কী করে বুঝবো গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর (আশাপূর্ণা দেবী) অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Ki Kore Bujbo Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য মেলা
অষ্টম শ্রেণির বাংলা

কী করে বুঝবো (আশাপূর্ণা দেবী) প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Ki Kore Bujbo Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

কী করে বুঝবো গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Ki Kore Bujbo Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

কী করে বুঝবো গল্পের লেখিকা পরিচিতি, বিষয়সংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Ki Kore Bujbo Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

1. অষ্টম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. অষ্টম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

কী করে বুঝবো গল্পের লেখিকা পরিচিতি, বিষয়সংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Ki Kore Bujbo Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

কী করে বুঝবো
—আশাপূর্ণা দেবী

আশাপূর্ণা দেবী (১৯০৯-১৯৯৫) : অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি লেখিকা। জন্ম কলকাতায়। স্কুল-কলেজে পড়ার সুযোগ ঘটেনি। অথচ অসামান্য সূক্ষ্ম দৃষ্টি, সংবেদনশীলতা ও পরিচিত সমাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি বাঙালি মধ্যবিত্ত জীবনকে আশ্চর্য দক্ষতায় তার গল্প-উপন্যাসে তুলে ধরেছিলেন। তিনি দীর্ঘ জীবনে অসংখ্য উপন্যাস, গল্প এবং ছোটোদের জন্য অজস্র বই লিখেছেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য – ছোট ঠাকুরদার কাশীযাত্রা, প্রথম প্রতিশ্রুতি, সুবর্ণলতা, বকুলকথা, অগ্নিপরীক্ষা, সাগর শুকায়ে যায়, শশীবাবুর সংসার, সোনার হরিণ ইত্যাদি। তাঁর রচিত অন্তত ৬৩টি গ্রন্থ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, লীলা পুরস্কার, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি. লিট্ এবং নানা সরকারি খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।

বিষয় সংক্ষেপঃ ছ-বছরের বুকু তাদের বাড়ির বাইরের উঁচু চাতালে খেলা করছিল। এমন সময় একটি রিকশা এসে থামে তাদের বাড়ির সামনে। রিকশা থেকে দুজন বেশ মােটাসােটা মহিলা এবং একটি বুকুরই বয়সি ছেলে নেমে তাদের বাড়িতে আসে। তারা বুকুকে জিজ্ঞাসা করে, তার মা বাড়িতে আছে কি না এবং তাকে খবর দিতে বলে যে, উত্তরপাড়া থেকে ছেনু মাসিরা এসেছেন। মা শুনে তাে খুব রেগে গেলেন এবং বিরূপ মন্তব্যও করে বসলেন। অথচ বাইরে এসে খুব আনন্দের সঙ্গে তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে লাগলেন। বুকু আর চুপ করে না-থেকে মায়ের বিরূপ মন্তব্যগুলি অতিথিদের সামনে প্রকাশ করে দিল। ছেনু মাসিদের সঙ্গে আসা ছেলেটি আলমারি ভেঙে বই বের করে ছড়ালে তাকেও বেশ কয়েকটি কথা শুনিয়ে দেয় বুকু। বাবা অফিস থেকে ফিরে অতিথিদের সম্পর্কে কী মন্তব্য করেছেন, তাও বুকু সবাইকে জানিয়ে দেয়। মা নানাভাবে তাকে থামানাের চেষ্টা করলেও বুকু থামেনি। আসলে বুকুর মা আজই তাকে পইপই করে শিখিয়েছে, সর্বদা সত্য কথা বলতে হয় এবং কোনাে কিছু গােপন করতে নেই। অথচ তার সামনে সত্য-মিথ্যা দুটি ঘটনাই ঘটে চলেছে। তাই সে সব সত্য কথাগুলিকে বলে চলেছে। অতিথিরা চলে গেলে মা ও বাবা তাকে বেদম প্রহার করতে থাকলে সে এক সময় ডুকরে কেঁদে উঠে বলে মা তাে তাকে সত্য কথা বলতে শিখিয়েছে। সে কী করে বুঝবে, যে “আসলে কী করতে হবে?”

নামকরণঃ সাহিত্যে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নামকরণের মধ্যে দিয়ে পাঠকেরা সাহিত্যের মূল বিষয়টিতে প্রবেশ করার পরে বিষয়বস্তুটি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। মূলত সাহিত্যে নামকরণ হয় কখনাে চরিত্রকেন্দ্রিক, কখনাে ঘটনাকেন্দ্রিক, কখন বা ব্যঞ্জনাধর্মী। লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী আলােচ্য পাঠ্যটির নামকরণ করেছেন কী করে বুঝব। কাহিনী ও ঘটনা বিশ্লেষণটি করলে দেখা যাবে, আলােচ্য গল্পের মূল চরিত্র ছয় বছরের ছেলে বুকু। সে বুঝতে পারেনি, বড়ােরা যে আচরণ প্রতিদিন ছােটোদের শেখায়, জীবনের ক্ষেত্রে তাদের তা প্রয়ােগ করতে বলেন, অথচ সেই আচরণ বাস্তব জীবনে ছােটোরা করে ফেললে বড়ােরা ক্ষেত্রবিশেষে তাদের শেখানাে আচরণকেই ভুল বলতে শেখায়। ছােটোদের সহজাত প্রকাশকে শাসন করে সত্যকে গােপন করতে শেখায়। সমগ্র গল্পে বুকু তার বাবামায়ের কথা ও কাজের বৈপরীত্যকে বুঝতে পারেনি। শিশু মনের সারল্য বার বার প্রশ্নের মুখে ফেলেছে ছােট্ট বুকুকে। গল্পে দেখা গিয়েছে, দুপুরবেলায় বুকুকে তার মা একশাে বার ধরে বুঝিয়েছেন, সর্বদা সত্য কথা বলতে হয় এবং কারও কাছে কোনাে কিছু গােপন করতে নেই। কিন্তু তিনি তাকে শেখাননি স্থান, কাল, পাত্র অনুযায়ী কীভাবে কথা বলতে হয়। তাই অতিথিদের অসময়ে বাড়িতে আসা প্রসঙ্গে মা ও বাবা যে যে মন্তব্য গুলি করেছেন এবং বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, সেগুলিকে সে অতিথিদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। কারণ, মা ঘরের ভিতরে অসন্তুষ্ট হলেও বাইরে অতিথিদের সামনে খুব আনন্দ করছিলেন। বুকুর কাছে এটি বিসদৃশ লাগছিল। তাই সে সব সত্যি কথাগুলি বলেছে। অতিথিরা চলে গেলে মা ও বাবা তাকে প্রহার করলে সে জানায়, “কী করে তার বুঝব আসলে কী করতে হবে?” সমগ্র গল্পটিতে ছােটোদের পাশাপাশি লেখিকা বড়ােদের সচেতন করেছেন। কী করে বুঝব’ এই শব্দগুলির মধ্যে চমৎকার কৌতুকপূর্ণ ভঙ্গিতে মানবসমাজের এক অসাধারণ চরিত্রকে তুলে ধরেছেন। তাই বলা যায়, নামকরণটি পাঠ্যাংশের কাহিনির সঙ্গে অত্যন্ত সংগতিপূর্ণ ও যথার্থ হয়েছে।

∆∆শব্দার্থ ও টীকা—

» রোয়াক— ঘরের সামনের পাকা দালান
» বেজায়— অতিরিক্ত, খুব
» পেন্ডুলাম— ঘড়ির দোলক
» বার দু-তিন— দুই-তিন বার
» ইত্যবসরে— এই সুযোগে
» অগ্রাহ্যভরে— গুরুত্ব না দিয়ে
» মোলায়েম— কোমল ও মসৃণ
» ড্যাবড্যাব করে— চোখ বড়ো বড়ো করে
» গমগম— গম্ভীর শব্দ
» মুণ্ডুপাত— কঠিন শাস্তি
» অভ্যর্থনা— সাদর আপ্যায়ন
» মাথায় বজ্রাঘাত— আকস্মিক বিপদে পড়া
» হাটে হাঁড়ি ভাঙা— সবার মাঝে গোপন কথা প্ৰকাশ
» গাদা গাদা— প্রচুর, অনেক
» ব্যাকুল— অস্থির
» বিচ্চু(‘বিচ্ছু’)— অতি দুরন্ত
» আহামরি— তেমন কিছু
» বেয়াড়া— বিশ্রী,বদ
» প্রসন্ন— আনন্দিত
» হাড়কেপ্পন— অতি কৃপণ, খুব কিপটে
» যথেচ্ছ— ইচ্ছামতো
» ধাতস্থ— প্রকৃতিস্থ,শান্ত,ধাতে আসা বা স্বাভাবিক হওয়া
» আক্কেল গুড়ুম— হতভম্ব অবস্থা
» খণ্ডায়— নিবারণ করে
» অপ্রতিভ— বিব্রত ও লজ্জিত
» রেকাবি: ছোটো থালা
» চটেমটে লাল— অত্যন্ত রেগে
» ফ্যালফ্যাল করে— অবাক হয়ে, হতবুদ্ধি হয়ে
» বিশ্বস্তর মূর্তি— ভয়ানক রূপ
» একগাদা— অসংখ্য
» বেধড়ক— প্রচুর, অত্যন্ত
» প্রহার— মার
» অপদস্থ— অপমানিত, লাঞ্ছিত
» তক্তা— কাঠের পাতলা কলক

কী করে বুঝব গল্পের অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Ki Kore Bujbo Extra Question Answer Gacher Kotha Class 8 Bengali wbbse

• সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।

১. আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম হয়েছিল—
(ক) ১৯০৯ খ্রীস্টাব্দে (খ) ১৯১০ খ্রীস্টাব্দে
(গ) ১৯১১ খ্রীস্টাব্দে (ঘ) ১৯১২ খ্রীস্টাব্দে

উত্তরঃ নিজে করো।

২. ‘কী করে বুঝবো’ গল্পটি কার লেখা ?
(ক) কামিনী রায় (খ) প্রভাবতী দেবী
(গ) আশাপূর্ণা দেবী (ঘ) মহাশ্বেতা দেবী

উত্তরঃ (গ) আশাপূর্ণা দেবী।

৩. আশাপূর্ণা দেবী যে স্কুলে পড়াশোনা করেছেন—
(ক) বিদ্যাভবন
(খ) ভারতী স্কুল
(গ) বিদ্যানিকেতন
(ঘ) কোন স্কুলে পড়েননি

উত্তরঃ কোন স্কুলে পড়েননি।

৪. ‘কী করে বুঝবো’ গল্পটি আশাপূর্ণা দেবীর কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
(ক) কিশোর গল্প সংগ্রহ
(খ) বকুল কথা
(গ) সুখের ঠিকানা
(ঘ) প্রথম প্রতিশ্রুতি

উত্তরঃ (ক) কিশোর গল্প সংগ্রহ।

৫. বুকুর মায়ের নাম হলো—
(ক) ছেনু (খ) বেনু (গ) রেণু (ঘ) নির্মলা

উত্তরঃ (ঘ) নির্মলা।

৬. ‘ছ বছরের বকু ________ বসে খেলছে।’– শূন্যস্থানে যে শব্দটি বসবে।
(ক) বারান্দায় (খ) রোয়াকে (গ) দালানে
(ঘ) ঠাকুর ঘরে

উত্তরঃ (খ) রোয়াকে।

৭. বুকুর বইয়ের সংখ্যা ছিল—
(ক) তিন-চার (খ) সাত-আট (গ) পাঁচ-ছয়
(ঘ) আট-দশ

উত্তরঃ (খ) সাত-আট।

৮. বুকুর সঙ্গে অতিথিদের জন্য খাবার এনেছিলেন—
(ক) মাসিমা (খ) পিসিমা (গ) মা (ঘ) খুড়িমা

উত্তরঃ (ঘ) খুড়িমা।

৯. ‘পিঠের ছাল তুলবেন তোমার’– কার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) ছোট কাকা (খ) মেজো কাকা (গ) সেজ কাকা (ঘ) বড় কাকা

উত্তরঃ (গ) সেজ কাকা।

১০. ‘নামলেন দুটি মোটাসোটা ভদ্রমহিলা’– মহিলা দুজন কোথা থেকে নামলেন ?
(ক) বাস (খ) অটো (গ) রিক্সা (ঘ) টোটো

উত্তরঃ (গ) রিক্সা

১১. ডাম্বল বুকুদের বাড়ির কোন জিনিসটি ভেঙ্গে ফেলেছে ?
(ক) ঘড়ি (খ) কলসি (গ) টেবিল ল্যাম্প (ঘ) কোনটিই নয়

উত্তরঃ (গ) টেবিল ল্যাম্প।

১২. বুকুর বয়স— (ক) পাঁচ (খ) ছয় (গ) সাত (ঘ) আট বছর

উত্তরঃ (খ) ছয় বছর।

১৩. বুকুর মাসিরা কোথা থেকে বুকুদের বাড়িতে এসেছে ?
(ক) উত্তরপাড়া (খ) বেহালা (গ) মধ্যমগ্রাম (ঘ) জনাই

উত্তরঃ (ক) উত্তরপাড়া।

১৪. মাসিরা যেদিন এসেছিল সেদিন বিকেলে বুকুদের কোথায় ঘুরতে যাবার কথা ছিল ?
(ক) মেলায় (খ) মামারবাড়ি (গ) সিনেমায় (ঘ) বিয়েবাড়ি।

উত্তরঃ (গ) সিনেমায়।

১৫. বুকুর মায়ের দুই মাসের নাম—
(ক) ছেনু ও বেণু
(খ) সোনু ও মনু
(ঘ) টিনু ও মিনু
(ঘ) অণু ও রিনা

উত্তরঃ (ক) ছেনু ও বেণু

কী করে বুঝব গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Ki Kore Bujbo Question Answer Class 8 Bengali wbbse

১.১ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখাে।

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম হল ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ও ‘সুবর্ণলতা।

১.২ আশাপূর্ণা দেবী তাঁর সাহিত্যকৃতির জন্য কোন কোন্ বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবী তাঁর সাহিত্যকৃতির জন্য ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’, ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’, ‘লীলা পুরস্কার’ ও ‘জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন।

২. একটি বাক্যে উত্তর দাও :

২.১ বুকু কোথায় বসে খেলা করছিল ?

উত্তরঃ বুকু বাড়ির বাইরের রােয়াকে বসে খেলা করছিল।

২.২ রিকশা থেকে কারা নামলেন ?

উত্তরঃ রিকশা থেকে নামলেন দুটি বেজায় মােটাসােটা ভদ্রমহিলা আর বুকুর বয়সেরই একটি ছেলে সম্পর্কে তাঁরা বুকুর মায়ের ছেনুমাসি, বেনুমাসি এবং বেনুমাসির ছেলে ডাম্বল।

২.৩ ডাম্বল আলমারি ভেঙে কার বই নামিয়েছিল ?

উত্তরঃ ডাম্বল আলমারি ভেঙে বুকুর সেজোকাকার বই নামিয়েছিল।

২.৪ বুকুর মা-র কী কেনা ছিল ?

উত্তরঃ বুকুর মার সিনেমার টিকিট কেনা ছিল।

২.৫ বুকু আর বুকুর সেজো খুড়িমা অতিথিদের জন্যে কী কী খাবার নিয়ে আসে ?

উত্তরঃ বুকু আর বুকুর সেজো খুড়িমা অতিথিদের জন্য বড়াে বড়াে রাজভােগ, ভালাে ভালাে সন্দেশ, শিঙাড়া, নিমকি আর চা নিয়ে আসে।

২.৬ বুকু কোন্ স্কুলে ভরতি হয়েছিল ?

উত্তরঃ বুকু ‘আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভরতি হয়েছিল।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

৩.১ বুকু খেলতে খেলতে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় কেন ?

উত্তরঃ বুকু তাদের বাড়ির বাইরের সামনের চাতালে বসে খেলা করছিল। হঠাৎ তাদের বাড়ির সামনে একটি রিকশা এসে থামে। বুকু দ্যাখে, সেই রিকশা থেকে দুজন খুব মােটাসােটা মহিলা এবং তাদের সঙ্গে বুকুর মতাে বয়সেরই একটি ছেলে নামল। বুকু এত মােটা-সােটা মহিলা আগে কখনও দেখেনি। অদৃশ্যপূর্ব অদ্ভুতদর্শন মানুষগুলিকে দেখে সে খেলতে খেলতে তাকিয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিল।

৩.২ সিঁড়ি ভেঙে আর উঠতে পারব না বাবা’ -কারা একথা বলেছেন ? তাঁরা সিঁড়ি ভেঙে উঠতে পারবেন না কেন ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবী রচিত “কী করে বুঝব’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটি বুকুদের বাড়িতে উত্তরপাড়া থেকে বেড়াতে আসা বুকুর মায়ের পাতানাে ছেনুমাসি ও বেণুমাসি বলেছেন।

» শারীরিকভাবে খুব মােটাসােটা বা ভারিক্কি ধরনের হওয়ায় সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠা তাঁদের পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য। তা ছাড়া তাঁরা অনেক পথ কষ্ট করে এসেছেন। বিশেষ করে দু-তিন বার বাস বদল করে শেষে রিকশা করে তাঁরা এখানে এসে পৌঁছেছেন। ফলে তাঁরা খুবই পরিশ্রান্ত। এ কারণে তারা সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠতে পারবেন না।

৩.৩ ‘ও কী! কী কাণ্ড করেছ তুমি’-কে, কী কাণ্ড করেছে ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর রচিত ‘কী করে বুঝব’ গল্প থেকে গৃহীত উধৃতাংশটিতে বুকুদের বাড়িতে বেড়াতে আসা তারই বয়সি ছেলে ডাম্বল কাণ্ডটি করেছে। বুকুদের বাড়ির একটি ঘরের দেয়ালে সাঁটিয়ে রাখা বইয়ের আলমারিটার একটি পাল্লা ধরে ডাম্বল এমন জোরে হ্যাচকা টান মেরেছে যে, চাবি বন্ধ কলটি বন্ধ অবস্থাতেই পাল্লার সঙ্গে খুলে বেরিয়ে এসেছে। তারপর, সেখানে সাজানাে বইগুলি থেকে একসঙ্গে তিন-চারটি বই নামিয়ে-তাতে ছবি নেই বলে ঘৃণাভরে সেগুলিকে মাটিতে ফেলে দিয়েছে।

৩.৪ বুকু অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল কেন ?

উত্তরঃ উত্তরপাড়া থেকে ছেনুমাসিদের অপার খবরটি বুকু যখন তার মাকে দেয়, তখন তার মা শুনে খুব বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, অসময়ে লােকজনের বাড়িতে আসাকে তিনি একদম ভালােবাসেন না। কিন্তু আবার তাঁদের সামনে এসে তিনিই আনন্দে হইহই করে আপ্যায়ন শুরু করেন। শুধু তাই নয়, কিছুটা অভিমানের সুরে তাঁদের অনেক দিন না-আসার জন্য অনুযােগ জানান। অথচ কিছুক্ষণ আগে যে খবরটায় মা অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বিশ্রি মনােভাব দেখিয়েছিলেন। মায়ের এই দুরকম আচরণের ব্যাপারটি ছােট্ট বুকুর মাথায় ঢােকেনি। একারণেই বুকু অবাক হয়ে ফ্যালফেলিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল। একই বিষয়ে মায়ের এই দু-রকম ব্যবহার তার কাছে। খুব গােলমেলে লাগছিল বলেই বুকু ফ্যালফ্যাল করে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিলেন।

৩.৫ “ছেলের কথা শুনেই বুকুর মা-র মাথায় বজ্রাঘাত” “ছেলের কথা শুনে বুকুর মা-র মাথায় বজ্রাঘাত হল কেন ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘কী করে বুঝব’ গল্পে বুকুর মুখে উত্তরপাড়া থেকে ছেনু মাসিরা এসেছেন শুনে বুকুর মা বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, অসময়ে বাড়িতে লােকের বেড়াতে আসা তিনি একদম পছন্দ করেন না। কিন্তু অতিথিদের সামনে এসে তিনি ভীষণ আনন্দের সঙ্গে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান এবং এতদিন আসেননি। কেন তা নিয়ে অভিমান প্রকাশ করতে থাকেন। মায়ের এই পরিবর্তন দেখে বুকু হঠাৎ সবার সামনে মায়ের সেই বিরূপ মন্তব্যগুলিকে বলতে শুরু করলে লজ্জায়, অপমানে তার মায়ের মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়।

৩.৬ ডাম্বলকে ইস্কুলে ভরতি করা হয়নি কেন ?

উত্তরঃ ডাম্বলকে ইস্কুলে ভরতি না-করানাের কারণস্বরূপ ডাম্বল জানায় তার বাবা অতিশয় কৃপণ ব্যক্তি। ডাম্বলের বয়স সাত বছর। সুতরাং, সাত বছরের ছেলের স্কুলের বেতন সাত টাকা। এই সাত টাকা তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি বলেছেন, ডাম্বলের পড়াশােনার প্রয়ােজন নেই। সে বরং চাষবাস করে খাবে।

৩.৭ কে জানে পাগলা-টাগলা হয়ে যাবে নাকি’ -কার সম্পর্কে এই মন্তব্য করা হয়েছে ? এমন সন্দেহের কারণ কী ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা “কী করে বুঝব’ গল্পের প্রধান চরিত্র বুকুর সম্পর্কে এই মন্তব্য করা হয়েছে।

» বুকুর বাড়িতে বেড়াতে আসা বেণুমাসি, ছেনুমাসির আগমনে বুকুর মা খুশি হননি। বুকুর মা অখুশি হয়ে অতিথিদের আড়ালে যে কথাগুলাে বলেছিলেন বুকু সেই কথাগুলােই নির্বিকারে অতিথিদের সামনে বলে ফেলে। যা অপদস্থ করে বুকুর মাকে। পাশাপাশি ডাম্বলকে বুকু তার শরীর ও বুদ্ধি নিয়ে যে কথাগুলাে বলেছিলাে তা বেণুমাসি সুযােগ বুঝে বুকুর মাকে বলায়, সবার সামনে নিজের সম্মান ধুলােয় মিশে যাচ্ছে দেখে ক্রোধ্বন্বিত বুকুর মা সংশয় ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বুকুর মাথা ঠিক আছে কিনা এসব প্রসঙ্গ তুলে লােকলজ্জার হাত থেকে বাঁচতে বুকুকে ‘পাগলা’ বলে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করেন।

৩.৮ ‘দুজনে মিলে চেঁচান, বল, বল কেন ওসব বললি ?’— বুকু কেন ওসব বলেছিল ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘কী করে বুঝব’ গল্পের শেষে দেখা যায়, প্রবল অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে চরম অপমানিত হয়ে বেনুমাসি, ছেনুমাসি ও ডাম্বল চলে যায়। এর জন্য স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা না করে বুকুর অকপট সত্যি কথা বলাই ছিল প্রধান কারণ। অথচ, বুকুর মা দুপুরবেলাতে বুকুকে পইপই করে বুঝিয়েছিল— সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে এবং কোনাে অবস্থায় কারও কাছে কিছু লুকোনাে যাবে না। তাই, মাথায় মায়ের সদ্য শেখানাে কথাগুলি ঘুরপাক খাচ্ছিল। ফলে সে সেই মতাে আচরণ করতে শুরু করে। ছােট্ট বুকু ভেবেছিল, মা হয়তাে এতে সন্তুষ্ট হবেন। উলটে যে তাকেই মার খেতে হতে পারে সে ভাবেনি। অর্থাৎ সরল, স্বাভাবিক ছয় বছরের শিশু বুকুর পক্ষে স্থানকাল-পাত্র বিবেচনা করে কথা বলার দক্ষতা গড়ে ওঠেনি বলেই সে এমন ব্যবহার করেছিল।

8. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষার উত্তর দাও :

৪.১ গল্পে বুকুর আচরণ তাঁর মাকে অতিথিদের সামনে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। বুকুর এই আচরণ কি তুমি সমর্থন করাে ? বুকু কেন অমন আচরণ অতিথিদের সামনে করেছিল ?

উত্তরঃ বুকুর এই আচরণকে পুরােপুরি সমর্থন করা যায় না। উপযাজক হয়ে অতিথিদেরকে সে কথাগুলি না শােনাতেই পারত। বিশেষ করে যে কথাগুলি সঙ্গে পিতা-মাতার সম্মান জড়িয়ে আছে, তা প্রকাশ করা সন্তানের পক্ষে উচিত নয়। পিতা-মাতার সম্মান রক্ষা করা প্রতিটি সন্তানের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু যেহেতু সে ছ-বছরের ছােট্ট ছেলে তাই তার এই আচরণকে খুব অপরাধ বলে ভাবা যাবে না। তা ছাড়াও তার পিতামাতারও তাকে স্থান-কাল-পাত্র অনুযায়ী কেমন ব্যবহার করতে হয়, তার শিক্ষা দেওয়া উচিত ছিল।

» বুকুকে দুপুরবেলা তার মা একশােবার ধরে বুঝিয়েছে, সব সময় সত্য কথা বলতে হবে এবং কারও কাছে কোনাে কিছু গােপন করা উচিত নয়। কিন্তু পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী কোথায় কেমন আচরণ করা উচিত তিনি তার শিক্ষা দেননি। কিন্তু ঘটনাচক্রে সেদিনই বাড়িতে অতিথি আসে এবং তাঁর মা ঘরে-বাইরে দু-রকম মন্তব্য করে বসেন। ফলে সদ্য শেখা শিক্ষাটিকে একটু প্রয়ােগ করে দেখতে গিয়েই বুকু এই সমস্যার সৃষ্টি করে ফেলে।

৪.২ বাড়িতে অতিথি এলে তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত সে সম্পর্কে বন্ধুকে একটি চিঠি লেখাে।

উত্তরঃ

বাগুইআটি
৩.০১.২০২০

প্রিয় রঞ্জন,
কেমন আছিস ? অনেকদিন হয়ে গেল তোর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। এর মধ্যে ইস্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা হল, রেজাল্ট বেরোল। নতুন ক্লাসের একেবারে নতুন বইগুলো নিয়ে এখন মশগুল হয়ে আছি। আশা করি তুইও এবার ভালো রেজাল্ট করে নতুন ক্লাসে উঠেছিস।
আমাদের এবারের বাংলা বইতে শ্রদ্ধেয়া লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘কী করে বুঝব’ গল্পটা পড়েছিস কি ? গল্পটা পড়লাম। গল্পের একটি শিশুচরিত্র বুকু বুঝতেই পারেনি যে বাড়িতে অতিথি এলে কী রকম আচরণ করতে হবে!—গল্পে এই নিয়েই যত বিপত্তি।
ছ-বছরের ছোটো ছেলে বুকু মার থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছিল যে, সবসময় সত্যি কথা বলতে হবে। কারোর কাছে কিছু লুকোনো যাবে না। অথচ বাড়িতে যখন বেণুমাসি, ছেনুমাসি আর ডাম্বল এল, সত্যি কথা অকপটে বলে ফেলেই সে সমস্যা তৈরি করল, যা বুকুর করা উচিত হয়নি। বড়োদের সামনে ভদ্র ও নম্রভাবে কথা বলাই উচিত বলে আমার মনে হয়। বড়োদের সব কথার মাঝখানে কথা বলাও উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, বড়োদের জগৎ আলাদা। তাঁরা যা বলেন বা করেন তা ছোটোদের ক্ষেত্রে শোভা পায় না। তাই বড়োদের সঙ্গে ছোটোদের একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলা উচিত। বাড়িতে অতিথি এলে তার সঙ্গে ভালো করে কথা বলা, তাকে অভ্যর্থনা জানানোর পাশাপাশি সাধ্যমতো আতিথেয়তা করা উচিত। ‘কী করে বুঝব’ গল্পের বুকু যদি এমন আচরণ করত, তাহলে কোনো সমস্যাই হত না। এক্ষেত্রে আমার আর যে কথাটা মনে হয়েছে, তা হল ছোটোদের একটা নিজস্ব জগৎ থাকা উচিত, যেখানে বড়োরা ছোটোদের স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে দেবেন এবং ছোটোরাও বড়োদের বিষয়ে কোনো কথা বলবে না। নতুন বছরে আমাদের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় ও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠুক। ভালোবাসা নিস। কাকু কাকিমাকে আমার প্রণাম জানাস। আর হ্যাঁ, অবশ্যই গল্পটা পড়ে তোর মতামত জানাতে ভুলিস না। পারলে একবার সবাইকে নিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে ঘুরে যাস।

ইতি
তোর প্রিয় বন্ধু লতিফ

৪.৩ কী করে বুঝব, আসলে কী করতে হবে’– গল্পে বুকু এই কথা বলেছিল।আসলে কী করা উচিত বলে তােমার মনে হয় ?

উত্তরঃ প্রখ্যাত লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘কী করে বুঝব’ গল্পে মা-বাবার প্রচণ্ড মারের মুখে ডুকরে কেঁদে উঠে বুকু এ কথা বলেছিল।
» ছ-বছরের ছোটো ছেলে বুকু মার থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছিল যে, সবসময় সত্যি কথা বলতে হবে। কারোর কাছে কিছু লুকোনো যাবে না। অথচ বাড়িতে যখন বেণুমাসি, ছেনুমাসি আর ডাম্বল এল, সত্যি কথা অকপটে বলে ফেলেই সে সমস্যা তৈরি করল, যা বুকুর করা উচিত হয়নি। বড়োদের সামনে ভদ্র ও নম্রভাবে কথা বলাই উচিত বলে আমার মনে হয়। বড়োদের সব কথার মাঝখানে কথা বলাও উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, বড়োদের জগৎ আলাদা। তাঁরা যা বলেন বা করেন তা ছোটোদের ক্ষেত্রে শোভা পায় না। তাই বড়োদের সঙ্গে ছোটোদের একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলা উচিত।

৪.৪ গল্পে দুটি ছােটো ছেলের কথা পড়লে বুকু আর ডাম্বল। দুজনের প্রকৃতিগত মিল বা অমিল নিজের ভাষায় লেখাে।

উত্তরঃ বুকু আর ডাম্বলের মধ্যে মিল হল—(১) দুজনেই স্পষ্টবাদী।(২) দুজনেই বাবা-মায়ের সম্মানকে ধুলােয়। মিশিয়েছে।(৩) দুজনেই ঘরের গােপন কথাকে বাইরে প্রকাশ করেছে।

» তবে দুজনের মধ্যে অমিলও লক্ষ করা যায় (১) বুকু ডাম্বলের মতাে দুরন্ত নয়। বুকু আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভরতি হয়েছে। সেখানে সে পড়াশােনা করে। অন্যদিকে, ডাম্বল দুরন্ত প্রকৃতির এবং সে কোনাে স্কুলে ভরতি হয়নি। ফলে সে পড়াশােনা করে না।(২) ডাম্বল জানে, বই মানে তাতে ছবি থাকতে হবে। কিন্তু বুকু জানে, কোন বইতে ছবি থাকে এবং কোন বইতে ছবি থাকে না। (৩) বুকুর মুখে তাদের সম্পর্কে কী কী নিন্দে হতে পারে, সেসব কথা শুনে ডাম্বল বুকুকে ঘুসি মারতে এগিয়ে যায় অর্থাৎ তার এই আচরণে রাগ-ক্রোধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণতার বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে। এই ধরনের আচরণ বুকুর মধ্যে একেবারেই অনুপস্থিত।

৪.৫ গল্পটি পড়ে বুকুর প্রতি তােমার সহানুভূতির কথা ব্যক্ত করে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করাে।

উত্তরঃ অন্নপূর্ণা দেবীর লেখা ‘কী করে বুঝব’ পাঠ্যাংশটি পড়ে বুকুর প্রতি আমাদের মায়া হয়। ছােট্ট নিস্পাপ ছেলেটি অতিরিক্ত স্পষ্টবাদী বা সত্যবাদী হতে গিয়েই বাবা-মায়ের কাছে প্রচণ্ড মার খায়। বয়সে ছােটো হওয়ায় তার মনের মধ্যে বাস্তবের জটিল মারপ্যাচ এখনও তৈরি হয়নি। সে জানত না কোথায়, কখন, কোন কথা বলতে হবে। কোন কথাতে কে, কতটা আঘাত পায় বা অসম্মানিত বােধ করে, সেসব বােঝার ক্ষমতা তার এখনও হয়নি। সে যদি সরল মনের বালক না-হত, তাহলে কখনােই সে অমন কথা সবার সামনে বলত না। তার মা তাকে শিখিয়েছিলেন—সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে এবং কোথাও কিছু গােপন করা যাবে না। কিন্তু কোথায়, কোন্ কথা বলা যাবে না সেটি তিনি শেখাননি। সুতরাং, যখনই সে দেখল ঘরে এক রকম বলছেন, অথচ বাইরে অতিথিদের সামনে আর-এক রকম কথা বলছেন তখনই তার মনে হল সত্য কথা বলা উচিত এবং কোনাে কিছু গােপন করা উচিত নয়। ফলে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে যায় তার আচরণে। গল্পের শেষে বুকুর পরিণতির কথা পড়ে তার প্রতি আমাদের মনে সমবেদনা জাগে।

৫. একই অর্থযুক্ত শব্দ গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখাে : সংবাদ, পুস্তক, সন্তুষ্ট, কোমল, আপ্যায়ন।

» সংবাদ = খবর।

» পুস্তক = বই।

» সন্তুষ্ট =খুশি।

» কোমল = মােলায়েম।

» আপ্যায়ন = অভ্যর্থনা।

৬. নীচের শব্দগুলির সন্ধি বিচ্ছেদ করাে : ইত্যবসরে, বজ্রাঘাত, ব্যাকুল, নিশ্চয়, রান্না, দুরন্ত, সন্দেশ।

» ইত্যবসরে = ইতি + অবসরে।

» বজ্রাঘাত = বজ্র + আঘাত।

» ব্যাকুল = বি + আকুল।

» নিশ্চয় = নিঃ + চয়।

» রান্না =রাঁধ + না।

» দুরন্ত = দুঃ + অন্ত।

» সন্দেশ = সম্ + দেশ।

৭. নীচের শব্দগুলির কোনটি বিশেষ্য এবং কোটি বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখাে। এরপর বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ এবং বিশেষণগুলির বিশেষ্যের রূপ লেখাে : মন, শিক্ষা, অবস্থা, গম্ভীর, শাসন, শয়তান, লাল, সর্বনেশে, ঘর, সুন্দর, দুরন্ত, মুখ, কথা, হ্যাংলা।

» মন (বিশেষ্য ) ⟶ মানসিক (বিশেষণ)

» শিক্ষা (বিশেষ্য) ⟶ শিক্ষিত (বিশেষণ)

» অবস্থা (বিশেষ্য) ⟶ অবস্থিত ( বিশেষণ)

» গম্ভীর (বিশেষণ) ⟶ গাম্ভীর্য (বিশেষ্য)

» শাসন (বিশেষ্য) ⟶ শাসিত (বিশেষণ)

» শয়তান(বিশেষ্য) ⟶ শয়তানি(বিশেষণ)

» লাল (বিশেষ্য) ⟶ লালচে(বিশেষণ)

» সর্বনেশে (বিশেষণ) ⟶ সর্বনাশ(বিশেষ্য)

» ঘর (বিশেষ্য) ⟶ ঘরোয়া(বিশেষণ)

» সুন্দর (বিশেষণ) ⟶ সৌন্দর্য(বিশেষ্য)

» দুরন্ত(বিশেষণ) ⟶ দুরন্তপনা(বিশেষ্য)

» মুখ (বিশেষ্য) ⟶ মৌখিক( বিশেষণ)

» কথা (বিশেষ্য) ⟶ কথিত(বিশেষণ)

» হ্যাংলা (বিশেষণ) ⟶ হ্যাংলামি(বিশেষ্য)

৮. নীচের প্রতিটি উপসর্গ দিয়ে পাঁচটি করে নতুন শব্দ তৈরি করে লেখাে : অ, বি, বে, আ, প্র, অব।

» অ = অজয়, অচল, অলক, অমর, অবেলা।

» বি = বিহার, বিজয়, বিচার, বিবেক, বিমাতা।

» বে = বেরসিক, বেচাল, বেইমান, বেবাক, বেসামাল।

» আ = আবাদ, আগমন, আজীবন, আলুনি, আজন্ম।

» প্র = প্রশান্ত, প্রতাপ, প্রভাত; প্রচুর; প্রদীপ।

» অব = অবদান, অবকাশ, অবধান, অবতার, অবশ।

৯. সমােচ্চারিত/প্রায় সমােচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ লিখে আলাদা আলাদা বাক্য রচনা করাে : আসা, আশা। সোনা, শোনা। হাড়, হার। মার, মাড়। মাস, মাষ। জ্বালা, জালা।

» আসা = (আগমন)— আপনার আসার খবর আমরা আগেই পেয়েছি।

» আশা = (আকাঙ্ক্ষা)— মানুষের আশার শেষ নেই।

» সােনা = (সুবর্ণ)— সােনার বাজার এখন খুব তেজি।

» শােনা = (শ্রবণ করা)— কথক ঠাকুরের কথাগুলি শােনার মতােই।

» হাড় = (অস্থি)— আজ ফুটবল খেলার সময় রমেনের পায়ের হাড় ভেঙেছে।

» হার = (গলায় পরার অলংকার)— আমার ইচ্ছা, জীবনের প্রথম মাইনের টাকায় মা-কে একটা সােনার হার কিনে দেব।

» মার = (প্রহার)— চোরটিকে মারতেই সে সত্য স্বীকার করল।

» মাড় = (ভাতের ফ্যান)— কাপড়ে মাড় দিয়ে ধােপা ইস্ত্রি করে।

» মাস = (বছরের বারাে ভাগের এক ভাগ)— আশ্বিন মাসের মেঘ দেখলেই বােঝা যায় পুজো এসে গেছে।

» মাষ = (ডাল শস্য বিশেষ)— মাষ-কলাই খুবই প্রােটিনযুক্ত খাদ্য।

» জ্বালা =(যন্ত্রণা অর্থে)— আগুনে হাতটা পুড়ে গিয়ে খুব জ্বালা করছে।

» জালা = (মাটির বড়াে পাত্র)— গরমের দিনে জালায় জল রাখলে তা খুব ঠান্ডা থাকে।

১০. (এই গল্পে অজস্র শব্দদ্বৈত ব্যবহৃত হয়েছে। শব্দগুলি গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখাে : (দুটি শব্দ খুঁজে দেওয়া হল) খুকখুক, তােড়জোড়।

উত্তরঃ হাসতে হাসতে; হাঁপাতে, হাঁপাতে, সাজানাে-গােছানাে, ড্যাব ড্যাব, গমগম, মুছতে মুছতে; হই হই, ছেণু-বেণু, চালতা চালতা, গাদা গাদা, রুটি-টুটি, পড়তে উড়তে, পাকা পাকা, চাষ বাস, কাঁদো কাঁদো, ভাজা ভাজা, পাগলা টাগলা, পিছন পিছন, ঝন ঝন, হা হা, বড়াে বড়াে, ভালাে ভালাে, বেছে বেছে, হায় হায়, শুধু শুধু, হালকা হালকা, মােটা সােটা।

১১. নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক / পূরণবাচক শব্দ খুঁজে বার করাে :

১১.১ মা তাে সেই তিনতলার ছাতে।

উত্তরঃ তিন— সংখ্যাবাচক শব্দ।

১১.২ দুই বােনের দুই-দু-গুণে চারটি চোখ কপালে উঠে গেছে।

উত্তরঃ দুই, চার— সংখ্যাবাচক শব্দ

১১.৩ সাত বছরের ছেলের স্কুলের মাইনে সাত টাকা।

উত্তরঃ সাত— সংখ্যাবাচক শব্দ।

১১.৪ নিজেই তাে দুপুরবেলা একশাে বার করে বললে সবসময় সত্যি কথা বলবি।

উত্তরঃ একশাে— সংখ্যাবাচক শব্দ।

১২. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করাে :

১২.১ বুকু ছুটে ওপরে চলে যায়। (জটিল বাক্যে)

উত্তরঃ বুকু নামের যে ছেলে সে ছুটে উপরে চলে যায় ।

১২.২ ছেনুমাসি আর অন্যটির নাম বেণুমাসি। (সরল বাক্যে)

উত্তরঃ ছেনুমাসির মতাে অন্যটির নাম বেণুমাসি।

১২.৩ যত বড়াে হচ্ছে তত যেন যা-তা হয়ে যাচ্ছে। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তরঃ বড়াে হচ্ছে এবং যা-তা হয়ে যাচ্ছে।

১২.৪ ছেলের কথা শুনেই বুকুর মার মাথায় বজ্রাঘাত। (জটিল বাক্যে)

উত্তরঃ ছেলের যা কথা তা শুনেই বুকুর মা-র মাথায় বজ্রাঘাত।

১৩. পাকা, মাথা— এই শব্দগুলির প্রত্যেকটিকে দুটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্য লেখাে :

» পাকা = (অভিজ্ঞ)— সুবীরবাবু খুব পাকা মাথার লােক।

» পাকা = (পিচ, সিমেন্ট বা ইট বাঁধানাে রাস্তা)— রহিম পাকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।

» মাথা = (রাস্তার প্রান্তে)— সুজয় প্রতিদিন সকালে চৌমাথার চায়ের দোকানে খবরের কাগজ পড়তে যায়।

» মাথা = (মগ ডালে)— কমল আম পাড়তে গাছের মাথায় উঠেছে।

আরও পড়ুনঃ

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গাছের কথা প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা হাওয়ার গান কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা কী করে বুঝব গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নাটোরের কথা গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গড়াই নদীর তীরে কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছোটোদের পথের পাঁচালী (নবম থেকে অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ) প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ভাষাচর্চা ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নির্মিতি ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

Leave a Reply