CLASS 7 HISTORY 2ND UNIT TEST
WBBSE Class 7 History Second Unit Test Question Answer Set-4 | সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
📌 সপ্তম শ্রেণি সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্র | Class 7 All Subject Question Paper
Set-4
সিলেবাস— চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়।
দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
সপ্তম শ্রেণি
বিষয় : ইতিহাস
পূর্ণমান : 25 সময় : 50 মিনিট
১। ঠিক উত্তরটি বেছে নাও : (যে-কোনো পাঁচটি) ১x৫=৫
১.১ চৈতন্যভাগবত গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন– (বৃন্দাবন দাস / কৃষ্ণদেব রায় / শ্রীচৈতন্য)।
উত্তরঃ বৃন্দাবন দাস।
১.২ বিজয়নগর এর সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন– (আলাউদ্দিন / দেব রায় / কৃষ্ণদেব রায়)।
উত্তরঃ কৃষ্ণদেব রায়।
১.৩ জাহাঙ্গিরের আমলে কোন্ শিখ গুরুকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়-(জয়সিংহ / অর্জুন / হিমু / কোনোটিই নয়)।
উত্তরঃ অর্জুন
১.৪ ঔরঙ্গজেব মারাঠা নেতা (বাজিরাও / শিবাজী / রঞ্জিত সিংহ) -কে স্বাধীন রাজা বলে মেনে নেন।
উত্তরঃ শিবাজী
১.৫ মুঘল যুগের সবচেয়ে ছোট ঘরকে (মাকান / বাংলো / কোঠরি) বলা হত।
উত্তরঃ কোঠরি।
১.৬ মুঘল আমলে (হলদিয়া / সুরাট / তাম্রলিপ্ত) বন্দর ছিল ভারতের প্রধান বন্দর।
উত্তরঃ সুরাট।
২। নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও : ১×৫=৫
২.১ পানিপথের প্রথম যুদ্ধে বাবর কোন যুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করেন ?
উত্তরঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধে বাবর ‘রুমি’ কৌশল ব্যবহার করেন।
২.২ ইলিয়াস শাহি বংশের পতন ঘটিয়ে কে বাংলার শাসক হন ?
উত্তরঃ রাজা গণেশ ইলিয়াস শাহি বংশের পতন ঘটিয়ে বাংলার শাসক হন।
২.৩ ‘ওয়াতন’ কথার অর্থ কী ?
উত্তরঃ ‘ওয়াতন’ কথার অর্থ স্বদেশ।
২.৪ জিজিয়াকর পূনঃপ্রবর্তন করেছিলেন কোন মুঘল সম্রাট ?
উত্তরঃ ‘জিজিয়া’ কর পূনঃপ্রবর্তন করেছিলেন ঔরঙ্গজেব।
২.৫ বাংলার কোথায় পর্তুগিজদের ঘাঁটি ছিল ?
উত্তরঃ বাংলার ব্যান্ডেলে পর্তুগিজদের ঘাঁটি ছিল
৩। নীচের যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ২×২=৪
৩.১ আমির কাদের বলা হয় ? খিলাত শব্দের অর্থ কী ?
উত্তরঃ আমির শব্দের অর্থ হলো উচ্চ বংশের ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তি তবে দিল্লি সুলতানিতে শাসনকারী যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমির বলা হত।
‘খিলাত’ শব্দের অর্থ হলো সম্মানজনক পোশাক বা আনুষ্ঠানিক পোশাক। খলিফা ইলতুৎমিসকে খিলাত পাঠিয়েছিলেন।
৩.২ শের শাহ ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থায় কী কী সংস্কার করেছিলেন ?
উত্তরঃ শেরশাহ জমি জরিপ করে জমির উর্বরতার উপর ভিত্তি করে সমগ্র চাষযোগ্য জমিকে তিন ভাগে ভাগ করেন। রাজস্ব নগদ অর্থে অথবা শস্যের মাধ্যমে প্রদান করা যেত। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় রাজস্ব মুখোপাধ্যায় ছিল।
৩.৩ ‘কসবা’ বলতে কী বুঝো ?
উত্তরঃ ‘কসবা’ শব্দের অর্থ হল শহরতলী বা মূল শহরের পাশে গড়ে ওঠা ছোট শহর। কসবা গুলি মূল শহরের মতো পাঁচিল দিয়ে ঘেরা থাকত না এমনকি গ্রাম ও কসবার সীমানাও নির্দিষ্ট ছিল না।
৪। নীচের যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৩×২=৬
৪.১ ইলিয়াসশাহি এবং হোসেনশাহি আমলে বাংলার সংস্কৃতির পরিচয় দাও।
উত্তরঃ বাংলার ইলিয়াসশাহি ও হোসেনশাহি সুলতানদের আমলে বাংলার সংস্কৃতির উন্নয়ন হয়। তাদের ধর্মনিরপেক্ষ শাসনে বাংলার ভাষা-সাহিত্য ও স্থাপত্যের উন্নতি হয়।
(ক) ভাষা-সাহিত্য : এই সময় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতি ঘটে। হোসেন শাহের আমলে বাংলা লেখালেখির চর্চা বাড়ে।
(খ) পরধর্মসহিষ্ণুতা : ইলিয়াসশাহি ও হোসেনশাহি সুলতানরা ছিলেন অন্যের ধর্মের প্রতি উদার। তাঁদের উদারতার ফলে বাংলায় সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করত। এই সময় বাংলায় শ্রীচৈতন্যদেবের নেতৃত্বে ভক্তিবাদের প্রচার হয়েছিল। সুলতান হোসেন শাহ শ্রীচৈতন্যকে শ্রদ্ধা করতেন।
৪.২ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য শের শাহ কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন ?
উত্তরঃ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য শের শাহ বিশেষ সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে বহু সড়ক নির্মিত হয়েছিল।
সড়ক-ই আজম : শের শাহ বাংলার সোনারগাঁ (অধুনা ঢাকা) থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি রাস্তার সংস্কার করেন। এই রাস্তাটির নাম-ই ছিল ‘সড়ক-ই আজম’ (গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড), যা প্রায় ১৪০০ মাইল লম্বা।
অন্যান্য ব্যবস্থা : তিনি আগ্রা থেকে যোধপুর এবং চিতোর পর্যন্ত অপর একটি সড়ক নির্মাণ করেন। লাহোর থেকে মুলতান পর্যন্ত এবং আগ্রা থেকে বুরহানপুর পর্যন্ত আরও দুটি সড়ক তাঁর উদ্যোগে তৈরি হয়। পথিক ও বণিকদের সুবিধার্থে সড়কগুলির ধারে ধারে অনেক সরাইখানা নির্মিত হয়েছিল।
৪.৩ দিল্লি শহরে জলের সমস্যা প্রধান সমস্যা ছিল কেন ?
উত্তরঃ সুলতানি আমলে দিল্লি শহরের প্রধান সমস্যা ছিল জলের সমস্যা।
জল সমস্যার কারণ—
(ক) দিল্লির অবস্থান : দিল্লি শহর গড়ে উঠেছিল আরাবল্লি শৈলশিরার এক প্রান্তে। আরাবল্লির পাথুরে এলাকায় জলের সমস্যা ছিল।
(খ) দিল্লির জনসংখ্যা বৃদ্ধি : দিল্লির জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছিল। বিশেষত বাগদাদের অবক্ষয়ের পর মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া থেকে অনেক লোক দিল্লিতে এসে বসবাস শুরু করেছিল। ফলে জলের সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
(গ) জলাধারের অপ্রতুলতা : বর্ষার জল ধরে রেখেও দিল্লিবাসীর প্রয়োজন মেটানো সম্ভব ছিল না। সুলতানরা কয়েকটি হৌজ বা পুকুর খনন করলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
৫। নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখো : ৫×১=৫
৫.১ শের শাহের শাসনব্যবস্থার কী কী মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও তা লেখো।
উত্তরঃ ভূমিকা : সম্রাট শের শাহ ছিলেন বিজেতা হিসেবে শ্রেষ্ঠ, আর শাসক হিসেবে শ্রেষ্ঠতম। দিল্লির শাসক হিসেবে তিনি মাত্র ৫ বছর (১৫৪০-১৫৪৫ খ্রি.) রাজত্ব করেছিলেন। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই শাসনব্যবস্থার সর্বত্র তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। তাঁর শাসনব্যবস্থার মধ্যে অনেক মানবিক চিন্তার পরিচয় পাওয়া যায়।
• শের শাহের মানবিক চিন্তামূলক সংস্কার—
ভূমিরাজস্ব : ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার ক্ষেত্রে শের শাহ অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি ‘পাট্টা’ ও ‘কবুলিয়ত’ ব্যবস্থা চালু করেন।
পাট্টা : শের শাহ কৃষককে কৃষকের নাম, জমিতে কৃষকের অধিকার এবং তাকে কত রাজস্ব দিতে হবে তা লিখে যে দলিল দিতেন, তাকে পাট্টা বলা হত।
কবুলিয়ত : পাট্টাপ্রাপ্ত কৃষকরা রাজস্ব দেওয়ার কথা স্বীকার বা কবুল করে সরকারকে যে দলিল সই করে দিত, তাকে কবুলিয়ত বলা হত।
বিচার সংস্কার : শের শাহ পক্ষপাতহীন ও কঠোর বিচারব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। তিনি তাঁর সাম্রাজ্যের মধ্যে একই ধরনের আইন ও দণ্ডবিধি প্রবর্তন করেন। সম্রাট স্বয়ং প্রতি বুধবার আপিল মামলার বিচার করতেন। অপরাধীকে শাস্তিস্বরূপ বেত্রাঘাত, অঙ্গচ্ছেদ এমনকি প্রাণদণ্ডও দেওয়া হত।
যোগাযোগ ব্যবস্থা : যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সুদীর্ঘ ও প্রশস্ত রাজপথ নির্মাণ শের শাহের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তিনি পূর্ববঙ্গের সোনারগাঁ থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত ১৪০০ মাইল দীর্ঘ পথ নির্মাণ করেন, যা ‘সড়ক-ই আজম’ (গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা জিটি রোড) নামে পরিচিত। তিনি আগ্রা থেকে বুরহানপুর ও আগ্রা থেকে যোধপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করেন। তিনি পথিক ও বণিকদের সুবিধার জন্য রাস্তার ধারে ধারে অনেক সরাইখানা নির্মাণ করেছিলেন। তিনিই প্রথম ঘোড়ার পিঠে ডাক আদানপ্রদানের ব্যবস্থা করেন।
ধর্মনীতি : শের শাহ ছিলেন সুন্নি মুসলমান। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে শাসন পরিচালনা করতেন। ব্রহ্মজিৎ গৌড় তাঁর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। তাঁর উদারনীতির জন্য তিনি ভারতের জাতীয় সম্রাটের মর্যাদা লাভ করেছেন।
উপসংহার : মধ্যযুগে মাত্র ৫ বছর রাজত্ব করে শের শাহ উন্নত শাসনকাঠামো রচনা করেন।
৫.২ দিল্লির সুলতানদের আমলে ব্যাবসাবাণিজ্যের বিস্তার কেন ঘটেছিল ?
উত্তরঃ ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরির মৃত্যুর পর তাঁর সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবক দিল্লিতে স্বাধীন সুলতানির প্রতিষ্ঠা করেন। ৩২০ বছর ধরে দিল্লির সুলতানদের আমলে ব্যাবসাবাণিজ্যের ব্যাপক বিস্তার ঘটে।
• দিল্লির সুলতানদের আমলে বাণিজ্যের বিস্তারের কারণ—
আইনশৃঙ্খলার উন্নতি : সুলতানি আমলে ভারতে সুদৃঢ় শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দিল্লির সুলতানদের আমলে দেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ঘটেছিল- যা ব্যাবসাবাণিজ্যের বিস্তারে সহায়ক হয়।
নতুন নতুন শহরের পত্তন : সুলতানি আমলে অনেক নতুন নতুন শহরের পত্তন হয়েছিল। পুরোনো শহরগুলিতে নতুন করে লোকবসতি শুরু হয়েছিল। ফলে শহরের পত্তন ও বিকাশ বাণিজ্যের বিস্তারে সহায়ক হয়।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি : সুলতানি যুগে রাস্তাঘাট, সরাইখানা প্রভৃতি নির্মাণের ফলে বাণিজ্যের প্রসার ঘটে।
শহরবাসী ও সেনাবাহিনীর প্রয়োজন মেটানো : শহরগুলিতে ব্যবসায়ী, রাজকর্মচারী, শ্রমিক, কারিগরসহ প্রচুর লোক বসবাস করত। তা ছাড়া থাকত বিশাল সেনাবাহিনী। এদের জন্য এবং সুলতান ও অভিজাতদের বিলাসব্যসন এবং মূল্যবান জিনিসের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সুলতানি আমলে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেওয়া হত।