Madhyamik Life Science Solved Question Paper 2019 WBBSE | মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান উত্তরসহ প্রশ্নপত্র ২০১৯

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now
                          2019
                  LIFE SCIENCE
Time-Three Hours Fifteen Minutes
(First FIFTEEN minutes for reading the question paper only)
                 Full Marks – 90
(For Regular and Sightless Regular Candidates)
                 Full Marks-100
(For External and Sightless External Candidates)
Special credit will be given for answers which are brief and to the point. Marks will be deducted for spelling mistakes, untidiness and bad handwriting.
                       নির্দেশাবলী
নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ বিভাগের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
[দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা ]
“ঘ’বিভাগের ৪.১ প্রশ্নের পরিবর্তে ৪.১(A) প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের ‘ক’, ‘খ’,‘গ’, ‘ঘ’ ছাড়াও অতিরিক্ত ‘ঙ’ বিভাগের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
কোন্ বিভাগ হ’তে ক’টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে তা ওই বিভাগের শুরুতেই বলা আছে।
                         বিভাগ – ‘ক’
        (সমস্ত প্রশ্নের উত্তর করা আবশ্যিক)
১.প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যা সহ বাক্যটি সম্পূর্ণ করে লেখো : ১×১৫=১৫
১.১ ট্রপিক চলন সম্পর্কিত নিচের কোন বক্তব্যটি সঠিক নির্বাচন করো—
(ক) এটি উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত,
(খ) উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ অঙ্গের সামগ্রিক স্থান
পরিবর্তন হয়,
(গ) ভলভক্স নামক শ্যাওলায় এই চলন
দেখা যায়,
(ঘ) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্রচলন।
উত্তরঃ (ঘ) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্রচলন।
১.২ প্রদত্ত বাক্যগুলি পড়ো এবং যে বাক্যটি সঠিক নয় সেটিকে চিহ্নিত করো—
(ক) FSH, LH ও প্রোল্যাকটিন হল বিভিন্ন ধরনের GTH,
(খ) অ্যাড্রিনালিন হার্দ উৎপাদ কমায়,
(গ) ইনসুলিন কোশপর্দার মাধ্যমে কোষের
ভিতরে গ্লুকোজের শোষণে সাহায্য করে,
(ঘ) প্রোজেস্টেরন স্ত্রীদেহে প্লাসেন্টা গঠনে
সাহায্য করে।
উত্তরঃ (খ) অ্যাড্রিনালিন হার্দ উৎপাদ কমায়।
১.৩ মানবদেহে করোটিক স্নায়ুর সংখ্যা সঠিকভাবে নিরূপণ করো—
(ক) ১০ জোড়া (খ) ৩১ জোড়া
(গ) ১২ জোড়া (ঘ) ২১ জোড়া
উত্তরঃ (গ) ১২ জোড়া
১.৪ অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের সঠিক বৈশিষ্ট্যটি শনাক্ত করো।
(ক) যৌন জনন কারী জীবের জনন মাতৃকোষ ঘটে,
(খ) এটিকে পরোক্ষ বিভাজন বলা হয়,
(গ) ক্রোমোজোম ও বেমতন্তু গঠিত হয়,
(ঘ) ক্রোমোজোম ও বেমতন্তু গঠিত হয় না।
উত্তরঃ (ঘ) ক্রোমোজোম ও বেমতন্তু গঠিত
হয় না।
১.৫ মিয়োসিস এর তাৎপর্য সংক্রান্ত প্রদত্ত কোন বক্তব্যটি সঠিক তা সঠিকভাবে
নিরূপণ করো—
(ক) দেহের সার্বিক বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটন
ঘটায়,
(খ) জীবের জনন-অঙ্গের ও ভ্রূণের বৃদ্ধি ঘটায়,
(গ) বংশগত প্রকরণ বাহি হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপাদন করে,
(ঘ) কোন কোন প্রাণীর দেহে কোন অঙ্গহানি ঘটলে সেটি পুনরুৎপাদন করে
উত্তরঃ (গ) বংশগত প্রকরণ বাহি হ্যাপ্লয়েড
গ্যামেট উৎপাদন করে।
১.৬ সঠিক জোড়টি নির্বাচন করো এবং লেখো।
(ক) বহুবিভাজন – হাইড্রা,
(খ) খন্ডীভবন – স্পাইরোগাইরা,
(গ) পুনরুৎপাদন – ফার্ন,
(ঘ) কোরকোদগম – প্ল্যানেরিয়া৷
উত্তরঃ (খ) খন্ডীভবন – স্পাইরোগাইরা।
১.৭ নিচের কোনটি প্রকট গুন তা শনাক্ত
করো—
(ক) কান্ডের দৈর্ঘ্য – বেঁটে,
(খ) বীজের আকার – কুঞ্চিত,
(গ) বীজপত্রের বর্ণ – হলুদ,
(ঘ) ফুলের বর্ণ – সাদা।
উত্তরঃ (গ) বীজপত্রের বর্ণ – হলুদ।
১.৮ RRYY জিনোটাইপ যুক্ত মটর গাছ
থেকে কত ধরনের গ্যামেট উৎপন্ন হয় তা
নির্ধারণ করো—
(ক) এক ধরনের, (খ) চার ধরনের
(গ) দুই ধরনের, (ঘ) তিন ধরনের।
উত্তরঃ (ক) এক ধরনের।
১.৯ নিচের কোন দুটি জিনোটাইপ মটর গাছের কুঞ্চিত হলুদ ফিনোটাইপ এর জন্য দায়ী তা বাছাই করো—
(ক) RRYY 3 rryy
(খ) RRYy ও RrYy
(গ) RRyy ও Rryy
(ঘ) rrYY ও rrYy
উত্তরঃ (ঘ) rrYY ও rry
১.১০ প্রদত্ত কোনটি আন্তঃপ্রজাতি সংগ্ৰাম কে নির্দেশ করে তা শনাক্ত করো—
(ক) মশার লার্ভা খাওয়ার জন্য গাপ্পি মাছেদের মধ্যে সংগ্রাম,
(খ) ইঁদুর ধরে খাওয়ার জন্য সাপ ও পেঁচার মধ্যে সংগ্রাম,
(গ) একই জায়গায় ঘাস খাওয়ার জন্য
একদল হরিণের মধ্যে সংগ্রাম,
(ঘ) হরিণ শিকারের জন্য একটি জঙ্গলের বাঘেদের মধ্যে সংগ্রাম।
উত্তরঃ (খ) ইঁদুর ধরে খাওয়ার জন্য সাপ ও পেঁচার মধ্যে সংগ্রাম।
১.১১ ল্যামার্কের তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দগুচ্ছটি সঠিকভাবে নিরূপণ করো—
(ক) অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম,
(খ) প্রকরণের উৎপত্তি,
(গ) অর্জিত গুণের বংশানুসরন,
(ঘ) প্রাকৃতিক নির্বাচন।
উত্তরঃ (গ) অর্জিত গুণের বংশানুসরন।
১.১২ কোন প্রাণীটি বিশেষ নৃত্য ভঙ্গি দ্বারা
নিজদলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে খাদ্যের
উৎস সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান করে তা
শনাক্ত করো—
(ক) শিম্পাঞ্জি, (খ) আরশোলা,
(গ) ময়ূর, (ঘ) মৌমাছি।
উত্তরঃ (ঘ) মৌমাছি।
১.১৩ নিচের কোনটি পরিবেশে দীর্ঘ সময় থাকলে তার জীব বিবর্ধন ঘটার সম্ভাবনা
বৃদ্ধি পায় তা স্থির করো—
(ক) খবরের কাগজ,
(খ) জীবজন্তুর মলমূত্র,
(গ) পচা পাতা,
(ঘ) ক্লোরিনযুক্ত কীটনাশক।
উত্তরঃ (ঘ) ক্লোরিনযুক্ত কীটনাশক।
১.১৪ নিচের কোন সজ্জাটি গরুমারা, করবেট, কুলিক, নন্দাদেবী— এই চারটি অরণ্যের সঠিক নির্দেশ করে তা নির্বাচন করো—
(ক) বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ, অভায়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান, জাতীয় উদ্যান,
(খ) জাতীয় উদ্যান, জাতীয় উদ্যান, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ, অভয়ারণ্য,
(গ) জাতীয় উদ্যান, জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ,
(ঘ) অভায়ারণ্য, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ, জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য।
উত্তরঃ (গ) জাতীয় উদ্যান, জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।
১.১৫ বায়ুতে পরাগরেণু, ছত্রাকের রেণু ও ধূলিকণার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেলে নিচের কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় তা স্থির করো—
(ক) যক্ষা, (খ) অ্যাজমা,
(গ) ম্যালেরিয়া, (ঘ) ডেঙ্গু।
উত্তরঃ (খ) অ্যাজমা
                      বিভাগ – ‘খ’
২. নিচের ২৬টি প্রশ্ন থেকেই যেকোনো ২১টি প্রশ্নের উত্তর নির্দেশ অনুসারে লেখো : 1×21=21
নিচের বাক্যগুলিতে উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান গুলি পূরণ করো : (যেকোনো পাঁচটি) ১×৫=৫
২.১ অ্যাড্রিনালিন হরমোনের প্রভাবে বিপদ কালে ত্বকের লোম খাড়া হয়ে যায় ।
২.২ DNA অণুর ঘন কুণ্ডলীকৃত গঠনই হলো ক্রোমোজোম।
২.৩ একই প্রজাতিভুক্ত কিন্তু জিনগতভাবে ভিন্ন দুটি জীবের মধ্যে যৌন জনন পদ্ধতিকে সিনগ্যামি বলে।
২.৪ জীবন উৎপত্তির আদি পর্যায়ে কোয়াসারভেট ছিল কিছু বৃহৎ কোলয়েড অণুর সমন্বয়।
২.৫ সর্পগন্ধা গাছের মূল থেকে রেসারপিন পাওয়া যায়, যা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২.৬ নমুনা বীজকে –১৯৬° তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনের মধ্যে রেখে এক্স-সিটু
সংরক্ষণকে ক্রায়োপ্রিজারভেশন বলে।
নীচের বিবৃতিগুলি সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপন করো : ( যেকোন পাঁচটি) ১×৫=৫
২.৭ বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির অত্যধিক পরিমান লঘু মূত্র নির্গত হয়।
উত্তরঃ সত্য।
২.৮ সপুষ্পক উদ্ভিদের স্ত্রীস্তবক রোমশ ও আঁঠালো গর্ভদন্ডের সাহায্যে পরাগরেণু সংগ্রহ করে।
উত্তরঃ মিথ্যা।
২.৯ মানুষের ডিম্বানুতে লিঙ্গ নির্ধারক একজোড়া সেক্স ক্রোমোজোম থাকে।
উত্তরঃ মিথ্যা।
২.১০ ডারউইনের মতে জীব জ্যামিতিক অনুপাতে বংশবৃদ্ধি করে।
উত্তরঃ সত্য।
২.১১ পশ্চিমবঙ্গের ‘মানস’ জাতীয় উদ্যানে একশৃঙ্গ গন্ডার সংরক্ষণ করা হয়।
উত্তরঃ মিথ্যা।
২.১২ অ্যাসিটাইল কোলিন ও অ্যাড্রিনালিন হলো নিউরোট্রান্সমিটার।
উত্তরঃ সত্য।
A স্তম্ভের দেওয়া শব্দের সঙ্গে B স্তম্ভে দেওয়া সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত শব্দটির সমতা বিধান করে উভয় স্তম্ভের ক্রমিক নম্বর উল্লেখসহ সঠিক জোড়টি পুনরায় লেখোঃ (যেকোনো পাঁচটি) ১×৫=৫
A স্তম্ভ B স্তম্ভ
২.১৩ প্রেসবায়োপিয়া (ক) BbRr
২.১৪ বৃদ্ধির কোষীয় বিভেদন দশা (খ) হ্যালডেন
২.১৫ কালো অমসৃণ রোমযুক্ত গিনিপিগের জিনোটাইপ (গ) নিকটদৃষ্টি ত্রুটিপূর্ণ
২.১৬ হট ডাইলুট সুপ (ঘ) জলবায়ুর পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়ন
২.১৭ অরণ্য ধ্বংস ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষয় (ঙ) প্রাণী কোষ বিভাজনের সময় বেমতন্তু গঠন
২.১৮ সেন্ট্রোজোম (চ) কলা, অঙ্গ ও তন্ত্র গঠন।
(ছ) bbrr

 

উত্তরঃ ২.১৩–(গ), ২.১৪–(চ), ২.১৫–(ক), ২.১৬–(খ), ২.১৭–(ঘ), ২.১৮–(ঙ)
একটি শব্দ বা একটি বাক্যে উত্তর দাও : (যে-কোনো ছয়টি) ১×৬ = ৬
২.১৯ বিসদৃশটি বেছে লেখো। গ্লসোফ্যারিঞ্জিয়াল, অকিউলোমোটর, ট্রাইজেমিনাল, অক্সিটোসিন।
উত্তরঃ অক্সিটোসিন।
২.২০ অক্ষিগোলকের লেন্স ও রেটিনার অন্তর্বর্তী প্রকোষ্ঠে অবস্থিত তরলটির
কাজ কী ?
উত্তরঃ অক্ষিগোলকের লেন্স ও রেটিনার অন্তর্বর্তী প্রকোষ্ঠে অবস্থিত তরলটির নাম হলো ভিট্রিয়াস হিউমর। এর কাজ হলো চোখের আকৃতি বজায় রাখা, পুষ্টি প্রদান করা এবং আলোর প্রতিসরণের সাহায্য করা।
২.২১ নিচের সম্পর্কযুক্ত একটি শব্দ জোড় দেওয়া আছে। প্রথম জোড়টির সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় জোড়টির শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও—
জোড়কলম : আম : : ________ : জবা।
উত্তরঃ শাখাকলম।
২.২২ কেবলমাত্র হোমোজাইগাস অবস্থায় হিমোফিলিয়া রোগের প্রকাশ ঘটার কারণটি কি ?
উত্তরঃ কারণ প্রচ্ছন্নধর্মী জিনটি X ক্রোমোজোমে অবস্থান করে।
২.২৩ মেন্ডেলের একসংকর জননের পরীক্ষায় প্রাপ্ত দ্বিতীয় অপত্য জনুর জিনোটাইপ অনুপাত লেখো।
উত্তরঃ ১ : ২ : ১
২.২৪ সমসংস্থ অঙ্গ কোন ধরনের বিবর্তনকে নির্দেশ করে ?
উত্তরঃ অপসারী বিবর্তন।
২.২৫ প্রদত্ত চারটি বিষয়ের মধ্যে তিনটি একটি বিষয়ের অন্তর্গত। সেই বিষয়টি খুঁজে বার করো এবং লেখো : কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশকের ব্যবহার, টাইফয়েড, জলদূষণ, কারখানা থেকে উৎপন্ন তরল বর্জ্য।
উত্তরঃ জলদূষন
২.২৬ কোন ইন-সিটু সংরক্ষণ ব্যবস্থায় অনুজীব, বন্যপ্রাণী ও বন্য উদ্ভিদসহ মানুষের বৈচিত্র্য, কৃষ্টি ও জীবনযাত্রা সংরক্ষণ করা হয় ?
উত্তরঃ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।
                        বিভাগ – ‘গ’
৩. নিচের ১৭ টি প্রশ্ন থেকে যেকোনো ১২ টি প্রশ্নের উত্তর দুই-তিন বাক্যে লেখো : ২×১২=২৪
৩.১ দরজায় ঘন্টা বাজার শব্দ শুনে তুমি যেভাবে দরজা খুলবে, সেই স্নায়বিক পথটি একটি শব্দ ছকের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তরঃ
দরজায় বেল বাজল ➪ আমার কানের মাধ্যমে উদ্দীপনা গৃহীত হলো ➪ গৃহীত উদ্দীপনা স্নায়ুর দ্বারা মস্তিষ্কে প্রেরণ ➪ মস্তিষ্ক বিশ্লেষণ করে ➪ বিশ্লেষিত উদ্দীপনা তার প্রতিক্রিয়া দেহে পাঠায় ➪ আমি দরজা খুলি।
৩.২ মেনিনজেস ও CSF এর অবস্থান বিবৃত করো।
উত্তরঃ মেনিনজেস এর অবস্থান : মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকান্ডের বাইরের দিকে তন্তুময় পর্দারূপে মেনিনজেস অবস্থিত।
CSF এর অবস্থান : মস্তিষ্কের বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে, মেনিনজেসের সাব-অ্যারাকনয়েড স্পেস এবং সুষুম্না কান্ডের কেন্দ্রীয় নালীর ভিতরে অবস্থিত।
৩.৩ উদ্ভিদের বীজ ও পর্বমধ্যের ওপর
জিব্বেরেলিন হরমোন কি কি প্রভাব ফেলে তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ জিব্বেরেলিন হরমোনের প্রভাব :
বীজের ওপর প্রভাবঃ প্রতিটি বীজের একটি নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত জীবনের লক্ষণ প্রকাশ পায় না, বীজের এই দশাকে সুপ্তাবস্থা বলে। জিব্বেরেলিন হরমোন বীজের এই সুপ্তাবস্থা দূর করে এবং বীজের অঙ্কুরোদগম ঘটায়।
পর্বমধ্যের ওপর প্রভাবঃ জিব্বেরেলিন উদ্ভিদের কান্ডের পর্বমধ্যের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে
সঠিকভাবে কাণ্ডের দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায়।
৩.৪ অক্ষিগোলকের বিভিন্ন প্রতিসারক মাধ্যম গুলির নাম ক্রমানুসারে লেখো।
উত্তরঃ কর্নিয়া -অ্যাকোয়াস হিউমর- লেন্স-
ভিট্রিয়াস হিউমর।
৩.৫ মিয়োসিস কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস ও ক্রোমাটিড এর মধ্যে খন্ড বিনিময় ঘটে, এই ঘটনা দুটির তাৎপর্য কী কী তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস -এর তাৎপর্য—
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস পায় বলে জনন কোষে (শুক্রাণু ও ডিম্বাণু) ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক হয় অর্থাৎ জীবের জীবনচক্রে ক্রোমোজোমের সংখ্যা ধ্রুবক থাকে।
ক্রোমাটিডের মধ্যে খন্ড বিনিময় এর তাৎপর্য— এর ফলে নতুন জিনগত পুনর্বিন্যাস ঘটে, এর ফলে প্রকরণ সৃষ্টি হয়।
৩.৬ অযৌন ও যৌন জনন এর মধ্যে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পার্থক্য নিরূপণ করো :
(অ) জনিতৃ জীবের সংখ্যা, (আ) অপত্য জনুর প্রকৃতি।
উত্তরঃ
বিষয় অযৌন জনন যৌন জনন
জনিতৃ জীবের সংখ্যা  একটি  একটি বা দুটি
অপত্যজনুর প্রকৃতি অপত্য জনুর কোন প্রকার প্রকরন ঘটে না বলে তা জনিতৃ জনুর অনুরূপ হয়। প্রকরন সৃষ্টি হয় বলে অপত্য জনুর মধ্যে যথেষ্ট বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।

 

৩.৭ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ক্যারিওকাইনেসিস এর দশা গুলি শনাক্ত করো:
(ক) ক্রোমোজোম গুলির কোষের বিষুব অঞ্চল বরাবর অবস্থান ও নির্দিষ্ট নিয়মে সজ্জা ;
(খ) বেমতন্তুর বিলুপ্তি ;
(গ) নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাস এর বিলুপ্তি ;
(ঘ) অপত্য ক্রোমোজোম এর কোশের বিপরীত মেরুতে গমন ।
উত্তরঃ (ক) ক্রোমোজোম গুলির কোষের বিষুব অঞ্চল বরাবর অবস্থান ও নির্দিষ্ট নিয়মে সজ্জা— মেটাফেজ দশা (দ্বিতীয় দশা)।
(খ) বেমতন্তুর বিলুপ্তি— টেলোফেজ দশা
(শেষ দশা)।
(গ) নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাস এর বিলুপ্তি— প্রোফেজ দশা (প্রথম দশা) ।
(ঘ) অপত্য ক্রোমোজোম এর কোশের বিপরীত মেরুতে গমন— অ্যানাফেজ দশা
(তৃতীয় দশা)।
৩.৮ মটর গাছের ক্ষেত্রে পৃথকীভবন সূত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তোমাকে বৈশিষ্ট্য নির্বাচন করতে বলা হলো। এরকম বিপরীত বৈশিষ্ট্যের নাম লেখ।
উত্তরঃ দৈর্ঘ্য চরিত্রের সাপেক্ষে লম্বা ও বেঁটে এবং ফুলের রং চরিত্রের সাপেক্ষে বেগুনি ও সাদা– এই দুটি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য।
৩.৯ একজন বর্ণান্ধ রোগের বাহক মহিলা, একজন বর্ণান্ধ পুরুষকে বিবাহ করল। তাদের একটি কন্যাসন্তান হলো। এই কন্যাসন্তানের বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কতটা তা বিশ্লেষণ করে লেখো।
উত্তরঃ মানব দেহের ২৩তম ক্রোমোজোম লিঙ্গ নির্ধারণ করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে X ও Y এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে দুটি X (অর্থাৎ XX) ক্রোমোজোম থাকে। সন্তানের লিঙ্গ নির্ভর করে তার বাবার ক্রোমোজোমের ওপর, অর্থাৎ মায়ের X ক্রোমোজোমের সাথে বাবার X ক্রোমোজোম মিলিত হলে কন্যাসন্তান অথবা মায়ের X এর সাথে বাবার Y মিলিত হলে পুত্রসন্তান। বর্ণান্ধতা X ক্রোমোজোমের মাধ্যমে বাহিত হয়। এর কারণে লাল ও সবুজ রঙের মধ্যে পার্থক্য করতে পারা যায় না ।
প্রশ্ন অনুযায়ী বর্ণান্ধ জিন বহনকারী মহিলার জিনোটাইপ হবে X’X এবং বর্ণান্ধ পুরুষের জিনোটাইপ হবে X’Y (যেখানে X’ = বর্ণান্ধ বহনকারী জিন)। এদের যখন সন্তান হবে, তখন চারটি সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে।

 

ছেলে বা মেয়ে দুজনের ক্ষেত্রেই ৫০% বর্ণান্ধতার সম্ভাবনা থাকবে । মেয়েদের ক্ষেত্রে ১০০% সম্ভাবনা থাকবে বর্ণান্ধ জিন বাহক হওয়ার।
৩.১০ মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগের নাম লেখো।
উত্তরঃ (১) থ্যালাসেমিয়া, (২) হিমোফিলিয়া।
৩.১১ ‘বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে অথচ হরিণ প্রচুর আছে। এমন একটি জঙ্গলে অন্য অভয়ারণ্য থেকে এনে কয়েকটি বাঘ ছাড়া হল’— বেঁচে থাকতে গিয়ে ওই বাঘেদের যে যে জীবন সংগ্রামে লিপ্ত থাকতে হবে তা ভেবে লেখো।
উত্তরঃ এক্ষেত্রে বেঁচে থাকতে গিয়ে ওই বাঘেদের উপযুক্ত আহার, বাসস্থান এবং প্রজননের জন্য একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম এবং হরিণ বা অন্য প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম -এর নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এইভাবে বাঘেদের নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য এরকম প্রতিকূল পরিবেশে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা করে জীবন সংগ্রামে লিপ্ত থাকতে হবে।
৩.১২ লবণ সহনের জন্য সুন্দরী গাছের যে-কোনো দুটি অভিযোজন বর্ণনা করো।
উত্তরঃ সুন্দরী গাছ লবণাক্ত মৃত্তিকা যুক্ত অঞ্চলে জন্মায়। এর দুটি অভিযোজন হলো মূলের অভিযোজন এবং পাতার অভিযোজন।
মূলের অভিযোজনঃ লবনাক্ত মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম থাকায় মূলতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাওয়া যায় না। এই কারণে সুন্দরী গাছের শ্বাসমূল গঠিত হয়, সেগুলো মাটির উপরে উঠে আসে এবং বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে।
পাতার অভিযোজনঃ সুন্দরী গাছ যথেষ্ট জলযুক্ত স্থানে জন্মালেও এই জল লবণাক্ত হওয়ার জন্য শারীরবৃত্তীয়ভাবে অব্যবহার্য। তাই সুন্দরী গাছের জলাভাব একটি বিশেষ সমস্যা। এই কারণে সুন্দরী গাছের পাতার ফলকে মোমের প্রলেপ থাকে, ফলে বাষ্পমোচনের হার হ্রাস পায়।
৩.১৩ শিম্পাঞ্জিরা খাবার জন্য কীভাবে উইপোকা শিকার করে তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ শিম্পাঞ্জির খাবারের জন্য উইপোকা শিকারঃ
শিম্পাঞ্জিরা প্রথমে কোন একটি গাছের ডাল ভেঙে নেয়। তারপর ওই ডালের পাতাগুলি ছিড়ে ফেলে দিয়ে, ডালটিকে উইঢিপির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে গর্তের সৃষ্টি করে। এরপর তারা আর একটি সরু ডাল ভেঙে পাতা ছাড়িয়ে ওই ডাল সৃষ্ট গর্তে প্রবেশ করায়। উইপোকা ওই প্রবেশ স্থান থেকে বাইরে বের হতে থাকলে শিম্পাঞ্জিরা উইপোকাকে খাদ্য হিসেবে খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করে। এইভাবে শিম্পাঞ্জিরা খাবার জন্য উইপোকা শিকার করে।
৩.১৪ নিম্নলিখিত দূষকগুলির ক্ষতিকারক প্রভাব তালিকাভুক্ত করো :
(ক) গ্রীনহাউস গ্যাস, (খ) SPM, (গ) কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, (ঘ) অভঙ্গুর রাসায়নিক কীটনাশক
উত্তরঃ (ক) গ্রীনহাউস গ্যাসঃ গ্রীনহাউস গ্যাস গুলি তাপ বিকিরনে বাধা দিয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি করে, ফলে বিশ্ব-উষ্ণায়ন ঘটে। এটি বায়ুদূষন ঘটায়।
(খ) SPM : শ্বাসনালী পথে ফুসফুসে প্রবেশ করে কাশি, হাঁপানি সৃষ্টি করে এবং অনেকক্ষেত্রে মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয় ।
(গ) কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিক সারঃ কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সার ব্যবহার এর ফলে মাটিতে বসবাসকারী উপকারী জীব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
(ঘ) অভঙ্গুর রাসায়নিক কীটনাশকঃ মাটিতে জমে মাটির অম্লতা বৃদ্ধি করছে এবং মাটি ক্রমে বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
৩.১৫ জলজ ও স্থলজ বাস্তুতন্ত্রে অবস্থিত স্থানীয় জীববৈচিত্র -এর ক্ষতিসাধন করে এমন একটি করে বহিরাগত প্রজাতির উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ জলজ বাস্তুতন্ত্রে অবস্থিত স্থানীয় জীববৈচিত্র – এর ক্ষতিসাধন করে এমন একটি বহিরাগত প্রজাতিহল– হাইব্রিড-মাগুর।
স্থলজ বাস্তুতন্ত্রে অবস্থিত স্থানীয় জীববৈচিত্র – এর ক্ষতিসাধন করে এমন একটি বহিরাগত প্রজাতিহল– ইউক্যালিপটাস-গাছ।
৩.১৬ একটি বিপন্ন সরীসৃপ প্রজাতির সংরক্ষণের জন্য ইন-সিটু সংরক্ষণ ব্যবস্থা গুলি লেখ এবং পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত এরকম একটি সংরক্ষণ স্থানের নাম লেখো।
উত্তরঃ একটি বিপন্ন সরীসৃপ প্রজাতি হলো কুমির।
কুমির সংরক্ষণের জন্য ইন-সিটু সংরক্ষণের ব্যবস্থা গুলি হল—
(১) ১৯৭৪ সালে ‘কুমির সংরক্ষণ গবেষণা প্রকল্প’ চালু হয়েছে।
(২) ১৯৭৫ সালে ভারত সরকার ‘কুমির প্রজনন ও পরিচালন প্রকল্প’ নামক কুমির সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহন করে।
(৩) ১৬টি কুমির পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং ১১টি কুমির স্যাংচুয়ারিতে ভারতবর্ষ ব্যাপী প্রকল্পটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
(৪) ১৯৮০ সালে হায়দ্রাবাদে ‘কুমির প্রজনন ও পরিচালন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ গড়ে তোলা হয়।
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত এরকম একটি সংরক্ষণ স্থানের নাম হল- সুন্দরবন ন্যাশনাল পার্ক, যেখানে ভারতীয় বাঘকে সংরক্ষণ করা হয়।
৩.১৭ ‘চোরাশিকার ভারতের প্রাণীর বৈচিত্রের বিপন্নতার একটি প্রধান কারণ’– যে যে কারণে এই চোরাশিকার ঘটে তার চারটি কারণ নির্ধারণ করো
উত্তরঃ চোরাশিকার ঘটার চারটি কারণ—
(১) বাঘের চামড়া শৌখিন বস্ত্ররূপে ব্যবহৃত হয়, বাঘের হাড়, চোখ ও দাঁতের ব্যাপক চাহিদার জন্য বাঘ হত্যা করা হয়।
(২) সিংহের হাড় ভেষজ ওষুধ রূপে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য এবং নখ ও চামড়ার লোভে সিংহ হত্যা করা হয়।
(৩) কুমিরের চামড়া সংগ্রহ করার জন্য কুমির নিধন করা হয়।
(৪) রেড পান্ডা’র লোমশ চামড়া ও ঝালরের মতো সুন্দর ল্যাজ থেকে টুপি ও পরিধান তৈরি হওয়ায় চোরাশিকারিরা এই প্রাণীটিকে শিকার করে।
                          বিভাগ – ‘ঘ’
৪. নিচের ৬টি প্রশ্ন বা তার বিকল্প প্রশ্নের উত্তর লেখ। ৫×৬=৩০
৪.১ একটি আদর্শ নিউরোনের পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো—
(ক) ডেনড্রন, (খ) র‍্যানভিয়ারের পর্ব,
(গ) মায়েলিন সিদ, (ঘ) সোয়ান কোষ। ৩+২
উত্তরঃ

 

                             অথবা,
প্রাণী কোষের মাইটোসিস কোষ বিভাজনের অ্যানাফেজ দশার পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করে নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো।
(ক) মেরু অঞ্চল, (খ) বেমতন্তু, (গ) ক্রোমাটিড, (ঘ) সেন্ট্রোমিয়ার ৩+২

 

৪.২ কোন জীবের জন্য প্রজনন গুরুত্বপূর্ণ কেন ? “মিয়োসিস বৈশিষ্ট্যগতভাবে মাইটোসিস থেকে পৃথক”— তুমি কীভাবে বক্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ করবে ? ২+৩
উত্তরঃ জীবের জন্য প্রজননের গুরুত্ব–
(১) প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধিঃ জননের সাহায্যে জীব নতুন অপত্য সৃষ্টি করে। ফলে তার নিজের প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং প্রজাতির অস্তিত্ব বজায় থাকে।
(২) বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখাঃ জননের ফলে নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি হওয়ায় জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
(৩) জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষাঃ জীবের মৃত্যু ঘটে। এর ফলে জীবের সংখ্যার যে হ্ৰাস ঘটে, জননের ফলে নতুন জীব সৃষ্টি হয়ে পৃথিবীতে জীবের ভারসাম্য বজায় থাকে।
(৪) প্রকরণঃ যৌন জননের দ্বারা জীবদেহে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি ঘটে। আবার মিউটেশনের ফলে জীব দেহের মধ্যে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য বা ভেদ বা প্রকরণ এর উদ্ভব হয়। প্রকরন জীবের অভিযোজন ও অভিব্যক্তির অন্যতম উপাদান বলে গণ্য করা হয়।
দ্বিতীয় অংশঃ
মিয়োসিস বৈশিষ্ট্যগতভাবে মাইটোসিস
থেকে পৃথক—
বিষয় মাইটোসিস মিয়োসিস
সম্পাদনের স্থান দেহ কোশ এবং সাধারণ সংখ্যা বৃদ্ধির সময়ে জনন কোশে মাইটোসিস ঘটে। জনন মাতৃকোশ থেকে জনন কোশ বা গ্যামেট সৃষ্টির সময়ে ঘটে।
ক্রোমোজোম বিভাজনের প্রকৃতি এটি সমবিভাজন অর্থাৎ উৎপন্ন অপত্য কোশ দুটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা জনিতৃ কোশের সমান (2n) থাকে। এটি হ্রাস বিভাজন অর্থাৎ উৎপন্ন চারটি অপত্য কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃ কোশের অর্ধেক হয়ে যায় (2n) ।
উৎপন্ন কোষের সংখ্যা একটি জনিতৃ একবার কোশ থেকে বিভাজন দ্বারা দুটি অপত্য কোশ উৎপন্ন হয়। জনিতৃ কোশ থেকে দুইবার বিভাজন দ্বারা চারটি অপত্য কোশ উৎপন্ন হয়।

 

                             অথবা,
উপযুক্ত উদাহরণ সহ অযৌন জননের পাঁচটি পদ্ধতি বর্ণনা করো।
উত্তরঃ • অযৌন জননের প্রকারভেদ ও উদাহরণ (Types and examples of asexual Reproduction)
জীবদেহে পাঁচটি পদ্ধতিতে অযৌন জনন সম্পন্ন হতে দেখা যায়, যেমন: (১) বিভাজন, (২) কোরকোদগম, (৩) গেমিউল গঠন, (৪) পুনরুৎপাদন এবং (৫) রেণু উৎপাদন ।
(১) বিভাজনঃ বেশির ভাগ এককোশী প্রাণী বিভাজন পদ্ধতিতে অযৌন জনন সম্পন্ন করে। এই পদ্ধতিতে মাতৃ-কোশের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সম্পূর্ণভাবে বিভাজিত হয়ে দুই বা ততোধিক অপত্য কোশ সৃষ্টি করে।
• উদাহরণ : এককোশী প্রাণী অ্যামিবা, প্যারামিসিয়াম, ইউগ্লিনা ইত্যাদির ক্ষেত্রে এই রকম বিভাজন দেখা যায় ৷
(২) কোরকোদগমঃ এক্ষেত্রে প্রথমে দেহের কোনো একটি স্থানে একটি উপবৃদ্ধি দেখা যায়, যাকে কোরক বা বাড [bud] বলে। কোরক মাতৃদেহ থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে বৃদ্ধি পায়। কোরকটি পরিণত হলে মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন প্রাণীরূপে বসবাস করে ।
• উদাহরণ : হাইড্রা, এবং কয়েক রকম টিউনিকেটের [tunicates] ক্ষেত্রে কোরকোদগম পদ্ধতিতে অযৌন জনন সম্পন্ন হয়।
(৩) গেমিউল গঠনঃ মিঠে জলে বসবাসকারী স্পঞ্জের দেহে গেমিউল গঠিত হয়। পরে মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন প্রাণীদেহ সৃষ্টি করে।
(৪) পুনরুৎপাদনঃ স্পাইরোগাইরা নামক শৈবালে এবং স্পঞ্জ, চ্যাপ্টা কৃমি ও একনালিদেহী প্রাণীদের পুনরুৎপাদন বা রিজেনারেশন পদ্ধতিতে অযৌন জনন সম্পন্ন হয়।
(৫) রেণু উৎপাদনঃ বেশিরভাগ অপুষ্পক উদ্ভিদের অযৌন জনন রেণু উৎপাদনের দ্বারা সম্পন্ন হয়। উদ্ভিদদেহের থলির মতো আকৃতির যে অঙ্গের মধ্যে রেণু গঠিত হয়, তাকে রেণুস্থলী বলে। রেণু চলমান হলে (সিলিয়া বা ফ্লাজেলবিশিষ্ট রেণু চলমান হয়) তাকে চলরেণু বলে, যেমন : ইউলোথিক্স -এর চলরেণু। রেণু নিশ্চল অর্থাৎ চলমান না হলে তাকে অচলরেণু বলে। মিউকর, পেনিসিলিয়াম ইত্যাদি ছত্রাকের রেণু অচলরেণু। রেণুস্থলী থেকে পরিণত রেণু নির্গত হয়ে বাতাসের সাহায্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনুকূল পরিবেশে প্রতিটি রেণু অঙ্কুরিত হয়ে নতুন উদ্ভিদ-দেহ সৃষ্টি করে।
৪.৩ একটি বিশুদ্ধ কালো (BB) ও অমসৃণ লোমযুক্ত (SS) গিনিপিগের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ সাদা (bb) ও মসৃণ লোমযুক্ত (ss) গিনিপিগের মধ্যে সংকরায়ন এর ফলাফল F₂ জনু পর্যন্ত চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও। এই সংকরায়ন থেকে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় তা বিবৃত করো। ৩+২ =৫
উত্তরঃ
সিদ্ধান্ত–– F₂ জনুর ফলাফল বিশ্লেষণ করে মেন্ডেল সিদ্ধান্তে আসেন যে—
(১) লোমের কালো বর্ণ ও লোমের খর্ব দৈর্ঘ্য এর জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর, যা জনিতৃ জীবের যে-কোনো একটির মধ্যে উপস্থিত ছিল তা পরবর্তী প্রজন্মে একসঙ্গে সঞ্চারিত হয় না।
গিনিপিগের সাদা বর্ণ এবং দীর্ঘ লোম এর ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে ।
(২) লোমের বর্ণ এবং লোমের দৈর্ঘ্য নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিজোড়া ফ্যাক্টর স্বাধীন ভাবে পরবর্তী প্রজন্মে সম্ভাব্য সকল প্রকার সমন্বয় সঞ্চারিত হয়েছে । তাই F₂ জনুতে ৪ প্রকার গিনিপিগের সৃষ্টি হয়েছে ।
প্রতিটি বৈশিষ্ট্য নির্ধারণকারী ফ্যাক্টর বিপরীত ধর্মী ফ্যাক্টরের সঙ্গে স্বাধীন ভাবে এবং সম্ভাব্য সকল প্রকার সমন্বয় মিলিত হওয়ার ফলে বিভিন্ন জিনোটাইপ যুক্ত গিনিপিগের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে কালো-খর্ব লোম প্রকট এবং সাদা-দীর্ঘ লোম প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য।
এই পরীক্ষা থেকে মেন্ডেল তার স্বাধীন বিন্যাসের সূত্র প্রনয়ণ করেন।
                             অথবা,
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কোনো শিশুর দেহে কী কী লক্ষণ প্রকাশিত হয় ? সেই ক্ষেত্রে জেনেটিক কাউন্সেলিং এর সময় কী পরামর্শ দেয়া হয় ? ৩+২
উত্তরঃ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কোনো শিশুর দেহে লক্ষণ—
(১) হাড়ের গঠন বিকৃতি ঘটে,
(২) রোগীর মুখ ও মাথার খুলির হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হয়,
(৩) বৃদ্ধি ব্যাহত হয়,
(৪) জন্ডিস, ক্লান্তি প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায় ৷
দ্বিতীয় অংশ— জেনেটিক কাউন্সেলিং এর সময় দেওয়া পরামর্শ—
(১) প্রথমে হবু নবদম্পতিকে তাদের বিভিন্ন বংশগত রোগের পারিবারিক ইতিহাস বিশ্লেষণ করার জন্য বলা হবে।
(২) এরপর তাদের জিনগত পরীক্ষা করে তারা থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত কিনা বা ওই রোগের বাহক কিনা তা নির্ণয়ের জন্য বলা।
(৩) সন্তান ধারণের সময় মাতা ও পিতার বয়স যাতে বেশি না হয় সেই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া।
(৪) যদি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে রোগটির প্রকৃতি ও সন্তান গ্রহণের সমস্যা ও সন্তানের মধ্যে রোগের সম্ভাবনা এবং তীব্রতা নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসকের কাছে জেনেটিক কাউন্সেলিং এর জন্য পরামর্শ দেওয়া।
৪.৪ জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তির সংক্ষিপ্ত রূপরেখা মিলার ও উরের পরীক্ষার সাহায্যে বর্ণনা করো।
উত্তরঃ
মিলার ও উরের পরীক্ষাঃ ১৯৫৩ সালে স্ট্যানলি মিলার এবং বিজ্ঞানী হেরল্ড উরে সর্বপ্রথম ওপারিন-হ্যালডেন এর উপরে একটি পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে তারা জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সম্বন্ধে জোরালো প্রমাণ উপস্থাপন করেন।
বিজ্ঞানীদ্বয় এই পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ যন্ত্র তৈরি করেন। এই যন্ত্রটিতে দুটি প্রকোষ্ঠ ছিল, যাদের মধ্যে একটি বৃহৎ (৫ লিটার ) ও একটি ছোট (৫০ মিলি.)। এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রাচীন পৃথিবীর পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ওই প্রকোষ্ঠগুলির মধ্যে বৃহৎ প্রকোষ্ঠটিতে মিথেন, হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়ার মিশ্রণ নেওয়া হয় এবং ছোট প্রকোষ্ঠে জল রাখা হয়। এরপর বার্নার দিয়ে জল ফোটানো হয় । ফলে জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয়, যা একটি নলের মাধ্যমে বৃহৎ প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে। বৃহৎ প্রকোষ্ঠে টাংস্টেন নির্মিত ইলেকট্রোডের দ্বারা তড়িৎ মোক্ষন করা হয়, প্রাচীন পৃথিবীর বজ্রপাতের মত। এর ফলে উৎপন্ন গ্যাস মিশ্রণকে একটি নলের মধ্যে দিয়ে চালনা করা হয় এবং ঠাণ্ডা জলের প্রবাহ দ্বারা মিশ্রনটিকে ঘনীভূত করা হয়। সমগ্র ব্যবস্থাপনাটি এক সপ্তাহ ধরে চালনা করা হয়।
পরীক্ষায় প্রাপ্ত রাসায়নিক পদার্থগুলি বিশ্লেষণ করে প্রায় ২০টি অ্যামিনো অ্যাসিড পাওয়া যায়। এছাড়া অন্যান্য কিছু জৈব অ্যাসিড পাওয়া যায়। প্রাপ্ত দ্রব্যগুলির মধ্যে প্রধান ছিল গ্লাইসিন, অ্যালানিন, গ্লুটামিক অ্যাসিড, অ্যাস-পারটিক অ্যাসিড প্রভৃতি। এর থেকে সিদ্ধান্ত করা যায় যে প্রাচীন পৃথিবীতে অক্সিজেন বিহীন বিজারক পরিবেশে, বজ্রপাত, অতিবেগুনি রশ্মি ও অগ্নুৎপাত এর প্রভাবে বিভিন্ন অজৈব পদার্থ থেকে জটিল জৈব যৌগ গঠিত হয় । এই যৌগ গুলি জীবের দেহ গঠনের মূল উপাদান হিসেবে কাজ করে পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তির সাহায্য করে।

 

                              অথবা,
ল্যামার্কের অভিব্যক্তি সংক্রান্ত তত্ত্বের প্রতিপাদ্যের প্রধান দুটি বিষয় বর্ণনা করো। হৃৎপিন্ডের তুলনামূলক অঙ্গসংস্থান কীভাবে অভিব্যক্তি মতবাদ এর স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে কাজ করে ? ২+৩
উত্তরঃ ল্যামার্কের অভিব্যক্তি সংক্রান্ত তত্ত্বের প্রতিপাদ্যের প্রধান দুটি বিষয়—
(১) ব্যবহার ও অব্যবহারের সূত্রঃ ল্যামার্ক এর মতে, জীব দেহের কোন অঙ্গ ক্রমাগত ব্যবহৃত হতে থাকলে অঙ্গটি শক্তিশালী, সবল ও সুগঠিত হয়, পক্ষান্তরে জীব দেহের কোন অঙ্গ দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকলে সেটি ক্রমশঃ দুর্বল ও নিষ্ক্রিয় হয় ও অবশেষে অবলুপ্ত হয়ে যায়। যেমন– জিরাফের গলা বহুকাল আগে ছোট ছিল, কিন্তু কালক্রমে উঁচু গাছের পাতা খাদ্যরূপে গ্রহণের চেষ্টায় গলাটি ক্রমশ লম্বা হয়ে গেছে। আবার মানুষের পূর্বপুরুষের লেজ ক্রমাগত অব্যবহারের ফলে আজ নিষ্ক্রিয় অঙ্গ কক্সিসে পরিণত হয়েছে।
(২) অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরনঃ ল্যামার্ক এই সূত্রে বলেন- আপন প্রচেষ্টায় জীবদ্দশায় যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জন করে, সেইসব বৈশিষ্ট্য পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে, অর্থাৎ একজনু থেকে অপরজনুতে সঞ্চারিত হয়। এককথায়, জীবের অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরন ঘটে। জিরাফের গলা বহুকাল আগে ছোট ছিল, কিন্তু কালক্রমে উঁচু গাছের পাতা খাদ্যরূপে গ্রহণের চেষ্টায় গলাটি ক্রমশ লম্বা হয়ে গেছে। এই লম্বা গলার বৈশিষ্ট্যটি বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে আজকের লম্বা গলা যুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয়েছে।
হৃদপিন্ডের তুলনামূলক অঙ্গসংস্থান অভিব্যক্তি মতবাদ এর স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে কাজ করে—
মাছ, উভচর, সরীসৃপ, পক্ষী ও স্তন্যপায়ী প্রভৃতি প্রাণীর হৃৎপিন্ডের গঠন পরীক্ষা করলে দেখা যায়, সামান্য পার্থক্য থাকলেও এদের মৌলিক গঠন একই। যে সামান্য পার্থক্য দেখা যায়, তা ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বসবাসের দরুন অভিযোজনের মাধ্যমে ঘটে থাকে।
(১) মাছের হৃদপিণ্ড সরল প্রকৃতির। এ ক্ষেত্রে কেবল দুটি প্রকোষ্ঠ বর্তমান– একটি অলিন্দ এবং একটি নিলয়। মাছের হৃৎপিন্ডে কেবল অধিক CO₂ যুক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়।
(২) উভচর শ্রেণীর প্রাণীদের হৃদপিন্ডে তিনটি প্রকোষ্ঠ বর্তমান— দুটি অলিন্দ এবং একটি
নিলয়।
এদের হৃদপিন্ডে অধিক O₂ সমৃদ্ধ রক্তের সঙ্গে অধিক CO₂ যুক্ত রক্তের সামান্য মিশ্রণ ঘটে থাকে অর্থাৎ এদের হৃদপিণ্ড কিছুটা উন্নত প্রকৃতির।
(৩) সরীসৃপের হৃদপিন্ডে দুটি অলিন্দ ও একটি অর্ধ বিভক্ত নিলয় থাকে ব্যতিক্রম কুমির। এদের ভিতর অধিক CO₂ যুক্ত ও অধিক O₂ যুক্ত রক্ত মিশ্রিত হওয়ার প্রবণতা প্রতিরোধের প্রচেষ্টা দেখা যায়৷
(৪) পক্ষী ও স্তন্যপায়ী উভয়ই হৃদপিন্ডে চারটি প্রকোষ্ঠ থাকে— দুটি অলিন্দ ও দুটি নিলয়, এদের নিলয় ও অলিন্দ সম্পূর্ণরূপে দ্বিধা-বিভক্ত। এদের হৃদপিণ্ডে অধিক CO₂ যুক্ত ও অধিক O₂ যুক্ত রক্ত কোনভাবে মেশে না অর্থাৎ এদের হৃৎপিণ্ড সর্বাপেক্ষা উন্নত। এখানে দেখা যাচ্ছে যে সরল প্রাণী থেকে ধীরে ধীরে জটিল প্রাণীর সৃষ্টি হয়। এটি অভিব্যক্তির বিজ্ঞানভিত্তিক সত্যতা প্রমাণ করে। এছাড়া হৃদপিন্ডের গঠনগত ও কার্যগত বিকাশের ক্রম থেকে পৃথিবীতে এদের আগমন ক্রম বোঝা যায় । এদের আগমনের ক্রম হলো—
মাছ → উভচর → সরীসৃপ→ পাখি ও স্তন্যপায়ী।
৪.৫ নাইট্রোজেন চক্রের যে-কোন তিনটি ধাপে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা বিশ্লেষণ করো। “ বিলাসবহুল ও আরামদায়ক জীবনযাত্রা বায়ু দূষণের একটি অন্যতম প্রধান কারণ”- যুক্তিসহ উক্তিটি সমর্থন করো। ৩+২
উত্তরঃ নাইট্রোজেন চক্রের তিনটি ধাপে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা—
(১) উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ এবং প্রাণীর নাইট্রোজেন যুক্ত রেচন পদার্থ আমোনিফাইং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিশ্লেষিত হয়ে অ্যামোনিয়া-এ পরিণত হয়।
(২) এই অ্যামোনিয়া, নাইট্রোসোমোনাস নামক ব্যাকটেরিয়ার ক্রিয়ায় নাইট্রাইট যৌগে পরিণত হয়।
(৩) তারপর মাটিতে বসবাসকারী নাইট্রোব্যাক্টর নামক ব্যাকটেরিয়া নাইট্রাইট যৌগকে নাইট্রেটে পরিণত করে।
এইভাবে ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে নাইট্রোজেন মাটিতে আবদ্ধ হয়।
2NH⁺₄+30₂ → 2NO₂⁻ +4H⁺+2H₂0 ; 2NO⁻₂+0₂ →2NO₃
বিলাসবহুল ও আরামদায়ক জীবনযাত্রা বায়ু দূষণের একটি অন্যতম প্রধান কারণ—
(১) মানুষ বাড়িতে রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশন, ডিওড্রেন্ট এইসব ব্যবহার করে। এগুলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন থাকে, এগুলি মুক্ত হলে বায়ু দূষণ ঘটে।
(২) যানবাহন চলাচলের জন্য পেট্রোল, ডিজেল ব্যবহৃত হয়। এগুলি দহনের ফলে প্রচুর পরিমাণে সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়, ফলে বায়ু দূষণ ঘটে। এছাড়াও যানবাহনের ধোঁয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হয় ফলে বায়ু দূষণ ঘটে।
(৩) বিভিন্ন কলকারখানা থেকে যে ধোঁয়া নির্গত হয় সেখানে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে। এর ফলে বায়ুদূষণ ঘটে।
                            অথবা,
গঙ্গা নদীর দূষণের ফলে প্রাণী জীববৈচিত্রের বিপন্নতার দুটি উদাহরণ দাও। নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হওয়ার ফলে যেসব ঘটনা ঘটছে তার যে-কোনো প্রধান তিনটি ঘটনা ব্যাখ্যা করো। ২+৩
উত্তরঃ গঙ্গা নদীর দূষণের ফলে প্রাণী জীববৈচিত্রের বিপন্নতার দুটি উদাহরণ—-
(১) ইলিশ বা অন্যান্য মাছের জীবন বিপন্ন হচ্ছে, ফলে জীব বৈচিত্র বিপন্ন হচ্ছে।
(২) বহু গাঙ্গেয় জীব, বিশেষত ডলফিন, শুশুক, কচ্ছপ এদের অস্তিত্ব বিপন্ন হচ্ছে ।
নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হওয়ার ফলে প্রধান তিনটি ঘটনা—
(১) বিশ্ব উষ্ণায়নঃ নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হওয়ার ফলে নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসটি তাপশোষী গ্রিনহাউস গ্যাস সূর্যালোকের প্রতিফলনের সৃষ্ট অবলোহিত আলো ও তাপ শোষণ করে গ্রীনহাউস প্রভাব তথা বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটায়।
(২) অম্লবৃষ্টিঃ নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলি বৃষ্টির জলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে, যা অম্ল বৃষ্টির অন্যতম উপাদান অম্লবৃষ্টি জলজ উদ্ভিদ ধ্বংস করে পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিনষ্ট করে ।
(৩) আলোক রাসায়নিক ধোয়াশাঃ পেট্রোলিয়াম সৃষ্ট নাইট্রিক অক্সাইড হাইড্রোকার্বন আলোকের উপস্থিতিতে PAN (পারঅক্সি অ্যাসিটাইল নাইট্রেট) উৎপন্ন করে, যা আলোক রাসায়নিক ধোয়াশা উৎপন্ন করে। এটি দৃশ্যদূষণ ও শ্বাসনালির প্রদাহ, শ্বাসকষ্ট সমস্যা সৃষ্টি করে।
৪.৬ “ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার একটি সমস্যা হলো বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন”—- পরিবেশে এর কী কী প্রভাব পড়তে পারে তার সারসংক্ষেপ করো ? শীতকালে শিশু ও বয়স্কদের নানা শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা যায়– এরূপ দুটি সমস্যার নাম লেখো এবং তাদের একটি করে উপসর্গ বিবৃত করো। ৩+২
উত্তরঃ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার একটি সমস্যা হলো বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন, পরিবেশের ওপর প্রভাব—
(১) ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নগরায়নের ফলে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সালোকসংশ্লেষের অভাবে পরিবেশে CO₂ এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
(২) তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনেক দ্বীপ ধীরে ধীরে জলের তলায় চলে যাচ্ছে ।
(৩) পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ওজোন স্তরে ফাটল দেখা দিচ্ছে, ফলে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি পৃথিবী পৃষ্ঠে পৌঁছচ্ছে। ফলে ত্বকের বিভিন্ন রকম রোগ দেখা দিচ্ছে।
“শীতকালে শিশু ও বয়স্কদের নানা শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা যায়” –এরূপ দুটি সমস্যা—
(১) অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমা, যেটি শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
উপসর্গ– প্রচুর পরিমাণে শ্বাসকষ্ট হয়।
(২) অ্যালার্জিহীন অ্যাজমা, এটি প্রধানত ধূমপানের ফলে হয় ।
উপসর্গ– শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি হয়।
                             অথবা,
সুন্দরবনের একটি গবেষণা করতে গিয়ে তুমি নিম্নলিখিত তিনটি সমস্যা শনাক্ত করলে— (ক) খাদ্য-খাদক সংখ্যার ভারসাম্যে ব্যাঘাত; (খ) নগরায়নের জন্য লবণাম্বু উদ্ভিদ ধ্বংস ; (গ) উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে দ্বীপভূমির নিমজ্জন – জীববৈচিত্রের উপর এদের প্রভাব কী কী হতে পারে তা বিশ্লেষণ করো। সুদাল্যান্ড হটস্পটের অবস্থান ও এর জীববৈচিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির নাম লেখো। ৩+২
উত্তরঃ জীববৈচিত্রের উপর প্রভাবঃ
(ক) খাদ্য-খাদক সংখ্যার ভারসাম্যে ব্যাঘাত—
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে পরিবেশ সমস্যা হচ্ছে ফলে বহু প্রাণী অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, ফলে বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য শৃংখলের খাদ্য ও খাদকের সংখ্যার ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে মাছ। কাঁকড়া প্রভৃতি অতিরিক্ত সংগ্রহে বাঘেদের স্বাভাবিক খাদ্যভ্যাস পাচ্ছে ফলে তাঁরা সহজেই মানুষকে আক্রমণ করছে।
(খ) নগরায়নের জন্য লবণাম্বু উদ্ভিদ ধ্বংস—
জন সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নগরায়নের জন্য গৃহ নির্মাণ, চাষাবাদ প্রভৃতির জন্য লবনাম্বু উদ্ভিদ কাটা হচ্ছে। ফলে শক্তিশালী ঝড় উত্তর ও দক্ষিন ২৪ পরগণায় ধেয়ে আসছে এবং মানুষের জীবন সংকটময় হয়ে পড়ছে। এই গাছ কাটা এখনি বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে জীব বৈচিত্রের ওপর প্রভাব পড়বে এবং আরও ভয়াবহ সমস্যা সম্মুখীন হতে হবে।
(গ) উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে দ্বীপভূমির নিমজ্জন—
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলছে। ফলে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বহু দ্বীপ জলে নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে। জম্বুদ্বীপ প্রায় জলের তলায় এবং ভাঙ্গদুয়ারী দ্বীপ ১৬.৪৪% জলের তলায় চলে গেছে ।
সুন্দাল্যান্ড এশিয়া– প্যাসিফিক মহাদেশের অন্তর্গত যার মধ্যে আন্দামান নিকোবর দ্বীপগুলি পড়ে।
সুন্দাল্যান্ড– এর জীব বৈচিত্রের একটি – গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির নাম হলো– সুন্দরী গাছ।
Madhyamik Life Science Question Paper
2017 2018 2019 2020 2022 2023

This Post Has 2 Comments

Leave a Reply