সাহিত্য মেলা
অষ্টম শ্রেণি বাংলা
শিকল-পরার গান কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Sikol Porar Gaan Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse
শিকল-পরার গান কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Sikol Porar Gaan Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse
শিকল-পরার গান কবিতার কবিতা, কবি পরিচিতি, কবিতার ব্যাখ্যা, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Sikol Porar Gaan Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse
1. অষ্টম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. অষ্টম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্ন Click Here
শিকল-পরার গান কবিতার কবিতা, কবি পরিচিতি, কবিতার ব্যাখ্যা, শব্দার্থ, হাতে কলমে প্রশ্ন ও উত্তর, অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর অষ্টম শ্রেণির বাংলা | Sikol Porar Gaan Kobitar Question Answer Class 8 Bengali wbbse
কবি পরিচিতিঃ কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) : বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসাবে সমাদৃত। জন্ম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র বাংলায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মানবতার কবি নজরুল ইংরেজের শোষণ, সামাজিক অসাম্য, ধর্মীয় ভন্ডামি এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তাঁর সাহিত্যকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। হিন্দু ও মুসলিম ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে তিনি সদাসচেষ্ট। কবিতা এবং গদ্য ব্যতিরেকে নজরুল-প্রতিভা সার্থকতা লাভ করেছিল তাঁর গানে। তিনি শ্যামাসংগীত, গজল, দেশাত্মবোধক, ইসলামি প্রভৃতি নানা ধরনের গানেরও রচয়িতা। তাঁর লেখা বইগুলি হলো অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, সাম্যবাদী, সর্বহারা, ফণীমনসা, প্রলয়শিখা প্রভৃতি।
পাঠ্য কবিতাটি তাঁর বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
উৎস : ‘শিকল-পরার গান’ কবিতাটি ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত কাজী নজরুল ইসলামের বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
সারমর্মঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘শিকল-পরার গান’ শীর্ষক কবিতায় পরাধীনতার বন্ধনমোচনে তৎপর ভারতীয়দের দৃঢ় মনোভাব ফুটে উঠেছে। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ রাজশক্তির দমন-পীড়ন-নিগ্রহের কলঙ্ক মানুষের স্বাধীনতার প্রবল ইচ্ছাকে অবরুদ্ধ করতে পারেনি। ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদী আন্দোলনকে স্তিমিত ও স্তব্ধ করতে দেশজুড়ে ইংরেজরা কারাগারের অন্ধকারে বন্দি করেছে আন্দোলনকারীদের। তবু এই বিদ্রোহকে দমন করা যায়নি। নির্ভীক, একনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধারা কারাবরণের মধ্যে দিয়েই অহংকারী ব্রিটিশ রাজশক্তিকে বিদ্রুপ করেছেন, তাঁদের শিকল বাজিয়ে দেশমাতৃকার চরণবন্দনার সুর সৃষ্টি করেছেন। বন্ধনে ধরা দেওয়ার মধ্য দিয়েই তাঁরা বন্ধনমোচনের সংকল্প গ্রহণ করেছেন। বন্ধনেই তাঁদের বন্ধনের ভয় কেটেছে, মাভৈঃ মন্ত্রে তাঁরা দীক্ষিত হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যতের মানুষরা এই স্বাধীনতাযোদ্ধা বীরদের জীবনাদর্শের আলোয় মুক্তি সংগ্রামে ব্রতী হবেন এবং এভাবেই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা আসবে– কাজী নজরুল ইসলাম এই কবিতায় এই আশায় প্রকাশ করেছেন।
নামকরণঃ কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার সাধারণ বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই শিকল পরার গান কবিতাটি লেখা। পাঁচটি স্তবকে বিন্যস্ত কবিতাটিতে প্রথম স্তবকে কবি বলেছেন যে, শিকল পরাটা শুধুমাত্র একটা ছলনা মাত্র। এই শিকল পড়ে অত্যাচারীদের বিকল করাই এর আসল উদ্দেশ্য। দ্বিতীয় স্তবকে তিনি বলেছেন যে বন্ধ কারাগারে বন্দি হতে নয়, অত্যাচারীদের ভিতর থেকে ক্ষয় করতেই এখানে আসা। বাঁধন দিয়ে যতই আবদ্ধ করা হবে, ততই বাঁধনের ভয় কমতে থাকবে। যে পায়ে আজ শিকল বাঁধা, সেই পা দিয়েই শিকল ভাঙা হবে। তৃতীয় স্তবকে কবি বলেছেন, ছোটো ছোটো কারাগারের মধ্যে মানুষকে বন্দি করে যারা বিশ্বকে গ্রাস করছে তারা ভাবছে যে তারা বিধাতাকেও ভয় দেখাতে পারবে। যারা ভয় দেখাচ্ছে তাদের বিতাড়নের জন্যে বিজয়মন্ত্র গাওয়া হবে। চতুর্থ স্তবকে কবি অত্যাচারীদের মূল অস্ত্র ভয়ের উপরেই আঘাত হানতে বলেছেন। শেষ স্তবকে এসে তিনি বলেছেন যে শিকলের শব্দের মধ্যে বন্দিদের কান্না নয়, মুক্তির অগ্রদূতের চরণ বন্দনা ধ্বনিত হচ্ছে। যারা লাঞ্ছিত হয়েছে তাঁরাই অত্যাচারকে লাঞ্ছিত করবে। দধীচির মতো আবার অস্থি দিয়ে বজ্র নির্মাণ করে অত্যাচারীকে আঘাত হানতে হবে। কবিতাটিতে কবি বিষয়বস্তুর সাথে কাব্যিক ছন্দ ও লয় এর মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। কবিতাটির রচনা কৌশল গানের কথার মতোই। আর কবিতার বিষয়বস্তুতে বারবার শৃঙ্খলের বন্ধন ধ্বনিত হয়েছে। তাই কবিতাটির নাম ‘শিকল পরার গান’ যথার্থ হয়েছে।
শব্দার্থ : ক্রন্দন – কান্না। লাঞ্ছনা– নিগ্রহ, অপমান। চরণ– পা। বন্দনা– উপাসনা, আরাধনা। ঝঞ্ঝনা– ধাতব আওয়াজ। বন্ধনী– যা দিয়ে বাঁধা হয়। মাভৈঃ– ভয় নেই। অগ্রদূত– পথপ্রদর্শক। অস্থি– হাড়। বজ্রানল– বজ্রবিদ্যুতের আগুন।
হাতেকলমে প্রশ্নোত্তর : শিকল-পরার গান কবিতা অষ্টম শ্রেণি বাংলা | Hate Kolome Question Answer Shikol Porar Gaan Kobita Class 8 Bengali wbbse
১.১ কবি কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?
উত্তরঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১.২ তিনি কী কী ধরনের গানের রচয়িতা ?
উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলাম রাগপ্রধান, ভক্তিগীতি, গজল, লোকগীতি, দেশাত্মবোধক, হাস্যকৌতুক প্রভৃতি নানা ধরনের গানের রচয়িতা।
২। নীচের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটি বাক্যে লেখাে :
২.১ ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে কবি প্রকৃতপক্ষে কী বােঝাতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে, কবি প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতা অর্জনে কারাবরণ করে শিকল পরার ভীতি দূর করাকে বােঝাতে চেয়েছেন।
২.২ ‘ক্ষয় করতে আসা মােদের সবার বাঁধন-ভয়। —‘বাঁধন-ভয়’ ক্ষয় করতে কারা, কোথায় এসেছেন ?
উত্তরঃ কবি-সহ তাঁর অনুগামী দেশভক্তরা ‘বাঁধন-ভয়’ ক্ষয় করতে ব্রিটিশের কারাগারে এসেছেন।
২.৩ ‘মুক্তি-পথের অগ্রদূতের চরণ-বন্দনা’ কীভাবে রচিত হয় ?
উত্তরঃ দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য ব্রিটিশদের হাতে আক্রান্ত হওয়া এবং মুক্তিকামী দেশভক্তদের পায়ে শিকল পরার মাধ্যমে তাঁদের চরণ-বন্দনা রচিত হয়।
২.৪ ‘মােদের অস্থি দিয়েই জ্বলবে দেশে আবার বজ্ৰানল।’ —পঙক্তিটিতে ‘আবার’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে কেন ?
উত্তরঃ পৌরাণিক যুগে যেমন ঋষি দধিচির অস্থি দিয়ে বজ্র নির্মাণ করা হয়েছিল তেমনই আবার স্বাধীনতাকামী মানুষদের অস্থি দিয়ে বজ্র তৈরি হবে। তাঁদের আত্মত্যাগেই দেশের স্বাদীনতা আসবে। একথা বোঝাতেই কবি ‘আবার’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
৩। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৩.১ স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির বাসনা কীভাবে ‘শিকল-পরার গান’ কবিতায় ধরা পড়েছে, তা আলােচনা করাে।
উত্তরঃ কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিষের বাঁশি’ কাব্যের অন্তর্গত ‘শিকল-পরার গান’ কবিতায় সমগ্র স্বাধীনতাকামী ভারতবাসীর মুক্তির বাসনা তীব্রভাবে প্রকাশিত হয়েছে। কবি ভারতের মুক্তিপিয়াসী মানুষের মনে সাহস জোগানাের জন্য এবং মুক্তির বাসনাকে চরিতার্থ করার জন্য বলেছেন— শৃঙ্খলিত হয়ে তাঁদের কারাগারে প্রবেশ করা একটা ছলনা মাত্র। এই শিকল পরেই তাঁরা পরাধীনতার শৃঙ্খলকে চূর্ণ করবেন। এই কারাবরণের মাধ্যমে তারা মুক্তিপিয়াসী মানুষের মন থেকে কারাবরণের ভীতিকে দূরীভূত করতে চান। ব্রিটিশরা যে ভয় দেখিয়ে তাঁদের শাসনজাল বিস্তার করছে, সেই ভয়ের কণ্ঠ রােধ করেই সকলকে সাহসী করে তুলতে চান। আলােচ্য কবিতায় দেশকে ব্রিটিশদের কবল থেকে মুক্ত করতে সমস্ত কষ্ট স্বীকার করে নিজেদের জীবন বলিদানের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের মুখে হাসি ফোটানাের বার্তা ঘােষিত হয়েছে। কবি বলেছেন, দেশভক্তদের শরীরের হাড় দিয়ে পুনরায় বজ্র তৈরি হয়ে ব্রিটিশ শাসনের বিনাশ ঘটাতে দেশে বজ্রের আগুন জ্বলবে। এভাবেই স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির বাসনা কবিতাটিতে ধ্বনিত হয়েছে।
(এই উত্তরটিও তোমরা লিখতে পারো)
উত্তরঃ ‘বিষের বাঁশি’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া ‘শিকল পরার গান’ কবিতায় বারবার ধ্বনিত হয়েছে মুক্তির বাসনা। মুক্তির জন্যে মানুষের বলিদানকে তার দুর্বলতা নয়, তার সবলতা রূপেই দেখানো হয়েছে কবিতাটিতে। যে অত্যাচারীরা শিকল পরিয়ে স্বাধীনতাকামী মানুষদের বন্দি করেছে, তারা সেই বন্দিত্বকেই অস্বীকার করে বারবার উচ্চকণ্ঠে গর্জে উঠেছে।
কবিতাটিতে বন্দিত্ব একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ বন্দি হওয়াটাই স্বাধীনতাকামী মানুষের একটা ছলনা মাত্র। ভারতমাতার বন্ধনের কাছে যে এ বন্ধন কিছুই না, সেটাই দেখানো হয়েছে। যাঁরা বন্দি হয়ে কারাগারে আসছেন তাঁরা সর্বদা এই প্রচেষ্টাই করেছেন যে যতটা সম্ভব এই বন্ধনের ভয় থেকে সকলকে মুক্ত করা যায়। কারণ যারা ভয়কে জয় করতে পারে তারা অত্যাচারের জবাব দিতেও পারে। যে পায়ে অত্যাচারীরা শিকল বেঁধেছে, একদিন সেই পা দিয়েই শিকল চূর্ণ হবে, এটাই মানুষের ধারণা। যারা সমগ্র জগৎ-এর সবাইকে অত্যাচারের কারাগারে বন্দি করেছে, যারা ভাবছে ভয় দেখিয়ে বিধাতার শক্তিকেও অগ্রাহ্য করবে সেই বর্বর জাতিদের শেষ করতে হলে সকলকে বিজয়মন্ত্রে দীক্ষিত হতে হবে। বলহীনকে ভয় মুক্ত হয়ে সফল হতে হবে। যে ভয়কে আশ্রয় করে অত্যাচারীরা অত্যাচার করছে সেই ভয়কেই সবার আগে ধ্বংস করতে হবে।
ওই ভয়ানক অত্যাচারীদের অত্যাচারকে দুর্বলতায় পরিণত করতে হবে। মৃত্যুকে জয় করতে হবে ফাঁসি গ্রহণ করে। অর্থাৎ ‘হাসি হাসি পরব ফাঁসি’-র মতো স্বাধীনতাকামী মানুষ মৃত্যুকে উপহাস করে মৃত্যুর পরেও অমর হয়ে থাকবে। যে শিকলের শব্দ ধ্বনিত হচ্ছে কারাগারের দিকে দিকে সেখানে কান্না নয়, আরাধনা করা উচিত মুক্তির পথের অগ্রদূতদের। মুক্তির বাসনায় আজ লাঞ্ছিতরাই অত্যাচারীদের জবাব দিতে পারছে। আবার এই বিপ্লবীদের অস্থি দিয়ে নতুন করে নির্মাণ হোক বজ্রের, মুক্তির তীব্র বাসনা এভাবেই বারবার ধরা পড়েছে আলোচ্য কবিতায়।
৩.২ ‘বাঁধন-ভয়কে করব মােরা জয়’— কেন এই বাঁধন ? কারা, কীভাবে এই ‘বাঁধন-ভয়কে জয় করবে ?
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম রচিত ‘শিকল-পরার গান’ কবিতায় ‘বাঁধন’ হল পরাধীনতার বন্ধন। সাম্রাজ্যলোভী ব্রিটিশ শক্তির অত্যাচারে সমগ্র ভারতবর্ষ তথা ভারতের আপামর জনগণ পরাধীনতার বাঁধনে আবদ্ধ।
» এই ‘বাঁধন-ভয়’-কে জয় করার জন্য এগিয়ে এসেছে বিপ্লবী, স্বদেশপ্রেমী স্বাধীনতাকামী মানুষ। স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীরা নিজেদের শিকলে আবদ্ধ করে শিকলকে ভাঙার কাজে সদাসচেষ্ট। নিজেদেরকে ইংরেজ শক্তির বন্ধনে আবদ্ধ করে তারা সাধারণ মানুষের মন থেকে বন্ধন-ভয়কে দূর করতে চায়। ভয়-ভীতি দ্বারা ইংরেজ শক্তি ভারতবাসীকে পরাধীনতার জালে আবদ্ধ করেছে। সেই ইংরেজ শক্তির সর্বনাশের জন্য বলহীনদের মধ্যে বিপ্লবী স্বাধীনতাকামী মানুষ ‘মাভৈঃ বিজয়মন্ত্র’ সঞ্চারিত করতে চাইছে। নিজেদের জীবন দেশের স্বার্থে উৎসর্গ করে এরা নিত্য ‘মুক্তি-পথের অগ্রদূতের’ উপাসনা করছে। অত্যাচারিত মানুষের মধ্যে নিভে যাওয়া শক্তিকে জাগ্রত করেই দেশের মানুষ ব্রিটিশদের বাঁধন-ভয়কে জয় করতে পারবে।
৪। দল বিশ্লেষণ করাে : বন্ধনী, ঝঞ্ঝনা , বজ্রানল , সর্বনাশ, অস্থি।
» বন্ধনী = বন্- ধ – নী (রুদ্ধদল—বন্ (১ টি) মুক্তদল—ধ, নী (২ টি),।
» ঝঞ্ঝনা = ঝন্ – ঝ – না [ রুদ্ধদল-ঝন (১টি), মুক্তদল—ঝ, না (২ টি), ] ।
» বজ্ৰানল = বজ্ – রা – নল্ (মুক্তদল— রা (১টি), রুদ্ধদল—বজ্, নল্ (২ টি)।
» সর্বনাশ = সর্ – ব – নাশ্ (মুক্তদল— ব (১টি), রুদ্ধদল— সর, নাশ্ (২ টি)।
» অস্থি = অস্-থি (মুক্তদল-থি (১টি), রুদ্ধদল—অস্ (১টি)।
৫। ধ্বনি পরিবর্তনের কোন নিয়ম এখানে কাজ করেছে দেখাও : বাঁধন, পরে।
» বাঁধন = বন্ধন > বাঁধন (নাসিক্যীভবন)।
» পরে= পরিয়া > পইরা > পরে (অভিশ্রুতি)।
৬। বাক্যে রূপান্তর করাে :
৬.১ ভয়-দেখানাে ভূতের মােরা করব সর্বনাশ। (জটিল বাক্যে)
উত্তরঃ তারা ভয় দেখানাে ভূত, তাদের আমরা সর্বনাশ করব।
৬.২ মােরা ফাঁসি পরে আনব হাসি মৃত্যুজয়ের ফল। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তরঃ মােরা ফাঁসি পরব এবং মৃত্যুজয়ের ফল স্বরূপ হাসি আনব।
৬.৩ তােদের বন্ধ কারায় আসা মােদের বন্দী হতে নয়। (চলিত গদ্যে)
উত্তরঃ তােদের বন্ধ কারায় আমাদের বন্দি হতে আসিনি।
৭। পদ চিহ্নিত করাে :
৭.১ তােমরা বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে করছ বিশ্বগ্রাস।
উত্তরঃ তােমরা— সর্বনাম, বন্ধ— বিশেষণ, ঘর— বিশেষ্য, বন্ধনী— বিশেষ্য, করছ— ক্রিয়া, বিশ্বগ্রাস— বিশেষ্য।
৭.২ মােরা ফাঁসি পরে আনব হাসি মৃত্যুজয়ের ফল।
উত্তরঃ মােরা— সর্বনাম, ফাঁসি— বিশেষ্য, পরে— ক্রিয়া, আনব— ক্রিয়া, হাসি— বিশেষ্য, মৃত্যুজয়— বিশেষ্য, ফল— বিশেষ্য।
৭.৩ এবার আনব মাভৈঃ-বিজয়-মন্ত্র বলহীনের বল।
উত্তরঃ এবার— অব্যয়, আনব— ক্রিয়া, মাভৈঃ— বিশেষণ, বিজয়মন্ত্র— বিশেষ্য, বলহীন— বিশেষণ, বল— বিশেষ্য।
৮। ব্যাসবাক্য-সহ সমাসের নাম লেখাে :
» শিকল-ঝঞ্জনা = শিকলের ঝঞ্চনা–সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস।
» চরণ বন্দনা = চরণকে বন্দনা— কর্ম-তৎপুরুষ সমাস; চরণের বন্দনা— সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস।
» বজ্ৰানল = বজের অনল— সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস; ব্রজ রূপ অনল— রূপক কর্মধারয় সমাস।
» মৃত্যুজয় = মৃত্যুকে জয় — কর্ম তৎপুরুষ সমাস ; মৃত্যু হতে জয় — অপাদান তৎপুরু সমাস।