কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর একাদশ শ্রেণি| Kortar Bhuth Golper Question Answer [WBCHSE]

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

কর্তার ভূত- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লেখক পরিচয়ঃ ‘কর্তার ভূত’ গল্পটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৬১- ১৯৪১) লেখা। রবি ঠাকুরের প্রধান পরিচয় তিনি একজন কবি। তবে তাঁর সাহিত্য-প্রতিভা কেবল কবিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি কবিতা ছাড়াও উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গান এবং অসংখ্য ছোটোগল্প লিখে গেছেন। তিনিই বাংলা ছোটোগল্পের প্রথম সার্থক স্রস্টা। ‘গীতাঞ্জলী’ কাব্যের জন্য ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত তথা এশিয়া মহাদেশ থেকে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন।
উৎসঃ ‘কর্তার ভূত’ রচনাটি রবি ঠাকুরের ‘লিপিকা’ (১৯২২) গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের এমন কিছু রচনা ও আছে যেগুলি সাহিত্যের কোনো চেনা প্রকরণের মধ্যে পড়ে না। অর্থাৎ, সেগুলি গল্পও নয়, প্রবন্ধও নয়। ‘লিপিকা’র রচনাগুলিও সেই শ্রেণিতে পড়ে।

 

বিষয় সংক্ষেপঃ ‘লিপিকা’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘কর্তার ভূত’ একটি রাজনৈতিক রূপক কাহিনী। রূপক কাহিনি বলতে সেই কাহিনিকে বোঝায় যার একটি অন্তর্নিহিত অর্থ থাকে। আলোচ্য গল্পে লেখক গল্পচ্ছলে উনিশ শতকের ভারতীয় সমাজের চালচিত্র তুলে ধরেছেন। গল্পটি আয়তনে ছোটো হলেও এর বিষয় ভাবগম্ভীর এবং তাৎপর্যপূর্ণ।
মনে রাখা দরকার, ‘কর্তার ভূত’ কোনো ভূতের গল্প নয় বরং বিজ্ঞানমনস্কতার গল্প। ‘ভূত’ শব্দের অর্থ অতীত এবং ভূত বলতে প্রেত, অশরীরী আত্মা ইত্যাদিকেও বোঝায়। এই গল্পে লেখক একদিকে যেমন ভারতীয়দের অতীতপ্রীতির দিকটি তুলে ধরেছেন, তেমনি ভূতের মূলে যে ভয়ের অস্তিত্ব থাকে সেই দিকেও আলোকপাত করেছেন। এরপর মূল গল্পের সারবস্তুটুকু দেখে নেওয়া যাক ।

 

উনিশ শতকে সারা পৃথিবী যখন পুরাতন ধর্মতন্ত্রকে বিদায় জানিয়ে বিজ্ঞানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইছে তখন শুধু ভারতের মানুষ পুরাতন অচল ধর্মতন্ত্রকে নিয়ে বাঁচতে চাইছে। ভারতের মানুষ পুরাতনপন্থী এবং নতুন কিছুকে সহজে আয়ত্ত করতে দ্বিধা বোধ করে। সেইজন্য যখন সবাই শুনল যে পুরাতন ধর্মতন্ত্রের দিন শেষ হয়ে এসেছে সবাই ভাবতে বসল এবার তাদের কী হবে? নতুন কিছু এলে পুরাতনকে সরে যেতেই হয়। এটাই কালের নিয়ম। তাই ভারতের বুক থেকেও ধর্মতন্ত্র বিদায় নিল কিন্তু ধর্মভীরু সাধারণ মানুষ ধর্মতন্ত্রের কঙ্কালকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইল। কর্তা অর্থাৎ ধর্মতন্ত্র রইল না কিন্তু কর্তার ভূত অর্থাৎ পুরোহিততন্ত্র কায়েম রইল। চারিদিকে বিজ্ঞানের জয়জয়কার আর তার মাঝে ভারতে চলে ভূতের রাজত্ব।

 

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ‘ভূতের রাজত্ব’ আর কতদিন চলবে? পৃথিবীর বাকি সব দেশ বিজ্ঞানের চর্চা করে নিজেদের উন্নতি করছে আর ভারতের মানুষ তখনো ভূতের সেবায় মগ্ন। ভারতীয় সমাজ যেন ভূতের জেলখানা। এমন এক অদৃশ্য বন্ধনে সবাই জড়িয়ে পড়েছে যে ইচ্ছে করলেও কারো সাহস হয় না ‘ভূতের রাজত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন করার। শেষমেষ দু’একজন বুড়ো কর্তার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে যে ভূতের রাজত্ব আর কতদিন? কর্তা উত্তর দেন তিনি ধরে রাখেননি, ভারতীয়রাই ভুতকে জড়িয়ে ধরে আছে- তারা ছাড়লেই ছাড়া। এর উত্তরে তারা জানায় যে তাদের ভয় করে। কর্তা বলেন যে এই ভয়ই হল ভূতের মূল।
১. “দেশটাকে সে নাড়েও না, অথচ ছাড়েও না”- সে বলতে কার কথা বলা হয়েছে?
(ক) বর্গী (খ) ভুতের নায়েব
(গ) মাসিপিসি (ঘ) বুড়াে কর্তা
উত্তরঃ (ঘ) বুড়াে কর্তা।
২. “একেই বলে অদৃষ্টের চালে চলা।” — কোনটি অদৃষ্টের চালে চলা ?
(ক) চোখ বুজে চলা, আদিম চলা
(খ) নিয়ম মতো চলা
(গ) দেখে চলা (ঘ) প্রাচীন চলা
উত্তরঃ (ক) চোখ বুজে চলা, আদিম চলা।
৩. “বেহুঁশ যারা তারাই পবিত্র, হুঁশিয়ার যারা তারাই অশুচি ।” একথা বলে—
(ক) বর্গির দল
(খ) শিরোমণি-চূড়ামণির দল
(গ) সনাতন পন্থীরা (ঘ) নব্যবাদীরা
উত্তরঃ (খ) শিরোমণি- চূড়ামণির দল।
৪. “বুলবুলির ঝাঁককে কৃষ্ণনাম শোনাব, আর বর্গির দলকেও।” কে একথা বলেছে ?
(ক) কর্তা
(খ) মামাতো-পিসতুতো ভূতের নায়েব
(গ) মাসি-পিসি (ঘ) ভূতের নায়েব
উত্তরঃ (গ) মাসি-পিসি।
৫. “চুপ, এখনো ঘানি অচল হয়নি।” বক্তা—
(ক) মাসি – পিসি (খ) বুড়ো কর্তা
(গ) বর্গি (ঘ) ভূতের নায়েব
উত্তরঃ (ঘ) ভূতের নায়েব।
৬. “যেমন করে পারি ভূত ছাড়াব।” — কথাগুলি বলেছে-
(ক) ভূতের নায়েব (খ) শিরোমণি-চূড়ামণি
(গ) অর্বাচীনরা (ঘ) কেউই নয়
উত্তরঃ (গ) অর্বাচীনরা।
৭. “এখন কথাটা দাঁড়িয়েছে”- কথাটা কী?
(ক) বর্গী আসে কেন
(খ) খাজনা দেব কীসে
(গ) সনাতন ঘুমের কী হবে
(ঘ) উপরের কোনোটিও নয়
উত্তরঃ (খ) খাজনা দেব কীসে।
৮. “দেশটাকে সে নাড়েও না, অথচ ছাড়েও না।”- কে এমনটা করছে—
(ক) বুড়ো কর্তা (খ) মাসি-পিসি
(গ) ভূতের নায়েব (ঘ) কেউই নয়
উত্তরঃ (ক) বুড়ো কর্তা।
৯. আদিম চালে বা অদৃষ্টের চালে প্রথম চলত –
(ক) তত্ত্ব জ্ঞানীরা (খ) কীটাণুরা
(গ) শিরোমণি-চূড়ামণিরা (ঘ) বর্গিরা
উত্তরঃ (খ) কীটাণুরা।
১০. ভূতুড়ে জেলখানার দারােগা ছিল—
(২০১৪)
(ক) ভুতের রায়ত (খ) ভুতের জমিদার
(গ) ভুতের নায়েব (ঘ) ভুতের গােমস্তা
উত্তরঃ (গ) ভুতের নায়েব।
১১. অন্য সব দেশে ভূতের বাড়াবাড়ি হলেই মানুষ অস্থির হয়ে খোঁজ করে—
(ক) দারোগার (খ) ওঝার
(গ) নায়েবের (ঘ) ভগবানের
উত্তরঃ (খ) ওঝার।
১২. জগতের সবচেয়ে আদিম চলার রীতিটি
হল— (২০১৬)
(ক) চোখ খুলে চলা (খ) চোখ বুজে চলা
(গ) গুটুসুটি হয়ে চলা (ঘ) জোরে জোরে হাঁটা
উত্তরঃ (খ) চোখ বুজে চলা।
১৩. “খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো”- এই গানটি গাওয়া হয়-
(ক) ভুতুড়ে জেলখানায়
(খ) সমগ্র দেশ জুড়ে
(গ) ভূতের রাজ্যজুড়ে
(ঘ) পাড়ায় পাড়ায়
উত্তরঃ (গ) ভূতের রাজ্যজুড়ে।
১৪. আগে ভাগে ভূতে পেয়ে বসেছে –
(ক) ওঝাকে (খ) দারোগাকে
(গ) মাসি-পিসিদের (ঘ) নায়েবকে
উত্তরঃ (ক) ওঝাকে।
১৫. “কেবল অতি সামান্য কারণে একটা মুশকিল বাধল।” কারণটি হলো—
(ক) পৃথিবীর সকল দেশেই অত্যন্ত ভূতের উপদ্রব
(খ) পৃথিবীর কোনো দেশেই ভূতের অস্তিত্ব নেই ।
(গ) পৃথিবীর অন্য দেশগুলিকে ভূতে পায়নি ।
(ঘ) পৃথিবীর কোনো দেশেই উপযুক্ত ওঝা পাওয়া গেল না
উত্তরঃ (গ) পৃথিবীর অন্য দেশগুলিকে ভূতে পায়নি।
১৬. “ভূতের জন্যে কারও মাথাব্যথাও নেই।”- এর কারণ—
(ক) ভূতের জ্ঞানবুদ্ধি নেই
(খ) ভূতের মাথা নেই
(গ) ভূতের বল নেই
(ঘ) ভূতের মা-বাবা নেই
উত্তরঃ (খ) ভূতের মাথা নেই।
১৭. ‘সনাতন ঘুম’ বলতে রবীন্দ্রনাথ কী
বুঝিয়েছেন ? (২০১৭)
(ক) আদিম কালের ঘুম (খ) অন্ধকার ঘুম
(গ) ভাতঘুম (ঘ) চিরকালের ঘুম
উত্তরঃ (ক) আদিম কালের ঘুম।
১৮. “এই চোখ বুজে চলাটাই হচ্ছে জগতের সবচেয়ে আদিম চলা ।” – একথা বলেছে—
(ক) শিরোমণি-চূড়ামণি দল
(খ) মাসি-পিসিরা (গ) দারোগা
(ঘ) দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরা
উত্তরঃ (ঘ) দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরা।
১৯. “অভূতের পেয়াদা ঘােরে”- (২০১৬)
(ক) সদরের রাস্তায়-ঘাটে
(খ) শ্মশানের রাস্তায়-ঘাটে
(গ) জেলখানার আনাচে কানাচে
(ঘ) খিড়কির আনাচে কানাচে
উত্তরঃ (ক) সদরের রাস্তায়-ঘাটে।
২০. “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে ?”
কারা একথা বলেছিল ?
(ক) দেশসুদ্ধ সবাই (খ) ছেলেবুড়োরা
(গ) মাসিপিসিরা
(ঘ) ভূতুড়ে জেলখানার কয়েদিরা
উত্তরঃ (ক) দেশসুদ্ধ সবাই।
২১. ‘সেইখানেই তো ভূত’- কথাটি বলেন—
(২০১৯)
(ক) অভূতের পেয়াদা (খ) বুড়ো কর্তা
(গ) শিরোমনি-চূড়ামনি (ঘ) ভূতের দল
উত্তরঃ (খ) বুড়ো কর্তা।
২২. “তারা ভয়ংকর সজাগ আছে”- কারা ?
(ক) ওঝারা (খ) ভূতেরা (গ) অন্য দেশের লোকেরা
(ঘ) তত্ত্বজ্ঞানীরা
উত্তরঃ (গ) অন্য দেশের লোকেরা।
২৩. ‘কর্তার ভূত’ গল্পটি কোন গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে ?
(ক) গল্পগুচ্ছ (খ) বলাকা (গ) লিপিকা
(ঘ) ছিন্নপত্র
উত্তরঃ (গ) লিপিকা।
২৪. ‘ভূতের রাজত্বে’ কোন জিনিসটা অতি
অবশ্যই থাকে ?
(ক) অন্ন (খ) বস্ত্ৰ (গ) স্বাস্থ্য (ঘ) শান্তি
উত্তরঃ (ঘ) শান্তি।
২৫. ভূতের উপদ্রবে ঘরে টেকা দায় হয়— (২০১৭)
(ক) বুড়ো কর্তার (খ) নাস্তিকের (গ) বাচ্চাদের
(ঘ) গৃহস্থের
উত্তরঃ (ঘ) গৃহস্থের।
২৬. স্বভাবদোষে কোনো কোনো লোক ভূতের কানমলা খায়, কারণ— (২০১৮)
(ক) তারা অন্যায় করে
(খ) তারা কর্তার ক্ষমতাকে মানে না
(গ) তারা বিদ্রোহ করে
(ঘ) তারা নিজেরা ভাবতে যায়
উত্তরঃ (ঘ) তারা নিজেরা ভাবতে যায়।
২৭. ‘ভুতুড়ে জেলখানা’ সম্পর্কে কোন কথাটি সত্যি ?
(ক) তার দেয়াল আছে
(খ) তার দেয়াল আছে কিন্তু চোখে দেখা যায় না
(গ) তার দেয়াল ফুটো করা যায় না
(ঘ) উপরের সবকটি বাক্য সত্য
উত্তরঃ (ঘ) উপরের সবকটি বাক্য সত্য।
২৮. “চুপ। ঘানি এখনো অচল হয়নি”- কথাটি কার ?
(ক) বুড়ো কর্তার (খ) ভূতের নায়েবের
(গ) মাসিপিসিদের (ঘ) অর্বাচীনদের
উত্তরঃ (খ) ভূতের নায়েবের।
২৯.”যেমন করে পারি ভূত ছাড়াব।”— উক্তিটির বক্তা হলো— (২০১৪)
(ক) মাসিপিসি (খ) ভুতের নায়েব
(গ) পিসতুতো-মাসতুতোর দল (ঘ) অর্বাচীনেরা
উত্তরঃ (ঘ) অর্বাচীনেরা।
৩০. “নইলে ছন্দ মেলে না”- কী না হলে ছন্দ
মেলে না ?
(ক) খোকা ঘুমোলো (খ) পাড়া জুড়োলো
(গ) বর্গী এল দেশে (ঘ) বুলবুলিতে ধান খেয়েছে
উত্তরঃ (গ) বর্গী এল দেশে।
৩১. “তাই আরো একটা প্রশ্ন উঠে পড়েছে”-
প্রশ্নটি কী ?
(ক) খাজনা দেব কীসে ?
(খ) ভূতের শাসন কি অনন্তকাল চলবে ?
(গ) ভূত তাড়াবো কী করে ?
(ঘ) বর্গীরা আসে কেন ?
উত্তরঃ (খ) ভূতের শাসন কি অনন্তকাল চলবে?
৩২.কর্তার ভূত প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?
(ক) প্রগতি (খ) প্রবাসী (গ) সবুজ পত্র
(ঘ) কালি কলম
উত্তরঃ (খ) প্রবাসী।
৩৩. কর্তার ভূত কোন শ্রেনীর রচনা?
(ক) রূপক আশ্রয়ী (খ) ব্যাঞ্জনা ধর্মী
(গ) চরিত্র প্রধান (ঘ) বিষয় বস্তু কেন্দ্রিক
উত্তরঃ (ক) রূপক আশ্রয়ী।
৩৪.”দেশের লোক ভারী নিশ্চিত হলেন”- কেন?
(ক) ভূতকে মানলে কোনো ভাবনাই নেই
(খ) বুড়ো কর্তা বেঁচে গেলেন
(গ) তারা অভিভাবক হীন রইল না
(ঘ) ভূতের রাজত্বে সবাই সুখী
উত্তরঃ (ক) ভূতকে মানলে কোনো ভাবনাই নেই।
৩৫. তবু স্বভাব দোষে যারা ভাবতে যায় তাদের পেতে হয়—
(ক) ভূতের প্রশংসা (খ) অভ্যর্থনা
(গ) ভূতের কান মলা (ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (গ) ভূতের কান মলা।
৩৬.ভূতের জেলখানার ঘানি থেকে নির্গত হয় –
(ক) শিতল জল (খ) তেল
(গ) মানুষের তেজ (ঘ) মানুষের ঘর্ম
উত্তরঃ (গ) মানুষের তেজ।
৩৭.পৃথিবীর অন্য সব দেশে ভূতের বাড়াবাড়ি হলে মানুষ অস্থির হয়ে খোঁজ করে —
(ক) চিকিৎসককে (খ) কবিরাজকে
(গ) ওঝা-কে (ঘ) মাসি পিসিকে
উত্তরঃ (গ) ওঝা-কে।
৩৮. “একমাত্র বর্গিরই দোষ” – এখানে যে দোষের কথা বোঝানো হয়েছে, সেটি হলো –
(ক) বর্গি আসে কেনো
(খ) মানুষ ভূতগ্রস্থ হয় কেন
(গ) খাজনা দেব কিসে
(ঘ) ভূতের শাসনটাই কি অনন্তকাল চলবে
উত্তরঃ (ক) বর্গি আসে কেনো।
৩৯. “গেরস্তের খিড়কির আনাচে-কানাচে ঘোরে ” —
(ক) অভূতের পেয়াদা (খ) ভূতের পেয়াদা
(গ) মাসি পিসি (ঘ) শিরোমণি চূড়ামণি
উত্তরঃ (খ) ভূতের পেয়াদা।
৪০.”অভূতের পেয়াদা ঘোরে” —
(ক) হাটে (খ) শহরে (গ) সদরের রাস্তায়-ঘাটে
(ঘ) গেরস্তের উঠানে
উত্তরঃ (গ) সদরের রাস্তায়-ঘাটে।
৪১. “একদিক থেকে এ হাঁকে খাজনা দাও আর একদিক থেকে ও হাঁকে খাজনা দাও”, ‘এ’ এবং ‘ও’ বলতে বোঝানো হয়েছে —
(ক) ভূতের নায়েব ও মাসি পিসিকে
(খ) ভূতের পেয়াদা ও অভূতের পেয়াদাকে
(গ) ভূতের নায়েব ও তত্বজ্ঞ্যানীকে
(ঘ) শিরোমণি চূড়ামনি ও মাসি পিসিকে
 উত্তরঃ (খ) ভূতের পেয়াদা ও অভূতের পেয়াদাকে।
ছোট প্রশ্নোত্তরঃ
১. কর্তা মরে গিয়ে দেশের মানুষকে ঠান্ডা রাখবে কীভাবে ?
উত্তরঃ কর্তা মরে গিয়ে ভূত হয়ে তাদের ঘাড়ে চেপে থাকবেন। তাতেই দেশের মানুষ ঠান্ডা থাকবেন।
২. “সেই তেজ বেরিয়ে গেলে মানুষ ঠান্ডা হয়ে যায় ।” এখানে কোন তেজের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ লেখক রবীন্দ্রনাথ ‘কর্তার ভূত’ গল্পে আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটিতে মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি বা সীমাহীন শক্তির কথা বলেছেন ।
৩. ভূতের মাথা না থাকার কী ফল হয়েছিল?
উত্তরঃ ভূতের মাথা না থাকায় কারুর জন্য ভূতের মাথাব্যথা ছিল না।
৪. কারা ভূতের কানমলা খায় ?
উত্তরঃ যারা স্বভাব দোষে ভূতকে নিয়ে ভাবতে যায়, তারা ভূতের কানমলা খায় ।
৫. এদেশের লােকেরা ভূতের বাড়াবাড়ি হলে ওঝাদের খোঁজ করে না কেন ?
উত্তরঃ এদেশের লােকেরা ভূতের বাড়াবাড়ি হলে ওঝাদের খোঁজ করে না কারণ এখানে ওঝাকেই ভূতে পেয়ে আছে।
৬.“অম্ল হোক, বস্ত্ৰ হোক, স্বাস্থ্য হোক শান্তি থাকে।”– কোথায়, কেন এমনটি হয় ?
উত্তরঃ প্রতি নিয়ত ঘানি ঘোরানোর ফলে মানুষের তেজ নিঃশেষ হয়ে আসে, ফলে মানুষ হয়ে যায় ঠান্ডা। যার কারণে ভূতের রাজত্বে আর যা-ই হোক না কেন অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য এবং শান্তি থাকে।
৭.”দেশসুদ্ধ লােক ভূতগ্রস্ত হয়ে চোখ বুজে চলে”- ভূতগ্রস্ত চলার অর্থ কী ?
উত্তরঃ ভূতগ্রস্ত চলা কথাটির অর্থ নিজস্ব ভাবনা-চিন্তা বিসর্জন দিয়ে যাবতীয় ভাবনা ভূতের মাথায় চাপিয়ে দেওয়া।
৮.“প্রবুদ্ধমিব সুপ্তঃ” কথাটির অন্তর্নিহিত অর্থ কী ?
উত্তরঃ আলোচ্য কথাটির অন্তর্নিহিত অর্থ হলো সকল জ্ঞানী ব্যক্তিই সুপ্ত অর্থাৎ ঘুমিয়ে থাকে।
৯.“এ প্রশ্নকে ঠেকানো যায় না”– প্রশ্নটি কী ?
উত্তরঃ যে প্রশ্নকে ঠেকানো যায় না বলে গল্পকার মন্তব্য করেছেন সেই প্রশ্নটি হলো যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে জানতে চাওয়া— কীসে খাজনা দেব।
১০.”একেই বলে অদৃষ্টের চালে চলা।”— অদৃষ্টের চালে চলা কী ?
উত্তরঃ চোখ বুজে বা অন্ধভাবে চলাকে লেখক ‘কর্তার ভূত’ কাহিনিতে অদৃষ্টের চালে চলা বলেছেন।
১১. মাথা না থাকার ফলে ভূতেরা কী সুবিধা পায় ?
উত্তরঃ মাথা না থাকার ফলে ভূতেদের কারোর জন্যে কোনো রকম মাথাব্যথা অর্থাৎ দায়দায়িত্ব, কতর্ব্য–ভাবনাচিন্তা থাকে না বলে গল্পকার মনে করেন।
১২. “কেবল অতি সামান্য কারণে একটু মুশকিল বাঁধল।” মুশকিলটি কী ?
উত্তরঃ উদ্ধৃতিটিতে যে মুশকিলের কথা বলা হয়েছে তা হলো– পৃথিবীর অন্য দেশগুলোকে ভূতে পায়নি। “শ্মশান থেকে মশান থেকে ঝোড়ো হাওয়ায় হা হা করে তার উত্তর আসে।”
১৩. ভূতের জেলখানার বৈশিষ্ট্য কী ছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের কর্তার ভূত রচনায় ভূতের জেলখানার বৈশিষ্ট্য ছিল সেই জেলখানার দেয়াল চোখে দেখা যেত না।
১৪. ভূত শাসিত রাজ্যে শান্তি থাকার দৃষ্টান্ত কী ?
উত্তরঃ ভূত শাসিত রাজ্যে এত বেশি শান্তি থাকে যে ভূতের বাড়াবাড়ি হলেও ভূত শাসিত রাজ্যের মানুষ ওঝার খোঁজ করে না।
১৫. পৃথিবীর অন্য সব দেশে ঘানি থেকে যে তেল বেরােয় তা দিয়ে কী করা হয় ?
উত্তরঃ পৃথিবীর অন্য সব দেশে ঘানি থেকে যে তেল বেরােয় তা দিয়ে সেই দেশের ভবিষ্যতের রথচক্রকে সচল রাখা হয়।
১৬. ভুতুড়ে জেলখানার দারােগা কে ?
উত্তরঃ ভুতুড়ে জেলখানার দারােগা হলেন ভূতের নায়েব।
১৭. ভূতের কানমলা কেমন হয় ?
উত্তরঃ ভূতের কানমলা ছাড়ানাে যায় না, তা থেকে পালানাে যায় না। তার বিরুদ্ধে নালিশ চলে না, এমনকি তার সম্বন্ধে বিচারও হয় না।
১৮. অদৃষ্টের চালে চলা কাকে বলে ?
উত্তরঃ সৃষ্টির প্রথম চক্ষুহীন কীটাণুরা অদৃষ্টের চালে চলত।
১৯. কর্তার ভূত গল্পটি রবীন্দ্রনাথের কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত ?
উত্তরঃ কর্তার ভূত গল্পটি রবীন্দ্রনাথের গল্পিকা ধরনের রচনা লিপিকা গ্রন্থের অন্তর্গত।
২০. ভূততন্ত্রের জেলখানার কয়েদিরা ঠান্ডা হয়ে যায় কেন ?
উত্তরঃ এখানকার ঘানি ঘােরালে কয়েদিদের তেজ বের হয়ে যায়। ফলে ভূততন্ত্রের জেলখানার কয়েদিরা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে যায়।
২১. ভূতের রাজ্যে কী থাকে ?
উত্তরঃ আর কিছু না থাক, ভূতের রাজ্যে শান্তি থাকে।
২২. ভূতের ঘানি ঘুরিয়ে কী বের হয় ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ভূতের ঘানি থেকে মানুষের তেজ বের হয়।
২৩. ঘানি ঘােরানাে হয় কেন ?
উত্তরঃ মূলত তেল বের করার জন্য ঘানি ঘােরানাে হয়।
২৫. খােকা ঘুমালে কার কার লাভ হয় ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের মতে খােকার আরাম হয়, খােকার অভিভাবকেরও আরাম হয় এবং পাড়াপড়শিও শান্তিতে থাকে।
২৪. ভূতের জেলখানা থেকে বেরােনাে যায় না কেন ?
উত্তরঃ ভূতের জেলখানার দেওয়াল চোখে দেখা যায় না বলেই এর থেকে বেরােনাে যায় না।
২৬. অন্য দেশে ঘানির তেল দিয়ে কী হয় ?
উত্তরঃ অন্য দেশে ঘানির তেল দিয়ে সে দেশের ভবিষ্যতের রথচক্রকে সচল রাখা হয়।
২৭. কোন বিষয়ে কারও মনে কোনাে দ্বিধা জাগত না ?
উত্তরঃ ভূত শাসনতন্ত্র নিয়ে কারও মনে কোনাে দ্বিধা জাগত না।
২৮. এদেশের ওঝার দশা কেমন ?
উত্তরঃ এদেশের ওঝাকে আগেভাগেই ভূতে পেয়ে বসে আছে। তাই তারা নিজেরাই ভূতগ্রস্ত।
২৯. মরণকালে বুড়াে কর্তার দুঃখ হল কেন ?
উত্তরঃ বুড়াে কর্তার মরণকালে দেশশুদ্ধ সবাই তাকে জানিয়েছিল যে, তিনি মারা গেলে তাদের দশা খুব খারাপ হবে। তাই তার দুঃখ হয়েছিল।
৩০. এদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ কেমন ?
উত্তরঃ এদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ পােষা ভেড়ার মতাে ভূতের খোঁটায় বাঁধা। শুধু অন্ধ অনুসরণই তাদের ভবিতব্য।
৩১. ‘কর্তার ভূত’ রচনায় কোন কারণে মুশকিল বেঁধেছিল ?
উত্তরঃ মুশকিল বেঁধেছিল কারণ, এদেশকে ভূতে পেলেও পৃথিবীর অন্য সব দেশকে ভূতে পায়নি।
৩২. অন্যদেশের মানুষের অবস্থা কেমন ?
উত্তরঃ জীবনে চলার গতিতে অন্যদেশ ভয়ংকর সজাগ হয়ে আছে। তারা আমাদের মতাে ভূতগ্রস্ত নয়।
৩৩. বর্গি কারা ?
উত্তরঃ ইতিহাস থেকে জানা যায় বর্গিরা হল মারাঠা দস্যু, যারা ১৯৪০-৫১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বে বারবার বাংলাদেশের গ্রামের পর গ্রাম লুণ্ঠন করত।
৩৪. জগতের হুঁশিয়ারদের কাছে এদেশের লােক ঘেঁষতে চায় না কেন ?
উত্তরঃ জগতের হুঁশিয়ারদের কাছে ঘেষলে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বলে এদেশের লােক তাদের কাছে ঘেঁষতে চায় না।
৩৫. “এমন হল কেন।”— এ কথা কাদের জিজ্ঞাসা করা হল ?
উত্তরঃ দেশের শিরােমণিচূড়ামণিদের এ কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।
৩৬. খিড়কির আনাচে-কানাচে কারা ঘুরে বেড়ায় ?
উত্তরঃ ভূতের পেয়াদারা খিড়কির আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ায়।
৩৭. অভূতের পেয়াদারা কোথায় ঘুরে বেড়ায় ?
উত্তরঃ বাড়ির সদর রাস্তায়-ঘাটে অভূতের পেয়াদারা ঘুরে বেড়ায়।
৩৮. গৃহস্থদের দু-দিকেই পথ বন্ধ কেন ?
উত্তরঃ বাড়িতে থাকলে ভূতের পেয়াদারা আর বাইরে গেলে অভূতের পেয়াদারা খাজনা চায়, তাই তাদের দু দিকেই পথ বন্ধ।
৩৯. তাদের খাজনা দেওয়ার সমস্যাটা কোথায় ?
উত্তরঃ নানা জাতের বুলবুলি এসে ধান খেয়ে যাওয়ায় কী দিয়ে খাজনা দেবে তা ভেবে না পাওয়ায় খাজনা দেওয়ার সমস্যা হয়।
৪০. শিরােমণির দল কাদের পবিত্র বলে মানে ?
উত্তরঃ দেশের যারা বেহুঁশ, শিরােমণির দল তাদেরকে পবিত্র বলে মানে।
৪১. ঝােড়াে হাওয়া কী দিয়ে খাজনা দিতে বলে ?
উত্তরঃ ঝড়ো হাওয়া আবরু, ইজ্জত, ইমান ও বুকের রক্ত দিয়ে খাজনা দিতে বলে।
৪২. ‘কর্তার ভূত’ রচনায় প্রথম প্রশ্নের পর দ্বিতীয় কোন্ প্রশ্নটি উঠে আসে ?
উত্তরঃ ‘কর্তার ভূত’ রচনায় প্রথম প্রশ্নের পর দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, ‘ভূতের শাসনটাই কি অনন্তকাল চলবে ?
৪৩. কর্তার ভূত রচনায় দ্বিতীয় প্রশ্ন শুনে কারা কানে হাত দেয় ?
উত্তরঃ দ্বিতীয় প্রশ্ন শুনে ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি ও মাসতুতাে পিসতুতাের দল কানে হাত দেয়।
৪৪. “কর্তা বলেন সেইখানেই তাে ভূত”— কোনখানে ভূত থাকার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ কর্তার মতে যেখানে মানুষের ভয়, সেখানেই ভূতের অবস্থান।
৪৫.”এখানে সে চিন্তাই নেই।”—কোন্ চিন্তার কথা এখানে বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ বিদেশে ভূতের বাড়াবাড়ি হলে অস্থির ও চিন্তিত হয়ে মানুষের ওঝার খোঁজ করার চিন্তার কথাই বলা হয়েছে।
৪৬.”শ্মশান থেকে মশান থেকে ঝােড়াে হাওয়ায় হা হা করে উত্তর আসে।”— কোন্ প্রশ্নের উত্তর আসে ?
উত্তরঃ ‘খাজনা দেব কিসে’– এই প্রশ্নের উত্তর আসে শ্মশান থেকে মশান থেকে।
৪৭.”দেশের লােক ভারি নিশ্চিন্ত হল।”— নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ বুড়াে কর্তার ভূত চিরকাল দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে থাকবেন জানতে পেরে দেশবাসী নিশ্চিন্ত হল।
৪৮.”একেই বলে অদৃষ্টের চালে চলা।”— অদৃষ্টের চালে চলা কী ?
উত্তরঃ চোখ বুজে চলাই হল ‘অদৃষ্টের চালে চলা’, আদিম যুগের দৃষ্টিহীন জীবাণুরা এইভাবে চলত।
৪৯.“এইজন্য ভেবে পাওয়া যায় না,”— কী ভেবে পাওয়া যায় না ?
উত্তরঃ ভুতুড়ে জেলখানার দেয়াল চোখে দেখা যায় না বলে সেটা ফুটো ক’রে কীভাবে সেখান থেকে বেরােনাে যায়, তা ভেবে পাওয়া যায় না।
৫০.“এই জেলখানায় যে ঘানি নিরন্তর ঘােরাতে হয়”— তার থেকে তেলের বদলে কী বেরােয় ?
উত্তরঃ জেলখানার ঘানি থেকে হাটে বিকোনাের মতাে এক ছটাক তেলও বেরােয় না, কেবল বেরােয় মানুষের তেজ।
৫১. “এখানে সে চিন্তাই নেই।”— কোথায়, কোন্ চিন্তা নেই ?
উত্তরঃ ভূতগ্রস্ত আমাদের দেশে ওঝাকেও যেহেতু ভূতে পেয়েছে, তাই এদেশের লােকেদের ভূত তাড়াতে ওঝা খোঁজার চিন্তা করতে হয় না।
৫২.”চিরকালই গর্ব করতে পারত যে”— কোন্ গর্বের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ এদেশবাসীর যে-ভবিষ্যৎ পােষা ভেড়ার মতাে ভূতের খোঁটায় বাঁধা থেকে নিঃশব্দে মাটিতে পড়ে থাকে, সেই ভবিষ্যতের গর্বের কথা বলা হয়েছে।
৫৩.”কেবল অতি সামান্য একটা কারণে একটু মুশকিল বাধল।”— মুশকিলটা কী ?
উত্তরঃ মুশকিলটা হল এই যে, পৃথিবীর অন্য দেশগুলাের মানুষজনকে ভূতে পায়নি।
৫৪.”কাজেই মানুষ সেখানে একেবারে জুড়িয়ে যায় নি।” — কেন ?
উত্তরঃ বিদেশে ভবিষ্যতের রথচক্র সচল রাখার তেল বের হয় ঘানি থেকে, মানুষের বুকের রক্ত নয়। তাই বিদেশীরা একেবারে জুড়িয়ে যায়নি।
৫৫.”নইলে ছন্দ মেলে না।”– ছন্দ মেলানাের জন্য ছড়াকার কোন্ পদটি ব্যবহার করেছেন ?
উত্তরঃ ছন্দ মেলানাের জন্য ছড়াকার ব্যবহার করেছেন বর্গি এল দেশে পদটি।
৫৬.”কিন্তু, বর্গি এল দেশে”— কী কারণে এই পদটি ছড়াকার ব্যবহার করেছেন ?
উত্তরঃ কবিতার ছন্দ মেলাতে এবং ঐতিহাসিক সত্যকে বিকৃত না করতেই প্রশ্নোক্ত পদটি ছড়াকার ব্যবহার করেছেন।
৫৭.”তারা এক বাক্যে শিখা নেড়ে বললে,”— কী বললে ?
উত্তরঃ শিরােমণিচূড়ামণি বললে যে, বর্গির আগমন ভূতের দোষ নয়, ভুতুড়ে দেশের দোষ নয়, বর্গিরই দোষ। বর্গিদের আসাটাই অনুচিত।
৫৮.ঘরে গেরস্তর টেকা দায় কেন ?
উত্তরঃ গৃহস্থের বাড়ির খিড়কি-দুয়ারের আনাচে-কানাচে ভূতের পেয়াদা ঘুরে বেড়িয়ে খাজনার জন্য হাঁক ছাড়ে। তাই তার ভয়ে গৃহস্থের ঘরে টেকা দায়।
৫৯. গৃহস্থের “ঘর থেকে বেরােবারও পথ নেই”— কেন ?
উত্তরঃ গৃহস্থের বাড়ির সদরের রাস্তা ঘাটে অভূতের পেয়াদা ঘুরে বেড়ায়। তাই গৃহস্থের ঘর থেকে বেরােবার পথ নেই।
৬০.“কারও হুঁশ ছিল না।”—কোন্ ব্যাপারে কারও হুঁশ ছিল না ?
উত্তরঃ এতদিন যাবৎ চারদিক থেকে নানা জাতের বুলবুলি ঝাঁকে ঝাঁকে এসে সমস্ত ধান যে খেয়ে গেল, সে ব্যাপারে কারও হুঁশ ছিল না।
৬১.”জগতে যারা হুঁশিয়ার এরা তাদের কাছে ঘেঁষতে চায় না।”— কেন ?
উত্তরঃ সাধারণ দেশবাসী প্রায়শ্চিত্ত করার ভয়ে হুঁশিয়ারদের কাছে ঘেঁষতে চায় না।
৬২.“শিরােমণি-চূড়ামণির দল পুঁথি খুলে বলেন,”—কী বলেন ?
উত্তরঃ শিরােমণি-চূড়ামণির দল বলেন, বেহুঁশরা পবিত্র এবং হুঁশিয়াররা অশুচি। তাই হুঁশিয়ারদের প্রতি উদাসীন থাকা দরকার। কারণ, প্রবুদ্ধমিব সুপ্ত।
৬৩.“প্রশ্নমাত্রেরই দোষ এই যে,”— প্রশ্ন মাত্রেরই দোষ কী ?
উত্তরঃ প্রশ্নমাত্রেরই দোষ হল, যখন সে আসে তখন একা আসে না, অন্য প্রশ্ন সঙ্গে নিয়ে আসে।
৬৪.”মােদ্দা কথাটা হচ্ছে।”— মােদ্দা কথাটা কী ?
উত্তরঃ মােদ্দা কথাটা হল, বুড়াে কর্তা না বাঁচা না-মরা অবস্থায় ভূত হয়ে রয়েছে। দেশটাকে সে নাড়েও না, অথচ ছাড়েও না।
৬৫.”এখানে সে চিন্তাই নেই।”— কোথায় চিন্তা নেই কেন ?
উত্তরঃ অন্য দেশে ভূতের বাড়াবাড়ি হলে মানুষ অস্থির হয়ে ওঝার খোঁজ করলেও এদেশে ওঝাকে আগেভাগেই ভূতে পেয়ে যাওয়ায় ওঝা খোঁজার চিন্তা নেই।
৬৬.”ভূতের তাে মৃত্যু নেই।”— এ কথা শুনে দেশের লােকের কী অবস্থা হয় ?
উত্তরঃ “ভূতের তো মৃত্যু নেই”— দেবতার মুখে এ কথা শুনে দেশের লােক অত্যন্ত নিশ্চিন্ত হয়।
৬৭.ভূতের রাজ্যের শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটে কীসে ?
উত্তরঃ ভূতের রাজ্যে বর্গিদের আগমনে শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটে।
৬৮.”তারা ভয়ংকর সজাগ থাকে।”— তারা কারা ?
উত্তরঃ অন্য সব ভূতে না-পাওয়া দেশে যেখানে ঘানি থেকে তেল বেরােয় ভবিষ্যতের রথচক্রকে সচল রাখতে, সেখানে মানুষ ভয়ংকর সজাগ থাকে।
৬৯.“আজও এই চলার আভাস প্রচলিত।”— এই চলার আভাস কাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে ?
উত্তরঃ এই চলার আভাস ঘাসের ও গাছের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।
৭০. রবীন্দ্রনাথ ‘কর্তার ভূত’ গল্পে ‘সনাতন ঘুম’ বলতে কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ কর্তার ভূত গল্পে সনাতন ঘুম বলতে চিরকালের চোখ বুজে চলাকে অর্থাৎ নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা ত্যাগ করে নিশ্চিন্তে থাকাকে বােঝাতে চেয়েছেন।
৭১.“তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।”— কারা কাকে এ কথা বলেছে ?
উত্তরঃ দেশের মানুষেরা বুড়াে কর্তার মৃত্যুকালে তাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছে।
৭২.’কর্তার ভূত’ গল্পে ‘ভূত’ বলতে কাকে বােঝানাে হয়েছে ?
উত্তরঃ কর্তার ভূত গল্পে ‘ভূত’ বলতে সংস্কারগ্রস্ত মানসিকতাকে বােঝানাে হয়েছে।
৭৩. গভীর রাত্রে কারা কেন হাতজোড় করে ?
উত্তরঃ দিনের বেলা নায়েবের ভয়ে চুপ থাকা দেশের দু-একটা মানুষ গভীর রাত্রে বুড়াে কর্তার কাছে হাতজোড় করে ছেড়ে যাওয়ার জন্য।
৭৪. বুড়াে কর্তার মরণকালে কারা কী বলেছিল ?
উত্তরঃ বুড়াে কর্তার মরণকালে দেশের মানুষেরা বলে উঠেছিল যে তিনি মারা গেলে তাদের কী দশা হবে।
৭৫. “দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরা বলেন,”— কী বলেন ?
উত্তরঃ দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরা বলেন যে, চোখ বুজে চলাই হচ্ছে জগতের সব থেকে আদিম চলা, যা আসলে অদৃষ্টের চালে চলা।
৭৬. “সৃষ্টির প্রথম চক্ষুহীন কীটাণুরা এই চলা চলত…”— ভূতগ্রস্ত দেশ এ কথা শুনে কী অনুভব করে ?
উত্তরঃ “সৃষ্টির প্রথম চক্ষুহীন কীটাণুরা এই চলা চলত…”-এই কথা শুনে ‘ভূতগ্রস্ত দেশ’ আদিম আভিজাত্য অনুভব করে।
৭৭.”..বেরােবার মধ্যে বেরিয়ে যায় মানুষের তেজ।”— কীভাবে এই তেজ বেরিয়ে যায় ?
উত্তরঃ ভুতুড়ে জেলখানায় যে ঘানি ঘােরাতে হয় মানুষকে তাতে তাদের তেজ বেরিয়ে যায়।
৭৮.“চিরকালই গর্ব করতে পারত..”— কী নিয়ে এই গর্ব করতে পারত ?
উত্তরঃ ভূতের শাসনতন্ত্রে মানুষের ভবিষ্যতটা ভূতের খোঁটায় বাঁধা ফলে তারা একেবারে নিশ্চুপ হয়ে থাকে। এ কথা ভেবেই দেশের মানুষ গর্ব করতে পারত।
৭৯.”পৃথিবীর অন্য দেশগুলােকে ভূতে পায় নি।”— ভূতে না পাওয়ায় সেখানে কী হয় ?
উত্তরঃ ভূতে না-পাওয়ায় সে সব দেশের ঘানি-নিঃসৃত তেল ভবিষ্যতের রথচক্র সচল রাখে। তাই দেশের মানুষ না জুড়িয়ে ভয়ংকর সজাগ রয়েছে।
৮০. “এদিকে দিব্যি ঠান্ডায়..”— এই ঠান্ডা আসলে কী ?
উত্তরঃ এই ঠান্ডা আসলে হল দেশের মানুষের প্রতিবাদ প্রতিরােধহীন, নিজস্ব ভাবনাচিন্তাহীন এক নিশ্চিন্ত অবস্থা।
৮১.”একমাত্র বর্গিরই দোষ।”— কোন্ বিষয়কে বর্গির দোষ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ভূতের শাসনব্যবস্থায় বর্গিদের আসাটাকেই তাদের দোষ বলেছে শিরােমণি চূড়ামণিরা।
৮২.”এমন প্রশ্ন তাে বাপের জন্মে শুনিনি।”— কোন্ প্রশ্নের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ “ভূতের শাসনটাই কি অনন্তকাল চলবে”—এই প্রশ্নের কথা বলা হয়েছে।
বড় প্রশ্ন ও উত্তর।
কর্তার ভূত- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রশ্নঃ কর্তার ভূত’—কি নিছক ভূতের গল্প, নাকি রাজনৈতিক রূপক কাহিনি ? ব্যাখ্যাসহ লেখাে। (২০১৭)
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা লিপিকা গ্রন্থে ‘কর্তার ভূত’ রচনাটি আসলে একটি কথিকা। এর মধ্য দিয়ে লেখক মানুষের
চিরকালীন অভ্যাসের সমালােচনা করেছেন। ভূতের কথা বললেও এটি কোনাে ভৌতিক রহস্যময় গল্প নয়। এটি নিছক কোনাে রাজনৈতিক রূপক কাহিনিও নয়। এখানে রূপকের আড়ালে লেখক মানুষের ওপর চেপে বসা চিরকালীন কুসংস্কারের তীব্র সমালােচনা করেছেন।
‘ভূত’ বলতে এখানে অতীতকে বােঝানাে হয়েছে। অতীতকাল থেকেই আদিম মানুষ গােষ্ঠীবদ্ধ জীবনে অভ্যস্ত। তখন তাদের যাবতীয় ভাবনাচিন্তা তারা অর্পণ করেছিল দলের প্রাচীন ও নেতাস্থানীয় ব্যক্তির ওপর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কর্তার মৃত্যু ঘটলেও তার ভূত অর্থাৎ ‘অতীত ধারণা’ এদেশের মানুষকে ছেড়ে যায়নি। সে প্রতি পদে পদে এদের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শাস্ত্র এবং ধর্মতন্ত্রের ঘেরাটোপই হলো ভুতুড়ে জেলখানা। সেই জেলখানায় কুসংস্কারের বেড়াজালে মানুষ আজীবন আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দি হয়ে অগ্রগতির পন্থাকে হারিয়ে ফেলে। ভূত বলে প্রকৃত কোনাে বস্তু বা শক্তি কিছুই নেই যাকে অনুভব করা যায়। এটা প্রাচ্যের মানুষের মনে বাসা বেঁধে থাকা এক চিরকালীন ভয়। এই ভয়ই তাকে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে দেয় না। আধুনিক চিন্তাভাবনার পথে এক পা বাড়ালে তার মনের ভয় তাকে বলে ওঠে সে অশুদ্ধ হয়ে যাবে, প্রকৃত প্রাচীন ঐতিহ্যের গর্বকে হারিয়ে ফেলবে।
প্রশ্নঃ ‘ভবিষ্যৎকে মানলেই তার জন্যে যত ভাবনা, ভূতকে মানলে কোনাে ভাবনাই নেই;’ -কোন্ প্রসঙ্গে এই কথাটি বলা হয়েছে? ভুতকে মানলে ভাবনা নেই কেন? উদ্ধৃতিটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো। ২+১+২ (২০২০)
উত্তরঃ লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ‘কর্তার ভূত’ গল্পে বুড়াে কর্তা মারা যাওয়ার সময় দেশের সমস্ত লোক তাঁকে জানালো যে, তিনি চলে যাওয়ার পর তাদের অবস্থা করুণ হয়ে পড়বে। এ কথা শুনে মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধ দুঃখ পেলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর দেশসুদ্ধ লোক কীভাবে নিশ্চিন্তে থাকবে সেই চিন্তায় তিনি ভাবিত হলেন।শেষ পর্যন্ত দয়ালু ভগবান জানালেন যে চিন্তার কিছু নেই কর্তায় আবার ভূত হয়ে দেশসুদ্ধ লোকের ঘাড়ে চেপে থাকবেন। কারণ মানুষের মরণ থাকলেও ভুতের মৃত্যু নেই। এতে দেশবাসীও নিশ্চিন্ত হল। এই প্রসঙ্গেই কথাটি বলা হয়েছে।
ভূতকে অর্থাৎ অতীতকে মারার ক্ষেত্রে কোন দুশ্চিন্তা থাকে না। সমস্ত ভাবনাচিন্তা ভূত অর্থাৎ প্রেতের ওপর দেওয়া যায়। কারণ ভূতের মাথা নেই, তাই কারো জন্য তার মাথাব্যথাও নেই।
আধুনিকতাকে মানতে হলে চিন্তা ভাবনা করতে হয়। কারণ আধুনিক যুগ হলো যুক্তির যুগ কিন্তু প্রাচীন ধর্ম তন্ত্রকে অন্ধভাবে মানলে আর কোন ভাবনা থাকে না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্ব গিয়ে পড়ে ধর্মতন্ত্রের ওপর। কিন্তু ধর্মতন্ত্র অর্থাৎ ধর্মীয় লোকাচার ও সংস্কার যেহেতু অপরিবর্তনীয়, তাই কোন ব্যক্তিমানুষ বা কোন ধর্মসম্প্রদায়ের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ বিকর্ষণ বা দায় বদ্ধতা নেই।

This Post Has One Comment

Leave a Reply