WBBSE Class 7 History Second Unit Test Question Answer Set-2 | সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

CLASS 7 HISTORY 2ND UNIT TEST

WBBSE Class 7 History Second Unit Test Question Answer Set-2 | সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন

📌 সপ্তম শ্রেণি সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্র | Class 7 All Subject Question Paper

Set-2

সিলেবাস— চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়।

দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
সপ্তম শ্রেণি
বিষয় : ইতিহাস
পূর্ণমান : 25 সময় : 50 মিনিট

১। ঠিক উত্তরটি বেছে নাও : (যে-কোনো পাঁচটি) ১x৫=৫

১.১ ভারতে ঘোড়ার ডাকের ব্যবস্থাকে (উলাক্ / ওমরাহো / মামেলুক) বলা হয়।

উত্তরঃ উলাক্

১.২ আলাউদ্দিন খলজি বাজারের তদারকি করার জন্য (শাহানা-ই মান্ডি / তুরস্ক দন্ড / জাকাত) নামে কর্মচারী নিযুক্ত করেন।

উত্তরঃ শাহানা-ই মান্ডি

১.৩ কৃষক রাজস্ব দেওয়ার কথা কবুল করে (পাট্টা / কবুলিয়ত / খাজনা) নামে একটি দলিল রাষ্ট্রকে দিত।

উত্তরঃ কবুলিয়ত।

১.৪ ‘সড়ক-ই আজম’ নির্মাণ করেন– ( হুমায়ুন / শের শাহ / আকবর)।

উত্তরঃ শের শাহ।

১.৫ দিল্লি শহরের প্রধান সমস্যা ছিল (জলের অভাব / খাবারের সমস্যা / সম্রাটের সমস্যা)।

উত্তরঃ জলের অভাব।

১.৬ লালকেল্লা তৈরি করতে সে সময়ে (৯১ লক্ষ / ৫১ লক্ষ / ৮১ লক্ষ) টাকা খরচ হয়েছিল।

উত্তরঃ ৯১ লক্ষ।

২। নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও : ১×৫=৫

২.১ মালিক কাফুর কে ছিলেন ?

উত্তরঃ মালিক কাফুর ছিলেন আলাউদ্দিন খলজির সেনাপতি।

২.২ ‘আমুক্তমাল্যদ’ মূল গ্রন্থটি কোন ভাষায় লেখা ?

উত্তরঃ ‘আমুক্তমাল্যদ’ মূল গ্রন্থটি তেলুগু ভাষায় লেখা।

২.৩ হলদিঘাটির যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে হয়েছিল ?

উত্তরঃ ১৫৭৬ খ্রীস্টাব্দে আকবর এবং রানা প্রতাপের মধ্যে হলদিঘাটির যুদ্ধ হয়েছিল।

২.৪ ‘দীন-ই ইলাহি’ ধর্মমতের প্রবর্তক কে ছিলেন ?

উত্তরঃ আকবর ছিলেন দীন-ই ইলাহি ধর্ম মতের প্রবর্তক।

২.৫ কিলোঘড়ি প্রাসাদ কে নির্মাণ করেন ?

উত্তরঃ কিলোঘড়ি প্রসাদ নির্মাণ করেন কায়কোবাদ।

৩। নীচের যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ২×২=৪

৩.১ ‘সিজদা’ ও ‘পাইবস’ বলতে কী বোঝায় ?

উত্তরঃ দিল্লির সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবন তার দরবারে সিজদা ও পাইবস প্রথা চালু করেছিলেন।
‘সিজদা’ প্রথার অর্থ হলো সুলতানের সামনে নতজানু হওয়া। আর ‘পাইবস’ প্রথার অর্থ হলো সুলতানের পদযুগল চুম্বন করা। আসলে এগুলো ছিল সুলতানের চূড়ান্ত ক্ষমতার প্রতীক।

৩.২ ‘মারওয়াড়’ বলতে কী বোঝ ?

উত্তরঃ মারওয়াড় শব্দটি এসেছে ‘মরুওয়াড়’ কথা থেকে, যার অর্থ মরু অঞ্চল। রাজস্থানী ভাষায় ‘ওয়াড়’ বলতে একটি বিশেষ অঞ্চলকে বোঝায়। মারওয়াড় রাজ্যের রাজধানী ছিল যোধপুর। ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে বা মুঘল মারওয়াড় রাজ্যকে কেন্দ্র করে যে ‘রাঠোর যুদ্ধ’ শুরু হয়, তার ফল মুঘলদের পক্ষে ভালো হয়নি।

৩.৩ ‘হুন্ডি’ বলতে কী বোঝায় ?

উত্তরঃ ‘হুন্ডি’’ হল এক বিশেষ ধরনের ও বিভিন্ন মূল্যের কাগজ, যার মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা পাঠানো যেত। মধ্যযুগে ভারতে হুন্ডি ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। হুন্ডি ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে বণিকদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা পাঠানো অনেক নিরাপদ ও সহজ হয়েছিল।

৪। নীচের যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৩×২=৬

৪.১ ইকতা’ ও ‘ইকতাদার’ বলতে কী বোঝায় ?

উত্তরঃ ইকতা : দিল্লির সুলতানরা বিভিন্ন রাজ্য জয় করে তাঁদের সাম্রাজ্যের আয়তন বাড়িয়ে ছিলেন। সুলতানরা যেসব রাজ্য জয় করতেন সেই রাজ্যগুলিকে এক-একটি প্রদেশ বলে ধরে নেওয়া হত। সুলতানি আমলে এই প্রদেশগুলিকে ইকতা বলা হত।

ইকতাদার : সুলতানি সাম্রাজ্যের অধীন ইকতাগুলি থেকে কর আদায় করা ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজন ছিল। ইকতা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতেন একজন সামরিক নেতা। তাঁকে ইকতাদার বলা হত। ইকতাদার মুক্তি বা ওয়ালি নামেও পরিচিত হতেন।

৪.২ টীকা লেখ : মনসবদারী প্রথা।

উত্তরঃ মুঘল সম্রাট আকবর ভারতে মনসবদারি প্রথা প্রবর্তন করেছিলেন। ‘মনসব’ কথার অর্থ হল ‘পদমর্যাদা’। মনসব পদমর্যাদার অধিকারী কর্মচারীদের মনসবদার বলা হত। প্রত্যেক মনসবদার সরকার নির্দিষ্ট বেতনের পরিবর্তে সেনা ও ঘোড়া রাখতেন এবং সরকারের অনুগত থাকতেন। এই প্রথাকে ‘মনসবদারি প্রথা’ বলা হয়।

মনসবদারদের নিয়োগ ও পদোন্নতি সম্পূর্ণভাবে সম্রাটের ইচ্ছাধীন ছিল। এই পদ বংশানুক্রমিক ছিল না। মনসবদাররা অনেকগুলি স্তরে বিভক্ত ছিলেন, যেমন— পাঁচ হাজারি, সাত হাজারি, আট হাজারি, দশ হাজারি মনসবদার প্রভৃতি। এই প্রথা মুঘল রাজতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছিল।

৪.৩ কেন, কোথায় শাহজাহানাবাদ শহরটি গড়ে উঠেছিল ?

উত্তরঃ শাহজাহানাবাদ শহর প্রতিষ্ঠার কারণ : মুঘল সম্রাট শাহজাহান শাহজাহানাবাদ শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সুলতানি আমলে গড়ে ওঠা ধ্বংসপ্রাপ্ত দিল্লি শহরে রাজধানী গড়ে তুলতে চাননি। তাই তিনি নতুন এলাকায় শাহজাহানাবাদ শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন (১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে)।

শাহজাহানাবাদ শহরটির অবস্থান : সম্রাট শাহজাহান প্রতিষ্ঠিত শাহজাহানাবাদ শহরটি গড়ে উঠেছিল যমুনা নদীর পশ্চিমে একটি উঁচু জায়গায়। এটি পুরোনো দিল্লি থেকে খানিকটা দূরে অবস্থিত ছিল।

৫। নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো : ৫×১=৫

৫.১ মহম্মদ বিন তুঘলক কী কারণে রাজধানী পরিবর্তন করেন। তাঁর এই প্রয়াস সফল হয়নি কেন ?

উত্তরঃ সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক তাঁর রাজধানী দিল্লি থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন। তিনি নতুন রাজধানী দেবগিরির নাম পরিবর্তন করে রাখেন দৌলতাবাদ।

• রাজধানী পরিবর্তনের কারণ— সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক কেন তাঁর রাজধানী দিল্লি থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তর করেছিলেন সেই সম্পর্কে বিভিন্ন কারণের কথা জানা যায়।

(ক) বৈদেশিক আক্রমণ থেকে রক্ষা : রাজধানী দিল্লি ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের সন্নিকটে অবস্থিত ছিল। তাই দিল্লিতে সর্বদাই বৈদেশিক আক্রমণের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দেবগিরি ছিল সেই আশঙ্কা থেকে মুক্ত।

(খ) কেন্দ্রীয় অবস্থান : দিল্লি সুলতানি সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ছিল না। অপরপক্ষে দেবগিরি ছিল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। দেবগিরি উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যস্থলে অবস্থিত হওয়ায় প্রশাসনিক সুবিধাও হয়।

• ব্যর্থতার কারণ : দিল্লি থেকে দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তরের কিছুদিন পর সুলতান আবার দেবগিরি থেকে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তর করেন। ফলে রাজধানী স্থানান্তরের প্রয়াস ব্যর্থ হয়। রাজধানী স্থানান্তরের ব্যর্থতার কারণগুলি হল—

(ক) সুলতানের অস্থিরচিত্ততা : অস্থিরচিত্ততার জন্য দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তরের পর সুলতানের দেবগিরির পরিবেশ পছন্দ হয়নি।

(খ) নাগরিকদের অসন্তোষ : সুলতান দিল্লির সকল নাগরিককে দেবগিরিতে যেতে বাধ্য করেন। দিল্লির নাগরিকরা পূর্বপুরুষের বাসস্থান ছেড়ে দেবগিরিতে নতুন বসতি গড়ে তোলা মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। ফলে সুলতানের রাজধানী পরিবর্তনের প্রয়াস অল্পকালের মধ্যেই ব্যর্থ হয়ে যায়।

৫.২ মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুত নীতি সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তরঃ মুঘল সম্রাট আকবরের কুটনৈতিক বিচক্ষণতার শ্রেষ্ঠ পরিচয় ছিল তাঁর রাজপুত নীতি। ভারতীয় শৌর্যবীর্যের প্রতীক রাজপুতদের সঙ্গে সম্রাট আকবর মৈত্রীর সম্পর্ক তৈরি করতে সচেষ্ট ছিলেন। রাজপুতরাও মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তিস্তম্ভে পরিণত হয়েছিল।

• রাজপুতদের সম্পর্কে আকবরের গৃহীত নীতি : রাজপুতদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সম্রাট আকবর কয়েকটি নীতি অনুসরণ করেছিলেন। যেমন— বৈবাহিক সম্পর্কের নীতি, উচ্চ রাজপদে নিয়োগের নীতি, বিভিন্ন সুযোগসুবিধা প্রদানের নীতি এবং যুদ্ধনীতি।

বৈবাহিক সম্পর্কের নীতি : সম্রাট আকবর অম্বরের রাজকন্যা যোধাবাঈ-কে, বিকানির ও যোধপুরের রাজপুত রাজকন্যাদের বিবাহ করেন। তা ছাড়া আকবর তাঁর পুত্র সেলিমের (জাহাঙ্গির) সঙ্গেও রাজপুত রাজকন্যার বিবাহ দেন।

উচ্চ রাজপদে নিয়োগ নীতি : সম্রাট আকবর রাজপুতদের উচ্চপদে নিয়োগ করে তাঁদের আনুগত্য লাভ করেছিলেন। রাজা বিহারীমল, ভগবানদাস, মানসিংহ প্রমুখ রাজপুতদের তিনি মনসবদার হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন।

বিভিন্ন সুযোগসুবিধা প্রদান নীতি : রাজপুতদের সাহায্য ও সহযোগিতা লাভের জন্য আকবর তাঁদের উপর থেকে তীর্থকর বা জিজিয়া কর তুলে দেন এবং তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নেন।

যুদ্ধনীতিঃ অনেক রাজপুত রাজ্য আকবরের বশ্যতাস্বীকার করলেও মেওয়াড়, রণথম্ভোর প্রভৃতি রাজপুত যোধাবাঈ রাজ্যগুলি কোনোভাবেই আকবরের বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি হয়নি। তাই আকবর মেওয়াড়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধনীতি অনুসরণ করেন। মেওয়াড়ের রানা উদয় সিংহ ও তাঁর পুত্র রানা প্রতাপ সিংহ আকবরের বিরুদ্ধে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করেন। রানা প্রতাপ সিংহ ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটির যুদ্ধে আকবরের বাহিনীর হাতে পরাজিত হলেও তাঁর বশ্যতাস্বীকার করেননি। আকবর মৈত্রী ও যুদ্ধনীতি অনুসরণ করে রাজপুতদের নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন এবং মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত সুদৃঢ় হয়।

Leave a Reply