পঞ্চম শ্রেণি বাংলা তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সেট-২ | WBBSE Class 5 Bengali 3rd Unit Test Model Question Paper with Answer Set-2

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

THIRD SUMMATIVE EVALUATION
CLASS 5 (V) BENGALI (WBBSE)
MODEL QUESTION PAPER

পঞ্চম শ্রেণি বাংলা তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সেট-২ | WBBSE Class 5 Bengali 3rd Unit Test Model Question Paper with Answer Set-2

📌 1. পঞ্চম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের সমস্ত পরীক্ষার প্রশ্ন Click Here

Set-2

তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
পঞ্চম শ্রেণি
বিষয় : বাংলা
পূর্ণমান : ৫০             সময় : ১.৩০ মিনিট

১। নীচের বিকল্পগুলির মধ্যে ঠিক বিকল্পটিকে বেছে নাও : ( যে কোনো নয়টি) ১×৯= ৯

১.১ ‘বোম্বাগড়ের রাজা’ কবিতাটি নেওয়া হয়েছে (‘আবোল তাবোল’ / ‘পাগলা দাশু’ / ‘আমায় তুমি লক্ষ্মী বলো) কবিতার বই থেকে।

উত্তরঃ আবোল তাবোল।

১.২ তাল পাকে যে মাসে– (আষাঢ় / শ্রাবণ / ভাদ্র / আশ্বিন)।

উত্তরঃ ভাদ্র।

১.৩ ক্ষুদিরাম ছিল (কুমোর / চাষি / কামার / পুরোহিত)।

উত্তরঃ চাষি।

১.৪ তাল সুপুরির বনে একলা থাকলেও কবির- (কষ্ট / সুখ / দুঃখ / বেদনা) হয়না।

উত্তরঃ দুঃখ।

১.৫ সবার চাইতে মিষ্টি যা চিবিয়ে খেতে হয়- (মধু / রসগোল্লা / আঁখ / তালবড়া)

উত্তরঃ আঁখ।

১.৬ পেটকাটা আর চাঁদিয়ালের বন্ধু হল– (নদী / আকাশ / পাহাড়)।

উত্তরঃ আকাশ।

১.৭ তালনবমী ছিল – (সোমবারে / শুক্রবারে / বুধবারে / মঙ্গলবারে)।

উত্তরঃ মঙ্গলবারে।

১.৮ বোম্বাগড়ের রাজা ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখে- (বালিশ / আলতা / পাঁউরুটি / আমসত্ত্ব)।

উত্তরঃ আমসত্ত্ব।

১.৯ ‘একলা’ কবিতাটির কবি হলেন- (শঙ্খ ঘোষ / শক্তি চট্টোপাধ্যায় / জয় গোস্বামী / লীলা রায়)

উত্তরঃ শঙ্খ ঘোষ।

১.১০ ‘আমি’ -এর বহুবচন হল – (আমরা / মোদের / তুমি / সে)।

উত্তরঃ আমরা।

১.১১ ‘শোভন’-এর স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ (শোভনা / শোভা / শোভনীয়)।

উত্তরঃ শোভনা।

২। এককথায় উওর দাও (যে কোনো ৬ টি) ১x৬=৬

২.১ ‘তালনবমী’ গল্পে জটি পিসিমার ভালো নাম কী ?

উত্তরঃ ‘তালনবমী’ গল্পে জটি পিসিমার ভালো নাম হরিমতী।

২.২ গোপালকে ভোরবেলায় তালদিঘির ধারে কে দেখেছিল ?

উত্তরঃ গোপালকে ভোরবেলায় তালদিঘির ধারে গ্রামের উত্তরপাড়ার গনেশ কাওরা দেখেছিল।

২.৩ ‘একলা’ কবিতাটি শঙ্খ ঘোষের কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘একলা’ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আমায় তুমি লক্ষ্মী বলো’- কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

২.৪ আলু চাষের পর কুমির ও শিয়াল কী চাষ করতে গেল ?

উত্তরঃ কুমির ও শিয়াল দুই বন্ধু এবার মিলিত ভাবে ধানের চাষ করতে গেল।

২.৫ ‘রেস্তোরাঁর গায়ে নোটিশ ঝুলছে’ – নোটিশে কী লেখা ছিল ?

উত্তরঃ নোটিশে লেখাছিল- কালো চামড়ার লোক এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ।

২.৬ “একটা আছে কাঠবেড়ালি”- কাঠবেড়ালি কার দিকে তাকিয়েছিল ?

উত্তরঃ কাঠবেড়ালি কবি শঙ্খ ঘোষের দিকে তাকিয়েছিল।

২.৭ ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাং কী দেখল ?

উত্তরঃ দীর্ঘ যাত্রা শেষে ব্যাং ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছল। দেখল, সেখানে সবাই ব্যস্ত নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের মহানন্দ।

২.৮ মৌমাছি তাড়ানোর মন্ত্র কে জানত‌ ?

উত্তরঃ ধনাই মৌমাছি তাড়ানোর মন্ত্র জানত।

২.৯ ‘বোম্বাগড়ের রাজা’- কবিতায় কার মাথায় বালিশ ছিল ?

উত্তরঃ ‘বোম্বাগড়ের রাজা’- কবিতায় রানির মাথায় বালিশ ছিল।

৩। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দাও : (যে কোনো ৫ টি) : ২x৫=১০

৩.১ পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলায় ‘শালবন’ রয়েছে ? শালপাতাকে মানুষ কী কী ভাবে ব্যবহার করে ?

উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম জেলায় শালবন আছে। শালপাতাকে মানুষ নানাভাবে ব্যবহার করে। যেমন— শালপাতায় খাবার খাওয়া, ফুল, মিষ্টি বিক্রির জন্য গ্রামাঞ্চলে শালপাতা মোড়ক করে ব্যবহৃত হয়। অনেক জায়গায় শালপাতা দিয়ে ঘরের ওপরের অংশ ঢাকা দেওয়া হয়।

৩.২ ‘ওদের হাতের ওই সুতো আমাদের ভাগ্য’- উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে বক্তা কী বলতে চেয়েছে ?

উত্তরঃ উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা চাঁদিয়াল ঘুড়ি। বন্ধু পেটকাটা ঘুড়িকে বলছে যে, তারা আকাশে ওড়ে আর তাদের সুতো থাকে মানুষের হাতে। মানুষের হাতের সুতোই হল ঘুড়ির ভাগ্য। কারণ এই সুতো চালনার ওপরেই তাদের আকাশে ওড়া অথবা কেটে যাওয়া নির্ভর করে।

৩.৩ গোপাল জটি পিসিমার বাড়ি নিমন্ত্রণে কাদের যেতে দেখল ?

উত্তরঃ গোপাল জটি পিসিমার বাড়ি নিমন্ত্রণে গ্রামের অনেককেই যেতে দেখেছিল। তার মধ্যে জগবন্ধু চক্কোত্তি ও তাঁর ছেলেমেয়েরা, রাখাল রায় ও তাঁর ছেলে মানু, কালীবর বাঁড়ুজ্যের বড়ো ছেলে পাঁচু আর ও পাড়ার হরেন। এ ছাড়াও গিয়েছিল একপাল ছেলেমেয়ে নিয়ে বদ্ধ নবীন ভটচাজ ও তার ছোটো ভাই দীনু ও তাঁর ছেলে কুড়োরাম।

৩.৪ মাস্টারদা কীভাবে ছেলেদের দেশ সম্পর্কে উজ্জীবিত করেছিলেন ?

উত্তরঃ মাস্টারদা ছিলেন প্রকৃতই এক দেশপ্রেমিক। ছেলেদের তিনি বলতেন, দেশ আমাদের মা। সেই মাকে আমাদের যে-কোনো প্রকারে ইংরেজদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। এর জন্য তিনি দেশ সম্পর্কে নানান কথা, খেলাধুলো, বন্দুক চালানো ইত্যাদি সবকিছুই ছেলেদের উজ্জীবিত করেছেন। তাঁর প্রেরণায় সেই ছেলেরা একদিন সত্যিসত্যিই ব্রিটিশদের তাড়ানোর জন্য নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে।

৩.৫ বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ?

উত্তরঃ বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা ভেবেছিল যদি সুতো প্যাঁচের সময় তারা দুজনেই জট পাকিয়ে ছিঁড়ে ফেলতে পারে, তবে হয়তো তারা রক্ষা পেতে পারে। উড়ে যেতে পারে আকাশে একসঙ্গে। তখন কেউ তাদের ধরতে পারবে না, তারাও অসহায় বোধ করবে না। পুরোপুরি মানুষের হাত থেকে মুক্তি পাবে তারা।

৩.৬ কবির মতে কোন্ পথে কোনো দুঃখ নেই ?

উত্তরঃ কবির মতে যে পথ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, বৃষ্টির জলে ভিজে থাকা বা পিছলে পড়ার কোনো ভয় নেই, যে পথে হোঁচট লাগে না, অর্থাৎ কোনো বাধা সৃষ্টি হয় না সেই পথে কোনো দুঃখ নেই।

৩.৭ জোছনা বলতে কী বোঝো ? জোছনা রাতে কারা কী করে ?

উত্তরঃ রাতের বেলা চাঁদের আলোকে জোছনা বলে। এর শুদ্ধ ভাষা হল জ্যোৎস্না।
বোম্বাগড়ের মানুষ জোছনা রাতে চোখে আলতা মাখে।

৪। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো (যে কোনো দুটি) : ৫×২=১০

৪.১ ব্রিটিশ-শাসিত ভারতবর্ষে কোন্ পতাকা উড়ত ? ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ কীভাবে কার নেতৃত্বে রুখে দাঁড়িয়েছিল ?

উত্তরঃ ব্রিটিশ-শাসিত ভারতবর্ষে ইউনিয়ান জ্যাক পতাকা উড়ত। ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ মাস্টারদা অর্থাৎ সূর্য সেনের নেতৃত্বে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে চট্টগ্রামের ছেলের দল ইংরেজদের অস্ত্রাগার দখল করে আগুন লাগিয়েছে। টেলিফোন ও টেলিগ্রাফের অফিসেও আগুন লাগিয়েছে। দু-জায়গায় রেলের লাইন ভেঙে ফেলেছে তারা। ভারতবাসী দিনের পর দিন খেটে গেছে আর সেই খাটুনির ফল ভোগ করেছে সাদা চামড়ার ইংরেজ। রূপকথার রাজপুত্রদের মতো লড়াই করে দেশ থেকে দানবদের তাড়াতে চেয়েছে চট্টগ্রামের এই ছেলের দল। এই ছেলের দলকে দেশের কথা বলে, খেলাধুলো, বন্দুক-চালানো শিখিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বার উপযুক্ত করে গড়ে তুলেছেন এক অঙ্কের শিক্ষক, মাস্টারদা।

৪.২ ‘তালনবমী’ গল্পে বর্ষারাতে গোপাল কী স্বপ্ন দেখেছিল এবং কীভাবে তা মিথ্যা হয়ে গেল তা গল্প অনুসরে লেখো।

উত্তরঃ ‘তালনবমী’ গল্পে বর্ষারাতে গোপাল যে স্বপ্ন দেখেছিল তা হল, জটিপিসি ওকে কাঁকুড়ের ডালনা, মুগের ডাল লাবণ্যদি তিলপিটুলির থালা উপুড় করে দিয়েছিল। জটিপিসি আবার আনলেন পায়েস আর তালের বড়া। গোপাল রাতে জটিপিসি ও লাবণ্যদির দেওয়া খাবারের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু ভোরবেলায় মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে সে বিছানায় শুয়ে আছে তাদের বাড়িতে। তার হিজিবিজি স্বপ্ন যে মিথ্যা হয়ে গেল তা বুঝতে না পেরে বোকার মতো ফ্যালফ্যাল করে মায়ের মুখের দিকে চেয়ে রইল।

৪.৩ জটি পিসিমার বাড়িতে কী বারে তালের প্রয়োজন হয়েছিল ? গোপাল কীভাবে জটি পিসিমাকে তাল জোগাড় করে এনে দিয়েছিল ? ভরা বর্ষায় ক্ষুদিরাম ভট্টাচার্যের দিন কীভাবে কাটে ?

উত্তরঃ মঙ্গলবারে জটি পিসিমার বাড়িতে তালের প্রয়োজন হয়েছিল। গোপাল খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যে একছুটে গ্রামের পাশে তালদিঘির ধারে চলে যায়। তালপুকুরের তালের বনে ঢুকে একটা বড়ো আর কালো কুচকুচে তাল সে পায়। ফিরে আসার পথে আরও একটা তাল এনেছিল। ভরা বর্ষায় ক্ষুদিরাম ভট্টাচার্যের বাড়ি দুদিন হাঁড়ি চড়েনি। জমিজমার সামান্য কিছু আছে এবং দু-চার ঘর শিষ্য যজমানের বাড়ি ঘুরে-ঘুরে কায়ক্লেশে তার সংসার চলে।

৪.৪ ‘সেই ছুটে ছুট লাগাই জোরে’– পক্তিটির মধ্য দিয়ে কবি কী বুঝিয়েছেন নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ ‘একলা’ কবিতায় কবি শঙ্খ ঘোষ বলছেন যে, তিনি কোনো সময়েই একলা থাকেন না। তাঁর সঙ্গে যখন কোনো মানুষজন থাকে না তখন প্রকৃতির সবুজ গাছপালা, চলাচলের পথ এবং একটি কাঠবেড়ালি তাঁর সঙ্গী হয়।

কাঠবেড়ালি এতই দুরন্ত এবং চঞ্চল যে এদের কোনোমতেই ধরা যায় না। ধরতে গেলেই ছুটে অনেক দূরে পালিয়ে যায়। এখানে কবি বলছেন কাঠবেড়ালিকে ধরতে গিয়ে যেদিকে কাঠবেড়ালিটি ছুটছে সেইদিক লক্ষ করে কবিও জোরে ছুটেছেন, কিন্তু বারবারই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।

৪.৫ “এমন কেন ঘটছে তা কেউ বলতে পারো মোরে ?”— এটি কোন কবিতার অংশ ? কবির নাম কী ? এই কবিতায় রাজার পিসি, রাজার খুড়ো, পণ্ডিত কী করেন ?

উত্তরঃ এটি ‘বোম্বাগড়ের রাজা’ কবিতার অংশ। কবির নাম সুকুমার রায়।

এই কবিতায় রাজার পিসি কুমড়ো নিয়ে ক্রিকেট খেলে, রাজার খুড়ো হুঁকোর মালা পরে নাচেন ও পণ্ডিত টাকের ওপরে ডাকের টিকিট মারে।

৪.৬ ‘আমরা তখন দুই বন্ধু মুক্ত’- দুই বন্ধু কে কে ? তাদের দেখা হয়েছিল কীভাবে ? তারা কীভাবে ‘মুক্ত’ হল ?

উত্তরঃ আকাশে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল নামে দুটি কাগজের ঘুড়ির দেখা হয়েছিল। ওই দুটি ঘুড়ি কিনে আনা হয়েছে দোকান থেকে। উৎসবের দিনে উড়বে ওই দুটি ঘুড়ি। তারপর লাট খেতে খেতে ওরা লড়াই করবে আকাশে। ওদের আকাশে উড়িয়ে যুদ্ধ হবে প্যাঁচ খেলার। কে যে ভোকাট্টা হয়ে কোথায় পড়বে, কেউ জানে না। তখন কে যে কোথায় কোন্ বিপদে পড়বে কে জানে। ঘুড়ি তো মানুষের হাতের গোলাম। জট পাকিয়ে ছিঁড়ে গেলে ঘুড়ি রক্ষা পেতে পারে বলে ওদের ধারণা। আমরা তখন দুই বন্ধ মুক্ত।

৫। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: ৩×৩=৯

৫.১ সন্ধিবিচ্ছেদ করো :

»পরীক্ষা— পরি + ঈক্ষা, »সংস্কৃত— সম্ + কৃত, »উল্লাস— উৎ + লাস

৫.২ বচন পরিবর্তন করো :

»গাছ— গাছগুলি, »ছেলে— ছেলেগুলো, »ফুল— ফুলগুলি

৫.৩ লিঙ্গ পরিবর্তন করো :

»অধ্যাপক– আধ্যাপিকা, »গায়ক– গায়িকা, »সেবিকা— সেবক, নায়ক— নায়িকা

৬। যে কোন একটি রচনা লেখো : ৬

৬.১ একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

উত্তরঃ স্কুলে যখন গরমের ছুটি পড়ল তার দিন দুই বাদে আমাদের দার্জিলিং বেড়াতে যাবার পরিকল্পনা হল। তখন কলকাতায় ভীষণ গরম। যথারীতি রওনা হলাম নির্দিষ্ট দিনে দার্জিলিং মেলে। ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়িতে গিয়ে থামল। ওখান থেকে বাসে, টয় ট্রেনে বা টাটা সুমো বা ছোটো মোটর গাড়ি করে দার্জিলিং যেতে হয়। আমরা বাসে চেপে দার্জিলিং শহরে পৌঁছোলাম। সেখানে একটি হোটেলে উঠলাম। সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা দেখতে পেলাম। দার্জিলিং-এ অনেক কিছু দেখার আছে। ঘুম স্টেশন, ম্যাল, জু-গার্ডেন, বৌদ্ধ মঠ, রাজবাড়ি, রোপওয়ে, চা-বাগান প্রভৃতি। সূর্যোদয় দেখার জন্য ভোরবেলা বেরিয়ে পড়লাম টাইগার হিল পাহাড়ের দিকে। দার্জিলিং-এর রাস্তাগুলি পাহাড়ের গা বেয়ে চলেছে এঁকেবেঁকে, কখনও ভীষণ চড়াই কখনও বা উৎরাই। রাস্তার একধারে পাহাড়, অপর ধারে বিশাল খাদ দেখে গা ছমছম করে মাঝে মাঝে। আমরা প্রায় ওখানে সাত দিন ছিলাম। ফিরে আসতে ইচ্ছা করছিল না, ফিরে আসার পর মনে কষ্ট হচ্ছিল।

৬.২ বাংলার উৎসব

উত্তরঃ বাংলা উৎসবের দেশ। বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। বাংলায় বারো মাসে তেরো পার্বণ। মাসগত দিক দিয়ে কম হলেও পার্বণগত দিক দিয়ে অনেক। সারা বছরটাকে পুজোর আমেজে ভরিয়ে রাখে। এই উৎসবগুলি ঋতু পরিবর্তনের মতোই আবর্তিত হয়। সেই হাল খাতা দিয়ে বছরের যে উৎসবের সূচনা চৈত্র-সংক্রান্তির গাজনে তার শেষ। এই উৎসবের মধ্যে বাঙালি খুঁজে পায় তার প্রাণের আনন্দ জীবনের খোরাক। উৎসবগুলিকে মূলত কতকগুলিভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে— ধর্মীয়, জাতীয়, সামাজিক, ঋতু উৎসব ইত্যাদি। ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে পড়ে দুর্গাপূজা, কালীপূজা, সরস্বতী পূজা, ঈদ, মহরম, সবেবরাত, বড়োদিন, বুদ্ধপূর্ণিমা, গুরু নানক জন্মদিন ইত্যাদি। সামাজিক উৎসবের মধ্যে থাকে বার-ব্রত, বিয়ে, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ইত্যাদি। খাদ্যরসিক বাঙালির রসনাতৃপ্তির মহা সুযোগ। ঋতু উৎসবের মধ্যে থাকে বৃক্ষরোপণ, নবান্ন, পৌষপার্বণ। জাতীয় উৎসবের মধ্যে আছে হোলি, রবীন্দ্রজয়ন্তী, গান্ধিজয়ন্তী, নেতাজি জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস প্রভৃতি। এছাড়াও আছে প্রান্তিক জীবনের ভাদু, টুসু, ইতু প্রভৃতি উৎসব আধুনিককালে শিক্ষিত মানুষ এত সব উৎসব ছাড়াও নিজের মনের চাহিদা পূরণের জন্য বইমেলা, কৃষিমেলা, শিল্পমেলা প্রভৃতি মেলার আয়োজন করে চলেছে। সুস্থভাবে বাঁচতে গেলে মনে আনন্দ থাকা দরকার। উৎসব সেই আনন্দের রসদের জোগান দেয়। আর উৎসব সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে শেখায়। উৎসব মানে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ | আর এত উৎসব ছাড়া বাংলাকে ভাবা যায় না।

Leave a Reply