মন ভালো করা কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর শক্তি চট্টোপাধ্যায় | Mon Bhalo Kora Poem Question Answer Class 6 WBBSE

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

 

মন-ভালো-করা
—শক্তি চট্টোপাধ্যায়

শক্তি চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৩-১৯৯৫): বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি। জন্ম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ু গ্রামে। পড়াশুনো করেছেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য। এছাড়াও ধর্মে আছি জিরাফেও আছি, হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান, সোনার মাছি খুন করেছি, যেতে পারি কিন্তু কেন যাব উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কুয়োতলা, অবনী বাড়ি আছো ? বিখ্যাত উপন্যাস। তিনি আনন্দ পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।

শব্দার্থ : হ্রস্ব— ছোট, ক্ষুদ্র। হরিদ্রা— হলুদ। খর— তীব্র।

মন ভালো করা কবিতার সারসংক্ষেপ—

কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মন ভালো করা’ কবিতায়, কবির মনে প্রশ্ন জেগেছে, তাঁর মন ভালো করে দেওয়া উজ্জ্বল রোদের সঙ্গে মাছরাঙা পাখির গায়ের রঙের এত মিল হওয়া কীভাবে সম্ভব ? কবি আকাশের হালকা বা গাঢ় নীল রঙের সঙ্গে মাছরাঙার গায়ের আঁকিবুকি রঙিন পালকের তুলনা করেছেন। দিনের বিভিন্ন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রোদ্দুর যেমন লাল, হলুদ ইত্যাদি নানারকম রঙ ধারণ করে, মাছরাঙার গায়েও তেমনি লাল, হলুদ, সবুজ এমন নানান রঙ দেখা যায়। কবির মনে হয়েছে, যেভাবে মাছরাঙার রঙিন গায়ে আলো পড়ে পিছলে যায়, ঠিক তেমনই অল্প হাওয়ায় পাতারাও নড়ে। সেই হাওয়ার ছোঁয়া লাগে মাছরাঙার শরীরেও। কবির বারবার মনে হয়, মন ভালো করা রোদ্দুর, আকাশ ইত্যাদি সবই মাছরাঙার গায়ের মতো বর্ণময়, সুন্দর।

মন ভালো করা কবিতার নামকরণের সার্থকতা—
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মন ভালো করা’ কবিতায়, কবি রোদের সঙ্গে মাছরাঙা পাখির গায়ের রঙের আশ্চর্য মিল লক্ষ করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁর মনে এই প্রশ্নই বারবার উঠে এসেছে যে, কেন মন ভালো করা রোদ্দুরের রঙ মাছরাঙার গায়ের রঙের মতো। মাছরাঙার ছোটোবড়ো রঙিন উজ্জ্বল পালকের গায়ে যখন আলো পড়ে, তখন কবির মনে খুশি হয়, তেমনই রোদের দিকে তাকিয়েও তাঁর মন আনন্দে ভরে ওঠে। তাই কবিতাটির বিষয়বস্তু অনুযায়ী ‘মন ভালো করা’ কবিতার নামকরণ সার্থক হয়েছে।


বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর


হাতে কলমে’র প্রশ্নের উত্তর

১.১ শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোন্ কলেজের ছাত্র ছিলেন ?

উত্তরঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র ছিলেন।

১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তরঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম – (ক) যেতে পারি কিন্তু কেন যাব ? (খ) হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান।

২. নীচের শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লিখে তা দিয়ে বাক্য রচনা করো : হ্রস্ব, খর, শান্ত।

উত্তরঃ

হ্রস্বদীর্ঘ : সাহারার দীর্ঘ মরুভূমি পাড়ি দেওয়া অতো সহজ কাজ নয়।

খরনরম : শ্যামার নরম গান বেহুলা শুনেছিল ভেলায় চড়ে স্বর্গে পাড়ি দেবার সময়।

শান্তঅশান্ত : বেশ কিছু দিন ছেলের কোনো খবর না পেয়ে বাবার মন অশান্ত হয়ে আছে।

৩. নীচের শব্দগুলি কোন্ মূল শব্দ থেকে এসেছে লেখো: রোদ্দুর, গা

উত্তরঃ রোদ্দুর-রোদ। গা-শরীর।

8. “হাওয়ায়-বাতাসে পাতারাও নড়ে”- হাওয়া-বাতাসের মতো একই অর্থবোধক পাঁচটি শব্দবন্ধ রচনা করে স্বাধীন বাক্যে প্রয়োগ করো।

উত্তরঃ বিপদ-আপদ – নদীর ধারের
সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে সাবধানে গাড়ি চালাবে, যাতে কোনো বিপদ-আপদ না ঘটে।

হাট-বাজার – ধর্মঘটের ফলে হাটবাজার সব বন্ধ।

চোর-ডাকাত – ইদানিং আমাদের পাড়ায় চোর-ডাকাতের খুব উৎপাত বেড়েছে।

হাসিখুশি – হাসিখুশিভাবে জীবন কাটালে অনেক রোগ এড়ানো যায়।

দায়-দায়িত্ব – সংসারের প্রতি কি তোমার কোনো দায়-দায়িত্ব নেই, সব কাজ ফেলে দিনরাত কেবল টো-টো করে ঘুরে বেড়াচ্ছো ?

৫. মন ভালো করা, নীল-নীলান্ত’র মতো একাধিক শব্দ বন্ধ তৈরি করো।

উত্তরঃ ‘মন-ভালো-করা’-র মতো শব্দবন্ধের উদাহরণ— বসে আঁকো- প্রতিযোগিতা, নাম-না-জানা-পাখি, সবুজ-বাঁচাও-কমিটি।

“নীল-নীলান্ত’র মতো শব্দবন্ধের উদাহরণ – দূর-দুরান্ত, তল-তলান্ত, দিগ্‌-দিগন্ত, ডুব-ডুবন্ত, হাওয়া-বাতাস, ভুল-ভুলাইয়া, শাপ-শাপান্ত, দেনা-পাওনা।

৬. গদ্যে লেখো: মন ভালো করা রোদ্দুর কেন / মাছরাঙাটির গায়ের মতন ?

উত্তরঃ মন ভালো করা রোেদ কেন মাছরাঙার গায়ের মতো ?

৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।

৭.১ কবিতায় কবিমনে কোন্ কোন্ প্রশ্ন জেগেছে তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘মন ভালো করা’ কবিতায় কবির মনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। প্রথমত, মন ভালো করা রোদ্দুর কেন মাছরাঙার গায়ের রঙের মতো ? দ্বিতীয়ত, কেন মাছরাঙার রঙ উগ্র ও শান্ত, লাল-হলুদ-সবুজ কেন ? তৃতীয়ত, বন কেন লাল, হলুদ ও সবুজাভ।

৭.২ মন ভালো-করা রোদ্দুরকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন ?

উত্তরঃ মন-ভালো-করা রোদ্দুরকে কবি মাছরাঙার গায়ের রঙের সাথে তুলনা করেছেন।

৭.৩ মাছরাঙা পাখির রং কবির চোখে কীভাবে ধরা পড়েছে ?

উত্তরঃ কবির ভাষায় মাছরাঙার রং গাঢ় নীল উজ্জ্বল; কোথাও রয়েছে লাল, হলুদ, সবুজ রঙেরও ছড়াছড়ি।

৭.৪ গাছের ডালে বসা মাছরাঙা পাখিটি কীভাবে কবি কল্পনাকে প্রভাবিত করেছে তা বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ গাছে বসে আছে উজ্জ্বল গাঢ় নীল রঙা পাখি। তার ঘন উজ্জ্বল রং কবিকে নানাভাবে আকর্ষণ করছে। এই পাখিটির নাম মাছরাঙা। কবিকে শুধু আকর্ষণ নয়, নানাভাবে প্রভাবিত করেছিল। কবির মনে হয়েছে মন ভালো করা রোদের রং নীল, মাছরাঙাটির গায়ে আলো পড়লে তবে হাওয়ায় বাতাসে পাতারাও নড়ে। মাছরাঙার রং ঘন হলেও নীল-আকাশ জুড়ে তা একেবারেই শান্তরূপ ধারণ করেছে। কবির মনে বারবার প্রশ্ন জেগেছে কেন মন ভালো করা রোদ্দুর মাছরাঙাটির গায়ের মতো ?

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

১. ‘মন ভালো-করা’ কবিতাটির এমন নাম করণের কারণ কী ?

উত্তরঃ মাছরাঙা পাখির গায়ে নানা রঙের সমাহার – লাল, হলুদ, নীল, সবুজ। কবি মাছরাঙার গায়ের রঙের সঙ্গে রোদেরও যথেষ্ট মিল পেয়েছেন। সকালে রোদের রং লাল, দুপুরে কবির চোখে রোদের রং হলুদ আবাব সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে পড়া রোদকে কবি সবুজ দেখেছেন। রোদ কবির চোখে অসাধারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।

মাছরাঙার গায়ের রং আর রোেদ মিলে কবির মনকে ভালোলাগায় ভরিয়ে তুলেছে। তাই মন ভালো-করা নামকরণটি উপযুক্তই হয়েছে।

২. কেন ওর রং খর ও শান্ত’-এই শব্দ কয়টি দ্বারা কীভাবে মাছরাঙা ও রোদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ?

উত্তরঃ বিভিন্ন রঙের মিশ্রণে মাছরাভার শরীরের রং অতি উজ্জ্বল কিন্তু তা স্নিগ্ধ বা শান্ত। একইভাবে রোেদও কখনও খর আবার কখনও শান্ত। দুপুরের রোদ প্রখর ও তীব্র কিন্তু সকালের ও বিকালের রোদ শান্ত বা স্নিগ্ধ।

৩. নীচের শব্দগুলির পদ পরিবর্তন করো : দীর্ঘ, নীল, রং, আলো,।

উত্তরঃ দীর্ঘ (বিশেষণ)-দৈর্ঘ্য (বিশেষ্য)। নীল (বিশেষ্য)-নীলাভ (বিশেষণ)। রং (বিশেষ্য) -রঙিন (বিশেষণ)। আলো (বিশেষ্য)- আলোকিত (বিশেষণ)।

👉 পরবর্তী পাঠঃ পশুপাখির ভাষা।

ষষ্ঠ শ্রেণি সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্র | ১ম, ২য়, ৩য় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র | All Unit Test Question Paper

Leave a Reply