নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার গদ্যরূপ, প্রশ্ন ও উত্তর, MCQ, SAQ | Nildhojer Prati Jona Kobitar Question Answer [WBCHSE]

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

একাদশ শ্রেণি

       নীলধ্বজের প্রতি জনা
       —মাইকেল মধুসূদন দত্ত
কবি পরিচয়ঃ
‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতাটি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের (১৮২৪-৭৩) লেখা। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত কবির বাসনা ছিল ইংরেজি সাহিত্যচর্চা করার। জীবনের প্রথম দুটি কাব্য ইংরেজি ভাষাতেই লেখা। কিন্তু ইংরেজি সাহিত্য রচনা করে তিনি সাফল্য পাননি। পরে বন্ধু- শুভাকাঙ্খীদের পরামর্শে তিনি বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং সফল হন।
উৎসঃ
কবিতাটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বীরাঙ্গনা’ (১৮৬২) পত্রকাব্যের একাদশ সংখ্যক কবিতা। পত্রকাব্যের বিষয়বস্তু হল একজন নারী তাঁর প্রিয়তমকে মনের কথা জানায় পত্র অর্থাৎ চিঠির মাধ্যমে। এই পত্রটি রানী জনা লিখেছেন তাঁর স্বামী নিলধ্বজকে।
কবিতার পটভূমিঃ
মাহেশ্বরপুরীর রাজা নীলধ্বজ। তাঁর পুত্র প্রবীর নিতান্তই বালক। অর্জুনের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া সে আটকে দিয়েছিল। পরে অর্জুন এসে একপ্রকার অন্যায়যুদ্ধ করে বালক প্রবীরকে হত্যা করেছিল। নীলধ্বজ ভেবেছিল অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রবীরের হত্যার প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু তাঁর জামাতা অগ্নি তাঁকে বলে যে অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধ করলে হারতেই হবে। তাই তাঁর সঙ্গে সন্ধি করাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিবাদ করতে অনিচ্ছুক (বিবাদ পরাঙ্মুখ) নীলধ্বজ অর্জুনকে রাজসভায় নিয়ে এসে নাচগানের আসর বসায়। এই ঘটনা প্রবীরের মা তথা নীলধ্বজের স্ত্রী জনা কোনোমতেই মেনে নিতে পারছিল না। পত্রের মাধ্যমে জনা সেই কথাই ব্যক্ত করেছেন। উল্লেখ্য যে, মহাভারতের অশ্বমেধ পর্বে এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
কবিতাটির গদ্যরূপ (অর্থসহ)—
‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতার লাইন ধরে বিশ্লেষণ, শুধু লাইন নয়- প্রতিটি লাইনের শব্দ ধরে বিশ্লেষণ। কঠিন শব্দগুলি পাশে ব্র্যাকেটের ভিতর নীল কালিতে দেওয়া হল। বইটি সামনে রেখে একবার এই গদ্যরূপটি পড়লে সম্পুর্ণ কবিতাটি বোঝা যাবে আশা করছি।
আজ রাজবাড়ির সদর দরজায়
(রাজতোরণে) যুদ্ধের বাজনা (রণবাদ্য ) বাজছে। ঘোড়া ডাকছে (হ্ৰেষে অশ্ব), হাতি গর্জন করছে (গর্জে গজ), উড়ছে আকাশে রাজপতাকা(রাজকেতু); রাজসৈন্যরা অনবরত যুদ্ধের উন্মাদনায় হুঙ্কার ছাড়ছে! (মুহুর্মুহুঃ হুঙ্কারিছে মাতি রণমদে রাজসৈন্য) – কিন্তু কোন্ কারণে (হেতু)?
হে রাজা (নররাজ), সদলবলে যুদ্ধ করার জন্য (যুঝিতে সদলে) তুমি কি রণসজ্জায় সাজছ (সাজিছ)? পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য (প্রতিবিধিৎসিতে), অর্জুনের রক্তে (ফাল্গুনির লোহে) আমার দুঃখের আগুন নেভাতে (নিবাইতে এ শোকাগ্নি)?
এই তো সাজে তোমাকে (তোমারে), তুমি ক্ষত্রিয় কুলের মণি (ক্ষত্রমণি), মহাবলশালী (মহাবাহু)! দ্রুত যাও (যাও বেগে) যেমন করে সগর্জনে (নিনাদে) গজরাজ যায় (গজরাজ যথা) যমের দণ্ডের মতো শুড় আস্ফালন করে (যমদণ্ডসম শুণ্ড আস্ফালি)!
আজ যুদ্ধক্ষেত্রে (রণস্থলে) অর্জুনের (কিরীটীর) গর্ব্ব ভেঙে চুরমার করে দাও (টুট)। তার কাটা মুন্ড (খণ্ডমুণ্ড তার) নিয়ে এস (আন) শূলদণ্ডের মাথায় চাপিয়ে (শূল-দণ্ড- শিরে)!
অন্যায় যুদ্ধে (সমরে) মূর্খ (মূঢ়) বালক হত্যা করল (নাশিল বালকে); মেরে ফেল (নাশ),
হে মহাধনুর্ধর (মহেষ্বাস), তাকে (তারে)!
এ যন্ত্রণা ভুলব (ভুলিব এ জ্বালা), এই ভয়ংকর যন্ত্রণা (এ বিষম জ্বালা), হে স্বামী (দেব), তাড়াতাড়ি ভুলতে পারব (ভুলিব সত্বরে)!
জন্ম হলেই মৃত্যু হয়, বিধাতার এটাই নিয়ম (জন্মে মৃত্যু ;–বিধাতার এ বিধি জগতে)।
ক্ষত্রিয় কুলের রত্ন (ক্ষত্রকুল-রত্ম) পুত্র প্রবীর সুমতি, মুখোমুখি যুদ্ধ করে (সম্মুখসমরে পড়ি), গেছে স্বর্গধামে,— কি কাজ দুঃখ করে (বিলাপে), প্ৰভু?
হে রাজা, মহারাজ, নিজের বাহুবলে ক্ষত্রিয়দের ধর্ম, ক্ষত্রিয়দের কর্ম পালন কর(পাল, মহীপাল, ক্ষত্রধৰ্ম্ম, ক্ষত্রকৰ্ম্ম সাধ ভুজবলে)।
হায়, পাগলিনী জনা! তোমার (তব) সভার মাঝে আজ নৰ্ত্তকী নাচছে, গায়ক গাইছে, উথলে উঠছে (উথলিছে) বীণাধ্বনি!
তোমার (তব) সিংহাসনে বসেছে পুত্রের হত্যাকারী (পুত্রহা) শত্রু(রিপু)— সে তোমার শ্রেষ্ঠ বন্ধু (মিত্রোত্তম) এখন (এবে)!
অতিথি-রত্নটিকে যত্ন করেই সেবা করছ (সেবিছ যতনে তুমি অতিথি-রতনে)।—
কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায়, বলব কাকে(কব কারে)?
পুত্রের অভাবে (পুত্রের বিহনে) আজ কি তুমি জ্ঞান হারিয়েছ (হতজ্ঞান আজি কি হে), মাহেশ্বরী-পুরীর রাজা (মাহেশ্বরী- পুরীশ্বর) নীলধ্বজ রথী?
হে রাজা, যে দারুণ বিধাতা (বিধি), আজ আমার পুত্রকে হরণ করে (হরি পুত্রধনে আমার রাজ্য অন্ধকার করে দিল (আঁধারিলা), তিনি কি তোমার জ্ঞানও হরণ করলেন (হরিলা কি তিনি জ্ঞান তব)?
তা না হলে, বল আমাকে (কহ মোরে), কেন এ পাপিষ্ঠ (পাষণ্ড) পাণ্ডবদের রথী অর্জুন (পাণ্ডুরথী পার্থ) তোমার ঘরে (তব পুরে) অতিথি?
কেমন করে তুমি, হায়, বন্ধুর মতো (মিত্রভাবে) স্পর্শ কর সেই হাত (পরশ সে কর), যা প্রবীরের রক্তে লাল (লোহে লোহিত)? হে রাজা (নৃমণি) এটা কি ক্ষত্রিয়ধৰ্ম্ম?
কোথায় ধনুক, কোথায় বাণ রাখবার জায়গা (তূণ), কোথায় চামড়া (চৰ্ম্ম), কোথায় তরবারি (অসি)?
যুদ্ধক্ষেত্রে (রণক্ষেত্রে) তীক্ষ্ণতম শর দিয়ে শত্রুর বুক ভেদ না করে (না ভেদি রিপুর বক্ষ), তুমি কি সভাতলে মিষ্টি কথায় (মিষ্টালাপে) তার কান তোষণ A (তুষিছ কি কর্ণ তার)?
কি বলবে, বল, যখন দেশ-দেশান্তরে জানাজানি হবে এই কাহিনি (জনরব লবে এ কাহিনী),— কী বলবে যত ক্ষত্রিয় রাজা (ক্ষত্রপতি)?
রাজা, শুনলাম (শুনিনু) অর্জুনকে (পার্থে) নরনারায়ণ ভেবে (নররারায়ণ-জ্ঞানে), ভক্তিভাবে পূজা করছ (পূজিছ)–এ কি ভ্রান্তি তোমার?
হায়, ভোজরাজের কন্যা (ভোজবালা) কুন্তী -কে না জানে তাকে, স্বেচ্ছাচারিণী (স্বৈরিণী)?
হে রাজরথি, এমন ছেলে (তনয়) তার যার
জন্মের ঠিক নেই (জারজ) সেই অর্জুনকে
কী গুণ দেখে নরনারায়ণ-জ্ঞানে তুমি পূজা
কর? কী লজ্জার কথা (কি লজ্জা)! হে
দারুণ বিধাতা, এ কি লীলাখেলা তোর,
বুঝব কেমন করে?
একমাত্র পুত্র দিয়ে পুনরায় তাকে নিয়ে নিলি, অকালে। মানটুকু ছিল (আছিল মান) তাও কি শেষ করে দিলি (নাশিলি)?
নরনারায়ণ নাকি পার্থ? অসতী (কুলটা) যে নারী— বারাঙ্গনা (বেশ্যা ) তার গর্ভে কি হে এসে জন্ম নিল বিষ্ণু (জনমিলা হৃষীকেশ)? কোন্ শাস্ত্রে, কোন্ বেদে লেখে কি পুরাণে–এ কাহিনী? কেবল মহাভারত-রচয়িতা ব্যাসদেব (দ্বৈপায়ন ঋষি) পাণ্ডবদের গুণকীর্তন গান সবসময় (গায়েন সতত)।
সত্যবতীর ছেলে (সত্যবতীসুত) ব্যাসদেব জগতে বিখ্যাত। তার মা জেলে (ধীবরী জননী) আর বাবা ব্ৰাহ্মণ!
দুজন ভ্রাতৃবধূকে নিয়ে (লয়ে কোলে ভ্রাতৃবধূদ্বয়ে) কামনার খেলা করল (করিলা কামকেলি), সে কিনা ধৰ্ম্মমতি! কি দেখে তাঁর কথা গ্রাহ্য কর বোঝাও তো এই দাসীকে? (দাসীরে, অর্থাৎ জনা নিজেকে বলেছে)। তিনি অর্থাৎ ব্যাসদেব হলেন কু- কুলের কুলাচার্য্য।
তবে যদি নারায়ণ (পীতাম্বর) পার্থরূপেই পৃথিবীতে (ভবে) অবতীর্ণ হয়েছেন, কোথায় লক্ষ্মী (পদ্মালয়া ইন্দিরা)? দ্রৌপদী বুঝি? আঃ মরি, কি সতী! শাশুড়ীর যোগ্য বৌমা (বধ)!
পাণ্ডবদের সরোবরে পদ্ম (পৌরব-সরসে নলিনী)! অলি বা মৌমাছির সখী, সূর্য বা রবির অধীনা ও বাতাসের প্রিয়া (সমীরণ- প্ৰিয়া)! ধিক্! এত দুখেও (হেন দুঃখে) হাসি আসে মুখে যদি ভাবি দ্রৌপদীর (পাঞ্চালীর) কথা! এই ভ্রষ্টা রমণী কি জগতের মাতা লক্ষ্মীদেবী (লোকমাতা রমা)?
আমি জানি লোকে বলে রথীকুল-পতি পার্থ। মিথ্যা কথা, স্বামী (নাথ)! বিবেচনা কর, সূক্ষ্ম বিবেচক হিসেবে তুমি বিখ্যাত জগতে।—
স্বয়ম্বর সভায় ছদ্মবেশে লক্ষ রাজাকে ছলনা করল (ছলিল) দুৰ্ম্মতি ( অর্জুনকে দুর্মতি বলা হয়েছে)। সেই যুদ্ধে ( সে সংগ্রামে) তাকে ব্রাহ্মণ ভেবে কোন্ ক্ষত্ৰীয় রথী বল তো যথাসাধ্য যুদ্ধ করল (যুঝিল)? রাজাদের দলে (রাজদলে) সেইজন্য (তেঁই) সে জিতেছিল।
দুষ্ট অর্জুন খাণ্ডব বন দহন করেছিল (দহিল খাণ্ডব) কৃষ্ণের সাহায্য নিয়ে (সহায়ে)।
শিখণ্ডীর সাহায্য নিয়ে (সহকারে) কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে (রণে) কৌরব এবং পাণ্ডব বংশের গৌরব (পৌরব-গৌরব) বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্মকে হত্যা করেছিল (সংহারিল) মহাপাপী অর্জুন।
গুরু দ্রোণাচার্য্য,— তাঁকে কি কুছলে নরাধম অর্জুন বধ করল (বধিল), দেখ মনে করে (স্মরি)?
ব্রহ্মশাপের জন্য কর্ণের রথের চাকা যখন (রথচক্র যবে) পৃথিবী গ্রাস করেছিল (বসুন্ধরা গ্রাসিলা সরোষে), তখন যুদ্ধে অক্ষম (বিকল সমরে) মহান যশস্বী কৰ্ণকে (কর্ণ মহাযশাঃ) বর্বর অর্জুন বধ করেছিল (নাশিল বর্ঝর)।
হে মহারথী, আমাকে বল তো এটা কি মহারথী প্রথা (কহ মোরে, শুনি, মহারথী- প্রথা কি হে এই মহারথি)?
ফাঁদের মাঝে এনে (আনায়-মাঝারে আনি পশুরাজকে কৌশলে বা ছলনা করে বধ করে (মৃগেন্দ্রে কৌশলে বধে) ভীতু শিকারি (ভীরুচিত ব্যাধ); কিন্তু সেই পশুরাজ যখন শত্রুকে বধ করে (মৃগেন্দ্র যবে নাশে রিপু), আক্রমণ করে সে (আক্রমে সে) নিজ পরাক্রমে!
কি না তুমি জান রাজা? কি বলব (কব) ) তোমারে? জেনে শুনে তবে কি ছলনে ভুলে গেলে নিজের গৌরব (আত্মশ্লাঘা), হে মহারথি? হায় রে কি পাপে, রাজ- শিরোমণি রাজা নীলধ্বজ আজ মাথা নিচু করে আছে (নতশির),–হে বিধাতা !— অর্জুনের সামনে (পার্থের সমীপে)?
কোথায় বীরের অহংকার (বীরদর্প) তোমার? মর্যাদার অহংকার (মানদৰ্প) কোথায় গেল? চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের কপালে (ভালে)?
হরিণের চোখের জলে কি আর দাবানল নেভে (কুরঙ্গীর অশ্রুবারি নিবায় কি কভু দাবানলে)? কোকিলের কাকলী-লহরী গর্জনশীল ঝড়কে (উচ্চনাদী প্রভঞ্জনে) কবে শান্ত করেছে (নীরবয়ে কবে)?
দুর্বলের আবেদন কি সবল গ্রাহ্য করে (ভীরুতার সাধনা কি মানে বলবাহু)?
কিন্তু বৃথা এ তিরস্কার (গঞ্জনা)। গুরুজন তুমি; তোমাকে দোষ দিলে ভীষণ পাপে পড়ব (পড়িব বিষম পাপে গঞ্জিলে তোমারে)।
কুলনারী আমি, স্বামী (নাথ), বিধির বিধানে পরাধীনা। সেই শক্তি নেই যে নিজের জোরে (স্ববলে) এ পোড়া মনের ইচ্ছা (বাঞ্ছা) পূরণ করি (মিটাই)। দুরন্ত অর্জুন (ফাল্গুনি), [এই কুন্তীপুত্র যোদ্ধাকে (এ কৌন্তেয়-যোধে) বিধাতা সৃষ্টি করেছিল আমার বিশ্বসুখ নাশ করার জন্য (ধাতা সৃজিলা নাশিতে বিশ্বসুখ!)] নিঃসন্তান করল আমাকে!
তুমি স্বামী, ভাগ্যদোষে তুমি আমার প্রতি বাম! কোন্ সাধে বাঁচি (প্রাণ ধরি) ধরাধামে? হায় রে, এ জনবহুল পৃথিবী (জনাকীর্ণ ভবস্থল) আজ নির্জন (বিজন জনার পক্ষে! এ পোড়া কপালে (ললাটে) বিধাতা যা লিখল, সেটাই হল (ফলিল তা কালে)!—
হায় প্রবীর! এই কারণে (হেতু) কি তোকে দশ মাস দশ দিন নানা যত্ন সহ্য করে এ উদরে ধরেছিলাম? কোন্ জন্মে, কোন্ পাপে পাপী তোর কাছে অভাগিনী, তাই দিলি বাছা, এ যন্ত্রণা (তাপ)? আশার লতা তাই রে ছিঁড়লি? হা পুত্র। এইরূপে কি রে তুই শোধ করলি (শোধিলি) মাতৃঋণ (মাতৃধার)? এই কি রে ছিল তোর মনে?—
কেন রে পোড়া আঁখি বৃথাই ঝরে যাস (বরষিস্) আজ চোখের জল (বারিধারা)? ওরে অবোধ, কে মুছবে তোকে? কেন বা জ্বলিস্ মন? কে জুড়ারে আজ তোকে মিষ্টি কথায় (বাক্য-সুধারসে)? মধ্যম পাণ্ডব অর্জুনের শরে তোর শিরোমণি নিহত হয়েছে (পাণ্ডবের শরে খণ্ড শিরোমণি তোর); গর্তে লুকিয়ে (বিবরে লুকায়ে ), কাঁদি মনের দুঃখে (খেদে), মর্, ওরে মণিহারা সাপ (ফণি)! —
চলে যাও হে মহারাজ (মহাবল), যাও হস্তিনাপুরে (কুরুপুরে) নতুন বন্ধু পার্থকে নিয়ে (নব মিত্র পার্থ সহ)! অভাগা জনা পুত্রের উদ্দেশ্যে মহাপ্রস্থান করবে (মহাযাত্রা করি চলিল অভাগা জনা পুত্রের উদ্দেশে)! ক্ষত্রিয় কুলের মেয়ে (ক্ষত্র – কুলবালা) আমি; ক্ষত্ৰিয় কুলের বউ (ক্ষত্র- কুল বধু); কেমন করে এ অপমান সহ্য করব (সব) ধৈর্য্য ধরি? ছাড়িব এ পোড়া প্রাণ (গঙ্গার) জাহ্নবীর জলে; দেখব যদি যমলোক গিয়ে সব ভুলতে পারি (দেখিব বিস্মৃতি যদি কৃতান্তনগরে লভি অন্তে)!
চাইছি (যাচি) চির বিদায় ও পদে! ফিরে এসে যখন (ফিরি যবে) রাজপুরে প্রবেশ করবে, মহারাজ (নরেশ্বর), যদি ডাক “কোথায় জনা ?” বলে, তোমার কণ্ঠের প্রতিধ্বনি উত্তর দিবে (উত্তরিবে) “কোথা জনা ?” বলে।
• MCQ প্রশ্ন ও উত্তর :
১. “যথাসাধ্য কে যুঝিল”- ‘যুঝিল’ শব্দের অর্থ কী ?
(ক) যুক্তি করল (খ) যত্ন করল
(গ) যুদ্ধ করল (ঘ) যাত্রা করল
উত্তরঃ (গ) যুদ্ধ করল।
২. “পিতা ব্রাহ্মণ”- কার পিতার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) অর্জুন (খ) ব্যাসদেব (গ) পরাশর মুনি
(ঘ) সত্যবতী
উত্তরঃ (খ) ব্যাসদেব।
৩. “নীলধ্বজের প্রতি জনা” কবিতাটির উৎস মহাভারতের কোন পর্বে রয়েছে ?
(ক) শান্তি পর্বে (খ) অশ্বমেধ পর্বে
(গ) উদ্যোগ পর্বে (ঘ) বিরাট পর্বে
উত্তরঃ (খ) অশ্বমেধ পর্বে।
৪. কীসের সাহায্যে ভীষ্মকে বধ করা হয়েছিল ?
(ক) অর্জুন (খ) কৃষ্ণ (গ) ধৃতরাষ্ট্র (ঘ) শিখন্ডী
উত্তরঃ (ঘ) শিখন্ডী।
৫. “শাশুড়ির যোগ্য বধূ” কাকে বলা হয়েছে ?
(ক) কুন্তী (খ) জনা (গ) ইন্দিরা (ঘ) দ্রৌপদী
উত্তরঃ (ঘ) দ্রৌপদী।
৬. কে কখনো দাবানল নেভাতে পারে না ?
(ক) জনার অশ্রু (খ) বৃষ্টি
(গ) কুরঙ্গীর অশ্রুবারি (ঘ) প্রবীরের অশ্রু
উত্তরঃ (গ) কুরঙ্গীর অশ্রুবারি।
৭. ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় কাকে ‘পৌরব-গৌরব’ বলা হয়েছে ?
(ক) পিতামহ ভীষ্মকে (খ) দ্রোনাচার্যকে
(গ) যুধিষ্ঠিরকে (ঘ) অর্জুনকে
উত্তরঃ (ক) পিতামহ ভীষ্ম।
৮. এই কবিতায় মহারথী প্রথা লঙ্ঘন করে কাকে হত্যা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ আছে ?
(ক) অর্জুন (খ) কৰ্ণ (গ) অশ্বত্থামা
(ঘ) পিতামহ ভীষ্ম
উত্তরঃ (খ) কৰ্ণ।
৯. “কি কুছলে নরাধম বধিল তাঁহারে”- কাকে বধ করার কথা বলা হয়েছে ?
(ক) দ্রোনাচার্য (খ) কর্ণ (গ) ভীষ্ম (ঘ) প্রবীর
উত্তরঃ (ক) দ্রোনাচার্য।
১০. খাণ্ডব বন দহন করার সময় কে পার্থকে সাহায্য করেছিল ?
(ক) দ্রোনাচার্য (খ) পিতামহ ভীষ্ম
(গ) অগ্নিদেব (ঘ) কৃষ্ণ
উত্তরঃ (ঘ) কৃষ্ণ।
১১. “লোকমাতা রমা কি হে এ ভ্রষ্টা রমণী ?”- কাকে ‘ভ্রষ্টা রমণী’ বলা হয়েছে ?
(ক) কুন্তী (খ) দ্রৌপদী (গ) জনা (ঘ) ইন্দিরা
উত্তরঃ (খ) দ্রৌপদী।
১২. “ছদ্মবেশে লক্ষ রাজে ছলিল দুর্মতি স্বয়ম্বরে”- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন ?
(ক) বৃহন্নলা (খ) ব্ৰাহ্মণ (গ) ক্ষত্রিয় (ঘ) বণিক
উত্তরঃ (খ) ব্ৰাহ্মণ।
১৩. এই কবিতায় কাকে ‘পাণ্ডুরথী’ বলা হয়েছে ?
(ক) যুধিষ্ঠির (খ) পাণ্ডব (গ) ভীম (ঘ) অর্জুন
উত্তরঃ (ঘ) অর্জুন।
১৪. জনা কোথায় প্রাণ বিসর্জন দিতে চলেছেন ?
(ক) যমুনার জলে (খ) জাহ্নবীর জলে
(গ) সাগরের জলে (ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (খ) জাহ্নবীর জলে।
১৫. এই কবিতায় কাকে ‘কু-কুলের কুলাচার্য’ বলা হয়েছে ?
(ক) শিখন্ডী (খ) ভীষ্ম পিতামহ
(গ) দ্রোনাচার্য (ঘ) ব্যাসদেব
উত্তরঃ (ঘ) ব্যাসদেব।
১৬. নীলধ্বজ কোথাকার রাজা ?
(ক) হস্তিনাপুর (খ) পাঞ্চাল (গ) মাহেশ্বরপুরী
(ঘ) মথুরা
উত্তরঃ (গ) মাহেশ্বরপুরী।
১৭. ব্যাসদেবের মাতা ছিলেন একজন—
(ক) ক্ষত্রিয় কন্যা (খ) ধীবর কন্যা
(গ) ব্রাহ্মণ কন্যা (ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (খ) ধীবর কন্যা।
১৮. জনার পুত্রের নাম কী ?
(ক) প্রবীর (খ) প্ৰতাপ (গ) প্ৰণব
(ঘ) প্রবীণ
উত্তরঃ (ক) প্রবীর।
১৯. এই কবিতায় কাকে ‘ফাল্গুনী’ বলা হয়েছে ?
(ক) কুন্তী (খ) দ্রৌপদী (গ) কৃষ্ণ (ঘ) অর্জুন
উত্তরঃ (ঘ) অর্জুন।
২০. মহাভারতের চরিত্র পাঞ্চলী কোন নামে অধিক পরিচিত ?
(ক) সুভদ্রা (খ) সত্যবতী (গ) দ্রৌপদী (ঘ) কুন্তী
উত্তরঃ (গ) দ্রৌপদী।
২১. “নাশ, মহেম্বাস তারে ” মহেশ্বাস কথাটির অর্থ কি ?
(ক) মহারথী (খ) মহা ধনুর্ধর (গ) মহাবীর
(ঘ) মহাপুরুষ
উত্তরঃ মহা ধনুর্ধর।
২২.”ভুলিবো এ জ্বালা” – এ জ্বালা হল—
(ক) একমাত্র প্রিয় পুত্র প্রবীরের মৃত্যুজনিত জ্বালা
(খ) স্বামী নীলধ্বজের বিমুখ হওয়ার জ্বালা
(গ) অর্জুনের হন্তারক হওয়ার জ্বালা
(ঘ) কর্ণের অসহায় মৃত্যুজনিত জ্বালা
উত্তরঃ একমাত্র প্রিয় পুত্র প্রবীরের মৃত্যু জনিত জ্বালা।
২৩.” বিধাতার এই বিধি জগতে” – বিধি হল—
(ক) উত্থান পতন (খ) দিনরাত (গ) জন্ম মৃত্যু
(ঘ) সুখ-দুঃখ
উত্তরঃ জন্ম মৃত্যু
২৪. “বসেছে পুত্র হা রিপু “-“পুত্র হা ” শব্দের অর্থ হলো—
(ক) পুত্র হন্তারক (খ) পুত্রের পিতা
(গ) পুত্রের শিক্ষক (ঘ) পুত্রের পালনকারী
উত্তরঃ পুত্র হন্তারক
২৫. “কে না জানে তারে শৈরিনী ” – “শৈরিনী” – আখ্যা দেওয়া হয়েছে—
(ক) সত্যবতীকে (খ) কুন্তিকে
(গ) প্রমীলাকে (ঘ) দ্রৌপদীকে
উত্তরঃ কুন্তিকে।
২৬.” কুলটা যে নারী” এখানে ‘কুলটা’ বলা হয়েছে—
(ক) সত্যাবতীকে (খ) কুন্তীকে
(গ) দ্রৌপদীকে (ঘ) মন্দোদরীকে
উত্তরঃ কুন্তিকে।
২৭. “পাণ্ডব কীর্তন গান শতত” কে ?
(ক) শ্রীকৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব
(খ) হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (গ) ভীষ্ম (ঘ) দ্রোণাচার্য
উত্তরঃ শ্রীকৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব
২৮. “ধীবর জননী পিতা ব্রাহ্মণ” – এখানে সন্তান হলেন—
(ক) ব্যসদেব (খ) দ্রোণাচার্য (গ) দ্বৈপায়ন
(ঘ) ভীষ্ম
উত্তরঃ ব্যাসদেব
২৯.”সত্যবতী সুত ” বলা হয়েছে—
(ক) ব্যাসদেবকে (খ) কর্ণকে (গ) ভীষ্মকে
(ঘ) অর্জুনকে
উত্তরঃ ব্যাসদেবকে ।
৩০. “ছদ্মবেশে লক্ষ রাজে ছলিল দূর্মতি”- দুর্মতি হলো—
(ক) নীলধ্বজ (খ) কৃষ্ণ (গ) শিব ঠাকুর
(ঘ) অর্জুন
উত্তরঃ অর্জুন।
৩১.মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধজের প্রতি জনা কবিতা কোন কাব্য গ্রন্থ থেকে গৃহীত ?
(ক) তিলোত্তমা সম্ভব (খ) বীরাঙ্গনা
(গ) মেঘনাদবত কাব্য (ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ বীরাঙ্গনা।
৩২.নীলধজের প্রতি জনা বীরাঙ্গনা কাব্যের কত নং সর্গ—
(ক) ৯ (খ) ১০ (গ) ১১ (ঘ) ১২
উত্তরঃ ১১
৩৩. বীরাঙ্গনা কাব্যে মোট কবিতা রয়েছে—
(ক) ১১ (খ) ১২ (গ) ১৩ (ঘ) ১৪
উত্তরঃ ১১
৩৪. বীরাঙ্গনা কাব্যের প্রকাশকাল হলো—
(ক) ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ (খ) ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দ
(গ) ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দ (ঘ) ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দ
উত্তরঃ ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দ। 
৩৫. “নীলধ্বজের প্রতি জনা ” কবিতায় পাশ্চাত্যের কোন কবির কোন কাব্যের প্রভাব রয়েছে ?
(ক) অভীদের হিরইডস
(খ) লিও তলোয়স্তের ওয়ার এন্ড পিস
(গ) দামতের ডিভাইন লাভ
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ অভীদের হিরইডস 
৩৬. অভীদ কোন দেশের কবি ছিলেন ?
(ক) ফ্রান্স (খ) রোম (গ) জার্মান (ঘ) রাশিয়া
উত্তরঃ রোম।
৩৭. “বাজিছে রণবাদ্য আজি” – রণবাদ্য কোথায় বাজছিল ?
(ক) রাজপ্রাসাদের সামনে সদর রাস্তায়
(খ) রাজপ্রাসাদের অন্দরে
(গ) রাজ তোরণে
(ঘ) রণ ক্ষেত্রে
উত্তরঃ রাজ তোরণে
৩৮. “এইতো সাজে তোমারে খত্রমণি ” তুমি এখানে তুমি হল—
(ক) অর্জুন (খ) নীলধ্বজ (গ) কর্ণ
(ঘ) রাবণ
উত্তরঃ নীলধ্বজ।
• সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্ন :
১.“উড়িছে আকাশে রাজকেতু”— এই রাজপতাকা ওড়ার কারণ কী বলে জনা প্রাথমিকভাবে মনে করেছিলেন ?
উত্তরঃ পত্রটিতে উড়িছে আকাশে রাজকেতু উদ্ধৃতাংশে রাজপতাকা ওড়ার কারণ হিসেবে পুত্রহন্তা পার্থের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি বলে মাহেশ্বরী রাজ্যের রানি জনা প্রাথমিকভাবে মনে করেছিলেন।
২.”এই তাে সাজে তােমারে”- কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রে উদ্ধৃত এই তাে সাজে তোমারে অংশে এ কথা রাজার যুদ্ধ প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
৩.”ভুলিব এ জ্বালা”- রাজমাতা জনা তার জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন কীভাবে ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রটিতে রাজমাতা জনা তার জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের মধ্য দিয়ে।
৪.“জন্মে মৃত্যু;-বিধাতার এ বিধি জগতে।”— কোন্ প্রেক্ষিতে জনা এই মন্তব্য করেছেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় পুত্র প্রবীরের মৃত্যু প্রসঙ্গে জনা এই মন্তব্য করেছেন।
৫.স্বামী নীলধ্বজকে জনা পুত্রের মৃত্যুতে বিলাপ করতে নিষেধ করেছিলেন কেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় স্বামী নীলধ্বজকে জনা পুত্রের মৃত্যুতে বিলাপ করতে নিষেধ করেছিলেন কারণ বিলাপের থেকে প্রতিশােধের স্পৃহা প্রয়ােজনীয় ছিল।
৬.জনা রাজা নীলধ্বজকে কীভাবে ক্ষত্রিয় ধর্ম রক্ষা করতে বলেছিলেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রটিতে জনা রাজা নীলধ্বজকে আপন শক্তিতে পুত্রহন্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দ্বারা ক্ষত্রিয় ধর্ম রক্ষা করতে বলেছিলেন।
৭.“হায়, পাগলিনী জনা!”- জনাকে পাগলিনি বলেছেন কে ?
উত্তরঃ জনা নিজেকেই পাগলিনি বলেছেন। কারণ তার যুক্তি নীলধ্বজের কানে পৌঁছােচ্ছে না। একদিকে পুত্র প্রবীরের মৃত্যু অন্যদিকে স্বামীর আচরণ তাকে পাগলিনিতে পরিণত করেছে।
৮.“দুঃখের কথা, হায়, কব কারে ?”-
জনার কাছে এই দুঃখের কথা কী ছিল ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রে জনার কাছে এই দুঃখের কথা হল পুত্রহন্তা পার্থের সঙ্গে স্বামী নীলধ্বজের সখ্য।
৯.জনা পার্থকে পাণ্ডুরথী বলেছেন কেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় জনা পার্থকে পাণ্ডুরথী বলেছেন কারণ পার্থ ছিলেন পাণ্ডববংশীয় একজন রথীশ্রেষ্ঠ।
১০.নীলধ্বজ তীক্ষ্ণতম তিরে শত্রুর বক্ষ বিদীর্ণ না করে কী করেছেন বলে জনা অভিযােগ জানিয়েছেন ?
উত্তরঃ তীক্ষ্ণতম তিরে শত্রুর বক্ষ বিদীর্ণ না করে নীলধ্বজ অর্জুনকে তাঁর সভায় মিষ্ট কথায় সন্তুষ্ট করছেন বলে জনা অভিযােগ করেছেন।
১১.”কি কহিবে, কহ, / যবে দেশ-দেশান্তরে জনরব লবে / এ কাহিনী”—এখানে কোন্ কাহিনির কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ এখানে পুত্ৰহন্তা পার্থের সঙ্গে স্বামী নীলধ্বজের সখ্যের কাহিনির কথা বলা হয়েছে।
১২.“এ কি ভ্রান্তি তব ?”- জনা কোন ঘটনাকে রাজা নীলধ্বজের ভ্রান্তি বলে বর্ণনা করেছেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনা পার্থকে নরনারায়ণ জ্ঞানে পুজো করার ঘটনাকে রাজা নীলধ্বজের ভ্রান্তি বলে বর্ণনা করেছেন।
১৩.পার্থকে রাজা নীলধ্বজের নরনারায়ণ-জ্ঞানে পুজো করাকে জনা কীভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় পার্থকে নীলধ্বজের নরনারায়ণ জ্ঞানে পুজো করাকে জনা বিধির লীলাখেলা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
১৪.“আছিলা মান,— তাও কি নাশিলি ?” এই কথার মাধ্যমে জনা কী বলতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় এই কথার মাধ্যমে জনা সন্তান হারানাের সঙ্গে সঙ্গে মাতৃত্বের গৌরবও হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
১৫.“শাশুড়ীর যােগ্য বধূ।”- এই বধূ কে ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় এই বধূ হলেন দ্রৌপদী।
১৬.”জানি আমি কহে লােক রথীকুল-পতি / পার্থ!”— এই মতকে জনা কী মনে করেছিলেন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্র-কবিতায় এই মতকে জনা মিথ্যা ধারণা বলে মনে করেছিলেন।
১৭.“ছদ্মবেশে লক্ষ রাজে ছলিল দুর্মতি …”—উল্লিখিত ব্যক্তি এই ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন কেন ?
উত্তরঃ উল্লিখিত ব্যক্তি অর্থাৎ তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন এই ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন স্বয়ংবর সভায় সাফল্যের জন্য।
১৮.“রাজদলে তেঁই সে জিতিল”— এই রাজারা সমবেত হয়েছিল কোন সভায় ?
উত্তরঃ “রাজদলে তেঁই সে জিতিল”— এই রাজারা সমবেত হয়েছিল পাঞ্চালীর স্বয়ংবর সভায়।
১৯.“দহিল খাণ্ডব দুষ্ট কৃষ্ণের সহায়ে”— কে কেন খাণ্ডব দাহন করেন ?
উত্তরঃ কৃষ্ণকে সঙ্গে নিয়ে অর্জুন খাণ্ডব বন দাহন করেছিলেন অসুখ সারানাের জন্য, অগ্নিকে সাহায্য করার জন্যে।
২০.”…রাজা নীলধ্বজ আজি / নতশির” — নীলধ্বজের এই অবস্থার কারণ কী ?
উত্তরঃ নীলধ্বজের এই অবস্থার কারণ পুত্র প্রবীরের মৃত্যু।
২১.“ভীরুতার সাধনা কি মানে বলবাহু”— জনা ভীরুতার সাধনা বলতে কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তরঃ জনা ভীরুতার সাধনা বলতে অর্জুনের মতাে কুশলী, সুযােগসন্ধানী অথচ বীরধর্মহীনের সঙ্গে সখ্যকে বুঝিয়েছেন।
২২.”কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা”- এ কথার মাধ্যমে কী প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ “কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা”— এ কথার মধ্যে মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকবিতায় রাজমহিষী জনার অসহায়তা প্রকাশ পেয়েছে।
২৩.”বিধির বিধানে / পরাধীনা”- জনার এই উক্তির মাধ্যমে কী প্রকাশ পেয়েছে ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতায় জনার প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তির মধ্যে দিয়ে নারী হিসেবে জনার অসহায়তা প্রকাশ পেয়েছে।
২৪.জনা তাঁর প্রাণ রক্ষা করতে চাননি, এর কারণ কী ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় জনা তার প্রাণ রক্ষা করতে চাননি, তার কারণ হল প্রতিশােধ গ্রহণের পরিবর্তে পুত্রহন্তার সঙ্গে স্বামীর সখ্য।
২৫.“আশার লতা তাই রে ছিঁড়িলি ?” —এই আশার লতা কে ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় ব্যবহৃত এই আশার লতা হল পুত্র প্রবীরের প্রতি রাজমাতা জনার পুত্রস্নেহ।
২৬.জনার নীলধ্বজের প্রতি অভিযােগের কারণ কী ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকবিতায় জনার অভিযােগের কারণ হল পুত্রহন্তাকে তাঁর স্বামী নর- নারায়ণ জ্ঞানে আরাধনা করছেন।
২৭.প্রবীরের সঙ্গে পার্থের যুদ্ধকে জনা অন্যায় সমর কেন বলেছেন ?
উত্তরঃ বালক প্রবীর পাণ্ডবদের অশ্বমেধের ঘােড়া ধরার জন্য একজন বিজ্ঞ, প্রাপ্তবয়স্ক ধনুর্ধর অর্জুন তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন, তাই একে অন্যায় সমর বলেছেন জনা।
২৮.জনা তার শােকাগ্নি কীসের দ্বারা নেভাতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় পুত্রহারা জনা তাঁর শােকাগ্নি ফাল্গুনীর লােহে বা অর্জুনের রক্তে নেভাতে চেয়েছেন।
২৯.জগতে বিধাতার কোন্ বিধি প্রচলিত ?
উত্তরঃ নীলধ্বজের কর্মকাণ্ড দেখে প্রবীরের মৃত্যু প্রসঙ্গে জনা মন্তব্য করেছেন—জন্মালে তাঁর মৃত্যু হবেই, বিধাতার এই বিধি জগতে প্রচলিত।
৩০.জনা পাগলিনি হয়েছেন কেন ?
উত্তরঃ জনা পাগলিনি হয়েছেন কারণ তিনি দেখছেন তার স্বামী পুত্রশােক ভুলে সভায় নর্তকীর নাচ-গানে পার্থের মনােরঞ্জন করছেন।
৩১.নীলধ্বজ কার করস্পর্শ করেছেন ?
উত্তরঃ পিতা হয়ে নীলধ্বজ প্রবীরের রক্তে রঞ্জিত পার্থের করস্পর্শ করেছেন।
৩২. কার,কেন জ্ঞান হরণ করেছেন বলে জনার মনে হয়েছে ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় নীলধ্বজের আচরণ দেখে জনার ধারণা পার্থ নীলধ্বজের জ্ঞান হরণ করেছেন।
৩৩.অর্জুন কার পুত্র ?
উত্তরঃ মহাভারতের কাহিনি অনুযায়ী অর্জুন ভােজবালা কুন্তীর পুত্র, ইন্দ্রের ঔরসে তার জন্ম।
৩৪.বিধাতার কোন লীলাখেলার কথা জনা এখানে বলেছেন ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় একমাত্র পুত্রকে অর্জুনের অকালে কেড়ে নেওয়া এবং তার মান-সম্মান ম্লান করাকে জনা এখানে বিধাতার লীলাখেলা বলেছেন।
৩৫.কে পাণ্ডব-কীর্তন গান গায় ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকবিতায় জনা পুত্রঘাতীঅর্জুনের চরিত্রের বিভিন্ন দোষ ব্যক্ত করে সেই চরিত্রের স্রষ্টা দ্বৈপায়ন ঋষি বা বেদব্যাস সম্পর্কে বলেছেন। যে, তিনি পাণ্ডব-কীর্তন গান করে থাকেন সবসময়।
৩৬.কীসের ছদ্মবেশে পার্থ স্বয়ংবরে ছলনা করেছিলেন ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় ব্রাম্ভনপুত্রের ছদ্মবেশে পার্থ দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় ছলনা করেছিলেন।
৩৭.”মিথ্যা কথা, নাথ!”—কোন কথাকে মিথ্যা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ সকলে অর্জুনকে যে ‘রথিকুল-পতি’ অর্থাৎ বীরশ্রেষ্ঠ বলে জানে, তাকেই জনা মিথ্যা কথা বলেছেন।
৩৮.অর্জুনের অস্ত্রগুরু কে ছিলেন ?
উত্তরঃ মহাভারতের কাহিনি অনুযায়ী অর্জুনের অস্ত্রগুরু ছিলেন দ্রোণাচার্য।
৩৯.বসুন্ধরা কার রথের চাকা গ্রাস করেছিল ?
উত্তরঃ মহাভারতের কাহিনি অনুযায়ী কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বসুন্ধরা কর্ণের রথের চাকা গ্রাস করেছিল।
৪০.”যাও চলি, মহাবল,”—কাকে কোথায় কীভাবে জনা চলে যেতে বলেছেন ?
উত্তরঃ জনা রাজা নীলধ্বজকে তার নতুন বন্ধু পার্থকে নিয়ে কৌরবপুরীতে চলে যেতে বলেছেন।
৪১.মহাযাত্রা করে জনা কোথায় চলেছে ?
উত্তরঃ মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় পুত্রঘাতী অর্জুনের সঙ্গে নীলধ্বজের বন্ধুসুলভ ব্যবহার দেখে জনা আক্ষেপ করে বলেছেন যে, তিনি মহাযাত্রা করে জাহ্নবীর জলে প্রাণ বিসর্জন দিতে চলেছেন।
৪২.প্রবীর কোথাকার যুবরাজ ছিলেন ?
উত্তরঃ প্রবীর ছিলেন মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ।
৪৩.জনা রাজা নীলধ্বজকে পত্র লিখেছিলেন কেন ?
উত্তরঃ সম্মুখসমরে অবতীর্ণ না হয়ে রাজা নীলধ্বজ পুত্রহন্তা পার্থের সঙ্গে সন্ধি করায়, ক্ষোভে জনা পত্র লিখেছিলেন।
৪৪.মাহেশ্বরী পুরীতে কখন হ্রেষাধ্বনি শােনা গিয়েছিল ?
উত্তরঃ যখন রাজতােরণে রণবাদ্য বেজে উঠেছিল তখন হ্রেষাধ্বনি শােনা গিয়েছিল।
৪৫.নীলধ্বজ যুদ্ধসাজ করছেন কেন বলে জনা কল্পনা করেছেন ?
উত্তরঃ পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের জন্য নীলধ্বজ যুদ্ধসাজ করেছেন বলে জনা কল্পনা করেছেন।
৪৬.”এই তাে সাজে তোমার”- কিসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিতে নীলধ্বজের যুদ্ধসাজের কথা বলা হয়েছে।
৪৭.জনা নীলধ্বজকে কীভাবে যুদ্ধযাত্রা করতে বলেছেন?
উত্তরঃ যেভাবে গজরাজ তার যমদণ্ডের মতো শুঁড় আস্ফালন ও ভীষণ আওয়াজ করে, সেই বিক্রম নিয়ে জনা নীলধ্বজকে যুদ্ধযাত্রা করতে বলেছেন।
৪৮.নীলধ্বজকে জনা কী করার জন্য আবেদন করেছেন ?
উত্তরঃ নীলধ্বজকে জনা ক্ষত্রিয়ধর্ম এবং ক্ষত্রিয়কর্ম পালন করার জন্য আবেদন করেছেন।
৪৯.“তব সিংহাসনে বসিছে পুত্ৰহা রিপু”— এই ‘রিপু’ বা শত্রু কে ?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিতে এই ‘রিপু’ বা শত্রু হলেন তৃতীয় পাণ্ডব পার্থ।
৫০.“সেবিছ যতনে তুমি অতিথি রতনে”— এই অতিথি রত্নটি কে ?
উত্তরঃ অতিথি-রত্নটি হলেন তৃতীয় পাণ্ডব পার্থ।
৫১.“হরিলা কি তিনি / জ্ঞান তব ?”— কে, কার জ্ঞান হরণ করেছেন ?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিতে নিয়তির দ্বারা রাজা নীলধ্বজের জ্ঞান হরণের কথা বলা হয়েছে।
৫২.”ক্ষত্রিয়ধর্ম্ম এই কি, নৃমণি ?”- কাকে ক্ষত্রিয়ধর্ম বলা হয়নি ?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিতে পুত্রহন্তার সঙ্গে বন্ধুত্বকে ক্ষত্রিয়ধর্ম বলা হয়নি।
৫২.জনা কাকে স্বৈরিণী বলে উল্লেখ করেছেন ?
উত্তরঃ জনা কুন্তীকে স্বৈরিণী বলে উল্লেখ করেছেন।
৫৪.ব্যাস কার পুত্র ছিলেন ?
উত্তরঃ ব্যাস সত্যবতীর পুত্র ছিলেন।
৫৫.পার্থ ছদ্মবেশে রাজাদের কোথায় ছলনা করেছিলেন ?
উত্তরঃ পার্থ দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় রাজাদের ছলনা করেছিলেন।
৫৬.কৃষ্ণের সাহায্যে অর্জুন কী দগ্ধ করেছিলেন ?
উত্তরঃ কৃষ্ণের সাহায্যে অর্জুন খাণ্ডব বন দগ্ধ করেছিলেন।
৫৭.কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কাকে বধ করতে অর্জুন শিখণ্ডীকে ব্যবহার করেন ?
উত্তরঃ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পিতামহ ভীষ্মকে বধ করতে অর্জুন শিখণ্ডীকে ব্যবহার করেন।
৫৮.“চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের ভালে ?”— কাকে ‘চণ্ডাল’ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ উক্তিটিতে চণ্ডাল বলতে পার্থকে বােঝানাে হয়েছে।
৫৯.জনা কাকে গুরুজন বলেছেন ?
উত্তরঃ স্বামী নীলধ্বজকে জনা গুরুজন বলেছেন।
৬০.জনা নিজেকে ‘বিধির বিধানে পরাধীনা’ বলেছেন কেন ?
উত্তরঃ কুলনারী হিসেবে আপন চিন্তা-ভাবনাকে কাজে পরিণত করতে অপারগ জনা নিজেকে ‘বিধির বিধানে পরাধীনা’ বলেছেন।
৬১.স্বামী নীলধ্বজ কী কারণে তার প্রতি বিরূপ বলে জনা মনে করেছেন ?
উত্তরঃ ভাগ্যদোষে নীলধ্বজের এই বিরূপতা বলে জনা মনে করেছেন।
৬২.কেন জনা অপমান সহ্য করতে অপারগ হয়েছিলেন ?
উত্তরঃ ক্ষত্রিয় বংশের স্ত্রী এবং কন্যা হওয়ায় জনা অপমান সহ্য করতে অপারগ হয়েছিলেন।
৬৩.“নরেশ্বর, ‘কোথা জনা’ বলি ডাক যদি”- এই নরেশ্বর কে ?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিতে রাজা নীলধ্বজকে ‘নরেশ্বর’ বলা হয়েছে।
৬৪.’নীলধ্বজের প্রতি জনা’ বীরাঙ্গনা কাব্যের কত সংখ্যক পত্র ?
উত্তরঃ ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ বীরঙ্গনা কাব্যের একাদশ সংখ্যক পত্র।
৬৫.অর্জুনের ছিন্নমুণ্ড রানি কীভাবে আনার কথা বলেছিলেন ?
উত্তরঃ অর্জুনের ছিন্নমুণ্ড রানি জনা রাজা নীলধ্বজকে শূলদণ্ডের আগায় বিদ্ধ করে নিয়ে আসতে বলেছিলেন।
৬৬.”ছাড়িব এ পােড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে।”- বক্তা কেন এ কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ পুত্রহন্তা অর্জুনের সঙ্গে স্বামী রাজা নীলধ্বজ সখ্য করায় রাজবংশের এবং ক্ষত্রিয়ধর্মের যে অপমান হয়েছে তা সহ্য করতে না পেরেই জনা এ কথা বলেছেন।
৬৭.”পৌরব সরসে নলিনী”—কাকে কেন বলা হয়েছে?
উত্তরঃ দ্রৌপদী পঞ্চপাণ্ডবের স্বামী হওয়ার জন্যই তাকে ‘পৌরব সরসে নলিনী’ বলা হয়েছে।
৬৮.“নিঃসন্তানা করিলা আমারে”—কে কাকে নিঃসন্তানা করেছিল ?
উত্তরঃ তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন (‘দুরন্ত ফাল্গুনী’) প্রবীরকে হত্যা করে মাহেশ্বরী পুরীর রানি জনাকে নিঃসন্তানা করেছিল।
৬৯.”মহারথী-প্রথা কি হে এই, মহারথি ?”— কার কোন্ কাজ মহারথী প্রথার বিরােধী ?
উত্তরঃ ব্রহ্মশাপে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে বসে গেলে তার সুযােগ নিয়ে যেভাবে অর্জুন কর্ণকে বধ করেছে তাই জনার মতে মহারথী-প্রথা বিরােধী।
৭০.“চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের ভালে”— এই উপমা ব্যবহারের কারণ কী ?
উত্তরঃ অর্জুনের মতাে নীচ সুযােগসন্ধানী চরিত্রকে যেভাবে রাজা নীলধ্বজ সখা হিসেবে গ্রহণ করেছেন সে প্রসঙ্গেই এই উপমার ব্যবহার হয়েছে।
৭১.“কুরঙ্গীর অশ্রুবারি নিবায় কি কভু”— কথাটি কেন বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ পুত্রহারা বীর নীলধ্বজ কীভাবে পুত্রহন্তা অর্জুনের সঙ্গে প্রতিশােধগ্রহণের বদলে সখ্য স্থাপন করলেন তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেই কথাটি বলা হয়েছে।
৭২.“এ পাষণ্ড পাণ্ডরথী পার্থ তব পুরে”— পার্থকে ‘পাষণ্ড পাণ্ডুরথী’ বলা হয়েছে কেন ?
উত্তরঃ অসম লড়াই-এ যেভাবে অর্জুন বালক প্রবীরকে হত্যা করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতেই জনা পার্থকে ‘পাষণ্ড পাণ্ডুরথী’ বলেছেন।
৭৩.”ক্ষত্রকুলবালা আমি; ক্ষত্র কুলবধূ”—এই মন্তব্যের কারণ কী ?
উত্তরঃ নীলধ্বজের পুত্রহন্তারক অর্জুনের সঙ্গে সখ্য স্থাপনে ক্ষত্রিয় বংশের যে অপমান হয়েছে তা জনার কাছে অসহনীয় মনে হওয়ায় সে মন্তব্যটি করেছে।
৭৪.”..পূজিছ পার্থে, রাজা ভক্তিভাবে; এ কি / ভ্রান্তি তব ?”- জনা কেন ভ্রান্তি শব্দটি প্রয়ােগ করেছেন ?
উত্তরঃ পুত্র প্রবীরের হত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে রাজা নীলধ্বজ প্রতিশােধগ্রহণের বদলে সখ্য করবেন এটা এতটাই অপ্রত্যাশিত যে, ঘটনাকে রাজার ভ্রান্তি বলা হয়েছে।
৭৫.“চলিল অভাগী জনা পুত্রের উদ্দেশে।”— এই যাত্রা কীভাবে সম্ভব হচ্ছিল ?
উত্তরঃ জাহ্নবীর জলে আত্মবিসর্জনের মধ্য দিয়ে জনা পুত্রের উদ্দেশে যাত্রা করতে চেয়েছিল।
৭৬.”হরি পুত্রধন”- কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ অর্জুনের দ্বারা প্রবীরবধ আসলে নিয়তিরই পরিহাস—এ কথা বলতে গিয়েই মন্তব্যটি করা হয়েছে।
৭৭.“কে না জানে তারে, / স্বৈরিনী ?”— কাকে কেন স্বৈরিনী বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ দুর্বাসার বরকে কাজে লাগিয়ে কুন্তী যেভাবে একাধিক দেবতার সঙ্গলাভ করেছিল সেই কারণে তাকে স্বৈরিনী বলা হয়েছে।
৭৮.”অন্যায় সমরে মূঢ় নাশিল বালিকা”- বালকের পরিচয় দাও।
উত্তরঃ বালকটি হল মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীর, অর্জুনের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘােড়া ধরার জন্য যাকে নিহত হতে হয়।
৭৯.”কেমনে এ অপমান সব ধৈর্য্য ধরি”- কোন্ অপমান ?
উত্তরঃ পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে রাজা নীলধ্বজের সখ্যের ফলে যে অপমান ঘটেছে তার কথাই বলা হয়েছে।
৮০.”নাহি শক্তি মিটাই স্ববলে / এ পােড়া মনের বাঞ্ছা।”- কেন বক্তা এ কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ নারী হওয়ায় ‘বিধির বিধানে পরাধীন’ জনার পক্ষে অর্জুনকে হত্যার উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব নয় বলেই জনা মন্তব্যটি করেছেন।
৮১.“ফিরি যবে রাজপুরে প্রবেশিবে আসি..”— তখন কী ঘটবে ?
উত্তরঃ নীলধ্বজ রাজপুরে ফিরে ‘জনা’র নাম ধরে ডাকলে শূন্য পুরীতে শুধু প্রতিধ্বনিই হবে, উত্তর আসবে না।

This Post Has One Comment

Leave a Reply