সাম্যবাদী কবিতার আলোচনা, বিশ্লেষণ, সারাংশ একাদশ শ্রেণির বাংলা সেমেস্টার-১ | Poem Sammobadi Discussion, Analysis, Summary Class 11 Bengali Semester-I WBBSE

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

সাম্যবাদী কবিতার আলোচনা, বিশ্লেষণ, সারাংশ একাদশ শ্রেণির বাংলা সেমেস্টার-১ | Sammobadi Kobita Discussion, Analysis, Summary Class 11 Bengali Semester-I WBBSE

📌 একাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here

সাম্যবাদী
—কাজী নজরুল ইসলাম

গাহি সাম্যের গান-
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান,
যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম ক্রিশ্চান।
গাহি সাম্যের গান!
কে তুমি ?- পার্সি ? জৈন ? ইহুদি ? সাঁওতাল, ভীল, গারো ?
কনফুসিয়াস্ ? চার্বাক-চেলা ? বলে যাও, বল আরও!

বন্ধু, যা খুশি হও,
পেটে-পিঠে, কাঁধে-মগজে যা-খুশি পুঁথি ও কেতাব বও, কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রিপিক-
জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থ-সাহেব পড়ে যাও যত সখ,- কিন্তু কেন এ পণ্ডশ্রম, মগজে হানিছ শূল ?
দোকানে কেন এ দর-কষাকষি ?- পথে ফোটে তাজা ফুল!
তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান,
সকল শাস্ত্র খুঁজে পাবে সখা খুলে দেখ নিজ প্রাণ!
তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম, সকল যুগাবতার,
তোমার হৃদয় বিশ্ব-দেউল সকলের দেবতার। কেন খুঁজে ফের দেবতা-ঠাকুর মৃত-পুথি-কঙ্কালে ?
হাসিছেন তিনি অমৃত-হিয়ার নিভৃত অন্তরালে!

বন্ধু, বলিনি ঝুট,
এইখানে এসে লুটাইয়া পড়ে সকল রাজমুকুট
এই হৃদয়ই সে নীলাচল, কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন,
বুদ্ধ-গয়া এ, জেরুজালেম এ, মদিনা, কাবা-ভবন,
মজিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়, এইখানে বসে ঈসা মুসা পেল সত্যের পরিচয়।
এই রণ-ভূমে বাঁশির কিশোর গাহিলেন মহা-গীতা,
এই মাঠে হলো মেষের রাখাল নবিরা খোদার মিতা।
এই হৃদয়ের ধ্যান-গুহা মাঝে বসিয়া শাক্যমুনি
ত্যজিল রাজ্য মানবের মহা-বেদনার ডাক শুনি।
এই কন্দরে আরব-দুলাল শুনিতেন আহ্বান, এইখানে বসি গাহিলেন তিনি কোরানের সাম-গান!
মিথ্যা শুনিনি ভাই,
এই হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো মন্দির-কাবা নাই।

উৎসঃ ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের লেখা ‘সাম্যবাদী’ (১৯২৫) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

শব্দার্থ ও টীকা—

আরব-দুলাল— আরব সন্তান। এখানেহযরত মুহম্মদ (স) কে বোঝানো হয়েছে।
•‌ ইহুদি— প্রাচীন হিব্রু বা জু-জাতি ও ধর্ম- সম্প্রদায়ের মানুষ।
কনফুসিয়াস— চিন দেশের একজন প্রখ্যাত দার্শনিক। এখানে তাঁর অনুসারীদের বোঝানো হয়েছে।
কন্দরে— পর্বতের গুহা, হৃদয়ের গভীর গোপন স্থান।
কোরানের সাম্য-গান— পবিত্র কোরানের সাম্যের বাণী।
কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন, গয়া— হিন্দুদের পবিত্র ধর্মীয় কয়েকটি স্থান।
গারো— গারো পর্বত অঞ্চলের অধিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীবিশেষ।
চার্বাক— একজন বস্তুবাদী দার্শনিক ও মুনি। তিনি বেদ, আত্মা, পরলোক ইত্যাদিতে আস্থাশীল ছিলেন।
জেরুজালেম— ফিলিস্তিনে অবস্থিত এই স্থানটি মুসলমান, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের নিকট সমভাবে পুণ্যস্থান।
জেন্দাবেস্তা— পারস্যের অগ্নি উপাসকদের ধর্মগ্রন্থ আবেস্তা এবং তার ভাষা জেন্দা।
জৈন— জিন বা মহাবীর প্রতিষ্ঠিত ধর্মমতাবলম্বী সম্প্রদায়।
ঝুট— মিথ্যা।
দেউল— দেবালয়, মন্দির।
নীলাচল— জগন্নাথক্ষেত্র, নীলবর্ণযুক্ত পাহাড়। যে বিশাল পাহাড়ের পরিসীমা নির্ধারণ করা যায় না।
পার্সি— পারস্যদেশের বা ইরানের নাগরিক।
বাঁশির কিশোর গাহিলেন মহা-গীতা— হিন্দুধর্মের অবতার শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণীই শ্রীমদ্‌ভগবদ্গীতা।
মসজিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়— মানুষের হৃদয়ই মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতো পবিত্র।
যুগাবতার— বিভিন্ন যুগে অবতীর্ণ মহাপুরুষ।
শাক্যমুনি— শাকবংশে জন্ম যার, বুদ্ধদেব।
সাম্য— সমদর্শিতা, সমতা।
সাম্যবাদ— জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল মানুষের সমান অধিকার থাকা উচিত এই মতবাদ।
সাঁওতাল, ভীল— ভারতীয় উপমহাদেশের আদিম নৃগোষ্ঠীবিশেষ।

সকল শাস্ত্রখুঁজে পাবে সখা খুলে দেখদেখ নিজ প্রাণ— ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোরান শরিফ, হিন্দুদের বেদ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বাইবেল-এভাবে পৃথিবীর নানাজাতির নানা ধর্মগ্রন্থ। কবি এখানে বলতে চেয়েছেন সকল ধর্মগ্রন্থের মূলমন্ত্র মানুষের হৃদয়ের মধ্যেই সংকলিত আছে তা হচ্ছে মানবতাবোধ, সমতার দৃষ্টিভঙ্গি।

হিয়া— হৃদয়।

কবিতা পাঠ বিশ্লেষণ—

গাহি সাম্যের গান
যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান।
গাহি সাম্যের গান!
কে তুমি?- পার্সী? জৈন? ইহুদী? সাঁওতাল, ভীল, গারো?
কনফুসিয়াস? চার্বাক-চেলা? বলে যাও, বলো আরো!

গাহি সাম্যের গান-
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান,
যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম ক্রিশ্চান।
গাহি সাম্যের গান!
কে তুমি?- পার্সি? জৈন? ইহুদি? সাঁওতাল, ভীল, গারো?
কনফুসিয়াস্? চার্বাক- চেলা? বলে যাও, বলো আরও!

মানবতাবাদী কবি ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় সাম্যের জয়গান গেয়েছেন। সাম্যবাদের মধ্যে কোন বাধা-ব্যবধান নেই, সবাই সমান। সেখানে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ সবাই সমান। তাঁর দৃষ্টিতে পার্সি, জৈন, সাঁওতাল, ভিল, গারো, কনফুসিয়াস, চার্বাক-চেলা যে যাই বলুক সবাই মানুষ, সবাই সমান।

বন্ধু, যা-খুশি হও
পেটে পিঠে কাঁধে মগজে যা-খুশি পুঁথি ও কেতাব বও,
কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রিপিক
জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থ সাহেব পড়ে যাও, যত সখ,-
কিন্তু কেন এ পণ্ডশ্রম, মগজে হানিছ শূল?
দোকানে কেন এ দর-কষাকষি?- পথে ফোটে তাজা ফুল!

যার যা খুশি হোক, যার যত খুশি পুঁথি পুস্তক বয়ে বেড়াক, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ যেমন : কুরান, পুরাণ-বেদ-বেদান্ত, বাইবেল-ত্রিপিটক পড়াক, তা কেবল মগজই নষ্ট করবে। বিশেষ কোন লাভ হবে না। সেগুলো দোকানে দর কষাকষি করে ফুল কেনার মতো বোকামির তুল্য। কারণ বিনা দরে পথেই যখন তাজা ফুল পাওয়া যায়, তখন তা যত্নে সংগ্রহ করলেই হয়। অর্থাৎ ধর্মগ্রন্থ নয়, পথের পাশের ক্লীষ্ট-ক্লান্ত মানুষের উপকারই বড়ো ধর্মগ্রন্থের পরিচায়ক।

তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান,
সকল শাস্ত্র খুঁজে পাবে সখা খুলে দেখ নিজ প্রাণ!
তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম, সকল যুগবতার,
তোমার হৃদয় বিশ্ব-দেউল সকলের দেবতার।
কেন খুঁজে ফের দেবতা ঠাকুর মৃত-পুঁজি-কঙ্কালে?
হাসিছেন তিনি অমৃত-হিয়ার নিভৃত অন্তরালে!

এই সত্যবাণী কেতাবে খুঁজে, শাস্ত্র ঘেঁটে উদ্ধার করার চেষ্টা করা বৃথা। কারণ ঐসব কেতাব, গ্রন্থ, শাস্ত্র খোঁজার আগে নিজের প্রাণ খুলে সেখানে অনুসন্ধান করতে হবে। সেখানে সকল কালের জ্ঞানের সত্যের সন্ধান লাভ হবে। সেখানে সকল কালের জ্ঞানের সত্যের সন্ধান লাভ হবে। কারণ মানুষের হৃদয়ই সকল দেবতার বিশ্ব-দেবালয়। হৃদয়েই সকল ধর্ম, সকল যুগাবতারের অবস্থান। তাঁকে প্রাণহীন বইপত্রে খুঁজে কী লাভ ? তিনি তো সেখানে থাকেন না। তিনি অবস্থান করেন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের অন্তরালে।

বন্ধু, বলিনি ঝুট,
এইখানে এসে লুটাইয়া গড়ে সকল রাজমুকুট।
এই হৃদয়ই সে নীলাচল, কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন,
বুদ্ধ-গয়া এ, জেরুজালেম এ, মদিনা, কাবা-ভবন,
মসজিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়,
এইখানে বসে ঈসা মুসা পেল সত্যের পরিচয়।

এটা মিথ্যা নয়, এটাই সত্য। জগতের সকল রাজার রাজমুকুটের মহিমা চূর্ণ হয় মানুষের সুন্দর হৃদয়ের কাছে। মানুষের হৃদয় সিংহাসনই সবচেয়ে আরাধনার বস্তু। হৃদয়ই নীলাচল, কাশী, মথুরা-বৃন্দাবন, বুদ্ধ-গয়া, জেরুজালেম, মদিনা, কাবা। কারণ সমস্ত বিশ্বাসের মূলেই হৃদয়ের ক্রিয়া। মসজিদ, মন্দির, গির্জায় যে বিশ্বাসের বাণী প্রচার হয় তার মূলে মানুষ। আর মানুষের সবচেয়ে বড়ো হচ্ছে আপন হৃদয়। এই হৃদয়ের জোরেই ঈসা মুসা সত্যের সন্ধান করেছেন এবং সত্য লাভ করেছেন।

এই রণ-ভূমে বাঁশির কিশোর গাহিলেন মহা-গীতা,
এই মাঠে হল মেষের রাখাল নবিরা খোদার মিতা।
এই হৃদয়ের ধ্যান-গুহা-মাঝে বসিয়া শাক্যমুনি
ত্যাজিল রাজ্য মানবের মহা-বেদনার ডাক শুনি।

এই হৃদয়ের আঙ্গিনাতেই মহা-গীতা ধ্বনিত হয়। এই হৃদয়ের জোরেই রাখাল বালক কৃষ্ণ খোদার দোস্তি লাভ করেন। শাক্যমুনি গুহায় ধ্যান করেন এই হৃদয়ের শুদ্ধতার জন্যই। তিনি রাজ্য ছেড়ে বেদনাহত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান এই হৃদয়ের টানেই।

এই কন্দরে আরব-দুলাল শুনিতেন আহ্বান
এখানে বসি গাহিলেন তিনি কোরানের সাম-গান!

ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মহম্মদ পাহাড়ের গুহায় এই হৃদয়ের ধ্যানেই মহান আাল্লাহর বাণী লাভ করেন এবং পবিত্র কোরানের সাম্যের বাণী প্রচার করেন।

সাম্যবাদী কবিতার সারসংক্ষেপ / বিষয়বস্তু / মূলভাব / সারাংশ—

‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের লেখা ‘সাম্যবাদী’ (১৯২৫) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। সাম্য কথার অর্থ হলো সমতা। আর, সাম্যবাদ হল এমন এক মতবাদ যা জাতি-ধর্ম-বর্ণ, স্ত্রী- পুরুষ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকার স্বীকার করে।

জন্মসূত্রে আমরা সকলেই মানুষ। মানুষই আবার ধর্মীয় বেড়াজাল তৈরি করে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। পুথিপড়া ধর্মজ্ঞান নিয়ে মানুষ নিজেদের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে কেবল হানাহানি করে। তাই ধর্মগ্রন্থ পাঠ করার আগে কবি মানুষকে হৃদয়বান হতে বলেছেন। মানবহৃদয়েই সকল ধর্মগ্রন্থের সারমর্ম সংকলিত রয়েছে। মানুষের হৃদয় হলো পবিত্র তীর্থভূমি, তাই তীর্থক্ষেত্রে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কবির মতে, মানবিকতাই হলো শ্রেষ্ঠ ধর্ম। মানুষের মধ্যে রয়েছে সকল ধর্মের সকল যুগাবতার। এইভাবে, আলোচ্য কবিতায় কবি ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে আদর্শ, সাম্যবাদী সমাজ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক মানবসমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। কবির বিশ্বাস মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে পরিচিত হয়ে ওঠা সবচেয়ে সম্মানের। নজরুলের এ আদর্শ আজও প্রতিটি মানুষের জীবনপথের প্রেরণা। কিন্তু মানুষ সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে রাজনীতি করে, দুর্বলকে শােষণ করে, এখনও একের বিরুদ্ধে অন্যকে উস্কে দেয়। এক জনের প্রতি অন্য জনকে বিমুখ করার ষড়যন্ত্র করে।

নজরুল এ কবিতায় বলেছেন- “মানুষেরই মাঝে স্বর্গনরক মানুষেতে সুরাসুর।” নজরুল জোর দেন অন্তর ধর্মের ওপর। ধর্মগ্রন্থ পড়ে অর্জিত জ্ঞান যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে প্রয়োজন মানবিকতাবোধ। কবি বলেছেন মানুষের হৃদয়ের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন মন্দির কাবা নেই। কবি সকল মত, সকল পথের উপরে স্থান দিয়েছেন মানবিকতা। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম সকলকে একই মায়ের সন্তানের মতো ভেবেছেন। নজরুল মানবিক মেলবন্ধনের জন্য সংগীত রচনা করেছেন। বাণী ও সুরের মাধ্যমে মানবতার সুবাস ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন।

নজরুল ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতো পবিত্র মনে করেছেন মানুষের হৃদয়কে। এ হৃদয় যদি পবিত্র থাকে, হৃদয়ে যদি কারো প্রতি হিংসা, বিদ্বেষ না থাকে, সকলের প্রতি সমদর্শিতা থাকে তাহলে পৃথিবী হবে সুখের আবাসস্থল। সাম্যবাদ মানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল মানুষের সমান অধিকার থাকা উচিত। কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় সব ধরনের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সাম্যবাদের বাণী প্রচার করেছেন।

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (জ্ঞানমূলক)—

১. কবি নজরুল গোটা মানব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে আগ্রহী – সাম্যের গান গেয়ে।

২. জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল মানুষের সমান অধিকার থাকা উচিত- এ মতবাদকেই বলে – সাম্যবাদ।

৩. মহাবীর প্রতিষ্ঠিত ধর্মমতাবলম্বীদের ধর্মকে বলা হয়- জৈন ধর্ম।

৪. মানুষের বেদনা লাঘবে রাজ্য ত্যাগ করেন- শাক্যমুনী।

৫. ‘সাম্যবাদী কবিতায় শাক্যমুনি বলা হয়েছে – বুদ্ধদেবকে।

৬. বুদ্ধদেবের জন্ম – শাক্য বংশে।

৭. বেদ, আত্মা ও পরলোকে বিশ্বাস করতেন না— চার্বাক নামক একজন বস্তুবাদী দার্শনিক।

৮. ‘সাম্যবাদী কবিতায় তাজা ফুল ফোটে – পথে।

৯. সকল রাজমুকুট লুটিয়ে পড়ে – হৃদয়ে এসে।

১০. সকল দেবতার বিশ্ব দেউল – হৃদয়।

১১. দেউল শব্দের অর্থ – দেবালয়/মন্দির।

১২. ‘সাম্যবাদী কবিতায় হৃদয়কে বলা হয়েছে- বিশ্বদেউল।

১৩. কবি নজরুল দেবতা ঠাকুরকে খুঁজতে মানা করেছেন – মৃত পুঁথি কঙ্কালে।

১৪. যেখানে সব বাধা ব্যবধান এক হয়ে গেছে, সেখানে কবি গাইতে চান- সাম্যের গান।

১৫. ‘সাম্যবাদী কবিতায় হিয়াকে তুলনা করা হয়েছে – অমৃতের সাথে।

১৬. কবি নজরুল বাঁশির কিশোর বলেছেন – শ্রীকৃষ্ণকে।

১৭. কনফুসিয়াস ছিলেন একজন- চীনা দার্শনিক।

১৮. চার্বাক এর জন্মস্থান – পারস্যে।

১৯. চার্বাক ছিলেন একজন- নাস্তিক/ বস্তুবাদী দার্শনিক।

২০. মুসা-ঈসা সত্যের পরিচয় পেয়েছিলেন – আপন হৃদয়ের মাঝেই।

২১. কোরানের সাম গান গেয়েছেন – আপন হৃদয়ের মাঝেই।

২২. রণভূমি হল – যুদ্ধক্ষেত্র।

২৩. ঝুট অর্থ – মিথ্যা (এটি একটি হিন্দি শব্দ)।

২৪. কবি নজরুল পেটে পিঠে, কাঁধে-মগজে বইতে বলেছেন- পুঁথি ও কিতাব।

২৫. ভারতীয় উপমহাদেশের আদিম নৃগোষ্ঠীবিশেষ হচ্ছে – সাঁওতাল ভীল।

২৬. ‘কন্দর’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ -পাহাড়ের গুহা।

২৭. ‘সাম্যবাদী কবিতায় ‘কন্দর বলতে বোঝানো হয়েছে- হৃদয়ের গভীর গোপন স্থানকে।

Leave a Reply