WBBSE Class 6 History First Unit Test Set-2 | ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন।

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

CLASS 6 HISTORY (WBBSE)
FIRST SUMMATIVE EVALUATION
MODEL QUESTION PAPER

Set-2

পাঠ্যসূচী / Syllabus :
2. ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ 3.ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা

প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
ষষ্ঠ শ্রেণি       বিষয় : ইতিহাস
পূর্ণমান- ১৫          সময়- ৩০ মিনিট।

১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ: (যে কোনো ১টি) ১×৩=৩

১.১ আদিম মানুষের প্রথম হাতিয়ার ছিল— (ভোঁতা পাথর / হালকা ছুঁচালো পাথর / পাথরের কুঠার)।

উত্তরঃ ভোঁতা পাথর।

১.২ আদিম মানুষের জীবনে প্রথম জরুরি আবিষ্কার—( চাকা / ধাতু / আগুন)।

উত্তরঃ আগুন।

১.৩ হোমো হাবিলিস কথার অর্থ— ( দক্ষ মানুষ / বুদ্ধিমান মানুষ / পন্ডিত মানুষ / সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারা মানুষ)।

উত্তরঃ দক্ষ মানুষ।

১.৪ মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কার করেন— (জন মার্শাল / হুইলার / ই ম্যাকে‌ / জাঁ
ফ্রাঁসোয়া জারিজ)।

উত্তরঃ জাঁ ফ্রাঁসোয়া জারিজ।

১.৫ হরপ্পা সভ্যতায় স্নানাগার পাওয়া গেছে— (লোথালে / হরপ্পায় / মহেঞ্জোদারোয় / রূপাবে)।

উত্তরঃ মহেঞ্জোদারোয়।

২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখ : (চার-পাঁচটি শব্দ বা একটি বাক্যের মধ্যে) যে-কোনো ২টি : ১×২=২

২.১ হোমো স্যাপিয়েন্স কথার অর্থ কি ?

উত্তরঃ বুদ্ধিমান মানুষ।

২.২ ভীমবেটকা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ ভীমবেটকা মধ্যপ্রদেশের বিন্ধ্যপর্বতের নিকটে অবস্থিত।

২.৩ লুসি কী ?

উত্তরঃ লুসি হলো আফ্রিকা মহাদেশের ইথিওপিয়ার হাদার নামক স্থানে প্রাপ্ত একটি
মেয়ের কঙ্কাল।

২.৪ হরপ্পা সভ্যতার একমাত্র বন্দর কোনটি ?

উত্তরঃ হরপ্পা সভ্যতার একমাত্র বন্দর হলো গুজরাটের লোথাল।

২.৫ মহেঞ্জোদাড়ো কে আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।

২.৬ সিটাডেল কী ?

উত্তরঃ হরপ্পা সভ্যতার নগর গুলির উঁচু এলাকাকে সিটাডেল বলা হতো।

৩. নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখ : (দু- তিনটি বাক্যের মধ্যে) : 2×1=2

৩.১ আদিম মানুষ যাযাবর ছিল কেন ?

উত্তরঃ আদিম মানুষ নানা কারণে যাযাবর জীবন যাপন করত। যেমন-

১. আদিম মানুষ নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে পারত না।

২. আদিম মানুষ শিকার করে ও বনের ফলমূল সংগ্রহ কবে তাদের খাদ্যের চাহিদা মেটাত। আর বনের ফলমূল বা শিকার কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে পাওয়া যেত না।

৩. তাদের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরেই খাদ্য সংগ্রহ করতে হত। এইসব কারণে আদিম মানুষ যাযাবর ছিল।

৩.২ আদিম মানুষ কেন জোট বেঁধেছিল ? এর ফলে তার কী লাভ হয়েছিল ?

উত্তরঃ আদিম মানুষ হিংস্র জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এবং তার খাদ্যের সংস্থান করার জন্য জোট বেঁধে ছিল।

৩.৩ ‘তামা-পাথরের যুগ’ বলতে কী বোঝো ?

উত্তরঃ
ভূমিকাঃ মানব সভ্যতার সূচনাপর্বের একটি অধ্যায় হল ‘তামা পাথবের যুগ’।

তামা পাথরের যুগঃ যে সময় মানুষ পাথবের জিনিসপত্র ব্যবহারের পাশাপাশি তামার জিনিসপত্র তৈরি ও ব্যবহার করে, সেই সময়কালকে তামা-পাথরের যুগ বলে।

মেহেরগড় সভ্যতার শেষ পর্যায় ও হরপ্পা সভ্যতা তামা-পাথরের যুগের সভ্যতা ছিল।

৩.৪ হরপ্পা সভ্যতার স্নানাগারের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ হরপ্পা সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্র মহেনজোদাড়োয় একটি স্নানাগারের নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই স্নানাগারটি ছিল দৈর্ঘ্যে ১৮০ ফুট ও গ্রস্থে ১০৮ ফুট। এই স্নানাগারের চারিদিকে রয়েছে ৮ ফুট উঁচু ইটের দেয়াল। এর মাঝখানে ছিল একটি জলাশয়। আবার এই স্নানাগারে অতিরিক্ত ও অপরিশুদ্ধ জল বার করে দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল।

৪. নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখ: ( চার-পাঁচটি বাক্যের মধ্যে) ৩×১=৩

৪.১ আগুন জ্বালাতে শেখার পর আদিম মানুষের কী কী সুবিধা হয়েছিলো ?

উত্তরঃ
ভূমিকাঃ আগুন জ্বালাতে শেখার পর আদিম মানুষের জীবনযাত্রার ধরন অনেকটাই বদলে গিয়েছিল। বেশ কিছু সুবিধাও হয়েছিল।

১. আত্মরক্ষাঃ প্রচণ্ড শীতের হাত থেকে বাঁচতে আদিম মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করতো। হিংস্র জন্তুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা গুহায় আগুন জ্বালিয়ে রাখত।

২. খাদ্যাভ্যাসের বদলঃ এসময় আদিম মানুষ কাঁচা মাংসের পরিবর্তে আগুনে ঝলসানো নরম মাংস খেতে শুরু করে।

৩.শারীরিক পরিবর্তনঃ আগুনে ঝলসানো নরম মাংস খেয়ে তাদের দাঁত ছোটো এবং চোয়াল সরু হয়ে গেল।

৪.২ আদিম মানুষ জোট বেঁধেছিল কেন ?

উত্তরঃ
ভূমিকাঃ আজ থেকে আনুমানিক ২৬ লক্ষ থেকে ১৭ লক্ষ বছর আগে আদিম মানুষ নানা কারণে জোট বেঁধে থাকতে শুরু করে।

১. আত্মরক্ষাঃ আদিম মানুষ নিজেদের হিংস্র জন্তুর হাত থেকে বাঁচতে জোট বেঁধেছিল।

২. খাদ্য সংগ্রহঃ দলবদ্ধভাবে থাকলে খাদ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে এবং শিকারের ক্ষেত্রে সুবিধা হতো।

৩. নিজস্ব সংস্কৃতি সৃষ্টিঃ আদিম মানুষ জোটবদ্ধ থাকার ফলে তারা একটি নিজস্ব সংস্কৃতি গড়ে তোলে এবং শৃঙ্খলাপরায়ণ হয়।

৪.৩ সিন্ধুসভ্যতাকে ‘হরপ্পা সভ্যতা’ বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ
ভূমিকাঃ খনন কার্যের ফলে হরপ্পা (১৯২১ খ্রি.) এবং মহেঞ্জোদাড়ো (১৯২২ খ্রি.) আবিষ্কারের পর প্রথমে ‘সিন্ধু সভ্যতা’ নামকরণ হলেও পরে ‘হরপ্পা সভ্যতা’ নামকরণ হয়।

হরপ্পা সভ্যতা বলার কারণ—

১. প্রাচীনত্বঃ এই সভ্যতার প্রায় ১৪০০টি কেন্দ্রের মধ্যে হরপ্পা সবথেকে প্রাচীন ও
বড়ো।

২. নিদর্শনঃ হরপ্পায় পাওয়া নিদর্শন বেশি এবং অন্য কেন্দ্রগুলিতে হরপ্পার নিদর্শনের (নগর পরিকল্পনা, জীবন-জীবিকা) প্রভাব দেখা যায়।

এইসব কারণে সিন্ধু সভ্যতাকে ‘হরপ্পা সভ্যতা’ বলা হয়।

৪.৪ টীকা লেখো: হরপ্পা সভ্যতার লিপি।

উত্তরঃ
ভূমিকাঃ হরপ্পা সভ্যতায় লিপির প্রচলন ছিল। কিন্তু লিপিগুলি আজ অবধি
পড়া যায়নি।

হরপ্পীয় লিপির বৈশিষ্ট্য—

১. হরপ্পা সভ্যতায় প্রায় দু’হাজার অক্ষরবিশিষ্ট সিলমোহর ও পাত্র পাওয়া গেছে।

২.হরপ্পার লিপি সাংকেতিক। তাতে ৩৭৫ থেকে ৪০০ টার মতো চিহ্ন রয়েছে।

৩. লিপিগুলি সম্ভবত ডানদিক থেকে বামদিকে লেখা হত।

তবে এই লিপির যথাযথ পাঠোদ্ধার এখনও সম্ভব হয়নি। হস্তলিপি ও বর্ণমালা হিসেবে, এবং অক্ষরজ্ঞানের পরিচায়ক হিসেবে লিপিগুলি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

৫. নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখ: ( ৮-১০ টি বাক্যের মধ্যে) : ৫×১=৫

৫.১ নতুন পাথবের যুগের মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিল ?

উত্তরঃ নতুন পাথবের যুগে মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছিল।

১. হাতিয়ার : এই যুগের মানুষ তাদের পাথরের হাতিয়ারগুলিকে অনেক হালকা, ধারালো ও উন্নত করেছিল। তাদের হাতিয়ারগুলির মধ্যে কাটারি, নিড়ানি, ছেনি, বর্শা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

২. জীবিকা : নতুন পাথবের যুগের মানুষ পশুপালন করত। কুকুর, ভেড়া, গরু, গাধা প্রভৃতি ছিল সেযুগের গৃহপালিত পশু। এছাড়া তারা কৃষিজীবী ও কারিগরের জীবিকা গ্রহণ করেছিল।

৩. কৃষিকাজের সূচনা : এই যুগের মানুষ কৃষিকাজকেই জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছিল। এই সময় নানা কারিগরি পেশাও মানুষ গ্রহণ করেছিল।

৪. বাসস্থান : এই যুগের মানুষ ফসল রক্ষার জন্য কৃষিজমির কাছেই খড়, বিচালি, মাটি প্রভৃতি দিয়ে ঘর বানাতে শুরু করে।

৫.চাকার আবিষ্কার : এযুগের মানুষ চাকা আবিষ্কার করে। চাকার সাহায্যে মাটির পাত্র, যানবাহন তৈরি করে।

৫.২ হরপ্পার অধিবাসীদের জীবিকা সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তরঃ

ভূমিকাঃ হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি। এছাড়া পশু পালন, ব্যাবসাবাণিজ্য, কারিগরি শিল্প ছিল এই সভ্যতার মানুষের অন্যতম জীবিকা।

১. কৃষিঃ হরপ্পা সভ্যতা নগরকেন্দ্রিক হলেও কৃষিই ছিল এখানকার অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা। এ সময়ের উৎপন্ন শস্যের মধ্যে ধান, গম, যব, কার্পাস, মটর, রাই প্রভৃতি ছিল প্রধান।

২. পশুপালনঃ হরপ্পা সভ্যতায় গৃহপালিত পশুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বলদ, ভেড়া, ছাগল, মোষ, উট, গাধা প্রভৃতি।

৩.কারিগরি শিল্পঃ হরপ্পা সভ্যতায় তাঁতি, কর্মকার, কুম্ভকার, স্বর্ণকার প্রভৃতি কারিগর শ্রেণির মানুষের সমাজে বিশেষ স্থান ছিল। শিল্পে সোনা, রুপা, তামা, ব্রোঞ্জের বিশেষ ব্যবহার ছিল।

৪. ব্যাবসাবাণিজ্যঃ স্থল ও জলপথে হরপ্পা সভ্যতার সঙ্গে দেশের ভিতরে ও বাইরে বাণিজ্য চলত। সোনা, রুপা, তামা, দামি পাথর, হাতির দাঁতের তৈরি চিরুনি, পাখির মূর্তি প্রভৃতি আমদানি করা হত। বার্লি, ময়দা, তেল ও পশমজাত দ্রব্য রফতানি করা হত। সুমের, আক্কাদ, ব্যাবিলন, ক্রীট প্রভৃতি দেশের সঙ্গে জলপথে বাণিজ্য চলত।

৫.৩ হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের কারণগুলি লেখো।

উত্তরঃ

ভূমিকাঃ খ্রিস্টপূর্ব ১৭৫০ অব্দের পরে হরপ্পা সভ্যতার অস্তিত্ব ক্রমশ লোপ পেতে থাকে। বেশ কিছু ঘটনার কারণে হরপ্পা সভ্যতার অবনতি হয়েছিল। এগুলি হল—

১. বন্যাঃ মহেনজোদাড়ো নগরের পাঁচিলটিতে একই জায়গায় অনেকবার মেরামতির ছাপ দেখা যায়। এ ছাড়া পাঁচিলে কাদার চিহ্নও পাওয়া গেছে। ওই জমে থাকা কাদা সম্ভবত বন্যার ফলে এসেছিল। তাই সিন্ধুনদের বন্যায় এই অঞ্চলের ক্ষতি হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

২.আবহাওয়ার পরিবর্তনঃ খ্রিস্টপূর্ব ২২০০ অব্দ থেকে এশিয়া মহাদেশের অনেক জায়গাতেই বৃষ্টিপাত কমতে থাকে। যার ফলে শুষ্ক জলবায়ু দেখা দেয়। সে কারণে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হরপ্পা সভ্যতার কৃষিকাজও এই সমস্যা থেকে রেহাই পায়নি বলে অনুমান করা হয়। অন্যদিকে এই সভ্যতায় ইট পোড়ানোর জন্য চুল্লির জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার করা হত, যার জোগান আসত গাছ থেকে। তাই ব্যাপকভাবে গাছ কাটার ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায় ।

৩.বহির্বাণিজ্যে ভাটাঃ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৯০০ অব্দের পরে মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে হরপ্পার বাণিজ্যে ভাটা পড়ে। ফলে হরপ্পার অর্থনীতি ক্রমশ সমস্যার মুখে পড়ে।

ওপরের কারণগুলি ছাড়া হরপ্পার দুর্বল নগর-শাসন ব্যবস্থা এই সভ্যতার অবনতির একটা অন্যতম কারণ ছিল।

This Post Has One Comment

Leave a Reply