Matribhasa Kobitar Proshno Uttor Class 7 | মাতৃভাষা কবিতার প্রশ্নোত্তর সপ্তম শ্রেণি।

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now
                    সাহিত্য মেলা
                সপ্তম শ্রেণি বাংলা

মাতৃভাষা
—কেদারনাথ সিং

পিঁপড়ে যেভাবে ফেরে
নিজের গর্তে
কাঠঠোকরা পাখি
কাঠে ফেরে
বায়ুযান একে একে ফিরে আসে
লাল আকাশে ডানা মেলে
বিমানবন্দরে
ও আমার ভাষা
আমি তোমারই ভিতরে ফিরি
চুপ করে থাকতে থাকতে যখন
আমার জিভ অসাড় হয়ে যায়
আমার আত্মা দুঃখ হয়ে উঠে।

কবি পরিচিতি : হিন্দি ভাষার প্রখ্যাত কবি কেদারনাথ সিং জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালে। ১৯৮৯ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ‘আকাল মে সারস’ (‘আকালের মধ্যে সারস’) গ্রন্থের জন্য। গোরখপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ
করে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। সহজ, দৈনন্দিন ভাষায় কবিতা লেখেন, যার মূলে থাকে জটিল জীবনসমস্যার প্রতিফলন। তাঁর বিখ্যাত কাব্যসংকলন-আভি বিলকুল আভি’, ‘জমিন পাক রহী হ্যায়’ ইত্যাদি। তিনি গল্প এবং প্রবন্ধ রচনাতেও যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

গদ্যরূপ : পিঁপড়ে যেমন করে গর্তে ফেরে, কাঠঠোকরা পাখি যেমন কাঠের ফোঁকরে ফেরে, উড়োজাহাজ একে একে বিমানবন্দরে ফিরে আসে, আমি ভাষার মধ্যে ফিরে আসি। চুপ করে থাকার ফলে যখন আমার জিভ অসাড় হয়ে যায়, তখন আত্মা যেন দুঃখে ভরে ওঠে।

সারসংক্ষেপ : কবি নিজের মাতৃভাষার মধ্যেই প্রাণ খুঁজে পান। এই মাতৃভাষার সঙ্গে তাঁর আত্মার যোগ। তাকে তিনি প্রাণ দিয়ে অনুভব করেন। হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেন। যেভাবে পিঁপড়েরা ফিরে আসে নিজের গর্তে, কাঠঠোকরা ফিরে আসে নিজের বাসায় কিংবা বায়ুযান যেভাবে ফিরে আসে বিমানবন্দরে। কবি যেন সব সময় সেই মাতৃভাষার মধ্যে ফিরে আসতে চান। তিনি চুপচাপ থাকতে পারেন না। বেশিক্ষণ চুপ থাকলে জিভ অসাড় হয়ে যায়। আর এই জিভ দিয়েই তো মাতৃভাষার উচ্চারণ ঘটে। কিন্তু জিভ অসাড় হয়ে থাকলে নিজের আত্মা দুঃখিত হয়ে ওঠে।

নামকরণ : বিদেশি ভাষার দাপাদাপিতে কবি চুপ করে থাকতে বাধ্য হন। তাঁর জিভ অসাড় হয়, আত্মা হয় দুঃখিত। তখনই তিনি সবচেয়ে ভালোভাবে মাতৃভাষার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং মাতৃভাষার প্রতিও যে তার দায়িত্ব আছে সেটা বোঝেন। এই উপলব্ধিই মাতৃভাষা কবিতায় প্রকাশিত। মাতৃভাষার অনন্যতা ও গুরুত্বকে বোঝানোর জন্যই এই কবিতার নামকরণ ‘মাতৃভাষা’ রাখা হয়েছে, যা সার্থক ও যথার্থ।

শব্দার্থ :
বায়ুযান— বায়ুতে গমন করে যে যন্ত্রচালিত ইঞ্জিন, উড়োজাহাজ।
বিমানবন্দর— যেখানে বিমান ওঠা-নামা করে।
ভাষা— ভাব বিনিময়ের মাধ্যম।
জিভ— যার দ্বারা আমরা রসন স্বাদ গ্রহণ করি।
অসাড়— যার কোনো সাড়া নেই।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

∆অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

১.১ ‘মাতৃভাষা’ কবিতাটি মূল কোন্ ভাষায় লেখা ?

উত্তরঃ হিন্দি ভাষায় লেখা।

১.২ ‘মাতৃভাষা’ কবিতাটির তর্জমা কে করেন ?

উত্তরঃ কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত।

১.৩ পিঁপড়ে কোথায় ফেরে ?

উত্তরঃ পিঁপড়ে নিজের গর্তে ফেরে।

১.৪ কাঠঠোকরা পাখি কোথায় ফেরে ?

উত্তরঃ কাঠঠোকরা পাখি নিজের বাসায় ফেরে।

১.৫ বায়ুযান কীভাবে কোথায় ফিরে আসে ?

উত্তরঃ বায়ুযান লাল আকাশে ডানা মেলে বিমানবন্দরে ফিরে আসে।

১.৬ কবি কার মধ্যে ফেরেন ?

উত্তরঃ কবি মাতৃভাষার মধ্যে ফেরেন।

১.৭ চুপ করে থাকলে কী হয় ?

উত্তরঃ জিভ অসাড় হয়।

১.৮ জিভ অসাড় হলে কবির কী হয় ?

উত্তরঃ জিভ অসাড় হলে কবির আত্মা দুঃখিত হয়ে ওঠে।

∆শূন্যস্থান পূরণ করো :

২.১ ‘পিঁপড়ে যেভাবে _______ গর্তে ফেরে।

উত্তরঃ নিজের।

২.২ ‘লাল আকাশে ডানা মেলে ________ ফেরে।

উত্তরঃ বিমানবন্দরে।

২.৩ ও আমার ________ আমি তোমারই ভিতরে ফিরি।

উত্তরঃ ভাষা।

২.৪ ‘আমার ______ অসাড় হয়ে যায়’।

উত্তরঃ জিভ।

২.৫ ‘আমার _________ দুঃখিত হয়ে ওঠে’

উত্তরঃ আত্মা।

∆ঠিক উত্তরটি বেছে নাও :

৬.১ পিঁপড়েরা ফেরে (নিজের গর্তে / পাখির বাসায় / বিমানবন্দরে)

উত্তরঃ নিজের গর্তে।

৬.২ কাঠঠোকরা পাখি ফেরে (নিজের গর্তে / কাঠে ফেরে / বিমানবন্দরে)।

উত্তরঃ কাঠে ফেরে।

৬.৩ বায়ুযান ফেরে (নিজের গর্তে / বিমানবন্দরে / জাহাজ বন্দরে)

উত্তরঃ বিমানবন্দরে।

৭. এককথায় প্রকাশ করো :

» যার দ্বারা আমরা স্বাদ গ্রহণ করি – জিহ্বা।

» বায়ুতে গমন করে যে যন্ত্রচালিত ইঞ্জিন – বায়ুযান।

» গাছে ঠোকরায় যেপাখি – কাঠঠোকরা।

» ভাব বিনিময়ের মাধ্যম – ভাষা।

» যার কোনো সাড়া নেই – অসাড়।

» যেখানে বিমান ওঠা-নামা করে – বিমান বন্দর।

👉 পরবর্তী পাঠঃ একুশের কবিতা

 

This Post Has One Comment

Leave a Reply