H.S Bengali Question Paper 2020 with answer / বাংলা প্রশ্নপত্র উচ্চ মাধ্যমিক ২০২০ উত্তর সহ ।

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

বাংলা
‘ক’ ভাষা
(নতুন পাঠক্রম )
২০২০

মােট সময় : ৩ ঘন্টা ১৫ মিনিট
পূর্ণমান : ৮০

PART – B

পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশ :
১. পরিমিত এবং যথাযথ উত্তরের জন্য বিশেষ মূল্য দেওয়া হবে।
২. বর্ণাশুদ্ধি, অপরিচ্ছন্নতা এবং অপরিষ্কার হস্তাক্ষরের ক্ষেত্রে নম্বর কেটে নেওয়া হবে।
৩.উপান্তে প্রশ্নের পূর্ণমান সূচিত আছে।


উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন্ ২০২৪


বিভাগ- ‘খ’ (নম্বর- ৩০)

১. ঠিক বিকল্পটি নির্বাচন করাে: ১x১৮ =
১৮

১.১ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত
হয়েছিল—
(ক) বিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিকে
(খ) উনিশ শতকের শেষের দিকে
(গ) সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমে
(ঘ) আঠারাে শতকের শেষে

উত্তরঃ (ক) বিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিকে।

১.২ রূপমূল পরিবারের রূপের বিকল্পকে
বলা হয়—
(ক) স্বাধীন রূপমূল (খ) পরাধীন রূপমূল
(গ) সহরূপ (ঘ) বদ্ধ রূপমূল।

উত্তরঃ (গ) সহরূপ।

১.৩ প্রথম বাঙালি সাঁতারু যিনি বিখ্যাত
হয়েছিলেন—
(ক) মিহির সেন (খ) আরতী সাহা
(গ) বুলা চৌধুরী (ঘ) রেশমি শর্মা।

উত্তরঃ (ক) মিহির সেন।

১.৪ তুমি নির্মল করাে মঙ্গল করে গানটি
রচয়িতা—
(ক) অতুলপ্রসাদ সেন
(খ) রজনীকান্ত সেন
(গ) দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
(ঘ) কাজী নজরুল ইসলাম।

উত্তরঃ (খ) রজনীকান্ত সেন।


👉আরো দেখো : সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্র👈


১.৫ বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম রঙিন বাংলা
ছবির নাম হল—
(ক) সপ্তপদী (খ) স্বরলিপি (গ) কাঞ্চনজঙ্ঘা
(ঘ) পথে হল দেরি।

উত্তরঃ (ঘ) পথে হল দেরি।

১.৬ হাসান আব্দালের বর্তমান নাম কি ?
(ক) হাসান সাহেব (খ) পাঞ্জা সাহেব
(গ) নানা সাহেব (ঘ) বশী সাহেব।

উত্তরঃ (খ) পাঞ্জা সাহেব।

অথবা, ব্যাবিলন বিখ্যাত ছিল যে কারণে—
(ক) শূন্য মাঠ (খ) শূন্য পুরী
(গ) শূন্য মরুভূমি (ঘ) শূন্য উদ্যান।

উত্তরঃ (ঘ) শূন্য উদ্যান।

১.৭ “A horse! A horse! My kingdom
for a horse”- উদ্ধৃত সংলাপটি কোন নাটক থেকে গৃহীত হয়েছে ?
(ক) ম্যাকবেথ (খ) অথেলাে
(গ) রিচার্ড দি থার্ড (ঘ) জুলিয়াস সিজার।

উত্তরঃ (গ) রিচার্ড দি থার্ড।

অথবা, লভ সিনে কোন বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার
হয়েছিল ?
(ক) বেহালা (খ) সেতার (গ) গিটার
(ঘ) হারমােনিয়াম।

উত্তরঃ (ঘ) হারমােনিয়াম।

১.৮ ‘হাসির খােরাক, পপুলার জিনিসের
খােরাক’ কোথায় পাওয়া যাবে ?
(ক) ঘরে (খ) বাইরে (গ) মাঠে (ঘ) ঘাটে।

উত্তরঃ (খ) বাইরে।

অথবা, তােমার প্রেমে আমাকে আবৃত করে
দাও’- কথাটি বলেছে—
(ক) সুজা (খ) দারা (গ) মােরাদ
(ঘ) পিয়ারা বানু।

উত্তরঃ (ক) সুজা।

১.৯ কাবুকি থিয়েটার কোন দেশের—
(ক) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (খ) ভিয়েতনামের
(গ) জাপানের (ঘ) রাশিয়ার।

উত্তরঃ (গ) জাপানের

অথবা, “অদৃষ্ট তাে মানেন আপনি” সংলাপের বক্তা—
(ক) অমর গাঙ্গুলী (খ) রজনীকান্ত
(গ) কালিনাথ সেন (ঘ) শম্ভু মিত্র।

উত্তরঃ (গ) কালিনাথ সেন।

১.১০ এ জগৎ—
(ক) মিথ্যা নয় (খ) সত্য নয় (গ) স্বপ্ন নয়
(ঘ) কঠিন নয়।

উত্তরঃ (গ) স্বপ্ন নয়।

১.১১ ‘দেহ চায়’— দেহ কী চায় ?
(ক) গাছ (খ) সবুজ গাছ (গ) বাগান
(ঘ) সবুজ বাগান।

উত্তরঃ (ঘ) সবুজ বাগান।

১.১২ “গলিত সােনার মতাে উজ্জ্বল
“আলাের স্তম্ভ” কে এঁকে দেয়—
(ক) ডুবন্ত সূর্য (খ) অলস সূর্য
(গ) উদীয়মান সূর্য (ঘ) দুপুরের সূর্য।

উত্তরঃ (খ) অলস সূর্য।

১.১৩ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতাে
ঝিলমিল করছে—
(ক) বন ও আকাশ
(খ) আকাশ ও মাঠ
(গ) মাঠ ও বন
(ঘ) সুন্দরীর বন ও অর্জুনের বন।

উত্তরঃ (ক) বন ও আকাশ।

১.১৪ ভারতবর্ষ’ গল্পে ‘জেহাদ’ ঘােষণা
করেছিল—
(ক) মােল্লা সাহেব (খ) করিম ফরাজি
(গ) ফজলু সেখ (ঘ) আকবর মিঞা।

উত্তরঃ (ক) মােল্লা সাহেব।

১.১৫ “বাবুরা খায়”— বাবুরা কী খায় ?
(ক) নানাবিধ চাল (খ) নানাবিধ ফল
(গ) নানাবিধ পানীয় (ঘ) নানাবিধ শাক।

উত্তরঃ (ক) নানাবিধ চাল।

১.১৬ “একসময় দাগি ডাকাত ছিল” কে ?
(ক) করিম ফরাজি (খ) মােল্লা সাহেব
(গ) নিবারণ বাগদি (ঘ) ভটচাজ মশাই।

উত্তরঃ (গ) নিবারণ বাগদি।

১.১৭ ‘বাসিনী বাগ্যতা করি তাের’—
কে ?
(ক) সেজো বউ (খ) উচ্ছব (গ) হরিচরণ
(ঘ) বড়াে পিসিমা।

উত্তরঃ (খ) উচ্ছব।

১. ১৮ মৃত্যুঞ্জয়ের বাজার ও কেনাকাটা করে—
(ক) নিখিল (খ) টুনুর মা (গ) সে নিজে
(ঘ) চাকর ও ছােট ভাই।

উত্তরঃ (ঘ) চাকর ও ছােট ভাই।

২. অনধিক কুড়িটি শব্দে প্রশ্নগুলির
উত্তর দাও। ১x১২ = ১২

২.১ কী জন্য ‘হুতাশে’ সেদিন কতটা কাঠ কেটেছিল উচ্ছব ?

উত্তরঃ মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে উচ্ছব বাসিনীর মনিব বাড়িতে ভাতের হুতাশে আড়াই মণ কাঠ কেটে ছিল।

২.২ ‘আমি দেখি’ কবিতায় নিজের উজ্জীবনিশক্তি কীভাবে কবি প্রকৃতির মধ্যে খুঁজতে চেয়েছেন ?

উত্তরঃ ‘আমি দেখি কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় দু’চোখ ভরে সবুজ দেখে এবং দেহ-মনে সবুজের ঘ্রাণ নিয়ে নিজের উজ্জীবনিশক্তি প্রকৃতির মধ্যে খুঁজতে চেয়েছেন।

২.৩ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে থাকতে না পারলে কবির কী মনে হবে ?

উত্তরঃ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে থাকতে না পারলে কবির মনে হবে লেখালেখি করা, গান গাওয়া বা ছবি আঁকা এসব বৃথা।

২.৪ ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের চরিত্রলিপি বয়সসহ উল্লেখ করাে।

উত্তরঃ নানা রঙের দিন’ নাটকের চরিত্রলিপি
এইরকম—
(১) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়– বৃদ্ধ অভিনেতা
(বয়স- ৬৮);
(২) কালীনাথ সেন– প্রম্পটার (বয়স প্রায় ৬০)।

অথবা,

“সে লড়াই সত্যিকারের তলােয়ার দিয়ে ঝনঝন করে বাস্তব লড়াই নয়”— শুধু ভঙ্গির মাধ্যমে লড়াইতে কীভাবে একজন মারা যাবে ?

উত্তরঃ কাল্পনিক খাপ থেকে কাল্পনিক তলােয়ার বের করে ভীষণভাবে কাল্পনিক যুদ্ধ করতে করতে একজন পেটে কাল্পনিক খোঁচা খেয়ে কাল্পনিকভাবে মারা গিয়েছিল।

২.৫ শৈলীবিজ্ঞান কাকে বলে ?

উত্তরঃ ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখা কোনাে সাহিত্যিকের লিখনশৈলী বিশ্লেষণ করে, তাকে শৈলী বিজ্ঞান বলা হয়।

২.৬ থিসরাস কাকে বলে ? একটি বাংলা থিসরাসের উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ ‘থিসরাস’ হল এমন এক ধরনের অভিধান যেখানে সমজাতীয় শব্দগুলি একটি গুচ্ছের মধ্যে সাজানাে থাকে।

অথবা,

প্রয়ােগতত্ত্ব কাকে বলে ? সংক্ষিপ্ত উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ শব্দার্থ নিরূপণের যে তত্ত্ব অনুযায়ী শব্দের অর্থ অনুষঙ্গের উপর নির্ভরশীল থাকে, তাকে প্রয়ােগতত্ত্ব বলে যেমন, মা জিজ্ঞেস করলেন- “ভিজেছ নাকি ?” বাবা বললেন “সাহেবের গাড়িটা আমাদের পর্যন্ত এসেছিল”। আপাতভাবে দুজনের
কথাবার্তা অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও প্রয়োগ তত্ত্ব অনুযায়ী বাক্যগুলি বিশ্লেষণ করা সম্ভব।

২.৭ ‘মৃত্যুঞ্জয় শোনে কিন্তু তার চোখ দেখেই টের পাওয়া যায়।’- কী টের পাওয়া যায় ?

উত্তরঃ মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ দেখেই টের পাওয়া যায় যে কথার মানে সে আর বুঝতে পারছে কারণ তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাচ অর্থহীন হয়ে গেছে।

২.৮ কবি কাকে শীতের দুঃস্বপ্ন বলেছেন ?

উত্তরঃ “ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাসকে” কবি শীতের দুঃস্বপ্নের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

২.৯ ‘জেগে উঠিলাম’— কবি কোথায় কীভাবে জেগে উঠলেন ?
উত্তরঃ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রূপনারানের
কূলে অর্থাৎ দৃশ্যমান জগৎসংসারের শেষ
প্রান্তে উপনীত হয়ে জেগে উঠলেন।

২.১০ “তাই অনেক ভেবেচিন্তে আমরা
একটা প্যাঁচ বের করেছি”- প্যাঁচটির পরিচয়
দাও।
উত্তরঃ বিভাব নাটকের নাট্যকার শম্ভু মিত্র যে প্যাচটির উল্লেখ করেছেন সেটি হল—
কোনােরকম নাট্য উপকরণ (অর্থাৎ আলাে,
সিনসিনারি ইত্যাদি) ছাড়াই শুধুমাত্র
অঙ্গভঙ্গিমার ব্যবহার করে নাটক মঞ্চস্থ
করা।

অথবা,

“মরে যাবাে তবু ভুলবাে না” কে কী
ভুলবে না ?
উত্তরঃ কথক রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় সেই
বড়লােকের সুন্দরী মেয়েটির আশ্চর্য
ভালােবাসার কথা ভুলবেন না।

২. ১১ “রাজারা কি পাথর ঘাড়ে করে
আনত”— কারা পাথর আনত ও কাদের
খ্যাতি হত ?
উত্তরঃ শ্রমিকরা পাথর ঘাড়ে করে আনত কিন্তু খ্যাতি হতাে রাজাদের।

অথবা,

“আমি কৌতুহলী হয়ে উঠি”— বক্তা
কোন বিষয়ে কৌতুহলী হন ?
উত্তরঃ এক ভয়ংকর গ্রীষ্মের দুপুরে শিষ্যদের নিয়ে গুরু নানক জনমানবহীন হাসান আব্দালের জঙ্গলে এসে পৌঁছেছিলেন। তারপর কী হয়েছিল সেই ঘটনা শােনার জন্য বক্তা কৌতূহলী হন।

২.১২ ‘গুচ্ছধ্বনি’ কাকে বলে ?
উত্তরঃ পাশাপাশি উচ্চারিত দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির সমাবেশকে গুচ্ছধ্বনি বলা হয়।

বিভাগ ‘ক’ (নম্বর- ৫০)

১. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনাে একটি
প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১ = ৫

১.১ সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে
ফেলে দিতে যাচ্ছে।’ – ‘ওরা’ বলতে কাদের
বােঝানাে হয়েছে ? ওরা সব ভাত ফেলে
দিতে যাচ্ছিল কেন ? ‘সে’ কে ? বুঝতে পেরে সে কী করেছিল ? ১+১+১+২

উত্তরঃ মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পের উদ্ধৃত অংশে ‘ওরা’ বলতে বাসিনীর মনিব বাড়ির লোকেদের কথা বলা হয়েছে।

» ওরা সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কারণ অশৌচ বাড়ির ভাত খাওয়া চলে না, ফেলে দেওয়াটাই নিয়ম।

» আলোচ্য অংশে ‘সে’ বলতে উচ্ছবকে বোঝানো হয়েছে।

» বড়ো পিসিমার নির্দেশে বাসিনী অশৌচ বাড়ির ভাত-তরকারি সব ফেলে দিতে যাচ্ছিল। উচ্ছব তখন কাছেই ছিল, তাই বাসিনী তাকে সাহায্য করতে বলে। উচ্ছব নিজে থেকেই বলে সে বড় ডেকচিটা নেবে, অর্থাৎ, যেটাতে মোটা চালের ভাত ছিল। ভাতগুলি অনেক দূরে ফেলে দিয়ে আসার জন্য সে বাড়ি থেকে বেরোয়। প্রথমে সে হনহনিয়ে হাঁটতে থাকে, তারপর ছুট দেয়৷

দীর্ঘদিন ধরে অভুক্ত থাকা উচ্ছব, ভাতের অভাবে যে মানুষ থেকে প্রেত হয়ে গিয়েছিল, তার কাছে এসব লোকাচার মূল্যহীন। সে থাকতে ওই ভাত কাক-কুকুরে খাবে, সেটা কি হতে পারে ? সে নিজেই তো বাদার ভাতের স্বাদ নিতে চায়, ভাত খেয়ে প্রেত থেকে আবার মানুষ হতে চায়। তাই বাসিনীর বাধা না মেনে সে ভাতের ডেকচি নিয়ে দৌড়তে থাকে। স্টেশনে গিয়ে সে মনের সুখে সেই ভাতগুলি খেয়েছিল।
(Credit banglasir.com)

১.২ এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী ?- কে,
কোন অপরাধের প্রায়শ্চিত্তের কথা
বলেছেন ? বক্তা নিজেকে অপরাধী মনে
করেছেন কেন? ১+২+২

উত্তরঃ মৃত্যুঞ্জয় এক বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজেকে অপরাধী বলে মনে করেছে। অবশ্য অন্য কেউ তাকে অপরাধী আখ্যা দেয়নি, এটি তার আত্মসমালোচনা। তার অপরাধটা এইরকম-

“কে বাঁচায় কে বাঁচে” গল্পটি পঞ্চাশের মন্বন্তরের প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেই বাংলার বুকে এক ভয়াবহ দুর্যোগের ছায়া দেখা দিয়েছিল। সেই দুর্যোগের নাম পঞ্চাশের মন্বন্তর। কালোবাজারির বাড়বাড়ন্তের ফলে এবং তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের উদাসীনতায় এই দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছিল। সেই সময় গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ সামান্য খাবারের আশায় শহরে এসে হাজির হয়েছিল। সেখানে ক্ষুধার্ত মানুষের তুলনায় লঙ্গরখানার সংখ্যা নেহাতই কম ছিল। আবার, পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের অভাবে ত্রাণকার্যও ব্যাহত হচ্ছিল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে, শহরের আনাচে-কানাচে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছিল। সেদিন খাবারের অভাবে শহরের বুকে মৃত্যুমিছিল নেমে এসেছিল। মৃত্যুঞ্জয়ের মতে, এইরূপ সংকটময় পরিস্থিতিতে নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করাই হলো অপরাধ। মৃত্যুঞ্জয় একজন আদর্শবান মানুষ দুর্ভিক্ষের কথা সে জানতো, দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষজনের দুর্দশার কথাও সে জানতো। কিন্তু সব জেনেশুনেও এতকাল সে চারবেলা ভরপেট খেয়েছে এবং লোকের অভাবে যথেষ্ট রিলিফ ওয়ার্ক হচ্ছে না জেনেও নিজে অলসভাবে দিন যাপন করেছে। এইজন্য ফুটপাতে অনাহারে মৃত্যুর একটি ঘটনা দেখার পর সে নিজেকে অপরাধী বলে মনে করেছিল।
(Credit banglasir.com)

২. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনাে একটি
প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১= ৫

২.১ এসেছে সে ভােরের আলােয় নেমে’ –
সেই ভােরের বর্ণনা দাও। ‘সে’ ভােরের
আলােয় নেমে আসার পর কী কী ঘটল,
লেখাে। ৩+২

উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতায় একটি সুন্দর বাদামি হরিণ ভোরের আলোয় নেমে এসেছিল। সে সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখে এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।

ভোরের আলোয় নেমে এসে সেই হরিণটি প্রথমে কচি বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস খেতে শুরু করে। তারপর অনিদ্রাজনিত ক্লান্তি দূর করার জন্য সে নদীর তীক্ষ্ণ-শীতল ঢেউয়ে নামে। নিজের দেহমনে ‘ভোরের রৌদ্রের মতো একটা বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার জন্য’ সে হিমশীতল জলে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল।

আর সে এতকিছু করেছিল ‘সাহসে সাধে সৌন্দর্যে হরিণীর প্রহরীকে চমক লাগিয়ে দেওয়ার জন্য’। কিন্তু হরিণের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। চোরা শিকারিদের অব্যর্থ নিশানায় হরিণটির স্বপ্নে ইতি টানা যায়।

‘একটা অদ্ভুত শব্দ’ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল মচকা ফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে যায়। জ্যান্ত হরিণ ততক্ষণে মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে গেছে। আগুন জ্বালানো হয় এবং ‘উষ্ণ লাল হরিণের মাংস’ প্রস্তুত হয়। আর এইভাবে, একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ভোরের আলোয় নেমে এসে সুন্দর বাদামি হরিণটি মানুষের লালসার শিকার হয়েছিল। (Credit banglasir.com)

২.২ ‘অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলাের
কলঙ্ক’- এখানে কোন্ মানুষদের কথা বলা
হয়েছে ? তারা অবসন্ন কেন ? ‘ধুলাের
কলঙ্ক’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন। ১+২
+২

উত্তরঃ নাগরিক কবি সমর সেনের লেখা ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতার উদ্ধৃত অংশে যে মানুষদের কথা বলা হয়েছে তারা হল মহুয়ার দেশের সাধারণ মানুষ। প্রকৃতির নিবিড় ছায়ায় লালিত এইসব মানুষদের শরীরে কবি ‘ধুলোর কলঙ্ক’ লক্ষ্য করেছেন।

নাগরিক জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কবি মহুয়ার দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেবদারুর ছায়ায় আবৃত মহুয়ার দেশে গিয়ে কবি নিষ্কলুষ প্রকৃতি এবং প্রকৃতির সন্তান বলে পরিচিত সেখানকার সাধারণ মানুষের সান্নিধ্য লাভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে কবি প্রত্যক্ষ করেন যে, সেখানকার মানুষজন শ্রান্ত, অবসন্ন। আসলে, কবির অজান্তেই, মহুয়ার দেশেও থাবা বসিয়েছিল যন্ত্রসভ্যতা এবং সহজ সরল মানুষগুলি যন্ত্রসভ্যতার দাসে পরিণত হয়েছিল। সারারাত হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফলেই তারা অবসন্ন হয়েছিল।

মহুয়ার দেশ একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মন্ডিত এবং তেমনি প্রাকৃতিক সম্পদেও পরিপূর্ণ। সেখানে মাটির নিচে রয়েছে কয়লার বিশাল ভান্ডার। আর, মহুয়ার দেশের মানুষগুলো এখন কয়লা খনির শ্রমিক। কয়লা খননের কাজে যুক্ত থাকার ফলেই তাদের শরীরে আজ ধুলোর কলঙ্ক। তবে, এই ‘ধুলোর কলঙ্ক’ নিছকই ধুলোর কালিমা নয়। কবি যে কলুষতা থেকে বাঁচবার জন্য মহুয়ার দেশে যেতে চেয়েছিলেন, ধুলোর কলঙ্ক বলতে কবি যন্ত্রসভ্যতার সেই কলুষতাকেই বুঝিয়েছেন।
(Credit banglasir.com)

৩. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনাে একটি
প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১ =৫

৩.১ এমনি সময় হঠাৎই এক সাহেবের
লেখা পড়লাম।” – এমনি সময়’ বলতে কোন্
পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? সাহেবের নাম
কী? তিনি কী লিখেছিলেন? ২+১+২

উত্তরঃ আর্থিক অভাব এবং সরকারের খাজনার চাপে যখন দেশীয় নাটকের অভিনয় প্রায় বন্ধ হওয়ার দশা সেসময় নাট্যকার শম্ভু মিত্র অল্পখরচে, সাজসজ্জা আড়ম্বর বাদ দিয়ে শুধুমাত্র অঙ্গভঙ্গিকে সহায় করে এক নতুন অভিনয় রীতির কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তাঁর সন্দেহ হলেন। কি ছিল এরকম অভিনয় রীতি বিলিতি বায়োস্কোপ দেখা দর্শক মানবে কিনা। ‘এমনি সময়’ বলতে এই সময়কেই বোঝানো হয়েছে।

এখানে যে সাহেবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তিনি হলেন বিখ্যাত রুশ চিত্র পরিচালক আইজেনস্টাইন। তাঁর পুরো নাম সের্গেই আইজেনস্টাইন।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ‘কাবুকি’ থিয়েটার নামক জাপানি থিয়েটারে কলাকুশলীদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। আইজেনস্টাইন জাপানি কাবুকি থিয়েটারের কুশীলবদের অভিনয় দেখে লিখেছিলেন, তাদের নাটকে ভঙ্গির বহুল ব্যবহার আছে। নাইট বেরিয়ে যাওয়ার মুহুর্তে শিফটার তৈরি করেন বিভিন্ন আকারের দুর্গদ্বার। এইভাবে মঞ্চে পরিবেশ রচিত হয়। আবার মঞ্চে যুদ্ধ হয় কাল্পনিক তরবারি দিয়ে এবং ভঙ্গির মাধ্যমেই মৃত্যুর দৃশ্য দেখানো হয়। এইভাবে কেবল ভঙ্গির মাধ্যমে নাটকের দৃশ্য কীভাবে বাস্তবসম্মত ও শিল্পসম্মত করে তোলা যায়, রুশ পরিচালক তা লিখেছেন।

৩.২ ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের সূচনায়
মঞ্চসজ্জার যে বর্ণনা আছে, তা নিজের
ভাষায় লেখাে। নাটকটির নামকরণ
কতখানি সার্থক তা আলােচনা করাে। ২+৩

উত্তরঃ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি অনবদ্য একাঙ্ক নাটক ‘নানা রঙের দিন’। নাটকের নাটকের শুরুতেই নাট্যকার স্বল্পকথায় মঞ্চসজ্জার বিবরণ দিয়েছেন এইভাবে- একটি পেশাদারি থিয়েটারের ফাঁকা মঞ্চ, পিছনের দেওয়ালে তখনো রাত্রে অভিনীত নাটকের দৃশ্যপট এবং চারিদিকে ছড়িয়ে ছিল নাটকে ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও যন্ত্রপাতি। মঞ্চের মাঝখানে একটি টুল ওল্টানো ছিল। মঞ্চ তখনো অন্ধকার ছিল, অর্থাৎ কোনো আলো জ্বলছিল না।

আলোচ্য নাটকের প্রধান চরিত্র বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। নাটকের অপর চরিত্র কালীনাথের সঙ্গে কথোপকথন প্রসঙ্গেই উঠে আসে রজনীবাবুর ফেলে আসা জীবনের নানা কথা। নানা বর্ণে চিত্রিত তার জীবনের ইতিকথাই এই নাটকের প্রধান বিষয়।

রাঢ়বঙ্গের এক বনেদি ব্রাহ্মণ বংশের
সন্তান রজনীবাবু প্রথম জীবনে পুলিশ ছিলেন। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা তাকে থিয়েটার জগতে নিয়ে এসেছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি নাট্যজগতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন। যুবা অভিনেতা রজনীকান্তের এই সব দিনগুলি ছিল রঙিন দীপ্তিতে উজ্জ্বল।

তার অভিনয় দেখেই একটি মেয়ে তার প্রেমে পড়েছিল, যদিও সেই প্রেম বিয়ে পর্যন্ত এগোয়নি। রজনীবাবুর স্মৃতিচারণায় উঠে এসেছে সেইসব বিবর্ণ দিনের কথাগুলি।

এরপর তার বয়স বাড়তে থাকে। তিনি মূল চরিত্র ছেড়ে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। জীবনের পঁয়তাল্লিশটা বছর অভিনয় জগতে থেকে একসময় তিনি বুঝতে পারলেন যে, তার দিন শেষ হয়ে এসেছে। এইভাবে, আলোচ্য নাটকে রজনীবাবুর জীবনের নানা রঙের দিনগুলিই নাট্যরূপে উপস্থাপিত হয়েছে। তাই এই নামকরণ সম্পূর্ণ সার্থক হয়েছে।

৪. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনাে একটি
প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১ = ৫

৪.১ স্পেনের ফিলিপ কেঁদেছিল খুব। আর
কেউ কাদেনি?” উদ্ধৃতাংশটি যে কবিতার
অন্তর্গত, সেই কবিতায় আর কোন্ কোন্
শাসকের নাম আছে ? ফিলিপ কেঁদেছিলেন
কেন ? “আর কেউ কাঁদেনি ?”- বলতে বক্তা
কী বােঝাতে চেয়েছেন? ২+১+২

উত্তরঃ বের্টোল্ট ব্রেখটের ‘পড়তে জানে
এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় স্পেনের
রাজা ফিলিপ ছাড়া আর যেসব শাসকের
নাম উল্লেখ রয়েছে তারা হলেন রোমান
সম্রাট জুলিয়াস সিজার, ম্যাসিডনের রাজা
আলেকজান্ডার এবং দ্বিতীয় ফ্রেডরিক।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে স্পেনের রাজা
ফিলিপের নৌবহর ‘স্প্যানিশ আর্মাডা’র শোচনীয় পরাজয় ঘটেছিল। এইজন্য তিনি কেঁদেছিলেন।

ইতিহাসের পাতায় পাতায় কেবল যুদ্ধের কাহিনি। ঐতিহাসিকরা বিজয়ী রাজার বিজয়োল্লাসের কথা যেমন তুলে ধরেছেন তেমনি পরাজিত রাজার মনোবেদনা লিপিবদ্ধ করতে কার্পণ্য করেননি। মোটকথা হল, ইতিহাস আর রাজকাহিনি সমার্থক হয়ে উঠেছে। প্রচলিত ইতিহাসে সাধারণ মানুষের উল্লেখ নেই বললেই চলে। অথচ, যেকোনো যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকত সাধারণ যোদ্ধারা। তারা রাজা নয়, তাই তাদের বীরত্বের কথা বা বলিদানের কথা ইতিহাসে স্থান পায়নি।

কবি প্রশ্ন করেছেন, ‘আর কেউ কাঁদেনি’? এর উত্তরে বলা যেতে পারে, আরো অনেকেই কেঁদেছিল। রাজার সৈন্য, সেনাপতি এবং তাদের পরিবারের লোকজনও চোখের জল ফেলেছিল। বরং বলা যেতে পারে, তাদের কান্নার গভীরতা আরো বেশি ছিল। উক্ত প্রশ্নের মাধ্যমে কবি সাধারণ সৈন্যদের মহত্বের কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন।

৪.২ ‘হঠাৎ শিষ্য মর্দানার জল তেষ্টা পেল।’
তেষ্টা মেটানাের জন্য মর্দানাকে কী করতে
হয়েছিল ? তার তেষ্টা শেষ অবধি কীভাবে
মিটেছিল ?

উত্তরঃ কর্তার সিং দুগ্গালের ‘অলৌকিক গল্পে দেখা যায় গুরু নানকের অন্যতম সহচর মর্দানার প্রচন্ড জল তেষ্টা পেয়েছিল। সশিষ্য গুরু নানক তখন হাসান আব্দালের জঙ্গলে এসে পৌঁছেছেন। মার্দানার অবস্থা দেখে গুরু নানক ধ্যানে বসেন এবং চোখ খুলে তিনি বলেন যে ওই এলাকায় একমাত্র বলী কান্ধারীর আশ্রমের কুঁয়োতেই জল রয়েছে। গুরুর কথা শুনে মর্দানা তিনবার বলী কান্ধারীর আশ্রমে গিয়েছিল।

প্রথমবার মর্দানা গিয়ে বলী কান্ধারীকে
বলেছিল যে সে পির নানকের সহচর। একথা শুনে বলী কান্ধারী তাকে জল না দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিল।

দ্বিতীয়বার গিয়ে মর্দানা বলেছিল যে সে নানক দরবেশের অনুচর। তারপরেও বলী কান্ধারী তাকে জল দেয়নি।

তৃতীয়বারে মর্দানা বলী কান্ধারীর পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়েছিল। কিন্তু এবারেও বলী কান্ধারী মর্দানাকে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দিয়েছিল।

এইভাবে মর্দানা তিনবার পাহাড়ের
চুড়োতে গিয়েছিল কিন্তু জল না পেয়ে সে এসে গুরু নানকের পায়ের কাছে হতচেতন হয়ে পড়ে গেল। গুরু নানক তাকে অভয় দিয়ে সামনের একটা পাথর তুলতে বললেন। পাথর তুলতেই জলের ধারা দেখা গেল। এই জলেই মর্দানার তেষ্টা মিটেছিল।

৫. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনাে একটি
প্রশ্নের উত্তর দাও:৫x১ = ৫

৫.১ এত ফসল, এত প্রাচুর্য – তবু কিন্তু
মানুষগুলাের দিকে তাকালে মনে হয়
জীবনে তাদের শান্তি নেই।’- মানুষগুলাের
জীবনযাত্রার পরিচয় দাও। তাদের জীবনে
শান্তি নেই কেন ? ৩+২

উত্তরঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘গারো পাহাড়ের নীচে’ (‘আমার বাংলা’ প্রবন্ধ গ্ৰন্থ) নিবন্ধে গারো পাহাড়-সংলগ্ন হাজং-ডালু- গারো-কোচ প্রভৃতি মানুষের কথা বলতে গিয়ে তাদের দুঃখের সঙ্গী হয়েছেন। তিনি বলেছেন, সুসং পরগনার সীমান্ত যারা ফসলে ভরিয়ে দেয়, জমিদারের অত্যাচার থেকে তাদেরও রেহাই নেই।

গারো পাহাড়ের পাহাড়তলি এলাকায় জমি অত্যন্ত দুর্গম ও অনুর্বর হওয়ায় সেই অঞ্চলের পরিশ্রমী অধিবাসীরা অত্যন্ত কষ্ট করে ফসল ফলায়। তাদের হাল- বলদ নেই। তারা জঙ্গল পুড়িয়ে ‘ঝুমচাষ ‘ করে। জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে হরিণ-শুয়োর শিকার করে খায়। ফসল খামারে তোলার সময় তারা দারিদ্র্য মুছে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। লেখক বলেছেন- ধান কাটার সময় হলে নারী-পুরুষ সবাই কাস্তে নিয়ে মাঠে যায়। ছোটো ছেলেরা পিঠে ধানের আঁটি বেঁধে খামারে দিয়ে আসে। কিন্তু উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলার আগেই জমিদারের পাইক-বরকন্দাজ ‘শনি’র মতো আবির্ভূত হয়ে খাজনা বাবদ ফসল নিয়ে যায়।

গাঁয়ের আলবাঁধা রাস্তায় ঘোড়ার খুরের শব্দ কিংবা নাগরা জুতোর খটখট শব্দে কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে যায়। ছোটো ছেলেরা ভয়ে মায়ের আঁচলে লুকোয়, খিটখিটে বুড়িরা পেয়াদাদের অভিশাপ দিতে থাকে। জমিদারকে টাকা দিতে গিয়ে কৃষকেরা সর্বস্বান্ত হয়। ‘শনি’র দৃষ্টিতে ছারখার হয়ে যায় সুসং পরগনার অধিবাসীদের স্বপ্ন। সুদখোর মহাজন ও জমিদারের শোষণে এরা স্বাভাবিক ও সচ্ছল জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত হয়। তাদের জীবনের কথা নিজেরাই ছড়ার মাধ্যমে বলে—

বারবার ধান বুনে জমিতে
মনে ভাবি বাঁচা যাবে আরামে।
তারপর পালে আসে পেয়াদা
খালি পেটে তাই লাগছে ধাঁধা।।

এইভাবে লেখক সাধারণ মানুষের দুঃখকে এবং জমিদারের শোষণের চিত্রটি নিপুণভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।

৫.২ “মেঘের গায়ে জেলখানা” রচনা
অবলম্বনে সাধুচরণ মুস্তাফার
জীবনকাহিনি বর্ণনা করাে। ৩ + ২

উত্তরঃ

সাধুচরণের জীবন কাহিনীঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে আমরা সাধুচরণের পরিচয় পাই। সাধুচরণ হলো বক্সার জেলখানার একজন সাধারণ কয়েদি।

সাধুচরণের বাড়ি জয়নগরের কাছে কোন এক আজ গাঁয়ে। তার বয়েস বছর পঞ্চাশ, শরীরে তার মাংস নেই। লেখকের সংক্ষিপ্ত পরিসরে সাধুচরণের বেদনাময় জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরেছেন।

অনেক কম বয়সেই সাধুচরণ তার বাবা-মাকে হারিয়েছিল। কোনো নিকটাত্মীয় তার দায়িত্বভার নিতে অস্বীকার করে। সেইজন্য পেটের জ্বালায় ছিঁচকে চুরি শুরু করে সে। হাতেনাতে ধরা পড়ে জেলে যেতে হয়েছে তাকে। জেল থেকে বেরিয়ে পাকা সিঁধেল চোর হয়ে উঠেছিল সাধুচরণ। চুরির জন্য বেশ কয়েকবার তাকে জেলেও যেতে হয়েছে। একসময় তার সংসার করবার ইচ্ছা হয়। জমানো টাকা থেকে জমি জায়গা কিনে সংসারে মন দেয় সাধুচরণ।

কিন্তু সে চুরি করা ছেড়ে দিলেও চোরের বদনাম তাকে ছেড়ে যায়নি। আশেপাশের তল্লাটে কোথাও চুরি হলেই পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যেত। কপালে জুটতো মোটা রুলের গুঁতো। পুলিশের হয়রানি থেকে বাঁচতে নগদ পয়সাও দিতে হতো তাকে। একসময় সাধুচরণেরর মনে হয় যে, চুরি না করে শাস্তি পাওয়ার থেকে চুরি করাই ভালো এবং তারপর আবার পুরোনো জীবনে ফিরে যায় সে।

মুস্তাফা’র জীবন কাহিনীঃ মুস্তাফা ভালো পরিবারের ছেলে। তার বাড়ি ছিল এন্টালির কাছাকাছি কোন এক জায়গায়। তার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। একদিন কাজ করার সময় উঁচু বাঁশের মাচা থেকে পড়ে তার বাবা প্রাণ হারায়। আচমকাই বদলে যায় তাদের পরিবারের চালচিত্র। মা-ভাইবোন সহ সমস্ত পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বভার এসে পড়ে মুস্তাফার কাঁধে। এদিকে, পয়সার অভাবে তার পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়।

পাড়াতে থাকত এক পকেটমারের সর্দার। সে মুস্তাফাকে পয়সার লোভ দেখিয়ে পকেটমারের দলে টানে। ধরা পড়ে কয়েকবার তাকে জেলে যেতে হয়েছে। বাস্তব পৃথিবীটা সে অনেক কম বয়সেই দেখে ফেলেছিল। তাই কিশোরসুলভ কোনো ভাবই তার মধ্যে ছিল না।

বছর দশেকের ফুটফুটে ছেলে মুস্তাফা আজ আর কাউকে কেয়ার করে না। তাই লেখক যখন তাকে জিজ্ঞেস করেন যে তার ইস্কুলে যেতে ইচ্ছে করে কি না, উত্তরে সে বিজ্ঞের মতো জবাব দেয়- “ইচ্ছে করলেই কি যাওয়া যায়”?

৬. অনধিক ১৫০ শব্দে যে কোনাে একটি
প্রশ্নের উত্তর দাও: ৫x১ = ৫

৬.১ উদাহরণসহ ধ্বনিমূল’ ও ‘সহধ্বনি’-র
সম্পর্ক বুঝিয়ে দাও।

ধ্বনিমূল এবং সহধ্বনি’র সম্পর্কঃ

ধ্বনিমূল এবং সহধ্বনির সম্পর্ক একটি পরিবার আর তার সদস্যদের মতাে। ধ্বনিমূল হচ্ছে ধ্বনির কাল্পনিক চেহারা, আর সহধ্বনি তার বাস্তব প্রকাশ। যেমন ধরা যাক ‘প’ একটি ধ্বনিমূল। এই ‘প’ ধ্বনিকে দুটি আলাদা শব্দে ব্যবহার করা হল— ‘পাগল’ আর ‘আলাপ’। লক্ষ করলে দেখা যাবে, ‘পাগল’ এর ‘প’ উচ্চারণের সময়ে মুখবিবর এবং ওষ্ঠ যতটা ফাঁক হচ্ছে, ‘আলাপ’ উচ্চারণের সময় ‘প’ ধ্বনি উচ্চারণ করতে গিয়ে তা হচ্ছে না। বরং মুখবিবর সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জিহ্বার প্রসারিত অবস্থানও সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিবেশ অনুসারে একটি মূলধ্বনি এই যে আলাদা আলাদা ভাবে উচ্চারিত হল এরা প্রত্যেকেই এক-একটি সহ ধ্বনি। অর্থাৎ সহধ্বনি হল উচ্চারণভেদনির্ভর। প্রতিটি উচ্চারণভেদেই তৈরি হয় প্রতিবেশ অর্থাৎ কোন্ অবস্থানে ধ্বনিটি আছে তার উপরে নির্ভর করে।

বাংলায় যে সাতটি মৌলিক স্বরধ্বনি এবং ৩০টি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে তারা সকলেই এক-একটি ধ্বনিমূল। ধ্বনিমূল এবং সহ ধ্বনির সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য হল—তাদের উচ্চারণ মূলগতভাবে এক হবে। দ্বিতীয়ত, ধ্বনিমূল ভাষায় অর্থের তফাত করতে সমর্থ, কিন্তু সহধ্বনির পক্ষে সে কাজ করা সম্ভব নয়। আসলে ধ্বনিমূল একটি কল্পনা, যার বাস্তব উপলব্ধি হল সহধ্বনি।

৬.২ শব্দার্থের পরিবর্তন বলতে কী বােঝাে ?
উদাহরণসহ ‘শব্দার্থের সংকোচ’ ও
শব্দার্থের প্রসার’ সম্বন্ধে আলােচনা করাে।
১+২+২

উত্তরঃ

শব্দার্থের পরিবর্তনের সংজ্ঞাঃ

কোনো শব্দ ভাষায় বহুদিন ব্যবহৃত হলে একদিকে যেমন ভাষায় জীর্ণতা আসে অন্যদিকে তেমনি মানসিক কারণ বা বহিঃপ্রভাবের ফলে অর্থে অনাবশ্যক বস্তুর সঞ্চয় জমে তাকে পৃথুলতাও দান করে । অর্থাৎ ভাষায় অনেক শব্দই চিরকাল একই অর্থে ব্যবহৃত হয় না, অর্থের পরিবর্তন হয়ে যায়। এইভাবে, ভাষায় ব্যবহৃত শব্দের আদি অর্থ কালক্রমে নানা ভাবে বিবর্তিত হয়ে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে উপনীত হবার প্রক্রিয়াকে বলে শব্দার্থ পরিবর্তন।

শব্দার্থের প্রসারঃ কোনাে শব্দ যদি সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার আদি অর্থ অপেক্ষা ব্যাপকতর অর্থ লাভ করে, তখন তাকে শব্দার্থের প্রসার বা অর্থের প্রসার বলা হয়।
যেমন– ‘গাঙ’ শব্দের আদি অর্থ ছিল ‘গঙ্গা’, কিন্তু পরবর্তীকালে এর অর্থ হয়েছে, ‘যে-কোনাে নদী। ‘তৈল’ শব্দের মৌলিক অর্থ ছিল ‘তিলের নির্যাস’, কিন্তু এখন ‘তৈল’ বলতে বােঝায় ‘যে-কোনাে তেল’। ওপরের দুটি উদাহরণই শব্দের অর্থের প্রসার ঘটেছে। এ দুটি তাই শব্দার্থের প্রসার-এর উদাহরণ।

শব্দার্থের সংকোচ বা সংক্ষেপঃ
শব্দের অর্থ যখন একাধিক থাকা সত্ত্বেও কিংবা কোনো শব্দের একাধিক অর্থগুলির মধ্যে যখন একটি মাত্র অর্থকে প্রধান রুপে গ্রহন করা হয় তখন তাকে শব্দার্থের সংকোচ বা সংক্ষেপ বলা হয়।

যেমন– মৃগ এই শব্দটির অর্থ হল বনের পশু বা বন্যপ্রাণী। এই কারণে মৃগয়া কথাটি এসেছে। কিন্তু বর্তমানে মৃগ শব্দের দ্বারা শুধুমাত্র হরিণ কেই বোঝানো হয়ে থাকে। এখানে তায় বলা যায় যে প্রসারিত অর্থ সংকুচিত হয়েছে।

অথবা,

‘রূপমূল’ কাকে বলে ? উদাহরণসহ
‘স্বাধীন ও পরাধীন রূপমূল-এর পরিচয়
দাও। ১+২+২

উত্তরঃ ভাষায় ব্যবহৃত এক বা একাধিক ধ্বনি দ্বারা গঠিত ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছকেই বলা হয় রূপমূল।

রূপমূল দু-প্রকারের一
ক) স্বাধীন রূপমূল বা মুক্ত রূপমূল এবং
খ) পরাধীন রূপমূল বা বদ্ধ রূপমূল।

ক) স্বাধীন রূপমূলঃ যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি অন্য ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির সহযােগ ছাড়াই স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে, তাকে বলে মুক্ত বা স্বাধীন রূপমূল।

খ) পরাধীন রূপমূলঃ যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি সর্বদা অন্য ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, কখনও স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না, তাকে বলে বন্ধ বা পরাধীন রূপ।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— ‘ছেলেটি’ শব্দটিতে দুটি রূপমূল রয়েছে- ‘ছেলে’ এবং ‘টি’। ‘ছেলে’ শব্দটি হল স্বাধীন রূপমূল এবং ‘টি’ হল পরাধীন রূপমূল। কারণ, ‘ছেলে’ রূপমূলটি ভাষায় নানাভাবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং সর্বদাই এককভাবে ব্যবহৃত হতে পারবে। যেমন— ‘রামবাবুর ছেলে বিদেশে থাকে’, ‘তার ছেলে ডাক্তার’ ইত্যাদি। কিন্তু ‘টি’ রূপমূলটি যখনই ভাষায় প্রয়োগ করা হোক সর্বদাই একটি স্বাধীন রূপমূলকে (যেমন, এখানে ‘ছেলে’-কে) অবলম্বন করে বাক্যে ব্যবহৃত হবে।

৭. অনধিক ১৫০ শব্দে যে-কোনাে দুটি
প্রশ্নের উত্তর দাও:৫x২ = ১০

৭.১ বাংলা সংগীত জগতে গায়ক ও সুরকার রূপে হেমন্ত মুখােপাধ্যায় অথবা মান্না দের স্থান নিরূপণ করাে। ৫

উত্তরঃ

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।

বাংলা গানের ধারায় একটি উল্লেখযোগ্য নাম হল হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (১৯২০- ১৯৮৯)। তিনি একাধারে গায়ক, সংগীত নির্দেশক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগের অন্যতম একজন কারিগর।

১৯৩৭ সালে শৈলেশ দত্তগুপ্তের তত্ত্বাবধানে বেসিক ডিস্কের গানে গায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ১৯৪১ সালে ‘নিমাই সন্ন্যাস’ ছবিতে গান গেয়ে নেপথ্য শিল্পী হিসাবে তাঁর পথচলা শুরু হয়। এরপর একে একে ‘শাপমোচন, ‘হারানো সুর’, ‘সন্দীপন পাঠশালা’, ‘সূর্যতোরণ’, ‘বালিকা বধূ’, ‘সাত পাঁকে বাঁধা’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘নীল আকাশের নীচে’ প্রভৃতি অসংখ্য ছবিতে তিনি গান গেয়েছেন। বাংলা ছায়াছবিতে নেপথ্য শিল্পী হিসেবে যেমন তাঁর খ্যাতি, তেমনি সুরকার হিসেবেও তিনি বহু ছবিতে কাজ করেছেন।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গীতপ্রতিভা কেবল বাংলা ছায়াছবির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, গায়ক এবং সুরকার হিসাবে তিনি বহু হিন্দি ছবিতেও কাজ করেছেন। হিন্দি গানের জগতে তিনি হেমন্তকুমার নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি’, ‘আমায় প্রশ্ন করে’, ‘ও নদী রে’, ‘পথের ক্লান্তি ভুলে’, ‘এই মেঘলা দিনে একলা’, ‘এই রাত তোমার আমার’, ‘আয় খুকু আয়’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, ‘নীড় ছোটো ক্ষতি নেই’, প্রভৃতি গানগুলি এখনো সমান জনপ্রিয়।

শুধুমাত্র ছায়াছবির গান বা বাংলা আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবে নয়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় রবীন্দ্রসঙ্গীতেরও একজন খ্যাতনামা শিল্পী ছিলেন। হেমন্তর কন্ঠে রবি ঠাকুরের গান বাঙালি শ্রোতার হৃদয় স্পর্শ করে।

অথবা,

বাংলা গানের ইতিহাসে মান্না দে

আধুনিক বাংলা গানে নিজস্ব গায়কি এবং সংগীতে অসামান্য বুৎপত্তি নিয়ে মান্না দে এক উল্লেখযােগ্য অধ্যায়। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১মে উত্তর কলকাতার এক বনেদি বাড়িতে তার জন্ম। তার রক্তেই ছিল সংগীতের উত্তরাধিকার। কাকা কৃয়চন্দ্র দে ছিলেন সেকালের বিস্ময়কর সংগীতস্রষ্টা। তার কাছেই মান্না দের শৈশবের সংগীত শিক্ষা হয়েছিল। এ ছাড়াও ওস্তাদ দবীর খাঁ- র কাছে তিনি উচ্চাঙ্গ সংগীতের শিক্ষা নেন। ১৯৪২-এ কাকা কৃয়চন্দ্র দে-র সঙ্গী হয়ে তিনি মুম্বাই যান। এখানে প্রথমে কাকা এবং পরে শচীনদেব বর্মন ও অন্যান্যদের সঙ্গে সহকারী সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৩- এ ‘তামান্না’ সিনেমায় সুরাইয়া-র সঙ্গে দ্বৈতসংগীত জাগাে, আয়ি উষা দিয়ে নেপথ্য শিল্পী হিসেবে মান্না দের আবির্ভাব ঘটে। ১৯৫০-এ মশাল ছবিতে একক শিল্পী হিসেবে মান্না দে-কে পাওয়া যায়। এর মধ্যেই নিজে সংগীত পরিচালনাও শুরু করেন। কিন্তু গানের শিক্ষাকে তিনি থামিয়ে দেননি।

পেশাগত ব্যস্ততার মধ্যেই উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ আমন আলি খান এবং ওস্তাদ আব্দুল রহমান খানের কাছে এবং ধীরে ধীরে হিন্দি ও বাংলা গানের জগতে অপ্রতিরােধ্য হয়ে ওঠেন মান্না দে। সর্বমােট ১২৫০টি বাংলা গান তিনি গেয়েছেন। আধুনিক গান, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, ভক্তিগীতি-সহ সংগীতের সব শাখাতেই ছিল তার অবাধ বিচরণ। বাংলা ছাড়াও ভােজপুরি, মৈথিলি, অসমিয়া, ওড়িয়া, গুজরাটি, পাঞ্জাবি-সহ সবকটি প্রধান ভারতীয় ভাষাতেই মান্না দে গান করেছেন। শঙ্খবেলা’, অ্যান্টনি ফিরিজ্গি’, ‘চৌরঙ্গি, তিন অধ্যায়’, ‘বনপলাশীর পদাবলী’, ‘মৌচাক’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘শেষ থেকে শুরু’, ‘সন্ন্যাসী রাজা’ এরকম অসংখ্য বাংলা চলচ্চিত্রে মান্না দের গাওয়া গান ইতিহাস হয়ে গিয়েছে। বাঙালির হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করেছে ওই মহাসিন্ধুর ওপার থেকে’, ‘দীপ ছিল শিখা ছিল’, কফি হাউসের সেই আড্ডাটা, আমি যে জলসাঘরে ইত্যাদি অজস্র গান। চলচ্চিত্রে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার ছাড়াও ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ এবং দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করে।

৭.২ বাঙালির কুস্তিচর্চার ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ৫

সংক্ষেপে বাঙালির কুস্তিচর্চার পরিচয়
কুস্তি একটি প্রাচীন খেলা। আমাদের মহাকাব্যগুলিতে এটি মল্লক্রীড়া নামে পরিচিত। বাঙালি সমাজে এই খেলা চলে আসছে সুদূর অতীত থেকেই। তবে ব্রিটিশ শাসনের শেষ পর্বে বাংলার বিপ্লবীদল তাদের শরীরচর্চার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে নতুন করে এই খেলার অনুশীলন শুরু করেন। দেশাত্মবােধকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ‘অনুশীলন সমিতি’। সেখানে শরীরচর্চা এবং আত্মরক্ষার প্রয়ােজনে কুস্তির আখড়া তৈরি হয়। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতেও নিয়মিত কুস্তিচর্চার প্রচলন ছিল। কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ ও ত্রিপুরার মহারাজা এই বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে কলকাতা শহরে কুস্তিগির অম্বিকাচরণ গুহর নেতৃত্বে বাংলায় কুস্তি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ভারতবর্ষের নানা অঞ্চল থেকে তিনি মল্পশিক্ষক এনে কুস্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করেন।

১৯১০ খ্রিস্টাব্দে কুস্তিগির শরৎচন্দ্র মিত্রর নেতৃত্বে গােবরবাবু (প্রকৃত নাম যতীন্দ্রচরণ গুহ, ১৩.৩.১৮৯২-৩.১.১৯৭২) ইংল্যান্ডে গিয়ে আমেরিকা আর ইউরােপের বহু কুস্তিগিরকে পরাজিত করেন। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে গােবরবাবু আবার ইউরােপে গিয়ে ব্রিটিশ এম্পায়ার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে গােবরবাবু সানফ্রানসিস্কো শহরে অ্যাডলফ সানটেলকে পরাস্ত করে ‘বিশ্ব লাইট হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ’ লাভ করেন। তিনি তার নিজস্ব ঘরানার পাচ-লুকানাের ধোঁকা, টিব্বি, গাধানেট, ঢাক, টাং, কুল্লা প্রভৃতিতে সিদ্ধ ছিলেন। অলিম্পিকে ভারতীয় কুস্তিদলের শিক্ষক মানিক। হি কুস্তির আন্তর্জাতিক রেফারি নির্বাচিত হন। বাঙালিদের পক্ষে এই সম্মান বিশেষ উৎসাহের সূচনা করে।

৭.৩ বাঙালির বিজ্ঞান-সাধনায় সত্যেন্দ্রনাথ
বসুর অবদান আলােচনা করাে। ৫

উত্তরঃ যে বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণা এই একবিংশ শতকেও সমান প্রাসঙ্গিক তিনি হলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। হিন্দু স্কুলের এই মেধাবী ছাত্রটি ১৯০৯ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করে ১৯১১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই এসসি, ১৯১৩ সালে বি এসসি এবং ১৯১৫ সালে মিশ্রগণিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।

তরুণ অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে তিনি শিক্ষকতার সঙ্গে গবেষণাকর্ম চালিয়ে যান। ইংল্যান্ডের বিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ক পত্রিকা ‘ফিলোজফিক্যাল ম্যাগাজিন’-এ প্রকাশের জন্য তিনি ‘প্লাঙ্ক সূত্র’ ও ‘আলোকতত্বের কোয়ান্টাম প্রকল্প’ নামে একটি মৌলিক প্রবন্ধ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁর প্রবন্ধটি প্রকাশের অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ফেরত আসে। এবার তিনি তাঁর লেখাটি আপেক্ষিক তত্বের জনক আলবার্ট আইনস্টাইনের কাছে পাঠিয়ে দেন। বিশ্ববরেণ্য এই বিজ্ঞানী প্রবন্ধটির গুরুত্ব বুঝতে পেরে সেটিকে প্রকাশের ব্যবস্থা করে দেন। এর পরই বিজ্ঞানী হিসেবে সত্যেন্দ্রনাথ বসু আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। কোয়ান্টাম সঙ্খ্যাতত্বের জনক হিসেবে তিনি স্মরণীয় থাকবেন। তাঁর পদবি বসু থেকেই ‘বোসন’ কণার নামকরণ হয়েছে।

বিজ্ঞানসাধনা ছাড়াও সাহিত্য অনুরাগী হিসেবেও তিনি বাঙালিদের কাছে বিশেষভাবে বরেণ্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর একমাত্র বিজ্ঞানবিষয়ক গ্রন্থ ‘বিশ্বপরিচয়’ উৎসর্গ করেছিলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানীকে। বসু সম্পর্কে তাঁর মত- ‘a man of genius with a taste for literature and who is a scientist as well.’ সত্যেন্দ্রনাথ বসু মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার অন্যতম সমর্থক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে তিনি বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাভাষায় বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে তিনি ‘জ্ঞান ও বিজ্ঞান’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। এইভাবে সারাজীবন ধরে স্বদেশে এবং বিদেশে বিজ্ঞানসাধনার অজস্র কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

৭.৪ ‘পট’ বলতে কী বােঝানাে হয় ? এই
শিল্পধারাটির একটি পরিচয়মূলক বিবৃতি
প্রস্তুত করাে। ৫

উত্তরঃ অভিধানে ‘পট’ শব্দের অর্থ চিত্র। বর্তমানে ‘পট’ বলতে এক বিশেষ ধরনের ছবি বোঝায়।
লোকশিল্পের একটি অতি প্রাচীন মাধ্যম পট বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বুদ্ধদেবের জীবনী ও পূর্বজন্ম সংক্রান্ত জাতকের গল্প নিয়ে তৈরি করা পট প্রদর্শন করতেন। কখনো কাপড়ের উপর কাদামাটি কখনো বা গোবর মিশ্রিত প্রলেপের সঙ্গে আঠা মিশিয়ে জমিন তৈরি করে পট অঙ্কিত হতো। ওই পট নিয়ে শিল্পী নিজের সংগীতও পরিবেশন করতেন। সপ্তম শতকের গোড়ায় রচিত হর্ষচরিতে পটুয়ায়দের কথা আছে। দ্বাদশ শতকে পট শিল্প বিস্তার লাভ করে। ষোড়শ শতকে চৈতন্যদেবের বাণী প্রচারের জন্য পট ব্যবহৃত হতো। মুকুন্দরামের কাব্যে পটের উল্লেখ আছে, গাজীর পটের প্রবর্তনের কাল আনুমানিক ১৫০০ শতক। রাজস্থানের পট চিত্রের চর্চা থাকলেও বিষয়বৈচিত্র্যতা বাংলা, উড়িষ্যার পটচিত্রের মত সমৃদ্ধ নয়।

উনবিংশ শতকে বাংলায় প্রসিদ্ধি পেয়েছিল কালীঘাটের পট। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের চিত্রশৈলী মিশিয়ে এই পট তৈরি হতো। এতে প্রধানত হিন্দুদের দেব-দেবীর ছবি চিত্রিত হতো। সমাজের বিভিন্ন সমালোচনা করে কালীঘাট পটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দলিলে পরিণত করতে পেরেছিলেন এই পটশিল্পীরা। সেই সময়ে এই পটশিল্প অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এক আনা মূল্যের বিনিময়ে মানুষ পটগুলি কেনার জন্য ভিড় জমাত। প্যারিসেও কালীঘাটের পট বিক্রি হয়েছিল। এবং প্যারিসে স্বয়ং পিকাসো এই পট কিনেছিলেন। এই চিত্র শৈলির প্রভাবও তার কর্মধারায় লক্ষ্য করা যায়। বলা হয় ফার্নান্দ লেজের চিত্রণেও কালীঘাট পটের ছায়া পড়েছিল। “মোহন্ত ও এলোকেশী” এই পটশিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। সাহেব পাড়ার ঘোর দৌড়, সাহেবের বাঘ শিকার,বাবু কালচার ,তারকেশ্বরের মহন্তর কেচ্ছা ,এমনই অনেক ছবি কালীঘাটের পটে পাওয়া যায়।

৮. নিম্নলিখিত যে কোন একটি বিষয়ে
নির্বাচন করে, নির্দেশ অনুসারে কমবেশি
৪০০ শব্দে একটি প্রবন্ধ রচনা করো।

৮.১ নিম্নে প্রদত্ত মানস-মানচিত্র অবলম্বন
করে প্রবন্ধ রচনা করো।

৮.২ প্রদত্ত অনুচ্ছেদটিকে প্রস্তাবনা বা
ভূমিকাস্বরূপ গ্রহণ করে বিষয়ের গভীরে
প্রবেশ করে, পরিণতি দানের মাধ্যমে একটি
পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ রচনা করাে:

শুভ উৎসব

আমাদের উৎসবে অন্তরেরই প্রথম প্রতিষ্ঠা। সমারােহসহকারে আমােদপ্রমােদ করায় আমাদের উৎসব কিছুমাত্র চরিতার্থ হয় না। উৎসবের মধ্যে আন্তরিক প্রসন্নতা ও শুভেচ্ছাটুকু না থাকলেই নয়। উৎসব-প্রাঙ্গন থেকে সামান্য ভিক্ষুকও যদি ম্লান মুখে ।
উৎসব ব্যর্থ হয়। যে-কোনাে ধর্মেরই
উৎসব হােক না কেন, যাত্রা হােক, কথকতা
হােক, রামায়ণ গান হােক, চণ্ডীপাঠ হােক,
যখন যা হয়, উন্মুক্ত গৃহপ্রাঙ্গনে এসে
সর্বসাধারণ যদি তাতে অকাতরে যােগদান
করেন, তবেই চিত্তের প্রশান্তি। উৎসবের
পূর্ণতা।

৮.৩ প্রতিপক্ষের যুক্তির দুর্বলতা প্রমাণ করে
স্বপক্ষে যুক্তিবিন্যাস করে প্রবন্ধ রচনা
করাে:

বিতর্কের বিষয়: ‘ফেসবুক আশীর্বাদ’

পৃথিবী নিকট হয়েছে। জ্ঞানচর্চায় অভূতপূর্ব
অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। ব্যক্তিগত
প্রচারমাধ্যম হওয়ায়, প্রত্যেকেই তার সৃষ্টিকে
প্রকাশ করবার আনন্দ লাভ করছেন। সমাজে গতিশীলতা এসেছে। সংবাদ
মাধ্যমের অপেক্ষা অনেক দ্রুত দেশ ও
বিদেশের ব্যক্তিগত ও সমাজগত সংবাদ
প্রেরণ করা সম্ভব হয়েছে। দেশ-বিদেশের
সমমনা ও সহমর্মী মানুষেরা নিকট হতে
পেরেছেন। মানুষকে আর একা’-র অবজ্ঞায়
থাকতে হচ্ছে না।

বিপক্ষে: ভুয়াে তথ্য, ভুয়া তত্ত্বে দেশ
পৃথিবী পরিব্যাপ্ত হচ্ছে। মানুষের একান্ত
ব্যক্তি-জীবনকে একা রাখার অভ্যাস চলে
যাচ্ছে। ফেসবুকের ব্যক্তিবিজ্ঞাপন প্রকাশ্য
হয়ে, অন্যের মনে অবসাদ জন্ম দিচ্ছে।
প্রমাণহীন নিন্দা, শ্লেষে মানুষ মানুষের প্রতি
হিংসার মনােভাব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন।
পড়াশুনাের মনােযােগ নষ্ট হয়ে, সব বিষয়েই
অল্প অল্প জানার রীতি তৈরি হয়ে যাচ্ছে।
সমস্ত সময়ে এইদিকে মনােযােগ, স্বাস্থ্যেও
বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

৮.৪ প্রদত্ত সূত্র ও তথ্য অবলম্বনে একটি
প্রবন্ধ রচনা করাে:

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

জন্ম : ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৮২০ বীরসিংহ গ্রাম
(তদানীন্তন হুগলী জেলা)
মাতা-পিতা : ভগবতী দেবী, ঠাকুরদাস
বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিক্ষাজীবন : পাঠশালা, পরে কলিকাতা
রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত মহাবিদ্যালয়। বিদ্যাসাগর
উপাধি লাভ। সংস্কৃত ভাষাশ্রিত বিদ্যার পরে
ইংরেজি ভাষাশ্রিত বিদ্যায় শিক্ষাগ্রহণ।
কর্মজীবন : সংস্কৃত কলেজ, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, সংস্কৃত কলেজ। ফোর্ট উইলিয়ামে বাংলা ভাষার পণ্ডিত, সংস্কৃত কলেজে সাহিত্যের অধ্যাপক, পরে অধ্যক্ষ। ১৮৫৭-এর নভেম্বর থেকে অন্তত ৩৫টি স্কুল স্থাপন।
সমাজসংস্কার : বালবিবাহ ও বহুবিবাহ রােধ
আন্দোলন। স্ত্রীশিক্ষার প্রসার ও বিধবা
বিবাহ প্রচলন।
সাহিত্যকৃতি : বাংলা গদ্যের আধুনিক
রূপদানের তিনি সেনাপতি’। বর্ণপরিচয়,
বােধােদয়, কথামালা, আখ্যানমঞ্জরী প্রভৃতি
গ্রন্থ রচনার পাশাপাশি অনুবাদ গ্রন্থ,
পঞ্চবিংশতি, শকুন্তলা, সীতার
ভাষিবিলাস ইত্যাদি।
ম‌ত্যু : ২৯ জুলাই ১৮৯১ ।

H.S BENGALI QUESTION PAPER
2015 2016 2017 2018 2019
2020 NoEx 2022 2023 2024

This Post Has 3 Comments

  1. Pritam sarkar

    Very good👍

Leave a Reply