পল্লীসমাজ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Pollisomaj Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য মেলা
অষ্টম শ্রেণি বাংলা

পল্লীসমাজ (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Pollisomaj Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

অষ্টম শ্রেণির বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর | Darao Kobitar Question Answer Class 6 Bengali wbbse

অষ্টম শ্রেণির বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের উৎস, গল্পের পূর্ব সূত্র, গল্পের প্রধান চরিত্র গুলির পরিচয়, বিষয়সংক্ষেপ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | Pollisomaj Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

1. অষ্টম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

2. অষ্টম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here

অষ্টম শ্রেণির বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের উৎস, গল্পের পূর্ব সূত্র, গল্পের প্রধান চরিত্র গুলির পরিচয়, বিষয়সংক্ষেপ, শব্দার্থ ও টীকা, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর | Pollisomaj Golper Question Answer Class 8 Bengali wbbse

পল্লীসমাজ
—শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

উৎসঃ পাঠ্যাংশটি শরৎচন্দ্রের ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে রেঙ্গুনে থাকাকালীন তিনি এই উপন্যাসটি লেখেন। ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসটি ১৩২২ বঙ্গাব্দে (ইংরেজি– ১৯১৬ সাল) ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকার আশ্বিন, অগ্রহায়ণ, পৌষ সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ‘আশ্বিন’ সংখ্যায় প্রথম দুটি পরিচ্ছেদ ও ‘অগ্রহায়ণ’ সংখ্যায় তৃতীয় থেকে নবম পরিচ্ছেদ পর্যন্ত ছাপানো হয়।

গল্পের পূর্ব সূত্রঃ দুইটি জমিদার পরিবারের পারিবারিক কলহের জের ধরে উপন্যাসের যাত্রা শুরু হয়। দুই জমিদার পরিবারের একটি পরিবার বলরাম মুখু্য্যের ছেলে যদু মুখুয্যের মেয়ে রমা। অন্য পরিবারটি হলো বলরাম মুখুয্যের মিতা বলরাম ঘোষাল পরিবারের রমেশ এবং বেণী মাধব ঘোষাল। বলরাম মুখু্য্যে অনেক বুদ্ধিমান ছিলেন এবং বর্ধমান রাজ সরকারের চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তিনি বর্ধমান সরকারের কাছে কুঁয়াপুরের জমিদারী লিখে নেন এবং বলরাম মুখুয্যে তার মিতা (বন্ধু) বলরাম ঘোষালকে নিয়ে বিক্রমপুর থেকে কুঁয়াপুর নামে একটি গ্রামে আসেন। বলরাম ঘোষালের বিয়েকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে মনোমালিন্য হয় এবং শেষ পর্যন্ত দুই বন্ধুর বন্ধুত্ব এমন রূপ নেয় যে বছর বিশেক তাদের পরস্পরের মুখদর্শন বন্ধ থাকে। কিন্তু বলরাম মুখুয্যের মৃত্যুর পর দেখা যায়, নিজের সমস্ত সম্পত্তি নিজের সন্তান যদু মুখু্য্যে ও বন্ধু বলরাম ঘোষালের দুই সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেন। সেই থেকে এই দুই পরিবার সেই সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছে।

গল্পের প্রধান চরিত্র গুলির পরিচয়—

বলরাম মুখুয্যে ও বলরাম ঘোষাল দুই বন্ধু।

গ্রাম— কুঁয়াপুর।

রমা— বলরাম মুখুজ্জের ছেলে যদু মুখুজ্জের মেয়ে।

বেণীমাধব— বলরাম ঘোষালের বড়ো ছেলের পুত্র হলেন বেনীমাধব। সেই সূত্রে রমেশ ও বেনীমাধব কাকাতো দুই ভাই।

রমেশ— বলরাম ঘোষালের দুই ছেলে। ছোট ছেলে তারিণী ঘোষালের পুত্র হলেন রমেশ।

বিষয়সংক্ষেপঃ দু-দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে একশো বিঘের মাঠ ডুবে গিয়েছে। কৃষকদের সব ধান নষ্ট হওয়ার জোগাড়। জমিদার বেণী মাধবের কাছে গিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় তারা রমেশের কাছে, জল কেটে বার করে দেওয়ার কথা বলে। গোপাল সরকারের সাহায্য নিয়ে পুরো বিষয়টা বুঝে রমেশ জমিদার বেণী ঘোষালের কাছে গিয়ে বাঁধ কেটে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু বাঁধ কাটলে দু-তিনশো টাকার ক্ষতি হবে—এই যুক্তি দেখিয়ে জমিদার বেণী ঘোষাল রমেশের কথায় রাজি হল না। তাই রমেশ জমিদারির আর-এক অংশীদার রমার কাছে গেলেন সমস্ত ঘটনা বলে। কিন্তু রমার কাছেও একই উত্তর পেয়ে তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। রমেশ নিজেই বাঁধ কেটে দেবে বলে রমাকে জানিয়ে দেয়।

এদিকে রমা আকবর নামে এক লেঠেলকে বাঁধ পাহারা দিতে পাঠায়। সেই রাতেই বাঁধ পাহারা দিতে যাওয়া আকবর আর তার ছেলেদের আক্রমণ প্রতিহত করে গ্রামের চাষিদের নিয়ে রমেশ জোর করে বাঁধ কেটে দেন। আহত আকবরকে দিয়ে জমিদার বেণী ঘোষাল থানায় অভিযোগ দায়ের করানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। রমাও থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিলে আকবর মাথা নাড়িয়ে বলে, “না দিদিঠাকরান আর সব পারি সদরে গিয়ে গায়ের চোট দেখাতে পারি না।” আকবর আর তার ছেলেরা নিজের গ্রামে ফিরে গেলে রমা অনেক কথা ভাবতে ভাবতে তাঁর চোখ জলে ভরে যায়।

শব্দার্থ ও টীকা

১. অবিশ্রান্ত— অবিরত, না থেমে, টানা
২. চণ্ডীমণ্ডীপে— ঠাকুরদালানে
৩. বাঁধ— জল আটকানোর জন্য নির্মিত মাটির দেয়াল
৪. হত্যা দিয়া— কিছু পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা
৫. দ্রুত পদে— তাড়াতাড়ি হেঁটে যাওয়া
৬. হুঁকা— তামাক খাওয়ার যন্ত্র
৭. মড়াকান্না— মিথ্যা কান্না
৮. অপরাহ্ণবেলা— বিকেল বেলা
৯. অকস্মাৎ— হঠাৎ
১০. প্ৰবৃত্তি— ইচ্ছা
১১. প্রস্থান— চলে যাওয়া
১২. ক্রুদ্ধভাবে— রাগের সঙ্গে
১৩. হেজে— ভিজে
১৪. নাগরাজুতো— একপ্রকার শৌখিন জুতো
১৫. তথাপি— তবুও
১৬. বিনীত— বিনয়ের সঙ্গে
১৭. সংবরণ— নিয়ন্ত্রণ
১৮. লোকসান— ক্ষতি
১৯. সদর— বাড়ির বাইরের অংশ
২০. কোপালে— কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়লে
২১. বন্ধক— কোনো কিছু জমা রেখে টাকা দেওয়া
২২. উচ্ছিষ্ট— বাতিল বা পড়ে থাকা
২৩. ধার-কর্জ— ধার দেনা
২৪. অপমানকর— অপমান করে যা
২৫. নিরুত্তর— উত্তর না দেওয়া।
২৬. প্রাঙ্গণে— উঠোনে
২৭. সন্ধ্যাপ্রদীপ— সন্ধে বেলায় প্রদীপ জ্বালানো
২৮. সুমুখে— সামনে
২৯. আঁচল— শাড়ির বা বস্ত্রের শেষ অংশ
৩০. উৎকণ্ঠা— উদ্‌বেগ
৩১. তুলসীমূলে— তুলসীতলায়
৩২. নিষেধবাক্য— বারণ করা হয়েছে এমন কথা
৩৩. তদাবস্থায়— সেই অবস্থায়
৩৪. মৃদুকণ্ঠে— নীচু গলায়
৩৫. প্রত্যাখ্যান— ফিরিয়ে দেওয়া
৩৬. অভিভাবক— দেখাশোনা করে যে, তত্ত্বাবধায়ক
৩৭. বিহ্বল— হতভম্ব
৩৮. বিবাদ— ঝগড়া
৩৯. সাঙ্গ— সমাপ্ত, শেষ
৪০. তৎক্ষণাৎ— সঙ্গে সঙ্গে
৪১. বাবিতণ্ডা— তর্কাতর্কি, কথা কাটাকাটি
৪২. বন্দোবস্ত— ব্যবস্থা
৪৩. হতবুদ্ধি— বুদ্ধিহীন
৪৪. মিনতি— অনুরোধ
৪৫. যথার্থ— সঠিক
৪৬. অগোচর— অজানা
৪৭. পান্ডুর— হলুদ
৪৮. মনস্তত্ত্ব— মনের প্রকৃতি
৪৯. অভিরুচি— ইচ্ছা
৫০. ত্রয়োদশী— পূর্ণিমা বা অমাবস্যার পরে ৫১. তেরোতম দিন
৫২. অস্বচ্ছ— অপরিষ্কার
৫৩. জ্যোৎস্না— চাঁদের আলো
৫৪. প্রৌঢ়— বয়স্ক
৫৫. ভীষণাকৃতি— ভয়ংকর দেখতে
৫৬. ওষ্ঠপ্রান্তে— ঠোঁটের ওপর
৫৭. অনুনয়— অনুরোধ
৫৮. ঈষৎ— সামান্য
৫৯. জড়সড়— আড়ষ্ট, সংকুচিত
৬০. সাবেক দিনের— পুরোনো দিনের
৬১. অনতিদূরে— বেশি দূরে নয়
৬২. হস্তগত— হাতের মুঠোয়
৬৩. হটাতে নারলাম— হঠাতে পারলাম না
৬৪. তেনার— তাঁর
৬৫. বরবাদ— নষ্ট
৬৬. আল্লার কিরে— আল্লার নামে দিব্যি
৬৭. ওয়ারেন্ট— গ্রেফতারি পরোয়ানা
৬৮. সমঝে— বুঝে
৬৯. মুই— আমি
৭০. হাজতে— জেলে
৭১. উপক্রম— সম্ভাবনা
৭২. নিরুদ্যম— উদ্যম বা উৎসাহহীন
৭৩. অশ্রুপ্লাবিত— চোখের জলে ভেসে যাওয়া
৭৪. পাষাণ— পাথর
৭৫. নিরন্তর— অনবরত
৭৬. কালামুয়ে— কালামুখে
৭৭. ফৈরিদি (ফরিয়াদ) — অভিযোগকারী
৭৮. অকথ্য— যা বলার যোগ্য নয়
৭৯. ভর্ৎসনা— নিন্দা
৮০. হেতু— কারণ
৮১. সুকুমার— সুন্দর, অল্প বয়স্ক

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর পল্লীসমাজ অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Extra Question Answer Class 8 Bengali wbbse

• সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখ :

১. পল্লীসমাজ গদ্যাংশটির লেখক হলেন—
(ক) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(গ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(ঘ) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তরঃ (গ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

২. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা একটি উপন্যাস হলো—
(ক) পথের দাবী (খ) গোরা (গ) বিষবৃক্ষ
(ঘ) পঞ্চগ্রাম

উত্তরঃ (ক) পথের দাবী।

৩. পল্লীসমাজ গদ্যাংশটি যে উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে—
(ক) শ্রীকান্ত (খ) বড় দিদি (গ) গৃহদাহ
(ঘ) পল্লীসমাজ

উত্তরঃ (ঘ) পল্লীসমাজ।

৪. কুঁয়াপুর গ্রামের _________ বিঘার মাঠটাই একমাত্র ভরসা।
(ক) একশো (খ) দুশো (গ) তিনশ (ঘ) চারশ

উত্তরঃ (ক) একশো।

৫. গ্রামের দক্ষিণ ধারের বাঁধটি কাদের দখলে ছিল ?
(ক) সরকারের
(খ) ঘোষাল ও মুখুজ্জেদের
(গ) বসুদের
(ঘ) সেনদের

উত্তরঃ (খ) ঘোষাল ও মুখুজ্জেদের।

৬. ‘প্রাঙ্গণে তুলসী মূলে সন্ধ্যা প্রদীপ দিয়া..’— সন্ধ্যা প্রদীপ কে দিচ্ছিল ?
(ক) মাসি (খ) রমা (গ) দাসী (ঘ) বেণী

উত্তরঃ (খ) রমা।

৭. রমেশ ও রমার কতদিন পর দেখা হয়েছিল ?
(ক) এক বছর (খ) এক সপ্তাহ
(গ) মাসখানেক (ঘ) ছ মাস

উত্তরঃ (গ) মাসখানেক।

৮. রমা’র ভাইয়ের নাম কী ?
(ক) যতীন (খ) মহিম (গ) নবীন (ঘ) পরান

উত্তরঃ (ক) যতীন।

৯. “বাড়ি ফিরে সারারাত্রি ঘুম হল না।”–কার ঘুম হল না ?
(ক) বেণীর (খ) হালদারমশাইয়ের
(গ) রমেশের (ঘ) রমার

উত্তরঃ (গ) রমেশের।

১০. আকবরের বাড়ি ছিল—
(ক) রায়পুরে (খ) পিরপুরে (গ) রায়গঞ্জে
(ঘ) উদয়পুরে

উত্তরঃ (খ) পিরপুরে।

১১. ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসে আকবরের ছেলের নাম—
(ক) গবর (খ) গহর (গ) গফুর (ঘ) গফ্ফর

উত্তরঃ (খ) গহর।

১২. বাঁধের গায়ের জলা থেকে বৎসরে মাছ বিক্রি হয়—
(ক) তিনশো টাকার (খ) চারশো টাকার
(গ) পাঁচশো টাকার (ঘ) দু-তিনশ টাকার

উত্তরঃ (ঘ) দু-তিনশ টাকার

১৩. আকবর রমাকে কী বলে সম্বোধন করেছে ?
(ক) দিদিমণি (খ) দিদিভাই
(গ) দিদিঠাকরান (ঘ) মাঠাকরুন

উত্তরঃ (গ) দিদিঠাকরান।

১৪. “আকবর বুড়োমানুষ তুই, সরে যা”–কথাটি বলেছে—
(ক) বেণী (খ) রমা (গ) হিন্দুস্থানি চাকর
(ঘ) রমেশ

উত্তরঃ (ঘ) রমেশ।

১৫. “না দিদিঠাকুরান আর সব পারি সদরে গিয়ে গায়ের চোট দেখাতে পারি না”- উক্তিটি কার ?
(ক) বেণীর (খ) আকবরের (গ) রমার
(ঘ) রমেশের

উত্তরঃ (খ) আকবরের।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর পল্লীসমাজ অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Short Type Question Answer Class 8 Bengali wbbse

১. ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসের রচয়িতার নাম কী ? উক্ত উপন্যাসের তিন শরিকের নাম লেখো।

উত্তরঃ পল্লী সমাজ উপন্যাসের রচয়িতার নাম শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসের তিন শরিকের নাম হল বেণী ঘোষাল, রমা ও রমেশ।

২. ‘পল্লীসমাজ’- গল্পের রচয়িতার নাম কী ? তাঁর লেখা একটা ছোটোগল্পের নাম লেখো।

উত্তরঃ ‘পল্লীসমাজ’-গল্পের রচয়িতার নাম শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর লেখা
একটি ছোটোগল্প হল ‘মহেশ’।

৩. ‘পল্লীসমাজ’ গদ্যাংশে রমা আকবরকে কী পাহারা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ গ্রামের পাশে জলার বাঁধ পাহারা দেওয়ার জন্য রমা আকবরকে
পাঠিয়েছিলেন।

৩. ‘পল্লীসমাজ’ গল্পে গ্রামের চাষিদের একমাত্র ভরসা কী ছিল ? গ্রামের চাষিরা কী বিপদে পড়েছিল ?

উত্তরঃ ‘পল্লীসমাজ’ গল্পে গ্রামের চাষিদের একমাত্র ভরসা ছিল একশো বিঘার মাঠ৷
বর্ষায় প্রবল বৃষ্টিতে চাষীদের ১০০ বিঘা মাঠের ধান ডুবে গিয়েছিল।

৪. “তাহার সমস্ত মুখের উপর কাঁচা রক্ত জমাট বাঁধিয়া গিয়াছে”– উদ্ধৃত অংশটি কোন গদ্যের অংশ ? কার, মুখের ওপর কীভাবে কাঁচা রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল?

উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত পল্লীসমাজ গদ্যের অংশ।
গ্রামের দক্ষিণে জলার বাঁধ কাটা রোধ করতে গিয়ে রমেশের কাছে মার খেয়ে আকবরের মুখের ওপর কাঁচা রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল।

৫. “রমা তেমনি মৃদুভাবেই জবাব দিল”- রমা কাকে, কী জবাব দিয়েছিল ?

উত্তরঃ রমা জবাব দিয়েছিলেন যে নিজের ক্ষতি করতে না পেরে নিষ্ঠুর হতে দোষ নেই, রমেশের দয়া থাকলে সে নিজেই ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিক।

৬. “রমেশ বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া গেল।”— রমেশের হতবুদ্ধির কারণ কী ?

উত্তরঃ ‘অত টাকা সে লোকসান করতে পারবেন না’। রমার কাছ থেকে এই উত্তর শুনে রমেশ হতবুদ্ধি হয়েছিল।

৭. “রমেশ দ্রুতপদে প্রস্থান করিল”— রমেশের দ্রুত প্রস্থানের কারণ কী ?

উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিতে প্রজাদের ধান ডুবে যাওয়ার অভিযোগ শুনে তার সমাধান করতে বেণী ঘোষালের কাছে যাওয়ার জন্য রমেশ দ্রুতপদে প্রস্থান করলেন।

৮. “রমেশ কিছুমাত্র ভূমিকা না করেই কহিল”— উদ্ধৃত কথাটি রমেশ কাকে বলেছিল ? কী বলেছিল ?

উত্তরঃ উদ্ধৃত কথাটি রমেশ তার দাদা বেণী মাধবকে বলেছিল।
রমেশ বলেছিল ‘জলার বাঁধ আটকে রাখলে তো আর চলবে না, এখনই সেটা কাটিয়া দিতে হবে।’

৯. রমেশ রমার কাছে গিয়েছিলেন কেন ?

উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিতে একশ বিঘার মাঠ জলে ডুবে গিয়েছিল। সেই মাঠের বাঁধ থেকে জল বার করে দেওয়ার জন্য রমেশ রমার মত জানতে গিয়েছিলেন।

১০. “না, অত টাকা লোকসান আমি করতে পারব না।”—উদ্ধৃতাংশটির বক্তা কে ? তিনি কাকে কথাগুলি বলেছেন ?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন রমা। তিনি রমেশকে প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছেন।

‘হাতে কলমে’ প্রশ্নোত্তর পল্লীসমাজ অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Hate Kolome Question Answer Class 8 Bengali wbbse

১.১ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখাে।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাস হল ‘শ্রীকান্ত এবং ‘পথের দাবী।

১.২, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি ছােটোগল্পের নাম লেখাে।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি ছােটোগল্প হল— ‘মহেশ’ এবং ‘অভাগীর স্বর্গ’।

২. নীচের প্রশ্নগুলির দু-একটি বাক্যে উত্তর লেখাে :

২.১ গােপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ কী করছিল ?

উত্তরঃ গােপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ জমিদারির হিসাব দেখাশােনা করছিল।

২.২ গ্রামের একমাত্র ভরসা কী ছিল ?

উত্তরঃ একশাে বিঘার মাঠটাই গ্রামের একমাত্র ভরসা ছিল।

২.৩ ‘বােধ করি এই কথাই হইতেছিল’-কোন্ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে ?

উত্তরঃ একশাে বিঘার মাঠের দক্ষিণ ধারের বাঁধ কেটে জল বার করে দেওয়ার ব্যাপারে প্রজাদের আকুল আবেদনের কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইতিপূর্বে প্রজারা বেণীবাবুর কাছে অনুনয় বিনয় করে হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেও ফল পায়নি। বেণীবাবু কিছুতেই দুশাে টাকা লােকসান করতে রাজি হয়নি।

২.৪ রমা আকবরকে কোথায় পাহারা দেবার জন্য পাঠিয়েছিল ?

উত্তরঃ রমা আকবরকে দক্ষিণ ধারের বাঁধ পাহারা দেবার জন্য পাঠিয়েছিল।

২.৫ ‘পারবি নে কেন ?’— উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কোন কাজটি করতে পারবে না ?

উত্তরঃ উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ, আকবর সদরে গিয়ে নিজের শরীরের চোট দেখাতে পারবে না। সে কিছুতেই রমেশের লাঠির আঘাতে আহত হওয়ার কথা ও তার জন্য রমেশের বিরুদ্ধে থানায় নালিশ করতে পারবে না।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখাে :

৩.১ কুড়িজন কৃষক রমেশের কাছে এসে কেঁদে পড়ল কেন ?

উত্তরঃ গ্রামের একমাত্র ভরসা একশাে বিঘার মাঠ জলে ডুবে গিয়েছে। সমস্ত চাষিদেরই কিছু কিছু জমি সেখানে আছে। ফলে জল বার করে না দিলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে। জমিটির পূর্ব দিকে বিশাল বাঁধ, পশ্চিম ও উত্তরদিকে উঁচু গ্রাম। শুধুমাত্র দক্ষিণ ধারের বাঁধটা ঘােষাল ও মুখুজ্জেদের’। এই দিক দিয়ে জল বার করা যায়। কিন্তু বাঁধের গায়ে একটা জলার মতাে আছে, যাতে বছরে দুশাে টাকার মাছ বিক্রি হয় বলে জমিদার বেণীবাবু বাঁধ কাটতে দেবেন না। সকাল থেকে কৃষকরা তাঁর কাছে কান্নাকাটি করেও কোনাে ফল না পেয়ে এ যাত্রায় রক্ষা পাবার আশায় রমেশের কাছে এসে কেঁদে পড়ল।

৩.২ রমেশ বেণীর কাছে জল বার করে দেবার হুকুম দেওয়ার জন্য অনুরােধ করল কেন ?

উত্তরঃ একশাে বিঘার মাঠের দক্ষিণ পাশে বাঁধের সংলগ্ন যে জলা জায়গাটি ছিল এবং যেদিক দিয়ে জল বের করা সম্ভব, সেটি তিনজনের অধিকারভুক্ত ছিল। রমেশ ভেবেছিল, প্রজার দুরবস্থার কথা ভেবে রমা নিশ্চয়ই আপত্তি করবে না। বাকি রইল কেবল বেণীবাবু, তিনি তাে রমেশের বড়দা, সুতরাং বাঁধ কেটে জল বের করায় তারও আপত্তি থাকবে না। তাই প্রজাদের চরম ক্ষতির কথা চিন্তা করে প্রজাদের রক্ষা করার আশায় রমেশ তাঁর কাছে বাঁধ কেটে জল বার করতে দেওয়ার অনুরােধ করেছিল।

৩.৩ বেণী জল বার করতে চায়নি কেন ?

উত্তরঃ বেণী জল বার করতে চায়নি প্রধানত দুটি কারণে। প্রথমত, বাঁধ কেটে জলার ওপর দিয়ে জল বের করতে দিলে জলার মাছ সব বেরিয়ে যাবে। জলা থেকে বছরে দুশাে টাকার মাছ বিক্রি হয়। সুতরাং, টাকাটা সে লােকসান করতে চায়নি। দ্বিতীয়ত, জল বার করতে দিলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে চাষিরা না খেতে পেয়ে বাধ্য হয়ে জমি বন্ধক রেখে তাদেরই কাছে। টাকা ধার চাইতে আসবে। এভাবেই সে পরের ক্ষতি করে নিজের স্বার্থ গােছাতে চেয়েছিল। বাড়াতে চেয়েছিল নিজের জমিদারী। তাই সে জল বার করতে চায়নি।

৩.৪ ঘৃণায়, লজ্জায়, ক্রোধে, ক্ষোভে রমেশের চোখমুখ উত্তপ্ত হইয়া উঠিল’রমেশের এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?

উত্তরঃ অসহায় প্রজাদের স্বার্থে রমেশ একশাে বিঘার মাঠ থেকে জল সরানাের বন্দোবস্ত করতে বেণী ঘােষালের কাছে এসে অনুরােধ জানায়। কিন্তু নিজের স্বার্থের 5ৰ খাতিরে বেণী রাজি হয় না। বরং, জমিদারের সর্বগ্রাসী # স্বার্থের কথা ভেবে রমেশকেও চুপ থাকতে বলে এবং উত্তেজিত রমেশকে জমিদারি বাড়ানাের কৌশল সম্পর্কে জানায়। বলে নিরুপায় চাষীরা প্রাণ বাঁচাতে তাদের কাছেই জমি বন্ধক রাখতে ছুটে আসবে। এর ফলে তাদেরই বেশি লাভ হবে। এই কথায় রমেশ জমিদার বেণী ঘােষালের এক চরম স্বার্থপর, লােভী ও নীচ মানসিকতার পরিচয় পায়। রক্ষক জমিদারের এই ভক্ষকের ভূমিকা দেখে প্রজাদরদী, সহানুভূতিশীল রমেশের চোখ-মুখ তাঁর দাদা বেণী ঘােষালের প্রতি ঘৃণায়, লজ্জায়, ক্রোধে, ক্ষোভে, উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল।

৩.৫ ‘রমেশ বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া গেল’- রমেশের বিস্ময়ের কারণ কী ছিল ?

উত্তরঃ রমেশ প্রজাদের ধান জমি রক্ষার জন্য বাঁধ কেটে জল বের করার ব্যাপারে বেণী ঘােষালের কাছে অনুরােধ করেও ব্যর্থ হয়। রমেশের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, রমা তার সঙ্গে সহমত পােষণ করবেই। তাই সে জলার তৃতীয় শরিক রমার কাছে যাওয়া স্থির করে। সে ভাবে, রমা রাজি হলে একা বেণীর আপত্তিতে কোনাে কাজ হবে না। কিন্তু রমাকে বিষয়টি জানাতেই সে প্রথমে মাছের বন্দোবস্তের কথা জিজ্ঞাসা করে। রমেশ তখন অত জলে মাছের বন্দোবস্ত করা সম্ভব নয় এবং এই সামান্য ক্ষতিটুকুকে মেনে নিতে অনুরােধ জানালে রমা সােজাসুজি জানিয়ে দেয়, অতগুলাে টাকা সে লােকসান করতে পারবে না। রমার এই অপ্রত্যাশিত উত্তরে আর সেই সঙ্গে রমার অমানবিক, স্বার্থপর মনােভাবের পরিচয় পেয়ে সেইসঙ্গে নিজের ভাবনার চরম বৈপরীত্য উপলদ্ধি করে রমেশ বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হয়ে গেল।

৩.৬ রমা রমেশের অনুরােধে রাজি হয়নি কেন ?

উত্তরঃ রমেশের অনুরােধে রমা রাজি হয়নি কারণ, জলার জায়গাটি ছিল তাদের তিনজনের অধিকারভুক্ত। বেণী ঘােষাল এ-ব্যাপারে অনুমতি দেননি। তা ছাড়া জল বের করতে দিলে জলাশয়ের মাছ সমস্ত বেরিয়ে যাবে, যার ক্ষতির পরিমাণ বছরে দুশাে টাকা। শুধুমাত্র প্রজাদের উপকারের জন্য এই ক্ষতি সে করতে চায়নি। সর্বোপরি, সম্পত্তি তার নয়, সম্পত্তি তার ভাইয়ের। সে শুধু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে। সুতরাং, অনুমতি দেওয়ার সে কেউনয়। এই জন্য সে রমেশের অনুরােধে রাজি হয়নি।

৩.৭ মানুষ খাঁটি কি না, চেনা যায় শুধু টাকার সম্পর্কে’-কে, কার সম্পর্কে একথা বলেছিল ? সে কেন একথা বলেছিল ?

উত্তরঃ আলােচ্য উক্তিটি রমেশ, রমার সম্পর্কে করেছিল।
» প্রজাদের সমূহ ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য রমেশ প্রথমে বেণী ঘােষালের কাছে যায়। সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে হাজির হয় রমার কাছে। তার বিশ্বাস ছিল, রমা অবশ্যই তার সঙ্গে সহমত হয়ে বাঁধ কাটার অনুমতি দেবে। এই ত্যাগ স্বীকারে তাদের হয়তাে কিছুটা ক্ষতি হবে, কিন্তু দরিদ্র প্রজাদের কথা ভেবে এটুকু ক্ষতি রমা নিশ্চয়ই মেনে নেবে। কিন্তু রমাকে অনুরােধ করতে এসে রমার মনের বৈপরীত্যের পরিচয় পায় রমেশ রমেশের কাছে টাকার দাবি করে রমা বলে, প্রজাদের হয়ে সে-ই তাে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। রমার এমন হীন মনের পরিচয় পেয়ে রমেশ বিহ্বল হয়ে পড়ে। রমার সম্পর্কে এতকাল পােষণ করা ধারণা ভেঙে যাওয়ায় রমেশ আলােচ্য উক্তিটি করেছে।

৩.৮ ‘রমা বিহ্বল হতবুদ্ধির ন্যায় ফ্যালফ্যাল করিয়া চাহিয়া রহিল’রমার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?

উত্তরঃ রমেশ বাল্যপরিচিত রমাকে উদার মনের বলেই ভাবত। তাই গ্রামবাসীদের দুরবস্থার কথা বলে বাঁধ কাটার অনুমতি চাইতে গিয়েছিল। কিন্তু রমেশের মতাে রমা সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ প্রজাদরদি হয়ে বাঁধ কাটতে রাজি হয়নি। নিজের ক্ষতি মেনে না নিয়ে রমা রমেশকেই প্রজাদের হয়ে দু’শাে টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলে। আর তাতে চরম অপমানিত বােধ করে রমেশ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়। ক্ষিপ্ত রমেশ রমাকে নিষ্ঠুর, নীচ ও ছােটো বলে অপমান করে। রমেশ আরও বলে মানুষের দয়ার ওপর জুলুম করার মতাে ঘৃণ্য পাপে সে দোষী। নিজের সম্পর্কে রমেশের মুখে এই মূল্যায়ন শুনে রমার এমন অবস্থা হয়েছিল।

৩.৯ রমা আকবরকে ডেকে এনেছিল কেন ?

উত্তরঃ বাঁধ কেটে জল বের করার ব্যাপার নিয়ে রমার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত রমেশ রমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, সে একাই বাঁধ কেটে জল বের করে দেবে। পারলে তারা আটকানাের চেষ্টা করতে পারে। রমা এতে খুব অপমানিত বােধ করে। সে বুঝেছিল, রমেশ এরপর সাংঘাতিক আশ্চর্য ঘটাতে পারে। তাই সে দেখতে চেয়েছিল, একটা হিন্দুস্থানি চাকরের জোরে রমেশ কীভাবে বাঁধ কেটে জল বের করে। তাই বাধ পাহারা দেবার জন্য সে তাদের পিরপুরের প্রজা লাঠিয়াল আকবরকে ডেকে এনেছিল।

৩.১০ মােরা নালিশ করতি পারব না’-কে এ কথা বলেছে ? সে নালিশ করতে পারবে না কেন ?

উত্তরঃ রমাদের পিরপুরের প্রজা আকবর এ কথা বলেছে।
» আকবর একজন প্রকৃত লাঠিয়াল। তার আত্মসম্মানবােধ প্রবল। সে জানে লাঠিতে জয়-পরাজয় আছেই। রমেশের লাঠির আঘাতে সে আহত হয়, তার মাথা দিয়ে রক্ত ঝরে, কিন্তু পাঁচখানা গাঁয়ের লােক তাকে সর্দার বলে মানে। তাই পরাজিত হলেও সে আত্মমর্যাদা হারাতে রাজি নয়। নালিশ করলে তার সম্মানহানি ঘটবে সে সর্দার হিসেবে অপমানিত হবে। তাছাড়া সর্দারের এই কথায় ছােটোবাবু রমেশের প্রতি শ্রদ্ধাও পরিস্ফুট হয় কারণ রমেশ নিজের স্বার্থে নয়, গ্রামবাসীদের স্বার্থে একশাে বিঘা জমি বাঁচাতে বাঁধ কাটার কাজে তাদের বিরুদ্ধে লাঠি ধরেছে তাই কোনােভাবে সে সদরে গিয়ে তার চোট দেখাতে পারবে না বা থানায় গিয়ে মিথ্যা অভিযােগও জানাতে পারবে না ।

৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :

৪.১ ‘নইলে আর ব্যাটাদের ছােটোলােক বলেছে কেন ?’ বক্তা কে ? এই উক্তির মধ্যে দিয়ে বক্তার চরিত্রের কী পরিচয় পাও ?

উত্তরঃ আলােচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন বেণী ঘােষাল।
» প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে বক্তার চরিত্রের কয়েকটি বিশেষ দিক ফুটে উঠেছে। বক্তা অর্থাৎ, বেণী ঘােষাল মূলত প্রজাপীড়ক জমিদার। তিনি একাধারে জমিদার ও মহাজন। মহাজনী করে তিনি জমিদারির সীমানা বাড়িয়েছেন এবং পরের প্রজন্মের জন্যে কৌশল করে আরও বেশি সম্পদ বাড়ানাের পরিকল্পনা করেছেন। মূলত প্রশ্নোক্ত কথাটির মধ্য দিয়ে বক্তার চরিত্রের লােভী, পরশ্রীকাতর ও নিন্দুক জাতীয় বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়েছে।

৪.২ বেণী, রমা ও রমেশচরিত্র তিনটির তুলনামূলক আলােচনা করাে। সেইসঙ্গে এই তিনটি চরিত্রের মধ্যে কোন চরিত্রটি তােমার সবথেকে ভালাে লেগেছে এবং কেন তা জানাও।

উত্তরঃ অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসে অনেকগুলি চরিত্রের সমাবেশ ঘটিয়েছেন। প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজ নিজ মহিমায় উজ্জ্বল। প্রশ্নে উল্লিখিত তিনটি চরিত্র বেণী, রমা ও রমেশ হল ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসে কুয়াপুর ও পিরপুরের জমিদারির তিনজন মালক। এদের মধ্যে বেণী ঘােষাল মূলত প্রজাপীড়ক জমিদার। তবুও তিনি একাধারে জমিদার ও মহাজন। সর্বোপরি তিনি সামন্ততান্ত্রিক সমাজের যােগ্য প্রতিনিধি। অন্যদিকে রমা চরিত্রে শরৎচন্দ্র বুদ্ধিমতী ও ব্যক্তিত্বময়ী নারী চরিত্রের রূপায়ন ঘটিয়েছেন। রমার জীবনের সর্বাপেক্ষা বড়াে ট্র্যাজেডি হল প্রতিকূল অবস্থার তাড়নায় রমা তার একান্ত প্রেমাষ্পদের শত্রুতা সাধন করেছে। তার চরিত্রে রয়েছে দ্বৈতরূপ। একদিকে জমিদার কন্যার বৈষয়িক সত্তা আর একদিকে চিরন্তনী নারী সত্তা। এদের বিপরীতে আছে রমেশ চরিত্র। রমেশ মহৎ আদর্শ। চরিত্র সুদৃঢ় সত্যনিষ্ঠা ও বিরাট মানবিকতার আশ্চর্য সমন্বয়ে সে গঠিত। সে যথার্থই প্রজাহিতৈষী।

» এই তিনটি চরিত্রের মধ্যে রমেশ চরিত্রটি আমার সবচেয়ে ভালাে লেগেছে। কারণ, তাঁর চরিত্রের মধ্যে মহৎ আদর্শ, সুদৃঢ়তা, সত্যনিষ্ঠা ও বিরাট মানবিকতার আশ্চর্য সমাবেশ লক্ষ করা যায়। তার বলিষ্ঠ বাহু এবং প্রশস্ত বক্ষ বাংলাদেশের জীর্ণ দুর্বল সংস্কারা পল্লিসমাজের সেবায় উৎসর্গীকৃত ছিল। তাই তার চরিত্রটি আমার ভালাে লাগে।

৪.৩ উপন্যাসের নামে পাঠ্যাংশটির নামকরণও ‘পল্লীসমাজ’ নামেই রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নামকরণটি সুপ্রযুক্ত হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে মতামত জানাও।

উত্তরঃ ‘নামকরণ’ অংশটি দ্যাখাে।

৪.৪ পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার কোনাে নিদর্শন পেয়ে থাকলে সে সম্পর্কে আলােচনা করাে। এ ধরনের ব্যবস্থার সুফল ও কুফল সম্পর্কে আলােচনা করাে।

উত্তরঃ ‘পল্লীসমাজ’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সমাজসমালােচনামূলক উপন্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম। এই রচনায় সমকালীন বাংলাদেশের ক্ষয়িষ্ণু সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার নিদর্শন পাওয়া যায়। হিন্দু সমাজের প্রকৃত আদর্শ ও মনােভাব এবং সমগ্র জীবনযাত্রার একটি নিখুঁত চিত্র এই উপন্যাসে প্রতিফলিত হয়েছে। ‘পল্লীসমাজ’ গদ্যাংশে বেণী ঘােষাল চরিত্রের মধ্যে দিয়ে লেখক দেখিয়েছ, জমিদাররা কীভাবে প্রজাদের সর্বস্বান্ত করতেন এবং কীভাবে তাঁরা তাঁদের জমির পরিধি বাড়াতেন। জমিদার বেণী ঘােষাল চরিত্রের মধ্যেই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার নিদর্শন পাওয়া যায়।

» সামন্ততান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার আপত কোনাে সুফল আছে বলে মনে হয় না। একথা ঠিক, প্রজাপীড়ক জমিদারের পাশাপাশি অনেক সময় প্রজাদরদি সামন্তও থাকতেন। তাঁরা প্রজাদের মঙ্গলার্থে নানান হিতকর পরিকল্পনা নিতেন। একই সঙ্গে প্রজাদের সার্বিক স্বার্থরক্ষাই ছিল তাঁর প্রধান কাজ। এমন জমিদারের অধীনে প্রজারা সুখে-শান্তিতে জীবন কাটত।

» সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় কৃষক-সহ সমস্ত প্রজাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। তারা ফসল উৎপন্ন করেও একবেলা পেটপুরে খেতে পারত না। জমিদারের সীমাহীন লােভ, লালসা, বিলাসিতার শিকার হয়ে তাদের সর্বস্ব হারাতে হত। নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখতে যে কোনাে প্রজার চরম সর্বনাশ দ্বিধা করত না।

৫. সন্ধি করাে :

» বৃষ + তি = বৃষ্টি,

» সম্ + বরণ = সংবরণ,

» কাঁদ + না = কান্না,

» অতি + অন্ত = অত্যন্ত

» এক + অন্ত = একান্ত

» অন্ + আত্মীয় = অনাত্মীয়

৬. নীচের শব্দগুলির সন্ধি বিচ্ছেদ করাে : নিরুত্তর, নমস্কার, তারকেশ্বর, যথার্থ, প্রত্যাখ্যান, আশ্চর্য, তদবস্থা।

» নিরুত্তর = নিঃ + উত্তর।

» নমস্কার = নমঃ + কার।

» তারকেশ্বর = তারক + ঈশ্বর।

» যথার্থ = যথা + অর্থ।

» প্রত্যাখ্যান =প্রতি + আখ্যান।

» আশ্চর্য = আঃ + চর্য।

» তদবস্থা =তৎ + অবস্থা।

৭. নীচে দেওয়া শব্দগুলির দলবিশ্লেষণ করাে : অপরাহ্ন, অকস্মাৎ, আহ্বান, দক্ষিণ, উচ্ছিষ্ট, উত্তপ্ত, বিস্ফারিত, দীর্ঘশ্বাস, অশ্রুপ্লাবিত, হিন্দুস্থানি, অস্বচ্ছ।

» অপরাহ্ন = অ – প – রান্ – হ, [ মুক্তদল— অ, প, হ (৩টি), রুদ্ধদল—রান্ (১টি)] । )

» অকস্মাৎ = অ -কস্ – মাৎ, [ মুক্তদল—অ (১টি), রুদ্ধদল—কস, মাৎ (২ টি)]।

» আহ্বান = আ – হ – বান্ [ মুক্তদল—আ, হ (২ টি),রুদ্ধদল-বান্ (১টি)]।

» দক্ষিণ = দক্ – ক্ষিণ, [ মুক্তদলশূন্য (০), রুদ্ধদল দক, ক্ষিণ (২ টি)]।

» উচ্ছিষ্ট = উচ – ছিষ – ট, [মুক্তদল—ট ১টি, রুদ্ধদল—উচ, ছিষ (২ টি)]।

» উত্তপ্ত = উৎ – তপ্ -ত, [মুক্তদল—ত (১টি), রুদ্ধদল-উৎ, তপ (২ টি)]।

» বিস্ফারিত = বিস্ – ফা – রি – ত, [মুক্তদল-ফা, রি, ত (৩টি), রুদ্ধদল—বি (১টি)]।

» দীর্ঘশ্বাস = দীর – ঘ-স্বাস, [মুকৃতদল—ঘ (১টি), রুদ্ধদল—দীর, শ্বাস (২ টি)]।

» অশ্রুপ্লাবিত = অশ – রু – প্লা – বি ত (মুক্তদল—রু, বি, ত (৩টি), রুদ্ধদল-অশ, প্লা (২টি)]

» হিন্দুস্থানি = হিন – দুস্ – থা – নি [মুক্তদল —থা, নি (২ টি), রুদ্ধদল-হিন, দুস (২ টি)]।

» অস্বচ্ছ = অ-স্বচ্- ছ (মুক্তদল—অ, ছ (২ টি), রুদ্ধদল—স্বচ (১টি)]।

৮. নীচে দেওয়া ব্যাসবাক্যগুলিকে সমাসবদ্ধ পদে পরিণত করাে। কোনটি কী ধরনের সমাস তা নির্ণয় করাে :

৮.১ জল ও কাদা ৮.২ নয় আহত ৮.৩ ত্রি অধিক দশ ৮.৪ বেগের সহিত বর্তমান। ৮.৫ মড়ার জন্য কান্না ৮.৬ চন্ডী পুজোর জন্য তৈরি যে মণ্ডপ

উত্তরঃ

৮.১ জল ও কাদা = জলকাদা (দ্বন্দ্ব সমাস)।

৮.২ নয় আহত = অনাহত (নঞ-তৎপুরুষ সমাস)।

৮.৩ ত্রি অধিক দশ = ত্রয়ােদশ (মধ্যপদলােপী কর্মধারয় সমাস)।

৮.৪ বেগের সহিত বর্তমান = সবেগে (সহার্থক বহুব্রীহি সমাস)

৮.৫ মড়ার জন্য কান্না = মড়াকান্না (নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস)।

৮.৬ চণ্ডী পুজোর জন্য তৈরি যে মণ্ডপ = চণ্ডীমণ্ডপ (মধ্যপদলােপী কর্মধারয় সমাস)।

৯. নীচের বাক্যগুলিকে নির্দেশ অনুযায়ী পরিবর্তন করাে :

৯.১ কথাটা রমেশ বুঝিতে পারিল না। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তরঃ কথাটা রমেশ শুনিল কিন্তু বুঝিতে পারিল না।

৯.২ এ বাড়িতে আসিয়া যখন প্রবেশ করিল তখন সন্ধ্যা হয় হয়। (সরল বাক্যে)

উত্তরঃ সন্ধ্যা হতে না হতেই এ বাড়িতে আসিয়া প্রবেশ করিল।

৯.৩ ওরা যাবে কি ? (নির্দেশক বাক্যে)

উত্তরঃ ওরা যাবে কিনা সেটাই জিজ্ঞাস্য।

৯.৪ বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দিবারও তাহার প্রবৃত্তি হইল না। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)

উত্তরঃ বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে সে বিরত রইল।

৯.৫ তুমি নীচ, অতি ছােটো। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তরঃ তুমি নীচ এবং অতি ছােটো।

৯.৬ পথে আর এতটুকু কাদা পাবার জো নেই দিদিমা। (প্রশ্নবােধক বাক্যে)

উত্তরঃ পথে কি আর এতটুকু কাদা পাবার জো আছে দিদিমা ?

৯.৭ মাসি উপরে ঠাকুরঘরে আবদ্ধ থাকায় এ সকলের কিছুই জানিতে পারেন নাই। (জটিল বাক্যে)

উত্তরঃ যেহেতু মাসি উপরে ঠাকুরঘরে আবদ্ধ ছিলেন সেহেতু এ সকলের কিছুই জানিতে পারেন নাই।

১০. নীচে দেওয়া শব্দদুটিকে দুটি আলাদা আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্যরচনা করাে : যাত্রা, বাঁধ।

» যাত্রা (পালাগান শােনা): গুপ্তিপাড়ায় আজ রাতে যাত্রা আছে।

» যাত্রা (এবারের মতাে) : অপমানের হাত থেকে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়ে গেলাম।

» বাঁধ (বন্ধন যুক্ত) : মালপত্রগুলিকে দড়ি দিয়ে ভালাে করে বাঁধ কি ?

» বাঁধ (পাড়) : নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকছে।

আরও পড়ুনঃ

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পল্লীসমাজ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গাছের কথা প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা হাওয়ার গান কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা কী করে বুঝব গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নাটোরের কথা গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা গড়াই নদীর তীরে কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ছোটোদের পথের পাঁচালী (নবম থেকে অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ) প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা ভাষাচর্চা ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা নির্মিতি ব্যাকরণের প্রশ্ন ও উত্তর Click Here

Leave a Reply