসামন্তদের সহায়তায়।

৪১. “… স্পেনের ফিলিপ কেঁদেছিল কেঁদেছিলেন ? কে জিতেছিল ? একলা সে ?”— এমন বলা হয়েছে কেন ?

উত্তরঃ সাধারণ সৈনিকদের সামরিক দক্ষতাই হল রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রেডারিকের সাতটি ধর্মযুদ্ধে জয়লাভের আসল কারণ। এ কথাই কবি বলতে চেয়েছেন।

৪২. ‘পাতায় পাতায় জয়’ বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ কবি ব্রেখট ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় ইতিহাসে ঘটে যাওয়া অসংখ্য যুদ্ধজয়ের বিবরণকে ‘পাতায় পাতায় জয়’ শব্দবন্ধের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন ।

৪৩. ‘জয়োৎসবের ভোজ বানাত কারা ?’– উদ্ধৃত প্রশ্নটি করা হয়েছে কেন ?

উত্তরঃ ব্রেখট ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় ইতিহাসের পাতায় ঘটে যাওয়া অসংখ্য জয়োৎসবের ভোজে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ত্যাগ ও অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

৪৪. ‘দশ-দশ বছরে এক-একজন মহামানব’– বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় ইতিহাসের পাতায় ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন রাজা রাজড়াদের নানান দশকে আবির্ভাব। অর্থহীন প্রসিদ্ধিকে বিদ্রুপ করে কবি উপরোক্ত মন্তব্যটি করেছেন।

৪৫. ‘খরচ মেটাত কে ?’— কীসের খরচ ?

উত্তরঃ ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় রাজাদের রাজসিক বৈভব– জীবনযাত্রা ও জয়োৎসবের ভোজের খরচের কথা বলা হয়েছে।

৪৬. ‘খরচ মেটাত কে ?’— কারা খরচ মেটাত ?

উত্তরঃ রাজাদের রাজসিক বৈভব– জীবনযাপন এবং বিজয়োৎসবের ভোজের খরচ মেটাত সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরা। এই ঐতিহাসিক সত্যকেই কবি স্পষ্ট করেছেন।

৪৭. ‘কত সব খবর !’ — খবরটি কী ?

উত্তরঃ ব্রেখটের ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় প্রচলিত ইতিহাসে রাজারাজড়াদের গুণকীর্তন আর সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের স্বীকৃতিহীনতার কথাই বলা হয়েছে।

৪৮. ‘কত সব প্রশ্ন’ – প্রশ্নকর্তা কে ?

উত্তরঃ পাঠ্য ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় উল্লিখিত প্রশ্নগুলির প্রশ্নকর্তা হলেন পড়তে জানে এমন এক মজুরের জবানিতে কবি বের্টোল্ট ব্রেখট স্বয়ং।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর (Essay Type) | ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ (আন্তর্জাতিক কবিতা) বের্টোল্ট ব্রেখ্ট – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer

১. “কে আবার গড়ে তুলল এতবার” – কী গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে ? এই প্রশ্নের মাধ্যমে কবি কি বলতে চেয়েছেন ? ১+৪

উত্তরঃ বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ও শঙ্খ ঘোষ কর্তৃক অনূদিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতা থেকে সংকলিত আলোচ্য উক্তিটিতে প্রাচীন নগরী ব্যাবিলনের বারংবার গড়ে তােলার কথা বলা হয়েছে।

আলােচ্য কবিতাটিতে এই প্রশ্নের মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে, পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রমজীবী মানুষের গুরুত্বই সর্বাপেক্ষা বেশি। অথচ যারা ক্ষমতাবান শাসক, তারাই খ্যাতির আলােকে আলােকিত হন। বহুযুগ ধরে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের নিয়েই প্রথাগত ইতিহাস লেখা হয়ে আসছে। আমাদের প্রচলিত ইতিহাসে রাজারাজড়া এবং সাম্রাজ্যবাদী শাসকের জয়কেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর, সমাজের উঁচুতলার বিত্তবান মানুষরাই সেই ইতিহাসকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

কবি যথার্থই এই অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, ইতিহাসের প্রকৃত কারিগর সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরাই। প্রাচীনতম মেসােপটেমিয়া সভ্যতার নগররাষ্ট্র ব্যাবিলন যেমন নির্মাণ করেছেন তারাই, তেমনই বারংবার ধ্বংস হবার পর তা পুনরায় গড়ে তুলেছেন ইতিহাসে স্থান না-পাওয়া সেই শ্রমজীবী মানুষরাই। শ্রমজীবী মানুষের ঘাম-রক্ত-শ্রমের ইতিহাস প্রথাগত ইতিহাসের আড়ালেই থেকে যায়। প্রশ্নোধৃত উক্তিটির মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে সাধারণ, শ্রমজীবী মানুষের হাতেই থাকে ইতিহাসের প্রকৃত চাবিকাঠি

২. “সেই সন্ধ্যায় কোথায় গেল রাজমিস্ত্রিরা ?” – রাজমিস্ত্রিরা কি নির্মাণ করেছিল ? এই প্রশ্নের মাধ্যমে বক্তা কি বলতে চেয়েছেন ? ১+৪

উত্তরঃ বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ও শঙ্খ ঘোষ কর্তৃক অনূদিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন‘ কবিতায় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ চিনের প্রাচীর নির্মাণ প্রসঙ্গে মজুরের জবানিতে কবি স্বয়ং প্রশ্নে উল্লেখিত মন্তব্যটি করেছেন।

চৈনিক সম্রাট সি-হুয়াং-তি হুনদের অক্রমণ প্রতিহত করার জন্য তৃতীয় খ্রিষ্টপূর্বাব্দে চিনের প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে হান, সুই এবং মিং রাজাদের সময়েও সাড়ে ছয় হাজার কিমি দীর্ঘ এই পাঁচিলটি নির্মাণ ও পুনর্গঠনের কাজ চলেছিল। অসংখ্য রাজমিস্ত্রির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি নির্মিত হয়।

শত শত বছরের প্রচেষ্টায়, অগনিত সাধারণ শ্রমিকের ত্যাগ ও শ্রমের দৃষ্টান্ত হল এই সুদীর্ঘ প্রাচীর। এটি নির্মাণের সময় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, ইতিহাসে তার সাক্ষ্য মেলে। এই সমস্ত মানুষদের আত্মত্যাগে চিনের প্রাচীর নির্মিত হয়েছে আমরা জানালেও ইতিহাস তাদের সম্মান দেয়নি, দেয়নি স্বীকৃতি। সামান্য প্রাপ্তি থেকে এই সমস্ত মুটে মজুররা বঞ্চিত।

বিশ্ব ইতিহাস পর্যালোচনা করলে প্রকট হয়ে ওঠে শ্রমজীবী মানুষের আত্মবলিদানের স্মৃতিকথা। অথচ চিনের প্রাচীর নির্মাণের নির্মাতা হিসাবে কৃতিত্বের শিরোপা লাভ করেছে চৈনিক সম্রাটেরা। প্রচলিত ইতিহাসের পাতায় প্রকৃত সত্যের এমন অমর্যাদাকেই কবি চোখে আঙুল দিয়ে শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে দেখিয়ে দিতে চান। ক্ষমতার ইতিহাসের এই বৈষম্যকে বিদ্রূপ করে সমষ্টিগত মানুষের চলমানতার ইতিহাসকেই পাঠকের চোখের সামনে তুলে ধরেন।

৩. “বইয়ে লেখে রাজার নাম। রাজারা কি পাথর ঘাড়ে করে আনত ?” – কারা, কেন পাথর ঘাড়ে করে এনেছিল ? ১+৪

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ও শঙ্খ ঘোষ কর্তৃক অনূদিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

আলোচ্য অংশে কবি নির্মাণ শ্রমিকদের কথা বলেছেন, যে কোনো নির্মাণ কাজের সময় তারা পাথর ঘাড়ে করে আনত।

ইতিহাসের সবকিছু ঘিরে যত নির্মাণ কাজ, যত গঠনমূলক কীর্তি, সব কৃতিত্বের অধিকারী ও খ্যাতি রাজরাজড়াদের নামেই। কিন্তু তাঁরা ঘাড়ে করে পাথর বয়ে আনে নি। পাথর বয়ে এনেছিল নির্মাণকর্মীরা। তাদের শ্রমে গড়ে ওঠে বিরাট প্রাসাদ, ইমারত প্রভৃতি। যারা শ্রম দিয়ে, জীবন দিয়ে, প্রতিটি রক্তবিন্দু দিয়ে এইসব গঠন ও নির্মাণ কাজে আত্মনিয়োগ করে ইতিহাসের পাতায় তাদের সৃষ্টি ও শিল্পকে অমরত্ব দিয়েছে। কিন্তু তাদের নামোল্লেখ নেই, তাদের কথা কেউ মনেও রাখেনি।

সাত দরজাওয়ালা থিবস হোক, বারবার ধ্বংস হওয়া ব্যাবিলন নগরীরর পুনর্নির্মাণ হোক, লিমা-নগরীর নির্মাণশৈলী হোক, কিংবা চিনের সুবিশাল প্রাচীর নির্মাণ হোক সবক্ষেত্রে নির্মাণ শ্রমিকদের অবদান মুখ্য। কিন্তু তারা উপেক্ষিত অনুক্ত ও অবহেলিত। যুগ যুগ ধরে শ্রমিক শ্রেণির প্রতি এই অন্যায় ও অবিচার হয়ে এসেছে। বর্তমানও তার ব্যতিক্রম নয়।

৪. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় কবি কী কী বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন ? প্রশ্নগুলির তাৎপর্য কী ?

উত্তরঃ কবি বের্টেল্ট ব্রেখট-এর ‘Questions From a Worker who Reads’ কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেন কবি শঙ্খ ঘোষ। ভাষান্তরের কারণে কবি শঙ্খ ঘোষ কবিতাটির নামকরণ করেছেন ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’। মার্কসীয় ভাবনায় দীক্ষিত কবি শ্রমজীবী মানুষদের সভ্যতার অগ্রগতির অন্যতম কারিগর বলে উল্লেখ করেছেন। যাদের শ্রমের উপর নির্ভর করে সভ্যতার ইমারত গড়ে ওঠে সেই সকল শ্রমজীবী মানুষদের পক্ষ অবলম্বন করে কবি তথাকথিত সমাজের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখেছেন।

সকল প্রকার নির্মাণের পিছনে আছে শ্রমজীবী মানুষের অবদান। যাদের কায়িক পরিশ্রমের ওপর সভ্যতার রথচক্র নির্ভর করে তাদের কোনো কথাই ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি। শত শত সাম্রাজ্যের উত্থান পতন ঘটে কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের কর্ম থেমে থাকে না। তাই কবি প্রশ্ন করেছেন, থিবস কারা নির্মাণ করে ?, বাইজানটিয়ান সভ্যতা কারা গড়ে তোলে ?, সিজার কি একাই যুদ্ধ করেছিলেন ?, আলোকজাণ্ডার কি একাই ভারত জয়ে এসেছিলেন ? কবিতার দুটি স্তবকে এই সব প্রশ্নের উল্লেখ আছে।

প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তরে পাওয়া যায় শ্রমজীবী মানুষের অবদানের কথা। একই সাথে পাওয়া যায় তাদের অবহেলিত ও বঞ্চিত জীবনের কথা, যাদের কর্মে সভ্যতার উন্নতি সূচক নিদর্শনগুলি গড়ে ওঠে। নির্মাণকার্য সম্পন্ন হওয়ার পর তাদের কোনো কথাই ইতিহাসের পাতায় স্থান পায় না। স্রষ্টাদের স্থান হয় সবার অগোচরে। তাদের জীবনের অন্ধকার দিনগুলির অবসান হয় না।

কবিতার প্রত্যেকটি প্রশ্ন পাঠককে যেন সচেতন করে তোলে। শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা বা অবদান যে কতটা সে সম্পর্কে সকলকে অবগত করানোই কবির মূল লক্ষ্য। শ্রমজীবী মানুষের অবদান সম্পর্কে ইতিহাস যে নীরব সে কথাই ব্যঞ্জিত হয়েছে কবির কলমে।

৫. “ভারত জয় করেছিল তরুণ আলেকজান্ডার। একলাই নাকি ?” – আলেকজান্ডার কে ছিলেন ? ‘একলাই না কি’ বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন ? ১+৪

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ও শঙ্খ ঘোষ কর্তৃক অনূদিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

মহান বীর আলেকজান্ডার ছিলেন গ্ৰিসের নগররাষ্ট্র ম্যাসিডনের রাজা। তিনি দিগ্বিজয়ে বেরিয়ে মিশর, পারস্য, আফগানিস্তানে আধিপত্য বিস্তার করে ভারত অভিযান করেন।

আলোচ্য কবিতায় কবি পরিচিত ও প্রথাগত ইতিহাসের সীমাবদ্ধতাকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। সেই প্রসঙ্গেই আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের প্রসঙ্গটির উল্লেখ করেছেন কবি। ৩২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডারের ভারত বিজয়ের সূচনা হয়। ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হিদাস্পিসের যুদ্ধে পুরুর সঙ্গে সন্ধি করতে বাধ্য হন আলেকজান্ডার। তাঁর এই ভারত জয়ের জন্য যে সৈনিকরা তাকে সাহায্য করেছিলেন, ইতিহাসে তাদের কোনো উল্লেখ নেই, ইতিহাস তাদের রণকুশলতা অমর করে রাখেনি। অথচ তাদের আত্মত্যাগ ছাড়া আলেকজান্ডারের ভারত জয়ের স্বপ্ন কিছুতেই সাফল্যের মুখ দেখতে পারত না।

কবি বলতে চেয়েছেন যে, প্রচলিত ইতিহাসের লক্ষণই হল প্রভুত্বকামী শক্তির জয় ঘোষণা করা। কিন্তু যাঁরা তাঁকে ইতিহাসের নায়ক করে, নেপথ্যে থেকে কার্যসিদ্ধি ঘটায় তাদের কথা কেউ মনে রাখে না। এই শ্রেণিই হল ইতিহাসের প্রকৃত কারিগর। শ্রমজীবীই হোক বা সাধারণ মানুষ ক্ষমতাবানদের আলোয় তারা চির উপেক্ষিতই থেকে যায়।

সাত দরজাওয়ালা থিবসই হোক বা ঝকঝকে লিমা – নেপথ্যের কারিগরদের কথা কেউ মনে রাখে না, থেকে যায় শুধু রাজার নাম। আলেকজান্ডারের আক্রমণের উল্লেখে একইভাবে উপেক্ষিত থেকে যায় সেনাবাহিনীও। প্রথাগত ইতিহাসের অসম্পূর্ণতাকে এভাবেই কবি স্পষ্ট করেছেন এই কবিতায়।

৬. “পাতায়-পাতায় জয় বা জয়োৎসবের ভোজ বানাত কারা ?” – পাতায় পাতায় কাদের জয় লেখা ? জয়োৎসবের ভোজ যারা বানাত তাদের প্রতি কবির কী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে ? ২+৩

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ও শঙ্খ ঘোষ কর্তৃক অনূদিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রচলিত ইতিহাস বইয়ের পাতায় শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের জীবন যন্ত্রণা তো দূরের কথা, তাদের উপেক্ষিত করা হয়েছে। আর অমরকীর্তি গাঁথা হয়েছে পুঁজিবাদী শাসকের অঙ্গলিলেহনে রচিত রাজা কিংবা, শাসকের ক্ষমতা দম্ভের ইতিহাস ও বীরত্বগাথা।

জয়োৎসবের ভোজ বলতে ক্ষমতাবান শাসকের সাম্রাজ্যবিস্তার বা সাফল্যের কীর্তি কাহিনী প্রচারের দিকটিকেই কবি ফুটিয়ে তুলেছেন। সিজার, ফিলিপ, আলেকজাণ্ডার, ফেডারিকের জয় আসলে রাজার আত্মদম্ভ ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা বা মহিমা প্রকাশের কৌশল মাত্রা। শাসকের ব্যক্তিমাহাত্ম্য প্রচারের এই নির্লজ্জ উল্লাসকেই তিনি ‘জয়োৎসবের ভোজ’ বলে চিহ্নিত করেছেন।

আন্তরিক ইতিহাস সচেতন কবি বের্টোল্ট ব্রেখট বঞ্চিত সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের কর্মচঞ্চল ঐতিহাসিক ভূমিকার দিকটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। ইতিহাসের বিজয় কাহিনীর প্রসঙ্গ উপস্থাপনের মাধ্যমে বিজয়ের পরবর্তী অনুষ্ঠান সূচীকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সেখানে জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠা রাজা-রাজড়াদের জয়োৎসবের ভোজের আয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

কবি এই রাজা-রাজড়াদের আনন্দের প্রতিচ্ছবির আড়ালে প্রকাশ করেছেন রন্ধনকারীদের হৃদয় যন্ত্রণা ও ক্ষোভকে। যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রমে সুস্বাদু রান্না করে উৎসবের মাহাত্ম্যকে সাফল্যমণ্ডিত ও বর্ণময় করে তোলে তাদের খবর কেউ নেয় না। তারা কেবল মানুষের রসনাতৃপ্ত করে কিন্তু নিজে তৃপ্তি পায় না। পায় কেবল সামাজিক লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান। সমাজের কাছে ইতিহাসের পাতায় তারা অজ্ঞাত।

যাদের শ্রমে এমন উৎসবের আয়োজন তারা ব্রাত্যজন হওয়ায় কবি ইতিহাস ও বাস্তব জ্ঞান সমৃদ্ধ ভাবনা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন ইতিহাসের হৃদয়হীনতার ছবি বা নির্মমতার চিত্র। জয়োৎসবের পূর্ণতা শ্রমজীবী মানুষ অর্থাৎ রাঁধুনিকে বাদ দিয়ে হয় না। কবি মানবিক হৃদয় দিয়ে সেই সমস্ত শ্রমজীবী মানুষদের সমবেদনা জানিয়েছেন।

৭. “স্পেনের ফিলিপ কেঁদেছিল খুব। আর কেউ কাঁদেনি ?” – উদ্ধৃতাংশটি যে কবিতার অন্তর্গত সেই কবিতায় আর কোন কোন শাসকের নাম আছে ? ফিলিপ কেঁদেছিলেন কেন ? ‘আর কেউ কাঁদেনি ?’ বলতে বক্তা কী বোঝাতে চেয়েছেন ? ২+১+২

উত্তরঃ বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ও শঙ্খ ঘোষ কর্তৃক অনূদিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় স্পেনের রাজা ফিলিপ ছাড়া আর যেসব শাসকের নাম উল্লেখ রয়েছে তারা হলেন রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার, গ্ৰিসের ম্যাসিডন রাজ্যের সম্রাট আলেকজান্ডার এবং রাশিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রেডরিক।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে স্পেনের নৌবহর ‘স্প্যানিশ আর্মাডা’র শোচনীয় পরাজয়ে স্পেন রাজ ফিলিপের শোক ও পরিতাপের শেষ নেই। তাই তিনি কেঁদেছিলেন।

ইতিহাসের পাতায় পাতায় কেবল যুদ্ধের কাহিনি। ঐতিহাসিকরা বিজয়ী রাজার বিজয়োল্লাসের কথা যেমন তুলে ধরেছেন তেমনি পরাজিত রাজার মনোবেদনা লিপিবদ্ধ করতে কার্পণ্য করেননি। আসলে ইতিহাস আর রাজকাহিনি সমার্থক হয়ে উঠেছে। প্রচলিত ইতিহাসে সাধারণ মানুষের উল্লেখ নেই বললেই চলে। অথচ, যেকোনো যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকত সাধারণ যোদ্ধারা। তারা রাজা নয়, তাই তাদের বীরত্বের কথা বা বলিদানের কথা ইতিহাসে স্থান পায়নি।

কবি প্রশ্ন করেছেন, ‘আর কেউ কাঁদেনি ? এর উত্তরে বলা যায় যে রাজার সৈন্য, সেনাপতি এবং তাদের পরিবারের লোকজনও চোখের জল ফেলেছিল। স্পেনরাজ ফিলিপের কান্নার থেকে তাদের কান্নার গভীরতা আরো বেশি ছিল। আলোচ্য প্রশ্নের মাধ্যমে কবি সাধারণ সৈন্যদের মহত্বের কথাই তুলে ধরতে চেয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন্ ২০২৪

Leave a Reply