সাহিত্য মেলা
ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা
কিশোর বিজ্ঞানী কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা | Kishore Biggani Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা কিশোর বিজ্ঞানী কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 6 Bengali Kishore Biggani Kobitar Question Answer wbbse
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা কিশোর বিজ্ঞানী কবিতার লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | Kishore Biggani Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse
1. ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
3. ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
4. ষষ্ঠ শ্রেণির ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
5. ষষ্ঠ শ্রেণির পরিবেশ ও বিজ্ঞান সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
6. ষষ্ঠ শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা কিশোর বিজ্ঞানী কবিতা, লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | Kishore Biggani Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse
কিশোর বিজ্ঞানী
—অন্নদাশঙ্কর রায়
এক যে ছিল কিশোর, তার
মন লাগে না খেলায়
ছুটি পেলেই যায় সে ছুটে
সমুদ্দুরের বেলায়।
সেখানে সে বেড়ায় হেঁটে
এধার থেকে ওধার
বাড়ি ফেরার নাম করে না
হোক না যত আঁধার।
কুড়িয়ে তোলে নানা রঙের
নকশা আঁকা ঝিনুক
এক একটি রতন যেন
নাই বা কেউ চিনুক।
বড়ো হয়ে ঝিনুক কুড়োয়
জ্ঞানের সাগরবেলায়।
ঝিনুক তো নয়, বিদ্যা রতন
মাড়িয়ে না যায় হেলায় ।
বৃদ্ধ এখন, সুধায় লোকে,
‘কী আপনার বাণী ।
বলে গেছেন যা নিউটন
পরম বিজ্ঞানী—
‘অনন্তপার জ্ঞান পারাবার
রত্নভরা পুরী
তারই বেলায় কুড়িয়ে গেলেম
কয়েক মুঠি নুড়ি।’
শব্দার্থ : কিশোর— বাল্য ও যৌবনের মধ্যবর্তী বয়স। বিজ্ঞানী— বিজ্ঞানে পন্ডিত, বৈজ্ঞানিক। নকশা— স্কেচ, রেখাচিত্র। মাড়িয়ে— পায়ে দলে। সুধায়— অন্তহীন মহাবিশ্ব। জ্ঞান পারাবার— জ্ঞানের সমুদ্র।
👉বাংলা সমস্ত পাঠের প্রশ্নোত্তর👈
অন্নদাশঙ্কর রায় (১৯০৪ – ২০০২) : জন্ম ওড়িশার ঢেঙ্কানলে । প্রথম জীবনে ওড়িয়া ভাষায় সাহিত্য রচনা করলেও পরবর্তী জীবনে বাংলাভাষায় বহু মননশীল উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ ও ভ্রমণকাহিনি রচনা করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ তারুণ্য। তাঁর লেখা অন্যান্য বিখ্যাত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পথে প্রবাসে, সত্যাসত্য, যার যেথা দেশ প্রভৃতি। তাঁর লেখা উড়কি ধানের মুড়কি, রাঙা ধানের খই প্রভৃতি ছড়ার বই ছোটোদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় । অন্নদাশংকর রায় লীলাময় রায় ছদ্মনামেও বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন।
সারাংশ : আমাদের বিশাল বড়ো পৃথিবী হলো অসংখ্য জ্ঞানের ভান্ডার। আমরা আমাদের ক্ষণস্থায়ী জীবনে তার খুব কমই জানতে পারি এবং জানতেও ততটা আগ্রহী নয়। তাই আমাদের জানার ইচ্ছেটা সারা জীবন ধরে থাকা দরকার।
হাতে কলমে’র প্রশ্নোত্তর
১.১ অন্নদাশংকর রায় প্রথম জীবনে কোন ভাষায় সাহিত্য রচনা করতেন ?
উত্তরঃ অন্নদাশংকর রায় প্রথম জীবনে ওড়িয়া ভাষায় সাহিত্য রচনা করতেন।
১.২ তাঁর লেখা দুটি ছোটোদের ছড়ার বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ তাঁর লেখা দুটি ছোটোদের ছড়ার বইয়ের নাম হল—’উড়কি ধানের মুড়কি’ ও ‘রাঙা ধানের খই।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ কিশোরের মন লাগে না কীসে ?
উত্তরঃ কিশোরের মন লাগে না খেলায়।
২.২ কখন কিশোর মন সমুদ্দুরের বেলায় যেতে চায় ?
উত্তরঃ ছুটি পেলেই কিশোর মন সমুদ্দুরের বেলায় যেতে চায়।
২.৩ অনুসন্ধিৎসু কিশোরটি সাগরবেলায় কী কুড়িয়ে তোলে ?
উত্তরঃ অনুসন্ধিৎসু কিশোরটি সাগরবেলায় নানা রঙের নকশা আঁকা ঝিনুক কুড়িয়ে তোলে।
২.৪ কোন পারাবারকে ‘অনন্তপার’ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ জ্ঞানপারাবারকে ‘অনন্তপার’ বলা হয়েছে।
২.৫ দুজন প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম লেখো।
উত্তরঃ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু হলেন দুজন প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী।
৩. কবিতা থেকে বিপরীত শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো : আলো, ছোটো, এখানে, তখন।
উত্তরঃ
» আলো— আঁধার। » ছোটো— বড়ো।
» এখানে— সেখানে। » তখন— এখন।
৪. প্রতিটি শব্দকে পৃথক অর্থে আলাদা বাক্যে প্রয়োগ করো : সুধায়, পুরী, বেলা, হেলা, ভরা।
উত্তরঃ
» সুধায়(অমৃত)— মধু যেন সুধায় পরিণত হয়েছে যে খেতে ব্যাপক হয়েছে।
» সুধায় (জিজ্ঞাসা করে)— শিশুরা কত প্রশ্ন সুধায়,আমরা বিরক্ত হই।
» পুরী(স্থান)— পুরীর সমুদ্র সৈকত মনোরম।
» পুরী(বাড়ী)— আমাদের বাড়ি এত সুন্দর যেন রাজপুরী।
» বেলা (তট)— পুরীর বেলাভূমি খুব মনোরম।
» বেলা(সময়)— বেলা চলে যাচ্ছে, ঘরে কখন ফিরবে ?
» হেলা(সহজে)— তোরা কেমন খেললি,ওরা হেলায় হারিয়ে দিলো।
» হেলা(হেলে পড়া)— ঝড়ে গাছটা হেলে পড়েছে।
» ভরা (পূর্ণ)— এত বৃষ্টিতে বড় দিঘী জলে ভরে গেছে।
» ভরা (পুরো)— ভরা দুপুরে বাড়ির বাইরে যাওয়া অনুচিত।
৫. আবিষ্কারের গল্পগুলির পাশে পাশে আবিষ্কারকের নাম উল্লেখ করো এবং তাঁদের সম্পর্কে আরো জানার চেষ্টা করো :
ঘড়ি, এরোপ্লেন, রেডিও, দূরবিন, টেলিভিশন।
উত্তরঃ
» ঘড়ি, এরোপ্লেন— রাইট ভাতৃদ্বয়।
» রেডিয়ো— মার্কনি(Guglielmo Marconi)।
» দুরবিন— গ্যালিলিয়ো।
» টেলিভিশন— জন লগি বেয়ার্ড।
৬. ছুটি পেলে তোমার মন কী করতে চায় চার-পাঁচটি বাক্যে লেখো।
উত্তরঃ ছুটি পেলে আমার মন বেড়াতে যেতে চায়। প্রতিদিনকার জীবনের একঘেঁয়েমি কাটিয়ে একটু আনন্দ উপভোগ করতে চাই। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গল্প গুজবে আড্ডা দিতে মন চায়। বাড়ি থেকে দূরে সবুজ মাঠে ঘুরতে যেতে চাই। সাইকেলে চড়ে অপার আনন্দ করতে চাই।
৭. কবিতা থেকে শব্দ নিয়ে নীচের শব্দ ছকটি পূরণ করো :
পাশাপাশি:
(১) আঁধার, (২) পারাবার, (৩) কিশোর, (৪) নিউটন।
উপর নীচে :
(১) রত্নভরা, (২) রঙের (৩) রতন।
৮. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৮.১ পাঠ্য ছড়াটির প্রথম পঙক্তি শুরু হয়েছে ‘এক যে ছিল কিশোর’…..এইভাবে, সাধারণত কোন ধরনের রচনা এভাবে শুরু হয়ে থাকে? সেই ধরনের রচনার বিষয়ের সঙ্গে ছড়াটির বিষয়গত সাদৃশ্য / বৈসাদৃশ্য আলোচনা করো।
উত্তরঃ ‘এক যে ছিল কিশোর’…. সাধারণত রূপকথার গল্প কাহিনীর সূচনা হয় এইভাবে।
রূপকথার গল্পেও যেমন রাজা রানী ইত্যাদি চরিত্রের বিচিত্র জীবন কাহিনীর বর্ণনা থাকে, ঠিক তেমনি এই কবিতাটিতে একজন কিশোর বিজ্ঞানী সম্বন্ধে আলোকপাত করা হয়েছে। আসলে তোমরা সকলেই এক একজন কিশোর বিজ্ঞানী। জানার আগ্রহই আবিষ্কারের জন্ম দেয়, তাই কবি ছড়ার ছলে এই কবিতায় আজকের পড়ুয়াদের নিজ নিজ বিষয়ে অনুধাবন করে নতুন নতুন তথ্য উদ্ভাবনের কাজে মনোনিবেশ করতে বলেছেন।
৮.২ ‘মন লাগে না খেলায়’ কার খেলায় মন লাগে না ? কিশোরেরা সাধারণত কোন ধরনের খেলাধুলো করে থাকে ? তার পরিবর্তে ছড়ার কিশোরটি কী করতে পছন্দ করত ?
উত্তরঃ অন্নদাশংকর রায়ের রচিত ‘কিশোর বিজ্ঞানী’ ছড়ায় উল্লেখিত কিশোরটির খেলায় মন লাগে না। কিশোরেরা সাধারণত দলবদ্ধভাবে দৌড়াদৌড়ি, লাফানো, ঝাঁপানো প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতে পছন্দ করে।
কিন্তু ছড়ায় উল্লিখিত কিশোরটি ছুটি পেলে সাগরবেলায় গিয়ে সারাদিন ধরে নানা রঙের ঝিনুক কুড়োয়। আসলে পৃথিবীরুপ জ্ঞান সমুদ্রের বেলাভূমিতে কিশোরটি নতুন নতুন জ্ঞান আহরণ করে নিজের জ্ঞানভাণ্ডার পূরণ করতে ব্যস্ত থাকে।
৮.৩ ‘এক একটি রতন যেন / নাইবা কে চিনুক’— কোন্ জিনিসকে রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ? কেনই বা এ ধরনের তুলনা ? তাকে চেনা বা না চেনার প্রসঙ্গই বা এল কেন?
উত্তরঃ নানা রঙের নকশা আঁকা ঝিনুককে রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
এই ধরনের তুলনা করা হয়েছে কারণ প্রত্যেকটি বস্তুর মধ্যে জানার বিষয় আছে। যার জানার আগ্রহও দেখার চোখ আছে সেই ঝিনুকের মধ্যে জ্ঞানের রতন খুঁজে পায়।
এই পৃথিবীতে সকলের সব ব্যাপারে জানার আগ্রহ থাকে না। এর মধ্যে অনেকেই চাই পৃথিবীর রহস্য উদঘাটন করতে। তাই তাকে চেনা বা না চেনার প্রসঙ্গ এই কারণেই এসেছে।
৮.৪ সেদিনের কিশোরটি পরিণত বয়সে উপনীত হলে তাকে কী করতে দেখা যায় ?
উত্তরঃ সেদিনের কিশোরটি পরিণত বয়সে উপনীত হয়ে জ্ঞানসমুদ্রের বেলাভূমিতে বিদ্যা রূপ রতন কুড়োতে দেখা যায়। বিদ্যা যেন অবহেলায় কারো দ্বারা নষ্ট না হয় সে বিষয়ে তার সতর্ক দৃষ্টি থাকে। জ্ঞান সমুদ্রের পরিধি বিশাল, আমরা তার মাত্র কয়েকটি কণা সংগ্রহ করতে পারি। তাই আজকের কিশোরকে পরিণত বয়সে জ্ঞান আহরণে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
৮.৫ “ঝিনুক কুড়োয় / জ্ঞানের সাগরবেলায়”— অংশের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ বিশাল পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডার অপরিসীম। এক একটি জ্ঞান এক একটি ঝিনুকের মতো। সমুদ্রতটে অসংখ্য ঝিনুক আসলে অসংখ্য জ্ঞান। আমরা তার কয়েকটি মাত্র জ্ঞান সংগ্রহ করি। কিন্তু আমাদের সীমিত ক্ষমতায় আমরা তার কণামাত্রই আহরণ করতে পারি।
৮.৬ “বৃদ্ধ এখন, শুধায় লোকে”– কে এখন ‘বৃদ্ধ’ ? লোকে তাকে কী জিজ্ঞেস করে ? তাদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি কী বলেন ?
উত্তরঃ ‘বৃদ্ধ’ বলতে এখানে বিজ্ঞানী নিউটনকে বোঝানো হয়েছে। লোকে তাকে জিজ্ঞেস করেন যে, “ কী আপনার বাণী ?’ এই প্রশ্নের উত্তরে পরম বিজ্ঞানী নিউটন যা বলে গেছেন সেটাই তাঁর বাণী অর্থাৎ জ্ঞানের সমুদ্র অনন্ত এবং তা রত্নেভরা। আমরা সেখান থেকে কেবলমাত্র সামান্য জ্ঞানই আহরণ করে থাকি।
৮.৭ কোন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীর প্রসঙ্গ ছড়াটিতে রয়েছে ? বিজ্ঞানশাস্ত্রে তাঁর অবদান সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো।
উত্তরঃ আলোচ্য ছড়াটিতে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনের কথা বলা হয়েছে। ১৬৮২ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে তাঁর জন্ম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করেই নিউটন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের আবিষ্কারে মনোনিবেশ করেন। এই ক্ষণজন্মা পুরুষটি বিজ্ঞানশাস্ত্রের প্রভূত উন্নতি সাধন করে গেছেন। তিনিই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আবিষ্কারক। পৃথিবীর আকর্ষণজনিত সূত্র, আলোর গতি নির্ণয় এবং সে বিষয়ে বহু নিয়ম আবিষ্কার করে পৃথিবীকে নতুনভাবে আমাদের কাছে উপস্থিত করেছেন। এত বড়ো আবিষ্কারের জন্যই নিউটন আমাদের কাছে পরম বিজ্ঞানী বলে বিখ্যাত।