রাধারাণী গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | Radharani Golper Question Answer Class 9 Bengali wbbse
সাহিত্য মেলা
নবম শ্রেণি বাংলা
নবম শ্রেণি বাংলা রাধারাণী গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Class 9 Bengali Radharani Golper Question Answer wbbse
নবম শ্রেণির বাংলা লেখক পরিচিতি, উৎস, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, বহু বিকল্পীয়, অতি সংক্ষিপ্ত, ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | West Bengal Class 9 Bengali Radharani Golper Question Answer wbbse
1. নবম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. নবম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
নবম শ্রেণির বাংলা লেখক পরিচিতি, উৎস, বিষয় সংক্ষেপ, নামকরণ, বহু বিকল্পীয়, অতি সংক্ষিপ্ত, ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | West Bengal Class 9 Bengali Radharani Golper Question Answer wbbse
লেখক পরিচিতিঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮ – ১৮৯৪): জন্ম চব্বিশ পরগনার কাঁঠালপাড়ায়। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপ্যন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গ্র্যাজুয়েট, ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অন্যতম পুরোধা, ‘বন্দেমাতরম্’ মন্ত্রের স্রষ্টা। প্রথম জীবনে সংবাদ প্রভাকরের পাতায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হলেও তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনা ইংরাজিতে (Rajmohan’s wife)। ১৮৬৫ খ্রি: তাঁর রচিত দুর্গেশনন্দিনী বাংলা উপন্যাস ভাষা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় কপালকুণ্ডলা, মৃণালিনী ইত্যাদি উপন্যাস। সমকালীন বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখক বঙ্কিম ১৮৭২ খ্রি: বঙ্গদর্শন নামে একটি মাসিকপত্র প্রকাশ করেন যা বাংলা পত্রপত্রিকার সংস্কৃতিকে চমৎকৃত করে। বঙ্গদর্শনের নানা সংখ্যায় ছড়িয়ে আছে বঙ্কিমের বহু প্রবন্ধ এবং যুগান্তকারী সব উপন্যাস- বিষবৃক্ষ, চন্দ্রশেখর, রজনী, কৃষ্ণকান্তের উইল ইত্যাদি। ১৮৮২ খ্রি: প্রকাশিত তাঁর আনন্দমঠ উপন্যাসটি ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে শুধু উপন্যাস রচনাতেই নয় বহু বিষয়ক প্রবন্ধ রচনাতেও তাঁর অবদান অসামান্য। লোকরহস্য, মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত, কমলাকান্তের দপ্তর ইত্যাদি প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে লুকিয়ে আছে বঙ্কিমের মননের দীপ্তি, তীব্র ব্যঙ্গবোধ, ইতিহাস ও সমাজচেতনা আর আবেগ ও কৌতুক প্রবণতা। বাংলা সাহিত্যে আধুনিক সমালোচনার ধারাতেও তিনি পথদ্রষ্টাদের মধ্যে অন্যতম।
উৎসঃ পাঠ্য রাধারাণী রচনাংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারাণী উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদ।
বিষয়সংক্ষেপঃ রাধারাণী এক গরিব বিধবা মায়ের মেয়ে। এক সময় অবস্থাপন্ন হলেও জ্ঞাতির সঙ্গে মামলা-মোকদ্দমায় হেরে যাওয়ায় তার মা নিঃস্ব হয়ে যান। কুটিরবাসী হয়ে দৈহিক পরিশ্রম করে কোনোরকমে তাঁর দিন চলত। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তা-ও সম্ভব হত না। মা-মেয়ের উপবাস চলতে লাগল। এই সময়ে মায়ের পথ্যের চিন্তায় অস্থির হয়ে রাধারাণী বন থেকে ফুল তুলে মালা গাঁথল। উদ্দেশ্য, রথের হাটে তা বিক্রি করে মায়ের পথ্যের জন্য অর্থসংগ্রহ। কিন্তু বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে গেল। রাধারাণী অনেক অপেক্ষা করার পরও বৃষ্টি থামল না, মেলাও জমল না। অন্ধকার পথে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে রাধারাণী যখন বাড়ি ফিরছিল তখন তার চোখ থেকেও বৃষ্টির মতোই জল গড়িয়ে পড়ছিল। এই সময়ে হঠাৎই এক পথিক তার ঘাড়ের উপরে এসে পড়ে এবং তার কান্নার কারণ জানতে চায়। প্রশ্নের মধ্য দিয়ে রাধারাণীর অবস্থা, বাসস্থান ইত্যাদি জেনে নিয়ে সেই পথিক পিছল পথে হাত ধরে তাকে নিয়ে চলে। রাধারাণীর গাঁথা মালাটিও সে বাড়ির ঠাকুরকে পরানোর জন্য কিনে নেয়। কিন্তু দাম হিসেবে পয়সা নিয়েই রাধারাণীর সন্দেহ হয় যে তাকে পয়সার বদলে টাকা দেওয়া হয়েছে কি না। সে বাড়িতে ফিরে তা প্রদীপ জ্বালিয়ে যাচাই না করা পর্যন্ত পথিককে দাঁড়াতে বলে। আগুন জ্বালিয়ে সে দেখে যে তার অনুমান ঠিক। তাকে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাইরে এসে রাধারাণী দেখে পথিক চলে গিয়েছে। এরই মধ্যে কাপড়ের দোকানের মালিক পদ্মলোচন সাহা একজোড়া শান্তিপুরি শাড়ি রাধারাণীর জন্য এনে বলে যে এক বাবু দাম মিটিয়ে দিয়ে তাকে এই শাড়ি দিয়ে যাওয়ার কথা বলে গেছেন। সকলেই অবাক হল তার পরিচয় নিয়ে। রাধারাণী সেই টাকা ভাঙিয়ে বাজার করে আনল, মা-র জন্য সামান্য কিছু রান্না করল। এরপর মাকে ভাত বেড়ে দেওয়ার জন্য যখন ঘর ঝাঁট দিচ্ছে তখন সে একটি নোট কুড়িয়ে পেল। তাতে রাধারাণীর নাম লেখা আছে। দাতার নামও লেখা আছে রুক্মিণীকুমার রায়। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তার খোঁজ তারা পেল না। রাধারাণীরা নোটটি না ভাঙিয়ে তুলে রাখল, কারণ তারা গরিব হলেও লোভী নয়।
নামকরণঃ রাধারাণী নামের এক পিতৃহীনা বালিকা মায়ের পথ্যের অর্থ সংগ্রহের জন্য বন থেকে ফুল তুলে একটি মালা গাঁথে এবং রথের মেলায় যায় সেটি বিক্রির জন্য। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে তার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। কাঁদতে কাঁদতে সে যখন বাড়ির পথ ধরেছে রাত্রির অন্ধকারে তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে এক পথিকের। পথিকটি সব শুনে রাধারাণীর মালাটি কিনে নেয়। শুধু তাই নয়, মালার দাম চার পয়সা হলেও তার বদলে সে রাধারাণীকে টাকা দেয়। যাওয়ার সময়ে কাপড় ব্যবসায়ী পদ্মলোচনের দোকানে রাধারাণীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাপড়ের দামও দিয়ে যায় সেই পথিক এবং সকলের আড়ালে রাধারাণীর বাড়িতে একটা নোট রেখে যায়। এই যাবতীয় ঘটনা ও কাজকর্মের মাঝখানে ছিল রাধারাণী। তার নির্লোভ, সৎ, নীতিপরায়ণ চরিত্রকে তুলে ধরাই ছিল গল্পকারের লক্ষ্য। গল্পে যাবতীয় ঘটনা তাকে কেন্দ্র করেই ঘটেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চরিত্রকেন্দ্রিক নামকরণের রীতি অনুসরণ করে গল্পাংশের নাম রাধারাণী রাখা অত্যন্ত সংগত হয়েছে।
বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর রাধারাণী গল্প (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) নবম শ্রেণি বাংলা | MCQ Question Answer Radharani Class 9 Bengali wbbse
• ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১. ‘রাধারাণী’ গল্পটি লিখেছেন—
(ক) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(খ) প্রেমেন্দ্র মিত্র
(গ) তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়
(ঘ) রজনীকান্ত সেন
উত্তরঃ (ক) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২. ‘রাধারাণী’ রচনাংশটি নেওয়া হয়েছে—
(ক) ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস থেকে
(খ) ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাস থেকে
(গ) ‘রাধারাণী’ উপন্যাস থেকে
(ঘ) ‘দেবী চৌধুরানী’ উপন্যাস থেকে
উত্তরঃ (গ) ‘রাধারাণী’ উপন্যাস থেকে
৩. পাঠ্য রাধারাণী রচনাংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারাণী উপন্যাসের
(ক) প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে
(খ) প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে
(গ) প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে
(ঘ) প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে
উত্তরঃ (ক) প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে
৪. ‘তাহাদিগের অবস্থা পূর্বে ভালো ছিল’- অবস্থা ভাল ছিল—
(ক) রুক্মিনীকুমারের
(খ) রাধা ও রানীদের
(গ) পদ্মলোচনের
(ঘ) রাধারাণীদের
উত্তরঃ (ঘ) রাধারাণীদের
৫. প্রতি বছর রথযাত্রা হয়ে থাকে, সাধারণত—
(ক) পৌষ-মাঘ মাসে
(খ) চৈত্র-বৈশাখ মাসে
(গ) আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে
(ঘ) আশ্বিন-কার্তিক মাসে
উত্তরঃ (গ) আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে
৬. রাধারাণীদের বাড়ি ছিল—
(ক) শ্রীরামপুরে
(খ) নদিয়ায়
(গ) মাহেশে
(ঘ) শান্তিপুরে
উত্তরঃ (ক) শ্রীরামপুরে
৭. রাধারাণীর বিধবা মা মামলা হেরেছিল—
(ক) প্রিবি কৌন্সিলে
(খ) লোয়ার কোর্টে
(গ) হাইকোর্টে
(ঘ) সুপ্রিম কোর্টে
উত্তরঃ (ক) প্রিবি কৌন্সিলে
৮. রাধারাণীর মা পীড়িত হয়েছিলেন –
(ক) রথের দিন
(খ) রথের আগে
(গ) রথের পরে
(ঘ) রথের পনেরো দিন আগে
উত্তরঃ (খ) রথের আগে
৯. রাধারানী রথ দেখতে গিয়েছিল —
(ক) মাহেশে
(খ) মায়াপুরে
(গ) শ্রীরামপুরে
(ঘ) শান্তিপুরে
উত্তরঃ (ক) মাহেশে
১০. রাধারাণী রথের মেলায় গিয়েছিল-
(ক) বনফুলের মালা কিনতে
(খ) বনফুলের মালা বিক্রি করতে
(গ) রথ টানতে
(ঘ) রথ মেলা দেখতে
উত্তরঃ (খ) বনফুলের মালা বিক্রি করতে
১১. রথের হাট ভেঙ্গে গিয়েছিল কেন ?
(ক) জিনিসপত্র ছিল না তাই
(খ) প্রচন্ড ঝড় উঠেছিল
(গ) প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল তাই
(ঘ) সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল তাই
উত্তরঃ (গ) প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল তাই
১২. রাধারাণী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরিল।’– কারণ—
(ক) সে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল
(খ) সে বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ভিজেছিল
(গ) মেলায় সে কিছু কিনতে পারেনি
(ঘ) সে মালা বিক্রি করতে পারেনি
উত্তরঃ (ঘ) সে মালা বিক্রি করতে পারেনি।
১৩. অপরিচিত ব্যক্তিটি রাধারাণীর মালার দাম দিয়ছিল—
(ক) এক পয়সা
(খ) দুই পয়সা
(গ) তিন পয়সা
(ঘ) চার পয়সা
উত্তরঃ (ক) এক পয়সা
১৪. আমার ব্যামো হয় না।’– তার ব্যামো হয় না—
(ক) উপবাসী থাকলেও
(খ) সারাদিন রোদে রোদে ঘুরলেও
(গ) সর্বদা ভিজে গায়ে থাকলেও
(ঘ) বৃষ্টিতে ভিজলেও
উত্তরঃ (গ) সর্বদা ভিজে গায়ে থাকলেও
১৫. ‘আমার ব্যামো হয় না’- এ কথা বলেছিল—
(ক) রাধারাণীর মা
(খ) রাধারাণী
(গ) রুক্মিণীকুমার
(ঘ) পদ্মলোচন সাহা
উত্তরঃ (খ) রাধারাণী
১৬. ‘আমি বাহিরে দাঁড়াইয়া আছি’– একথা বলেছিল —
(ক) বসন্ত রায়
(খ) পদ্মলোচন সাহা
(গ) রাধারানী
(ঘ) রুক্মিণীকুমার
উত্তরঃ (ঘ) রুক্মিণীকুমার
১৭. ‘নোট খানি তারা ভাঙাইল না’– কারণ—
(ক) তাতে নাম লেখা ছিল
(খ) তারা দরিদ্র কিন্তু লোভী নয়
(গ) নিজের টাকা নয় বলে ভাঙ্গলো না
(ঘ) তাদের দরকার ছিল না
উত্তরঃ (খ) তারা দরিদ্র কিন্তু লোভী নয়
১৮. পোড়ারমুখো কাপুড়ে মিনসের প্রকৃত নাম –
(ক) পদ্মলোচন দত্ত
(খ) পদ্মলোচন মণ্ডল
(খ) পদ্মলোচন সাহা
(ঘ) পদ্মলোচন কুণ্ডু
উত্তরঃ (খ) পদ্মলোচন সাহা
১৯. রাধারাণী ঘর ঝাঁট দিতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছিল—
(ক) একটি স্বর্ণমুদ্রা
(খ) একটা ছবি
(গ) একটা নোট
(ঘ) মায়ের ওষুধ
উত্তরঃ (গ) একটা নোট
২০. “তাঁহার নামও নোটে লেখা আছে”- কারণ –
(ক) যাতে বুঝতে অসুবিধা হয়
(খ) যাতে কেউ না নিতে পারে
(গ) পাছে কেউ চোরা নোট বলে
(ঘ) যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়
উত্তরঃ (গ) পাছে কেউ চোরা নোট বলে
২১. ‘রাধারাণী’ রচনাংশে ঘটনা কোন ঋতুতে সংঘটিত হয়েছিল–
(ক) শীতকাল
(খ) বর্ষাকাল
(গ) গ্রীষ্মকাল
(ঘ) বসন্তকাল
উত্তরঃ (খ) বর্ষাকাল
২২. রাধারাণীরদের সম্পত্তির অর্থমূল্য ছিল–
(ক) কুড়ি লক্ষ টাকা
(খ) তিরিশ লক্ষ টাকা
(গ) আট লক্ষ টাকা
(ঘ) দশ লক্ষ টাকা
উত্তরঃ (ঘ) দশ লক্ষ টাকা
২৩. “যে ঘাড়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছিল”– সে কে ?
(ক) পদ্মলোচন
(খ) রাধারাণী
(গ) বঙ্কিমচন্দ্র
(ঘ) রুক্মিণী কুমার
উত্তরঃ (ঘ) রুক্মিণী কুমার
২৪. রাধারাণী পথিককে নিজের বাড়ি বলেছিল–
(ক) শ্রীরামপুর
(খ) শ্রীরামচন্দ্রপুর
(গ) চণ্ডীপুর
(ঘ) রামকৃষ্ণপুর
উত্তরঃ (ক) শ্রীরামপুর
২৫. ‘এই জন্য নাম লিখিয়া দিয়া গিয়াছেন’– তাঁহার নাম—
(ক) পদ্মলোচন রায়
(খ) রাধারাণী রায়
(গ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(ঘ) রুক্মিণী কুমার রায়
উত্তরঃ (ঘ) রুক্মিণী কুমার রায়
২৬. রাধারাণীর বয়স হয়েছিল—
(ক) আট-নয় বছর
(খ) দশ-এগারো বছর
(গ) দশ বছর
(ঘ) বারো বছর
উত্তরঃ (খ) দশ-এগারো বছর
২৭. “আলো জ্বালিয়া রাধারাণী দেখিল।”- রাধারাণী কী দেখলো ?
(ক) পদ্মলোচনের দেওয়া কাপড়
(খ) আধুলি
(গ) টাকা
(ঘ) পয়সা
উত্তরঃ (গ) টাকা
২৮. রাধারাণী তার প্রাপ্ত টাকা ভাঙিয়ে সংগ্রহ করেছিল–
(ক) মায়ের ওষুধ
(খ) মায়ের শীতবস্ত্র
(গ) মায়ের পথ্য
(ঘ) কোনোটাই নয়
উত্তরঃ (গ) মায়ের পথ্য।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর রাধারাণী গল্প (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) নবম শ্রেণি বাংলা | SAQ Question Answer Radharani Class 9 Bengali wbbse
• কম-বেশী ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১. “… বিধবা হাইকোর্টে হারিল।” — এখানে কোন মামলার কথা বলা হয়েছে।
উত্তরঃ জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে রাধারানীর মায়ের যে মামলা হয়েছিল এখানে তার কথাই বলা হয়েছে।
২. হাইকোর্টে মামলায় হেরে যাওয়ার ফলে রাধারাণীদের কি অবস্থা হয়েছিল ?
উত্তরঃ হাইকোর্টে হেরে যাওয়ার ফলে ডিক্রি জারি করে রাজা — রাণীদের ভদ্রাসন থেকে উৎখাত করা হয়।
৩. রাধারাণী কোথায় রথ দেখতে গিয়েছিল ?
উত্তরঃ রাধারাণী মাহেশের রথের মেলায় রথ দেখতে গিয়েছিল।
৪. রাধারাণীদের সম্পত্তির অর্থমূল্য কত ছিল ?
উত্তরঃ রাধারাণীদের সম্পত্তির অর্থমূল্য প্রায় দশ লক্ষ টাকা।
৫. রাধারাণীর মা কখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ?
উত্তরঃ রথের আগে রাধারাণীর মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
৬. ‘রাধারাণী’ গল্পে কোন মাসের উল্লেখ আছে ?
উত্তরঃ রাধারাণী গল্পে শ্রাবণ মাসের উল্লেখ আছে।
৭. রাধারাণী একা রথের মেলায় গিয়েছিল কেন ?
উত্তরঃ রাধারাণী বনফুলের মালা বিক্রি করে মা-র পথ্য সংগ্রহ করবে বলে মাহেশের রথের মেলায় গিয়েছিল।
৮. “রথের হাট শীঘ্র ভাঙিয়া গেল।” – কেন ?
উত্তরঃ রথের হাট প্রবল বৃষ্টির কারনে শীঘ্রই ভেঙে গিয়েছিল।
৯. “মালা কেহ কিনিল না”– মালা না কেনার কারণ কী ছিল ?
উত্তরঃ রথের দড়ির টান অর্ধেক হতে না হতেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে গেলে মালা কেনার লোক আর থাকল না।
১০. “লোক আর জমিল না।”– কোথায় লোক জমেনি ?
উত্তরঃ রাধারাণী গল্পে বৃষ্টির পরে রথের মেলায় লোক আর জমেনি।
১১. রাধারানী কী কারণে রথের মেলায় গিয়েছিল ?
উত্তরঃ রাধারাণী অসুস্থ মায়ের পথ্য জোগাড়ের জন্য প্রয়ােজনীয় অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রথের মেলায় বনফুলের মালা বেচতে গিয়েছিল।
১২. “এক্ষণে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিল।”- কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ অন্ধকারে বাড়ি ফেরার সময় কোনো একজন রাধারাণীর ঘাড়ের উপরে পড়ায় রাধারাণী উচ্চৈঃস্বরে কেঁদে ওঠে।।
১৩. “রাধারাণী রোদন বন্ধ করিয়া বলিল…” রাধারাণী কি বলেছিল ?
উত্তরঃ রাধারাণী কান্না বন্ধ করে বলেছিল সে দুঃখী লোকের মেয়ে এবং তার মা ছাড়া কেউই নেই।
১৪. “রাধারাণী বড়ো বালিকা।” কীভাবে এই ধারণা হয়েছিল?
উত্তরঃ আগন্তুক প্রথমে রাধারাণীর গলার আওয়াজে এবং পরে তার হাতের ছোঁয়ায় বুঝতে পারেন রাধারাণী খুবই ছোটো একটি মেয়ে।
১৫. রাধারাণীকে বয়স জিজ্ঞাসা করলে সে কত বলেছিল ?
উত্তরঃ রাধারাণী প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিল যে, তার বয়স দশ-এগারো বছর।
১৬. “এক্ষণেও বালিকার হৃদয়মধ্যে লুক্কায়িত আছে।”- কী লুক্কায়িত আছে ?
উত্তরঃ যে বনফুলের মালা রথের মেলায় বিক্রি করতে গিয়েছিল তা-ই রাধারাণীর বুকের মধ্যে লুকানো ছিল।
১৭. “আমি একছড়া মালা খুঁজিতেছিলাম”- পথিক চরিত্রটি মালার সন্ধান করছিল কেন ?
উত্তরঃ পথিক চরিত্রটি তার গৃহদেবতাকে পরানোর জন্য মালার সন্ধান করছিল।
১৮. “তুমি ভুলে টাকা দাও নাইতো ?”— কেন একথা বলেছে ?
উত্তরঃ মালার দাম হিসেবে দেওয়া পয়সার আকৃতি এবং অন্ধকারেও ঔজ্জ্বল্য দেখায় বক্তা রাধারাণী প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল।
১৯. “আমার ব্যামো হয় না।” — কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ মাত্র দুটি কাপড় থাকায় রাধারাণীকে সর্বদা ভিজে কাপড়ে থাকতে হয়। এই প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে।
২০. “আগুন জ্বলিতে কাজে কাজেই একটু বিলম্ব হইল।”-এই বিলম্ব হওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ ঘরে তেল না থাকায় চালের খড় পেড়ে চকমকি ঠুকে আগুন জ্বালাতে গিয়ে রাধারাণীর বিলম্ব হয়।
২১. “আলো জ্বলিয়া রাধারাণী দেখিল।”-কী দেখল ?
উত্তরঃ আলো জ্বেলে রাধারাণী দেখেছিল পথিক যা পয়সা বলে দিয়েছিল, তা আসলে টাকা।
২২. “… প্রসন্ন মনে দোকানে ফিরিয়া গেলেন।” — এই প্রসন্নতার কারণ কি ?
উত্তরঃ পদ্মলোচন রুক্মিণীকুমারের কাছ থেকে চার টাকার কাপড়ের দাম আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনা আদায় করে প্রসন্ন হয়েছিল।
২৩. রাধারানী ঘর ঝাঁট দিচ্ছিল কেন ?
উত্তরঃ রাধারানী মাকে খেতে দেবার জন্য তাদের ঘর পরিস্কার করছিল।
২৪. রাধারানীর কুড়িয়ে পাওয়া নোটে কী লেখা ছিল ?
উত্তরঃ রাধারানীর কুড়িয়ে পাওয়া নোটে রাধারাণী এবং দাতা রুক্মিণী কুমার রায়ের নাম লেখা ছিল।
২৫. “তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।”— তারা যে লোভী নয় তা কী করে বোঝা যায় ?
উত্তরঃ রাধারানী এবং তার মা লোভী নয় বলেই রুক্মিণী কুমার রায়ের রেখে যাওয়া নোট না ভাঙ্গিয়ে তুলে রেখেছিল।
২৬. রাধারানী মায়ের পথ্যের জন্য কি করেছিল ?
উত্তরঃ মায়ের পথ্য সংগ্রহের জন্য রাধারাণী বনফুল তুলে মালা গেঁথে রথের হাটে বিক্রি করার পরিকল্পনা করে।
২৭. নােটে নাম লেখার কারণ কী ?
উত্তরঃ কারণ হলাে, পাছে কেউ চোর বলে সন্দেহ প্রকাশ করে তাই নাম লিখেছে লােকটি।
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর রাধারাণী গল্প (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) নবম শ্রেণি বাংলা | Descriptive Short Type Question Answer Radharani Class 9 Bengali wbbse
• কমবেশি ৬০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১. ‘তাহাদিগের অবস্থা পূর্বে ভালো ছিল’– পরবর্তীকালে তাদের দুর্দশার কারণ কী ?
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারাণী পাঠ্যাংশের অন্তর্গত। এই পাঠ্যাংশে লেখক বলছেন পিতৃহারা রাধারাণী বড়ো ঘরের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও একটি মামলার কারণে তাঁর বিধবা মা সর্বস্বান্ত হয়, দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি সবই বাদীপক্ষ কেড়ে নেয় এবং তাঁদেরকে গৃহচ্যুত করে। এমন অবস্থায় তাঁদের সকল অন্ন-সংস্থানের কোনো উপায় থাকে না। এটিই ছিল তাদের দুর্দশার কারণ।
২. ‘সুতরাং আর আহার চলে না।’– কাদের প্রসঙ্গে এই উক্তি ? তাদের আহার বন্ধের উপক্রম হল কেন ?
উত্তরঃ রাধারাণী’ গল্পে মোকদ্দমা-জনিত কারণে তাদের বিষয় সম্পত্তির সঙ্গে সঙ্গে অলংকারাদি ও নগদ টাকাপয়সাও শেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ তাদের সর্বস্ব হারানোর প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে।
জ্ঞাতিপক্ষের কাছে মামলায় হেরে সর্বস্বান্ত হয় রাধারাণী এবং তার বিধবা মা। এর পর শারীরিক পরিশ্রম করে কোনোরকমে তাদের দিনযাপন চলতে থাকে। কিন্তু এর কিছুদিন পরে, রাধারানীর মা ‘ঘোরতর’ অসুখে আক্রান্ত হলে তার কায়িক পরিশ্রমের উপায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তাদের আহারাদির ব্যবস্থাও বিপন্ন হয়।
৩. “কিন্তু আর আহারের সংস্থান রহিল না।” – এই সংস্থান না থাকার কারণ আলোচনা কর।
অথবা,
রাধারাণীর মার দৈন্যদশার কারণ কী ?
উত্তরঃ একজন জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে মামলায় রাধারাণীর বিধবা মা হাইকোর্টে হেরে যায়। জ্ঞাতি ডিক্রি জারি করে তাদের পিতৃপুরুষের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তির দখল নেয়। খরচ এবং পাওনা শোধ করতে বাকি সব অর্থ চলে যায়। গয়না ইত্যাদি বিক্রি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করলেও সেখানেও তারা হেরে যায়। এভাবেই খাবার জোগাড়ের সুযোগ তাদের আর থাকে না।
৩. “রাধারাণীর বিবাহ দিতে পারিল না!”– রাধারাণীর বিবাহ দিতে না পারার কারণ আলোচনা করো।
উত্তরঃ সম্পত্তির অধিকার নিয়ে এক জ্ঞাতির সঙ্গে মামলায় হেরে যাওয়ায় রাধারাণীর বিধবা মার প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া হয়। নগদ টাকা যেটুকু ছিল তা পাওনা শোধ ইত্যাদিতে ব্যয় হয়ে যায়। গয়নাগাটি বিক্রি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করায় তারা আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যায়। এই দারিদ্র্যের কারণেই দৈহিক পরিশ্রম করে কোনো রকমে বেঁচে থাকা রাধারাণীর মার পক্ষে রাধারাণীর বিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
৪. ‘…তাহাতেই মার পথ্য হইবে।’– রাধারাণী কীভাবে মায়ের পথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করেছিল ?
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারানী পাঠ্যাংশের অন্তর্গত। লেখকের কলমে আমরা জানতে পারি যে, রাধারানীর বিধবা মা অসুস্থ হওয়ায় তাদের পরিবারের উপার্জনের উপায় বন্ধ হয়ে যায়। মায়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পথ্য জোগাড় করার জন্য বালিকা রাধারানী একটি উপায় বের করে। সে কিছু বনেরফুল তুলে, দিয়ে মালা গাথে এবং সেই মালা রথের মেলা উপলক্ষে বসা হাটে বিক্রি করে পয়সা রোজগার করে, তাই দিয়ে মায়ের পথ্য বা ওষুধ জোগাড় করার কথা ভাবে।
৫. ‘রথ দেখিতে যায় নাই’- কে রথ দেখতে যায়নি ? কেন সে রথ দেখতে যায়নি লেখো। ১ + ২ = ৩
উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচিত ‘রাধারাণী’ গল্পে রাধারাণী রথ দেখতে যায়নি।
রথের কিছু দিন আগে থেকেই রাধারাণীর মায়ের অসুস্থতা চরম আকার ধারণ করেছিল। রথের দিন তা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। এদিকে ঘরে অসুস্থ মায়ের কোনো পথ্য ছিল না। কোনো উপায় না দেখে রাধারাণী বনফুলের একটি মালা গেঁথে রথের মেলায় বিক্রি করবে বলে রওনা দেয়। তবে তার উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। কারণ প্রবল বৃষ্টিতে রথের মেলা পণ্ড হয়ে যায়। ফলে রাধারাণীকে অবিক্রিত মালা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়।
৬. “অগত্যা রাধারাণী কাদিতে কাঁদিতে ফিরিল।”- রাধারাণীর কেঁদে কেঁদে ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করো।
অথবা,
‘মালা কেহ কিনিল না’– কোন্ মালা ? তা না কেনার কারণ কি ছিল ?
উত্তরঃ রথের দিন রাধারাণীর মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে পথ্যের প্রয়োজন হয়। পথ্যের জন্য টাকা জোগাড় করতে রাধারাণী বনফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় বিক্রি করতে যায়। এক্ষেত্রে সেই মেলার কথাই বলা হয়েছে।
রথ অর্ধেক টান পড়তেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যায়। লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করে। তারপরেও রাধারাণী মালা বিক্রির আশা ছাড়েনি। বৃষ্টি থামবে মেলা আবার বসবে এই আশায় বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা হওয়ার পরেও বৃষ্টি থামেনি। শেষে মালা বিক্রি না হওয়ায় অন্ধকারে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির ফিরে আসে।
৭. ‘সকাতরে বলিল, মা! এখন কী হবে ?’ – কে কোন্ পরিস্থিতিতে একথা বলেছিল ? উত্তরে তার মা কী বলেছিলেন ?
উত্তরঃ রাধারাণী অচেনা ব্যক্তির সাথে বাড়ি ফিরে আসার পর আবিষ্কার করে আগন্তুক রাধারাণীকে পয়সার বদলে টাকা দিয়েছে, এরপর সে বাড়ির বাইরে এসে আগন্তুককে খুঁজে পায়নি। এরপর কিংকর্তব্যবিমূঢ় রাধারাণী তার মাকে আলোচ্য প্রশ্নটি করে।
আলোচ্য প্রশ্নের উত্তরে রাধারানীর মা, তাকে বলে– ‘কি হবে বাছা! সে কি আর না জেনে টাকা দিয়েছে ? সে দাতা, আমাদের দুঃখ শুনিয়া দান করিয়াছে— আমরাও ভিখারি হইয়াছি, দান গ্রহণ করিয়া খরচ করি’।
৮. “কণ্ঠস্বর শুনিয়া রাধারাণীর রোদন বন্ধ হইল।”– কার কণ্ঠস্বর শুনে কেন রাধারাণীর রোদন বন্ধ হয়েছিল ?
উত্তরঃ ‘রাধারাণী’ গল্পাংশের উল্লিখিত অংশে পথিকের গলার আওয়াজ শুনে রাধারাণীর কান্না বন্ধ হয়েছিল।
রথের মেলায় বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যাওয়ার কারণে মালা বিক্রি না হওয়ায় রাধারাণী অন্ধকার রাস্তা ধরে ফিরছিল, তখন কেউ তার ঘাড়ের উপরে এসে পড়ে। ভয়ে সে উচ্চৈঃস্বরে কেঁদে ওঠে। তখন সেই অপরিচিত ব্যক্তি পরিচয় জানতে চাইলে গলার আওয়াজে রাধারাণী দয়ালু মানুষের উপস্থিতিই যেন বুঝতে পেরেছিল। তাই তার কান্না বন্ধ হয়েছিল।
৯. “তুমি দাঁড়াও, আমি আলো জ্বালি”-এই আলো জ্বালার কারণ আলোচনা করো।
উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিতে রথের মেলা ভেঙে যাওয়ায় রাধারাণীর মালা বিক্রি হয়নি। এর ফলে রাধারাণী কাঁদতে কাঁদতে অন্ধকার পথে ফেরার সময় এক পথিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে রাধারাণীর মালাটি চার পয়সা দিয়ে কিনে নেয়। কিন্তু রাধারাণীর সন্দেহ হয় যে তাকে দেওয়া মুদ্রাগুলি বড়ো এবং চকচক করছে। পথিক ‘ডবল পয়সা’, ‘নূতন কলের পয়সা’ ইত্যাদি বললেও নির্লোভ রাধারাণী বাড়িতে গিয়ে তা আলোয় পরীক্ষা করে নেওয়ার কথা জানায়।
১০. “মা! এখন কী হবে ?”- উদ্ধৃত প্রশ্নটি করার কারণ কী ?
উত্তরঃ ‘রাধারাণী’ গল্পাংশে মালার দাম হিসেবে পথিক রাধারাণীকে চার পয়সা দেওয়ার পরেও রাধারাণীর সন্দেহ হয় পথিক পয়সার বদলে টাকা দিয়েছে। পথিক অস্বীকার করলেও রাধারাণী বাড়িতে গিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে সেটি দেখার কথা বলে এবং পথিককে ততক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে। রাধারাণী চকমকি ঠুকে আগুন জ্বেলে দেখে তার অনুমান ঠিক। পথিক তাকে টাকাই দিয়েছে। কিন্তু বাইরে এসে দেখে যে পথিক চলে গিয়েছে। এই অবস্থাতে রাধারাণী অসহায় হয়ে মায়ের কাছে জানতে চায় যে এখন তাদের কী করা উচিত।
১১. “নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না।”— নোটখানি কারা কেন ভাঙাল না ?
উত্তরঃ ‘রাধারাণী’ গল্পাংশে রাধারাণী আর তার মা পথিকের ফেলে যাওয়া নোটটি ভাঙাল না।
রাধারাণী এবং তার মা পথিক রুক্মিণীকুমার রায়ের ফেলে যাওয়া নোটটি ভাঙায়নি। তার কারণ এর আগে মালার দাম হিসেবে তিনি যে টাকা দিয়েছিলেন তাতেই তাদের প্রয়োজন মিটে গিয়েছিল। নোটটি তাদের প্রয়োজন ছিল না। তাই তারা নোটটি তুলে রাখল। কেননা তারা দরিদ্র হলেও লোভী ছিল না।
১২. “তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।”— মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ রথের মেলা থেকে ফেরার পথে রাধারাণীর সঙ্গে একজনের পরিচয় হয়। রাধারাণীকে সাহায্যের জন্য সে তার কাছ থেকে মালা কেনে, তার জন্য কাপড় পাঠানোর ব্যবস্থা করে, এমনকি নিজের ও রাধারাণীর নাম লেখা একটি নোটও তাদের ঘরে রেখে যায়। কিন্তু রাধারাণীরা দরিদ্র হলেও লোভী নয়। সেই ব্যক্তি তাদের জন্য যা দিয়েছিল, তাই যথেষ্ট ছিল। এই উপকারীর উপকারের চিহস্বরূপ সেই নোটটি তারা খরচ করেনি।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর রাধারাণী গল্প (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) নবম শ্রেণি বাংলা | Descriptive Type Question Answer Radharani Class 9 Bengali wbbse
• কমবেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
১. সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘রাধারাণী’ কাহিনি অবলম্বনে রাধারাণী চরিত্র আলোচনা করো।
উত্তরঃ
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘রাধারাণী’ কাহিনির প্রধান চরিত্র রাধারাণী। রাধারাণী এগারো বছর বয়সের বালিকা। তার বিধবা মায়ের একমাত্র কন্যাসন্তান। সে অত্যন্ত বাস্তববাদী। সে নিজমুখে রুক্মিণীকুমারকে পরিচয় দিয়েছে ‘আমি দুঃখীলোকের মেয়ে’ বলে। প্রকৃতপক্ষে সে ধনী ও সুখী পরিবারের মেয়ে ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে তারা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব কুটিরবাসী হয়েছে। তাই বুদ্ধিমতী বালিকা রাধারাণী বনফুল তুলে মালা গেঁথে একা রথের মেলায় গেছে মালা বিক্রি করে সেই পয়সায় মায়ের পথ্যের ব্যবস্থা করতে। বালিকার এই উপস্থিত বুদ্ধি, সাহস ও মায়ের প্রতি মমত্বের তুলনা হয় না।
রাধারাণী অপরিচিত মানুষটির কাছে কোনো কথা গোপন করেনি। তার সত্যবাদিতা ও সারল্য প্রশংসনীয়। সে সৎ মনোভাবের বালিকা। ফুলের মালার ন্যায্য মূল্যই সে চায়। সেজন্য পয়সা না টাকা তা নিয়ে তার সংশয় মেটানোর জন্য লোকটিকে নানাভাবে প্রশ্ন করেছে। এমনকি আলো জ্বেলে টাকা দেখার পরে টাকা ফেরত দিতে গিয়ে সে যখন দেখে লোকটি চলে গেছে তখন টাকা ফেরত দিতে না পারায় সে সংশয় অনুভব করে। মালা বিক্রি করে সেই মূল্য বাবদ দানের টাকা খরচ করেছে, কিন্তু ঘরে পড়ে থাকা নোটে মালিকের নাম লেখা থাকা স্বত্তেও তা সে খরচ করতে চায়নি। আসলে সে লোভী নয়। তার মায়ের এসব শিক্ষা ও পরামর্শ রাধারাণীর জীবনে পরম সম্পদ।
২. “মোকদ্দমাটি বিধবা হাইকোর্টে হারিল”– কোন্ মোকদ্দমার কথা বলা হয়েছে ? মোকদ্দমাটি হেরে বিধবার কী পরিণতি হয়েছিল ? ১+৪ = ৫
উত্তরঃ ‘রাধারাণী’ গল্পে রাধারাণীর বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা’র সঙ্গে এক জ্ঞাতি সম্পর্কের আত্মীয়ের যে হাইকোর্টে মামলা হয়, উদ্ধৃত প্রশ্নে সেই মোকদ্দমার কথাই বলা হয়েছে।
বিষয় সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে রাধারাণীর মায়ের সঙ্গে জ্ঞাতি-সম্পর্কের আত্মীয়ের যে মামলাটি হয়েছিল, তাতে সে হেরে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ডিক্রিদার জ্ঞাতি ডিক্রি জারি করে সমস্ত সম্পত্তি নিজের অধিকারে নেয়, এমনকি পূর্বপুরুষের ভিটে-মাটি থেকেও রাধারাণী ও তার মাকে বের করে দেয়। সব মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি রাধারাণীদের হাতছাড়া হয়। মামলার খরচ ও ক্ষতিপূরণ মেটাতে রাধারাণীর মায়ের অর্জিত সমস্ত নগদ অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। তবু শেষ পর্যন্ত রাধারাণীর মা অলংকার বিক্রি করে উচ্চতর আদালতে অর্থাৎ প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করে। কিন্তু এ সব কিছুর পরে তারা সম্পূর্ণ নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে পড়ে। একটি কুটিরে আশ্রয় নিয়ে কোনোরকমে প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে, অর্ধাহারে-অনাহারে তাদের দিন কাটতে থাকে।
৩. ‘তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে’ – কাদের কথা বলা হয়েছে ? পাঠ্যাংশ অনুসরণে তাদের দারিদ্র্য এবং তারা যে লোভী নয় তাই আলোচনা করো।
উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারাণী পাঠ্যাংশের অন্তর্গত, লেখক এখানে ‘তাদের’ বলতে পাঠ্যাংশের দুটি প্রধান চরিত্র রাধারাণী এবং তার মায়ের কথা বুঝিয়েছেন।
রাধারাণীদে অবস্থা একসময় ভালো ছিল। এখন তারা প্রকৃতই গরিব। তাদের এক জ্ঞাতি হাইকোর্টের ডিক্রির জোরে তাদের সর্বস্ব দখল করেছে। সব হারিয়ে তার বিধবা মা তাকে নিয়ে কুটিরবাসিনী। ঘরে প্রদীপ জ্বালার তেলটুকু নেই। দেশলাই নেই। চকমকি ঠুকে আলো জ্বালতে হয়। রাধারাণীর পড়বার একটিমাত্র শাড়ি আছে। সেটি ভিজিয়ে ফেললে সেই ভিজে কাপড় শরীরেই শুকায়। এমন গরিব হয়েও ঘর ঝাঁট দিতে গিয়ে টাকার নোট পেয়েও তা ভাঙিয়ে আত্মসাৎ করে না। নোটের স্বাক্ষরকারীর খোঁজ না পেয়ে তা ভাঙানো অনুচিত বলে তাদের মনে হয়েছে। রুক্মিনীকুমারের দেওয়া টাকাতে তাদের আহারের প্রয়োজন মিটে যাওয়ায় তারা আর নোট ভেঙ্গে বিলাসিতা করার কথা ভাবতেও পারে না। তাই তাদের নির্লোভী বলা হয়েছে।
৪. ‘রাধারাণী’ রচনাংশ অবলম্বনে সেকালের সমাজজীবনের পরিচয় দাও।
উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাধারাণী’ রচনাংশটি কোনো সামাজিক সমস্যা ও সংকটকে অবলম্বন করে রচিত না হলেও কাহিনির প্রেক্ষাপটে সমাজ উঁকি দিয়েছে বারেবারেই রাধারাণীর মার নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ কিংবা মামলা-মোকদ্দমা তখন যথেষ্টই ছিল। রথের মেলা উপলক্ষ্যে লোকের ভিড় গ্রামবাংলারই জীবন্ত ছবি। দারিদ্র্য কত কষ্টকর হতে পারে তার পরিচয় পাওয়া যায় যখন রাধারাণীদের খাবার জোটে না, কিংবা রাধারাণী জানায় তার দুটি ভিন্ন কাপড় নেই— ভিজে কাপড়ে থাকতেই সে অভ্যস্ত। কাপড়ের ব্যবসায়ী পদ্মলোচন সাহা অসৎ ব্যাবসাবৃত্তির প্রতীক হয়ে থাকে, যে চার টাকার কাপড় আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনায় বিক্রি করে। মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার যে চল ছিল তা বোঝা যায় যখন রাধারাণী সম্পর্কে লেখক বলেন— “রাধারাণী বড়ো ঘরের মেয়ে, একটু অক্ষরপরিচয় ছিল।” রাধারাণী এবং তার মায়ের রুক্মিণীকুমার রায়ের রেখে যাওয়া নোট তুলে রাখার মধ্য দিয়ে বোঝা যায় পদ্মলোচনের মতো অসৎ চরিত্রের বিপরীতে সৎ এবং আদর্শবাদী মানুষও তখন সমাজে যথেষ্ট ছিল।
৫. “রাধারাণী নামে এক বালিকা মাহেশে রথ দেখিতে গিয়াছিল।”— রাধারাণী’র মাহেশে রথ দেখতে যাওয়ার কারণ কী ছিল ? সেখানে তার কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল?
উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাধারাণী’ গল্পাংশের প্রধান চরিত্র রাধারাণী ছিল এগারো বছরেরও কমবয়সি একটি মেয়ে। জ্ঞাতির সঙ্গে মোকদ্দমায় বিপুল সম্পত্তি বেহাত হওয়ার পরে রাধারাণীর বিধবা মা একটা কুটিরে আশ্রয় নিয়ে শারীরিক পরিশ্রম করে পেটের ভাত জোগাড় করতেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাধারাণীদের দিন চলা ভীষণ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। রাধারাণীকে উপোস করতে হয়। কিন্তু রথের দিন তার মায়ের অসুখ বেড়ে গেলে পথ্যের প্রয়োজন হয়। এই পথ্য জোগাড়ের জন্য রাধারাণী বন থেকে ফুল তুলে এনে একটি মালা গাঁথে। মালাটি বিক্রি করে মায়ের পথ্য জোগাড় করার জন্যই রাধারাণী মাহেশে রথের মেলায় যায়। প্রবল বৃষ্টির কারণে মেলা অসময়ে ভেঙে যাওয়ায় রাধারাণীর মালা বিক্রি হয় না। রাধারাণী যখন কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরছে তখনই অন্ধকার পথে তার ঘাড়ের উপরে একটি লোক এসে পড়ে। সে রাধারাণীর কান্নার কারণ জানতে চায়। লোকটির গলার আওয়াজেই তার দয়ালু স্বভাব উপলদ্ধি করে রাধারাণী। এরপরে রাধারাণীর হাত ধরে সেই অন্ধকার পিছল পথে লোকটি তাকে বাড়ি পৌঁছোতে সাহায্য করে এবং রথের মেলায় মালা বিক্রি না হওয়ায় কিনে নেয়।
৬. “আমরাও ভিখারি হইয়াছি, দান গ্রহণ করিয়া খরচ করি।”— বক্তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট গল্পাংশ অবলম্বনে আলোচনা করো।
উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাধারাণী’ গল্পাংশে রাধারাণীর মা এই উক্তিটি করেছেন। রাধারাণীদের অবস্থা একসময় খুব ভালো ছিল। কিন্তু রাধারাণীর বাবার মৃত্যুর পরে এক জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি সম্পর্কিত বিবাদে জড়িয়ে গিয়ে, হাইকোর্টে হেরে মামলার খরচ ও ওয়াশিলাত অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ দিতে, প্রিভি কাউন্সিলে আবেদন করতে রাধারাণীর মা নিঃস্ব হয়ে যান। রাধারাণীর মা একটা কুটিরে আশ্রয় নিয়ে শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে দিন কাটাতে থাকেন। মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়। উপোস করে দিন কাটানো শুরু হয়। অসুস্থ মায়ের পথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে রাধারাণী বনফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় বিক্রি করতে গেলেও বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যাওয়ায় তার মালা বিক্রি হয় না। ফেরার পথে এক পথিক সব শুনে চার পয়সায় মালাটি কিনে নেয়। কিন্তু বাড়ি ফিরে পথিককে বাইরে দাড়াতে বলে সে আগুন জ্বালিয়ে যখন দেখে তাকে পয়সার বদলে টাকা দেওয়া হয়েছে, তখন বাইরে বেরিয়ে সে পথিককে খুঁজে পায় না। বিভ্রান্ত হয়ে রাধারাণী তার মায়ের কাছে পরামর্শ চাইলে মা বলেন যে, দাতা অর্থ দিয়েছেন এবং দরিদ্র বলেই তাদের তা গ্রহণ করে খরচ করা ছাড়া অন্য উপায় নেই।
৭. “নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না— তুলিয়া রাখিল—তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।”– মন্তব্যটির তাৎপর্য গল্পাংশ অবলম্বনে আলোচনা করো।
উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাধারাণী’ গল্পাংশে রাধারাণীর মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় এগারো বছরেরও কমবয়সি পিতৃহীন রাধারাণীকে মায়ের পথ্য সংগ্রহের জন্য ফুলের মালা গেঁথে তা রথের হাটে বিক্রির জন্য যেতে হয়। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির কারণে মালা বিক্রি না হলে এক পথিক তার সাহায্যকারীর ভূমিকায় উপস্থিত হন। তিনি যে শুধু মালাটি কিনে নেন তাই নয়, চার পয়সা দাম ঠিক হলেও তার বদলে দুটি টাকা দেন। এই ঘটনাটি রাধারাণী মেনে নিতে না পারলেও মায়ের কথায় তা গ্রহণ করে। এরপরে কাপড় ব্যবসায়ী পদ্মলোচনের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পাঠানো দুটি কাপড়ও রাধারাণী বিস্ময়ের সঙ্গে গ্রহণ করে। কিন্তু ঘর ঝাঁট দিতে গিয়ে পাওয়া নোটটি সে বা তার মা গ্রহণ করতে পারেনি। কারণ তা ছিল তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। তাই নোটটি পাওয়ার পরদিন সেটি ফেরত দেওয়ার জন্য তারা সেই পথিক রুক্মিণীকুমার রায়ের অনেক খোঁজ করেছিল। তাকে খুঁজে না পেয়ে নোটটি না ভাঙিয়ে তারা তুলে রাখে। এই ঘটনা প্রমাণ করে দারিদ্র্য রাধারাণীর পরিবারের সততা ও নির্লোভ মানসিকতা কেড়ে নিতে পারেনি, বরং লোভকে জয় করার মধ্য দিয়ে তারা মহান হয়ে উঠেছে।