কার দৌড় কদ্দূর -শিবতোষ মুখোপাধ্যায় | প্রশ্ন-উত্তর সমাধান | Kar Dour Koddur Question Answer Class 7

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য মেলা
সপ্তম শ্রেণি বাংলা

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (চতুর্থ পাঠ) কার দৌড় কদ্দূর প্রশ্ন ও উত্তর | Class 7 Bengali Kar Dour Koddur Question Answer wbbse

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (চতুর্থ পাঠ) লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Kar Dour Koddur Question Answer wbbse

1. সপ্তম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

3. সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

4. সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

5. সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

সপ্তম শ্রেণির বাংলা (চতুর্থ পাঠ) লেখক পরিচিতি, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 7 Bengali Kar Dour Koddur Question Answer wbbse

কার দৌড় কদ্দুর
–শিবতোষ মুখোপাধ্যায়

লেখক পরিচিতিঃ

শিবতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯২৬ – ১৯৯৩) : বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং প্রাণিবিজ্ঞানী। কলকাতার প্রেসিডেন্সি ও দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়-সহ আমেরিকার রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। জীববিদ্যার উন্নয়নমূলক গবেষণার জন্য জুলজিকাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, এশিয়াটিক সোসাইটি-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি ও সম্মান। স্যার দোরাবজি টাটা স্বর্ণপদক, জয়গোবিন্দ স্বর্ণপদক প্রভৃতি এর মধ্যে অন্যতম। বিজ্ঞানভিত্তিক জনপ্রিয় লেখালেখিতেও তাঁর কৃতিত্ব অবিস্মরণীয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘অণুর উত্তরায়ণ’, ‘লাবণ্যের অ্যানাটমি’, ‘দিক্বিদিক’, ‘মানহাটান ও মার্টিনি’, ‘আসা যাওয়ার পথের ধারে’ প্রভৃতি।

বিষয়সংক্ষেপঃ জীবজগতে কার দৌড় কেমন এবং তা কতদূর হতে পারে আলোচ্য ‘কার দৌড় কদ্দুর’ প্রবন্ধটিতে আলোচনা করা হয়েছে।
ইঁদুরকে দিয়ে আরম্ভ হয়েছে এই দৌড়ের বৃত্তান্ত। সরস একটি ভূমিকা করে লেখক ‘দৌড়’ শব্দটিকে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করেছেন। গাছেরা দৌড়োয় না। এক জায়গায় স্থির থেকেই গাছ নিজের খাদ্য তৈরি করতে পারে। কিন্তু প্রাণীদের সেই উপায় নেই। তাদের এক জায়গায় চুপচাপ বসে থাকলে চলে না, খাদ্যের খোঁজে নানাদিকে ঘুরে বেড়াতে হয়। একখানি সেল বা কোশ ছাড়া যার আর কিছুই নেই, সেই আণুবীক্ষণিক জীব অ্যামিবাও নিরন্তর চলে বেড়ায়। এককোশী জীব প্যারামোসিয়াম সিলিয়ার সাহায্যে জলের মধ্যে হাজার দাঁড়ে নৌকো চালানোর মতো এগোতে বা পিছোতে পারে। উচ্চতর প্রাণীদের মধ্যে গমনাগমনের ব্যাপারটি অবশ্যই উন্নততর। ডানা নাড়িয়ে পতঙ্গ দ্রুত উড়ে চলে। এফিড পতঙ্গ একনাগাড়ে আট মাইল পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। চিতাবাঘের দেহের ওজন একশো তিরিশ পাউন্ড ঘণ্টায় ৭০ মাইল পর্যন্ত দৌড়োতে পারে। ওই একই ওজনের নেকড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৩৬ মাইল দৌড়োয়। গোবি মরুভূমির গ্যাজেলি হরিণ ৮০ পাউন্ড ওজন নিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ৬০ মাইল বেগে দৌড়োয়। ১১০ পাউন্ড ওজনের এন্টিলোপ হরিণ দৌড়োয় ঘণ্টায় ৪৫ মাইল বেগে। পাখিরা বহু দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। মেরুপ্রদেশের টারনস পাখি প্রতি বছর ১১০০০ মাইল উড়ে আসে এবং আবার ফিরে যায়। হক্-জাতীয় কিছু পাখি ঘণ্টায় ১৫০ মাইল বেগে উড়তে পারে। কোনো কোনো পাখির গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ মাইল পর্যন্ত হয়। আফ্রিকার ইন্‌-জাতীয় পাখি ওড়া ছেড়ে হাঁটায় দক্ষ হয়ে উঠেছে। ১১০ পাউন্ড ওজন নিয়েও তারা ঘণ্টায় ৩১ মাইল বেগে চলতে পারে। হাতির শরীরটা বিরাট, ওজন ৭০০০ পাউন্ড, সেও মন্থর চালে ঘণ্টায় ২৫ মাইল বেগে ছোটে। তবে সব থেকে বেশি দৌড়োতে পারে মানুষের মন। মানুষের নিজের মনের চলাই হল প্রকৃত চলা। এই মনকে সঙ্গে নিয়ে মানুষ এই পৃথিবীতে কম দৌড়োয় না। সুদূর চিন থেকে পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এসেছেন বহু পথ হেঁটে। শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর ভারত থেকে তিব্বতে গেছেন। ভাস্কো-ডা-গামা সমুদ্র পেরিয়ে ভারতবর্ষে এসেছেন। কলম্বাস নতুন পৃথিবী আবিষ্কার করেছেন। আচার্য শংকর পায়ে হেঁটে পরিক্রমা করেছেন সারা ভারতবর্ষ। মানুষ নিজে চলার পাশাপাশি নানান যানবাহন চালাতেও উৎসুক হয়ে উঠেছে। জীবনের শাশ্বত সত্য হল এগিয়ে চলা—’চরৈবেতি’। থামা মানে জীবনের শেষ। লেখক শিবতোষ মুখোপাধ্যায় এইভাবেই জীবজগতের গমনাগমনের নানান দিক বিচারবিবেচনা করে ‘কার দৌড় কদ্দুর’ প্রবন্ধটি রচনা করেছেন।

নামকরণঃ যে-কোনো সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষেত্রেই নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। রচয়িতা নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠককে প্রবন্ধের বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটি আগাম ধারণা দিয়ে থাকেন। আলোচ্য বিজ্ঞানভিত্তিক প্রবন্ধটির নামকরণের ক্ষেত্রেও লেখক শিবতোষ মুখোপাধ্যায় সেই রীতির ব্যতিক্রম ঘটাননি।

বিচিত্র এই জীবজগৎ। বিচিত্র প্রতিটি প্রাণীর চলার কৌশল। লেখক আলোচ্য প্রবন্ধে অ্যামিবা, প্যারামোসিয়াম থেকে শুরু করে চিংড়ি, এফিড, শামুক, চিতাবাঘ, গ্যাজেলি হরিণ, এন্টিলোপ হরিণ, শজারু, খরগোশ, হাতি, ঘোড়া, বুনো গাধা, ক্যাঙারু এমনকি গ্রে হাউন্ডের চলনেরও বর্ণনা দিয়েছেন। পাখির জগৎ থেকে এসেছে মেরুপ্রদেশের টারনস ছাড়াও হক্ ও ইন্ জাতীয় পাখিদের প্রসঙ্গ।

লেখকের মূল লক্ষ্য কিন্তু এদের সকলের চলনরীতির বিশ্লেষণ নয়। বাইরের চলার চেয়ে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন ‘সত্যকারের চলা’-কে, যে চলা রয়েছে মানুষের মনের মধ্যে। মনের এই দৌড়ে মানুষই শ্রেষ্ঠ। শুধু নিজে চলেই সে তৃপ্ত হয় না। অন্য সব কিছুকেও সে চালিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এই এগিয়ে চলার মন্ত্রে যেন দীক্ষা নিয়েছে পৃথিবীও। সেও যেন “পাগলের মতো হনহন করে ছুটে চলেছে”। এই দৌড় শাশ্বত সত্যের দিকে। সত্যটি হল যে-থামা মানেই জীবনের শেষ। এই সত্যের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ‘কার দৌড় কদ্দুর’ প্রবন্ধের নামকরণটি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

হাতে কলমে’র প্রশ্নোত্তর সপ্তম শ্রেণি বাংলা | Kar Dour Koddur Question Answer Class 7 Bengali wbbse

১. ঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :

১.১ উপনিষদে উক্ত ‘চরৈবেতি’ শব্দের অর্থ (যাত্রা থামাও/ এগিয়ে যাও/ দাঁড়িও না)।

উত্তরঃ এগিয়ে যাও

১.২ পৃথিবী যে নিজের কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে ঘোরে তা প্রথম বলেন (গ্যালিলিও / কোপারনিকাস / সক্রেটিস)।

উত্তরঃ কোপারনিকাস

১.৩ ভাস্কো-ডা-গামা ছিলেন ( মার্কিন/ পোর্তুগিজ/ গ্রিক)।

উত্তরঃ পোর্তুগিজ।

১.৪ যে বৈজ্ঞানিক কারণে ‘আপেল দৌড়ায় মাটির দিকে’ সেটি হল ( মাধ্যাকর্ষণ / প্লবতা / সন্তরন–নিয়ম)।

উত্তরঃ মাধ্যাকর্ষণ।

১.৫ আইনস্টাইন ছিলেন ( সপ্তদশ / অষ্টাদশ / উনবিংশ) শতাব্দীর মানুষ।

উত্তরঃ উনবিংশ।

২. শুণ্যস্থান পূরণ করো :

২.১ এফিড ওড়ার সময় প্রতি সেকেন্ডে __________ বার ডানা নাড়ায়।

উত্তরঃ চারশো।

২.২ গমন শক্তিকে বিচার করতে হয় সবসময় __________ মাপ হিসাব করে।

উত্তরঃ দৈহিক ওজনের।

২.৩ গোবি মরুভুমিতে ________ নামে এক হরিণ আছে।

উত্তরঃ গ্যাজেলি।

২.৪ ___________ টারনস প্রতি বছরে এগারো হাজার মাইল একবার উড়ে আসে আবার পরে ফিরে যায়।

উত্তরঃ মেরু প্রদেশের

২.৫ ATP এঁর পুরো কথাটি হল _____________।

উত্তরঃ এডিনোসিন ট্রাইফসফেট।

৩. অতি সংক্ষিপ্ত আকারে নীচের প্রশ্ন গুলির উত্তর দাও :

৩.১ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় এমন দুটি প্রাণীর নাম লেখো।

উত্তরঃ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় এমন দুটি প্রানী হল – অ্যামিবা ও প্যারামিসিয়াম।

৩.২ ‘শামুক চলে যাবার সময় রেখে যায় জলীয় চিহ্ন’- সেটি আসলে কী ?

উত্তরঃ শামুকের রেখে যাওয়া জলীয় চিহ্ন জন্য আসলে শামুকের মুখের লালা।

৩.৩ ‘আমাদের নিজেদের শরীরের মধ্যে একরকম ভবঘুরে সেল আছে’– সেলটিকে ‘ভবঘুরে’ বলা হয়েছে কেন ?

উত্তরঃ ‘ভবঘুরে’ কথার অর্থ হল যারা নানা স্থানে ঘুরে বেড়ায়। শরীরের মধ্যে সেই সেলটি অ্যামিবার মত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে, তাই একে ভবঘুরে বলা হয়েছে।

৩.৪ ‘নানা জাতের খরগোশের মধ্যে গতির তারতম্য দেখা যায়’– কয়েকটি খরগোশের জাতির নাম লেখো।

উত্তরঃ কয়েকটি খরগোশের জাতির নাম হল– ক্যালিফোর্নিয়া খরগোশ, নিউজিল্যান্ড লাল খরগোশ, নিউজিল্যান্ড হোয়াইট খরগোশ, জ্যাক র‍্যাবিট প্রভৃতি।

৩.৫ ‘কোনো কোনো পতঙ্গ উড়বার সময় তাদের ডানা প্রচণ্ড জোরে নাড়ে’– তোমার চেনা কয়েকটি পতঙ্গের নাম লেখো।

উত্তরঃ আমার চেনা কয়েকটি পতঙ্গ হল– প্রজাপতি, ফড়িং, আরশোলা, মাছি প্রভৃতি।

৩.৬ ‘কত সামুদ্রিক জীব গা ভাসিয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দেয় তার হিসাব আমরা রাখি না’– কয়েকটি সামুদ্রিক জীবের নাম লেখো।

উত্তরঃ কয়েকটি সামুদ্রিক জীব হল– তিমি, হাঙ্গর, কুমির, ডলফিন, অক্টোপাস প্রভৃতি।

৩.৭ ‘রক্ষে এই যে …….’ লেখক কোন বিষয়টিকে সৌভাগ্য বলে মনে করেছেন এবং কেন ?

উত্তরঃ লেখক জীবনে চলার গতিকে সৌভাগ্য বলে মনে করেছেন। পৃথিবীর কোন প্রানীই সৃষ্টির আদিকাল থেকে তার চলা থামায় নি। তাই পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ত্ব বজায় আছে, কারণ চলমানতাই জীবন, আর থেমে যাওয়া হল মৃত্যুর সমান।

৩.৮ প্যারামোসিয়াম কীভাবে চলাফেরা করে ?

উত্তরঃ প্যারামোসিয়াম নামক এককোশী প্রাণীর দেহে অসংখ্য চুলের মতো সরু সরু সিলিয়া আছে। হাজার দাঁড়ের সাহায্যে নৌকা যেমন গতি পায়, তেমনি প্যারামোসিয়াম ও তার অসংখ্য সিলিয়ার সাহায্যে এগোতে ও পিছোতে পারে।

৩.৯ প্যারামোসিয়াম ছাড়া দুটি এককোষী জীবের নাম লেখো।

উত্তরঃ প্যারামিসিয়াম ছাড়া দুটি এককোষী জীব হল– অ্যামিবা ও ইউগ্লিনা।

৩.১০ ‘তার চলাফেরার ভঙ্গিটি ভারী মজার’– কার চলার ভঙ্গির কথা বলা হয়েছে ? তা ‘মজার’ কীভাবে ?

উত্তরঃ অ্যামিবার চলার ভঙ্গির কথা বলা হয়েছে।

এককোষী অ্যামিবা তার দেহের খানিক প্রোটোপ্লাজম সামনে গড়িয়ে দেয়, ফলে সৃষ্টি হয় ক্ষনপদ। আর এই ক্ষনপদের সাহাজ্যেই সে প্রোটোপ্লাজমকে এগিয়ে দেয়। এই ভাবে তার কয়েক মিনিটে মাত্র কয়েক মিলিমিটার চলার মন্থর গতিকে লেখকের মজার বলে মনে হয়েছে।

৩.১১ গমনে সক্ষম মাছ ও গমনে অক্ষম প্রাণীর নাম লেখো।

উত্তরঃ গমনে সক্ষম একটি গাছ হল– ক্ল্যামাইডোমোনাস, গমনে অক্ষম একটি প্রানী হল– স্পঞ্জ।

৩.১২ কয়েকটি ‘হক্’ জাতীয় পাখির নাম লেখো।

উত্তরঃ কয়েকটি ‘হক্’ জাতীয় পাখি হল– চিল, ঈগল, শিকারী বাজ, প্যাঁচা প্রভৃতি।

৩.১৩ আফ্রিকার কী জাতীয় পাখি ওড়া ছেড়ে হাঁটায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে ?

উত্তরঃ আফ্রিকার ইন্ জাতীয় পাখি কোন এক সময় উড়তে সক্ষম ছিল, কিন্তু এখন তারা ওরা ছেড়ে হাঁটায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে।

৩.১৪ ক্রমবিকাশের পথ পরিক্রমায় ঘোড়ার আঙ্গুলের কোন পরিবর্তন ঘটেছে ?

উত্তরঃ ক্রমবিকাশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ঘোড়ার পূর্ব পুরুষদের এখনকার মতো পায়ে খুর ছিল না, পাঁচটি করে আঙ্গুল ছিল। কিন্তু বিকাশের পথে আঙ্গুলগুলি অবলুপ্ত হয়ে কেবল মাঝের আঙ্গুলটি খুরে পরিণত হয়েছে।

৩.১৫ পাঠ্যাংশে রয়েছে এমন একটি নিশাচর প্রানীর নাম লেখো।

উত্তরঃ পাঠ্যাংশে রয়েছে এমন একটি নিশাচর প্রাণী হল শেয়াল।

৪. টীকা লেখঃ

হিউয়েন সাংঃ হিউয়েন সাং একজন চিনা পর্যটক যিনি বৌদ্ধধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতবর্ষে আসেন। ভারতে নালন্দা বৌদ্ধবিহারে তিনি পড়াশুনা করেন এবং ভারত থেকে স্বদেশে ফিরে তিনি ভারত ভ্রমণ বিষয়ক একটি গ্রন্থ লেখেন। তার এই গ্রন্থ থেকে তৎকালীন ভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়।

শ্রীজ্ঞান দীপঙ্করঃ আদিনাথ চন্দ্রগর্ভ ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র উনিশ বছর বয়সেই নানা শাস্ত্র পাঠ করে ওদন্তপুরী মহাবিহার থেকে শ্রীজ্ঞান উপাধি লাভ করেন। তার জ্ঞানের জন্য তিনি অতীশ উপাধি লাভ করেন। পালরাজা মহীপালের আমলে তিনি বিক্রমশীলা মহাবিহারের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। পরে তিব্বতে গিয়ে বহু ‘সংস্কৃত’ ও ‘পালি’ ভাষায় লেখা বৌদ্ধগ্রন্থ ‘ভোট’ ভাষায় অনুবাদ করেন।

ভাস্কো-ডা-গামাঃ ভাস্কো-ডা-গামা একজন পোর্তুগিজ পর্যটক। ইনি সমুদ্রপথে সুদূর ইউরোপ থেকে ভারত তথা প্রাচ্য দেশের পথ আবিষ্কার করে ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কালিকট বন্দরে পৌঁছান। প্রাচী ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য তার এই ভারতে আগমণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা।

শঙ্করাচার্যঃ কেরল রাজ্যের কালাদি গ্রামে ৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে শঙ্করাচার্যের জন্ম হয়। তিনি অদ্বৈত বেদান্তের চর্চা করেন। মূল উপনিষদের ভাষ্য সহ বহু স্তোত্র তিনি রচনা করেছিলেন। পায়ে হেটে তিনি সমস্ত ভারতের উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম পরিভ্রমণ করেন ও চার প্রান্তে চারটি মঠ স্থাপন করেন।

৫. নীচের প্রশ্ন গুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

৫.১ প্রানী মাত্রকেই খাবার সংগ্রহ করতে হয়– গাছ কীভাবে না দৌড়ে তার খাবার সংগ্রহ করতে পারে ?

উত্তরঃ সবুজ ক্লোরোফিলযুক্ত গাছ সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে নিজেদের জন্য খাদ্য তৈরী করে। মূলের সাহায্যে গাছ মাটির নীচ থেকে খনিজ লবণ মিশ্রিত জল সংগ্রহ করে গাছের সবুজ পাতায় পাঠিয়ে দেয়। পরিবেশ থেকে সংগৃহিত কার্বন-ডাই- অক্সাইড, পাতার সবুজ ক্লোরোফিল ও সুর্যের আলোর উপস্থিতিতে পাতায় শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি হয়। তাই গাছকে খাদ্য সংগ্রহ করার জন্য আর চলা ফেরা করে বেড়াতে হয় না।

৫.২ প্রবন্ধে লেখক জানিয়েছেন যে খাবার সংগ্রহের কারণেই ‘প্রানীরা এক জায়গায় স্থাণু না হয়ে দিকে দিকে পরিভ্রমণ করে’ – তুমি কি এই মতটিকে সমর্থন করো ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তরঃ খাবার সংগ্রহের জন্যই প্রানীরা এক জায়গায় স্থাণু না হয়ে নানা স্থানে পরিভ্রমণ করে, শিবতোষ মুখোপাধ্যায়ের এই মতটিকে আমি সমর্থন করি।

কিন্তু শুধুমাত্র খাদ্য সংগ্রহের জন্যই প্রাণীরা ভ্রমণ করে না। আরো কয়েকটি কারণ যেমন– বাসস্থান খোঁজার জন্য, আত্মরক্ষার জন্য, বংশবিস্তারের জন্য এক কথায় অভিযোজনের জন্য প্রানীদের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করতে হয়। তবে যেহেতু প্রানীরা নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে না তাই খাদ্যের সন্ধানও তার পরিভ্রমণ করার একটি কারণ এই বিষয়ে আমি লেখকের সঙ্গে একমত।

৫.৩ ‘গমনাগমনের প্রকৃত মাধুর্যতা আমাদের চোখে পড়ে সাধারণত উচ্চতর প্রানীর মধ্যে’– পাঠ্যাংশে উচ্চতর প্রানীদের গমনাগমনের মাধুর্য কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ লেখক পাঠ্যাংশে নানা উচ্চতর প্রানী যেমন- চিতা, নেকড়ে, গ্যাজেলি হরিণ, কুকুর এদের গমন পদ্ধতির বর্ননা করেছেন। এই সব প্রানীদের দ্রুততার সঙ্গে তাদের গমন ভঙ্গিও বিচিত্র। ৩০ পাউন্ড ওজনের চিতা দৌড়ায় ঘন্টায় ৭০ মাইল, অথচ নেকড়ে চিতার একই ওজনের হওয়া সত্ত্বেও ঘন্টায় মাত্র ৩৬ মাইল দৌড়ায়। হিপো ১৮০০ পাউন্ড ওজন নিয়ে ঘন্টায় ২০-৩০ মাইল যেতে পারে। আবার গ্যাজেলি হরিণ ৮০ পাউন্ড ওজন নিয়ে ঘন্টায় ৬০ মাইল দৌড়াতে পারে। কেউ পায়ের সাহায্যে, কেউ ডানায় ভর করে ও কেউ পাখনা ব্যবহার করে মাইলের পর ছুটে চলে, ওড়ে বা ভেসে বেড়ায়। এসব প্রানীদের গমনের কৌশল, শারীরিক গঠন, গতিবেগ বৈচিত্রে পূর্ণ।

৫.৪ ‘এ পথে আমি যে গেছি’— রবীন্দ্রসংগীতের অনুষঙ্গটি পাঠ্যাংশের কোন প্রসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘কার দৌড় কদ্দূর’ বিজ্ঞানমূলক প্রবন্ধে শিবতোষ মুখোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রানীর বিচিত্র গমনের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বাগান শামুকের প্রসঙ্গ এনেছেন। শামুক তাদের প্রসারিত মাংসল পা দিয়ে চলে। চলার সময় পথে রেখে যায় একটা জলীয় পদচিহ্ন। এমন পদচিহ্ন দেখে কি মনে হতে পারে তা কৌতুকের সুরে জানাতে গিয়ে তিনি যুতসই রবীন্দ্রসঙ্গগীতের প্রসঙ্গ এনেছেন।

৫.৫ ‘এরকম মনে করলে ভুল হবে’– কোন্ দুটি বিষয়ের ভুল সাপেক্ষে এমন মন্তব্য করা হয়েছে ?

উত্তরঃ হালকা কোনো পাখির হাওয়ার মধ্যে তীরের মতো ছুটে চলে যাওয়া, অপরদিকে অত্যধিক ওজন নিয়ে একটি হিপোর কাদা ভেঙ্গে থপথপ করে যাওয়া এই দুইয়ের গমন প্রসঙ্গে আলোচ্য মন্তব্যটি করা হয়েছে। আসলে গমনশক্তির বিচার করতে হয় সর্বদা দৈহিক ওজনের পরিমাণ হিসাব করে।

৫.৬ উচ্চতর জীবেদের পেশি কাজ করার ক্ষেত্রে কীভাবে শক্তি উৎপাদিত হয় ?

উত্তরঃ উচ্চতর জীবকুল পেশিসঞ্চালনে তার গমন অঙ্গ নাড়াতে পারে। আর এই পেশি যখন কাজ করে তখন এডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) নামক রাসায়নিক পদার্থের ক্রিয়ায় শক্তি উৎপন্ন হয়।

৫.৭ ‘ক্রমবিকাশের ইতিহাসে জানা যায়’- এ প্রসঙ্গে লেখক কোন তথ্যের অবতারণা করেছেন ?

উত্তরঃ ক্রমবিকাশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ঘোড়ার পূর্ব পুরুষদের এখনকার মতো পায়ে খুর ছিল না, পাঁচটি করে আঙ্গুল ছিল। কিন্তু বিকাশের পথে আঙ্গুলগুলি অবলুপ্ত হয়ে কেবল মাঝের আঙ্গুলটি খুরে পরিণত হয়েছে। লেখক উদ্ধৃত অংশে এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন।

৫.৮ ‘মনের দৌড়ে মানুষ চ্যাম্পিয়ন’– এমন কয়েকজন মানুষের কথা লেখো যাদের শারীরিক অসুবিধা থাকলেও মনের দৌড়ে সত্যিই তারা প্রকৃত চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠেছেন।

উত্তরঃ মনের দৌড়ে চ্যাম্পিয়ান এমন কয়েকজন মানুষ হলেন- স্টিফেন হকিং যিনি সম্পুর্ণ অথর্ব হওয়া সত্ত্বেও একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, হেলেন কেলার যিনি অন্ধ ও বধির হওয়া সত্ত্বেও সমাজসেবামূলক কাজে বিশ্বখ্যাতা। গ্রিক কবি হোমার ছিলেন অন্ধ অথচ তার রচিত দুই মহাকাব্য ‘ইলিয়াড’ ও ‘ওডিসি’ তাকে এনে দিয়েছিল বিশ্বখ্যাতি। একইভাবে বিথোফেন, ভ্যান গখ, সুধাচন্দ্রন, মাসুদুর রহমানের নাম করা যেতে পারে।

৫.৯ ‘মানুষ এখন শুধু নিজে চলেই ক্ষান্ত নয়।’– নিজের চলা ছাড়া বর্তমানে মানুষ কী কী জিনিস চালাতে সক্ষম ?

উত্তরঃ মানুষ শুধু নিজেই চলে না সে চালকও। সে জলে চালায় ডুবোজাহাজ, জাহাজ, ট্রলার, স্টীমার আরো নানা জলযান। স্থলপথে চলছে বাস, লরি, গাড়ি, সেই সঙ্গে রেলপথে রেলগাড়ি ছুটিয়ে মানুষ নিমেষে দূর দুরান্তে পৌঁছাচ্ছে। মানুষ আকাশও জয় করেছে, চলছে প্লেন, জেট প্লেন। মহাকাশেও মানুষের পদচিহ্ন অঙ্কিত হয়েছে, রকেটে করে সে ভিন গ্রহে পাড়ি দিচ্ছে।

৫.১১ ‘এ যাত্রা তোমার থামাও’ – লেখক কাকে একথা বলেছেন ? এর কোন উত্তর তিনি কীভাবে পেয়েছেন ?

উত্তরঃ লেখক শিবতোষ মুখোপাধ্যায় আলোচ্য মন্তব্যটি পৃথিবীর উদ্দেশ্যে করেছেন।

প্রবন্ধকার পৃথিবীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে তার এত চলার কী প্রয়োজন, সে কেনই বা এতো তাড়াহুড়ো করে ছুটে চলেছে। তার সেই প্রশ্নের উত্তরে পৃথিবী জানিয়েছিল যে থেমে যাওয়া মানে হল জীবনের শেষ। কারণ গতি হল বেঁচে থাকার প্রতীক।

📌আরও পড়ুনঃ

📌 সপ্তম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র | All Subject Unit Test Question Paper Click Here

📌 সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

📌 সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

📌 সপ্তম শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

This Post Has 2 Comments

  1. Anonymous

    Nice Work 🦁

Leave a Reply