বাংলা রুপতত্ত্ব – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ MCQ, SAQ, বড় প্রশ্ন (Essay Type) উত্তর | WBCHSE HS Bengali Solved Question Answer
বাংলা রুপতত্ত্ব থেকে বহুবিকল্পীয়, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) আগামী পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলা রুপতত্ত্ব – উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer
বহুবিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (MCQ) | রুপতত্ত্ব – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer
১. পদ গঠনের চরিত্র অনুযায়ী সমাস—
(ক) দুই প্রকার (খ) তিন প্রকার
(গ) চার প্রকার (ঘ) পাঁচ প্রকার
উত্তরঃ (খ) তিন প্রকার
২. শব্দকে আমরা এককরূপে পায় একমাত্র—
(ক) বিশেষ্য পদে (খ) বিশেষণ পদে
(গ) সর্বনাম পদে (ঘ) অভিধানে
উত্তরঃ (ঘ) অভিধানে
৩. স্বাধীন রূপমূলের উদাহরণ হলো—
(ক) ছাত্ররা (খ) ছাত্র (গ) ছাত্রকে
(ঘ) ছাত্রদের
উত্তরঃ (খ) ছাত্র
৪. ভাষার সবচেয়ে ছোটো অর্থপূর্ণ একক হলো—
(ক) শব্দার্থ তত্ত্ব (খ) রূপতত্ত্ব (গ) ধ্বনিতত্ত্ব (ঘ) বাক্যতত্ত্ব
উত্তরঃ (খ) রূপতত্ত্ব
৫. পরাধীন ব্যাকরণ সম্মত রূপমূল কত প্রকার ?
(ক) দুই প্রকার (খ) তিন প্রকার
(গ) চার প্রকার (ঘ) পাঁচ প্রকার
উত্তরঃ (ক) দুই প্রকার
৬. একই পদ পাশাপাশি দুবার বসার প্রক্রিয়াকে বলে— (উঃ মাঃ ২০১৭)
(ক) সমাস (খ) পদদ্বৈত (গ) সন্ধি (ঘ) প্রত্যয়
উত্তরঃ (খ) পদদ্বৈত
৭. নিষ্পাদক রূপমূল হল—
(ক) প্রত্যয় (খ) উপসর্গ
(গ) প্রত্যয় ও উপসর্গ উভয়ই
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (গ) প্রত্যয় ও উপসর্গ উভয়ই
৮. রূপতত্ত্বের ইংরেজি প্রতিশব্দ কী ?
(ক) Morphology (খ) Phonology
(গ) Phonetics (ঘ) Semantics
উত্তরঃ (ক) Morphology
৯. যে অব্যয় শব্দের শুরুতে বসে তার অর্থ পরিবর্তন করে তাকে বলা হয়— (উঃ মাঃ ২০১৮)
(ক) বিভক্তি (খ) প্রত্যয় (গ) উপসর্গ
(ঘ) অনুসর্গ
উত্তরঃ (গ) উপসর্গ
১০. সমন্বয়ী রূপমূল কোনটি ?
(ক) বিভক্তি (খ) প্রত্যয় (গ) উপসর্গ
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (ক) বিভক্তি
১১. ‘হাঁসজারু’ শব্দটি একটি—
(ক) ক্র্যানবেরি রূপমূল
(খ) জোড়কলম শব্দ
(গ) ফাঁকা রূপ
(ঘ) শূন্য রূপ
উত্তরঃ (ক) ক্র্যানবেরি রূপমূল
১২. রূপতত্ত্ব অনুযায়ী সমাস কয় প্রকার ?
(ক) তিন প্রকার (খ) পাঁচ প্রকার
(গ) ছয় প্রকার (ঘ) সাত প্রকার
উত্তরঃ (ক) তিন প্রকার
১৩. রূপমূল হল (উঃ মাঃ ২০১৫)—
(ক) ভাষার ক্ষুদ্রতম উচ্চারণগত একক
(খ) পদের গঠনবৈচিত্র
(গ) শব্দর্থের উপাদান
(ঘ) ভাষার ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ একক
উত্তরঃ (ঘ) ভাষার ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ একক
১৪. একটি ‘শূন্য রূপ’ হল—
(ক) ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমি (খ) প্রত্যয়
(গ) উপসর্গ (ঘ) শূন্য বিভক্তি
উত্তরঃ (ঘ) শূন্য বিভক্তি
১৫. ক্র্যানবেরি রূপমূলের উদাহরণ হল—
(ক) প্রলাপ শব্দের ‘লাপ’
(খ) প্রলাপ শব্দের ‘প্র’
(গ) উপগ্রহ শব্দের ‘উপ’
(ঘ) উপগ্রহ শব্দের ‘গ্রহ’
উত্তরঃ (ক) প্রলাপ শব্দের ‘লাপ’
১৬. ‘ফুলওয়ালা’ শব্দের ‘ফুল’ হল—
(ক) স্বাধীন রূপমূল (খ) পরাধীন রূপমূল (গ) সহরুপ (ঘ) সবকটিই
উত্তরঃ (ক) স্বাধীন রূপমূল
১৭. প্রত্যয় কোন জাতীয় রূপমূল ?
(ক) স্বাধীন (খ) নিষ্পাদিত (গ) আভিধানিক (ঘ) সমন্বয়ী
উত্তরঃ (খ) নিষ্পাদিত
১৮. তদ্ধিত প্রত্যয় যুক্ত হয়—
(ক) শব্দের সঙ্গে (খ) উপসর্গের সঙ্গে
(গ) বিভক্তির সঙ্গে (ঘ) ধাতুর সঙ্গে
উত্তরঃ (ক) শব্দের সঙ্গে
১৯. যে অব্যয় শব্দের শুরুতে বসে তার অর্থ পরিবর্তন করে তাকে বলা হয়—
(ক) প্রত্যয় (খ) অনুসর্গ (গ) উপসর্গ
(ঘ) বিভক্তি
উত্তরঃ (গ) উপসর্গ
২০. বাংলা উপসর্গগুলি একধরনের অব্যয় হলেও আচরণ ও ব্যবহারে—
(ক) কারকের মতো (খ) সমাসের মতো
(গ) বিভক্তির মতো (ঘ) প্রত্যয়ের মতো
উত্তরঃ (ঘ) প্রত্যয়ের মতো
২১. ‘ধোঁয়া আর কুয়াশা মিলে হয় ধোঁয়াশা’ – এটি হল—
(ক) বর্ণনামূলক সমাস
(খ) মিশ্র রূপমূল
(গ) জটিল রূপমূল
(ঘ) আভিধানিক রূপমূল
উত্তরঃ (খ) মিশ্র রূপমূল
২২. একই পদ পাশাপাশি দুবার বসার প্রক্রিয়াকে বলে—
(ক) পদদ্বৈত (খ) সমাস (গ) সন্ধি (ঘ) প্রত্যয়
উত্তরঃ (ক) পদদ্বৈত
২৩. ‘চুপ-চাপ’ শব্দটি নিম্নলিখিত কোন শ্রেণীর মধ্যে পড়ে ?
(ক) বর্ণনামূলক সমাস
(খ) ব্যাখ্যামূলক সমাস
(গ) অনুকার পদগঠন
(ঘ) পদদ্বৈত
উত্তরঃ (গ) অনুকার পদগঠন
২৪. Allomorph -এর বাংলা প্রতিশব্দ—
(ক) সহরূপমূল (খ) স্বাধীন রূপমূল
(গ) বদ্ধ রূপমূল (ঘ) সমরূপমূল
উত্তরঃ (ক) সহরূপমূল
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (MCQ) | রুপতত্ত্ব – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer
১. রূপ কী ?
উত্তরঃ ভাষায় সবচেয়ে ছোটো অর্থপূর্ণ একক হল রূপ।
২. রূপমূল বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ভাষার অর্থযুক্ত নূন্যতম অংশ হল রূপমূল। বাগ্যন্ত্রের একবারের প্রচেষ্টায় পদের যে নূন্যতম অংশ উচারিত হতে পারে, তাকেই রূপমূল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
যেমন– ‘সুগন্ধ’ শব্দে ‘সু’ ও ‘গন্ধ’ এই দুটি হল রূপমূল।
৩. রূপমূলের দুটি শ্রেণি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ রূপমূলের দুটি ভাগ। যথাঃ
(ক) স্বাধীন রূপমূল
(খ) পরাধীন রূপমূল
৪. রূপিম ও রূপমূলের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তরঃ রূপিম ও স্বনিমের মধ্যে পার্থক্যগুলি নিমরূপ—
(ক) স্বনিমের কোনো অর্থ না থাকলেও রূপিমের আছে।
(খ) রূপিমকে ভাষার ক্ষুদ্রতম একক বলা যায় না, কিন্তু স্বনিম হল ভাষার ক্ষুদ্রতম একক।
(গ) রকাধিক স্বনিম যোগে রূপিম গঠিত হয়।
৫. সহরূপমূল কাকে বলে ?
উত্তরঃ সহরূপমূল হল এমন রূপমূল যা মূলূপমূলের সাথে যুক্ত হয় এবং বিশেষ বিশেষ পরিবেশে বিশেষ বিশেষ অর্থ প্রকাশের ক্ষেত্রে একই ব্যাকরণগত অর্থ প্রকাশ করে।
যেমন– মানুষগুলো, ছেলেগুলো, সন্তানরা, পাখিগুলি ইত্যাদি।
৬. মুক্ত রূপিম কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে অর্থপূর্ণ ধ্বনিসমষ্টি ভাষার অন্য ধ্বনিসমষ্টির সঙ্গে সম্পূর্ণ যুক্ত না হয়েও স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, তাকে মুক্ত রূপিম বলে।
যেমন– ‘আম ফলের রাজা’। এখানে ‘আম’ হল মুক্ত রূপিম।
৭. বদ্ধ রূপিম কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম ধ্বনিসমষ্টি সব সময় স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে না, মুক্ত রূপিমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়, তাকে বলে বদ্ধ রূপিম।
যেমন– ‘ছেলেটি খুব শান্ত’। এখানে ‘ছেলে’ মুক্ত রূপমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘টি’ শব্দটির অর্থ প্রকাশ করেছে। তাই এখানে ‘টি’ হল বদ্ধ রূপিম।
৮. প্রতিপাদিক কী ?
উত্তরঃ পদ বা পদের অবিভাজ্য অংশ যা পদের মোউলিক ভাব প্রদান করে তাকে বলা হয় প্রকৃতি। আর পদ বা ধাতুর সঙ্গে যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন পদ গঠন করে তাকে বলে প্রত্যয়। এই প্রকৃতি এবং প্রত্যয় মিলে গঠিত হয় প্রাতিপাদিক।
৯. দুটি পরাধীন রূপমূলের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ‘ফুলওয়ালা’ শব্দের ‘ওয়ালা’ এবং ‘তামাটে’ শব্দের ‘টে’ পরাধীন রূপমূলের উদাহরণ।
১০. প্রকৃতি কী ? এটি কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ পদ বা পদের যে অবিভাজ্য অংশ পদকে মৌলিক ভাব প্রদান করে তাকে বলে প্রকৃতি।
প্রকৃতি দুই প্রকার। যথা- (ক) নাম প্রকৃতি ও (খ) ধাতু প্রকৃতি।
১১. নাম প্রকৃতি কী ?
উত্তরঃ যে প্রকৃতি কোনো কিছুর নাম বোঝায় এবং কোনো বস্তু, জাতি, ভাব অথবা গুণকে নির্দেশ করে, তাকে বলে নাম প্রকৃতি।
যেমন– গাছ, জল প্রভৃতি।
১২. ধাতু প্রকৃতি কী ?
উত্তরঃ যে প্রকৃতির মাধ্যমে পদের একটি অবিশ্লিষ্ট মৌলিক অংশ পাওয়া যায় এবং যার মাধ্যমে কোনো ক্রিয়া জাতীয় ভূমিকাকে নির্দেশ করা হয়, তাকে বলে ধাতু প্রকৃতি।
যেমন– খা, কর, চল্ ইত্যাদি।
১৩. প্রত্যয় কাকে বলে ?
উত্তরঃ শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত করে নতুন শব্দ গঠন করা হয়, তাকে প্রত্যয় বলে।
যেমন– দা+তব্য = দাতব্য
১৪. ব্যবহারিক প্রয়োগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয় কত রকম ও কী কী ?
উত্তরঃ ব্যবহারিক প্রয়োগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয় দু-রকম। যথা- তদ্ধিত প্রত্যয় ও কৃৎ প্রত্যয়।
১৫. তদ্ধিত প্রত্যয় কাকে বলে ?
উত্তরঃ নাম শব্দের পরে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়, সেই প্রত্যয়কে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে।
যেমন– সুমিত্রা+ই = সৌমিত্রি
রূপতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর (MCQ) | রুপতত্ত্ব – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন ও উত্তর | WBCHSE HS Bengali Question and Answer
১. ‘মুণ্ডমাল শব্দ’ কাকে বলে? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও। ৫ (২০১৫)
উত্তরঃ রূপতত্ত্বের আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মুন্ডমাল শব্দ, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় অ্যাক্রোনিম (Acronym)।
মুন্ডমাল শব্দঃ
সাধারণ অর্থে মুন্ডমাল বলতে বোঝায় মুন্ড বা মস্তকের মালা। কিন্তু রূপতত্ত্বের আলোচনায় মুন্ডমাল হল বিশেষ এক ধরনের শব্দ বা শব্দ গঠনের প্রক্রিয়া। কোনো শব্দগুচ্ছের আদ্য অক্ষর (অর্থাৎ, প্রথম অক্ষর) নিয়ে গঠিত শব্দকে মুন্ডমাল শব্দ বা অ্যাক্রোনিম বলে। যেমন- লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক শব্দগুচ্ছের প্রথম অক্ষরগুলি নিয়ে গঠিত হয়েছে ল.সা.গু. শব্দটি। এই ল.সা.গু. শব্দটি হল মুন্ডমাল শব্দ। একইরকমভাবে, গ.সা.গু. (গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক), বি.বা.দী. (বিনয়- বাদল-দীনেশ) শব্দগুলি বাংলা মুন্ডমাল শব্দের উদাহরণ।
বাংলা মুন্ডমাল শব্দের সংখ্যাটা কম তবে ইংরেজি ভাষায় এই জাতীয় শব্দের সংখ্যা প্রচুর এবং সেগুলি বাংলাতেও বহুল প্রচলিত। যেমন, ভি.আই.পি (ভেরি ইম্পরট্যান্ট পার্সন), এম.এল.এ (মেম্বার অফ লেজিসলেটিভ এসেম্বলি) ইত্যাদি।
২. ‘রূপমূল’ কাকে বল? উদাহরণসহ ‘স্বাধীন’ ও ‘পরাধীন’ রূপমূলের পরিচয় দাও। (২০১৭,২০)
উত্তরঃ রূপতত্ত্বের প্রধান আলোচনার বিষয় হল রূপ। ভাষার ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ একক হল রূপ। রূপের দুরকম পরিচয় বর্তমান- একটি হল রূপমূল এবং অপরটি হল সহরূপ। ভাষায় ব্যবহৃত ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছকেই বলা হয় রূপমূল। প্রসঙ্গত বলা যায়, রূপমূলের বিকল্পগুলিকে বলা হয় সহরূপ।
স্বাধীন ও পরাধীন রূপমূল
রূপমূলকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(১) স্বাধীন রূপমূল: যে রূপমূলগুলি ভাষায় স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, তাদেরকে স্বাধীন রূপমূল বলা হয়। অন্যভাবে বললে, যেসকল রূপমূল বাক্যে ব্যবহার করতে গেলে অন্য কোনো রূপমূলের উপর নির্ভর করতে হয় না, তাদেরকে স্বাধীন রূপমূল বলে।
(২) পরাধীন রূপমূল: যে রূপমূলগুলি ভাষায় স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে না, বরং কোনো স্বাধীন রূপমূলকে অবলম্বন করে ভাষায় ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে পরাধীন রূপমূল বলা হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, /ছেলেটি/ এই শব্দটিতে দুটি রূপমূল রয়েছে- {ছেলে} এবং {টি}। {ছেলে} হল স্বাধীন রূপমূল এবং {টি} হল পরাধীন রূপমূল। কারণ, {ছেলে} রূপমূলটি ভাষায় নানাভাবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং সর্বদাই এককভাবে ব্যবহৃত হতে পারবে। যেমন- ‘রামবাবুর ছেলে বিদেশে থাকে’, ‘তার ছেলে ডাক্তার’ ইত্যাদি। কিন্তু {টি} রূপমূলটি যখনই ভাষায় প্রয়োগ করা হোক সর্বদাই একটি স্বাধীন রূপমূলকে (যেমন, এখানে ‘ছেলে’-কে) অবলম্বন করে বাক্যে ব্যবহৃত হবে।
৩. রূপমূলের শ্রেণীবিভাগ কর। এই প্রসঙ্গে নিষ্পাদক রূপমূল সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তরঃ রূপতত্ত্ব অনুযায়ী রূপমূল প্রধানত দু’রকমের-
(১) স্বাধীন রূপমূল,
(২) পরাধীন রূপমূল
এই দুই প্রকার রূপমূলকেই আবার আভিধানিক এবং ব্যাকরণসম্মত – এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এইভাবে রূপমূলকে চারটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়, যথা—
(১) স্বাধীন আভিধানিক,
(২) স্বাধীন ব্যাকরণসম্মত,
(৩) পরাধীন আভিধানিক এবং
(৪) পরাধীন ব্যাকরণসম্মত রূপমূল।
পরাধীন ব্যাকরণসম্মত রূপমূলকে আবার দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- (১) সমন্বয়ী রূপমূল এবং (২) নিষ্পাদক রূপমূল।
নিষ্পাদক রূপমূল: নিষ্পাদক শব্দের অর্থ হল যা নতুন পদ গঠন করে। উপসর্গ এবং প্রত্যয়- এই দুই ধরণের রূপমূল কোনো পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন পদ গঠন করে, এইজন্য এদেরকে বলা হয় নিষ্পাদক রূপমূল। যেমন-
প্ৰ (উপসর্গ)+শান্ত (পদ)= প্রশান্ত (নতুন পদ)
কু(উপসর্গ)+কাজ (পদ)=কুকাজ(নতুন পদ)
শ্রী (পদ)+ মান (প্রত্যয়)= শ্রীমান (নতুন পদ)
ধন(পদ) + বান(প্রত্যয়)= ধনবান (নতুন পদ)
৪. সমন্বয়ী রূপমূল এবং নিষ্পাদক রূপমূল বলতে কী বোঝো ? উদাহরণসহ আলোচনা কর।
উত্তরঃ রূপতত্ত্ব অনুযায়ী রূপমূল প্রধানত দু’রকমের—
(১) স্বাধীন রূপমূল
(২) পরাধীন রূপমূল
এই দুই প্রকার রূপমূলকেই আবার আভিধানিক এবং ব্যাকরণসম্মত– এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এইভাবে রূপমূলকে চারটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়, যথা– (১) স্বাধীন আভিধানিক, (২) স্বাধীন ব্যাকরণসম্মত, (৩) পরাধীন আভিধানিক এবং (৪) পরাধীন ব্যাকরণসম্মত রূপমূল।
পরাধীন ব্যাকরণসম্মত রূপমূলকে আবার দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা– সমন্বয়ী রূপমূল এবং নিষ্পাদক রূপমূল।
সমন্বয়ী রূপমূলঃ সাধারণত বিভক্তিকে বলা হয় সমন্বয়ী রূপমূল। কোনো শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হলে এমনভাবে মিশে যায় যে আর সেটিকে পৃথক করা যায় না এবং একবার বিভক্তি ব্যবহৃত হলে তারপরে আর কোনো রূপ বসতে পারেনা। এজন্য বিভক্তিকে সমন্বয়ী রূপমূল বলে। যেমন- ‘রাম’ শব্দটির সঙ্গে ‘এর’ বিভক্তি যোগ করলে হয় ‘রামের’, কিন্তু ‘রামের’ শব্দটির সঙ্গে আর কোনো বিভক্তি যোগ হবে না।
নিষ্পাদক রূপমূলঃ উপসর্গ এবং প্রত্যয় অন্য পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন পদ গঠন করে, এইজন্য এদেরকে বলা হয় নিষ্পাদক রূপমূল।
যেমন—
প্ৰ (উপসর্গ) + শান্ত (পদ) = প্রশান্ত (নতুন পদ)
শ্রী (পদ) + মান (প্রত্যয়) = শ্রীমান (নতুন পদ)।
৫. রূপতত্ত্ব অনুযায়ী সমাস কয় প্রকার ও কী কী ? সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ বাংলা ব্যাকরণের সমাস বিষয়টি ভাষাবিজ্ঞানের রূপতত্ত্ব শাখাটির অন্তর্গত। প্রচলিত বাংলা ব্যাকরণে সমাস সাত বা আট প্রকারের হলেও রূপতত্ত্ব অনুযায়ী সমাস তিন প্রকার। সেগুলি হল—
(১) দ্বন্দ্ব সমাসঃ যে সমাসে দুই বা তার বেশি পদ পাশাপাশি বসে একটি নতুন পদ গঠন করে এবং যে পদ গুলি নতুন পদটি গঠন করল তাদের নিজস্ব অর্থ বজায় থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন, ছেলে-মেয়ে, রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ ইত্যাদি।
(২) ব্যাখ্যানমূলক সমাসঃ যে সমাসে পাশাপাশি বসা দুটি পদের প্রথমটি দ্বিতীয়টিকে ব্যাখ্যা করে তাকে ব্যাখ্যানমূলক সমাস বলে। যেমন- শ্বেতপদ্ম, মহারাজা, বিদ্যালয় ইত্যাদি। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে, প্রচলিত বাংলা ব্যাকরণের তৎপুরুষ, কর্মধারয়, দ্বিগু সমাস ব্যাখ্যানমূলক সমাসের অন্তর্ভুক্ত।
(৩) বর্ণনামূলক সমাসঃ যে সমাসে সমাসজাত নতুন পদটি সমাস-গঠনকারী পদগুলির অর্থকে না বুঝিয়ে নতুন কোন অর্থ বোঝায়, তাকে বর্ণনামূলক সমাস বলে। প্রচলিত বাংলা ব্যাকরণের বহুব্রীহি সমাসকেই বর্ণনামূলক সমাস বলা হয়। উদাহরণ– দশানন, দিগম্বর ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন্ ২০২৪