CLASS 7 HISTORY 2ND UNIT TEST
WBBSE Class 7 History Second Unit Test Question Answer Set-1 | সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
📌 সপ্তম শ্রেণি সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্র | Class 7 All Subject Question Paper
Set-1
সিলেবাস— চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়।
দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
সপ্তম শ্রেণি
বিষয় : ইতিহাস
পূর্ণমান : 25 সময় : 50 মিনিট
১. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো : (যে-কোনো পাঁচটি) : ১ x ৫ = ৫
(ক) সুলতান শব্দ একটি– (উপাধি / পদ / খলিফা)।
উত্তরঃ উপাধি
(খ) কিতাব-আল-রিহলা-এর রচয়িতা হলেন– (মিনহাস-ই-সিরাজ / মহম্মদ-বিন-তুঘলক / ইবন বতুতা / বদাউনি)।
উত্তরঃ ইবন বতুতা।
(গ) পানিপথের প্রথম যুদ্ধ হয়েছিল— (1451 খ্রিস্টাব্দে / 1516 খ্রিস্টাব্দে / 1526 খ্রিস্টাব্দে / 1626 খ্রিস্টাব্দে)।
উত্তরঃ 1526 খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) শেরশাহ কৃষকদের– (পাট্টা / দাগ / কবুলিয়ত) দিতেন।
উত্তরঃ পাট্টা
(ঙ) মুঘল সম্রাট আকবরের তৈরি নতুন রাজধানী হল (ফতেপুর সিকরি / নতুন দিল্লি / আগ্রা।)।
উত্তরঃ ফতেপুর সিকরি
(চ) (বাগদাদ / কলকাতা / কিলা রাই পিথোরা) ছিল মুসলমান সভ্যতার বড় কেন্দ্র।
উত্তরঃ বাগদাদ।
২. নীচের প্রশ্নগুলির এককথায় উত্তর দাও : ১ x ৫ = ৫
(ক) ফিরোজ শাহ তুঘলক কতবার খলিফার অনুমোদন পান ?
উত্তরঃ ফিরোজ শাহ তুঘলক দু-বার খলিফার অনুমোদন পান।
(খ) কোন সুলতান রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন ?
উত্তরঃ আলাউদ্দিন খলজী রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।
(গ) ভারতের প্রথম মুঘল বাদশাহ কে ছিলেন ?
উত্তরঃ ভারতের প্রথম মুঘল বাদশাহ ছিলেন বাবর।
(ঘ) আকবরের রাজস্ব মন্ত্রী কে ছিলেন ?
উত্তরঃ টোডরমল ছিলেন আকবরের রাজস্ব মন্ত্রী।
(ঙ) কে শাহজাহানাবাদ শহর তৈরি করেন ?
উত্তরঃ সম্রাট শাহজাহান শাহজাহানাবাদ শহর তৈরি করেন।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি) : ২ x ২ = ৪
(ক) সুলতান ইলতুৎমিসের সামনে প্রধান যে সমস্যাগুলি ছিল, তার দুটি উল্লেখ করো :
উত্তরঃ
(i) উত্তরাধিকারী সংক্রান্ত সমস্যা : ইলতুৎমিস ছিলেন কুতুবউদ্দিনের জামাই। তাই অনেকেই তাকে কুতুবউদ্দিনের
উত্তরাধিকারী হিসেবে মেনে নেননি।
(ii) আমিরদের বিদ্রোহ : ইলতুৎমিসের সময় দিল্লি সুলতানির বিরুদ্ধে কয়েকজন আমির প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। আর কয়েকজন গোপনে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।
(খ) ‘পাট্টা’ ও ‘কবুলিয়ত’ কী ?
উত্তরঃ পাট্টা একটি অতি পুরানো ভূমি বন্দোবস্তের চুক্তিপত্র। শেরশাহ কবুলিয়ত ও পাট্টার প্রচলন করেন। পাট্টা ও কবুলিয়তের ভিত্তিতে কৃষকরা জমির মালিকানা ও দখল প্রমাণের সুযোগ পায়। কৃষকগণ তাদের অধিকার ও দায়িত্ব বর্ণনা করে সরকারকে কবুলিয়ত নামে দলিল সম্পাদনnকরে দিত আর সরকারপক্ষ থেকে জমির উপর জনগনের স্বত্ব স্বীকার করে নিয়ে পাট্টা দেওয়া হত।
(গ) মুঘল শাসকরা কীভাবে ব্যাবসাবাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন ?
উত্তরঃ মুঘল সম্রাটগণ ব্যাবসাবাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন। সম্রাটগণ বণিকদের ব্যাবসাবাণিজ্যের জন্য কুঠি বানানোর অনুমতি দিয়ে সহায়তা করতেন। সম্রাটগণ বণিকদের নিরাপত্তা দিতেন। এর জন্য তাঁরা রাহাদারি নামে একপ্রকার কর আদায় করতেন। তা ছাড়া তারা বণিকদের কাজে হস্তক্ষেপ করতেন না। সম্রাটগণ বণিকদের কাছ থেকে মাত্র ২.৫-৫% হারে শুল্ক নিতেন।
৪. টীকা লেখো (যে-কোনো দুটি) : ৩x২=৬
(ক) খুতবা—
খুতবা কথাটির আসল মানে হল ভাষণ। কোনো সুলতানের শাসনকালে মসজিদের ইমাম একটি ভাষণ পড়তেন। শুক্রবারের। দুপুরের নামাজের (জোহরের নামাজ) পরে সবার সামনে ঐ ভাষণ বা খুতবাটি পাঠ করা হতো। তাতে সমকালীন খলিফা ও সুলতানের নামের উল্লেখ থাকত। এর মধ্যে দিয়ে সুলতান যে নিয়ম মেনে শাসক হয়েছেন সেটা বারবার জানান দেওয়া হতো।
(খ) ঘর্ঘরার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল ? এই যুদ্ধের ফল কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ ঘর্ঘরার যুদ্ধ : ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে ঘর্ঘরার যুদ্ধ হয়েছিল। ঘর্ঘরার যুদ্ধ হয়েছিল দিল্লির মুঘল বাদশাহ বাবরের সঙ্গে বিহার ও বাংলার আফগান শক্তিজোটের। আফগান শক্তিজোটে ছিলেন সুলতান ইব্রাহিম লোদির ভাই মাহমুদ লোদি, বিহারের শের খান এবং বাংলার শাসক নসরৎ শাহ।
ঘর্ঘরার যুদ্ধের ফল—
• বাবরের জয়লাভ : ঘর্ঘরার যুদ্ধে বাবর জয়লাভ করেন।
• মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি : বাবর প্রতিষ্ঠিত মুঘল সাম্রাজ্য কাবুল থেকে ঘর্ঘরা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
(গ) কী কী ভাবে মধ্যযুগের ভারতে শহর গড়ে উঠত ?
উত্তরঃ মধ্যযুগে ভারতে অনেক শহর গড়ে উঠেছিল। ‘শহর’ শব্দটি ফারসি শব্দ। মধ্যযুগ বা সুলতানি ও মুঘল যুগে ভারতে বিভিন্নভাবে শহর গড়ে উঠেছিল।
অর্থনৈতিক কারণ : মধ্যযুগে অনেক শহর গড়ে উঠেছিল যেগুলি ছিল ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র।
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কারণ : মধ্যযুগে রাজধানীকে কেন্দ্র করে শহর গড়ে উঠত। সুলতান বা বাদশাহগণ অনেক সময় নতুন নতুন রাজধানী শহর তৈরি করতেন। সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক দিল্লি থেকে দৌলতাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করেছিলেন। মুঘল যুগে গড়ে উঠেছিল আগ্রা, ফতেহপুর সিকরি, শাহজাহানাবাদ প্রভৃতি শহর।
ধর্মীয় কারণ : মধ্যযুগে ধর্মীয় স্থান, মন্দির বা মসজিদকে ঘিরে প্রচুর তীর্থযাত্রী আসার ফলে শহর গড়ে উঠত। আবার অনেকগুলি কারণ একসঙ্গে যুক্ত হয়েও অনেক শহর করে উঠত।
৫. নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো : ৫ x ১ = ৫
(ক) সুলতান ইলতুৎমিশের প্রধান সমস্যাগুলি কী কী ছিল ? তিনি কীভাবে এগুলির সমাধান করেছিলেন ?
উত্তরঃ সুলতান ইলতুৎমিশ ছিলেন দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। তুর্কি ভাষায় ‘ইলতুৎমিশ’ কথার অর্থ হল ‘সাম্রাজ্যের পালনকর্তা’। কুতুবউদ্দিন দিল্লিতে যে সামরিক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ইলতুৎমিশ সেই সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলেন।
• সমস্যা ও সমাধান: সিংহাসনে আরোহণের পর ইলতুৎমিশ কয়েকটি সমস্যার সম্মুখীন হন। এগুলি হল—
(১) বিদ্রোহ ও বিদ্রোহ দমন—
প্রথমত, সমস্যা : মহম্মদ ঘুরির প্রতিনিধি তাজউদ্দিন ইয়ালদুজ ও নাসিরউদ্দিন কুবাচা সুলতান ইলতুৎমিশের বিরোধিতা করেন।
সমাধান : তিনি তাজউদ্দিন ও নাসিরউদ্দিন কুবাচাকে পরাজিত করে নিজেকে কণ্টকমুক্ত করেন।
দ্বিতীয়ত, সমস্যা : বাংলার শাসনকর্তা আলিমর্দান এবং রনথম্ভোর আজমির, গোয়ালিয়র প্রভৃতি অঞ্চলের শাসকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
সমাধান : তিনি বাংলার শাসক আলিমর্দানকে পরাজিত করেন এবং রাজপুত রাজ্যগুলি পুনর্দখল করেন।
(২) সিংহাসনের বৈধতা প্রতিষ্ঠা—
সমস্যা : ইলতুৎমিশ কুতুবউদ্দিনের ছেলে ছিলেন না, জামাই ছিলেন। তাই অনেকে তাঁকে দিল্লির সুলতান বলে মানতে চায়নি।
সমাধান : ইলতুৎমিশ অনেক উপহার পাঠিয়ে খলিফার কাছ থেকে সুলতানের বৈধতার অনুমোদন প্রার্থনা করলেন। খলিফা দিল্লির সুলতানিতে তাঁর কর্তৃত্বকে অনুমোদন দেন।
(৩) মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ—
সমস্যা : ইলতুৎমিশের রাজত্বকালে দুর্ধর্ষ মোঙ্গল বীর চেঙ্গিজ খান খিবার শাসনকর্তা জালালউদ্দিন মঙ্গবরনির পশ্চাৎধাবন করে ভারত সীমান্তে উপস্থিত হন।
সমাধান : দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ইলতুৎমিশ জালালউদ্দিনকে আশ্রয় না দেওয়ার ফলে চেঙ্গিজ খান ভারত ত্যাগ করে চলে যান।
(৪) দিল্লি সুলতানিতে রাজবংশ প্রতিষ্ঠা—
সমস্যা : ইলতুৎমিশ উত্তরাধিকারসূত্রে সিংহাসন পাননি।
সমাধান : তিনি চেয়েছিলেন তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারীরা যাতে সিংহাসনে বসতে পারে। তার জন্য তিনি তাঁর সুযোগ্যা কন্যা রাজিয়াকে পরবর্তী সুলতান হিসেবে মনোনীত করেন। ফলে দিল্লির জনগণের মনে তিনি একটি বংশগত শাসনের ধারণা তৈরি করতে পেরেছিলেন।
(খ) মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আকবরের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাবর ভারতবর্ষে যে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা হুমায়ুনের আমলে প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল । আকবর পুনরায় নিজ বাহুবলে ও বুদ্ধিবলে মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাকে সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত করেন। এই সাম্রাজ্য বহুদিন টিকে ছিল। তাই আকবরকে ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।
কৃতিত্ব : মুঘল সম্রাট আকবর ছিলেন ভারতের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাট। তাঁর রাজ্যজয়, প্রশাসনিক দক্ষতা, বিদ্যোৎসাহিতা, ধর্মীয় উদারতা, কূটনৈতিক বিচক্ষণতা ও মানবতাবোধ তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাটে পরিণত করেছে।
সাম্রাজ্য বিস্তার : পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর এক চরম প্রতিকুলতার মধ্যে ১৩ বছর বয়সে বালক আকবর মুঘল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন। সিংহাসনে আরোহণের পর তিনি সমগ্র উত্তর ভারত, মধ্য ভারত ও দক্ষিণ ভারতের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল জয় করেন।
সুশাসন প্রবর্তন : আকবরের শাসনব্যবস্থার আদর্শ ছিল মানবকল্যাণ। তিনি তাঁর বিশাল সাম্রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সুবিন্যস্ত কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।।
মনসবদারি প্রথা : আকবর ‘মনসবদারি প্রথা’ প্রবর্তন করেন। এর ফলে সেনাবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং মুঘল রাজতন্ত্র শক্তিশালী হয়।
ধর্মীয় উদারতা : সম্রাট আকবর ছিলেন পরধর্মসহিছু সম্রাট। জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ মুছে তিনি ‘দীন-ই ইলাহি’ প্রবর্তন করেন এবং হিন্দুদের ‘জিজিয়া কর’ ও ‘তীর্থকর’ তুলে দেন।
বিদ্যোৎসাহিতা : সম্রাট আকবর ছিলেন বিদ্যা ও বিদ্বানের পৃষ্ঠপোষক। তাঁর রাজসভায় অনেক জ্ঞানীগুণীর সমাবেশ ঘটেছিল। এইসব জ্ঞানী ব্যক্তিরা ‘নওরতন’ বা ‘নবরত্ন’ নামে পরিচিত ছিলেন।
শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষকতা : সম্রাট আকবর শিল্পকলার ইতিহাসেও স্মরণীয় হয়ে আছেন, যেমন—
স্থাপত্যশিল্প : তাঁর আমলের উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যশিল্প ছিল ফতেহপুর সিকরি, সেলিম চিশতির সমাধি, দেওয়ান-ই আম, দেওয়ান-ই খাস, হুমায়ুনের সমাধি, জামি মসজিদ, বুলন্দ দরওয়াজা প্রভৃতি।
চিত্রশিল্প : চিত্রশিল্পের ক্ষেত্রে সম্রাট আকবরের রাজত্বকাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি চিত্রশিল্পী আবদুস সামাদের নেতৃত্বে চিত্রশিল্পের একটি স্বতন্ত্র বিভাগ স্থাপন করেন।
উপসংহার : সম্রাট আকবর সর্বক্ষেত্রে যে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন তার জন্য তাঁকে ‘মহান সম্রাট’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
(গ) মধ্যযুগে ভারতে দেশের মধ্যেকার বাণিজ্যের ধরনগুলি কেমন ছিল, তা লেখো।